Tuesday, October 10, 2017

গায়েবানা জানাযার বিধান কি?

(৭) গায়েবানা জানাযা (الصلاة على الغائب) :
গায়েবানা জানাযা জায়েয আছে।[165] তবে সকলের জন্য ঢালাওভাবে এটা জায়েয নয় বলে ইমাম খাত্ত্বাবী, ইবনু আব্দিল বার্র, হাফেয যায়লাঈ, ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ, হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম, শায়খ আলবানী প্রমুখ বিদ্বানগণ মত প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য সমূহ সংক্ষেপে নিম্নরূপ :
গায়েবানা জানাযার জন্য হাবশার (আবিসিনিয়া) বাদশাহ আছহামা নাজ্জাশীর গায়েবানা জানাযা আদায়ের ঘটনাই হ’ল একমাত্র বিশুদ্ধ দলীল, যিনি ৯ম হিজরী সনে মারা যান। নাজ্জাশী

জানাযা বিষয়ে অন্যান্য জ্ঞাতব্য সমূহ (কবর ও লাশ)

জানাযা বিষয়ে অন্যান্য জ্ঞাতব্য সমূহ


জানাযা বিষয়ে অন্যান্য জ্ঞাতব্য সমূহ
(معلومات أخرى فى الجنازة)
(১) কবর ও লাশ বিষয়ে (فى القبر والميت) :
(ক) সাগরবক্ষে মৃত্যুবরণ করলে এবং স্থলভাগ না পাওয়া গেলে গোসল, কাফন ও জানাযা শেষে কবরে শোয়ানোর দো‘আ পড়ে লাশ সাগরে ভাসিয়ে দিবে। [127]
(খ) কবরে যতদিন মুমিনের লাশের কোন অংশ বাকী থাকবে, ততদিন তাকে সম্মান করতে হবে। সেখানে পুনরায় কবর দেওয়া যাবে না। যদি লাশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ও মাটি হয়ে যায়, তাহ’লে

কবরে আলোকসজ্জা করার বিধান কি?

কবরে আলোকসজ্জা করা


কবরে আলোকসজ্জা করা :
কবরে বাতি দেওয়া নিষেধের হাদীছটি যঈফ।[122] তবে এটি কয়েকটি কারণে নিকৃষ্টতম বিদ‘আত। (১) এটি নবাবিষ্কৃত বিষয়, যা ইসলামের প্রাথমিক যুগে ছিল না
(২) এটি অগ্নি উপাসক মজূসীদের অনুকরণ
(৩) এতে স্রেফ মালের অপচয় হয়, যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ
(৪) একে আল্লাহর নৈকট্য হাছিলের মাধ্যম বলে ধারণা করা হয়।[123] যা ভিত্তিহীন ও

জানাযার বিধিবিধান সংক্রান্ত ৭০টি প্রশ্ন (২য় পর্ব)

জানাযার বিধিবিধান সংক্রান্ত ৭০টি প্রশ্ন (২য় পর্ব)

     প্রশ্ন ৩৬: মৃতের ক্ববরে মাটি দেওয়ার সময় শরী‘আতসম্মত কোন দো‘আটি পড়তে হয়? ﴿مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ﴾ [سورة طه: 55] পড়ার কোন হাদীছ আছে কি?
উত্তরঃ কতিপয় বিদ্বান বলেন, ক্ববরে তিন মুঠো মাটি দেওয়া সুন্নাত। তবে
﴿مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَىٰ ﴾ [سورة طه: 55]
পড়ার ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোনো হাদীছ বর্ণিত হয় নি।
আর দাফনের পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশিত আমল করা সুন্নাত। তিনি

জানাযার বিধিবিধান সংক্রান্ত ৭০টি প্রশ্ন (১ম পর্ব)

মূল: আল্লামা শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন রহ.
 
অনুবাদকের কথা
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য। দরূদ এবং সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর। জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একজন মুসলিমকে পবিত্র ক্বুরআন ও ছহীহ হাদীছের পথনির্দেশ মেনে চলতে হবে। মানুষের এই নশ্বর পৃথিবীতে আগমন করার সময় যেমন তার অভিভাবকের কতিপয় দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে, তেমনি

বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে যে ব্যক্তি মারা গেল সে কি শহীদ?



