Wednesday, November 8, 2017

কবিরা গুনাহঃ ৩০. অবিচার এবং বিচার সংক্রান্ত কিছু কথা

৩০. অবিচার


কুর‘আন ও হাদীসের সুস্পষ্ট জ্ঞান ও তা যথাস্থানে প্রয়োগ করার যথেষ্ট প্রজ্ঞা ছাড়া বিচারকার্য পরিচালনা করা অথবা কোন ব্যাপারে সত্য উদ্ভাসিত হয়ে যাওয়ার পরও তা পাশ কাটিয়ে গিয়ে অন্যায়মূলক বিচার করা একটি মারাত্মক অপরাধ।
বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
الْقُضَاةُ ثَلَاثَةٌ: وَاحِـدٌ فِيْ الْـجَنَّةِ، وَاثْنَانِ فِيْ النَّارِ، فَأَمَّا الَّذِيْ فِيْ الْـجَنَّةِ ؛ فَرَجُلٌ عَرَفَ الْـحَقَّ فَقَضَى بِهِ، وَرَجُلٌ عَرَفَ الْـحَقَّ فَجَارَ فِيْ الْـحُكْمِ ؛ فَهُوَ فِيْ النَّارِ، وَرَجُلٌ قَضَى لِلنَّاسِ عَلَى جَهْلٍ ؛ فَهُوَ فِيْالنَّارِ.
‘‘বিচারক তিন প্রকারের। তম্মধ্যে একজন জান্নাতী আর অপর দু’জন জাহান্নামী। যিনি জান্নাতী তিনি হচ্ছেন এমন বিচারক যে সত্য উদ্ঘাটন করে উহার আলোকেই বিচার করেন। আরেকজন এমন যে,
তিনি সত্য উদ্ঘাটন করতে পেরেছেন ঠিকই তবে তিনি তা সূক্ষ্মভাবে পাশ কাটিয়ে গিয়ে অন্যায় ও অত্যাচারমূলক বিচার করে থাকেন। এমন বিচারক জাহান্নামী। আরেকজন এমন যে, তিনি অজ্ঞতা ও মূর্খতাকেই পুঁজি করে বিচার করে থাকেন। অতএব তিনিও জাহান্নামী’’।
 (আবূ দাউদ ৩৫৭৩; তিরমিযী ১৩২২; ইব্নু মাজাহ্ ২৩৪৪)
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
إِنَّ اللهَ مَعَ الْقَاضِيْ مَا لَمْ يَجُرْ، فَإِذَا جَارَ تَخَلَّى عَنْهُ وَلَزِمَهُ الشَّيْطَانُ.
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা বিচারকের সহযোগিতায়ই থাকেন যতক্ষণ না সে বিচারে কারোর উপর যুলুম করে। তবে যখন সে বিচারে কারোর উপর যুলুম করে বসে তখন আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সহযোগিতা উঠিয়ে নেন এবং শয়তার তাকে আঁকড়ে ধরে’’। (তিরমিযী ১৩৩০; ইব্নু মাজাহ্ ২৩৪১)

বিচার সংক্রান্ত কিছু কথা


বিচার করার সময় উভয় পক্ষের সম্পূর্ণ কথা মনোযোগ সহকারে শুনে তা বিচার-বিশ্লেষণ করে সত্য পর্যন্ত পৌঁছুতে হয়।
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিচারক হিসেবে ইয়েমেনে পাঠাচ্ছিলেন। তখন আমি বললাম: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি আমাকে বিচারক হিসেবে পাঠাচ্ছেন; অথচ আমি অল্প বয়সের একজন যুবক এবং বিচার কার্য সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান নেই। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
إِنَّ اللهَ سَيَهْدِيْ قَلْبَكَ وَيُثَبِّتُ لِسَانَكَ، فَإِذَا جَلَسَ بَيْنَ يَدَيْكَ الْـخَصْمَانِ ؛ فَلَا تَقْضِيَنَّ حَتَّى تَسْمَعَ مِـنَ الْآخَرِ ؛ كَمَا سَمِعْتَ مِنَ الْأَوَّلِ ؛ فَإِنَّهُ أَحْرَى أَنْ يَتَبَيَّنَ لَكَ الْقَضَاءُ، قَالَ: فَمَا زِلْتُ قَاضِيًا أَوْ مَاشَكَكْتُ فِيْ قَضَاءٍ بَعْدُ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন এবং তোমার জিহবাকে দৃঢ় করবেন। যখন তোমার সামনে উভয় পক্ষ উপস্থিত হবে তখন তুমি দ্রুত বিচার করবে না যতক্ষণ না তুমি দ্বিতীয় পক্ষ থেকে তাদের কথা শুনো যেমনিভাবে শুনেছিলে প্রথম পক্ষ থেকে। কারণ, তখনই তোমার সামনে বিচারের ব্যাপারটি সুস্পষ্ট হয়ে যাবে। ‘আলী (রাঃ) বলেন: তখন থেকেই আমি বিচারক অথবা তিনি বললেন: অতঃপর আমি আর বিচারের ক্ষেত্রে কখনোই কোন সন্দেহের রোগে ভুগিনি’’।
(আবূ দাউদ ৩৫৮২; তিরমিযী ১৩৩১)

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