(৪১৩) ছিয়াম ভঙ্গকারী বিষয় কি কি?
ছিয়াম ভঙ্গকারী বিষয়গুলো হচ্ছে নিম্নরূপঃ
ক) স্ত্রী সহবাস।
খ) খাদ্য গ্রহণ।
গ) পানীয় গ্রহণ।
ঘ) উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত করা।
ঙ) খানা-পিনার অন্তর্ভুক্ত এমন কিছু গ্রহণ করা। যেমন সেলাইন ইত্যাদি।
চ) ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা।
ছ) শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করা।
জ) হায়েয বা নেফাসের রক্ত প্রবাহিত হওয়া।
উল্লেখিত বিষয়গুলোর দলীল নিম্নরূপঃ
সহবাস ও খানাপিনা সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন,
]فَالآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمْ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنْ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنْ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ[
“অতএব এক্ষণে তোমরা (রোযার রাত্রেও) তাদের সাথে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা লিপিবদ্ধ করেছেন তা অনুসন্ধান কর। এবং প্রত্যুষে (রাতের) কাল রেখা হতে (ফজরের) সাদা রেখা প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত তোমরা খাও ও পান কর; অতঃপর রাত্রি সমাগম পর্যন্ত তোমরা রোযা পূর্ণ কর।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৭)
উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত রোযা ভঙ্গের কারণ। দলীল, হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ্ তা’আলা রোযাদারের উদ্দেশ্যে বলেন, “সে খানা-পিনা ও উত্তেজনা পরিত্যাগ করে আমারই কারণে।” উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত করার ক্ষেত্রে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلَالِ كَانَ لَهُ أَجْرًا
“স্ত্রী সঙ্গমেও তোমাদের জন্য সাদকার ছওয়াব রয়েছে। সাহাবীগণ (আশ্চর্য হয়ে) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের একজন তার উত্তেজনার চাহিদা মেটাবে, আর এতে ছওয়াবের হকদার হবে এটা কেমন কথা? তিনি জবাবে বললেনঃ তোমরা কি মনে কর, সে যদি এই কাজ কোন হারাম স্থানে করত তবে পাপের অধিকারী হত না? তেমনি হালাল স্থানে ব্যবহার করার কারণে অবশ্যই সে পুরস্কারের অধিকারী হবে।” আর উত্তেজনার চাহিদা মেটানোর মাধ্যম হচ্ছে স্ববেগে বীর্য নির্গত হওয়া। এজন্য বিশুদ্ধ মত হচ্ছে, মযী বের হলে ছিয়াম বিনষ্ট হবে না, যদিও তা উত্তেজনা, চুম্বন ও স্পর্শ করার কারণে হয়।
খানা-পিনার অন্তর্ভুক্ত এমন কিছু গ্রহণ করা রোযা ভঙ্গের কারণ। যেমন, খানা-পিনার অভাব পূর্ণ করবে এরকম সেলাইন গ্রহণ করা। কেননা ইহা যদিও সরাসরি খানা-পিনা নয় কিন্তু ইহা খানা-পিনার কাজ করে এবং তার প্রয়োজন মেটায়। একারণেই তো ইহা দ্বারা শরীরের গঠন প্রকৃতি ঠিক থাকে, খানা-পিনার অভাব অনুভব করে না।
কিন্তু খানা-পিনার কাজ করে না এরকম ইন্জেকশন গ্রহণ করলে রোযা ভঙ্গ হবে না। চাই উহা শিরার মধ্যে প্রদান করা হোক বা পেশীতে বা শরীরের যে কোন স্থানে।
ইচ্ছাকৃত বমি করা। অর্থাৎ বমির মাধ্যমে পেটের মধ্যে যা আছে তা মুখ দিয়ে বাইরে বের করা। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ ذَرَعَهُ الْقَيْءُ فَلَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءٌ وَمَنِ اسْتَقَاءَ عَمْدًا فَلْيَقْضِ
“যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করবে সে যেন রোযা কাযা আদায় করে। কিন্তু অনিচ্ছাকৃত যার বমি হয় তার কোন কাযা নেই।” এর কারণ হচ্ছে, মানুষ বমি করলে তার পেট খাদ্যশুন্য হয়ে যায়। তখন তার এই শুন্যতা পূরণের প্রয়োজন পড়ে। এ কারণে আমরা বলব, ছিয়াম ফরয হলে কোন মানুষের বমি করা জায়েয নয়। কেননা বমি করলে তার ফরয ছিয়াম বিনষ্ট হয়ে যাবে। তবে অসুস্থতার কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে রোযা নষ্ট হবে না।
শিঙ্গা লাগানো। অর্থাৎ শিঙ্গা লাগানোর মাধ্যমে শরীর থেকে রক্ত বের করা। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, أَفْطَرَ الْحَاجِمُ وَالْمَحْجُومُ “যে ব্যক্তি শিঙ্গা লাগায় ও যার শিঙ্গা লাগানো হয় উভয়ের রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।”
হায়েয বা নেফাসের রক্ত প্রবাহিত হওয়া। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নারীদের সম্পর্কে বলেন, أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ “সে কি এমন নয় যে, ঋতুবতী হলে নামায পড়বে না ও রোযা রাখবে না।”
উল্লেখিত বিষয়গুলো নিম্ন লিখিত তিনটি শর্তের ভিত্তিতে রোযা ভঙ্গের কারণ হিসেবে গণ্য হবেঃ
১) জ্ঞান থাকা।
২) স্মরণ থাকা।
৩) ইচ্ছাকৃতভাবে করা।
প্রথম শর্তঃ জ্ঞান থাকা। অর্থাৎ উক্ত বিষয়ে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে শরীয়তের বিধান সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অথবা ছিয়ামের জন্য যে সময় নির্দিষ্ট সে সম্পর্কে অজ্ঞ থাকা।
যদি শরীয়তের বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে তবে তার ছিয়াম বিশুদ্ধ হবে। কেননা আল্লাহ্ বলেন, رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا “হে আমাদের পালনকর্তা আমরা যদি ভুলে যাই বা ভুলক্রমে কোন কিছু করে ফেলি, তবে আমাদের পাকড়াও করবেন না।” (সূরা বাক্বারাঃ ২৮৬) আল্লাহ্ বলেন, আমি তাই করলাম। আল্লাহ্ আরো বলেন,
]وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ[
“ভুলক্রমে তোমরা যা করে ফেল সে সম্পর্কে তোমাদের কোন গুনাহ্ নেই। কিন্তু তোমাদের অন্তর যার ইচ্ছা করে তার কথা ভিন্ন।” (সূরা আহযাবঃ ৫)
সুন্নাহ্ থেকে ছিয়ামের ক্ষেত্রে বিশেষ দলীল হচ্ছে, ছহীহ্ হাদীছে আ’দী বিন হাতেম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রোযা রাখার উদ্দেশ্যে শেষ রাতে উট বাঁধার দু‘টো রশী বালিশের নীচে রেখে দিলেন। একটি কালো রঙের অন্যটির রং সাদা। এরপর খানা-পিনা করতে থাকলেন। যখন স্বাভাবিক দৃষ্টিতে সাদা ও কালো রশী চিনতে পারলেন তখন খানা-পিনা বন্ধ করলেন। সকালে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর দরবারে গিয়ে বিষয়টি উল্লেখ করলে তিনি তাকে বললেন, কুরআনের আয়াতে সাদা ও কালো সুতা বলতে আমাদের পরিচিত সূতা বা রশী উদ্দেশ্য নয়। এ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, সাদা সুতা বলতে দিনের শ্রভ্রতা (সুবহে সাদেক বা ফজর হওয়া) আর কালো সূতা বলতে রাতের অন্ধকার উদ্দেশ্য। কিন্তু নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ছিয়াম কাযা আদায় করার আদেশ করেন নি। কেননা বিষয়টি সম্পর্কে তিনি ছিলেন অজ্ঞ। ভেবেছিলেন এটাই আয়াতের অর্থ।