প্রশ্ন :
আমার ভাই বৈদ্যুতিক খুটির পাশে দাঁড়িয়েছিল, ফলে বৈদ্যুতিক তার তার শরীর স্পর্শ করে, আর সে শর্ট খেয়ে সাথে সাথে মারা যায়। তাকে কি শহীদ গণ্য করা হবে ?  দাফন করার জন্য আমরা যখন তার উপর সালাত পড়ি, তখন এতো বেশী মানুষ জড়ো হয়েছিল যে, মসজিদে পর্যন্ত তাদের সংকুলান হয়নি। তাকে মাটি দেয়ার জন্য আমাদের যে গ্রুপটি কবরস্থান পর্যন্ত যায়, তাও বেশ দীর্ঘ ও বড় ছিল। কারণ, সে আমাদের সবার কাছেই প্রিয় ছিল। কিয়ামতের দিন এরা কি তার জন্য সুপারিশ করবে ? অধিকন্তু সে ছিল যুবক, ভদ্র ও নামাযি।
উত্তর :
আল-হামদুলিল্লাহ
عن جَابِرَ بْنَ عَتِيكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : (مَا تَعُدُّونَ الشَّهَادَةَ ؟ قَالُوا : الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ تَعَالَى . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : الشَّهَادَةُ سَبْعٌ سِوَى الْقَتْلِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ : الْمَطْعُونُ شَهِيدٌ ، وَالْغَرِقُ شَهِيدٌ ، وَصَاحِبُ ذَاتِ الْجَنْبِ شَهِيدٌ ، وَالْمَبْطُونُ شَهِيدٌ ، وَصَاحِبُ الْحَرِيقِ شَهِيدٌ ، وَالَّذِي يَمُوتُ تَحْتَ الْهَدْمِ شَهِيدٌ ، وَالْمَرْأَةُ تَمُوتُ بِجُمْعٍ شَهِيدٌ)
জাবের ইবনে আতীক – রাদিআল্লাহু আনহু – বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

মৃতের গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফনের সচিত্র পদ্ধতি

 

মৃতের গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফনের সচিত্র পদ্ধতি

(মানুষ মারা গেলে তার প্রতি করণীয়, মৃতকে গোসল দেয়া, কাফন দেয়া, জানাযার সালাত  আদায় ও দাফনের পদ্ধতি)
ক) ভূমিকা: মৃত্যু অবধারিত সত্য। মৃত্যু থেকে পালাবার কোন পথ নেই। আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ করেন:
كُلُّ نَفْسٍ ذاَئِقَةُ الْمَوْتِ
“প্রত্যেক প্রাণকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে।” (আল ইমরান- ১৮৫) তিনি আরো বলেন: “মৃত্যু যন্ত্রনা সত্যসত্যই আগমণ করবে, যা থেকে তুমি অব্যাহতি চাচ্ছিলে।” (ক্বাফ- ১৯)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলনে: “কখনই নয়, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে এবং বলা হবে কে তাকে (রক্ষা করার জন্য) ঝাড়-ফুঁক করবে। আর সে মনে করবে যে, বিদায়ের সময় এসে গেছে।” (ক্বিয়ামাহ্- ২৬-২৮)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

মৃত ব্যক্তির জন্যে ইছালে ছাওয়াব: শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

মৃত ব্যক্তির জন্যে ইছালে ছাওয়াব: শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

 بسم الله الرحمن الرحيم
ইছালে ছাওয়াব কি :
‘ইছালে ছাওয়াব’ ফারসী শব্দ। আরবীতে হবে ‘ঈসালুস সওয়াব’। আভিধানিক অর্থ সওয়াব পৌঁছে দেয়া। অনেকে বলে থাকেন ‘সওয়াব রেসানী।’ এ শব্দটি ফারসি ভাষার হলেও, বাংলায় বহুল ব্যবহৃত বলে সাধারণ সমাজে খুবই পরিচিত। কেহ কেহ বলেন—‘সওয়াব বখশে দেয়া।’ নানা প্রকাশে শব্দগুলোর অর্থ ও মর্ম একই : পুণ্য বা সওয়াব প্রেরণ করা।
পরিভাষায় ইছালে ছাওয়াব হল,

