Friday, November 10, 2017

আল্লাহ তা'আলা কোথায় আছেন? সর্বত্র বিরজমান নাকি আরশে আজিমে ?

আল্লাহ তা'আলা কোথায় আছেন?
>>> আল্লাহ আরশে সমুন্নত আছেন <<<
الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى রহমান (আল্লাহ) আরশে সমুন্নত আছেন। ত্ব-হা ২০/৫
إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ 
নিশ্চয়ই তোমাদের রব আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ ও জমিন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন; তারপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন। আল-আ‘রাফ, ৭/৫৪, ইউনুস, ১০/৩
اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ 
আল্লাহ যিনি খুঁটি ছাড়া আকাশসমূহ উঁচু করেছেন, যা তোমরা দেখছ; তারপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন। আর-রা‘দ, ১৩/২
هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ 
তিনি আসমানসমূহ ও জমিন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন। আল-হাদীদ, ৫৭/৪

الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمَنُ فَاسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا 
তিনি আসমানসমূহ ও জমিন আর উভয়ের মাঝে যা রয়েছে সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন তারপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন, তিনিই রহমান (আল্লাহ) কাজেই তার সম্পর্কে যে জ্ঞান রাখে তুমি তাকে জিজ্ঞেস কর। ফুরক্বান, ২৫/৫৯
اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ مَا لَكُمْ مِنْ دُونِهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلا شَفِيعٍ أَفَلا تَتَذَكَّرُونَ
আল্লাহ যিনি আসমানসমূহ ও জমিন আর উভয়ের মাঝে যা রয়েছে সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন তারপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন, তিনি ছাড়া তোমাদের জন্য কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই, তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? আস-সাজদাহ ৩২/৪
>>> আল্লাহ আসমানের উপর আছেন <<<
أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الأرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ 
তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, যিনি আকাশের উপর রয়েছেন তিনি তোমাদেরকেসহ ভূমিকে ধসিয়ে দিবেন না, আর তখন তা হঠাৎ থর থর করে কাঁপতে থাকবে? আল-মুল্‌ক ৬৭/১৬
أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ 
নাকি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, যিনি আকাশের উপর রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী ঝড়ো হাওয়া প্রেরণ করবেন না, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী ? আল-মুল্‌ক ৬৭/১৭
>>> আল্লাহ তাঁর কিছু সৃষ্টিকে উপরে উঠিয়ে নিয়েছেন <<<
إِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَى إِنِّي مُتَوَفِّيكَ وَرَافِعُكَ إِلَيَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا
যখন আল্লাহ বলেছিলেন, ‘হে ঈসা! নিশ্চয় আমি তোমার সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করব আর তোমাকে আমার কাছে উঠিয়ে নেব, কাফিরদের থেকে তোমাকে পবিত্র করব। আলে‘ইমরান ৩/৫৫
بَلْ رَفَعَهُ اللَّهُ إِلَيْهِ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا 
বরং আল্লাহ তাকে (ঈসাকে) নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেনে আর আল্লাহ হলেন পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আন-নিসা, ৪/১৫৮
>>> ফেরআউন আল্লাহ দাবী করে কাফের হওয়া সত্ত্বেও তার বিশ্বাস ছিল, আল্লাহ আকাশে আছেন <<<
وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَا هَامَانُ ابْنِ لِي صَرْحًا لَعَلِّي أَبْلُغُ الأسْبَابَ أَسْبَابَ السَّمَاوَاتِ فَأَطَّلِعَ إِلَى إِلَهِ مُوسَى 
আর ফেরআউন বলল, ‘হে হামান! তুমি আমার জন্য সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরী কর, যাতে আমি দরজাসমূহে পৌঁছি। আকাশের দরজাসমূহে পৌঁছে যেন মূসার ইলাহকে দেখতে পাই। আল-মুমিন, ৪০/৩৬-৩৭
>>> আসমান, জমিন সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহর আরশ ছিল পানির উপর <<<
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلا 
আর তিনি আসমানসমূহ ও জমিন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, আর (এর পূর্বে) তাঁর আরশ ছিল পানির উপর, যেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করে নেন, তোমাদের মধ্যে কে উত্তম আমলকারী? হুদ, ১১/৭
