সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন: কিছু পরামর্শ
Posted by আব্দুল্লাহিল হাদী
সঞ্চয় মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সঞ্চয় ছাড়া চলা আর পালবিহীন নৌকায় ওঠা যেন একই কথা। ভবিষ্যতের কথা ভেবে সঞ্চয় করতে হবে, এর বিকল্প নেই। বর্তমানে সবকিছুর মূল্যে ঊর্ধ্বগতি বিরাজ করছে। এই দুর্মূল্যের বাজারে একটু সঞ্চয় করাও যেন মধ্যবিত্ত বা স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠছে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য সামান্য হলেও সঞ্চয় করা বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা সঞ্চয় মানুষের মনে অন্যরকম মনোবল ও সাহস বাড়িয়ে তোলে। নিজের ও
পরিবারের জন্য সঞ্চয়ের মানসিকতা থাকলে ভবিষ্যত্টা অনবদ্য হয়ে ওঠে। আসলে দৈনন্দিন প্রয়োজন মিটিয়ে সঞ্চয় করা কিছুটা কষ্টকর হলেও এক্ষেত্রে সদিচ্ছার অভাবটাও কম দায়ী নয়।Posted by আব্দুল্লাহিল হাদী
সঞ্চয় মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সঞ্চয় ছাড়া চলা আর পালবিহীন নৌকায় ওঠা যেন একই কথা। ভবিষ্যতের কথা ভেবে সঞ্চয় করতে হবে, এর বিকল্প নেই। বর্তমানে সবকিছুর মূল্যে ঊর্ধ্বগতি বিরাজ করছে। এই দুর্মূল্যের বাজারে একটু সঞ্চয় করাও যেন মধ্যবিত্ত বা স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠছে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য সামান্য হলেও সঞ্চয় করা বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা সঞ্চয় মানুষের মনে অন্যরকম মনোবল ও সাহস বাড়িয়ে তোলে। নিজের ও
১. স্বল্প আয়, উদাসীনতা বা আলসেমি যে কারণেই হোক না কেন নিয়মিত যে কোনো বিল পরিশোধ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে, কারণ পরের মাসে বিল পরিশোধ করতে গেলে তার সঙ্গে ফি বাবদ গুনতে হবে বাড়তি টাকা। আর এভাবে যদি প্রতি দু-তিন মাসে টাকা খরচ হয়, তাহলে সঞ্চয় যেন অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তাই যত কষ্টই হোক সময়মতো বিল পরিশোধ করুন। আর বাড়তি ফি’র টাকাটা রেখে দিন সঞ্চয়ের খাতায়।
২. মনে রাখবেন, আপনার আয়ের প্রতিটি পয়সা কিন্তু কষ্ট করে উপার্জন করা। এটা মনে থাকলে অনেক অপ্রয়োজনীয় খরচ থেকে আপনি বিরত থাকতে পারবেন। আমাদের দেশে একটি বিষয় প্রতিদিন দেখা যায়। আর তা হলো বাসায় সংবাদপত্র রাখার পরও গণপরিবহনে উঠে চট করে একটি পত্রিকা বা ম্যাগাজিন কেনা। আর প্রতিদিন এভাবে কেনায় মাস শেষে খরচ হচ্ছে বাড়তি টাকা। আর তার পরিমাণটাও নেহাত কম নয়। অনেকের আবার ঘনঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস আছে। সেক্ষেত্রে নিয়ম করে দুই বেলা চা-কফি খেলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, অন্যদিকে বাড়তি টাকাও খরচ হবে না। নিত্যনতুন বই না কিনে বরং পাড়ার লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়লে নতুন নতুন বইয়ের স্বাদও পাওয়া যাবে, আবার টাকাও বেঁচে যাবে।