মৃত-ব্যক্তির জন্য করণীয় কাজের মাসনূন পদ্ধতি

মৃত-ব্যক্তির জন্য করণীয় কাজের মাসনূন পদ্ধতি

মৃত-ব্যক্তির প্রতি সাওয়াব প্রেরণের মাসনূন পদ্ধতি
মৃত্যু পরবর্তী জীবনের সফলতা, মুক্তি, শান্তি ও নেয়ামত লাভের ইচ্ছা ও চেষ্টা সকল ধর্মের অনুসারিগণই করেন। এই জাতীয় সকল কর্ম একান্তই ধর্মীয় ও বিশ্বাসভিত্তিক। বিভিন্ন জাতির মধ্যে ধর্মহীনতা ও অজ্ঞানতার প্রসারের ফলে এ বিষয়ে অনেক কুসংস্কার ও উদ্ভট ধারণা বিরাজমান। যেমন, অনেক সমাজে মনে করা হয়, মৃতের জীবিত আত্মীয়স্বজনের দান, খাদ্য প্রদান বা কিছু অনুষ্ঠান পালনের উপরে মৃতব্যক্তির পারলৌকিক মুক্তি নির্ভরশীল।
ইসলামে এ সকল কুসংস্কারের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। ইসলামের শিক্ষা অনুসারে

প্রশ্নোত্তরে জানাজারইসলামী বিধিবিধান ( প্রায় ১০০ টি প্রশ্ন ও তার উত্তর)

প্রশ্নোত্তরে জানাজার ইসলামী বিধিবিধান


জানাযার কিছু বিধান
তালকিন ও তৎসংশ্লিষ্ট আলোচনা
প্রশ্ন-১. তালকিন কি ও তার নিয়ম কি?
উত্তর: মুমূর্ষূ ব্যক্তিকে কালিমা স্মরণ
করিয়ে দেয়া এবং তাকে কালিমা পাঠ
করার দীক্ষা দানকে আরবিতে ‘তালকিন’
বলা হয়। যখন কারো উপর মৃত্যুর আলামত
জাহির হয়, তখন উপস্থিত ব্যক্তিদের উচিত
তাকে ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ বলার জন্য উদ্বুদ্ধ
করা এবং আল্লাহকে স্মরণ করতে বলা।
উপস্থিত লোকদের সাথে এ
কালিমা একবার পাঠ করাই তার জন্য
যথেষ্ট,
তবে

কবরের আজাব মাফের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদীস ও তার আমল!

কবরের আজাব মাফের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদীস ও তার আমল

কবরের শাস্তি থেকে বাচার সবগুলো হাদিস একত্রে দেওয়া হলো আশা করি নিজে আমল করবেন এবং অন্যকে উৎসাহিত করবেন। <<< যাদেরকে কবরের শাস্তি থেকে মুক্ত রাখা হবে >>> ১। প্রতিরাতে সুরাহ মুলক তিলায়াত করা (কুরআন দেখে দেখে বা মুখস্ত যে কোন ভাবেই হোক) রাসূল (সাঃ) বলেন : “যে ব্যাক্তি প্রত্যেক রাতে তাবারকাল্লাযী বিইয়াদিহিল মুলক (সুরাহ মূলক) পাঠ করবে এর মাধ্যমে মহিয়ান আল্লাহ্ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন । সাহাবায়ি কিরাম বলেন , রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর যুগে আমরা

দাফনের পর হাত তুলে জামাআতী দু'আ কি বিধেয়?

দাফনের পর হাত তুলে জামাআতী দু'আ কি বিধেয়?


