🔘 ৬) না বুঝে কুরআন তিলাওয়াত করলে সওয়াব হবে না বলে ধারণা করা। এ ধারণা ঠিক নয়। সঠিক কথা হচ্ছে, বুঝে হোক অথবা না বুঝে হোক কুরআন পাঠ করলে প্রতিটি অক্ষরে ১টি করে (যা ১০টি নেকীর সমান) সওয়াব অর্জিত হবে। তবে কুরআন বুঝার চেষ্টা করা ও কুরআন নিয়ে গবেষণা করা নি:সন্দেহে উত্তম কাজ।
🔘 ৭) কুরআন তেলাওয়াতের শেষে ‘সাদাকাল্লাহুল আজীম’ (আল্লাহ সত্য বলেছেন) বলাকে সুন্নত মনে করা ঠিক নয়। কারণ, এর কোন শরয়ী ভিত্তি নাই। সুতরাং এটিকে নিয়ম করে পাঠ করা ঠিক নয়।
🔘 ৮) কুরআন হাতে নিয়েই তাতে চুমু খাওয়া। এটিকে নিয়ম করে নেয়া ঠিক নয়। তবে হঠাৎ আবেগে চুমু খেলে তাতে সমস্যা নাই।
🔘 ৯) এ বিশ্বাস করা যে, হাদীস মানার প্রয়োজন নাই। কেবল কুরআন মানাই যথেষ্ট। এটি মুসলিম উম্মাহকে পথভ্রষ্ট করার এক গভীর ষড়যন্ত্র। হাদীস ব্যতিরেকে কুরআন বুঝা আদৌ সম্ভব নয়।
🔘 ১০) সিডি, ক্যাসেট, মোবাইল ইত্যাদিতে কুরআন তিলাওয়াত চালু করে গল্প-গুজবে ব্যস্ত থাকা বা তার প্রতি অমনোযোগিতা প্রকাশ করা। এটি কুরআনের প্রতি অবহেলার শামিল। আল্লাহ তায়ালা কুরআন তিলাওয়াত হলে চুপ থেকে মনোযোগ সহকারে শুনার নির্দেশ নিয়েছেন। (সূরা আরাফ: ২০৪)
🔘 ১১) মোবাইলে রিংটোন হিসেবে কুরআন তিলাওয়াত রাখা উচিৎ নয়। কারণ, তা টয়লেট বা অপবিত্র স্থানে বেজে উঠতে পারে। তাছাড়া রিং বাজলে আল্লাহর কথাকে কেটে দিয়ে মানুষের সাথে কথা বলা শুরু হয়। আল্লাহর বাণীর সাথে এরূপ আচরণ শোভনীয় নয়। অনুরূপভাবে মোবাইলের ওয়াল পেপার হিসেবে কুরআনের আয়াত সম্বলিত ছবি সেট করা উচিৎ নয়। কারণ, নাপাক স্থানে তা প্রকাশিত হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
🔘 ১২) কুরআনের আয়াতকে ঘরের শোভা বর্ধন, বরকত নাজিল বা জিন-ভুত, যাদু, অসুখ-বিসুখ বা কোন কিছুর ক্ষতির আশংকা থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে লটকায়ে রাখা নাজায়েজ। তবে শিক্ষা বা স্মরণ করার উদ্দেশ্য হলে তা জায়েজ আছে।
🔘 ১৩) কুরআনের আয়াত দ্বারা ক্যালিগ্রাফি (Calligraphy) বানানো উচিৎ নয়। কারণ, তা মানুষের ভুল পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া মানুষ তা ঘরের শোভা বর্দ্ধনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে থাকে।
🔘 ১৪) কুরআন আয়াত লিখে তাবিজ ব্যবহার করা জায়েজ নয়। যদিও এটি মতো বিরোধপূর্ণ বিষয়। তবে সঠিক হল তা জায়েজ নয়। কারণ, এ মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মৌখিক, কর্মগত বা সম্মতি জ্ঞাপক কোন অনুমোদন পাওয়া যায় না। অনুরূপভাবে তথাকথিত ‘কুরআনের নকশা’ দ্বারা তাবিজ ব্যবহার করা হারাম। অবশ্য, অসুখ-বিসুখ, জিনের আক্রমন, যাদু-টোনা ইত্যাদির প্রভাব কাটাতে কুরআনের আয়াত পড়ে ঝাড়-ফুঁক দেয়া শুধু শরীয়ত সম্মতই না বরং তা সবোর্ত্তম চিকিৎসা।
------------------------------------
গ্রন্থনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
No comments:
Post a Comment