পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
কারো ভাল লাগুক বা না লাগুক, মেয়েরা ছেলেদের জন্য পা থেকে মাথা পর্যন্ত ফিতনা, অফলাইন থেকে অনলাইন সবখানে ফিতনা। তবু এতে মেয়েদের কষ্ট পাবার কিছু নেই। ফিতনা মানে হল পরিক্ষা। এটা ছেলেদের জন্য সবচেয়ে বড় ঈমানী পরীক্ষাগুলোর একটি।
হুজুর ছেলেদের কাছে কিন্তু আবার বেপর্দা মেয়েদের চেয়ে হিজাবি মেয়েরা বড় ফিতনা।
অফলাইনের ফিতনা নিয়ে ত সবাই অনেক সতর্কই আছে মনে হয়। তাই অনলাইনে এই ফিতনার কিছু রূপ তুলে ধরছি। মূলত দ্বীনী সমাজের ফিতনাটাই আলোচনা করছি।
ফেসবুকে এই ফিতনা চিহ্নিত করার মূল উপায় হল লাইক, কমেন্ট, মেসেজ।
মেয়েরা কিভাবে বুঝবে যে কোন ভাইয়ের জন্য আমি বিশাল ফিতনা হয়ে গেছি?
- ফিতনায় পরা ভাই সব পোস্টে লাইক দিবে। (friend list এ থাকুক আর না থাকুক)ছাই পাশ যা খুশি পোস্ট করেন না কেন সে লাইক দিবেই। হয়ত সবার প্রথম লাইকটাই দেখবেন তার।
- পোস্ট নিজের কাছে পচা লাগলেও সে এসে কমেন্ট করে বসবে হয়ত
- টপ লেভেলের দ্বীনদার মেয়েরা কোন ছবি আপলোড দেয় না। যারা ছবি দেয় তাদের ছবিতে ফিতনায় পরা ভাইয়ের লাইক থাকবেই।
- ফিতনা যদি আরও বেশী হয় তবে নানা ছুতায় ওই ভাই মেসেজ পাঠাবে।
- একাধিক ভাইয়ের জন্য ফিতনার কারণ হলে তাদের মধ্যে সূক্ষ্ম প্রতিযোগিতা টের পাবেন।
- অনেক ক্ষেত্রে আপনি যাতে লাইক দিবেন ওই ভাইও তাতে লাইক দিবে।
মেয়েদের উদ্দেশ্য করে লিখলাম কারণ ছেলেরাই ফিতনায় পরে মূলত।
-কোন ইসলামিক পোষ্ট দিলেন সেটা এসে কমেন্ট করবে আবার মেসেঞ্জারে গিয়ে বলবে আমাকে এড করে ফ্রেন্ড করেন যাতে আরো শিখতে পারি।আচ্ছা আপনি কি মাদ্রাসায় পড়েছেন আপনার পোষ্ট দেখে ভাল হওয়ার চেষ্টা করছি।অথবা কোন ইসলামিক বিষয়ে প্রশ্ন করার ছলে কথা বলতে চাইবে।একবার ভাল করে ভাবুন কত ছেলেরাও তো আছে যারা ভাল পোষ্ট করে তাদেরই প্রশ্ন করতে পারে, আর আপনার কমেন্টে ছোট করে কিছু বলে মেসেঞ্জারে গিয়ে বলছে বড় করে।
যা করবেন না
১)মেসেজ এর উত্তর দেয়ার দরকার নেই।দিলে ও সুপারফিসিয়াল কথা বলবেন।কি করছেন কোথায় থাকেন এধরনের প্রশ্নের উত্তর দিবেন না।আপনি কত সালে অমুক পরীক্ষা পাশ করেছেন এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া থেকে সাবধান।এসব প্রশ্নের মাধ্যেমে আপনার এইজ মিজার করতে চাচ্ছে
২)মেয়ে আইডি পেলেই মনে করবেন না ।আপনার কোনো দ্বীনি বোন হুট করেই সব ব্যক্তিগত তথ্য ইনবক্সে বলা থেকে সাবধান থাকুন।ফেইক আইডি মানে মেয়ে নাম দিয়ে ওটা ছেলের আইডি ও হতে পারে।
৩)ফেসবুকে পরিচয় হয়ে কাউকে মোবাইল,ভাইবার,স্কাইপি,হোয়াটসআপ,ইমু কাকায়ো ইত্যাদির নাম্বার দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
৪)সবচেয়ে ভালো বিপরীত লিঙ্গের আইডি মনে হলে এড না দেয়ে।এটা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপদ।
৫)কারো(এটা ছেলে বা আমাদের বোন উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) প্রোফাইল/এবাউট এ পরিবেশন করা তথ্য বা মেসেজ বলা কথা শুনেই বিশ্বাস করবেন না।
কারন তা সত্য হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।৫০/৫০চান্স।কারন আপনি তো জানেন না আপনার ওপাশের লোকটি মু'মিন না ফাসেক।ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখা ধার্মিক মনে করা বাতুলতা।
আল্লাহ সুরা হুজরাতে বলেন,(49:6)
"মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও!"