যে কারণে ফরয নামাযের পর হাত তুলে জামাআতী দুআ বিধেয় নয়, সেই কারণেই দাফনের পর দুআ বিধেয় হলেও হাত তুলে জামাআতী দুআ বিধেয় নয়। সুতরাং বিধেয় হল, প্রত্যেকেই হাত না তুলে নিজে নিজে মৃতের জন্য দুআ করা। নবী (সঃ) মাইয়্যেত দাফন করা শেষ হলে তার কবরে দাঁড়িয়ে বলতেন, “তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং (প্রশ্নের জওয়াবে) প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফীক চাও। কারণ ওকে এখনই প্রশ্ন করা হবে।”  (আবু দাউদ ৩২২১ নং, হাকেম ১/৫৭০, বাইহাকী ৪/৫৬) 

সুতরাং রাসুলুল্লাহ (সঃ) কেবল সকলকে দুআ করার নির্দেশ দিতেন। ফলে প্রত্যেকে নিজ নিজ মনে দুআ করতেন। তারা জামাআতী দুআ করতেন না। তা করা উত্তম হলে নিশ্চয় রাসুল (সঃ) দুআ'র আদেশ না করে নিজে হাত তুলে দুআ করতেন এবং সাহাবাগন অনুরূপ করতেন। কারণ, ভালো মন্দের ব্যাপারে আমাদের চেয়ে তারাই সব রকমের জ্ঞ্যান অধিক রাখতেন। আর তা উত্তম হলে আমাদের আগেই তারা তা করে যেতেন। অথচ তার কোন প্রমাণ নেই।  (দেখুন, ফাতাওয়াত তা’যিয়াহ, ইবনে উষাইমীন ৩১ পৃঃ)

অনেকে ফাতহুল বারী (৪/২৭২) তে দাফন করার পর হাত তুলে দু'আ করার দলীল খুঁজে পেয়েছেন। নবী (সঃ) ত্বালহা বিন বারা’র কবরে দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে দুআ করেছেন। অথচ সে ঘটনা দাফনের পর নয়। পরন্ত তার সনদও সহীহ নয়। ৪৯২ (দ্রঃ সিঃ যযীফাহ ৩২৩২ নং)
আর এ কথা বিদিত যে, যিয়ারতের সময় (একাকী) হাত তুলে দুআ করা বিধেয়।

শুনেছি, কোন মানুষের মৃত্যুর সময় কষ্ট হলে সূরা ইয়াসীন পড়তে হয়। এতে নাকি মরন আসান হয়ে যায়। এ কথা কি ঠিক?

শুনেছি, কোন মানুষের মৃত্যুর সময় কষ্ট হলে সূরা ইয়াসীন পড়তে হয়। এতে নাকি মরন আসান হয়ে যায়। এ কথা কি ঠিক?


একটি হাদিসে ঐ শ্রেণীর কথা আছে, কিন্তু সেটি জাল হাদিস। ৪৮৮ (দ্রঃ সিঃ যয়ীফাহ ৫২১৯ নং)
সুতরাং তাতে বিশ্বাস রেখে উক্ত আমল শুদ্ধ নয়। অনুরূপ মরনের পর থেকে কবর পর্যন্ত (নামায ছাড়া অন্য স্থলে) মৃতের জন্য কুরআনখানী করা বিদআত। মরনের পূর্বে মরণোন্মুখ ব্যক্তি কুরআন শুনতে চাইলে সে কথা ভিন্ন। ৪৮৯ (দ্রঃ জানাযা দর্পণ)

মুসলিম মারা যাওয়ার পর তার পাশে বসে অনেককে কুরআন পড়তে দেখা যায়। এ সময় কুরআন তিলাওয়াত কি বিধেয় ও উপকারী?

মুসলিম মারা যাওয়ার পর তার পাশে বসে অনেককে কুরআন পড়তে দেখা যায়। এ সময় কুরআন তিলাওয়াত কি বিধেয় ও উপকারী?


