খুব সহজেই কমিয়ে ফেলুন পেটের মেদ!
আধুনিক যুগে মানুষ যথেষ্ট স্বাস্থ্য সচেতন এবং সাথে সৌন্দর্য প্রিয়ও। শরীরের বাড়তি
মেদ একদিকে যেমন বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে অন্য দিকে ঘটায় সৌন্দর্যহানি। শরীরের বিভিন্ন
অংশের মেদ চামড়ার নিচে জমে কিন্তু
পেটের মেদ বা চর্বি
সাধারণত: লিভার , কিডনী ও অন্যান্য
অংশে জমে থাকে আর তখন
দেখা দেয় বিভিন্ন সমস্যা, ভুগতে
হয় নানা রকম অসুখ বিসুখে এবং
সাথে থাকে সৌন্দর্যহানীর মানসিক
অস্বস্তি। কারণ একবার বেশি মাত্রায়
মেদ জমে গেলে তা কমানো
অনেক কষ্টসাধ্য কাজ। সকলেরই
উচিৎ এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা।
সুস্থ ও মেদবিহীন আকর্ষণীয়
দেহের গড়ন সবাই চায়। এই
প্রত্যাশা পূরণ খুব একটা কঠিন কাজ
নয়। পরিমিত সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং
নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে সুস্থ
ও সুন্দর শরীরের অধিকারী
হওয়া সম্ভব। যেহেতু পেটের
মেদ নিয়ে আমাদের দুঃচিন্তার
অন্ত নেই তাই আসুন জানি
আমাদের পেটে জমে থাকা
মেদের হাত থেকে আমরা
কিভাবে রেহাই পেতে পারি।
তার জন্য রইল বিশেষ কয়েকটি
কার্যকরী টিপস:
১) দিন শুরু করুন এক গ্লাস লেবুপানি
দিয়ে ।লেবুর রসের পরিমান
যতোটা সম্ভব বেশি রাখার চেষ্টা
করবেন। সাথে এক চামচ মধু
মিশাতে পারেন বা একটু লবন ।
সকালের নাশতাতে অন্য খাবার কম
খেয়ে একবাটি করে ফল
খেলে পেটের চর্বি থেকে
রেহাই পাওয়া যায়।
২) খাবার খাওয়ার আগে পানি
খাবেন। এতে খাবারের চাহিদা
কমে যাবে। দিনে প্রচুর পরিমাণ
পানি খাবেন ।পানি শরিরের পরিপাক
ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং ক্ষতিকর
সব কিছু শরীর থেকে বের
করে দেয়।
৩) আপনি যতটুকু খাবার খান তার
থেকে চিনি এবং কার্বোহাইড্রেট
বাদ দিতে হবে।
কার্বোহাইড্রেট সামান্য রাখতে
পারেন দেহের এনার্জির মাত্রা
ঠিক রাখার জন্য। কিন্তু অবশ্যই চিনি
বাদ দিতে হবে। মাছ এবং মুরগীর
মাংস, প্রচুর পরিমানে শাকসবজি এবং
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। ভাজা-
পোড়া জাতীয় খাবার কম খান।
সপ্তাহে একদিন খেতে পারেন
। চেষ্টা করুন কম তেলে রান্না
করা খাবার খেতে ।প্রতিদিন কিছু
কাঁচা সবজি এবং তাজা ফল খাওয়ার
অভ্যাস করবেন। বিশেষ করে
টক জাতীয় ফল। লবণ রাখবেন না
খাবারে। শুধু লবণ নয়, সোডিয়াম
সমৃদ্ধ সকল খাবার থেকে দূরে
থাকবেন।
৪) প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটুন। যে
দূরত্বে হেঁটেই যেতে
পারবেন সেখানে হেঁটে যাওয়ার
চেষ্টা করুন। প্রথম কিছুদিন ক্লান্ত
লাগলেও কয়েক দিন পর এটা
আপনার অভ্যাসে পরিণত হবে।
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটুন ।
৫) ফাস্টফুড খাবেন না।
মেয়োনেজ, পনির, সস, তেল,
মাখন এসব আপনার পেটে চর্বি
জমতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা
রাখে।
৬) পেটে মেদ জমা হবার
অন্যতম কারণ খাবার ঠিকভাবে হজম
না হওয়া। ঘুমাবার অন্তত দুই ঘন্টা
আগে রাতের খাবার খান এবং
খেয়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন। এতে
খাবার ভালোভাবে হজম হবে।
পেট বাড়বে না।
৭) অফিস বা বাসায় যতটা সম্ভব
লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
এটা পেটের জমে থাকা চর্বি
অপসারণের খুব ভাল উপায়। এতে
পেটের উপর চাপ পড়ে ও
আস্তে আস্তে চর্বি কমতে
থাকে।
৮) অসময়ে খিদে পেলে
হেলদি স্ন্যাক্স খান। লাঞ্চ এবং
ডিনারের মাঝে ৩/৪ ঘন্টা পর পর
হেলদি স্ন্যাক্স খেতে পারেন।
খুব খিদে পেলে শুকনো রুটি বা
টোস্ট বিস্কুট খান। ফলও
খেতে পারেন। লাউ বা অন্য
সবজির রস বা সিদ্ধ শাক সবজি
খেতে পারেন। বেশি রাতে
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার
কম খাবেন।
৯) চেষ্টা করুন সব সময় সোজা
হয়ে দাঁড়াতে, বসতে ও হাঁটতে।
কুঁজো হয়ে হাঁটবেন বা বসবেন
না। দীর্ঘ সময় কুজো হয়ে এক
স্থানে বসে থাকা, কম্পিউটারে
কাজ করা এসবের কারণে ভুঁড়ি
বেড়ে যায়। প্রতি এক ঘন্টা অন্তর
একবার উঠে দাঁড়ান ও সোজা
হয়ে বসুন।
১০) দিনে তিন বেলা ভারী খাবার
খাওয়ার চেয়ে ৫ বেলা কম করে
খান। একেবারে না খেয়ে থাকা
ঠিক নয়। ভাত খাবার চেয়ে ফল বা
সবজি বেশি করে খান। পেট