আর ছিয়ামের জন্য যে সময় নির্দিষ্ট সে সম্পর্কে অজ্ঞ থাকলেও তার ছিয়াম বিশুদ্ধ। দলীল: ছহীহ্ বুখারীতে আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমরা একদা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যুগে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে ইফতার করে নিয়েছিলাম। তার কিছুক্ষণ পর আবার সূর্য দেখা গিয়েছিল।” কিন্তু নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে উক্ত ছিয়ামের কাযা আদায় করার আদেশ করেন নি। কেননা কাযা আদায় করা ওয়াজিব হলে তিনি অবশ্যই সে আদেশ প্রদান করতেন। আর সে আদেশ থাকলে আমাদের কাছেও তার বর্ণনা পৌঁছতো। কেননা আল্লাহ্ বলেন, إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ “নিশ্চয় আমি যিকির অবতীর্ণ করেছি আর আমিই তার সংরক্ষণকারী।” (সূরা হিজ্রঃ ৯) অতএব প্রয়োজন থাকা সত্বেও যখন এক্ষেত্রে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না, তাই বুঝা যায় যে, তিনি তাদেরকে এর কাযা আদায় করার নির্দেশ প্রদান করেন নি। অতএব অজ্ঞতা বশতঃ দিন থাকতেই পানাহার করে ফেললে তার কাযা আদায় করা ওয়াজিব নয়। জানার সাথে সাথে পানাহার থেকে বিরত থাকবে এবং দিনের বাকী অংশ ছিয়াম অবস্থায় অতিবাহিত করবে।
অনুরূপভাবে কোন লোক যদি খানা-পিনা করে এই ভেবে যে এখনও রাত আছে- ফজর হয়নি। কিন্তু পরে জানলো যে সে ফজর হওয়ার পরই পানাহার করেছে, তবে তার ছিয়াম বিশুদ্ধ হবে। তাকে কাযা আদায় করতে হবে না। কেননা সে ছিল অজ্ঞ।
দ্বিতীয় শর্তঃ স্মরণ থাকা। অর্থাৎ সে যে রোযা রেখেছে একথা ভুলে না যাওয়া। অতএব রোযা রেখে ভুলক্রমে কোন মানুষ যদি খানা-পিনা করে ফেলে, তবে তার ছিয়াম বিশুদ্ধ এবং তাকে কাযা আদায় করতে হবে না। কেননা আল্লাহ্ বলেন, رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا “হে আমাদের পালনকর্তা আমরা যদি ভুলে যাই বা ভুলক্রমে কোন কিছু করে ফেলি, তবে আমাদের পাকড়াও করবেন না।” (সূরা বাক্বারাঃ ২৮৬) আল্লাহ্ বলেন, আমি তাই করলাম। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ نَسِيَ وَهُوَ صَائِمٌ فَأَكَلَ أَوْ شَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللَّهُ وَسَقَاهُ
“যে ব্যক্তি রোযা রেখে ভুলক্রমে পানাহার করে, সে যেন তার ছিয়াম পূর্ণ করে। কেননা আল্লাহ্ই তাকে খাইয়েছেন ও পান করিয়েছেন।”
তৃতীয় শর্তঃ ইচ্ছাকৃত করা। অর্থাৎ রোযাদার নিজ ইচ্ছায় উক্ত রোযা ভঙ্গের কাজে লিপ্ত হবে। অনিচ্ছাকৃতভাবে হলে তার ছিয়াম বিশুদ্ধ হবে চাই তাকে জোর জবরদস্তী করা হোক বা না হোক। কেননা বাধ্য করে কুফরীকারীকে আল্লাহ্ বলেন,
]مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنْ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ[
