Sunday, October 15, 2017

নযর মানলে কি মহান আল্লাহ আশা পূরণ করে দেন?

নযর মানলে কি মহান আল্লাহ আশা পূরণ করে দেন?


আসলে আল্লাহর সাথে শর্তভিত্তিক চুক্তির নযর মাকরূহ অথবা হারাম। যেমন, ‘আল্লাহ! যদি আমার ছেলে পাশ করে, তাহলে তোমার রাহে হাজার টাকা দেব। আমার রোগী সেরে উঠলে এত টাকা দান করব’ ইত্যাদি। এতে কোন লাভ হয় না, তা আল্লাহর ইচ্ছা ও তকদীরে হয়। নযর না মানলেও তাই হয়। মহানবী (সঃ) বলেছেন,
“নযর কোন মঙ্গল আনায়ন করে না। তার মাধ্যমে কেবল বখিলের মাল বের করে নেওয়া হয়।” (বুখারি ৬৬০৮-৬৬০৯, মুসলিম ১৬৩৯-১৬৪০)
তবে ইবাদতের নযর মানলে তা পুরা করা জরুরী। রাসুল (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগত্য করার নযর মানে, সে যেন (তা পুরা করে) তার অনুগত্য করে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্যতা করার নযর মানে, সে যেন (তা পূরণ না করে এবং) তার অবাধ্যতা না করে।” ( বুখারি, সহিহুল জামে ৬৪৪১)
ইবনে আব্বাস (রঃ) বলেন, ‘এক মহিলা সমুদ্র সফরে বের হলে সে নযর মানল যে, যদি আল্লাহ তাআলা তাকে সমুদ্র থেকে পরিত্রাণ দান করেন, তাহলে সে একমাস রোজা রাখবে। অতঃপর সে সমুদ্র থেকে পরিত্রাণ পেয়ে ফিরে এল। কিন্তু রোজা না রেখেই মারা গেল। তার এক কন্যা নবী (সঃ) এর নিকট এসে সে ঘটনা উল্লেখ করলে তিনি বললেন, “মনে কর, তার যদি কোন ঋণ বাকি থাকত, তাহলে তুমি তা পরিশোধ করতে কি না?” বলল, ‘হ্যাঁ’। তিনি বললেন, “তাহলে আল্লাহর ঋণ অধিকরূপে পরিশোধযোগ্য। সুতরাং তুমি তোমার মায়ের তরফ থেকে রোজা কাযা  করে দাও।” (আবু দাউদ ৩৩০৮, আহমাদ ২/২১৬ প্রমুখ)

অনেকে কাবা গৃহের তওয়াফ ও হাজারে আসওয়াদের চুম্বনকে পৌত্তলিকতার সাথে তুলনা করে, তা কি ঠিক?

অনেকে কাবা গৃহের তওয়াফ ও হাজারে আসওয়াদের চুম্বনকে পৌত্তলিকতার সাথে তুলনা করে, তা কি ঠিক?


আদৌ ঠিক না। কারণ তওয়াফে কাবাগৃহে পূজার উদ্দেশ্য হয় না, যেমন মূর্তিপূজা বা কবরপূজা হয়। আল্লাহর ঘরের তাওয়াফ করে তার আদেশ পালন করা হয় এবং তাতে তারই সন্তুষ্টি কামনা করা হয়। অনুরূপ হাজারে আসওয়াদের চুম্বনও দেওয়া হয়, যেহেতু তা একটি ইবাদত। তাতে মহানবী (সঃ) এর অনুসরণ করা হয় এবং তাতে সওয়াব হয়। আমরা জান্নাতকে ভালবাসি বলে, জান্নাতের পাথরে চুমা দিই। পাথর থেকে কোন বরকতের আশায় নয়।

পাথর চুম্বকের মত চুম্বনকারীর পাপ শোষণ করে না। বরং আল্লাহর নবী (সঃ) এর অনুসরণে তাকে চুম্বন দিলে পাপ ক্ষয় হয়। উমার (রঃ) পাথর চুম্বন দেওয়ার সময় বলেছিলেন, ‘(হে পাথর!) আমি জানি তুমি একটা পাথর। তুমি কোন উপকার করতে পার না, অপকারও না। যদি আমি আল্লাহর রাসুল (সঃ) কে তোমাকে চুম্বন দিতে না দেখতাম, তাহলে আমি তোমাকে চুম্বন দিতাম না। ‘ (বুখারি, মুসলিম, আবুদ দাউদ, তিরমিজি, নাসাই)

অনেক মানুষকে সত্যের দিশা দিতে গেলে বাপ দাদার দোহাই দেয়। অনেকে কোন বড় আলেম বা নেতার দোহাই দেয়। এমন দোহাই দিয়ে কি সত্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত?

অনেক মানুষকে সত্যের দিশা দিতে গেলে বাপ দাদার দোহাই দেয়। অনেকে কোন বড় আলেম বা নেতার দোহাই দেয়। এমন দোহাই দিয়ে কি সত্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত?


অবশ্যই না। প্রত্যেকের বাপ দাদা তার নিজের কাছে শ্রদ্ধেয়। কিন্তু প্রত্যেকের বাপ দাদা যে হকপন্থী, তার নিশ্চয়তা কোথায়? হকের মাপকাঠি কোন ব্যক্তিত্ব নয়, হকের মাপকাঠি হল কুরআন ও সহিহ সুন্নাহ। বাপ দাদার দোহাই দিয়ে হক প্রত্যাখ্যান করার রোগ অনেক পুরাতন। কুরআন মজিদের বহু জায়গায় সে কথা উল্লেখিত রয়াছে। মহান আল্লাহ দাদুপন্থিদের ব্যাপারে বলেছেন,

অনেক লোককে কোন কাজে নিষেধ করতে গেলে বলে, ‘সবাই তো এটা করে !’ কেউ বলে, ‘লোকে তো করছে !’ কেউ বলে, ‘এত লোক করছে, তারা কি ভুল পথে আছে নাকি?’ ইত্যাদি। তাদের এমন বলা বৈধ কি?

অনেক লোককে কোন কাজে নিষেধ করতে গেলে বলে, ‘সবাই তো এটা করে !’ কেউ বলে, ‘লোকে তো করছে !’ কেউ বলে, ‘এত লোক করছে, তারা কি ভুল পথে আছে নাকি?’ ইত্যাদি। তাদের এমন বলা বৈধ কি?


লোকের দোহাই দিয়ে কোন কাজ করা বা বর্জন করা কোন মুসলিমের উচিৎ নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক বর্তমানে সরকার গঠন করতে পারে, সত্য গঠন করতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেন,
“আর যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথাবার্তাই বলে থাকে।” (আনআমঃ ১১৬)
“তুমি যতই আগ্রহী হও না কেন,

কোন সন্মানিত ব্যক্তিকে বা শ্বশুরকে ‘আব্বা’ বলে সম্বোধন করা বৈধ কি?

কোন সন্মানিত ব্যক্তিকে বা শ্বশুরকে ‘আব্বা’ বলে সম্বোধন করা বৈধ কি?