৩. কোনো কিছু কেনার আগে তার যথাযথ প্রয়োজনীয়তার কথা ভালোভাবে ভেবে তার পর কিনুন। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, শুধু ঝোঁকের মাথায় চট করে আমরা যা-তা কিনে ফেলি। বাসায় ফেরার পর তা আর ভালো লাগে না বা তা প্রয়োজনীয় মনে হয় না। এসব ক্ষেত্রে ভালো করে ভেবে তারপর কেনাকাটা করুন। আসলে টাকা জমানো কষ্টকর, কিন্তু এতখানি কষ্টের না যে তা সম্ভব নয়।
৪. সঞ্চয়ের অন্যতম শর্ত বাজেট করে চলা। সেক্ষেত্রে মাসের শুরুতেই বাজেট তৈরি করে নিন। সাংসারিক বাজেটের পাশাপাশি ব্যক্তিগত খরচের একটা পাকাপোক্ত বাজেট করে নিন। কেননা বাজেট নিজের ও পরিবারের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার অন্যতম উপায়। তবে বাজেট করার আগে আয়ের উত্স ও ব্যয়ের তালিকায় একনজর হলেও চোখ বুলিয়ে নিতে হবে। কেননা আপনি যদি আয় ও ব্যয়ের পরিমাণ না জানেন, তাহলে সঞ্চয় করা সম্ভব নয়। বাজেট করা থাকলে কোন খাত থেকে সঞ্চয় করা যাবে, তাও আপনার মাথায় থাকবে।
৫. সপ্তাহের কাঁচাবাজার একসঙ্গে করুন। এতে একদিকে যেমন খাবারের অপচয় কম হবে, অন্যদিকে বাজার বাবদ খরচও কম হবে। আবার একসঙ্গে অনেক বেশি জিনিস কিনলে দামেও সস্তা হয়। শুধু কাঁচাবাজার নয়, চাল-ডালের মতো অন্যান্য সদাইপাতিও একসঙ্গে কেনার অভ্যাস তৈরি করুন। এতে কিছুটা হলেও সঞ্চয় হবে।
৬. অনেকে কেনাকাটার সময় মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ না দেখেই কিনে ফেলেন। এতে খাবার মানসম্মত না হওয়ায় অর্থের অপচয় হয়। এক মাস বা তারও কম মেয়াদের কোনো খাবার কেনা উচিত নয়।
৭. সেলের সময় কেনাকাটা করুন। সেল মানে সেল, একটি কিনলে একটি ফ্রি বা অর্ধেক দামে কেনা ভালো। তবে প্রয়োজন না হলে কখনও দ্বিগুণ লাভের আশায় অপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনবেন না।
৮. কেনাকাটা করার সময় যেসব একটু সস্তায় পাওয়া যায়, সেসব দোকান বা মার্কেট থেকে শপিং করুন। এতে পণ্যের ভালো মানের পাশাপাশি দামও সস্তা হবে। অনেকে শুধু আয়েশ করে শপিংয়ের জন্য চেইনশপ বা মেগামলে শপিং করেন। এটা ঠিক নয়। এসব মার্কেটে একই জিসিন বেশি দামে বিক্রি করা হয়।
৯. ঘনঘন বাইরে খাবেন না। অনেকে আছেন ঘরের খাবারের চেয়ে বাইরে খেতে পছন্দ করেন। এটা ঠিক আছে। তবে মাসের প্রায় প্রতিদিনই তা যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। আপনার সাংসারিক বাজেটে মাসে এক বা দু’বার বাইরে খাওয়ার রুটিন রাখুন। দোকানের কোনো খাবার পছন্দ হলে তা ঘরেই তৈরি করে নিন। এতে একদিকে তা হবে স্বাস্থ্যসম্মত, অন্যদিকে অর্থেরও সাশ্রয় হবে।
১০. কেনাকাটার সময় অবশ্যই নগদ টাকা দিয়ে কেনাকাটা করুন। ক্রেডিট কার্ড যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এতে অনেক অপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা হয়ে যায়।
