আসুন গরীব দুঃখীদের পাশে দাড়াই
আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। শুভ্র, হাবীব আর
সানজিদা একসাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
হঠাৎ হাবীব শুভ্রকে জিজ্ঞেস
করে বসলো,
-দোস্ত তোর প্যান্টের দাম কতো রে?
-৫০০ টাকা ।
-জানিস, আমার প্যান্টের দাম ১৭০০
টাকা।
হাবীব সানজিদার
সামনে তাকে
এইভাবে অপমানসানজিদা একসাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
হঠাৎ হাবীব শুভ্রকে জিজ্ঞেস
করে বসলো,
-দোস্ত তোর প্যান্টের দাম কতো রে?
-৫০০ টাকা ।
-জানিস, আমার প্যান্টের দাম ১৭০০
টাকা।
হাবীব সানজিদার
সামনে তাকে
করবে তা শুভ্র স্বপ্নেও ভাবেনি। মন
খারাপ করে শুভ্র বাসায় চলে এলো।
ঈদের দিনে শুভ্রের মন খারাপ
দেখে শুভ্রের আব্বু জিজ্ঞেস করল,
-কিরে শুভ্র, আজকের দিনে মন খারাপ
করে শুয়ে আছিস কেন?
শুভ্র প্রায় কান্নাজড়িত কন্ঠে উত্তর
দিলো,
-কিছু হয়নি আব্বু, এমনি বাসায়
চলে এসেছি।
শুভ্র বাড়ির বড় ছেলে, তার এই
অবস্থা দেখে আদরের
আপুনি যে কিনা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ল’
এ পড়ে, এসে জিজ্ঞেস করল,
“কি হয়েছে রে ভাইয়া? ঈদের দিনে মন
খারাপ করে আছিস কেন? আপুনিকে বল,
কিছু লাগবে? নতুন জামা খুলে আজকের
দিনে বাসায় বসে আছিস কেন?”
বড় ভাইয়া বললো “কিরে শুভ্র ঈদের
জামা পরে নে, আজ
তোকে নিয়ে ঘুরতে যাবো।”
বড় ভাইয়ার সাথে ঘুরতে যাওয়ার
কথা শুনে শুভ্র শার্ট আর প্যান্ট
পরে নিলো। শুভ্রকে দেখেই আম্মু
বলে উঠল,
-কিরে শুভ্র তোরে না দুই হাজার
টাকা দিয়েছিলাম প্যান্ট কিনতে, এই
প্যান্টের দাম তো দুই হাজার টাকা না!
এইবার শুভ্র তার দুই হাজার টাকার
কাহীনি আম্মু আর আপুনির
কাছে খুলে বলল। যখন
সে মার্কেটে যাচ্ছিলো তখন
একটা পথশিশু তার কাছে এসে ভাত
খাওয়ার জন্য কিছু টাকা চায়।
-ভাইয়া কিছু টেকা দিবেন?
– কি করবি টাকা?
– ভাত খামু, আমি আর আমার বোন
মিইল্লা।
– তোর আব্বু-আম্মু নাই?
-না ভাই।
-ঈদের জন্য কিছু নিয়েছিস?
– ভাই আমাদের ঈদ! আমাদের
কাছে প্রতিটা দিনই সমান।
আকাশ ভরে বৃষ্টি নামে, ঝুম বৃষ্টি। শুভ্র
কিছুক্ষণ নিজে নিজে চিন্তা করে।
আমি ২০০০ টাকা দিয়ে প্যান্ট
কিনতে যাচ্ছি আর এরা? নাহ,
আমি প্যান্ট কিনব না। তখন শুভ্র ২০০০
টাকা থেকে ছেলেটার জন্য ৭০০
টাকা দিয়ে শার্ট আর প্যান্ট কিনে দেয়
আর ছেলেটার হাতে ৫০০
টাকা ধরিয়ে দেয় তার বোনকে কিছু
কিনে দেয়ার জন্য।
টাকা পেয়ে ছেলেটার চোখ
ভিজে উঠে, ঘোর বর্ষায় ছেলেটার
চোখের পানি আর বৃষ্টির পানি এক
হয়ে যায়। দেখার কেউ থাকেনা।
হয়তবা কেউ সেই জল দেখতেও চায়না!
শুভ্র দেখেছিল সেই জল। শুভ্র
কেদেঁছিলো সেদিন। অঝোর ধারায়
কেদেঁছিলো।চোখের জল আর বর্ষার জল
আলাদা করার উপায় ছিলো না। কিন্তু
সেই জল ছিলো আনন্দের,
হয়তবা বিজয়ীর!
শুভ্রের কথা শুনে আম্মু তো কেঁদেই
অস্থির আর আপুনি ছোট
ভাইকে বুকে নিয়ে আদর করলেন মায়ের
মতো কেঁদে কেঁদে…।
আর শুভ্র, শুভ্র আজ গ্রামীণফোনের বিপনন
কর্মকর্তা, মাসিক বেতন ১২০০০০ টাকা।
আজ শুভ্র ১০০০০ টাকা দামের প্যান্ট পরার
সামর্থ রাখে। তবে শুভ্র আজও সেই
কমদামী প্যান্টই পরে, রাস্তায় রাস্তায়
হিমুর মতো হেঁটে বেড়ায় । আর
প্রতি ঈদে একজন বৃদ্ধ/পথশিশু খোঁজ
করে যে কিনা ছেলেমেয়েদের/তার
ঈদের জামা কিনে দিতে পারেনি!
যারা কষ্ট করে এই পোস্টটা পড়লেন
তাদেরকে বলি প্লীজ,
“অন্যকে একটু আনন্দে রেখেই দেখুন না,
জীবনটাতো মন্দ নয়!”
আর এই শুভ্র হচ্ছে আমার আপন ভাইয়া!
সবশেষে ক্যাফে হিলসাইড এভিনিউ
থেকেঃ
“ভেজা চুল, ভেজা মন
ভেজা ভেজা কষ্টেরা
ভেজা চোখে ভেসে যায়
অভিমানী স্বপ্নেরা!”
~হিমালয় হিম
No comments:
Post a Comment