কোন সন্মানিত ব্যক্তিকে বা শ্বশুরকে ‘আব্বা’ বলে সম্বোধন করায় কোন দোষ নেই। যেমন দোষ নেই নিজের ছেলে ছাড়া অন্য কোন স্নেহভাজনকে ‘বেটা’ বলে সম্বোধন করা। এ সম্বোধনের উদ্দেশ্য থাকে পিতার মত শ্রদ্ধা এবং পুত্রের মতো স্নেহ প্রকাশ। পিতৃতুল্যকে ‘পিতা’ বলা এবং পুত্রতুল্যকে ‘বেটা’ বলা, তদনুরূপ মাতৃতুল্যকে ‘মাতা’ বা ‘মা’ বলা এবং কন্যতুল্যকে ‘বেটি’ বলায় কোন বংশীয় সম্বন্ধ উদ্দিষ্ট থাকে না।
আল কোরআনে জন্মদাত্রী মা ছাড়া অন্য মহিলাকে ‘মা’ বলার কথা এসেছে। মহানবী (সঃ) এর স্ত্রীদেরকে মুমিনদের মা বলা হয়েছে।
নবী, বিশ্বাসীদের নিকট তাদের প্রাণ অপেক্ষাও অধিক প্রিয় এবং তার স্ত্রীগণ তাদের মা। (আহযাবঃ ৬)
অতঃপর

অনেকে বলে, ‘নামায পড়ে কি হবে? নামায পড়ে কে বড়লোক হয়েছে?’ এ কথা কি ঠিক?

অনেকে বলে, ‘নামায পড়ে কি হবে? নামায পড়ে কে বড়লোক হয়েছে?’ এ কথা কি ঠিক?


এ কথা দুনিয়াদারী দৃষ্টিভঙ্গির ফলশ্রুতি। যেহেতু নামায পড়ে ইহলোকে বড়লোকে হওয়া জায় না। বরং নামায পড়ে পরলোক বড়লোক হওয়া যায়। নামায ইহকালে মানুষেকে অশ্লীলতা ও নোংরামি থেকে দূরে রেখে মানুষকে মানুষ করে রাখে, সঠিক মুসলিম বানায়। আর পরকালে তাকে ইচ্ছা সুখের  বাসস্থান দান করে। পরন্ত নামায পড়লে ইহকালের সুখ নয়, বরং পরকালের সুখ লাভের জন্যই পড়া উচিৎ।

কাউকে ‘আল্লাহর খলিফা’ বলা জায়েজ কি?

কাউকে ‘আল্লাহর খলিফা’ বলা জায়েজ কি?


কাউকে আল্লাহর খলীফা বলা জায়েজ না। মানুষ আল্লাহর খলীফা হতে পারে না। বরং আল্লাহই মানুষের ‘খলীফা’ হতে পারেন; যেমন সফরের দুয়াতে আমরা বলে থাকি, ‘আন্তাস সাহিবু ফিসসাফার আলখালিফাতু ফিল আহলে।’ একদা আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) কে ‘আল্লাহর খলীফা বলা হলে, তিনি বলেছিলেন,  ‘আমি আল্লাহর খলীফা নই। বরং আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর খলীফা।’ ( বানী সিঃ যযীফাহ ৮৫ নং)

যারা বলে ‘ব্যভিচারী পাথর ছুড়ে মারলে, চোরের হাত কাটলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়।’ তাদের এমন বক্তব্য কি ঠিক ?

যারা বলে ‘ব্যভিচারী পাথর ছুড়ে মারলে, চোরের হাত কাটলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়।’ তাদের এমন বক্তব্য কি ঠিক ?


অবশ্যই ঠিক নয়। এমন অপরাধী মানবকে কে অধিকার দিয়ে রেখেছে? যারা এ কথা বলে, তারা কি মানুষ খুন করে না? তারা কি কারো ফাঁসি দেয় না? আসলে তাদের কাছে ওই শ্রেণির অপরাধ বড় নয়, বরং তাদের কাছে ব্যভিচার কোন অপরাধই নয়। আর আল্লাহর বিধান তো তারা মানেই না।
মানবের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ। কিছু অপরাধের ফলে তিনিই তাদের মানবাধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার বিধান দিয়েছেন।  যেহেতু

যে বলে, ‘ইসলাম নারীর প্রতি অন্যায় হয়েছে, তার যথার্থ হক প্রদান করেনি’ তার বিধান কি?

যে বলে, ‘ইসলাম নারীর প্রতি অন্যায় হয়েছে, তার যথার্থ হক প্রদান করেনি’ তার বিধান কি?


যে এ কথা বলে সেই অবিবেচক জালেম।  যেহেতু ইসলাম সর্বক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের সমানাধিকার দান না করলেও তাকে তার যথার্থ অধিকার প্রদান করেছেন। সুতরাং প্রত্যেকের নিজ নিজ অধিকার নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়া উচিৎ। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“ যা  দিয়ে আল্লাহ তোমাদের কাউকেও কারোর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, তোমরা

অনেকে বলে, ‘যার পীর নেই, তার পীর শয়তান।’ এ কথা কি ঠিক?

অনেকে বলে, ‘যার পীর নেই, তার পীর শয়তান।’ এ কথা কি ঠিক?


কথাটি ঠিক। কারণ নিজে নিজে সঠিক পথ পাওয়ার চেষ্টা করলে ভ্রষ্টতাই স্বাভাবিক। তবে পীর মানে ওস্তাদ। পীর মানে বিদআতি মুর্শিদ নয়, প্রচলিত তরীকার কোন সূফীপন্থী নয়। যেমন ওস্তাদ কেবল একটা ধারাই বাঞ্ছনীয় নয়। শিক্ষার্থী মুসলিমের উচিৎ, যাকে হকপন্থী অভিজ্ঞ আলেম দেখবে, তাকেই ওস্তাদ বলে গণ্য করবে। যেহেতু মুসলিম কোন ব্যক্তি দেখে হক চেনে না, বরং হক দেখে ব্যক্তি চেনে। সুতরাং যে পীর বা ওস্তাদ পিরানে পীর অ উস্তাজুল আসাতিজাহ নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর অনুসারী নয়,

উপহাস ছলে মিথ্যা বলা কি বৈধ?

উপহাস ছলে মিথ্যা বলা কি বৈধ?


মিথ্যা বলা বৈধ নয়। মিথ্যা বললে কবিরাহ গোনাহ হয়। রাসুল (সঃ) বলেছেন, “নিশ্চয় সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকে, সেস পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে “ মহাসত্যবাদী”  রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিরসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচার এর দিকে নিয়ে যায়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে, সেস পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে ‘মহামিথ্যাবাদি” রুপে লিপিবদ্ধ করা হয়। (বুখারি ও মুসলিম)
উপহাস ছলেও মিথ্যা বলা বৈধ নয়। আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেছেন,

বন্ধু বান্ধবের সাথে মজাক ঠাট্টা করা বৈধ কি?

বন্ধু বান্ধবের সাথে মজাক ঠাট্টা করা বৈধ কি?


