Wednesday, January 3, 2018

একটি বলার ভুল : সন্তানকে বলা : তুমি আমার লক্ষ্মী! ভুল উচ্চারণে কালিমা পাঠ : লা-ইলাহা ইল্লেল্লাহ

একটি বলার ভুল : সন্তানকে বলা : তুমি আমার লক্ষ্মী!

অনেক বাবা-মা সন্তানকে আদর করে বলেন, তুমি আমার লক্ষ্মী! এটি একটি মারাত্মক ভুল কথা যা আকীদা-বিশ্বাসকে কলুষিত করে। এ ধরনের কথা মূলত হিন্দুদের থেকে মুসলমানদের মাঝে সংক্রমিত হয়েছে। লক্ষ্মী হল হিন্দুদের দেবী যাকে হিন্দুরা ধন-ঐশ্বর্য ও সৌভাগ্যের দেবী মনে করে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে ভাষার শব্দ-চয়নের সুন্দর-অসুন্দরও শিখিয়েছেন। সেখানে কোনো শব্দের সাথে যদি শিরকের সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে তা যে বর্জনীয় একথা বলারই অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং এ ধরনের হিন্দুয়ানী  কথা বলা থেকে বিরত থাকা জরুরী।

একটি ভুল প্রচলন : কবরের চার কোণে চার কুল

অনেক এলাকায় প্রচলন আছে, মায়্যেতকে দাফন করার পর চার ব্যক্তি কবরের চার কোণে দাঁড়িয়ে চার কুল (অর্থাৎ সূরা কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়ে। তারপর তারা কবরের চার কোণে চারটি তাজা ডাল পুঁতে দেয়।
কোথাও আবার চার কোণের চারটি খুঁটি হাতে চার কুল পড়ে খুঁটিগুলো গেড়ে দেয়। কোথাও চার খুঁটিতে সুতা পেঁচায়। আবার কেউ বলল, তাদের এলাকায় চারটি কঞ্চি হাতে চার কুল পড়ে কঞ্চি চারটি কবরের উপর রাখে।

এটি একটি মনগড়া রসম যার কোনো ভিত্তি নেই। কোনো হাদীসে বা সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এ আমলের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। সুতরাং তা বর্জনীয়। এজাতীয় মনগড়া কোনো রসমের পিছে না পড়ে প্রমাণিত কোনো আমল করা উচিৎ। যেমন দাফন শেষে মায়্যেতের জন্য মাগফিরাতের দুআ করা এবং কবরের সুওয়াল জওয়াব সহজ হওয়ার জন্য দুআ করা। সূরা বাকারার শুরু থেকে মুফলিহুন (১-৫ আয়াত) পর্যন্ত এবং শেষে আমানার রাসূলু থেকে শেষ পর্যন্ত (২৮৫-২৮৬ আয়াত) তিলাওয়াত করে ইসালে সওয়াব করা ইত্যাদি

একটি ভুল প্রচলন : কবরের চার কোণে চার কুল

অনেক এলাকায় প্রচলন আছে, মায়্যেতকে দাফন করার পর চার ব্যক্তি কবরের চার কোণে দাঁড়িয়ে চার কুল (অর্থাৎ সূরা কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়ে। তারপর তারা কবরের চার কোণে চারটি তাজা ডাল পুঁতে দেয়।
কোথাও আবার চার কোণের চারটি খুঁটি হাতে চার কুল পড়ে খুঁটিগুলো গেড়ে দেয়। কোথাও চার খুঁটিতে সুতা পেঁচায়। আবার কেউ বলল, তাদের এলাকায় চারটি কঞ্চি হাতে চার কুল পড়ে কঞ্চি চারটি কবরের উপর রাখে।
এটি একটি মনগড়া রসম যার কোনো ভিত্তি নেই। কোনো হাদীসে বা সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এ আমলের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। সুতরাং তা বর্জনীয়। এজাতীয় মনগড়া কোনো রসমের পিছে না পড়ে প্রমাণিত কোনো আমল করা উচিৎ। যেমন দাফন শেষে মায়্যেতের জন্য মাগফিরাতের দুআ করা এবং কবরের সুওয়াল জওয়াব সহজ হওয়ার জন্য দুআ করা। সূরা বাকারার শুরু থেকে মুফলিহুন (১-৫ আয়াত) পর্যন্ত এবং শেষে আমানার রাসূলু থেকে শেষ পর্যন্ত (২৮৫-২৮৬ আয়াত) তিলাওয়াত করে ইসালে সওয়াব করা ইত্যাদি