মৃত ব্যক্তির পাশে বসে কুরআন পড়া একটি বিদআত কাজ। এ তিলাওয়াত মৃত ব্যক্তির কোন কাজে আসবে না। জীবিত অবস্থায় কুরআন পড়ে, শুনে ও তার উপর আমল করে থাকলে মরনের পর তা উপকারী হবে। শোক সন্তপ্ত মানুষ কুরআন পড়লে শোকের বোঝা হালকা হবে। কিন্তু লাশের পাশে বসে কুরআন তিলাওয়াত কোন উপকারী নয়। ৪৮৭ (সাফা)

মহানবী (সঃ) এর কবর মসজিদের ভিতরে রয়েছে। তাহলে আপনারা মসজিদের ভিতরে লাশ দাফন করতে নিষেধ করেন কেন? মহানবী (সঃ) এর কবরের উপর ঘর ও গুম্বুজ রয়েছে। তাহলে আপনারা তা করতে নিষেধ করেন কেন?

মহানবী (সঃ) এর কবর মসজিদের ভিতরে রয়েছে। তাহলে আপনারা মসজিদের ভিতরে লাশ দাফন করতে নিষেধ করেন কেন? মহানবী (সঃ) এর কবরের উপর ঘর ও গুম্বুজ রয়েছে। তাহলে আপনারা তা করতে নিষেধ করেন কেন?


মহানবী (সঃ) কে মসজিদে দাফন করা হয়নি। আর নিষেধ এই জন্য করা হয় যে, “ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের উপর আল্লাহ্‌র অভিশাপ, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।” ৪৮৪ (বুখারী ১৩৩০, মুসলিম ৫২৯ নং)
তিনি আর বলেছেন, “সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী তাদের নবী ও নেক লোকেদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিত। সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়ো না। এরূপ করতে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি।” ৪৮৫ (মুসলিম ৫৩২ নং)
অনুরূপ তার কবরের উপর ঘর নির্মাণ করা হয়নি। বরং তার কবরই হয়েছিল তার ঘরের ভেতরে। যেহেতু নবীরা যেখানে ইন্তিকাল করেন, সেখানেই তাদের দাফন করা হয়। আর গম্বুজ বানিয়েছে পরবর্তী কালের শাসকেরা। কবরের উপর ঘর ও গম্বুজ বানাতে নিষেধ করা হয় এই জন্য যে, জাবের (রঃ) বলেন, “নবী (সঃ) কবর পাকা করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ইমারত নির্মাণ করতে মানা করেছেনে।” ৪৮৬ (মুসলিম)

কোন নেক লোকের লাশ মসজিদে দাফন করা কি বৈধ?

কোন নেক লোকের লাশ মসজিদে দাফন করা কি বৈধ?


কোন নেক, বুযূর্গ বা ওলী-আওলিয়ার লাশ মসজিদে দাফন করা বৈধও নয়। যেহেতু তাতে তাঁদেরকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয় এবং তাদের কবর শিরকের অসীলায় পরিণত হয়। আর নবী (সঃ) বলেছেন, “ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের উপর আল্লাহ্‌র অভিশাপ, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।” ৪৮১ (বুখারী ১৩৩০, মুসলিম ৫২৯ নং)
তিনি আর বলেছেন, “সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবী ও নেক লোকেদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিত। সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়ো না। এরূপ করতে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করেছি।” ৪৮২ (মুসলিম ৫৩২ নং)
তাছাড়া মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর এই যে, মসজিদসমূহ আল্লাহ্‌রই জন্য। সুতরাং আল্লাহ্‌র সাথে তোমরা অন্য কাউকেও ডেকো না।” (জ্বিনঃ ১৮)
সুতরাং মসজিদ সর্বপ্রকার শিরকমুক্ত হয়ে কেবল আল্লাহ্‌র থাকা উচিৎ, তাতে অন্য কারো আহবান বা ইবাদত হওয়া আদৌ উচিৎ নয়। ৪৮৩( ইবনে উসাইমীন)

মসজিদের এরিয়ার ভিতরে কোন বুযূর্গকে দাফন করা কি বৈধ?

মসজিদের এরিয়ার ভিতরে কোন বুযূর্গকে দাফন করা কি বৈধ?