১১. যাদের প্রতিবছর বেতন বাড়ে, তারা মাসের শুরুতেই বাড়তি টাকাটা সরিয়ে রাখুন। এছাড়া নিজের ও সন্তানের নামে অবশ্যই অন্তত একটি করে ডিপোজিট করে রাখুন। ডিপোজিট হচ্ছে ফোর্স সেভিং। মাসের প্রথমেই ব্যাংকে টাকাটা জমা দিতে হবে। আর এভাবে চললে একসময় দেখা যাবে, বেশ মোটা অঙ্কের টাকা আপনার সঞ্চয় হয়েছে।
তবে মনে রাখবেন, যা-ই করুন না কেন, সঞ্চয় করতে গিয়ে যেন কৃপণের খাতায় আপনার নাম চলে না যায়। প্রয়োজন মিটিয়ে সঞ্চয় করুন। তবে তা যেন সঞ্চয়ের চিন্তা থেকে দূরে সরে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। আসলে চাহিদা এমন একটি বিষয়, যার কোনো শেষ নেই। তাই যা-ই করুন না কেন অবশ্যই সঞ্চয় গড়ে তুলুন আর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাঁচুন।
২. মনে রাখবেন, আপনার আয়ের প্রতিটি পয়সা কিন্তু কষ্ট করে উপার্জন করা। এটা মনে থাকলে অনেক অপ্রয়োজনীয় খরচ থেকে আপনি বিরত থাকতে পারবেন। আমাদের দেশে একটি বিষয় প্রতিদিন দেখা যায়। আর তা হলো বাসায় সংবাদপত্র রাখার পরও গণপরিবহনে উঠে চট করে একটি পত্রিকা বা ম্যাগাজিন কেনা। আর প্রতিদিন এভাবে কেনায় মাস শেষে খরচ হচ্ছে বাড়তি টাকা। আর তার পরিমাণটাও নেহাত কম নয়। অনেকের আবার ঘনঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস আছে। সেক্ষেত্রে নিয়ম করে দুই বেলা চা-কফি খেলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, অন্যদিকে বাড়তি টাকাও খরচ হবে না। নিত্যনতুন বই না কিনে বরং পাড়ার লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়লে নতুন নতুন বইয়ের স্বাদও পাওয়া যাবে, আবার টাকাও বেঁচে যাবে।
৩. কোনো কিছু কেনার আগে তার যথাযথ প্রয়োজনীয়তার কথা ভালোভাবে ভেবে তার পর কিনুন। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, শুধু ঝোঁকের মাথায় চট করে আমরা যা-তা কিনে ফেলি। বাসায় ফেরার পর তা আর ভালো লাগে না বা তা প্রয়োজনীয় মনে হয় না। এসব ক্ষেত্রে ভালো করে ভেবে তারপর কেনাকাটা করুন। আসলে টাকা জমানো কষ্টকর, কিন্তু এতখানি কষ্টের না যে তা সম্ভব নয়।
৪. সঞ্চয়ের অন্যতম শর্ত বাজেট করে চলা। সেক্ষেত্রে মাসের শুরুতেই বাজেট তৈরি করে নিন। সাংসারিক বাজেটের পাশাপাশি ব্যক্তিগত খরচের একটা পাকাপোক্ত বাজেট করে নিন। কেননা বাজেট নিজের ও পরিবারের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার অন্যতম উপায়। তবে বাজেট করার আগে আয়ের উত্স ও ব্যয়ের তালিকায় একনজর হলেও চোখ বুলিয়ে নিতে হবে। কেননা আপনি যদি আয় ও ব্যয়ের পরিমাণ না জানেন, তাহলে সঞ্চয় করা সম্ভব নয়। বাজেট করা থাকলে কোন খাত থেকে সঞ্চয় করা যাবে, তাও আপনার মাথায় থাকবে।
৫. সপ্তাহের কাঁচাবাজার একসঙ্গে করুন। এতে একদিকে যেমন খাবারের অপচয় কম হবে, অন্যদিকে বাজার বাবদ খরচও কম হবে। আবার একসঙ্গে অনেক বেশি জিনিস কিনলে দামেও সস্তা হয়। শুধু কাঁচাবাজার নয়, চাল-ডালের মতো অন্যান্য সদাইপাতিও একসঙ্গে কেনার অভ্যাস তৈরি করুন। এতে কিছুটা হলেও সঞ্চয় হবে।