>>> কিয়ামতের সময় আল্লাহর আরশ বহন করবে আটজন ফেরেশতা <<<
فَإِذَا نُفِخَ فِي الصُّورِ نَفْخَةٌ وَاحِدَةٌ وَحُمِلَتِ الأرْضُ وَالْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةً وَاحِدَةً فَيَوْمَئِذٍ وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ وَانْشَقَّتِ السَّمَاءُ فَهِيَ يَوْمَئِذٍ وَاهِيَةٌ وَالْمَلَكُ عَلَى أَرْجَائِهَا وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمَانِيَةٌ 
যখন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, একটি মাত্র ফুঁক। আর জমিন ও পাহাড়গুলো উৎক্ষিপ্ত হবে, ফলে একটি মাত্র আঘাতে এগুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। ফলে সে দিন মহাপ্রলয় (কিয়ামত) সংঘটিত হবে। আর আসমান ফেটে পড়বে, ফলে সেদিন তা বিক্ষিপ্ত্ হয়ে যাবে। এবং ফেরেশতাগণ আসমানের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবে এবং সে দিন তোমার রবের আরশ আটজন ফেরেশতা তাদের উর্ধ্বে বহন করবে। আল-হাক্কাহ, ৬৯/১৩-১৭
উল্লেখিত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা আরশে সমাসীন আছেন। কিভাবে সমাসীন আছেন, একথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। ইমাম মালেক (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইসতেওয়া বা সমাসীন হওয়া বোধগম্য, এর প্রকৃতি অজ্ঞাত, এর প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব এবং এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদ‘আত’। (শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া, আর-রিসালা আত-তাদাম্মুরিয়্যাহ, পৃঃ ২০।)
>>> আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান, তার দলিল, সংশয় ও তার সমাধান <<<
১। সূরা আল-হাদীদ এর ৪নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তিনি (আল্লাহ) তোমাদের সাথে আছেন।
২। সূরা আল-মুজাদালাহ এর ৭নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
مَا يَكُونُ مِنْ نَجْوَى ثَلاثَةٍ إِلا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلا خَمْسَةٍ إِلا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلا أَدْنَى مِنْ ذَلِكَ وَلا أَكْثَرَ إِلا هُوَ مَعَهُمْ أَيْنَ مَا كَانُوا 
তিনজনের কোন গোপন পরামর্শ হয় না যাতে তাদের চতুর্থ তিনি না থাকেন, আর পাঁচ জনের হয় না যাতে তিনি তাদের ষষ্ঠ না থাকেন এবং এর চেয়ে কম হোক কিংবা বেশী হোক, তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন?
৩। সূরা ক্বাফ এর ১৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ আর আমি (আল্লাহ) তার ঘাড়ের শিরার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী। ক্বাফ, ৫০/১৬
উপরের তিনটি আয়াত প্রমাণ করে আল্লাহ সব জায়গায় আছে, তারপরও আপনারা কিভাবে বলছেন যে, আল্লাহ আরশে আছেন? তাহলে বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ আরশেও আছেন আর সব জায়াগায়ও আছেন।
উত্তরঃ আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন এর মানে এই নয় যে, তিনি আমাদের সঙ্গে বাস করছেন, বরং এর অর্থ এই যে তিনি তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের সাথে আছেন। তিনি তাঁর আরশের উপর সমাসীন কিন্তু তাঁর বান্দাদের কর্মের কোন কিছুই তাঁর কাছ থেকে গোপন নেই। আল্লাহ তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের নিকটবর্তী।
সূরা আল-হাদীদ এর ৪নং আয়াতের ও সূরা আল-মুজাদালাহ এর ৭নং আয়াতের উত্তর সেই আয়াতের মধ্যেই আছে। সূরা ক্বাফ এর ১৬ নং আয়াতের উত্তর তার পরের দুই আয়াতে আছে। নিম্নে তার বিস্তারিত আলোচনা করা হল-
>>> সূরা আল-হাদীদ এর ৪নং সম্পূর্ণ আয়াতটি হল <<<
هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الأرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ 
তিনিই আসমানসমূহ ও জমিন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন। তিনি জানেন যা কিছু জমিনে প্রবেশ করে আর যা কিছু তা থেকে বের হয় এবং আকাশ থেকে যা কিছু অবতীর্ণ্ হয় ও যা কিছু তাতে উত্থিত হয় এবং (জ্ঞান দ্বারা) তিনি তোমাদের সাথে আছেন, তোমরা যেখানেই থাক আর তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। আল-হাদীদ, ৫৭/৪
আয়াতের প্রথমে আল্লাহ বলেছেন- هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ “তিনিই আসমানসমূহ ও জমিন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি আরশে সমুন্নত হয়েছেন।”। আয়াতের পরের অংশে তিনি তাঁর জ্ঞানের বর্ণনা দিয়ে বলছেন-
يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الأرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا 
“তিনি জানেন যা কিছু জমিনে প্রবেশ করে আর যা কিছু তা থেকে বের হয় এবং আকাশ থেকে যা কিছু অবতীর্ণ্ হয় ও যা কিছু তাতে উত্থিত হয়”।
আল্লাহর জ্ঞান যে সর্বত্র বিরাজমান, সকলকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছে, সে সম্পর্কে আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন- وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا তার জ্ঞান সকল কিছুতেই পরিবেষ্টিত, সূরা ত্ব-হা, ২০/৯৮। وَأَنَّ اللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا এবং আল্লাহ সবকিছুকে তাঁর জ্ঞান দ্বারা পরিবেষ্টন করে আছেন, সূরা আত-তালাক্ব, ৬৫/১২। وَلا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلا بِمَا شَاءَ “আর তারা তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে সামান্য কিছুও আয়ত্ত করতে পারে না, কেবলমাত্র যতটুকু তিনি চান”, আল-বাকারাহ, ২/২৫৫। يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلا يُحِيطُونَ بِهِ عِلْمًا তিনি জানেন যা কিছু তাদের সামনে ও পশ্চাতে আছে এবং তারা তাঁকে জ্ঞান দ্বারা আয়ত্ত করতে পারে না; ত্ব-হা, ২০/১১০। هُوَ الأوَّلُ وَالآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ তিনিই আদি ও তিনিই অন্ত আর তিনিই জাহের ও তিনিই বাতেন এবং তিনি সবকিছু সম্পর্কে পরিপূর্ণরূপে অবগত; আল-হাদীদ, ৫৭/৩।
সূরা আল-হাদীদ এর ৪নং আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহ বলছেন-وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ ‘আর তিনি তোমাদের সাথে আছেন, তোমরা যেখানেই থাক আর তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
আয়াতটির প্র্থম থেকে ভালভাবে প্রত্যক্ষ করলে বুঝা যায়- আল্লাহর অবস্থান আরশে, সপ্ত আকাশের উপরে। সেখান হতেই তিনি আকাশ ও জমিনের সবকিছু জানেন ও প্রত্যক্ষ করেন। আয়াতটির শেষ অংশে আল্লাহ বলছেন- وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ আর তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। অর্থাৎ বান্দার কর্মের কোনকিছুই আল্লাহর অজানা নেই। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন- لا تُدْرِكُهُ الأبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ দৃষ্টিসমূহ তাঁর নাগাল পায় না আর তিনি দৃষ্টিসমূহকে নাগালে রাখেন আর তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সকল বিষয়ে অবহিত; আল-আন‘আম, ৬/১০৩। আল্লাহ অন্যত্র বলেন- بَلَى إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَহ্যাঁ অবশ্যই, তোমরা যা করছো সে সম্পর্কে আল্লাহ পূর্ণরূপে জ্ঞাত; আন্-নাহ্ল, ১৬/২৮। এতে স্পস্টভাবেই বুঝা যাচ্ছে, বান্দার কর্মের কোনকিছু জানার জন্য আল্লাহর প্রয়োজন নেই বান্দার সঙ্গে থাকার। “আর তিনি তোমাদের সাথে আছেন” অর্থাৎ তিনি তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের সাথে আছেন আর আরশে অবস্থান করেই আল্লাহর পক্ষে তা সম্ভব।
>>> সূরা আল-মুজাদালাহ এর ৭নং সম্পূর্ণ আয়াতটি হল <<<
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأرْضِ مَا يَكُونُ مِنْ نَجْوَى ثَلاثَةٍ إِلا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلا خَمْسَةٍ إِلا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلا أَدْنَى مِنْ ذَلِكَ وَلا أَكْثَرَ إِلا هُوَ مَعَهُمْ أَيْنَ مَا كَانُوا ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ 
আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, আকাশসমূহে যা আছে ও জমিনে যা আছে, আল্লাহ সবই জানেন; তিনজনের কোন গোপন পরামর্শ হয় না যাতে তাদের চতুর্থ তিনি না থাকেন, আর পাঁচ জনের হয় না যাতে তিনি তাদের ষষ্ঠ না থাকেন এবং এর চেয়ে কম হোক কিংবা বেশী হোক, তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন? তারপর কেয়ামতের দিবসে তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা আমল তারা করেছিল, নিশ্চয় আল্লাহ সকল বিষয় সম্পর্কে পূর্ণরূপে অবগত; আল-মুজাদালাহ, ৫৮/৭।
এ আয়াতের প্রথমেই আল্লাহ তাঁর জ্ঞানের বর্ণনা দিয়ে বলছেন-
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأرْضِ 
আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, আকাশসমূহে যা আছে ও জমিনে যা আছে, আল্লাহ সবই জানেন। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন- وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ আর তিনি প্রতিটি সৃষ্টি সম্পর্কে জ্ঞাত; ইয়া-সীন, ৩৬/৭৯।
আয়াতের মধ্যখানে তিনি বলছেন-
مَا يَكُونُ مِنْ نَجْوَى ثَلاثَةٍ إِلا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلا خَمْسَةٍ إِلا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلا أَدْنَى مِنْ ذَلِكَ وَلا أَكْثَرَ إِلا هُوَ مَعَهُمْ أَيْنَ مَا كَانُوا 
তিনজনের কোন গোপন পরামর্শ হয় না যাতে তাদের চতুর্থ তিনি না থাকেন, আর পাঁচ জনের হয় না যাতে তিনি তাদের ষষ্ঠ না থাকেন এবং এর চেয়ে কম হোক কিংবা বেশী হোক, তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন”; আল-মুজাদালাহ, ৫৮/৭।
এখানেও আল্লাহ বান্দার সাথে থাকা মানে হল জ্ঞানের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সাথে আছেন। যা আয়াতটির প্রথমে ও শেষে উল্লেখ করা হয়েছে। আয়াতটির শেষ অংশে আল্লাহ বলছেন-
ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ 
তারপর কেয়ামতের দিবসে তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা আমল তারা করেছিল, নিশ্চয় আল্লাহ সকল বিষয় সম্পর্কে পূর্ণরূপে অবগত; আল-মুজাদালাহ, ৫৮/৭। অর্থাৎ বান্দা যে কাজই করুক না কেন, আল্লাহ তা জানেন। বান্দার অন্তরের খবরও আল্লাহ অবগত আছেন। আল্লাহ বলেন- وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ আর আল্লাহ অন্তরসমূহের গোপন বিষয় সম্পর্কে পূর্ণরূপে জ্ঞাত; ৩/১৫৪, ৬৪/৪।
উপরের আয়াতগুলো দ্বারা প্রমাণ পাওয়া যাচেছ, আল্লাহর অবস্থান আরশে, যা সপ্ত আকাশের উপরে। জ্ঞানের মাধ্যমে তিনি তাঁর বান্দাদের সাথে আছেন। বান্দাদের কর্মের কোন কিছুই তাঁর কাছ থেকে গোপন নেই। জ্ঞানের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের নিকটবর্তী।
>>> সূরা ক্বাফ এর ১৬নং সম্পূর্ণ আয়াতটি হল <<<
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإنْسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ 
নিশ্চয় আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি আর আমি জানি তার প্রবৃত্তি তাকে কী কুমন্ত্রণা দেয় আর আমি তার ঘাড়ের শিরার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী।
প্রশ্নঃ আল্লাহ যদি সাত আসমানের উপরে আরশেই থাকেন, তাহলে কেন এ আয়াতে বলা হল, তিনি আমাদের ঘাড়ের শিরার চেয়েও অধিক নিকটে আছেন?
উত্তরঃ আয়াতের প্রথমে আল্লাহ বলেছেন- وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإنْسَانَ নিশ্চয় আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি, মধ্যখানে বলছেন- وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ আর আমি জানি তার প্রবৃত্তি তাকে কী কুমন্ত্রণা দেয়। অর্থাৎ মানুষের অন্তরের গোপন খবরও আল্লাহ ভালভাবেই জানেন। অন্যত্র আল্লাহ বলেন- إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরসমূহের গোপন বিষয় সম্পর্কে পূর্ণরূপে জ্ঞাত; ৩/১১৯, ৫/৭, ৩১/২৩।
আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহ বলেছেন- وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ আর আমি তার ঘাড়ের শিরার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী; ক্কাফ, ৫০/১৬।
আল্লাহ আমাদের ঘাড়ের শিরার চেয়েও অধিক নিকটে আছেন, যাবতীয় বিষয়ে তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে নিকটবর্তী। কেননা তাঁর জ্ঞান সকল কিছুকে বেষ্টন করে আছে। ওপরন্তু মানুষের আমলের প্রমাণপঞ্জি হিসেবে আল্লাহ প্রতিটি মানুষের সঙ্গে ফেরেশতা নিযুক্ত রেখেছেন যারা মানুষের আমল লিপিবদ্ধ করছে। আল্লাহ বলেন-
إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ 
দুইজন গ্রহণকারী (ফেরেশতা) ডানে ও বামে বসে তাঁর কর্ম লিপিবদ্ধ্ করছে। যে কথাই উচ্চারণ করে, তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার কাছে সদা প্রস্তুত সংরক্ষণকারী রয়েছে। ক্বাফ, ৫০/১৭-১৮
অন্য্ আয়াতে আল্লাহ বলেন-
وَكُلَّ إِنْسَانٍ أَلْزَمْنَاهُ طَائِرَهُ فِي عُنُقِهِ وَنُخْرِجُ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كِتَابًا يَلْقَاهُ مَنْشُورًا اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا
আর আমি প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার কাঁধেই সংযুক্ত করে দিয়েছি এবং কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য বের করব একটি কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত। (আমি বলব) তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর; আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব নিকাশের জন্য যথেষ্ট। আল-ইস্‌রা, ১৭/১৩-১৪
