মেহমানের খাতিরে অতিরঞ্জন
মেহমানের
খাতিরে বাড়াবাড়ি করা মেযবানের জন্য বৈধ নয়। স্বাভাবিকভাবে যতটা খাওয়াবার
তার সাধ্য আছে তার থেকে বেশী খাওয়াবার চেষ্টা করা এবং তার জন্য নতুন নতুন
দামী দামী ও নানা রকমের চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয় এবং টক-মিষ্টি-ঝাল-লবণ
জাতীয় নানা খাদ্য প্রস্ত্তত অথবা ক্রয় করা মেযবানীতে অতিরঞ্জন করার
পর্যায়ভুক্ত।
রাসুল (সাঃ) বলেন,‘‘কেউ যেন তার মেহমানের জন্য অবশ্যই সাধ্যাতীত কষ্টবরণ না করে।’’[1] উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) বলেন, ‘আমাদেরকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছে।’[2]
মেহমানকে সওয়াবের নিয়তে খাওয়ালে সওয়াব
আছে। কিন্তু তাতে সুনাম নেওয়ার উদ্দেশ্য থাকলে সওয়াব বাতিল হয়ে যাবে। নাম
ছুটাবার উদ্দেশ্যে খরচে ঘাম ছুটানোর মাঝে কোন লাভ নেই। সওয়াবও হবে না,
উপরন্তু কোন কিছুতে একটু ত্রুটি ঘটলে বদনাম থেকে রেহাইও পাওয়া যাবে না। আর
নাম ছুটলেও তার দামই বা কি আছে?
দাওয়াতে কম্পিটিশন করাও বৈধ নয়। যেমনঃ
অমুক ভাতের সাথে গোমাংস ও মাছ খাইয়েছে, আমি খাসির মাংস ও মাছ খাওয়াব।
পরবর্তীতে অমুক আবার তা দেখে খাসির মাংস ও মাছের সাথে মুরগীর মাংসও যোগ করে
দিল। আর এইভাবে প্রতিযোগিতার ময়দানে অনেকেই চায় যে, খাওয়ানোর ব্যাপারে সেই
প্রথম স্থান অধিকার করবে। অথচ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘প্রতিযোগীদের খানা
খেতে নিষেধ করা হয়েছে।’[3] যেহেতু তাতে রয়েছে লোকপ্রদর্শন ও পরস্পর গর্ব
প্রকাশ করার প্রতিযোগিতা। পক্ষান্তরে ইসলাম আমাদেরকে পানাহারে অপচয় করতে
নিষেধ করে। মহান আল্লাহ বলেন,
يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ
অর্থাৎ, তোমরা পানাহার কর, কিন্তু অপচয় করো না। তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।[4]وَآتِ ذَا الْقُرْبَى حَقَّهُ وَالْمِسْكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَلَا تُبَذِّرْ تَبْذِيرًا - إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا
অর্থাৎ, আর তোমরা কিছুতেই অপব্যয় করো না। যারা অপব্যয় করে তারা অবশ্যই শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।’’[5]আর প্রিয় রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘‘যা ইচ্ছা খাও-পর, তবে তাতে যেন দু’টি জিনিস না থাকে; অপচয় ও গর্ব।’’[6]
No comments:
Post a Comment