না। মসজিদের এরিয়ার ভিতরে কবর দেওয়া বৈধ নয়, বৈধ নয় কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করা। আল্লাহ্‌র রাসূল (সঃ) মৃত্যুশয্যায় বলে গেছেন,

কবরে মাটি দেওয়ার সময় ‘মিনহা খালাক্বনাকুম...’ আয়াত পড়া কি ঠিক?

কবরে মাটি দেওয়ার সময় ‘মিনহা খালাক্বনাকুম...’ আয়াত পড়া কি ঠিক? হাদীসে তো আছে কন্যা উম্মে কুলষূম (রাঃ) কে কবরে রাখার সময় নবী (সঃ) ঐ আয়াত পড়েছিলেন। ৪৭৭ (আহমাদ)


প্রথমতঃ ঐ হাদীস সহীহ নয়। দ্বিতীয়তঃ তাতে এ কথা নেই যে, তিনি মাটি দেওয়ার সময় ঐ আয়াত পড়েছিলেন। বরং তিনি কবরে লাশ রাখার সময় বলেছিলেন। সুতরাং তাতে অভিষ্ট দলীল নেই। ৪৭৮ (আহকামুল জানাইয, আলবানী ১৫৩ পৃঃ)

কোন নবী অলীর কবর যিয়ারতের জন্য সফর করা কি বৈধ?

কোন নবী অলীর কবর যিয়ারতের জন্য সফর করা কি বৈধ?


বরকতময় তিনটি মসজিদ (অনুরূপ কুবার মসজিদ)ছাড়া বরকত ও সওয়াবের উদ্দেশ্যে অন্য কোন মসজিদ, মাযার বা ঐতিহাসিক স্থান যিয়ারত করার জন্য সফর নিষেধ। আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) বলেছেন, “তিনটি মসজিদ ছাড়া সফর করা যাবে না, (মক্কার) মসজিদে হারাম, (মদিনার) আমার এই মসজিদ এবং (জেরুজালেমের) মসজিদে আকসা।”  ৪৭৬ (বুখারী-মুসলিম)

সুতরাং যে ব্যক্তি মদিনা যাবে, তার কবরে নববীর যিয়ারত যেন উদ্দেশ্য না হয়। মসজিদে নববীর যিয়ারতের নিয়তে গিয়ে কবর কবর যিয়ারত করবেন। বৈধ নয় কোন আলী-আওলিয়ার কবর বা মাযার দূর থেকে যিয়ারত করতে আসা। অবশ্য তার সাথে যদি কোন অন্য অবৈধ আশা বা চাহিদা থাকে, তাহলে নীতি অনুযায়ী তা বিদআত বা শিরক হবে।

কোন আত্মীয় মারা গেলে, তার শোকে কালো কাপড় পড়া কি শরীয়তসম্মত?

কোন আত্মীয় মারা গেলে, তার শোকে কালো কাপড় পড়া কি শরীয়তসম্মত?


কারোর জন্য শোক পালনে কালো কাপড় পড়া শরীয়তসম্মত নয়। স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর জন্যও তা বিধেয় নয়। আত্মীয় মারা গেলে মহিলারা তিনদিন পর্যন্ত শোক পালন করতে পারে। আর স্বামী মারা গেলে ৪ মাস ১০ দিন শোক পালন করা ওয়াজেব। অবশ্য গর্ভবতীর ইদ্দত প্রসবকাল পর্যন্ত। এই সময় কোনও সুগন্ধি, অলঙ্কার ও সৌন্দর্যময় পোশাক ব্যবহার করতে পারবে না। সাদা কাপড়ে সৌন্দর্য থাকলে তাও ব্যবহার করা বৈধ নয়।


কবরস্থানের গাছ রোপণ করা বৈধ কি?

কবরস্থানের গাছ রোপণ করা বৈধ কি?