ভুল উচ্চারণে কালিমা পাঠ : লা-ইলাহা ইল্লেল্লাহ


যে কালেমার মাধ্যমে আমরা ঈমানের স্বীকৃতি দিই তাওহীদের সাক্ষ্য দিই সে কালেমার উচ্চারণেও দেখা যায় কিছু মানুষ ভুল করে থাকেন। দ্বীনী শিক্ষার বিষয়ে শিথিলতা অনেক বড় অন্যায়। কিন্তু এ পর্যায়ের শিথিলতাকে আমরা কী বলতে পারি জানি না।
দ্বীনী বিষয়ে মক্তব স্তরের শিক্ষা যে লাভ করেছে তারও তো এ ধরনের ভুল হওয়ার কথা নয়। কিন্তু আফসোস! কিছু মানুষের এ স্তরের দ্বীনী শিক্ষারও সুযোগ হয় না বা প্রয়োজন মনে করে না। ফলে দ্বীনী সাধারণ সাধারণ বিষয়েও ভুলের শিকার হন।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এখানে ইল্লাল্লাহ শব্দের প্রথম ল্ল-তে আ-কার দিয়ে অর্থাৎ যবর দিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু কিছু মানুষ এ ক্ষেত্রে আ-কার অর্থাৎ যবর-এর পরিবর্তে এ-কার অর্থাৎ যের দিয়ে ইল্লেল্লাহ পড়েন যা সম্পূর্ণ ভুল। এ শব্দের সঠিক উচ্চারণ হল, ইল্লাল্লাহ (দ্বিতীয় ল্ল-তে পোড় করে অর্থাৎ স্বর মোটা করে উচ্চারণ করতে হবে)
উল্লেখ্য, আরবী শব্দের সঠিক উচ্চারণ বাংলায় প্রকাশ করা কঠিন। এ কারণে কর্তব্য হচ্ছে, এজাতীয় উচ্চারণগত বিষয়গুলো কোনো অভিজ্ঞ ক্বারী ছাহেবের কাছে মশক করে শুদ্ধ করে নেওয়া।

একটি বানোয়াট কিসসা : কোহে কাফের মোরগ

কোহ ফার্সী শব্দ, অর্থ পাহাড় আর কাফ হল আরবী হরফ-দুই নোকতা ওয়ালা ক্বফ। আর কোহে কাফ বলতে বুঝায় একটি পাহাড়, যা কি না আরবী ক্বফের মত বৃত্তাকার হয়ে পুরো পৃথিবীকে বেষ্টন করে রেখেছে আর তার উপর বিশালাকার একটি মোরগ রয়েছে যার এক পা পাহাড়ের এক প্রান্তে আর অন্য পা অপর প্রান্তে। একেই বলে কোহে কাফের মোরগ।
আল্লাহ কত বড় রায্যাক (রিযিকদাতা)-তা বোঝাতে গিয়ে কিছু কাহিনীকার এই কিস্সার অবতারণা করে বলেন, আল্লাহ এত বড় রিযিকদাতা যে, এই বিশালাকার মোরগকে নিয়মিত রিযিক দিচ্ছেন।
আসলে এটি একটি বানোয়াট কিস্সা যার কোনো ভিত্তি নেই। কোহে কাফের মোরগ তো দূরের কথা কোহে কাফেরই কোনো অস্তিত্ব নেই।
তাফসীরে ইবনে কাছীরে সূরা ক্বফ এর তাফসীরের শুরুতে ইবনে কাছীর রাহ. বলেন, ‘‘আমার কাছে মনে হয়, এটা এবং এজাতীয় বিষয়গুলো যিন্দীকদের বানানো।’’ ইমাম আলূসী রাহ. তাফসীরে রূহুল মাআনীতে ইমাম ক্বারাফী রাহ. এর বক্তব্য উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘কোহে কাফের (জাবালে কাফ) কোনো অস্তিত্ব নেই।’’ এ কথা নকল করার পর আলূসী রাহ. বলেন, আমার মতও এমনই। (তাফসীরে রূহুল মাআনী খ. ২৩ পৃ. ১৯২ [শামেলা]) আরো বিস্তারিত দেখুন : ‘‘আল ইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূআত ফী কুতুবিত তাফাসীর, মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ আবু শাহবা পৃ. ৩০২-৩০৪’’
আর আল্লাহ যে মহান রিযিকদাতা এ কথা বোঝানোর জন্য জাতীয় ভিত্তিহীন কিসসার অবতারণা করার কোনো প্রয়োজন নেই। আলকুরআনে এ বিষয়ক প্রচুর আয়াত রয়েছে। 
আল্লাহ আমাদের যাচাই বাছাই ছাড়া ভিত্তিহীন কথা বলা থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