বিদ’আত কি কখনও হাসানাহ (উত্তম
বিদ’আত) হতে পারে ?
BIDAT (37)
প্রশ্নঃ “যে ব্যক্তি ইসলামের ভিতর উত্তম
সুন্নাত চালু করল, তার জন্য সওয়াব রয়েছে”, এই
হাদিসটিকে অনেকে তাদের তৈরিকৃত বিদ’আত
এর পক্ষে দলীল হিসাবে গ্রহন করে এবং বলে
এটা বিদ’আত এ হাসানাহ, এর উত্তর কিভাবে
দিবেন?
উত্তরঃ তাদের জবাবে আমরা বলব,
রাসুল ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) বলেছেনঃ “যে
ব্যক্তি ইসলামের ভিতরে উত্তম কোন সুন্নাত
চালু করল, তার জন্য ছওয়াব রয়েছে।”
তিনি ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) তো এও বলেছেন
যে,
“তোমরা আমার সুন্নাত এবং আমার পরে
হেদায়াত প্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদিন এর
সুন্নাতের অনুসরন করবে এবং তা দৃঢ়ভাবে
আঁকড়ে ধরবে। আর তোমরা নতুন আবিষ্কৃত
বিষয় হতে সাবধান থাকবে। কারন প্রতিটি
নব আবিষ্কৃত বিষয়ই বিদ’আত আর প্রতিটি
বিদ’আতই গোমরাহি এবং গোমরাহীর
পরিনাম জাহান্নাম।” (আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ
কিতাবুস সুন্নাহ)
প্রশ্নে বর্ণিত যে হাদিসটি বিদাতিরা দলীল
হিসেবে গ্রহন করে থাকে, সেই হাদীসের
প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। তা এই যে, মুযার
গোত্রের কিছু অভাবী লোক নবী ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর কাছে আগমন করলে তিনি
সাদকা করার প্রতি উৎসাহ দিলেন। এক
ব্যক্তি থলে বর্তি রুপা নিয়ে এসে
রাসুল ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর সামনে হাজির
হল। তখন তিনি বললেন,
“যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে উত্তম কোন
সুন্নাত চালু করল, তার জন্য সওয়াব রয়েছে,
এবং তার পরে কিয়ামত পর্যন্ত যারা সেই
সুন্নাতের উপর আমল করবে, তাদের সমপরিমান
সওয়াব পাবে।” (ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ আল-
মুকাদ্দিমাহ (ভুমিকা))
হাদীসের প্রেক্ষাপটে থেকে আমরা
জানলাম যে, উত্তম সুন্নাত বলতে সুন্নাতের
উপর নতুনভাবে আমল শুরু করাকে বুঝানো
হয়েছে। নতুনভাবে কোন আমল তৈরি করার
কথা বলা হয়নি। কেননা আল্লাহ এবং তার
রাসুল ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) ব্যতীত অন্য কারো
জন্য শরীয়াতের কোন বিধান প্রবর্তন করা
জায়েয নেই। কাজেই হাদীসের অর্থ এই যে,
কোন ব্যক্তি যদি সুন্নাহের উপর আমল করে,
তার আমল দেখে অন্যরাও যদি সেই সুন্নাহের
উপর আমল করা শুরু করে, তাহলে প্রথম আমল
করা ব্যক্তি নিজে আমল করার সওয়াব
পাওয়ার সাথে সাথে তাকে দেখে
আমকারীর অনুরুপ সওয়াব প্রাপ্ত হবে।
অথবা হাদীসের উদ্দেশ্য হল, শরীয়াত সম্মত
কোন এবাদত পালনের মাধ্যম বা উপকরন
যেমন ধর্মীয় কিতাব রচনা করা, ইলম প্রচার
করা, মাদ্রাসা নির্মাণ করা, ইত্যাদি। এমন
নয় যে নতুন ইবাদাত তৈরি করা। মানুষের
ইচ্ছামত যদি শরীয়াত প্রবর্তন করা জায়েয
হয়, তাহলে অর্থ এই হয় যে, নবী ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ) এর জীবদ্দশায় ইসলাম পরিপূর্ণ হয় নি।
কোন বিদ’আত চালু করে তাকে হাসানাহ বা
উত্তম বলে ধারনা করা ভুল। কারন এতে
নবী ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) কে মিথ্যা প্রতিপন্ন
করা হয়। যেহেতু তিনি বলেনঃ প্রতিটি
বিদ’আত ই গোমরাহি।
শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উসাইমিন
( ﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠّﻪ ﻋﻠﻴﻪ )
{ সাবেক সদস্য সৌদি উচ্চতর উলামা পরিষদ}
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
সাম্প্রতিক পোষ্ট
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...
জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ
-
যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক? একে “মাযী” বলে। আর তা নাপাক। তা বের হলে উযূ নষ্ট হয়ে যায়। শরমগাহ...
-
গুপ্ত অভ্যাস (হস্তমৈথুন) ব্যবহার করা বৈধ কি? গুপ্ত অভ্যাস (হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্ত মৈথুন) করা কিতাব, সুন...
-
মনোমালিন্য ‘‘সংসার সাগরে দুঃখ-তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা।’’ কিন্তু সেই ভেলা ডুবে গেলে আর কার কি সাধ্য? স্বামী যদি স্...
-
*সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরানের ফজিলত গুলি কি কি? এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের অর্থঃ ✔1-রাতে ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ...
-
আপন মামাত, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোন, চাচী, মামি, স্ত্রীর বোন বা ভাবীর সাথে মুসাফাহাহ বৈধ কি? যার সাথে পু...
-
কেউ কেউ মনে করেন, আমার মন খুবই পরিস্কার। তাকে আমি মা, খালা, অথবা বোনের মতোই মনে করি ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে তাঁর সাথে মেলা-মেশা করতে অসুবিধা ...
-
কথা বলার ব্যপারে "ইসলামে"র শিক্ষা কি? ====== ১। কথা বলার পূর্বে সালাম দেয়া। সূরা নূরঃ ৬১ ২। সতর্কতার সাথে কথা বলা। (কে...
-
জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫টি অসাধারন হাদিস- *১-গীবত থেকে দূরে থাকা- আসমা বিনতে ইয়াযীদ হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যাক্তি তার (মুসলি...
-
# দোয়া_কবুল_না_হওয়ার_কারণগুলো_কি_কি ? ---------------------------------------------------------------------- কিছু পাপ আছে যা বান্দার মা...
-
প্রশ্ন:নাটক, সিনেমা দেখা , গল্পের বই পড়া কি জায়েজ ? =============================== উত্তর : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালা...
No comments:
Post a Comment