Thursday, February 1, 2018

ইসলামে খাবার গ্রহণের আদব

ইসলামে খাবার গ্রহণের আদব
ﺍﻟﺤﻤﺪ ﻟﻠﻪ ﺭﺏ ﺍﻟﻌﺎﻟﻤﻴﻦ، ﻭﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺑﺎﺭﻙ ﻋﻠﻰ ﻧﺒﻴﻨﺎ
ﻣﺤﻤﺪٍ ﻭﻋﻠﻰ ﺁﻟﻪ ﻭﺻﺤﺒﻪ ﺃﺟﻤﻌﻴﻦ. ﻭﺑﻌﺪ :
বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে খাবার গ্রহণের আদব
বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই।
কেননা খাওয়া-দাওয়া আমাদের
প্রাত্যহিক বিষয়। তাই এ বিষয়ের আদব ভাল
করে রপ্ত করাও জরুরি। উলামগণ এ
বিষয়টিকে বিশ্লিষ্ট
আকারে বর্ণনা করেছেন।

ব্যাখ্যা করেছেন বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ
থেকে। কেননা এ বিষয়ে বহু হাদীস, ও
শরয়ী টেক্সট রয়েছে। শরীয়ত
মানবজীবনের সকল দিককেই
যথার্থরূপে গুরুত্ব দিয়েছে। উপরন্তু
যে দিকটি মুসলমানের
জীবনে বেশি উপস্থিত সে দিকটির উপর
শরীয়তের গুরুত্ব প্রদানের মাত্রাও
সমানুপাতিক হারে অধিক।
• খাদ্য বিষয়ক অথবা খাবার গ্রহণের আদব
অনেক; খাবার গ্রহণের আদবের মধ্যে হল:
এক: খাবার গ্রহণের পূর্বে হাত ধৌত করা।
নাসায়ী শরীফের একটি সহীহ
হাদীসে এসেছে,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম ‘
যখন জুনুব (স্বামী-স্ত্রী মিলনজনিত
অপবিত্র) অবস্থায় ঘুমাতে যেতেন তখন
তিনি ওজু করে নিতেন। আর যখন
তিনি খাবার গ্রহণের ইচ্ছা করতেন তখন
হাত ধুয়ে নিতেন।)
হাদীসটি আলোচ্য মাসআলার
ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দুই: খাবার গ্রহণের পূর্বে আল্লাহর নাম
নেয়া। এ সম্পর্কে অনেক হাদীস
এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘ হে বালক! আল্লাহর নাম নাও’ ( অর্থাৎ
বিসমিল্লাহ বল)
বরং আরো স্পষ্ট ভাষায়
এভাবে এসেছে :
( হে বালক! যখন তুমি খাবার গ্রহণ
করতে ইচ্ছা করবে, বল, বিসমিল্লাহ।
তিন: ডান হাত দিয়ে খাবার গ্রহণ করা।
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
( ডান হাত দিয়ে খাও)
চার: খাবারের নিকটবর্তী হয়ে খাবার
গ্রহণ করা, হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
হে বৎস! কাছে এসো’।
পাঁচ: খাবার গ্রহণকারী তার কাছের অংশ
থেকে খাবে, হাদীসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
(তোমার কাছের অংশ থেকে খাও)
ছয়: বিচ্ছিন্নভাবে নয়
বরং সম্মিলিতভাবে খাবার গ্রহণ করা,
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
(তোমরা জমায়েত হয়ে খাবার গ্রহণ কর,
তাতে আল্লাহর নাম স্মরণ কর।
খাবারে তোমাদেরকে বরকত
দেয়া হবে)
জমায়েত হয়ে খাবার গ্রহণের একটি ফল
এই যে এ অবস্থায় একজনের খাবার
দু’জনের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়, আর
দু’জনেরটা তিনজন বা চারজনের জন্য। আর
চারজনেরটা পাঁচ অথবা ছয়জনের জন্য।
হাদীসটি বিশুদ্ধ এবং ইবনে মাজায় বর্ণিত
হয়েছে।
সাত ও আট: খাবার শেষে রুমাল
অথবা অন্যকিছু দিয়ে হাত না মুছা যতক্ষণ
না তা চেটে অথবা চাটিয়ে পরিচ্ছন
করা হবে।
নাসায়ী শরীফের সহীহ
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
(তোমাদের মধ্যে কেউ যখন খাবার
খাবে, সে যেন তার হাত না মুছে যতক্ষণ
না সে তা চেটে অথবা অন্যকে দিয়ে
চাটিয়ে নেয়। আর থালা যেন