না। কবরস্থানে ফুল, ফল বা অন্য কিছুর গাছ লাগালে প্রথমতঃ তা পার্কের মতো হয়ে যায়। ফলে আখেরাত স্মরনের জায়গায় দুনিয়ার সৌন্দর্য ও আকর্ষণই সৃষ্টি করে সেই উদ্যান-সদৃশ পরিবেশ। দ্বিতীয়তঃ তাতে খ্রিষ্টানদের [নাসারা] সাদৃশ্য অবলম্বন হয়।  (ইবনে উসাইমীন)

কবরের উপরে কবরবাসীর নাম ও মৃত্যু তারিখ সহ কোন আয়াত বা কবিতা লেখা কি শরীয়ত সম্মত?

কবরের উপরে কবরবাসীর নাম ও মৃত্যু তারিখ সহ কোন আয়াত বা কবিতা লেখা কি শরীয়ত সম্মত?


না। জাবের (রঃ) বলেন, ‘নবী (সঃ) কবর পাকা করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ইমারত নির্মাণ করতে বারণ করেছেন।’আবূ দাঊদ ও নাসাঈ প্রভৃতির বর্ণনায় আছে, ‘তার উপর লেখাও নিষেধ করেছেন।’ ৪৭৪ (ইবনে বায)

মৃতব্যাক্তির শোকে মাতাম করে কান্না করা বৈধ কি?

মৃতব্যাক্তির শোকে মাতাম করে কান্না করা বৈধ কি?


না। কেউ মারা গেলে ওয়াজেব হল বিধির বিধান মেনে নিয়ে শোক দমন করে ধৈর্যধারণ করা। স্বাভাবিকভাবে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে যাওয়াও দোষাবহ নয়। দোষাবহ হল মাতাম করে ইনিয়ে বিনিয়ে কান্না করা।

রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “লোকের মধ্যে দুটি এমন দোষ রয়েছে, যা আসলে কাফেরদের (আচরণ) বংশে খোটা এবং মৃত ব্যক্তির জন্য মাতাম করা।” ৪৬৯ (মুসলিম)   
মহানবী (সঃ) বলেছেন, “মৃত ব্যক্তিকে তার কবরের মধ্যে তার জন্য মাতাম করে কান্না করার দরুন শাস্তি দেওয়া হয়।” ৪৭০ (বুখারী ও মুসলিম)
আবূ বুরদাহ বলেন, একদা (তার পিতা) আবূ মূসা আশআরী (রঃ) যন্ত্রণায় কাতর হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। আর (ঐ সময়) তার মাথা তার স্ত্রীর কলে রাখা ছিল এবং সে চিৎকার করে কান্না করতে লাগল। তিনি (অজ্ঞান থাকার কারণে) তাকে বাঁধা দিত পারলেন না। সুতরাং যখন তিনি চেতনা ফিরে পেলেন, তখন বলে উঠলেন, ‘আমি সেই মহিলা থেকে সম্পর্কমুক্ত, যে মহিলা থেকে আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) সম্পর্কমুক্ত হয়েছেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) সেই মহিলার থেকে সম্পর্কমুক্ত হয়েছেন, যে শোকে উচ্চস্বরে মাতম করে কান্না করে, মাথা মুণ্ডন করে এবং কাপড় ছিঁড়ে ফেলে।’ ৪৭১ (বুখারী ও মুসলিম)

রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “ মাতামকারিনী মহিলা যদি মরনের পূর্বে তওবাহ না করে, তাহলে আল-কাতারের পায়জামা এবং পাঁচড়ার জামা পরিহিতা অবস্থায় তাকে কিয়ামতের দিনে দাঁড় করানো হবে।” ৪৭২ (মুসলিম)

কেউ মারা গেলে কোন শ্রেণীর প্রচার নিষিদ্ধ? মাইকিং করা কি বৈধ?

কেউ মারা গেলে কোন শ্রেণীর প্রচার নিষিদ্ধ? মাইকিং করা কি বৈধ?


যে শ্রেণীর প্রচার জাহেলী যুগে ছিল। জাহেলী যুগে উঁচু মিনারে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করা হত। ৪৬৮ (আলবানী) সুতরাং মাইকে ঘোষণা করা উক্ত শ্রেণীভুক্ত।

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