রসিকতা যদি বাস্তব বা সত্য কথার মধ্যে হয় এবং তাতে অশ্লিনতা না থাকে, তাহলে দূষণীয় নয়। যেহেতু মহানবী (সঃ) এমন রসিকতা করেছেন। যেমন, আবু উমাইর নামক এক শিশুর খেলনা পাখী (নুগাইর) মারা গেলে সে দুঃখিত হয়। তা দেখে তিনি তাকে খোস করার জন্য মস্কারা করে বললেন, “এই যে উমাইর, কি করেছে নুগাইর?”  (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত ৪৮৮৪ নং)
একদা এক ব্যক্তি তাঁর নিকট সওয়ারি উট চাইলে তিনি বললেন, “ তোমাকে একটি উটিনীর বাচ্চা দেব।” লোকটি বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল ! বাচ্চা নিয়ে কি করব?’ তিনি বললেন, “ উটনি ছাড়া উট কি আর কেউ জন্ম দেয়?” (অর্থাৎ সব উটই তো  তাঁর মায়ের বাচ্চা)। (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত ৪৮৮৬ নং)
একদা এক বৃদ্ধা এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি দুয়া করে দিন যাতে আল্লাহ আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান।’ তিনি মস্কারা করে বললেন, “বৃদ্ধারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” তা শুনে বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে প্রস্থান করলেন। তিনি সাহাবাদের বললেন, “ওকে বলে দাও যে, বৃদ্ধাবস্থায় ও জান্নাতে যাবে না।” (বরং যুবতী হয়ে যাবে)
পক্ষান্তরে মিথ্যা কথা বানিয়ে বলে হাস্য রসিকতা করা হারাম। রাসুল (সঃ) বলেছেন, “সর্বনাশ সেই ব্যক্তির , যে লোককে হাসাবার উদ্দেশ্যে মিথ্যা বলে। তাঁর জন্য সর্বনাশ, তাঁর জন্য সর্বনাশ।” (সহিহুল জামে ৭০১৩ নং)

দাড়ি রাখতে বললে বা অন্য সৎকাজের উপদেশ দিলে অনেকে বলে, ‘তাকওয়া বুকে’ । এ কথা বলে সৎকাজ থেকে পিছল কাটা কি ঠিক?

দাড়ি রাখতে বললে বা অন্য সৎকাজের উপদেশ দিলে অনেকে বলে, ‘তাকওয়া বুকে’ । এ কথা বলে সৎকাজ থেকে পিছল কাটা কি ঠিক?


অবশ্যই ঠিক নয়। মহানবী (সঃ) নিজে বুকের প্রতি ইঙ্গিত করে অবশ্যই বলেছেন ‘তাকওয়া এখানে’। কিন্তু তা এ কথার দলিল নয় যে,  বাহ্যিক আমল জরুরী নয়। তাছাড়া হৃদয়ে তাকওয়া থাকলে বাহ্যিক দেহ ও আমলে তাঁর বহিঃপ্রকাশ অবশ্যই ঘটবে। যেহেতু রাসুল (সঃ) বলেছেন, “দেহের মধ্যে একটি গোশতপিণ্ড রয়েছে, যখন তা সুস্থ থাকে, তখন গোটা দেহটাই সুস্থ হয়ে থাকে। আর যখন তা খারাপ হয়ে যায়, তখন গোটা দেহটাই খারাপ হয়ে যায়। শোন! তা হল হৃদপিণ্ড (অন্তর)” (বুখারি ও মুসলিম)

মহান আল্লাহর কোন ফয়সালার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা কোন শ্রেণীর পাপ?

মহান আল্লাহর কোন ফয়সালার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা কোন শ্রেণীর পাপ?


মহান আল্লাহ ইচ্ছাময় বাদশা। তিনি যা ইচ্ছা ফয়সালা করেন। বান্দার জন্য যে ফয়সালা করেন, তা তার জন্য মঙ্গলময়। তার কোন ফয়সালাতে জুলুম বা অন্যায় থাকে না। তিনি আমাকে গরীব আর আপনাকে ধনী বানিয়েছেন- এটা তার বেইনসাফি নয়। তিনি আপনার ছেলেকে সুস্থ সবল রেখেছেন এবং

‘পোড়া কপাল’, ‘কপালে লেখা’, ‘কপালে ছিল’, বা ‘কপাল খারাপ’ ইত্যাদি বলা বৈধ কি?

‘পোড়া কপাল’, ‘কপালে লেখা’, ‘কপালে ছিল’, বা ‘কপাল খারাপ’ ইত্যাদি বলা বৈধ কি?


প্রত্যেকের ভাগ্য লেখা আছে ‘লাওহে মাহফুজ’- এ। সেটাই হল মুল ভাগ্যলিপি। মহান আল্লাহ বলেন,
“পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে, আমার তা সংঘটিত করার পূর্বেই তা লিপিবদ্ধ থাকে, নিশ্চয় আল্লাহর পক্ষে তা খুবই সহজ। (হাদিদঃ২২)
কিন্তু জীবনের তফসীলী ভাগ্য লেখা হয় মায়ের পেটে। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন,

কাউকে পাপকাজে বাধা দিতে গেলে তার কি ‘নিজের চরকায় তেল দাও’ বলা বৈধ?

কাউকে পাপকাজে বাধা দিতে গেলে তার কি ‘নিজের চরকায় তেল দাও’ বলা বৈধ?


কাউকে পাপকাজে বাধা দিতে গেলে বা তার অন্যায়ে প্রতিবাদ করতে গেলে প্রতিবাদকারীদের  ‘নিজের চরকায় তেল দাও’, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার’ ইত্যাদি বলে অবজ্ঞা করা উচিৎ নয়। যেহেতু তার জবাবে বলা যায় যে, ‘আমরা পরের চরকায় তেল দিতেও আদিষ্ট হয়েছি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সৎকাজের আদেশ ও মন্দকাজে বাধা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং এটা আমাদেরও ব্যক্তিগত ব্যাপারে।’ (ইবনে উসাইমিন)

এক মহিলার অভ্যাস যে, সে তাঁর সন্তানদেরকে অভিশাপ ও গালিমন্দ করে থাকে। কখনো বা তাদেরকে প্রত্যেক ছোট বড় দোষে কথা দ্বারা, কখনো বা প্রহার করে কষ্ট দেয়। ই স্ত্রীর ব্যাপারে আমার ভূমিকা কি হতে পারে? এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে দ্বীনের নির্দেশ কি? যাতে সে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। আমি কি তাকে তালাক দিয়ে দুরে সরে যাব এবং সন্তানরা তাঁর সঙ্গে থাকবে? অথবা আমি কি করব?

এক মহিলার অভ্যাস যে, সে তাঁর সন্তানদেরকে অভিশাপ ও গালিমন্দ করে থাকে। কখনো বা তাদেরকে প্রত্যেক ছোট বড় দোষে কথা দ্বারা, কখনো বা প্রহার করে কষ্ট দেয়। এই অভ্যাস থেকে ফিরে আসতে আমি তাকে একাধিকবার উপদেশ দিয়েছি। কিন্তু সে উত্তরে বলেছে, ‘তুমিই ওদের স্পর্ধা বাড়ালে অথচ ওরা কত দুষ্ট।’ শেষ ফল এই দাঁড়াল যে, ছেলেরা তাকে অবজ্ঞা করে তাঁর কথা নেহাতই অগ্র্যাহ্য করতে লাগল। তাঁর বুঝে নীল যে, শেষ পরিণাম তো গালি ও প্রহার। এই স্ত্রীর ব্যাপারে আমার ভূমিকা কি হতে পারে? এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে দ্বীনের নির্দেশ কি? যাতে সে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। আমি কি তাকে তালাক দিয়ে দুরে সরে যাব এবং সন্তানরা তাঁর সঙ্গে থাকবে? অথবা আমি কি করব?