ভরবে কিন্তু ভুঁড়ি বাড়বে না।
কখনো স্টার্ভেশন ডায়েট
করবেন না। এই পদ্ধতিতে দ্রুত
রোগা হওয়া গেলেও শরীর
প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবে
নানা সমস্যা দেখা দেয় ।
১১) কোক বা সফট ড্রিঙ্কস
আপনাকে কিছুক্ষণের জন্যে
প্রশান্তি দিতে পারে কিন্তু এটা
আপনার পেটে চর্বি জমানোর
পেছনে দায়ী। একই ভাবে
বাজারের ফ্রুট জুসে থাকা প্রচুর
চিনি ও অন্যান্য উপাদান আপনার ভুঁড়ি
তৈরীতে সহায়ক। তাই এর বদলে
প্রচুর পানি, বাসায় বানানো ফলের
জুস, ফ্রুট সালাদ হতে পারে খুব
ভালো বিকল্প।
১২) খাবারে ব্যবহার করুন দারুচিনি,
গোলমরিচ ও আদা। এইসকল মশলা
পেটের মেদ দূর করতে বেশ
কার্যকরী। রসুনও পেটের
মেদ দূর করে। আদা এবং রসুন কাচা
চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন এবং
খাবারে ঝালের মাত্রা বাড়িয়ে দিন।
তবে অবশ্যই সহনশীল ঝাল
দেবেন। ঝাল পেটের চর্বি
কাটতে সাহায্য করে।
১৩) প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে
বাড়িতে ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়ামগুলো
করুন। এতে সময় একেবারেই
কম লাগে। অথচ আপনি কর্মক্ষম
বা ফিট থাকতে পারবেন এবং
পেটে অতিরিক্ত মেদ জমা হবে
না। প্রতিদিন একটা বিশেষ ব্যায়াম
করুন:
একটি বড় বল নিন। সেই বলের
ওপর দু পা তুলে দিয়ে চিত হয়ে
শুয়ে পরুন। যদি বল না থাকে তো
সমস্যা নেই আপনি একটা চেয়ার বা
চায়ের টেবিল বেঁছে নিতে
পারেন। এবার নিজের পায়ের পাতা
স্পর্শ করতে চেষ্টা করুন বা
উঠে বসতে চেষ্টা করুন।
এভাবে দৈনিক ২০ বার করুন।
আস্তে আস্তে বাড়িয়ে ৫০ বার
করে ফেলুন। পেটের ভুঁড়ি
কমাতে এটা একটা কার্যকরী
ব্যায়াম। খুব কম সময়ে পেটের
মেদ ঝরিয়ে সুন্দর আকারে
চলে আসবে আপনার শরীর।
ব্যস, শুধু কষ্ট করে অনুসরণ
করতে হবে এই বিশেষ কিছু
টিপস যা অনুসরণ করে খুব সহজে
ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন
আপনার দেহের বাড়তি মেদ ভুঁড়ি।
সুন্দর থাকুন, সুস্থ থাকুন।
(সংগৃহীত)
iloveallah2013 / 17/06/2014
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
সাম্প্রতিক পোষ্ট
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...
জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ
-
যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক? একে “মাযী” বলে। আর তা নাপাক। তা বের হলে উযূ নষ্ট হয়ে যায়। শরমগাহ...
-
গুপ্ত অভ্যাস (হস্তমৈথুন) ব্যবহার করা বৈধ কি? গুপ্ত অভ্যাস (হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্ত মৈথুন) করা কিতাব, সুন...
-
মনোমালিন্য ‘‘সংসার সাগরে দুঃখ-তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা।’’ কিন্তু সেই ভেলা ডুবে গেলে আর কার কি সাধ্য? স্বামী যদি স্...
-
*সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরানের ফজিলত গুলি কি কি? এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের অর্থঃ ✔1-রাতে ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ...
-
আপন মামাত, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোন, চাচী, মামি, স্ত্রীর বোন বা ভাবীর সাথে মুসাফাহাহ বৈধ কি? যার সাথে পু...
-
কেউ কেউ মনে করেন, আমার মন খুবই পরিস্কার। তাকে আমি মা, খালা, অথবা বোনের মতোই মনে করি ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে তাঁর সাথে মেলা-মেশা করতে অসুবিধা ...
-
কথা বলার ব্যপারে "ইসলামে"র শিক্ষা কি? ====== ১। কথা বলার পূর্বে সালাম দেয়া। সূরা নূরঃ ৬১ ২। সতর্কতার সাথে কথা বলা। (কে...
-
জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫টি অসাধারন হাদিস- *১-গীবত থেকে দূরে থাকা- আসমা বিনতে ইয়াযীদ হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যাক্তি তার (মুসলি...
-
# দোয়া_কবুল_না_হওয়ার_কারণগুলো_কি_কি ? ---------------------------------------------------------------------- কিছু পাপ আছে যা বান্দার মা...
-
প্রশ্ন:নাটক, সিনেমা দেখা , গল্পের বই পড়া কি জায়েজ ? =============================== উত্তর : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালা...
No comments:
Post a Comment