Tuesday, May 1, 2018

আমি যেদিন জানতে পারলাম আমি প্রেগন্যান্ট, আনন্দে কেঁদে দিয়েছিলাম। যখন আনন্দের উচ্ছাসটা কমে গেলো তখন মাথার মধ্যে একটা ভয় ঢুকে গেলো। আল্লাহ আমাকে সন্তান দিয়েছেন, আমি কি পারবো তাকে আল্লাহর পথে বড় করতে! চারিদিকে এতো ফিতনা, এতো নোংরামি, পারবো এর মাঝে ছেলেকে ঈমানের সাথে বড় করতে? আমি কি পারবো আদর্শ মা হতে?

মানুষের বিবেক কোথায় যে গেল????????
#আমি যেদিন জানতে পারলাম আমি প্রেগন্যান্ট, আনন্দে কেঁদে দিয়েছিলাম। যখন আনন্দের উচ্ছাসটা কমে গেলো তখন মাথার মধ্যে একটা ভয় ঢুকে গেলো। আল্লাহ আমাকে সন্তান দিয়েছেন, আমি কি পারবো তাকে আল্লাহর পথে বড় করতে! চারিদিকে এতো ফিতনা, এতো নোংরামি, পারবো এর মাঝে ছেলেকে ঈমানের সাথে বড় করতে? আমি কি পারবো আদর্শ মা হতে? প্রথমেই মনে হলো নিজে না জানলে সন্তানকে কি শেখাবো? তাই ইসলাম সম্পর্কে পড়তে লাগলাম। এই পড়তে গিয়ে একটা ব্যাপার উপলব্ধি করলাম, আল্লাহ আমাদের সন্তান দেন ভবিষ্যতে সন্তান টাকা কামাবে আর আমরা আরামে থাকবো এজন্যে না। বরং সন্তান আমাদের জন্য বড় একটা পরীক্ষা। আমরা যদি ভুল শিক্ষা দেই এবং সন্তান যতোবার ভুলটা করবে তার জন্য আমাদেরও শাস্তি পেতে হবে। সুবহানআল্লাহ! আল্লাহ আমাদের দ্বায়িত্ব দিয়েছেন একটা মানুষকে বড় করার, তাকে সঠিক শিক্ষা দেয়ার, তাকে আল্লাহর পথে চলার জন্য তৈরি করে দেয়ার। সন্তান বাইরে অনেকের সাথে মিশবে কিন্তু মূল্যবোধ তৈরি হবে আমাদের দেখে। আমি যদি অপচয়কারী হই সেও তা শিখবে। আমি যদি মিথ্যাবাদী হই, সেও সেটাই শিখবে,আমি যদি অহংকারী হই তার কাছে সেটাই স্বাভাবিক মনেহবে । সুবহানআল্লাহ! কি ভয়ঙ্কর অবস্থা! তারমানে আগে আমাকে আদর্শ মা হতে হবে! সন্তান পেটে আসার পর থেকেই সূরা ফুরকানের ৭৪ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ যে দুয়া শিখিয়ে দিয়েছেন তা পড়তাম, কিন্তু দুয়ার মহীমা উপলব্ধি করলাম এতোদিন পর! 'হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের জন্য চক্ষু শীতলকারী বানিয়ে দাও এবং আমাদেরকে তোমার অনুগত বান্দাদের জন্য আদর্শ বানিয়ে দাও '। আমাদের সন্তান একটা মানুষ। তার নিজের ইচ্ছা, অনিচ্ছা, পছন্দ, অপছন্দ, চাহিদা আছে। অনেক বাবা মায়েরাই নিজেদের ইচ্ছা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেন। কিন্তু এর ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে। আমাদের যেটা ঠিক মনে হয় সেটা তার জন্য সঠিক নাও তো হতে পারে। আমি এক ভাইকে চিনি যিনি বর্তমানে নেশাখোর হিসেবে পরিচিত। যখন সে স্কুলে ছিলো তার বাবা তাকে জোর করে সাইন্স পড়ার জন্য চাপ দিতো। কিন্তু ভাইটার ব্রেইন ভালো ছিলোনা। সে জানতো সে সাইন্স পড়লে পাশ করতে পারবেনা। শতো চেষ্টা করেও সে বাবা মাকে বুঝাতে পারেনি। উল্টা কপালে জুটেছিলো বাবার অমানুষিক মারধোর, গালাগালি। অত্যাচার থেকে বাঁচতে ভাইটি বাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু লাভ হলোনা। ধরে এনে আবার মারা হলো। বর্তমানে সেই ভাই নেশাখোর হিসেবে পরিচিত। সে আর পড়ালেখা করেনি। পড়ার প্রতি তার ঘৃণা জন্মে গিয়েছিলো। চুরি করে, নেশা করে সে তার বাকি জীবন পার করে দিতে লাগলো। বাবা মা লজ্জায় কারো কাছে এখন তাকে সন্তানের পরিচয় দিতে পারেনা। তারা নিজেদের ভাগ্যকে দোষ দেন এমন সন্তান জন্মের জন্য। আরেক ভাই এর কথা জানি যিনি ভার্সিটি পাশ করেই বিয়ে করতে চেয়েছিলো। কিন্তু বাবা মা দিলোনা। উল্টা বলতে লাগলো এখনই বিয়া করতে চাও লজ্জা করেনা?! বিয়ার জন্য পাগল হয়েছো কেন? আগে চাকরি করো, টাকা ইনকাম করো, ঘর