ছেলে মেয়েদেরকে অভিসম্পাত করা অন্যতম কবিরাহ গোনাহ; অনুরূপ অন্যান্যদেরকেও অভিশাপ করা, যারা এর উপযুক্ত নয়। নবী (সঃ) হতে শুদ্ধভাবে প্রমাণিত যে, তিনি বলেন, “মুমিনকে অভিশাপ করা তাকে হত্যা করার সমান।”
তিনি আরও বলেন,

আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আজ্ঞাবহ ধার্মিকদের প্রতি বিদ্রূপ হানার হুকুম কি?

আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আজ্ঞাবহ ধার্মিকদের প্রতি বিদ্রূপ হানার হুকুম কি?


আল্লাহ ও তদীয় রাসুলের আজ্ঞাবহ ধর্মভীরু মুসলিমকে ধর্মের যথার্থ অনুগত হওয়ার কারণে বিদ্রূপ করা হারাম এবং তা মানুষের জন্য বড় বিপদজনক আচরণ। কারণ এ কথার আশংকা থাকে যে, ধর্মভীরুদেরকে তাঁর ঐ অবজ্ঞা তাঁদের আল্লাহর দ্বীনের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকাকে অবজ্ঞা করার ফল হতে পারে। তখন তাদেরকে ঠাট্টা ব্যঙ্গ করার অর্থই হবে, তাঁদের সেই পথ ও তরিকাকে ঠাট্টা ব্যঙ্গ করা, যার উপর তারা প্রতিষ্ঠিত। যাতে তারা ঐ লোকেদের অনুরূপ হবে, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

গণক কাকে বলে? গণকের কাছে যাওয়ার বিধান কি?


গণক কাকে বলে? গণকের কাছে যাওয়ার বিধান কি?
গণক এমন লোককে বলা হয়, যে অনুমানের উপর নির্ভর করে ভিত্তিহীন বিষয়ের অনুসন্ধান করে থাকে। জাহেলী যামানার কিছু পেশাদার লোকের সাথে শয়তানের যোগাযোগ ছিল। শয়তানেরা চুরি করে আকাশের সংবাদ শ্রবণ করত এবং তাদের কাছে বলে দিত। আকাশ থেকে যা শ্রবণ করত, তার সাথে আরো অনেক মিথ্যা কথা সংযোগ করে মানুষের মধ্যে তা প্রকাশ করত। তারা যা বলত,

পাপ কাজে সতর্ক করলে অনেকে বলে, ‘আল্লাহ ক্ষমাশীল’। তাঁদের এমন আশাবাদীর কথা বলা বৈধ কি?

পাপ কাজে সতর্ক করলে অনেকে বলে, ‘আল্লাহ ক্ষমাশীল’। তাঁদের এমন আশাবাদীর কথা বলা বৈধ কি?

তাঁদের জন্য এমন আশাবাদীর কথা বলে পাপ নির্বিচল থাকা অবশ্যই বৈধ নয়। যেহেতু তাঁদের জানা দরকার যে, মহান আল্লাহর যেমন মহা ক্ষমাশীল, তেমন তিনি কঠোর শাস্তিদাতা। তিনি বলেন,

“আমরা বান্দাদেরকে বলে দাও, ‘নিশ্চয় আমিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু এবং আমার শাস্তিই হল অতি মর্মম্ভেদ শাস্তি।’ ( হিজরঃ ৪৯-৫০)

“ তোমরা জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (মায়িদাহঃ ৯৮)

সুতরাং তার একটা গুণবাচক দিকে ধরে থেকে অন্য দিকটা ভুলে যাওয়া আদৌ উচিৎ নয়। আশার  সাথে ভয়ও থাকা উচিৎ। (ইবনে উসাইমিন)

গোনাহের কাজে প্রতিবাদ করা হলে কারো ‘আমি স্বাধীন’ বলা বৈধ কি?

গোনাহের কাজে প্রতিবাদ করা হলে কারো ‘আমি স্বাধীন’ বলা বৈধ কি?
এই পৃথিবীর কোন মানুষই সম্পূর্ণ স্বাধীন নয়। প্রত্যেকেই কোন না কোন পরাধীনতা স্বীকার করতে বাধ্য। ব্যক্তি স্বাধীনতা, চিন্তা স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, নারী স্বাধীনতা ইত্যাদি লাগামহীন নয়। প্রত্যেক মুসলিম মহান আল্লাহর পরাধীন গোলাম। তার আদেশ নিষেধ পালন করার ব্যাপারে কেউই স্বাধীন নয়। তাঁদের যখন কেউ আল্লাহর গোলামী থেকে ছাড়া পেতে চায়, তখন সে শয়তান অথবা প্রবৃত্তির খেয়াল খুশির গোলামে পরিণত হয়ে যায়। (ইবনে উসাইমিন)

পূর্ণ মু’মিনকে ‘মৌলবাদী’ বলে কটাক্ষ করা বৈধ কি?


যারা গৌণবাদী অথবা নকলবাদী তারাই সঠিক ইমানদারকে ‘মৌলবাদী’ বলে কটাক্ষ করে। তবে এ কটাক্ষতে মু’মিনদের গর্ব হওয়া উচিৎ। যেহেতু মৌলিক বিষয়সমুহ পালন না করলে কেউ মুক্তি পেতে পারবে না। (ইবনে উসাইমিন)।

মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখের আগে ‘শহীদ’ লেখা বা বলা বৈধ কি?

মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখের আগে ‘শহীদ’ লেখা বা বলা বৈধ কি?

নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির জন্য এমন সাক্ষ্য বা সার্টিফিকেট দিয়ে ওই কথা লেখা বা বলা বৈধ নয়। (ইবনে উসাইমিন) যেহেতু তা গায়েবী খবর, আর তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানে না। অবশ্য যার শরীয়ত কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত, তাঁদের কথা স্বতন্ত্র।

মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখের আগে ‘মরহুম’ বা ‘ মগফুর’ লেখা বা বলা বৈধ কি?

মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখের আগে ‘মরহুম’ বা ‘ মগফুর’ লেখা বা বলা বৈধ কি?

নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির জন্য  এমন সাক্ষ্য বা সার্টিফিকেট দিয়ে ওই কথা লেখা বা বলা বৈধ নয়। ওই ক্ষেত্রে নাম উল্লেখের পরে ‘রাহিমাহুল্লাহ’ বা ‘গাফারাল্লাহু লাহ’  বলা বা লিখা বিধেয়। (ইবনে বাজ)  

মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখের আগে ‘স্বর্গীয়’, ‘বেহেশতী’, বা ‘জান্নাতী’ লেখা বা বলা বৈধ কি?

মৃত ব্যক্তির নাম উল্লেখের আগে ‘স্বর্গীয়’, ‘বেহেশতী’, বা ‘জান্নাতী’ লেখা বা বলা বৈধ কি?

নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির জন্য এমন সাক্ষ্য বা সার্টিফিকেট দিয়ে ওই কথা লেখা বা বলা বৈধ নয়। (ইবনে উসাইমিন) যেহেতু তা গায়েবী খবর, আর তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানে না। অবশ্য যার শরীয়ত কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত, তাঁদের কথা স্বতন্ত্র।

দেশ প্রেম ইমানের অংশ কথাটি কি ঠিক?

‘দেশ প্রেম ইমানের অংশ কথাটি কি ঠিক?


মোটেই না। যেহেতু দেশ প্রেম আত্নপ্রেম ও ধন প্রেমের মতোই মানুষের প্রকৃতিগত আচরণ। সুতরাং ষে প্রেম দ্বারা কেউ প্রশংসিত হতে পারে না এবং তা ঈমানের কোন জরুরী জিনিসও নয়। বলা বাহুল্য, দেশপ্রেম মু’মিন কাফের সকলেই সমান। (সিঃ যায়ীফাহ )

শোনা যায়, জুম্মার দিন সফর করতে নেই। --- এ কথা কি ঠিক?

