৩১) মুমিনের স্বপ্ন সত্য হবে
কিয়ামতের
অন্যতম আলামত হচ্ছে আখেরী যামানায় মুমিন ব্যক্তির স্বপ্ন মিথ্যা হবেনা;
বরং ঘুমন্ত অবস্থায় সে যা স্বপ্নে দেখবে তা সত্যে পরিণত হবে। যার ঈমান যত
মজবুত হবে তার স্বপণও তত বেশী সত্য হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেনঃ
إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ
لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُسْلِمِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُكُمْ رُؤْيَا
أَصْدَقُكُمْ حَدِيثًا وَرُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ خَمْسٍ
وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَالرُّؤْيَا ثَلَاثَةٌ فَرُؤْيَا
الصَّالِحَةِ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَرُؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ
وَرُؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ الْمَرْءُ نَفْسَهُ فَإِنْ رَأَى أَحَدُكُمْ
مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ وَلَا يُحَدِّثْ بِهَا النَّاسَ
‘‘যখন কিয়ামত
নিকটবর্তী হবে তখন মু’মিন ব্যক্তির স্বপ্ন মিথ্যা হবেনা। যে মু’মিন মানুষের
সাথে কথা-বার্তায় সত্যবাদী হবে তাঁর স্বপ্ন বেশী সত্যে পরিণত হবে।
মু’মিনের স্বপ্ন নবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের একভাগের সমান। স্বপ্ন তিন
প্রকার। (১) মু’মিনের সত্য স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ হতে সুসংবাদ স্বরূপ। (২) যে
সমস্ত স্বপ্ন মনের ভিতর দুশ্চিন্তা আনয়ন করে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। (৩) আর
এক প্রকারের স্বপ্ন অন্তরের কল্পনা মাত্র। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি স্বপ্নে
অপছন্দনীয় কিছু দেখে সে যেন বিছানা থেকে উঠে নামাযে দাঁড়িয়ে যায় এবং
স্বপ্নের কথা কারো কাছে প্রকাশ না করে’’।[1]
ইবনে আবি হামজাহ
বলেনঃ ‘‘আখেরী যামানায় মু’মিনের স্বপ্ন সত্য হওয়ার অর্থ এই যে, অধিকাংশ সময়
স্বপ্নে যা দেখেছে তাই বাস্তবে পরিণত হবে। স্বপ্নের ব্যাখ্যার প্রয়োজন
হবেনা। অথচ ইতিপূর্বে তা অস্পষ্ট হওয়ার কারণে ব্যাখ্যার প্রয়োজন হতো। ফলে
কখনও ব্যাখ্যার বিপরীত হতো’’।
শেষ যামানায় স্বপ্ন সত্যে পরিণত হওয়ার কারণ এই যে তখন মুমিন লোকের সংখ্যা কমে যাবে। ফলে সে সময় মুমিন ব্যক্তি কোন সহযোগী
ও শান্তনা দানকারী খুঁজে পাবেনা। তাই সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে তাকে শান্তনা দেয়া হবে।[2]
কোন্ যামানায় মুমিনের স্বপ্ন সত্যে পরিণত হবে তার ব্যাপারে আলেমদের কয়েক ধরণের বক্তব্য রয়েছেঃ
ক)
এটি হবে কিয়ামতের পূর্বে যখন ইল্মে দ্বীন উঠিয়ে নেয়া হবে, ইসলামী শরীয়তের
নাম-নিশানা মিটে যাবে এবং ফিতনা-ফাসাদ ও যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হবে।
খ) আখেরী
যামানায় যখন মুমিনের সংখ্যা কমে যাবে এবং কুফর, পাপাচারিতা ও মূর্খতা
ছড়িয়ে পড়বে তখন মুমিনের স্বপ্ন সত্যে পরিণত হবে। মুমিন লোকের সংখ্যা কমে
যাওয়ার কারণে এক সময় তারা একাকীত্ব অনুভব করবে এবং নিজেদেরকে অসহায় মনে
করবে। অন্য একজন মুমিনের সাথে বসে কথা বলার এবং মনের ভাব বিনিময় করার মানুষ
খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। এহেন কঠিন পরিস্থিতে স্বপ্নের মাধ্যমে
মু’নিদেরকে শান্তনা প্রদান করা হবে।
গ)
এটি হবে আখেরী যামানায় ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে নেমে আসার পর। কারণ খোলাফায়ে
রাশেদার যুগের পর ঈসা (আঃ)এর যামানা হবে সর্বোত্তম যামানা। সে যুগের মানুষ
অত্যন্ত সত্যবাদী হবে। কাজেই তাদের স্বপ্নও সত্য হবে। (আল্লাহই ভাল জানেন)
No comments:
Post a Comment