৬. অনেকে কেনাকাটার সময় মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ না দেখেই কিনে ফেলেন। এতে খাবার মানসম্মত না হওয়ায় অর্থের অপচয় হয়। এক মাস বা তারও কম মেয়াদের কোনো খাবার কেনা উচিত নয়।
৭. সেলের সময় কেনাকাটা করুন। সেল মানে সেল, একটি কিনলে একটি ফ্রি বা অর্ধেক দামে কেনা ভালো। তবে প্রয়োজন না হলে কখনও দ্বিগুণ লাভের আশায় অপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনবেন না।
৮. কেনাকাটা করার সময় যেসব একটু সস্তায় পাওয়া যায়, সেসব দোকান বা মার্কেট থেকে শপিং করুন। এতে পণ্যের ভালো মানের পাশাপাশি দামও সস্তা হবে। অনেকে শুধু আয়েশ করে শপিংয়ের জন্য চেইনশপ বা মেগামলে শপিং করেন। এটা ঠিক নয়। এসব মার্কেটে একই জিসিন বেশি দামে বিক্রি করা হয়।
৯. ঘনঘন বাইরে খাবেন না। অনেকে আছেন ঘরের খাবারের চেয়ে বাইরে খেতে পছন্দ করেন। এটা ঠিক আছে। তবে মাসের প্রায় প্রতিদিনই তা যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। আপনার সাংসারিক বাজেটে মাসে এক বা দু’বার বাইরে খাওয়ার রুটিন রাখুন। দোকানের কোনো খাবার পছন্দ হলে তা ঘরেই তৈরি করে নিন। এতে একদিকে তা হবে স্বাস্থ্যসম্মত, অন্যদিকে অর্থেরও সাশ্রয় হবে।
১০. কেনাকাটার সময় অবশ্যই নগদ টাকা দিয়ে কেনাকাটা করুন। ক্রেডিট কার্ড যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এতে অনেক অপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা হয়ে যায়।
১১. যাদের প্রতিবছর বেতন বাড়ে, তারা মাসের শুরুতেই বাড়তি টাকাটা সরিয়ে রাখুন। এছাড়া নিজের ও সন্তানের নামে অবশ্যই অন্তত একটি করে ডিপোজিট করে রাখুন। ডিপোজিট হচ্ছে ফোর্স সেভিং। মাসের প্রথমেই ব্যাংকে টাকাটা জমা দিতে হবে। আর এভাবে চললে একসময় দেখা যাবে, বেশ মোটা অঙ্কের টাকা আপনার সঞ্চয় হয়েছে।
তবে মনে রাখবেন, যা-ই করুন না কেন, সঞ্চয় করতে গিয়ে যেন কৃপণের খাতায় আপনার নাম চলে না যায়। প্রয়োজন মিটিয়ে সঞ্চয় করুন। তবে তা যেন সঞ্চয়ের চিন্তা থেকে দূরে সরে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। আসলে চাহিদা এমন একটি বিষয়, যার কোনো শেষ নেই। তাই যা-ই করুন না কেন অবশ্যই সঞ্চয় গড়ে তুলুন আর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাঁচুন।
আল্লাহর উপর আস্থ রাখুন।
কষ্ট হলেও গরীব-দুখীদের সাহায্য করুন যদিও তা পরিমানে কম হয়।
দূর্ণীতি ও অবৈধ পথে সম্পদ উপার্জন করে ভূড়ি মোটা করার চেয়ে হালাল উপার্জনে দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকা অনেক বেশী তৃপ্তিদায়ক। -সম্পাদক
উৎস: আমার দেশ, ২৭ মে ২০১৩
কষ্ট হলেও গরীব-দুখীদের সাহায্য করুন যদিও তা পরিমানে কম হয়।
দূর্ণীতি ও অবৈধ পথে সম্পদ উপার্জন করে ভূড়ি মোটা করার চেয়ে হালাল উপার্জনে দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকা অনেক বেশী তৃপ্তিদায়ক। -সম্পাদক
উৎস: আমার দেশ, ২৭ মে ২০১৩
No comments:
Post a Comment