শোনা যায়, জুম্মার দিন সফর করতে নেই। --- এ কথা কি ঠিক?


জুম্মার দিন সফর নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কোন সহিহ দলিল নেই। বরং একদা উমার (রঃ) একটি লোককে বলতে শুনলেন, ‘আজ জুম্মার দিন না হলে আমি সফরে বের হতাম।’ তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি বের হও। কারণ জুমআহ সফরে বাঁধা দেয় না।’ (বাইহাকি, সিঃ যয়ীফাহ ২১৯ নং) অবশ্য অনেকে বলেছেন, জুম্মার আজান হয়ে গেলে জরুরি ছাড়া সফর করা বৈধ নয়।

লোকের ভয়ে সত্য গোপন করা অথবা সত্যের অপলাপ করা বৈধ কি?

লোকের ভয়ে সত্য গোপন করা অথবা সত্যের অপলাপ করা বৈধ কি?


লোকে কষ্ট দেবে--- এই ভয়ে, গালি দেবে, মারবে অথবা রুযী বন্ধ করে দেবে--- এই ভয়ে, চাকরী চলে যাবার ভয়ে অথবা সন্মান ও পজিশন চলে যাওয়ার ভয়ে সত্য গোপন করা অথবা সত্যের আপলাপ করা বৈধ নয়। যেহেতু মহানবী (সঃ) বলেছেন,

কিবলার দিকে মুখ করে পেশাব পায়খানা করা নিষেধ জানি, কিন্তু সে দিকে থুথু ফেলাও কি নিষেধ? কিবলার দিকে থুথু ফেলা নিষেধ হওয়ার ব্যাপারটা কি নামাযের মধ্যে সীমিত নয়?

কিবলার দিকে মুখ করে পেশাব পায়খানা করা নিষেধ জানি, কিন্তু সে দিকে থুথু ফেলাও কি নিষেধ? কিবলার দিকে থুথু ফেলা নিষেধ হওয়ার ব্যাপারটা কি নামাযের মধ্যে সীমিত নয়?

আনাস (রঃ) বলেন, নবী (সঃ) কিবলার (দিকের দেওয়ালে) থুথু দেখতে পেলেন। এটা তাঁর প্রতি খুব ভারী মনে হল; এমনকি তাঁর চেহারার সে চিহ্ন দেখা গেল। ফলে দাঁড়ালেন এবং তিনি তা নিজ হাত দ্বারা ঘসে তুলে ফেললেন। তারপর বললেন,

নিজের জায়গা ছেড়ে কোন সন্মানিতকে বসতে দেওয়া কি ইসলামে আদবের পর্যায়ভুক্ত?

নিজের জায়গা ছেড়ে কোন সন্মানিতকে বসতে দেওয়া কি ইসলামে আদবের পর্যায়ভুক্ত?


নিজের জায়গা ছেড়ে কোন সন্মানিতকে বসতে দেওয়া ইসলামী আদবের পর্যায়ভুক্ত নয়। বরং আদব হল নড়ে সরে বসে পাশে জায়গা করে দেওয়া। আর যার জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়া হবে, তার উচিৎ হল, সে জায়গায় না বসা। ইবনে উমার এইরূপ করতেন। (আলবানি)

‘ধূমপান নিষেধ’ লেখা সত্বেও অনেকে তা পালন করে না। সরকারীভাবে তা নিষেধ করা হলে সে নির্দেশ অমান্য করার জন্য ধূমপায়ী কি গোনাহগার হবে না?

‘ধূমপান নিষেধ’ লেখা সত্বেও অনেকে তা পালন করে না। সরকারীভাবে তা নিষেধ করা হলে সে নির্দেশ অমান্য করার জন্য ধূমপায়ী কি গোনাহগার হবে না?


সে দুইভাবে পাপী হবে। শরয়ী আইন অমান্য করে ধূমপান করার জন্য। আর সরকারী আইন ও নির্দেশ অমান্য করার জন্য। (ইবনে বায)।

যে নামে আত্নপ্রশংসা হয়, সে নাম রাখা বৈধ নয়। তাহলে ‘ইয়াযুদ্দীন, মুহিউদ্দিন, নাসিরুদ্দিন ইত্যাদি নাম রাখা বৈধ কি?


না, উক্ত সকল নাম তথা ঐ শ্রেণীর কোন নাম রাখা বৈধ নয়, যাতে আত্নপ্রশংসা হয়। মহানবী (সঃ) এই শ্রেণীর নাম শুনলে তা পরিবর্তন করে দিতেন। (বানী, দ্রঃ সিঃ সহিহাহ হাদিস নং ২০৭- ২১৬)

ট্রাফিক আইন মেনে চলা কি জরুরি। বিশেষ করে সিগনালের বাতি যখন লাল থাকে এবং অপর দিকে কোন গাড়ি না থাকে, তখনও কি তা মানা জরুরি?

ট্রাফিক আইন মেনে চলা কি জরুরি। বিশেষ করে সিগনালের বাতি যখন লাল থাকে এবং অপর দিকে কোন গাড়ি না থাকে, তখনও কি তা মানা জরুরি?


এই আইন সকলের নিরাপত্তার জন্য, এমনকি খোদ চালকেরও নিরাপত্তার জন্য। সুতরাং তা মান্য করা জরুরি। গাড়ি নেই দেখে হঠাৎ এসেও যেতে পারে। সুতরাং নিজের দিকের সিগন্যাল বাতি সবুজ না হওয়া পর্যন্ত পার হওয়া বৈধ নয়। শরিয়তের একটি ব্যাপক নীতি হল,
“কারো জন্য ওপরের কোন প্রকার ক্ষতি করা বৈধ নয়। কোন দুজনের জন্য প্রতিশোধমূলক পরস্পরকে ক্ষতিগ্রস্ত করাও বৈধ নয়।” (আহমাদ, মালেক, ইবনে মাজাহ ২৩৪০, ২৩৪১ নং)

অমুসলিম আয়া রেখে তার উপর সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব দেওয়া কি বৈধ?

অমুসলিম আয়া রেখে তার উপর সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব দেওয়া কি বৈধ?


অমুসলিম আয়া রেখে শিশু লালন পালনের দায়িত্ব তার উপর দিলে তার আকিদা ও চরিত্রে শিশু প্রতিপালিত হবে। সুতরাং তা বৈধ নয়। অনুরূপ নামে মাত্র মুসলিম আয়া রেখে সন্তানের আকিদা ও চরিত্র বিনাশ করা উচিৎ নয় মা বাপের। আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেন, “সু-সঙ্গীর ও কু-সঙ্গীর উপমা তো আতরওয়ালা  ও কামারের মত। আতরওয়ালা (এর পাশে বসলে) হয় সে তোমার দেহে (বিনামূল্যে) আতর লাগিয়ে দেবে, না হয় তুমি তার নিকট থেকে তা ক্রয় করবে। তা না হলেও (অন্ততপক্ষে)  তার নিকট থেকে এমনি সুবাস পেতে থাকবে। পক্ষান্তরে কামার (এর পাশে বসলে) হয় সে (তার আগুণের ফিনকি দ্বারা) তোমার কাপড় পুড়িয়ে ফেলবে, না হয় তার নিকট থেকে বিকট দুর্গন্ধ পাবে।” (বুখারি ২১০১, মুসলিম ২৬২৮ নং)

কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে হাত তালি দেয়া বৈধ কি?

কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে হাত তালি দেয়া বৈধ কি?


কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে অথবা কোন মুগ্ধকারী বিষয় দেখে তাকবির বা তসবিহ বলাই বিধেয়। তবে জামায়াতিভাবে নয়, একাকী। তবে হাততালি দেওয়া যে হারাম, তা বলতে পারব না। মুশরিকরা নামাযে সিটি বাজাতো ও হাততালি দিতো। সে ছিল ইবাদতে। মহিলাদের জন্য হাততালিও হারাম। আর আলোচ্য হাততালি হল লেকচারের। সুতরাং ইবাদতে হাততালি নিষিদ্ধ অথবা মহিলাদের বলে লেকচারে তা করা যাবে না, তা নয়। তবুও বলব তা মাকরুহ, তা না করাই ভাল। (ইবনে উসাইমিন)

সাহাবাগনের চরিত্রে অভিনয় করা বৈধ কি?

সাহাবাগনের চরিত্রে অভিনয় করা বৈধ কি?


সাহাবাদের যে মর্যাদা আছে, অভিনয়ের ফলে তা ক্ষুণ্ণ হয়ে যায়। বিশেষ করে অভিনেতা যদি ফাসেক বা কাফের হয়, তাহলে অবৈধতার মাত্রা বেশি। বলা বাহুল্য, অভিনেতা সচ্চরিত্রবান মুসলিম হলেও তাদের চরিত্রের অভিনয় বৈধ নয়। (ইবনে উসাইমিন)

পিতামাতা মারা যাওয়ার পর তাদের আত্মার কল্যাণের জন্য কি কি করা যায়?

পিতামাতা মারা যাওয়ার পর তাদের আত্মার কল্যাণের জন্য কি কি করা যায়?


তাদের জন্য নিম্নলিখিত কাজগুলো করা যায়ঃ-
(১) তাদের জন্য দুয়া করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “যখন কোন মানুষ মারা যায়, তখন তার কর্ম বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি জিনিস নয়;  (ক) সাদকাহ জারিয়াহ,  (খ) যে বিদ্যা দ্বারা উপকার পাওয়া যায় অথবা (গ) নেক সন্তান, যে তার জন্য দুয়া করে।” (মুসলিম)
(২) দান খয়রাত করা। এক ব্যক্তি নবী (সঃ) কে বলল,

পিতামাতা যদি জিহাদে যেতে বাধা দেয় তবে তাদের কথা মানা কি বৈধও?

পিতামাতা যদি জিহাদে যেতে বাধা দেয় তবে তাদের কথা মানা কি বৈধও?


উত্তরঃ জিহাদ ফার্যে আইন হলে তাদের কথা মেনে ঘরে বসে থাকা বৈধ নয়। ফার্যে কিফায়াহ বা নফল হলে তাদের কথা মেনে তাদের খিদমত করা বেশি জরুরি।  আব্দুল্লাহ ইবনে আমার ইবনুল আস (রঃ) বলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর নবীর নিকট এসে বলল, ‘ আমি আপনার সাথে আল্লাহ তাআলার কাছে নেকি পাওয়ার উদেশ্যে হিজরত এবং জিহাদের বায়আত করছি।’ নবী (সঃ) বললেন,

অবৈধ কাজে কি পিতামাতার অনুগত্য করা জায়েয ?

অবৈধ কাজে কি পিতামাতার অনুগত্য করা জায়েয ?


পিতামাতার অনুগত্য করা ওয়াজিব। কিন্তু অবৈধ কাজে তাদের অনুগত্য করা বৈধ নয়। পিতামাতা যদি হারাম উপার্জন করতে বলে, পর্দা করতে নিষেধ করে, পণ বা যৌতুক নিতে বলে, শিরক ও বিদআত করতে বলে, তাহলে সে সব কাজে তাদের অনুগত্য করা বৈধ নয়। মহান আল্লাহ বলেন,
“ আমি মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সৎব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছি, তবে

খবরের কাগজ বিছিয়ে খাওয়া, তা দিয়ে প্রস্রাব পায়খানা পরিষ্কার করা, তার উপ বসা বা পা দেওয়া বৈধ কি?

খবরের কাগজ বিছিয়ে খাওয়া, তা দিয়ে প্রস্রাব পায়খানা পরিষ্কার করা, তার উপ বসা বা পা দেওয়া বৈধ কি?


যে কোন কাগজে আল্লাহর নাম অথবা আল্লাহর নামযুক্ত কোন ব্যক্তি বা বস্তুর নাম থাকলে অথবা কুরানের আয়াত থাকলে বিছিয়ে খাওয়া, তা দিয়ে প্রস্রাব পায়খানা পরিষ্কার করা, তার উপর বসা বা পা দেওয়া বৈধ নয়।যেমন কুরানের পাতা, বই পুস্তক বা পত্র পত্রিকা পবিত্র জায়গায় দাফন করা অথবা পুড়িয়ে ফেলা বিধেয়। যাতে আল্লাহর নাম বা কুরানের আয়াতের কোন অমর্যাদা না হয়। ( ইবনে বাজ)

দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা কি আদৌ বৈধ নয়?

দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা কি আদৌ বৈধ নয়?


প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা যায়। যদি কাপড়ে তার ছিটা লাগার ভয় না থাকে। নবী (সঃ) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন। (বুখারি ২২২৪, মুসলিম ২৭৩ নং) তবে বসে প্রস্রাব করাই উত্তম। যাতে সাবধান হওয়া যায়। আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেন, “তোমরা প্রস্রাব থেকে সাবধানতা অবলম্বন কর। কারণ, অধিকাংশ কবরের আযাব এই প্রস্রাব (থেকে সাবধান না হওয়ার) ফলেই হয়ে থাকে।" ( দারাকুত্বনী, সহিহ তারগিব ১৫১ নং)

রহিম যদি করিমকে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মনে করে অথচ করিম তার বিপরীত হয়, তাহলে রহিমকে সতর্ক করা কি জরুরি? নাকি তা গীবতের পর্যায়ভুক্ত হবে?

রহিম যদি করিমকে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মনে করে অথচ করিম তার বিপরীত হয়, তাহলে রহিমকে সতর্ক করা কি জরুরি? নাকি তা গীবতের পর্যায়ভুক্ত হবে?


উদ্দেশ্য যদি রহিমের হিতাকাংক্ষা হয়, তাহলে তা গীবতের পর্যায়ভুক্ত নয়। যেহেতু তামীর দারী (রঃ) বলেন, “ দ্বীন হল কল্যাণ কামনা করার নাম।” আমরা বললাম, ‘ কার জন্য ?’ তিনি বললেন, “ আল্লাহর জন্য, তার কিতাবের জন্য, তার রাসুলের জন্য, মুসলিমদের শাসকদের জন্য এবং মুসলিম জনসাধারণের জন্য।” (মুসলিম)
জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ)এর  নিকট নামাজ কায়েম করা, যাকাত দেওয়া ও সকল মুসলমানদের জন্য হিত কামনা করার উপর বায়আত করেছি। (বুখারি ও মুসলিম)

ক্লাসরুমে শিক্ষক প্রবেশ করলে ছাত্রদের দাঁড়িয়ে সন্মান প্রদর্শন করা বৈধ কি?

