আপনার রব কে?
============
আমাদের গ্রামে খোদা শব্দটি খুব বেশী প্রচলিত। ‘খোদায় জানে’, ‘খোদার কসম’, ‘খোদা হাফেজ’ এই কথাগুলো বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন শুনছি খোদা বলা উচিৎ নয়। একটু বিস্তারিত জানাবেন।
উত্তরঃ
====
কুরআন রব শব্দটি ৯৮০ বার উল্লেখিত হয়েছে। কবরে প্রত্যেক মানুষ প্রথম যে প্রশ্নের সম্মুখিত হবে তা হলো -‘তোমার রব কে?’ সুতরাং আসুন প্রথমেই এই শব্দ সমূহের অর্থ জেনে নেই !
☞রবঃ
রব শব্দটির অর্থ অনেক। যেমন-
পথ প্রদর্শক, সৃষ্টি কর্তা, প্রতিনিধি সৃষ্টিকারী, দয়ালু ও তওবা কবুলকারী, ক্ষমাকারী, মৃত্যুর পর জীবন দানকারী, বিপদ নিয়ে পরীক্ষাকারী,শস্য উৎপন্নকারী, প্রতিদান দাতা, নির্দেশ দাতা, গোপন সংবাদ জ্ঞানসম্পন্ন, কল্যাণদাতা,নিরাপত্তা ও রিজিক সরবারাহকারী, দুয়া কবুলকারী, মানবতার হেদায়াতের জন্য নবী ও রাসুল প্রেরণকারী, বিধানদাতা,প্রশান্তিদাতা,বিজয়দাতা, জীবন ও মরনদাতা, সার্বভৌম বা সকল ক্ষমতার মালিক ইত্যাদি।
.
☞আল্লাহঃ
ইসলামে যে ইলাহ বা উপাস্যের কথা বলা হয়েছে তিনি একক, অদ্বিতীয়। তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁর ইসম যাত অর্থাৎ প্রকৃত নাম আল্লাহ। আল্লাহ শব্দটি অতুলনীয়। অন্য কোন ধাতু হতে তা উদ্ভুত নয়। আল্লাহ শব্দটি সর্ব প্রকার সম্নন্ধরহিত একক ও অনুপম এক নাম। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে ইসলাম ধর্মে আল্লাহ তারই নামের মধ্যেই পরিচিত হয়ে আছেন। এমন অনুপম আল্লাহ শব্দটিকে মুসলিমরা তরক করে গ্রহন করেছে অন্য নাম ‘খোদা’।
.
☞ খোদাঃ
খোদা শব্দটি ফারসী শব্দ, যার অর্থ স্বয়ম্ভু বা যিনি নিজেই সৃষ্ট। আল্লাহ্র রসুল ﷺ আল্লাহ রব্বুল আলামীনের যে ৯৯টি নামের কথা বলেছেন তার মধ্যে এ ধরনের কোন অর্থ নেই। খোদার ফারসী যে অর্থ তা আল্লাহ্র ৯৯ নামের মধ্যে নেই। এ ছাড়াও আল্লাহ্র যে সব নাম বা সিফাত কোরআন ও হাদীসে উল্লেখ আছে তার অর্থ খোদার অর্থের সাথে মিলে না। মহান আল্লাহ নিজেকে স্বয়ম্ভু বা খোদা অর্থে নামকরন করেননি। রসুল ﷺ এ ধরনের কোন অর্থে আল্লাহ্র পরিচয় দেননি।
→ খোদা শব্দের উৎপত্তি ও এর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে তা দিত্ববাদের আক্বীদা-বিশ্বাস। প্রাচীন পারসিকদের দু’জন খোদা ছিল একজন মঙ্গলের, অপরজন অমঙ্গলের। খৃষ্টানদের ত্রিত্ববাদ এবং হিন্দুদের বহুদেববাদ -এসব বাদই ইসলামের একত্ববাদের বিপরীত।
.
মহান আল্লাহর অনেক সুন্দর নাম আছে । সে সব নামে তাঁকে না ডেকে অন্য সব অসংগত বা বেমানান নামে তাঁকে ডাকা বা নামকরণ করা হলে তাঁর অস্তিত্বের অমর্যাদা করা হয়, তাঁর নামের মাহাত্ম্ ক্ষুন্ন করা হয়।
কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,
وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ فَادْعُوهُ بِهَا ۖ وَذَرُوا الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي أَسْمَائِهِ ۚ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
-আল্লাহ্র অনেক সুন্দরতম নাম আছে; সুতরাং তোমরা সে সব নামেই তাঁকে ডাকো। এবং তাঁর নাম রাখার ব্যাপারে যারা সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যায় তাদেরকে বর্জন কর৷ তারা যা কিছু করে এসেছে ৷ তার ফল অবশ্যি পাবে৷ [সূরা আরাফ ১৮০]
.
তাই মুসলিদের উচিত তাদের ইলাহকে কুরআন ও হাদিস হতে তাঁদের রবের যে সব নাম পাওয়া যায় তাই বলে ডাকা এবং সেটাই উত্তম ও উৎকৃষ্টতর । আল্লাহ সুবাহানাহু তা’আলা বলেন,
-তোমরা কি উৎকৃষ্টতর বস্তুকে নিকৃষ্ট বস্তুর সাথে বদল করতে চাও? [সূরা-বাকারাহ ৬১]
.
!__________________
আরও জানার জন্য “তোমার রব কে?” লেখক -মহাম্মাদ আবু তাহের এর বইটি পড়ার অনুরোধ করা হল।
জেনে নিন- ইসলামিক প্রশ্নোত্তর পেজ থেকে
No comments:
Post a Comment