উপরের এ আয়াতে আল্লাহ বলছেন- “প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার কাঁধেই সংযুক্ত করে দিয়েছি”। মানুষের কর্মকে লিখার জন্য দুই কাঁধে দুই ফেরেশতা আল্লাহ সংযুক্ত করে দিয়েছেন সেই কথাই এ আয়াতে বলা হয়েছে। আল্লাহ আরশে সমুন্নত আছেন আর জ্ঞানের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দার নিকটবর্তী।
>>> বিষয়ঃ সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহ কোথায়? <<<
১. মু‘আবিয়া বিন আল-হাকাম আস-সুলামী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
وَكَانَتْ لِي جَارِيَةٌ تَرْعَى غَنَمًا لِي قِبَلَ أُحُدٍ وَالْجَوَّانِيَّةِ فَاطَّلَعْتُ ذَاتَ يَوْمٍ فَإِذَا الذِّيبُ قَدْ ذَهَبَ بِشَاةٍ مِنْ غَنَمِهَا وَأَنَا رَجُلٌ مِنْ بَنِي آدَمَ آسَفُ كَمَا يَأْسَفُونَ لَكِنِّي صَكَكْتُهَا صَكَّةً فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَظَّمَ ذَلِكَ عَلَىَّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ أُعْتِقُهَا قَالَ " ائْتِنِي بِهَا " . فَأَتَيْتُهُ بِهَا فَقَالَ لَهَا " أَيْنَ اللَّهُ " . قَالَتْ فِي السَّمَاءِ . قَالَ " مَنْ أَنَا " . قَالَتْ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ . قَالَ " أَعْتِقْهَا فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ
আমার একটি দাসী ছিল। সে উহুদ ও জাওয়ানিয়ার দিকে আমার ছাগল চরাত। একদিন আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখি, একটি বাঘ এসে একটি ছাগল নিয়ে গেল। যেহেতু আমিও মানুষ, সেহেতু অন্যান্য মানুষের মত আমারও রাগ এসে গেল। আমি তাকে একটি চড় বসিয়ে দিলাম। তারপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলাম। তিনি আমার এ কাজকে অত্যন্ত অপছন্দ করলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাকে আযাদ করে দিব? তিনি বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো। আমি তাকে তাঁর নিকট নিয়ে এলাম। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ কোথায় আছেন? সে বলল, আকাশে। তিনি বললেন, আমি কে? সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসুল। তখন তিনি বললেন, ওকে আযাদ করে দাও। কেননা ও মুমিনা। সহীহ মুসলিম: ১০৮৬
২. প্রত্যেক রাতে আল্লাহর দুনিয়ার আসমানে নেমে আসা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, তিনি আরশের উপর সমাসীন। এর প্রমাণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিম্নোক্ত হাদীছ, আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 
يَتَنَزَّلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ 
‘প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আছ যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দিব? কে আছ যে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি তাকে তা দান করব? কে আছ যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করব’। সহীহুল বুখারী: ১১৪৫, ৬৩২১, ৭৪৯৪; সহীহ মুসলিম: ১৬৬০
৩. আমরা দো‘আ করার সময় দু’হাত উত্তোলন করে আল্লাহর নিকট চাই। এতে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ আরশের উপর আছেন। সালমান ফারেসী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 
إِنَّ رَبَّكُمْ تَبَارَكَ وَتَعَالَى حَيِيٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِي مِنْ عَبْدِهِ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صِفْرًا
‘নিশ্চয়ই তোমাদের রব লজ্জাশীল ও মহানুভব। যখন কোন ব্যক্তি তাঁর নিকট দু’হাত উত্তোলন করে দো‘আ করে, তখন তাকে শূন্য হাতে ব্যর্থ মনোরথ করে ফেরত দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন’। (আবু দাউদ: ১২৭৩, আত-তিরমিযী)
৪. ইস্‌রা ও মি‘রাজ-এর ঘটনায় আমরা লক্ষ্য করি যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যখন একের পর এক সপ্ত আসমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল নবী-রাসূলগণের এবং আল্লাহর সান্নিধ্যের জন্য সপ্ত-আসমানের উপর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছালাত নিয়ে মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন, তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলেছিলেন, আপনার উম্মত ৫০ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করতে সক্ষম হবে না। আপনি আল্লাহর নিকট ছালাত কমিয়ে নিন। এরপর কমাতে কমাতে পাঁচ ওয়াক্ত হয়। এরপর মূসা (আলাইহিস সালাম) আরও কমাতে বলেছিলেন, কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লজ্জাবোধ করেছিলেন। (সহীহুল বুখারী : ৩২০৭, সহীহ মুসলিম: ৩০০)