গুছিয়ে এরপর মেয়ে আনো। ছেলের বয়স যখন ৩৩ ,বাবা মা ওর জন্য মেয়ে দেখা শুরু করলো। এটা ভালো না, ওটা ভালো না ইত্যাদি করতে করতে ছেলের বয়স এখন ৩৬+ হয়ে গেছে। এখন আর তার জন্য ভালো মেয়ে পাওয়া যায়না। ছেলে স্কুল কলেজের ছোট মেয়ে বিয়ে করবেনা। কিন্তু ভার্সিটি পড়ুয়া বেশিরভাগ মেয়েই ম্যারিড। একাকিত্বের কষ্ট ছেলেটাকে রোজ কুরে কুরে খেতে লাগলো। যৌন চাহিদা মেটাতে ছেলেটা হারাম পথের আশ্রয় নিতে লাগলো। বাবা মা এখন নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করতে লাগলো! আজকাল দেখি মুসলিম নামধারি ছেলেমেয়েরা বাবা মায়ের সামনে প্রেম করে বেরায়। ফেসবুকে একসাথে ছবি তুলে পোস্ট করে। ডেটিং এ যাওয়ার ছবিও দেয়! বাবা মা তবুও বিয়ে দেয়না। বলে বিয়ের বয়স হোক! ছেলে মেয়ে প্রেম করতে পারবে কিন্তু বিয়ের বয়স হয়নি?? কি অদ্ভুত! একজন তো তার ছেলেকে বিয়ে দিতে বলার পর আমাকে বলে যে এমন কতো মেয়ে আসবে লাইফে, পাঁচ বছর যাক, এরপরেও রিলেশন টিকলে বিয়ে দিবে! নিজের হাতে যে ছেলেমেয়েকে জিনা করার, কবিরা গুনাহ করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন তা নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নাই। পাচ বছর যে সন্তান বাঁচবে এর কি নিশ্চয়তা আছে? কিন্তু মুসলিম হয়েও বাবা মা তাদের সন্তানদের গুনাহের পথেই ছেড়ে দেয়! মজার ব্যাপার হচ্ছে আখিরাতে আমাদের জিজ্ঞেস করা হবেনা আপনার ছেলে সাইন্স পড়েছে কিনা, কেমন স্টুডেন্ট ছিলো, ভালো চাকরী করে কিনা, ইনকাম কেমন, বউকে কতোটাকা মোহর দিয়ে এনেছে বা বিয়েতে কতো টাকার শপিং করেছে, কতোজনকে খাইয়েছে, সুন্দর মেয়ে বিয়ে করেছে কিনা ব্লা ব্লা! বরং আমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে আমরা সন্তানকে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছি কিনা, তার চরিত্র সুন্দর করে গঠনে সাহায্য করেছি কিনা, তাকে আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ) কে ভালোবাসতে শিক্ষা দিয়েছি কিনা, সঠিক সময়ে নামাজ রোজা পর্দা ইত্যাদি শিক্ষা দিয়েছি কিনা! আমি জানি গীবত করা মানে মৃত ভাইয়ের গোস্ত খাওয়া, তবুও কেনো আমার সন্তানকে গীবত করা থেকে দূরে রাখিনি? কেন তাকে সব সময় ভালোটা দিয়ে অন্যদের থেকে আলাদা হতে, হিংসা করতে শিক্ষা দিলাম যেখানে জানি কারো মধ্যে নূন্যতম হিংসা থাকলে সে জান্নাতে যাবেনা। কেন তাকে জেনেশুনে রাগি হতে শিক্ষা দিলাম, এমন আরো অনেক কিছু। আল্লাহ যে আমাদের একটা মানুষকে ইসলামের আলোকে বড় করার দ্বায়িত্ব দিয়েছেনতা যথাযথভাবে পালন করেছি কিনা। আমরা এর কয়টা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো? হ্যা অনেক সময় বাবা মা সঠিক শিক্ষা দেয়ার পরেও সন্তান খারাপ হতে পারে। ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর বাবা ইয়া'কূব (আলাইহিস সালাম) একজন নবী ছিলেন। নিঃসন্দেহে তিনি একজন আদর্শ বাবা ছিলেন। তবুও উনার ছেলেরা তাদেরই ভাইকে হত্যা করার চেষ্টা করে। সুতরাং সন্তান খারাপ হবে কিনা তা আল্লাহর হাতে! কিন্তু আমরা বাবা মা হিসেবে আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করে যাবো ও দুয়া করতে থাকবো চক্ষু শীতলকারী সন্তানের জন্য। যেন আখিরাতে আল্লাহর কাছে আমরা ভালো থাকতে পারি, যে সন্তানের জন্য এতো কষ্ট করলাম সেই যেন আখিরাতে আমাদের দোষ দিতে না পারে আমাদের জন্য সে খারাপ হয়েছে। তাছাড়া যাকে এতো ভালোবাসি তাকে আমরা জাহান্নামি কিভাবে হতে দিতে পারি? কপি পোষ্ট

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