যদি আল্লাহ প্রত্যেক মানুষের জীবিকা লিপিবদ্ধ করে থাকেন তাহলে কিছু মানুষ না-খেয়ে মারা যায় কেন?
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
আল্লাহ তাআলা হচ্ছেন- রায্যাক
(জীবিকাদাতা) এবং তিনিই উত্তম জীবিকাদানকারী। পৃথিবীতে বিচরণকারী
প্রত্যেকটি জীবের জীবিকা আল্লাহরই দায়িত্বে। কোন লোভাতুরের লোভ অথবা
হিংসুকের হিংসা কাউকে তার জীবিকা হতে বঞ্চিত করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা
তাঁর প্রজ্ঞা অনুযায়ী মানুষের জীবিকার মধ্যে তারতম্য করেন। যেমনিভাবে
মানুষের আকার-আকৃতি ও স্বভাব-চরিত্রের মধ্যেও তিনি ভিন্নতা দিয়ে থাকেন।
আল্লাহ তাআলা মানুষের জীবিকার মধ্যে বিস্তৃতি দেন। তিনি যাকে ইচ্ছা জীবিকার
সচ্ছলতা দেন, যাকে ইচ্ছা জীবিকা সংকুচিত করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর
পূর্ববর্তী জ্ঞান ও লিপিকার ভিত্তিতে মানুষের জীবিকা বণ্টন করেন। তাঁর
পূর্ব জ্ঞান ও লিপিকাতে রয়েছে বান্দাদের মধ্যে কে সচ্ছল জীবিকা পাবে, আর কে
সংকুচিত জীবিকা পাবে। এর মধ্যে রয়েছে মহান আল্লাহর প্রভূত হেকমত (গূঢ়
রহস্য)। তাঁর সকল হেকমত অনুধাবন করা বান্দার সাধ্যে নেই। জীবিকায় সচ্ছলতা
দান ও সংকোচনের একটি হেকমত হচ্ছে- নেয়ামত দিয়ে অথবা বিপদ-আপদ দিয়ে বান্দাকে
পরীক্ষা করা। “আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।”[সূরা আম্বিয়া, ৩৫] আল্লাহ তাআলা আরো বলেন: “মানুষ
এরূপ যে, যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন এভাবে যে, তাকে সম্মান ও
অনুগ্রহ দান করেন তখন সে বলে, আমার পালনকর্তা আমাকে সম্মান দান করেছেন। এবং
যখন তাকে পরীক্ষা করেন এভাবে যে, তার রিযিক সংকুচিত করে দেন, তখন সে বলে:
আমার পালনকর্তা আমাকে হেয় করেছেন।[সূরা ফজর, আয়াত: ১৫-১৬] এই বক্তব্যের পর আল্লাহ তাআলা বলেন: “এটা অমূলক”।
অর্থাৎ মানুষ যা ধারনা করে প্রকৃত অবস্থা তদ্রূপ নয়। বরঞ্চ জীবিকার
সচ্ছলতা ও সংকোচন বান্দার জন্য একটি পরীক্ষা; তাকে সম্মান দেয়া বা অপমান
করা নয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে শুকরগুজার ও ধৈর্যশীল বান্দা এবং অকৃতজ্ঞ ও
অধৈর্য বান্দাদের চেনা যায়। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞানী। উদ্ধৃতি সমাপ্ত।
আমাদের শিক্ষক শাইখ আব্দুর রহমান আল-বার্রাক এই উত্তরটি আমাদের কাছে লিখে পাঠিয়েছেন
No comments:
Post a Comment