চামড়ার মোজার উপর মাসাহ করার শর্ত সমূহ
মোজার উপর মাসাহ বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো: পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করতে হবে। মুগীরা ইবনে শোবা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন:
كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ ﷺ ذَاتَ لَيْلَةٍ فِي مَسِيرٍ، فَقَالَ لِي:্রأَمَعَكَ مَاءٌগ্ধ قُلْتُ: نَعَم্ْরفَنَزَلَ عَنْ رَاحِلَتِهِ، فَمَشَى حَتَّى تَوَارَى فِي سَوَادِ اللَّيْلِ، ثُمَّ جَاءَ فَأَفْرَغْتُ عَلَيْهِ مِنَ الْإِدَاوَةِ، فَغَسَلَ وَجْهَهُ، وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِنْ صُوفٍ، فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُخْرِجَ ذِرَاعَيْهِ مِنْهَا حَتَّى أَخْرَجَهُمَا مِنْ أَسْفَلِ الْجُبَّةِ فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ وَمَسَحَ بِرَأْسِهِ ثُمَّ أَهْوَيْتُ لِأَنْزِعَ خُفَّيْهِগ্ধ فَقَالَ:্রدَعْهُمَا فَإِنِّي أَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ وَمَسَحَ عَلَيْهِمَاগ্ধ
কোনো এক সফরে (শেষে) রাতের বেলা আমি নাবী (ﷺ)
এর সাথে ছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন: তোমার কাছে কি পানি আছে? আমি
বললাম, হ্যাঁ আছে। তখন তিনি সওয়ারী থেকে নেমে চলতে থাকলেন এবং
(কিছুক্ষণের
মধ্যে) রাতের অন্ধকার অদৃশ্য হয়ে গেলেন। পরে আসলে আমি পাত্র থেকে তাঁকে
পানি ঢেলে দিলাম। তিনি মুখমন্ডল ধুলেন। তখন তাঁর গায়ে ছিলো একটি পশমের
জুব্বা। তিনি তা থেকে হাত দু’খান (বের করার চেষ্টা করেও) বের করতে পারলেন
না। অবশেষে জুববার নীচ দিয়ে বাহু দু’খানা বের করে নিয়ে ধুলেন এবং মাথা
মাসাহ করলেন। এরপর আমি তাঁর মোজা খুলতে উদ্যত হলে, তিনি বললেন: রাখো। আমি
পবিত্র অবস্থায় এ দু‘টি পরিধান করেছিলাম। এ বলে তিনি মোজার উপরে মাসাহ
করলেন।[1]
অত্র হাদীসে মাসাহ বৈধ হওয়ার জন্য পবিত্র
অবস্থায় মোজা পরিধান করাকে শর্ত করা হয়েছে। আর শর্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়টি সে
বিষয়ের শর্তের অস্তিত্ব ছাড়া বিশুদ্ধ হয় না। জমহুর বিদ্বানের মতে, পবিত্রতা
বলতে শারঈ পন্থায় ওযূ করে পবিত্রতা অর্জন করাকে বুঝায়।[2]
প্রয়োজনীয় কথা:
যে ব্যক্তি এক পা ধৌত করার পর তাতে মোজা
পরিধান করালো অতঃপর অন্য পা ধুয়ে তাতে মোজা প্রবেশ করালো, তাহলে এরূপ
ক্ষেত্রে ইমাম মালিক, শাফেঈ ও আহমাদ (রাহি.) বলেন[3], তাহলে তার জন্য ওযূ
ভঙ্গের পর মোজাদ্বয়ের উপর মাসাহ করা বৈধ হবে না। কেননা সে ত্বহারাত পূর্ণ
করার পূর্বেই পায়ে মোজা প্রবেশ করিয়েছে। তবে যদি সে প্রথমটি খুলে আবার
পরিধান করে তাহলে তাদের নিকট মাসাহ বৈধ বলে গণ্য হবে।
অপর পক্ষে ইমাম আবূ হানীফা, আহমাদের দু’টি
অভিমতের একটিতে ও ইবনে হাযমের মতে, উভয় মোজার উপর মাসাহ করা বৈধ। কেননা সে
উভয় মোজাকে দু’পা পবিত্র করেই প্রবেশ করিয়েছে। ইবনে মুনযির ও শাইখুল ইসলাম
এ মতকে পছন্দ করেছেন।[4]
আমার বক্তব্য: বৈধ হওয়ার
অভিমতটি যুক্তিযুক্ত। এ ক্ষেত্রে গোঁড়ামী করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে
করি না। যতক্ষণ পর্যন্ত ‘‘কিছু অংশ পবিত্র করার কারণে তা নিষিদ্ধ হবে’’
এরূপ কোন দলীল না পাওয়া যায়। তবে প্রত্যেকটির উপর আমল করা যায়। আর সতর্কতার
কথা বিবেচনা করলে ওযূ সম্পূর্ণ করার পরই দু’পা মোজায় প্রবেশ করানো দরকার।
আল্লাহ্ ভাল জানেন।
ছেঁড়া মোজার উপর কি মাসাহ করা যাবে?
অধিকাংশ ফক্বীহ মোজা মাসাহ বৈধ হওয়ার জন্য
ওযূর সময় ধৌত করতে হয় এমন ফরযকৃত স্থানকে ঢাকা শর্ত করেছেন। ফলে তারা
ছেঁড়া মোজার উপর মাসাহ করতে নিষেধ করেছেন। কেননা এতে ওযূর অঙ্গ দেখা যায়,
যা ধেŠত করা ফরয। আর ধৌত ও মাসাহ কখনও একত্রিত হয় না। এমন হলে ধৌত করার
হুকুমটিই প্রধান্য পেয়ে যাবে। এটা ইমাম শাফেঈ ও আহমাদ (রাহি.) এর অভিমত।[5]
অন্যদিকে ইমাম মালিক ও আবূ হানীফা (রাহি.) বলেন,
ছেঁড়া মোজার উপর মাসাহ করা বৈধ, যতক্ষণ পর্যন্ত তা পরিধান করে চলাফেরা করা
সম্ভব হবে ও তার নাম অবশিষ্ট থাকবে। এটা সাওরী, ইসহাক, আবূ সাওর ও ইবনে
হাযমের অভিমত। ইবনে মুনযির ও ইবনে তাইমিয়াহ এই অভিমতটিকে পছন্দ করেছেন।[6] এ
অভিমতটিই বিশুদ্ধ। কেননা মোজার উপর মাসাহ করার অনুমতিটা সাধারণভাবে দেয়া
হয়েছে। প্রকাশ্য খবর অনুযায়ী মোজা নামে অবহিত এমন প্রত্যেক মোজা এর
অন্তর্ভুক্ত হবে। সুতরাং দলীল ব্যতীত মোজার মধ্যে কিছু মোজাকে বাদ দেয়া
যাবে না। যদি ছিঁড়া মোজার উপর মাসাহ করা নিষেধ হত, তাহলে এ ব্যাপারে
মহানাবী (ﷺ) বর্ণনা করতেন। বিশেষ করে, মহানাবী (ﷺ) জামানায় অনেক গরীব সাহাবা ছিলেন তাদের অধিকংশরাই ছিঁড়া মোজা পরিধান করতেন।
No comments:
Post a Comment