জান্নাতের পথে বাধা সৃষ্টি করে যে সব কাজ: ১. ঈমান না আনা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺇِﻻ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ “ঈমানদার ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (বুখারী ও মুসলিম) তিনি আরও বলেন, ﻻ ﺗَﺪْﺧُﻠُﻮﺍ ﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺆْﻣِﻨُﻮﺍ “তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না।” (সহীহ্ মুসলিম, হা/৫৪) ২. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻣَﻦْ ﻻ ﻳَﺄْﻣَﻦُ ﺟَﺎﺭُﻩُ ﺑَﻮَﺍﺋِﻘَﻪُ “যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহীহ মুসলিম/৪৬) ৩. অহংকার করা রসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﻣِﺜْﻘَﺎﻝُ ﺫَﺭَّﺓٍ ﻣِﻦْ ﻛِﺒْﺮٍ “যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না ।” (মুসলিম, হা/৯১) ৪. চোগলখোরি ও পরনিন্দা করা: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻧَﻤَّﺎﻡٌ “চুগলখোর বা পর নিন্দাকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না” (সহীহ মুসলিম, হা/১০৫) তিনি আরও বলেছেন, ﺗَﺠِﺪُ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺫَﺍ ﺍﻟْﻮَﺟْﻬَﻴْﻦِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺄْﺗِﻲ ﻫَﺆُﻟَﺎﺀِ ﺑِﻮَﺟْﻪٍ ﻭَﻫَﺆُﻟَﺎﺀِ ﺑِﻮَﺟْﻪٍ “কিয়ামতের দিন সবচেয়ে খারাপ লোকদের দলভুক্ত হিসেবে ঐ ব্যক্তিকে দেখতে পাবে যে, যে ছিল দুমুখো- যে এক জনের কাছে এক কথা আরেক জনের কাছে আরেক কথা নিয়ে হাজির হত।” (সহীহ মুসলিম,হা/২৫২৬) ৫. আত্মহত্যা করা:নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﻣَﻦْ ﺗَﺮَﺩَّﻯ ﻣِﻦْ ﺟَﺒَﻞٍ ﻓَﻘَﺘَﻞَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ، ﻓَﻬْﻮَ ﻓِﻰ ﻧَﺎﺭِ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ، ﻳَﺘَﺮَﺩَّﻯ ﻓِﻴﻪِ ﺧَﺎﻟِﺪًﺍ ﻣُﺨَﻠَّﺪًﺍ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﺑَﺪًﺍ ، ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﺤَﺴَّﻰ ﺳَﻤًّﺎ ﻓَﻘَﺘَﻞَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ، ﻓَﺴَﻤُّﻪُ ﻓِﻰ ﻳَﺪِﻩِ ، ﻳَﺘَﺤَﺴَّﺎﻩُ ﻓِﻰ ﻧَﺎﺭِ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺧَﺎﻟِﺪًﺍ ﻣُﺨَﻠَّﺪًﺍ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﺑَﺪًﺍ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻗَﺘَﻞَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﺑِﺤَﺪِﻳﺪَﺓٍ ، ﻓَﺤَﺪِﻳﺪَﺗُﻪُ ﻓِﻰ ﻳَﺪِﻩِ ، ﻳَﺠَﺄُ ﺑِﻬَﺎ ﻓِﻰ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﻓِﻰ ﻧَﺎﺭِ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺧَﺎﻟِﺪًﺍ ﻣُﺨَﻠَّﺪًﺍ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﺑَﺪًﺍ “যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে যাবে।সেখানে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, সে তার বিষ তার হাতে থাকবে। জাহান্নামে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে বিষ খাইয়েমারতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সে ধারালো অস্ত্র থাকবে যার দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে।[সহীহ বুখারী : ৫৪৪২; মুসলিম : ১০৯] ৬. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা:রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻗَﺎﻃِﻊُ ﺭَﺣِﻢٍ “আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহীহ মুসলিম,হা/২৫৫৬) ৭. হারাম খাওয়া:রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ﻟَﺎ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻟَﺤْﻢٌ ﻧَﺒَﺖَ ﻣِﻦْ ﺳُﺤْﺖٍ “হারাম অর্থের মাধ্যমে (যে শরীরে) মাংস বৃদ্ধি পেয়েছে তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। অর্থাৎ যে ব্যক্তি হারাম অর্থ ও অবৈধ উপার্জন দ্বারা দেহ গঠন করেছে জাহান্নামের আগুনই তার