দ্বীন কায়েম বলতে কী বুঝায় ?
Deen Kayem
দ্বীন কায়েমের ব্যাপারে আল্লাহ যে আয়াত
অবতীর্ণ করেছেন তা হল : তিনি তোমাদের
জন্যে নির্ধারণ করেছেন দ্বীন যার নির্দেশ
দিয়েছিলেন তিনি নূহকে আর যা আমি ওহী করেছিলাম
তোমাকে এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা
ও ঈসাকে, এই বলে যে, তোমরা এই দ্বীনকে
কায়েম কর এবং ওতে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করো না। তুমি
মুশরিকদেরকে যার প্রতি আহ্বান করছো তা তাদের
নিকট কঠিন মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার জন্য চয়ন
করে নেন এবং যে তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করে,
তাকে দ্বীনের দিকে পরিচালিত করেন। (সুরা শুরা:১৩)
এই আয়াতের তাফসীর তাফসীরে ইবনে
কাসীর থেকে : আল্লাহ তা’আলা এই উম্মতের
উপর যে নিয়ামত দান করেছেন, এখানে মহান
আল্লাহ তারই বর্ণনা দিচ্ছেন। মহান আল্লাহ বলেন :
আল্লাহ তোমাদের জন্যে যে দ্বীন ও
শরীয়ত নির্ধারণ করেছেন তা ওটাই যা আদম ( ﻋﻠﻴﻪ
ﺍﻟﺴّﻼﻡ) এর পরে দনিয়ার সর্বপ্রথম রাসুল নূহ ( ﻋﻠﻴﻪ
ﺍﻟﺴّﻼﻡ) এবং সর্বশেষ রাসুল মুহাম্মদ ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ) এর মধ্যবর্তী স্থির প্রতিজ্ঞ
নবীদের ( ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴّﻼﻡ ) ছিল। এখানে যে পাঁচজন
নবী ( ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴّﻼﻡ ) এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে
তাঁদেরই নাম উল্লেখ করা হয়েছে সুরা আহযাবেও।
সেখানে রয়েছে : স্মরণ কর, যখন আমি
নবীদের নিকট হতে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম
এবং তোমার নিকট হতেও এবং নূহ, ইব্রাহীম, মূসা,
মরিয়ম তনয় ঈসা এর নিকট হতে, তাদের নিকট হতে
গ্রহণ করেছিলাম দৃঢ় অঙ্গীকার। (সুরা আহযাব:৭)
ঐ দ্বীন, যা সমস্ত নবীর মধ্যে মিলিতভাবে ছিল তা
হলো এক আল্লাহর ইবাদত। যেমন মহামহিমান্বিত
আল্লাহ বলেন : তোমরা পূর্বে আমি যতজন রাসুল
পাঠিয়েছিলাম তাদের সবারই কাছে এই অহী
করেছিলাম, আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই (লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ) সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর। (সুরা
আম্বিয়া:২৫)
হাদীসে এসেছে যে, রাসুলুল্লাহ ( ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ) বলেছেন : “আমরা নবীরা পরস্পর
বৈমাত্রেয় ভাই-এর মত। আমাদের সবারই একই
দ্বীন।” যেমন বৈমাত্রেয় ভাইদের পিতা একজনই।
মোটকথা, শরীয়তের আহকামে যদিও আংশিক
পার্থক্য রয়েছে, কিন্তু মৌলিক নীতি হিসেবে
দ্বীন একই। আর তা হলো মহামহিমান্বিত আল্লাহর
একত্ববাদ। মহান আল্লাহ বলেন : তোমাদের
প্রত্যেকের জন্যে আমি শরীয়ত ও পথ করে
দিয়েছি। (সুরা মায়েদা:৪৮)
এখানে এই অহীর ব্যাখ্যা এভাবে দেয় হয়েছে :
‘তোমরা দ্বীনকে কায়েম রেখো, দলবদ্ধ
হয়ে একত্রিতভাবে বাস কর এবং মতানৈক্য সৃষ্টি করে
পৃথক পৃথক হয়ে যেয়ো না।’ তাওহীদের এই ডাক
মুশরিকদের নিকট অপছন্দনীয়। সত্য কথা এই যে,
হিদায়াত আল্লাহর হাতে। যে হিদায়াত লাভের যোগ্য
হয় সে তার প্রতিপালকের দিকে ফিরে যায় এবং মহান
আল্লাহ তার হাত ধরে তাকে হিদায়াতের পথে নিয়ে
গিয়ে দাঁড় করিয়ে দেন।
(তাফসীর ইবনে কাসীর, খন্ড# ১৬, পৃষ্ঠা# ৫১১,
সুরা শুরা:৪২ নং আয়াতের তাফসীর
No comments:
Post a Comment