এ সময় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত কমানোর জন্য সপ্ত আকাশের উপর উঠতেন। আবার ফিরে আসতেন মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর নিকট ষষ্ঠ আসমানে। এদ্বারা বুঝা যায় যে, আল্লাহ তা‘আলা আরশের উপরে আছেন।
৫. বিদায় হজ্জের ভাষণে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, 
وَأَنْتُمْ تُسْأَلُونَ عَنِّي فَمَا أَنْتُمْ قَائِلُونَ .قَالُوا نَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَلَّغْتَ وَأَدَّيْتَ وَنَصَحْتَ . فَقَالَ بِإِصْبَعِهِ السَّبَّابَةِ يَرْفَعُهَا إِلَى السَّمَاءِ وَيَنْكُتُهَا إِلَى النَّاسِ " اللَّهُمَّ اشْهَدِ اللَّهُمَّ اشْهَدْ " . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ
তোমরা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে, তখন কী বলবে? ঐ সময় উপস্থিত ছাহাবীগণ বলেছিলেন, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, আপনি আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পৌছিয়েছেন, আপনার হক আদায় করেছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন। তারপর তিনি তর্জনী আঙ্গুল আকাশের দিকে তুলে লোকদের দিকে ইশারা করে বললেন, “ইয়া আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক”, তিনি এরুপ তিনবার বললেন। (সহীহ মুসলিম: ২৮৪০)
৬. আনাস বিন মালেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যয়নব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্যান্য স্ত্রীগণের উপর গর্ব করে বলতেন যে, 
زَوَّجَكُنَّ أَهَالِيكُنَّ، وَزَوَّجَنِي اللَّهُ تَعَالَى مِنْ فَوْقِ سَبْعِ سَمَوَاتٍ
তাঁদের বিয়ে তাঁদের পরিবার দিয়েছে, আর আমার বিয়ে আল্লাহ সপ্ত আসমানের উপর থেকে সম্পাদন করেছেন’। (সহীহুল বুখারী: হাদিস: ৭৪২০)
>>> আল্লাহর জ্ঞান সর্বত্র বিরাজমান <<<
وَسِعَ رَبِّي كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا ۗ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ 
আমার রব জ্ঞান দ্বারা সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন, তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? (আল-আন‘আম, ৬/৮০)
أَنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ اللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا 
আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং আল্লাহ সবকিছুকে তাঁর জ্ঞান দ্বারা পরিবেষ্টন করে আছেন। (আত-তালাক্ব, ৬৫/১২)
إِنَّمَا إِلَٰهُكُمُ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا 
কেবলমাত্র আল্লাহই তোমাদের ইলাহ, তিনি ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই, তার জ্ঞান সকল কিছুতে পরিবেষ্টিত। (ত্ব-হা, ২০/৯৮)
আল্লাহ তা'আলা কি নিরাকার? 
>>> আল্লাহ নিরাকার নন। <<<
কুরআনে আল্লাহ তাঁর সিফাতে যাত এবং গুণাবলী বর্ণনা করেছেন তাঁর নিজস্ব সত্তার বর্ণনায় চেহারা, হাত, পা, চোখ, দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি, হাসি, আনন্দ, অসন্তুষ্টি ও ক্রোধ, ইত্যাদি উল্লেখ করছেন, তবে তা আমাদের জ্ঞানের বাইরে ও যার কোন সাদৃশ্য নাই। আল্লাহ বলেন-
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয় আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। আশ্-শূরা, ৪২/১১
فَلا تَضْرِبُوا لِلَّهِ الأمْثَالَ إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোন সদৃশ স্থির কর না; নিশ্চয়ই আল্লাহ জানেন আর তোমরা জান না। আন্-নাহ্ল, ১৬/৭৪
وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ 
আর কেউই তাঁর সমকক্ষ নয়।আল-ইখলাস, ১১২/৪
>>> আল্লাহর চেহারা/মুখমন্ডল <<<
আল্লাহর চেহারা আছে, যা কুরআন ও হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহ বলেন-
فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
তোমরা যে দিকেই মুখ ফিরাও সে দিকেই আল্লাহর মুখমন্ডল, নিশ্চয় আল্লাহ প্রাচুর্যময়, মহাজ্ঞানী। আল-বাক্বারাহ, ২/১১৫
كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلا وَجْهَهُ 
তাঁর চেহারা ব্যতীত সকল কিছুই ধ্বংসশীল। আল-কাসাস, ২৮/৮৮