প্রাপ্য।” (তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ,সহীহ, আলবানী,হাদীস নং ২৭০৩) ৮. উপকার করে খোটা দেয়া রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻣَﻨَّﺎﻥٌ “সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যে উপকার করে খোটা দেয়।” সুনান নাসাঈ, হা/ ৫৬৮৮, সহীহ, আলবানী) ৯. তক্দীর (ভাগ্যের লিখন) অস্বীকার করা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻋَﺎﻕٌّ ، ﻭَﻻ ﻣُﺪْﻣِﻦُ ﺧَﻤْﺮٍ ، ﻭَﻻ ﻣُﻜَﺬِّﺏٌ ﺑِﻘَﺪَﺭٍ “পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, মদ্যপায়ী এবং তকদীর অস্বীকার কারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সিলসিলা সহীহা, হাসান, ৬৭৫) ১০. যাদুর বৈধতায় বিশ্বাস করা ১১. মদ, গাঁজা ও নেশা দ্রব্য গ্রহণ করা ১২. গণক রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ” ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺧَﻤْﺲٌ ، ﻣُﺪْﻣِﻦُ ﺧَﻤْﺮٍ ، ﻭَﻻ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﺑِﺴِﺤْﺮٍ ، ﻭَﻻ ﻗَﺎﻃِﻊُ ﺭَﺣِﻢٍ ، ﻭَﻻ ﻣَﻨَّﺎﻥٌ ، ﻭَﻻ ﻛَﺎﻫِﻦٌ ” “পাঁচ শ্রেণির মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (তারা হল,) মদ্যপায়ী, যাদুর বৈধতায় বিশ্বাসী, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, চোগলখোর এবং গণক।” (মুসনাদে আহমদ, হাসান, আলবানী) ১৩. ঋণ পরিশোধ না করা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট কোন ঋণগ্রস্ত মৃতের লাশ (জানাযার জন্য) নিয়ে আসা হলে জিজ্ঞেস করতেন, “সে ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করেছে কি না?” যদি বলা হত করেছে, তবে জানাযা পড়তেন। অন্যথায় (সাহাবীদেরকে) বলতেন, ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺻَﺎﺣِﺒِﻜُﻢْ “তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়ে নাও (কিন্তু তিনি নিজে তাতে অংশ গ্রহণ করতেন না)। (সহীহ মুসলিম, হা/১৬১৯) অন্য হাদীসে রয়েছে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ﻳُﻐْﻔَﺮُ ﻟِﻠﺸَّﻬِﻴﺪِ ﻛُﻞُّ ﺫَﻧْﺐٍ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﺪَّﻳْﻦَ “শহীদের ঋণ ছাড়া সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।” (সহীহ মুসলিম, হা/১৮৮৬) ১৪. পুরুষ বেশধারী নারী ১৫. দাইয়ুস আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: ﺛَﻼﺙٌ ﻻ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ : ﺍﻟْﻌَﺎﻕُّ ﻟِﻮَﺍﻟِﺪَﻳْﻪِ ، ﻭَﺍﻟﺪَّﻳُّﻮﺙُ ، ﻭَﺭَﺟُﻠَﺔُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ “তিন শ্রেণির লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তারা হল, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, দাইয়ূস এবং পুরুষ বেশধারী নারী।” (সহীহুল জামে, আলবানী, হা/৩৬৩) দাইয়ুস: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ﺍﻟﺪَّﻳُّﻮﺙُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﻘِﺮُّ ﻓِﻲ ﺃَﻫْﻠِﻪِ ﺍﻟْﺨَﺒَﺚَ “ঐ ব্যক্তিকে দাইয়ুস বলা হয় যে তার পরিবারের অশ্লীলতা ও কুকর্মকে মেনে নেয়।” (মুসনাদ আহমদ, নাসাঈ) ১৬. বৃদ্ধ ব্যভিচারী ১৭. মিথ্যাবাদী শাসক ১৮. অহংকারী দরিদ্র রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ﺛَﻼﺛَﺔٌ ﻻ ﻳُﻜَﻠِّﻤُﻬُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻻ ﻳُﺰَﻛِّﻴﻬِﻢْ ﻭَﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ : ﺷَﻴْﺦٌ ﺯَﺍﻥٍ ، ﻭَﻣَﻠِﻚٌ ﻛَﺬَّﺍﺏٌ ، ﻭَﻋَﺎﺋِﻞٌ ﻣُﺴْﺘَﻜْﺒِﺮٌ “কিয়ামতের আল্লাহ দিন তিন শ্রেণীর লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে পীড়া দায়ক শাস্তি। তারা হল, বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক, অহংকারী দরিদ্র। (মুসলিম, হা/১০৭) ১৯. কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক এবং যে ব্যক্তি মানুষের কাছে এমন বিষয় নিয়ে গর্ব-অহংকার প্রকাশ করে বেড়ায় প্রকৃতপক্ষে যা তার নিকট নেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ﻟَﺎ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺍﻟْﺠَﻮَّﺍﻅُ ، ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟْﺠَﻌْﻈَﺮِﻱُّ “কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং ঐ লোকও নয় যে এমন সব বিষয়ে মানুষের নিকট গর্ব-অহংকার প্রকাশ করে বেড়ায় প্রকৃতপক্ষে যা তার কাছে নাই।” (আবু দাঊদ, হা/৪৮০১, সহীহ, আলবানী) ২০. মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী অমুসলিমকে হত্যা করা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﻣَﻦْ ﻗَﺘَﻞَ ﻣُﻌَﺎﻫَﺪًﺍ ﻟَﻢْ ﻳَﺮِﺡْ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺭِﻳﺤَﻬَﺎ ﺗُﻮﺟَﺪُ ﻣِﻦْ ﻣَﺴِﻴﺮَﺓِ ﺃَﺭْﺑَﻌِﻴﻦَ ﻋَﺎﻣًﺎ “যে ব্যক্তি কোন মুয়াহিদ তথা মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী কোন অমুসলিমকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।” (সহীহ বুখারী হা/৩১৬৬) ২১. বিশ্বাসঘাতক শাসক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪٍ ﻳَﺴْﺘَﺮْﻋِﻴﻪِ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺭَﻋِﻴَّﺔً ، ﻳَﻤُﻮﺕُ ﻳَﻮْﻡَ ﻳَﻤُﻮﺕُ ﻭَﻫُﻮَ ﻏَﺎﺵٌّ ﻟِﺮَﻋِﻴَّﺘِﻪِ ﺇِﻻ ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ “যাকে আল্লাহ তায়ালা জনসাধারণের শাসনকর্তা হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, কিন্তু সে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং বিশ্বাসঘাতক অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন।” (সহীহ মুসলিম, হা/১৪২) ২২. মানুষকে প্রহার করা ২৩. মহিলাদের পর্দা হীনতা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﺻِﻨْﻔَﺎﻥِ ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ، ﻟَﻢْ ﺃَﺭَﻫُﻤَﺎ ﻗَﻮْﻡٌ ﻣَﻌَﻬُﻢْ ﺳِﻴَﺎﻁٌ ﻛَﺄَﺫْﻧَﺎﺏِ ﺍﻟْﺒَﻘَﺮِ ﻳَﻀْﺮِﺑُﻮﻥَ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ، ﻭَﻧِﺴَﺎﺀٌ ﻛَﺎﺳِﻴَﺎﺕٌ ﻋَﺎﺭِﻳَﺎﺕٌ ﻣُﻤِﻴﻠَﺎﺕٌ ﻣَﺎﺋِﻠَﺎﺕٌ ، ﺭُﺀُﻭﺳُﻬُﻦَّ ﻛَﺄَﺳْﻨِﻤَﺔِ ﺍﻟْﺒُﺨْﺖِ ﺍﻟْﻤَﺎﺋِﻠَﺔِ ، ﻟَﺎ ﻳَﺪْﺧُﻠْﻦَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺠِﺪْﻥَ ﺭِﻳﺤَﻬَﺎ ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺭِﻳﺤَﻬَﺎ ﻟَﻴُﻮﺟَﺪُ ﻣِﻦْ ﻣَﺴِﻴﺮَﺓِ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ “দু শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামে যাবে- যাদের আমি এখনো দেখি নি। (অর্থাৎ নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে তাদের আত্মপ্রকাশ হয় নি) ক) এমন কিছু লোক যাদের হাতে থাকবে গরুর লেজের মত লাঠি। এরা তা দিয়ে জনগণকে প্রহার করবে। খ) এবং ঐ সকল উলঙ্গ-অর্ধ উলঙ্গ নারী যারা (নিজেদের চলাফেরা ও বেশ-ভূষায়) মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং নিজেরাও অন্য মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথায় উটের মত উঁচু এবং একপাশে ঝুঁকে থাকা চূড়ার মতো কেশ রাশি শোভা পাবে। এসমস্ত নারী জান্নাতে তো যাবেই না বরং জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না অথচ এত এত দূর থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।” (সহীহ মুসলিম, হা/২১২৮) গুরুত্ব পূর্ণ টিকা: উপরোক্ত কাজগুলো কবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত। কবীরা গুনাাহে লিপ্ত ব্যক্তিরা যদি তওবা করার পূর্বেই মৃত্যু বরণ করে এবং আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা না করেন তবে তাদের পরিণতি জাহান্নাম। তবে আল্লাহ তায়ালা নিজ দয়া ও ইনসাফের ভিত্তিতে এদের মধ্যে যাকে খুশি ক্ষমা করে দিবেন যদি সে শিরক থেকে দূরে থাকে। কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেন: ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّـﻪَ ﻟَﺎ ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺃَﻥ ﻳُﺸْﺮَﻙَ ﺑِﻪِ ﻭَﻳَﻐْﻔِﺮُ ﻣَﺎ ﺩُﻭﻥَ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻟِﻤَﻦ ﻳَﺸَﺎﺀُ “নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন।” (সূরা নিসা: ৪৮) তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ( ﻣﻦ ﻣﺎﺕ ﻭﻫﻮ ﻳﻌﻠﻢ ﺃﻧﻪ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﺩﺧﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ ( ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ “যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা গেল যে, (জীবিত অবস্থায়) সে ভালো করে জানত, ‘আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ও সত্যিকার মা‘বুদ নেই, সে ব্যক্তি অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহীহ মুসলিম) আর যাদেরকে তিনি ক্ষমা করবেন না তাদেরকে তিনি জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন। পাপের শাস্তি ভোগ করার পর আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। অর্থাৎ তাওহীদপন্থী কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিরা প্রথম পর্যায়ে জান্নাতে প্রবেশকারীদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে না বরং জাহান্নামে গিয়ে শাস্তি ভোগ করার পর পরিশেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কোন তওহীদপন্থীই অন্যান্য কাফেরদের মত চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে অবস্থান করবে না। এটাই হল, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকীদাহ। আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। -অনুবাদক ——————————————– জান্নাতের পথে বাধা সৃষ্টি করে যে সব কাজ (একশটি কবীরা গুনাহ বই থেকে) মূল: ডক্টর সালিহ বিন আবদুল্লাহ সাইয়াহ অনুবাদক: আবদুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব দাঈ, জুাবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
সাম্প্রতিক পোষ্ট
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...
জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ
-
যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক? একে “মাযী” বলে। আর তা নাপাক। তা বের হলে উযূ নষ্ট হয়ে যায়। শরমগাহ...
-
গুপ্ত অভ্যাস (হস্তমৈথুন) ব্যবহার করা বৈধ কি? গুপ্ত অভ্যাস (হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্ত মৈথুন) করা কিতাব, সুন...
-
মনোমালিন্য ‘‘সংসার সাগরে দুঃখ-তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা।’’ কিন্তু সেই ভেলা ডুবে গেলে আর কার কি সাধ্য? স্বামী যদি স্...
-
*সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরানের ফজিলত গুলি কি কি? এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের অর্থঃ ✔1-রাতে ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ...
-
আপন মামাত, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোন, চাচী, মামি, স্ত্রীর বোন বা ভাবীর সাথে মুসাফাহাহ বৈধ কি? যার সাথে পু...
-
কেউ কেউ মনে করেন, আমার মন খুবই পরিস্কার। তাকে আমি মা, খালা, অথবা বোনের মতোই মনে করি ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে তাঁর সাথে মেলা-মেশা করতে অসুবিধা ...
-
কথা বলার ব্যপারে "ইসলামে"র শিক্ষা কি? ====== ১। কথা বলার পূর্বে সালাম দেয়া। সূরা নূরঃ ৬১ ২। সতর্কতার সাথে কথা বলা। (কে...
-
জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫টি অসাধারন হাদিস- *১-গীবত থেকে দূরে থাকা- আসমা বিনতে ইয়াযীদ হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যাক্তি তার (মুসলি...
-
# দোয়া_কবুল_না_হওয়ার_কারণগুলো_কি_কি ? ---------------------------------------------------------------------- কিছু পাপ আছে যা বান্দার মা...
-
প্রশ্ন:নাটক, সিনেমা দেখা , গল্পের বই পড়া কি জায়েজ ? =============================== উত্তর : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালা...
No comments:
Post a Comment