উঠিয়ে না নেয় যতক্ষণ না তা লেহন
করা হবে; কেননা খাবারের শেষ
অংশটায় বরকত রয়েছে।)
এটা হল খাবারের আট নম্বর আদব। অর্থাৎ
থালা লেহন করে খাবারের শেষ
অংশের বরকত নেওয়া।
নয়: খাবারের
লোকমা পড়ে গেলে তা পরিত্যাগ
না করা; কেননা হাদীসে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
(যখন তোমাদের কেউ খাবার খায়
এবং তার হাত থেকে লোকমা পড়ে যায়,
তাহলে যে অংশে (ময়লা লেগেছে
বলে) সন্দেহ হয় তা সরিয়ে ফেলবে,
এবং ভক্ষণ করবে। শয়তানের জন্য
ফেলে রাখবে না।)
দশ: সদ্য রান্না করা খাবারের
ধোঁয়া নিঃশেষ হয়ে স্বাভাবিক
হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা;
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
( ওটা অধিক বরকতের কারণ)
এগার: খাবারে ফুৎকার না করা,
খাবারে ফুৎকারের হয়ত ক্ষতির দিক
রয়েছে যা আমাদের জানা নেই।
বার: এক পার্শ্ব থেকে খাবার খাওয়া;
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
( তোমরা খাবারের পার্শ্ব থেকে খাও,
মধ্যভাগ ছেড়ে দাও,
ওতে তোমাদেরকে বরকত দেওয়া হবে।)
অন্য এক হাদীসে তিনি বলেছেন,
( বিসমিল্লাহ বলে খাবারের পার্শ্ব
থেকে খাও, তার প্রধান অংশ
ছেড়ে দাও; কেননা খাবারের বরকত উপর
দিক থেকে আসে।)
তিনি আরো বলেছেন,
( বরকত, পাত্রের মধ্যখানে, অতঃপর
তোমরা পার্শ্ব থেকে খাও, প্রধান অংশ
থেকে খেয়ো না।)
তের: মাটিতে বসে খাওয়া;
কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
(একজন দাস যেভাবে খায় আমিও
সেভাবে খাই, একজন দাস
যেভাবে বসে আমিও সেভাবে বসি; আর
আমি তো দাস ভিন্ন অন্য কিছু নই।)
অন্য এক হাদীসে বলেছেন,
(একজন দাস যেভাবে খারার খায় আমিও
সেভাবে খাবার খাই, আমার আত্মা যার
হাতে তার কসম, দুনিয়া যদি আল্লাহর
কাছে একটি মাছির পাখা পরিমাণ
ওজনসম্পন্ন হত,
তাহলে কোনো কাফেরকে তিনি এক
ঢোক পানিও খেতে দিতেন না।)
চৌদ্দ: খাদেম যখন পরিবেশনের জন্য
খাবার নিয়ে আসে তখন তাকে ওই খাবার
থেকে কিছু দেয়া; কেননা বিশুদ্ধ
হাদীসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
(যখন কারও কাছে তার খাদেম-
যে খাবার তৈরি ও ধোঁয়ার কষ্ট
সয়েছে- খাবার নিয়ে আসবে সে যেন
তাকে তার সঙ্গেই বসায়, আর
যদি না বসায় তাহলে যেন এক
লোকমা বা দুই লোকমা তাকে দেয়।)
এতে একদিকে রন্ধনকারী খাদেম,
যে খাবার পাকাতে শ্রম দিয়েছে,
ধোঁয়া আগুনের তাপ ইত্যাদি সহ্য
করেছে, তাকে সাথে বসিয়ে পুরস্কৃত
করার আদর্শ পাওয়া যাচ্ছে, অন্য
দিকে তাওয়াজু ও বিনম্রতারও একটি দিক
রয়েছে।
পনের: খাবার পছন্দ না হলে উহ্ আহ্
না করা, বিরক্তিভাব প্রকাশ না করা,
বরং কেবল গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা।
হাদীসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
(যদি তার মনঃপূত হয় খাবে, অন্যথায়
রেখে দিবে।)
অন্য এক হাদীসে এসেছে,
(নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যখন গুইসাব
খেতে দেয়া হল,
তিনি তা রেখে দিলেন এবং বললেন,
এটা আমার কাওমের এলাকায় নেই। তাই
এতে আগ্রহ পাচ্ছি না।)
ষোল: খেজুরে কোনো পোকা আছে কি
-না তা দেখে নেয়া। আবু দাউদ শরীফের
একটি সহীহ হাদীসে এসেছে,
(আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কাছে পোকাবিশিষ্ট খেজুর
নিয়ে আসা হত, অতঃপর তিনি তা তালাশ
করে বের করতেন)
সতের: খাবারের পরে দোআ পড়া।
হাদীসে অনেক দোআর কথা এসেছে,
তন্মধ্যে একটি হল,(আলহামদু লিল্লাহ) বলা।
আঠার: কেউ যখন গোশ্ত পাকাবে তার
উচিত হবে ঝোল বাড়িয়ে দেয়া,
এবং তা থেকে প্রতিবেশীকে দেয়া।
হাদীসে এসেছে,
(তোমরা যখন গোশ্ত পাকাবে,
তাতে ঝোল বাড়িয়ে দেবে,
প্রতিবেশীর
ক্ষেত্রে এটা একটা বদান্যতা।)
তিনি আরো বলেছেন,
(তোমাদের মধ্যে যখন কেউ
পাতিলে রান্না করবে, সে যেন তার
ঝোল বাড়িয়ে দেয়,
এবং তা থেকে প্রতিবেশীকে দেয়।)
অর্থাৎ খাবার ও ঝোল উভয়টাই।
ঊনিশ: খাবারে মাছি পড়ে গেলে
করণীয় কী ? এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে একটি আদব আমরা জানতে পারি,
আর তা হল, হাদীসে এসেছে যে,
(তোমাদের কারও
পাত্রে মাছি পড়ে গেলে সে যেন
তা ডুবিয়ে দেয়, কেননা ওর এক ডানায়
রোগ ও অন্য ডানায় শেফা রয়েছে।
মাছির যে ডানায় রোগ
সেটা দিয়ে সে প্রতিরোধ করে।)
অন্য এক বর্ণায় এসেছে,
(আর মাছি বিষটাকে এগিয়ে দেয়,
শেফাটাকে পিছিয়ে রাখে, অতঃপর ওর
পুরোটা ডুবিয়ে দিলে তা চলে যায়)
বিশ: বিরক্তিকর উচ্চ আওয়াজে খাবার
না চিবানো,
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
( তোমার এই বিরক্তিকর উচ্চ আওয়াজ বন্ধ
কর)
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
( তোমার এই বিরক্তিকর উচ্চ আওয়াজ
হতে বারণ হও।)
একুশ: হাত ধুয়ে পরিষ্কার করা, বিশেষ
করে ঘুমানোর পূর্বে,
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
(তোমাদের মধ্যে যখন কেউ
ঘুমাতে যাবে আর তার হাতে খাবারের
গন্ধ রয়েছে- যেমন গোশ্ত, চর্বি ইত্যাদির
গন্ধ- সে যেন তা ধুয়ে নেয়, অন্যথায়
কোনো কিছু হলে তার দায়িত্ব তাকেই
বহন করতে হবে।)
বাইশ: রাতের খাবার রাখা হলে এশার
সালাতের সময়
হয়ে গেলে প্রথমে খাবার
খেয়ে নেবে, খাবার
রেখে তাড়াহুড়া করবে না।
তেইশ: খাবার গ্রহণের সময় বসার পদ্ধতির
প্রতি নজর দেয়া জরুরি। ডান পা দাঁড়
করিয়ে বাঁ পায়ের উপর বসতে হবে।
অথবা উবু হয়ে বসবে। হেলান
দিয়ে বসবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
( আর আমি, আমি তো হেলান দিয়ে খাই
না।)
চব্বিশ: আর পেটের উপর শুয়ে খাবে না।
কেননা হাদীসে এভাবে খাওয়ার
ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
পঁচিশ: পূর্ণরূপে তৃপ্ত না হওয়া;
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
একতৃতীয়াংশ খাবারের জন্য,
একতৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য, আরেক
তৃতীয়াংশ নিজের জন্য। বনি আদমের
তো মাত্র কয়েক লোকমাই যথেষ্ট
যা তার মেরুদণ্ড সোজা রাখবে।
রকমারি খাবার ও
পানীয়ে অপচয়কে তিনি নিন্দা
করেছেন।
ছাব্বিশ: তিন আঙ্গুল দিয়ে খাবার গ্রহণ
করা; হাদীসে এসেছে,
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন আঙ্গুল
দিয়ে খেতেন। আর তিনি যখন খাবার
খেতেন, তিনি তাঁর আঙ্গুল
তিনটি চেটে খেতেন।
সাতাশ: অন্য কারও সাথে খাওয়ার সময় দুই
খেজুর অথবা এ জাতীয় খাবার
একসাথে না নেয়া। হাদীসে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘ইকরান’ তথা দু’ খেজুর