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلالِ وَالإكْرَامِ
ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংসশীল। আর চিরস্থায়ী তোমার রবের চেহারা, যিনি মহিমাময় ও মহানুভব। আর-রহমান, ৫৫/২৬-২৭
>>> আল্লাহর হাত <<<
আল্লাহর আকার আছে এর অন্যতম প্রমাণ হলো তাঁর হাত আছে। এ সম্পর্কে নিম্নে দলীল পেশ করা হল: 
قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنْتَ مِنَ الْعَالِينَ
আল্লাহ বললেন, ‘হে ইবলীস! আমার দু’হাতে আমি যাকে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সেজদাবনত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিল, নাকি তুই উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন? সোয়াদ, ৩৮/৭৫
وَقَالَتِ الْيَهُودُ يَدُ اللَّهِ مَغْلُولَةٌ غُلَّتْ أَيْدِيهِمْ وَلُعِنُوا بِمَا قَالُوا بَلْ يَدَاهُ مَبْسُوطَتَانِ
আর ইহুদীরা বলে, আল্লাহর হাত আবদ্ধ; বরং তাদের হাতই আবদ্ধ; তাদের এ উক্তির দরুণ তাদের প্রতি অভিশাপ করা হয়েছে; বরং তাঁর (আল্লাহর) উভয় হাত প্রসারিত। আল-মায়িদাহ, ৫/৬৪
উপরোক্ত দু’টি আয়াতে মহান আল্লাহর দু’টি হাত থাকার কথা প্রমাণিত হলো। প্রকৃতপক্ষেই আল্লাহর দু’টি হাত রয়েছে। তা কোন মাখলুকের হাতের মত নয়। আল্লাহ বলেন- لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। আশ্-শূরা, ৪২/১১
আল্লাহ অন্যত্র বলেন-
تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
বরকতময় তিনি, যাঁর হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব ও রাজত্ব তাঁর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল-মুল্ক, ৬৭/১
وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالأرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّماوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
তারা আল্লাহকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি, আর ক্বিয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আকাশসমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে, আর তিনি পবিত্র মহান, তারা যা শরীক করে তা থেকে তিনি বহু উর্ধ্বে। আয-যুমার, ৩৯/৬৭
بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
আপনারই হাতে যাবতীয় কল্যাণ, নিশ্চয়ই আপনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। আলে‘ইমরান, ৩/২৬
قُلْ إِنَّ الْفَضْلَ بِيَدِ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
তুমি বল, নিশ্চয় অনুগ্রহ আল্লাহর হাতে, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। আলে‘ইমরান, ৩/৭৩
وَأَنَّ الْفَضْلَ بِيَدِ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
আর নিশ্চয় অনুগ্রহ আল্লাহর হাতেই, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহের অধিকারী। আল-হাদীদ, ৫৭/২৯
قُلْ مَنْ بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ يُجِيرُ وَلا يُجَارُ عَلَيْهِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ
তুমি জিজ্ঞেস কর, সকল কিছুর কর্তৃত্ব কার হাতে? যিনি আশ্রয় দান করেন এবং যাঁর ওপর কোন আশ্রয়দাতা নেই, যদি তোমরা জান। আল-মু’মিনুন, ২৩/৮৮
فَسُبْحَانَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
অতএব পবিত্র ও মহান তিনি, সকল কিছুর কর্তৃত্ব যাঁর হাতে এবং তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। ইয়া-সীন, ৩৬/৮৩
يَدُ اللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ
আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর। আল-ফাত্হ, ৪৮/১০
وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
আর আমি আমার হাত দ্বারা আকাশ সৃষ্টি করেছি আর অবশ্যই আমি মহা প্রশস্তকারী। আয-যারিয়াত, ৫১/৪৭
ইবনু ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 
إِنَّ اللَّهَ يَقْبِضُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الأَرْضَ وَتَكُونُ السَّمَوَاتُ بِيَمِينِهِ ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ 
নিশ্চয় আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবীকে তাঁর মুঠোতে ধারণ করবেন এবং সমস্ত আকাশকে স্বীয় ডান হাতে গুটিয়ে নিবেন অতঃপর তিনি বলবেন, আমিই একমাত্র বাদশাহ। সহীহুল বুখারী: ৭৪১২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 
يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى يَا آدَمُ. فَيَقُولُ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْكَ. فَيَقُولُ أَخْرِجْ بَعْثَ النَّارِ
