যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি লাইলাতুল কদরে কী করবেন? তিনি কি ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল হয়ে তার সওয়াব বাড়াতে পারবেন? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে এই রাতে তিনি কী কী ইবাদত করতে পারবেন?
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি শুধু নামায, রোজা, বায়তুল্লাহ তওয়াফ ও মসজিদে ইতিকাফ ব্যতীত বাকী সমস্ত ইবাদত করতে পারেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে যে তিনি রমজানের শেষ দশকে রাত জাগতেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত: “শেষ দশক প্রবেশ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোমর বেঁধে নামতেন। তিনি নিজে রাত জাগতেন এবং
তাঁর পরিবারবর্গকে জাগিয়ে দিতেন।”[সহীহ বুখারী (২০২৪) ও সহীহ মুসলিম (১১৭৪)]
ইহইয়াউল লাইল বা রাত জাগা শুধু নামাযের
জন্য বিশিষ্ট নয়, বরং তা সকল ইবাদতের মাধ্যমে হতে পারে। আলেমগণ إِحْيَاء
الليل কথাটিকে এই অর্থে ব্যাখ্যা করেছেন।
ইবনে হাজার বলেছেন: “أحيا ليله” অর্থ- তিনি ইবাদত ও আনুগত্যের মধ্যে রাত জাগতেন।” নববী রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: “অর্থাৎ তিনি সালাত ও অন্য ইবাদতের মাধ্যমে গোটা রাত কাটিয়ে দিতেন।”
আউনুল মাবূদ গ্রন্থে বলা হয়েছে: “অর্থাৎ নামায, যিকির-আযকার ও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে (রাত কাটিয়ে দেয়া)।”
লাইলাতুল কদরে বান্দা যে যে ইবাদত করতে
পারেন তার মধ্যে কিয়ামুল লাইল (রাতের নামায) সর্বোত্তম। এজন্য নবী
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে বা ভাগ্য রজনীতে নামায আদায় করবে তার পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে।” [সহীহ বুখারী (১৯০১)ও সহীহ মুসলিম (৭৬০)]
যেহেতু যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তার
জন্য নামায আদায় করা নিষিদ্ধ তাই তিনি নামায ব্যতীত অন্য সব ইবাদত করার
জন্য রাত জাগতে পারেন। যেমন:
১। কুরআন তেলাওয়াত করা, দেখুন (2564) নং প্রশ্নের উত্তর।
২। যিকির করা। যেমন: সুবহানাল্লাহ, লা
ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল হামদু লিল্লাহ ইত্যাদি জপা। সুতরাং যে নারীর মাসিক
শুরু হয়েছে তিনি বেশী বেশী সুবহানাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ, লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি ওয়া
সুবহানাল্লাহিল আযিম ই্ত্যাদি জপতে পারেন।
৩। ইস্তিগফার করা: তিনি বেশি বেশি ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি) পাঠ করতে পারেন।
৪। দোয়া করা: তিনি আল্লাহ তাআলার কাছে
বেশি করে দোয়া করতে পারেন এবং তাঁর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ
প্রার্থনা করতে পারেন। দোয়া হল সর্বোত্তম ইবাদতগুলোর অন্যতম। এটা এতবেশী
গুরুত্বপূর্ণ যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “দোয়া ই হল- ইবাদত।”[জামে তিরমিযী (২৮৯৫), আলবানী ‘সহীহ আত-তিরমিযী’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন (২৩৭০)]
যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি লাইলাতুল ক্দরে উল্লেখিত ইবাদতগুলোসহ অন্যান্য ইবাদত পালন করতে পারেন।
আমরা আল্লাহ তা‘আলার কাছে প্রার্থনা করছি
তিনি যা পছন্দ করেন ও যাতে সন্তুষ্ট হন আমাদেরকে যেন তা পালন করার তাওফিক
দেন এবং আমাদের নেক আমলগুলো কবুল করে নেন
No comments:
Post a Comment