ব্যাংকের বৈধ কার্যাবলী
ব্যাংক
প্রসঙ্গে যে সমালোচনা করা হল তার অর্থ এই নয় যে, ব্যাংকের সারা
কাজ-কারবারই ভুল, নাজায়েয ও হারাম এবং এর সহিত কোন প্রকারেরই লেনদেন বৈধ
হতে পারে না। কারণ ব্যাংক অনেক এমন কল্যাণকর ও বৈধ কর্মও সম্পাদন করে থাকে,
যা বর্তমান যুগের কৃষ্টিময় জীবন এবং লেনদেন ও ব্যবসায় সংক্রান্ত বিভিন্ন
প্রয়োজনের ক্ষেত্রে উপকারী বটে এবং জরুরীও। বস্ত্ততঃ ব্যাংকও আধুনিক
সভ্যতার আলোকে গড়ে উঠা বহু জিনিসের মতই এমন এক উপকারী জিনিস যাকে শুধুমাত্র
একটি শয়তানী উপাদান (সূদ) এর মিশ্রণ নোংরা করে রেখেছে।
এ ব্যাপারে ব্যাংক যে সকল বৈধ খিদমত আঞ্জাম দেয় তা সংক্ষেপে বর্ণনা করি-
১- এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা
স্থানান্তর করা, অনুরূপ এক রাষ্ট্র থেকে অন্য রাষ্ট্রে টাকা ট্রান্সফার
করা। অবশ্য এর বিনিময়ে ব্যাংক সামান্য ফী গ্রহণ করে থাকে। যা ভাড়া বা
মজুরীর পর্যায়ভুক্ত, আর তা দেওয়া-নেওয়া নিশ্চয়ই বৈধ।
২- ট্রাভেল চেক (TRAVEL CHEQUE) জারী
করাঃ- যে ব্যক্তি এক রাষ্ট্র থেকে ভিন্ন রাষ্ট্রে সফর বা ভ্রমণ করে তার এ
রাষ্ট্রে অর্থের প্রয়োজন অবশ্যই পড়ে। এ ক্ষেত্রে সে ব্যাংকে নগদ টাকা জমা
করে ট্রাভেল চেক সংগ্রহ করে; যা সে যে কোন জায়গায় ভাঙ্গিয়ে (যত টাকা জমা
দিয়েছিল) তত টাকাই গ্রহণ করতে পারে। আর এ পদ্ধতি নিঃসন্দেহে নিজের সাথে নগদ
টাকা নিয়ে বেড়ানোর চাইতে অধিকতর সহজ এবং নিরাপত্তামূলক।
৩- আয়রন-চেষ্ট বা লক ভাড়া দেওয়াঃ- যদি
কোন ব্যক্তি (নিরাপদ) আয়রন-চেষ্ট বা লকে টাকা পয়সা অথবা সোনা-দানা রাখতে
চায়, তাহলে সে তা ব্যাংক থেকে ভাড়া নিতে পারে।
৪- কোম্পানীর শেয়ার বিক্রয় করাঃ- কোম্পানী চাইলে ব্যাংক কোম্পানীর নিকট মজুরী নিয়ে তার শেয়ার বিক্রয় করে দেয়।
৫- বৈদেশিক লেন-দেন (বা আমদানী ও রফতানী)
সংক্রান্ত সুবিধাজনক ও সহজভাবে পারস্পরিক সরবরাহ করাঃ- ব্যাংকের এটি একটি
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেবা। উক্ত বিনিময় সুবিধার মাধ্যমে ব্যাংক বহির্দেশের
সাথে (ক্রয়-বিক্রয় বা আমদানী-রপ্তানী ইত্যাদি) আদান-প্রদানকারীদেরকে বহু
প্রকার অসুবিধা, হয়রানি ও কষ্ট থেকে অব্যাহতি ও আরাম প্রদান করে। যেমন,
ব্যাংক তাদের তরফ থেকে মূল্য আদায় করে, পণ্য-রফতানীর কাগজাদির দায়িত্ব নিজে
বহন করে। আর এসব কর্ম ব্যাংক কিঞ্চিৎ মজুরীর বিনিময়ে সম্পাদন করে থাকে। যা
দেওয়া নেওয়া বৈধ।
৬- ঋণ আদায় করাঃ- এই ঋণ আদায় করার নিয়ম
এই যে, ঋণদাতা লোকেরা ব্যাংকের নিকট তাদের কাগজ-পত্র জমা করে এবং তার উপর
স্বাক্ষর করে ব্যাংককে সোপর্দ করে দেয়। যাতে ব্যাংক নিজের মজুরী নিয়ে তাদের
ঋণ আদায় করে দেয়। (আল মুআমালাতুল মাসরাফিয়্যাহ ৩৮-৩৯ পৃঃ)
৭- আকলপত্র (LETTERS OF CREDIT) খোলা। বিনা সূদে এল সি খোলার উপর ব্যাংক যে ফী নেয় তা বৈধ।
No comments:
Post a Comment