একসাথে নেয়াকে নিষেধ করেছেন।
ইকরান হল দুই অথবা ততোধিক খেজুর, ফল
ইত্যাদি যা হিসেব করা যায়, এগুলোর
মধ্যে দুটি একসাথে উঠিয়ে নেয়া
অনুচিত। তবে যদি তার সাথী অনুমতি দেয়
সে ক্ষেত্রে অন্য কথা।
হাদীসে এসেছে, ( তবে যদি ব্যক্তি তার
ভাইয়ের কাছে অনুমতি চায়।)
আটাশ: হারাম খাবারবিশিষ্ট
দস্তরখানে না বসা। এটা অবশ্য আদব নয়
বরং বিধান। হাদীসে এসেছে,
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন
দস্তরখানে বসতে নিষেধ করেছেন
যেখানে মদ্যপান করা হয়।)
ঊনত্রিশ: খাবারের ক্ষেত্রে ভারসাম্য
রক্ষা করা, এমনকী খাবারের ধরন-ধারণের
ক্ষেত্রেও,
এর প্রমাণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত
হাদীস,
( রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তরমুজের
সাথে তাজা খেজুর খেতেন,
এবং বলতেন, (আমি এটার তপ্ততা ওটার
শীতলতা দিয়ে দমন করি। আর ওটার
শীতলতা এটার তপ্ততা দিয়ে দমন করি।)
এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের খাবারের
প্রকার ও ধরনে ভারসাম্য রক্ষার
বিষয়টি নির্দেশ করছে।
তিরিশ: পিঁয়াজ, রসুন, এবং লীক (গন্ধে ও
স্বাদে পিঁয়াজের মতো সবজি) খাওয়ার
পর মসজিদে না যাওয়া।
একত্রিশ: ইসলামী শরীয়ত যেসব
খাবারের ফজিলত
বর্ণনা করেছে সে সবের
প্রতি গুরুত্বারোপ করা।
হাদীসে এসেছে,
(যে বাড়িতে খেজুর নেই
সে বাড়িতে যেন খাবারই নেই।)
অন্য এক হাদীসে এসেছে,
(যে বাড়িতে খেজুর নেই সে বাড়ীর
লোকজন ক্ষুধার্ত।
আরেক হাদীসে এসেছে,
( তোমরা তেল খাও ও শরীরে ব্যবহার
কর।)
অর্থাৎ খাবার হিসেবে খেজুরের
প্রতি গুরুত্ব এসেছে, যাইতুনের তেল
(ওলিভ ওয়েল) এর প্রতি গুরুত্ব এসেছে।
তদ্রুপভাবে সিরকা (ভিনেগার) এর প্রতিও
গুরুত্ব এসেছে। হাদীসে এসেছে,
(সিরকা, সুন্দর এক ব্যঞ্জন।)
এগুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার পর যার যার
পছন্দতম হালাল খাদ্য খাবে। উদাহরণত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম রান ও কদু পছন্দ
করতেন।
খাবার বিষয়ে যত্ন
সম্পর্কে আরো বলা যায়
যে ইসলামী শরীয়ত রুটিকে সম্মান
করতে বলেছে।
সে হিসেবে রুটি যেখানে সেখানে
ফেলে দেওয়া, রুটির সাথে তাচ্ছিল্যপূর্ণ
আচরণ করা উচিত হবে না।
হাদীসে এসেছে,
( তোমরা রুটিকে সম্মান কর।)
তবে রুটি চাকু দিয়ে কাটা যাবে না এমন
কোনো কথা আসে নি। রুটিকে কেবল
সম্মান করতেই বলা হয়েছে। এ
কারণে রুটি ফেলে দেয়া যাবে না।
যদি কেউ তা দেখে তবে অন্য খাবারের
তুলনায় বেশি গুরুত্ব দেবে।
সে হিসেবে মাটিতে ফেলে রাখা
অবস্থায় যদি কেউ কোন রুটি পায়
তবে তা উঠিয়ে উঁচু জায়গায় রাখবে,
অথবা জন্তু ইত্যাদিকে খাওয়াবে।
খাবারের আদব ও তার কিছু আহকাম
সম্পর্কে এখানে আলোচনা করলাম।
ওলিমা, দাওয়াত ও
মেহমানদারি সম্পর্কেও আদব আহকাম
রয়েছে, উদাহরণত দাওয়াতকারী মুসলমান
হলে, সে খাবার কোথা হতে পেল,
অথবা কোত্থেকে ক্রয়
করেছে ইত্যাদি প্রশ্ন না করা।
সমাপ্ত
লেখক: মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ
অনুবাদক: আবু শুআইব মুহাম্মাদ সিদ্দীক
সূত্র: ইসলামহাউজ

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