আমি হল্যাণ্ডে থাকি। এখানে লোকেরা প্রথম রমজানের দিন মতভেদে জড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ মিশরের সাথে রোজা রাখে। আবার কেউ কেউ সৌদি আরবের ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় থাকে। এ ক্ষেত্রে কোন অবস্থানটি সঠিক?
নতুন চাঁদ দেখার মাধ্যমে আইনত নতুন মাস শুরু হওয়া সাব্যস্ত হয়। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাঙ্গ।”[সহিহ
বুখারি (১৯০৯) ও সহিহ মুসলিম (১০৮১)] জোর্তিবিদদের হিসাবের ভিত্তিতে মাসের
শুরু সাব্যস্ত করা যাবে না। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে, চন্দ্রের
উদয়স্থল এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভিন্ন ভিন্ন। বিশেষতঃ
হল্যাণ্ডের মত এমন
দূরবর্তী দেশের ক্ষেত্রে তো অবশ্যই। চন্দ্রের উদয়স্থল যে, ভিন্ন ভিন্ন এ
ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু মতভেদ হচ্ছে- এক দেশ থেকে আরেক দেশে
মাস সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে এ উদয়স্থলের ভিন্নতার কোন প্রভাব আছে কিনা,
সেটা নিয়ে আলেমদের মতভেদ রয়েছে।
দুই:
অমুসলিম দেশে বসবাসকারী মুসলমানদের যদি
কোন শরিয়া কমিটি অথবা বোর্ড থাকে তাহলে তারা সে কমিটির সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
করবে এবং চন্দ্র মাসের শুরু ও সমাপ্তি সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে উক্ত কমিটির
চাঁদ-দেখার উপর নির্ভর করবে। ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির আলেমগণ ফতোয়া
দিয়েছেন যে, এ ধরনের ফতোয়া বোর্ড সংশ্লিষ্ট দেশের মুসলমানদের জন্য ইসলামি
সরকারের ভূমিকা পালন করবে এবং চন্দ্রমাসের শুরু ও শেষ নির্ধারণের ক্ষেত্রে এ
বোর্ডের অনুসরণ করা তাদের জন্য অবধারিত হবে। এ বিষয়ের আরো বিস্তারিত বিবরণ
(1248) নং প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করা হয়েছে।
আর যদি সে দেশের মুসলমানদের এ রকম কোন
শরিয়া বোর্ড না থাকে তাহলে তারা অন্য কোন মুসলিম দেশের অনুসরণ করে রোজা
রাখবেন এবং রোজা ভাঙ্গবেন। যে দেশের উপর তারা আস্থা রাখতে পারেন, যে দেশে
চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করা হয়; জোর্তিবদ্যার উপর নির্ভরে নয়।
স্পেনের অধিবাসীদের মধ্যে যারা সৌদি
আরবের সাথে রোজা রাখে ও রোজা ভাঙ্গে তাদের সম্পর্কে শাইখ বিন বায (রহঃ) কে
জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন:
আপনারা উল্লেখ করেছেন যে, স্পেনে বসবাস
করেন বিধায় আমাদের সাথে রোজা রাখেন ও আমাদের সাথে রোজা ভাঙ্গেন এতে কোন
অসুবিধা নেই। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাঙ্গ। আর যদি আকাশ মেঘে ঢাকা থাকে তবে মাসের দিন সংখ্যা ত্রিশ পূর্ণ কর।”
এ হাদিসটির বিধান সমস্ত উম্মতের জন্য সাধারণ। আর হারামাইনের দেশকে অনুসরণ
করা অপেক্ষাকৃত শ্রেয়। যেহেতু তারা ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী শাসনকার্য
পরিচালনার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আল্লাহ তাআলা এই দেশকে আরো বেশি তাওফিক দান
করুন। যেহেতু আপনারা এমন একটি দেশে বসবাস করছেন যে দেশে ইসলাম অনুযায়ী
শাসনকার্য পরিচালনা করা হয় না এবং সে দেশের অধিবাসীরা ইসলামের প্রতি
ভ্রুক্ষেপ করে না।[বিন বাযের ফতোয়া সংকলন, ১৫/১০৫]
আল্লাহই ভাল জানেন।
No comments:
Post a Comment