ক্লাসরুমে শিক্ষক প্রবেশ করলে ছাত্রদের দাঁড়িয়ে সন্মান প্রদর্শন করা বৈধ কি?


না, এমন শ্রদ্ধা কিয়ামে বৈধ নয়। যেহেতু আনাস (রঃ) বলেন, ‘ তাঁদের ( সাহাবাদের) নিকট রাসুল (সঃ) অপেক্ষা অন্য কেউই প্রিয়তম ছিলেন না। তা সত্বেও তাঁরা যখন দেখতেন, তখন তার জন্য উঠে দাঁড়াতেন না। যেহেতু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তা অপছন্দ করেন । (তিরমিজি)
শিক্ষকের জন্য এমন শ্রদ্ধা নেওয়া বৈধ নয়, বৈধ নয় ছাত্রদের জন্য সেই শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আদেশ পালন করা। ( লাজনাহ দায়েমাহ )

কিয়াম করা বা দাঁড়ানো বৈধ কি ?

‘কিয়াম’ বৈধ কি ?


‘ কিয়াম’  কয়েক প্রকারের। 

(ক)  কারো তা’যীমের উদ্দেশ্যে কিয়াম করা, যেমন রাজা-বাদশাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা হয়। এমন কিয়াম বৈধ নয়। যেহেতু প্রিয় রাসুল (সঃ) বলেন, “ যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, লক তার জন্য দণ্ডায়মান হক সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে করে নেয়।” (মুনসাদে আহমাদ)
(খ) আগন্তকের সন্মানার্থে উঠে দাঁড়ানো। তাকে আগে

মূর্তি বা পুতুল তৈরির কারখানায় চাকরি করা বৈধ কি?

মূর্তি বা পুতুল তৈরির কারখানায় চাকরি করা বৈধ কি?


এমন কারখানায় চাকরি বৈধ নয়। বৈধ নয় এমন শিল্প ও ছবি নির্মাতাদের উপার্জন। যেহেতু ইসলামে তা হারাম, তার ব্যবসা হারাম, তাতে কোন প্রকার  সহযোগিতা করে চাকরি করা হারাম।
আল্লাহর রাসুল (সঃ) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উভয় সাক্ষদাতাকে অভিশাপ করেছেন। আর বলেছেন,

স্কুলের ছবি অঙ্কন বিষয়ক ক্লাসে প্রাণীর ছবি আঁকতে আদেশ করা হয়। সে ক্ষেত্রে ছাত্র ছাত্রীরা কি করতে পারে?

স্কুলের ছবি অঙ্কন বিষয়ক ক্লাসে প্রাণীর ছবি আঁকতে আদেশ করা হয়। সে ক্ষেত্রে ছাত্র ছাত্রীরা কি করতে পারে?


বিচরণশীল প্রাণীর ছবি আঁকা বৈধ নয়। যদি কেউ আঁকতে একানই বাধ্য হয়, তাহলে প্রাণীর মাথাটা আঁকবে না।  ( ইবনে ঊষাইমীন ) 
ড্রেসের ডিজাইন আঁকতে মাথাহীন দেহের উপর ড্রেস আঁকতে পারা যায়। মাথাহীন স্ট্যাচুর দেহে পোশাক পরিয়ে  তা শো করা যায়। কোন ছবি বা মূর্তির মাথা না থাকলে ক্ষতির আওতায় পড়ে না। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “মূর্তি বা ছবি হল মাথাটাই। সুতরাং মাথা কেটে দেওয়া হলে সে ছবি বা মূর্তিতে সমস্যা নেই।” (সিঃ সহীহাহ ১৯২১ নং )   

বাচ্চাদের খেলনা পুতুলের ব্যপারে বিধান কি?

বাচ্চাদের খেলনা পুতুলের ব্যপারে বিধান কি?


বাচ্চারা নিজে যে সব পুতুল কাপড় দিয়ে বানিয়ে খেলা করে, তা বৈধ হবার ব্যপারে কোন সন্দেহ নেই। যেহেতু এই শ্রেণির পুতুল নিয়ে মা আয়েশা দাম্পত্যের প্রথম জীবনে নবী (সঃ) এর সামনে খেলা করতেন। কিন্তু যে খেলনা নিখুঁতভাবে মানুষের বা অন্য প্রাণীর আকার-আকৃতি দিয়ে তৈরি, যা কথা বলে, কান্না করে, আওয়াজ করে, হাঁটে বা নাচে, তা বৈধ কি না---তাতে সন্দেহ আছে। ( ইবনে ঊষাইমীন )
অনেক উলামার মতে যা শিশুদের খেলনা এবং যা অবজ্ঞা ও অবমাননার পুতুল বা ছবি, তা বৈধ। অনেকের মতে কাপড় বা তুলার পুতুল ছাড়া অন্য পুতুল অবৈধ। অবশ্য পূর্ব সতর্কতামূলক আমল হিসেবে তা শিশুদের জন্য ক্রয় না করাই উত্তম।

ফটোগ্রাফের বা ক্যামেরার ছবিও কি হারাম? ভিডিওর ছবিও কি জায়েয নয়?

ফটোগ্রাফের বা ক্যামেরার ছবিও কি হারাম?


অনেকে বলেছেন, “ক্যামেরার ছবি নিষেধের পর্যায়ভুক্ত নয়।”  কিন্তু নিষেধের কারণ বিশ্লেষণ করলেই তা অবৈধ মনে হয়। তবে পরিচয়পত্র ইত্যাদির প্রয়োজনে তা বৈধ।

যে লেবাসে কোন প্রাণীর ছবি থাকে সে লেবাস পরা বৈধ কি?


যে লেবাসে কোন (বিচরণশীল) প্রাণীর ছবি থাকে, সে লেবাস পরা মুসলিমের জন্য বৈধ নয়। কারণ ছবি ও মূর্তি ইসলামের চরম পরিপন্থী। (ইবনে উষাইমীন)

ভিডিওর ছবিও কি জায়েয নয়?


অনেকে বলেছেন ভিডিওর ছবি গুপ্ত থাকে সময়ে দেখা যায় । সুতরাং তা আয়না ও পানির উপর  প্রকাশিত ছবির মত । তা নিষেধের পর্যায়ভুক্ত নয়। বর্তমান যুগে সে ছবির প্রয়োজনীয়তা অধিকাংশ উলামা অস্বীকার করতে পারে না।


ছবি আঁকলে বা মূর্তি বানালে তা আল্লাহর সৃষ্টির সাথে টেক্কা দেওয়া হয়। কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টি বাজ, পায়রা প্রভৃতি পাখিকে মমি করে বাড়িতে সাজিয়ে রাখলে দোষ আছে কি? যেহেতু তা ত মূর্তি নয়।


এ কাজ মূর্তি নির্মাণের সামিল নয় এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে টেক্কা দেওয়া ও নয়। তবে তাতে অযথা প্রাণী হত্যা ও অপচয় রয়েছে এবং তা গৃহে মূর্তিস্থাপনের চোরা পথ ও সূসদৃশ। তাই তা বৈধ নয়। ( লাজনাহ দায়েমাহ )

প্রাণীর ছবি ও মূর্তি কেবল সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ঘরে স্থাপন করা বৈধ কি?

প্রাণীর ছবি ও মূর্তি কেবল সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ঘরে স্থাপন করা বৈধ কি?