“যার উপর জবরদস্তী করা হয়েছে এবং তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত যে কেউ বিশ্বাসী হওয়ার পর আল্লাহ্তে অবিশ্বাসী হয় এবং কুফরীর জন্য মন উম্মুক্ত করে দেয় তাদের উপর আপতিত হবে আল্লাহ্র গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে শাস্তি।” (সূরা নাহালঃ ১০৬) বাধ্য অবস্থায় কুফরীতে লিপ্ত হওয়ার পাপ যদি ক্ষমা করা হয়; তবে তার নিম্ন পর্যায়ের পাপে বাধ্য হয়ে লিপ্ত হলে ক্ষমা হওয়াটা অধিক যুক্তিযুক্ত। তাছাড়া হাদীছে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন,
إِنَّ اللَّهَ وَضَعَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
“নিশ্চয় আল্লাহ্ তা’আলা আমার উম্মতের ভুল ক্রমে করে ফেলা এবং আবশ্যিক বিষয় করতে ভুলে যাওয়া ও বাধ্য অবস্থায় করে ফেলা পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন।”
এভিত্তিতে কারো নাকে যদি ধুলা ঢুকে পড়ে এবং তার স্বাদ গলায় পৌঁছে ও পেটের ভিতর প্রবেশ করে, তবে তার রোযা ভঙ্গ হবে না। কেননা সে এটার ইচ্ছা করেনি।
অনুরূপভাবে কাউকে যদি ইফতার করতে জবরদসি- করা হয় আর সে বাধ্য হয়ে ইফতার করে ফেলে, তবে তার ছিয়াম বিশুদ্ধ। কেননা সে অনিচ্ছাকৃতভাবে একাজ করেছে।
এমনিভাবে ঘুমন্ত ব্যক্তির স্বপ্নদোষ হলে, তার ছিয়ামও বিশুদ্ধ। কেননা সে ছিল ঘুমন্ত, ইচ্ছাও ছিল না তার একাজে। কোন ব্যক্তি যদি স্ত্রীকে তার সাথে সহবাস করতে বাধ্য করে এবং স্ত্রী বাধ্যগত হয়ে সহবাসে লিপ্ত হয়, তবে তার (স্ত্রীর) ছিয়াম বিশুদ্ধ। কেননা একাজে তার কোন এখতিয়ার ছিল না।
একটি মাসআলাঃ খুবই সতর্ক থাকা উচিৎ। কোন মানুষ যদি রামাযানে দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়, তবে নিম্ন লিখিত পাঁচটি বিধান তার ক্ষেত্রে প্রজোয্য হবেঃ
১) সে গুনাহগার হবে।
২) দিনের বাকী অংশ তাকে ছিয়াম অবস্থায় কাটাতে হবে।
৩) তার উক্ত ছিয়াম বিনষ্ট হবে।
৪) তাকে কাযা আদায় করতে হবে।
৫) কাফ্ফারা আদায় করতে হবে।
সহবাসে লিপ্ত হলে কি ধরণের কাফ্ফারা দিতে হবে এ সম্পর্কে জানা থাক বা নাজানা থাক কোন পার্থক্য নেই। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি রামাযানের দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হল- রোযাও তার উপর ফরয- কিন্তু তার এই জ্ঞান নেই যে, একাজ করলে তাকে এত কাফ্ফারা দিতে হবে, তবুও তার উপর উল্লেখিত বিধান সমূহ প্রজোয্য হবে। কেননা সে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভঙ্গ করেছে। আর ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভঙ্গের কাজে লিপ্ত হলে, তার উপর যাবতীয় বিধান প্রজোয্য হবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেন, “কিসে তোমাকে ধ্বংস করল?” সে বলল, রামাযানের রোযা রেখে আমি স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে কাফ্ফারা আদায় করার আদেশ করলেন। অথচ লোকটি জানতো না যে তাকে কাফ্ফারা দিতে হবে কি হবে না।
আমরা বলেছি, তার উপর রোযা ফরয। অর্থাৎ সে মুসাফির নয় নিজ গৃহে মুক্বীম হিসেবে অবস্থান করছে। যদি সফরে থেকে কোন ব্যক্তি রোযা ভঙ্গ করে এবং স্ত্রী সহবাস করে তবে কাফ্ফারা দিতে হবেনা। কেননা সফর অবস্থায় রোযা রাখা ফরয নয়। রোযা ভঙ্গ করা ও রাখার ব্যাপারে সে স্বাধীন। তবে ভঙ্গ করলে পরে কাযা আদায় করতে হবে।
No comments:
Post a Comment