ফিতনায় পরা কিছু ভাইকে পর্যবেক্ষণ করে এইগুলো সব পেলাম। তবে দুই একজন মেয়েও ছেলের ফিতনায় পরতে পারে। তখনও একই জিনিস হবে।
এখন ফিতনা থেকে বাঁচার উপায় -
১। ফিতনা যদি প্রথম লেভেলে হয় তবে আনফ্রেন্ড করে দিন।
২। তার সাথে কন্টাক্টের সব পথ বন্ধ করে দিন।
৩। অনলাইনে আচরণের হিজাব মেনটেইন করুন। যে পোস্ট ছেলেরা দেখছে তাতে হাসা হাসি, লুতুপুতু আচরন না করুন।
৪। যদি মনে হয় কোন ভাই সিরিয়াস ফিতনায় পরেছে তবে তাকে ব্লক করুন।
৫|যদি মেসেঞ্জারে বেশি বিরক্ত করে তাহলে ব্লক দিন, যদি কেউ একাধিক আইডি দিয়ে বিরক্ত করে তাহলে মেসেজের ছবি স্ক্রিন শট নিয়ে পোষ্ট করে দিন, দেখবেন আর মেসেজ দিবেনা।
হয়ত প্রশ্ন আসবে জাহিলি সময় যাদের ফ্রেন্ড করেছেন। কাছের মানুষ তাদের কি করব। তারা তো অপমানিত বোধ করবে, রাগ করবে।
এখানে আপনাকে সেই কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া পাওয়া মানুষদের হাদিসটা আবার পড়তে বলব। সাতটি দলের মধ্যে একটি দল ছিল যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একত্র হয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিচ্ছিন্ন হয়।
তাই আপনি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ফিতনায় পরা ভাইদের থেকে বিচ্চিন্ন হন তবে ইনশাল্লাহ আল্লাহর আরশের ছায়া পাবার মত একটি কাজ করে ফেললেন।
আর ছেলেদের প্রতি, কারো কাউকে ভাল লেগেই যেতে পারে হঠাৎ। তাই কাউকে ভাল লাগলে শয়তানের ফাদে পা না দিয়ে নিজের নফসের লাগাম টেনে ধরুন। নিজে কিছু না করে মাহরাম নারীদের দিয়ে প্রস্তাব দিন। শয়তান বিয়ের আগে সুন্দর করে তুলে ধরে পাগল করে দিয়ে সরে যায়। এবং সারাজীবন তাদের ঝামেলা দেখে মজা নিতে থাকে। অপরদিকে কিছু বিয়ে যেন না হয় সেটার জন্যও শয়তান প্রাণপণ চেষ্টা করে। তাই শয়তান হতে সাবধান থাকুন সবাই।
◘ নারীদের জন্য- আমরা জানি, পুরুষের জন্য নারী সবচে বড় ফিতনা। আমি যেন কোন পুরুষের জন্য ফিতনার বস্তু না হই, এই দিকটা খেয়াল রাখা(অনিচ্ছাকৃত হলে আলাদা কথা, অন্তত ইচ্ছাকৃত যেন না হয়)।
পারলে আমার মত ফ্রেন্ডলিষ্ট খালি রাখেন,ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অপশন বন্ধ করে রাখুন,অনলাইনে ফ্রেন্ডের দরকার কি? মরার মেসেঞ্জার আনইস্টল করে দিন।
◘ পুরুষের জন্য- যেহেতু নারী আমার জন্য সবচেয়ে বড় ফিতনা, আমি যেন কোন নারীর ফিতনায় আটকা না পড়ে যাই। আমার দৃষ্টি হিফাজতের দায়ভার তো আমার.
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সাহায্য করুন আমিন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
সাম্প্রতিক পোষ্ট
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...
জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ
-
যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক? একে “মাযী” বলে। আর তা নাপাক। তা বের হলে উযূ নষ্ট হয়ে যায়। শরমগাহ...
-
গুপ্ত অভ্যাস (হস্তমৈথুন) ব্যবহার করা বৈধ কি? গুপ্ত অভ্যাস (হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্ত মৈথুন) করা কিতাব, সুন...
-
মনোমালিন্য ‘‘সংসার সাগরে দুঃখ-তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা।’’ কিন্তু সেই ভেলা ডুবে গেলে আর কার কি সাধ্য? স্বামী যদি স্...
-
*সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরানের ফজিলত গুলি কি কি? এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের অর্থঃ ✔1-রাতে ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ...
-
আপন মামাত, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোন, চাচী, মামি, স্ত্রীর বোন বা ভাবীর সাথে মুসাফাহাহ বৈধ কি? যার সাথে পু...
-
কেউ কেউ মনে করেন, আমার মন খুবই পরিস্কার। তাকে আমি মা, খালা, অথবা বোনের মতোই মনে করি ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে তাঁর সাথে মেলা-মেশা করতে অসুবিধা ...
-
কথা বলার ব্যপারে "ইসলামে"র শিক্ষা কি? ====== ১। কথা বলার পূর্বে সালাম দেয়া। সূরা নূরঃ ৬১ ২। সতর্কতার সাথে কথা বলা। (কে...
-
জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫টি অসাধারন হাদিস- *১-গীবত থেকে দূরে থাকা- আসমা বিনতে ইয়াযীদ হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যাক্তি তার (মুসলি...
-
# দোয়া_কবুল_না_হওয়ার_কারণগুলো_কি_কি ? ---------------------------------------------------------------------- কিছু পাপ আছে যা বান্দার মা...
-
প্রশ্ন:নাটক, সিনেমা দেখা , গল্পের বই পড়া কি জায়েজ ? =============================== উত্তর : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালা...
No comments:
Post a Comment