ছবি ও মূর্তিতে যেহেতু পৌত্তলিকতা আছে, সেহেতু তা ঘরে ও রাস্তার মোড়ে স্থাপন করা বৈধ নয়। মূর্তি থেকেই পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম মূর্তিপূজা শুরু হয়েছে নূহ (আঃ) এর যুগে। তাই ইসলাম মূর্তি ও মূর্তিপূজার ঘোর বিরোধী। সে জন্যই শরিয়তের নির্দেশ হোল, “ কোন (বিচরণশীল প্রাণীর)  ছবি বা মূর্তি দেখলেই তা নিশ্চিহ্নকরে দেবে এবং কোন উঁচু কবর দেখলে তা সমান করে দেবে।” (মুসলিম ৯৬৯ নং )
রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন,

হাফ প্যান্ট পরে ব্যায়াম চর্চা করা বা খেলা বৈধ কি? এমন চর্চাকারীকে দর্শন করাই বা কি?

হাফ প্যান্ট পরে ব্যায়াম চর্চা করা বা খেলা বৈধ কি? এমন চর্চাকারীকে দর্শন করাই বা কি?
ব্যায়াম চর্চা করা বৈধ। যদি তা কোন ওয়াজেব জিনিস বা কর্ম থেকে উদাসীন ও প্রবৃত্ত করে না ফেলে। কারণ তা যদি কোন ওয়াজিব কর্ম থেকে প্রবৃত্ত করে, তাহলে হারাম হবে। আবার যদি ব্যায়াম করা কারো চিরচারিত অভ্যাস হয়, যাতে তার অধিকাংশ সময় তাতেই ব্যয় হয়, তাহলে তা সময় নষ্টকারী অভ্যাস। যার সর্বনিম্ন মান হবে মাকরূহ।
পক্ষান্তরে

লটারির টিকিট কেনা কি বৈধ? তার পুরস্কারের অর্থ কি হালাল? কোন জন কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য কি লটারির খেলা ছাড়া যায়?

লটারির টিকিট কেনা কি বৈধ? তার পুরস্কারের অর্থ কি হালাল? কোন জন কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য কি লটারির খেলা ছাড়া যায়?

লটারি জুয়ার পর্যায়ভুক্ত। সুতরাং পুরষ্কারের লোভে তার টিকেট কেনা হারাম, তার পুরষ্কারও হারাম। আর হারাম দিয়ে কোন ভাল কাজের প্রতিযোগিতা করা প্রস্রাব দিয়ে পায়খানা ধোওয়ার মতো। মহান আল্লাহ বলেছেন,

“হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদি ও ভাগ্য নির্ণয়ক শর ঘৃন্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর। এতে তোমরা সফলকাম হতে পারবে। শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহ্‌র স্মরণে ও নামাযে বাঁধা দিতে চায়। অতএব তোমরা কি নিবৃত হবে? (সূরা মাইদাহ ৯১-৯১ আয়াত)”

“হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা একে অন্যের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, তবে তোমাদের পরস্পর সম্মতিক্রমে ব্যবসার মাধ্যমে (গ্রহণ করলে তা বৈধ)।” (সূরা নিসাঃ ২৯)

যদিও মনে কর যে, লটারি খেলার টাকা দিয়ে মানুষের উপকার করা হয়, তবুও জানতে হবে যে তাতে পাপ আছে। আর যাতে পুন্য ও পাপ দুটোই একই সাথে আছে তা বর্জন করাই জ্ঞানীর কাজ। মহান আল্লাহ বলেছেন,

“লোক তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল উভয়ের মধ্যেই মহাপাপ ও মানুষের জন্য (যৎকিঞ্চিৎ) উপকারও আছে, কিন্তু ওদের পাপ উপকার অপেক্ষা অধিক।” (বাকারাহঃ ২১৯)

কুস্তি খেলা, ষাঁড় লড়াই খেলা, মুষ্টিযুদ্ধ খেলা বৈধ কি?

কুস্তি খেলা বৈধ কি? ষাঁড় লড়াই খেলা কি বৈধ?

সতর ঢাকার মত লেবাস পরে কুস্তি খেলা বৈধ। খোদ নবী ﷺ কুস্তি লড়ে প্রসিদ্ধ কুস্তিগীর রুকানাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। (আবু দাউদ ৪০৭৮, তিরমিজি ১৭৮৫, বাইহাকি ১০/১৮, গায়াতুল মারাম ৩৭৮ নং) তবে ফ্রিস্টাইল কুস্তি বৈধ নয়। কারণ তাতে শরীর চর্চার চাইতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ইচ্ছাই বেশী থাকে।   

ষাঁড় লড়াই খেলা কি বৈধ?

ষাঁড়ের সাথে এ খেলা বৈধ নয়। কারণ এতে বড় বিপদ ও প্রাণহানির আশঙ্কা আছে।

মুষ্টিযুদ্ধ খেলা বৈধ কি?

মুষ্টিযুদ্ধ খেলা বৈধ নয়। কারণ এ খেলা বড় ঘাত প্রতিঘাত এর খেলা। যাতে বিপদাশঙ্কা খুব বেশী। আর মহান আল্লাহ বলেন, “তোমরা নিজেরা নিজেদের সর্বনাশ করো না।” (বাকারাহঃ ১৯৫)।

পকেমোন খেলা বৈধ কি? বেবিফুট খেলা বৈধ কি?

পকেমোন খেলা বৈধ কি?

দ্বীনী ও আর্থিক নানা ক্ষতির কারণে এ খেলা বৈধ নয়। বৈধ নয় এ খেলার কোন যন্ত্র বিক্রয় ও তার দ্বারা ব্যবসা। (ইবনে জিবরিন, লাজনাহ দায়েমাহ, বিস্তারিত দ্রঃ ফাতাওয়া উলামাইল বালাদিল হারাম ১২৬২-১২৭০ পৃঃ)

বেবিফুট খেলা বৈধ কি?

শিশুর মূর্তির মাধ্যমে হাত দ্বারা পরিচালিত ঐ ফুটবল খেলা বৈধ নয়। যেহেতু তাতে শারীরিক কোন উপকার সাধিত হয় না। পরন্ত অযথা সময় ব্যয় হয়। তাছাড়া তাতে রয়েছে মূর্তি যা ইসলামের ঘোর পরিপন্থী।  (লাজনাহ দায়েমাহ)

খেলাধুলায় প্রতিযোগিতায় বিতরিত পুরষ্কার গ্রহণ করা বৈধ কি?

খেলাধূলায় প্রতিযোগিতায় বিতরিত পুরষ্কার গ্রহণ করা বৈধ কি?

পুরষ্কার যদি প্রতিযোগী পক্ষ ছাড়া অন্য কোন পক্ষ দেয়, তাহলে তা গ্রহণ করায় দোষ নেই। দোষ হল প্রতিযোগীদের আপসে পুরষ্কার রেখে হার-জিতে লাভ-লোকসান হলে। যেহেতু তা জুয়ার পর্যায়ভুক্ত আর মহানবী ﷺ বলেছেন, “উট ঘোড়া অথবা তীর প্রতিযোগিতা ছাড়া অন্য প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার বৈধ নয়।” (আবূ দাউদ ২৫৭৪, তরমিজি ১৭০০)

যেহেতু এ তিনটি জিনিস জিহাদে কাজে লাগে, তাই তাতে সকল প্রকার পুরষ্কার বৈধ করা হয়েছে। (ইবনে উসাইমিন)

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