(৫০৩) তওয়াফ-সাঈতে কি বিশেষ কোন দু’আ আছে?
হজ্জ-ওমরার
জন্য নির্দিষ্ট কোন দু’আ নেই। মানুষ জানা যে কোন দু’আ পাঠ করতে পারবে।
কিন্তু নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত দু’আ সমূহ পাঠ
করা উত্তম। বিশেষ করে রুকনে ইয়ামানী ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে এই
দু’আ পাঠ করা সুন্নাতঃ
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
“রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুন্ইয়া হাসানাতাঁও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ্,
ওয়াক্বিনা আযাবান্নার।” অনুরূপভাবে সাফা-মারওয়ায় ও আরাফার দিবসের প্রমাণিত
দু’আ পাঠ করতে পারে। সুন্নাত থেকে প্রমাণিত যে সমস্ত দু’আ জানা আছে তাই পাঠ
করা উচিৎ। কিন্তু জানা না থাকলে তার মাথায় যে দু’আই আসে তাই পাঠ করা যাবে।
কেননা এই দু’আ পাঠ করা ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত নয়; বরং উহা মুস্তাহাব।
এ উপলক্ষে আমি বলতে চাইঃ হজ্জ-ওমরার জন্য
ছোট ছোট পুসি-কা হাজীদের হাতে দেখা যায়। তাতে তওয়াফ-সাঈর প্রত্যেক চক্করের
জন্য ভিন্ন ভিন্ন দু’আ নির্দিষ্ট করা থাকে। এটা বিদআত। এতে নিশ্চিতভাবে
অনেক ধরণের বিপদ আছে। যেমন,
১) যারা এটা পাঠ করে ধারণা করে যে, বইয়ের দু’আগুলো নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত।
২) তারা এই দু’আর প্রত্যেকটি শব্দ পাঠ করা ইবাদত মনে করে।
৩) কোন মর্ম বা অর্থ না বুঝেই তা পাঠ করে।
৪) প্রত্যেক চক্করের জন্য আলাদা আলাদা দু’আ নির্দিষ্ট করে।
৫) ভীড়ের কারণে চক্কর পূর্ণ হওয়ার আগেই দু’আ পড়া শেষ হয়ে গেলে চুপ করে থাকে।
৬) আর দু’আ শেষ হওয়ার আগে চক্কর শেষ হয়ে গেলে দু’আ পড়া ছেড়ে দেয়। এই বিদআতী আমলের কারণে এতগুলো ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
অনুরূপভাবে মাক্বামে ইবরাহীমের কাছে পাঠ
করার জন্য ঐ বইয়ে যে দু’আ পাওয়া যায়, তাও বিদআত। কেননা উহা নবী
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত নয়। বরং তিনি সেখানে গিয়ে
পাঠ করেছেন, وَاتَّخِذُوا مِنْ مَّقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
“তোমরা মাক্বামে ইবরাহীমকে নামাযের স্থান হিসেবে গ্রহণ কর।” (সূরা
বাক্বারাঃ ১২৫) এবং তিনি এর পিছনে দু’রাকাত নামায আদায় করেছেন। অতএব যারা
এখানে এসে অতিরিক্ত দু’আ পাঠ করে এবং অন্যান্য মুছল্লী ও তওয়াফকারীদের
মনোযোগে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, তাদের এই কাজ দু’টি কারণে গর্হিত ও বিদ্আতঃ
ক) এ সমস্ত দু’আ নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত না
হওয়ার কারণে তা বিদআত। খ) যারা মাক্বামে ইবরাহীমের পিছনে ছালাত আদায় করে
তাদের নামাযে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।
No comments:
Post a Comment