মহান আল্লাহ আদম (আলাইহিস সালাম) কে বলবেন, হে আদম! তখন তিনি জবাব দিবেন, আমি হাযির আমি সৌভাগ্যবান এবং সকল কল্যাণ আপনার হাতেই। তখন আল্লাহ বলবেন, জাহান্নামী দলকে বের করে দাও। সহীহুল বুখারী: ৩৩৪৮
শাফা‘আত সংক্রান্ত হাদীছে আছে, হাশরবাসী আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, 
يَا آدَمُ أَنْتَ أَبُو الْبَشَرِ خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ
‘হে আদম! (আলাইহিস সালাম) আপনি মানুষের পিতা। আল্লাহ আপনাকে তাঁর নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন’। (সহীহুল বুখারী: ৩৩৪০ ও সহীহ মুসলিম: ৩৬৮)
আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ تَصَدَّقَ بِعَدْلِ تَمْرَةٍ مِنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ ـ وَلاَ يَقْبَلُ اللَّهُ إِلاَّ الطَّيِّبَ ـ وَإِنَّ اللَّهَ يَتَقَبَّلُهَا بِيَمِينِهِ،
যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সাদকা করবে, (আল্লাহ তা কবুল করবেন) এবং আল্লাহ কেবল পবিত্র মাল কবুল করেন আর আল্লাহ তাঁর ডান হাত দিয়ে তা কবুল করেন। সহীহুল বুখারী: ১৪১০
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 
إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللَّيْلِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ النَّهَارِ وَيَبْسُطُ يَدَهُ بِالنَّهَارِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ اللَّيْلِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا
‘মহান আল্লাহ প্রতি রাতে তাঁর হাত প্রসারিত করতে থাকেন, যাতে করে দিনের গুনাহগার তওবা করে। আর তিনি দিনে তাঁর হাত প্রসারিত করতে থাকেন, যাতে করে রাতের গুনাহগার তওবা করে, এমনিভাবে প্রতিনিয়ত চলতে থাকবে পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় না হওয়া পর্যন্ত (অর্থাৎ ক্বিয়ামত পর্যন্ত)। সহীহ মুসলিম: ৬৮৮২
>>> আল্লাহর আঙ্গুল <<<
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, 
حَبْرٌ مِنَ الأَحْبَارِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا مُحَمَّدُ، إِنَّا نَجِدُ أَنَّ اللَّهَ يَجْعَلُ السَّمَوَاتِ عَلَى إِصْبَعٍ وَالأَرَضِينَ عَلَى إِصْبَعٍ، وَالشَّجَرَ عَلَى إِصْبَعٍ، وَالْمَاءَ وَالثَّرَى عَلَى إِصْبَعٍ، وَسَائِرَ الْخَلاَئِقِ عَلَى إِصْبَعٍ، فَيَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ. فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ تَصْدِيقًا لِقَوْلِ الْحَبْرِ ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم {وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ}
ইহুদীদের একজন বড় আলেম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মদ, আমরা (তাওরাতে) এটা লিখিত পাচ্ছি যে, আল্লাহ সপ্ত আকাশ রাখবেন এক আঙ্গুলের উপর এবং জমিনগুলো রাখবেন এক আঙ্গুলের উপর, বৃক্ষরাজিকে রাখবেন এক আঙ্গুলের উপর এবং পানি ও মাটি রাখবেন এক আঙ্গুলের উপর, আর সমস্ত মাখলূককে রাখবেন এক আঙ্গুলের উপর। অতঃপর তিনি বলবেন, আমিই সব কিছুর মালিক ও বাদশা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহুদী আলেমের কথার সত্যতায় হেসে ফেলেন, এমন কি তার মাড়ির দাঁত প্রকাশিত হয়ে পড়ে। অতঃপর তিনি উপরোক্ত আয়াতটি পাঠ করেন, “তারা আল্লাহকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি, আর ক্বিয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আকাশসমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। (আয-যুমার, ৩৯/৬৭), সহীহুল বুখারী: ৪৮১১, ৭৪১৪, ৭৪১৫, ৭৪৫১, ৭৫১৩, সহীহ মুসলিম: ৬৯৩৯, ৬৯৪১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, 
إِنَّ قُلُوبَ بَنِي آدَمَ كُلَّهَا بَيْنَ إِصْبَعَيْنِ مِنْ أَصَابِعِ الرَّحْمَنِ كَقَلْبٍ وَاحِدٍ يُصَرِّفُهُ حَيْثُ يَشَاءُ ". ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوبِ صَرِّفْ قُلُوبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ "
নিশ্চয় আদম সন্তানের কলবসমূহ পরম দয়াময় আল্লাহর দু”আংগুলের মাঝে অবস্থিত একটি কলবের ন্যায়। তিনি যে ভাবে ইচ্ছা তা পরিবর্তন করেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কলবসমূহ পবিচালনাকারী হে আল্লাহ! আপনি আমাদের কলবকে আপনার আনুগত্যের উপর অটল রাখুন। সহিহ মুসলিম: ৬৬৪৩
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন,
يا مقلب القلوب ثبت قلوبنا على دي�

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