Monday, October 16, 2017

আমরা পাঁচজন চাকুরীজীবী প্রত্যেক মাসে বেতন থেকে পাঁচ হাজার টাকা জমা করে পঁচিশ হাজার টাকা লটারির মাধ্যমে একজনকে দিই। পরের মাসেও একই নিয়ম করে পরপর পাঁচ মাসে পালা ফিরে। এতে এক সাথে পঁচিশ হাজার টাকা কোন কাজে লাগানো সহজ হয়। এতে শরয়ী বিধান কোন সমস্যা আছে কি?

আমরা পাঁচজন চাকুরীজীবী প্রত্যেক মাসে বেতন থেকে পাঁচ হাজার টাকা জমা করে পঁচিশ হাজার টাকা লটারির মাধ্যমে একজনকে দিই। পরের মাসেও একই নিয়ম করে পরপর পাঁচ মাসে পালা ফিরে। এতে এক সাথে পঁচিশ হাজার টাকা কোন কাজে লাগানো সহজ হয়। এতে শরয়ী বিধান কোন সমস্যা আছে কি?
এতে  শরয়ী বিধানে কোন সমস্যা নেই। যেহেতু তাতে কম বেশি কেউ পায় না। দেরিতে হলেও ভাগ সমান পায়। সুতরাং পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ এমন সমিতি করা বৈধ। (ইবনে বাজ)


আমরা তিনজন একই প্রতিষ্ঠানে একই চাকুরী করি। প্রত্যহ যা কাজ থাকে, তা দুজনের জন্যও কম। সে ক্ষেত্রে যদি আমাদের মধ্যে একজন করে পালা বদলে অনুপস্থিত হয়, তাহলে তা বৈধ হবে কি?


কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে নিজের ইচ্ছা মত অনুপস্থিত থাকা বৈধ নয়। কাজ না থাকলে চাকুরিস্থলে উপস্থিত থাকা জরুরি। (ইবনে উসাইমিন)

আমি এখনো উপার্জনশীল হয়ে উঠিনি। মা সহ আমরা সবাই আব্বার কামাই নির্ভর। কিন্তু আমরা জানি, আব্বার কামাই হালাল নয়। এখন আমরা কি করব?

আমি এখনো উপার্জনশীল হয়ে উঠিনি। মা সহ আমরা সবাই আব্বার কামাই নির্ভর। কিন্তু আমরা জানি, আব্বার কামাই হালাল নয়। এখন আমরা কি করব?

প্রথমত তোমাদের উচিৎ, আব্বাকে নসিহত করা এবং হারাম উপার্জন বর্জন করতে চাপ দেওয়া। তোমাদের কথা গ্রাহ্য না করলে এমন কাউকে লাগাও, যার কথা কাজে লাগবে। ততদিন পর্যন্ত তোমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ভরণ পোষণ নিয়ে যাওয়ায় গোনাহ হবে না। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু নেওয়া বৈধ হবে না। (ইবনে উসাইমিন)

দোকানের মালিক দোকানে কারবেরে রেখে দোকান চালায়। তাকে বলা হয় অমুক মাল এত টাকায় বিক্রি করবে। কিন্তু সে তার থেকে দশ বিশ টাকা বেশি বলে বেশি টাকাটা নিজের কাছে রাখে। আর মালিকের বলা দাম মালিক পেয়ে যায়। কারবারের ওই টাকা হালাল কি?

দোকানের মালিক দোকানে কারবেরে রেখে দোকান চালায়। তাকে বলা হয় অমুক মাল এত টাকায় বিক্রি করবে। কিন্তু সে তার থেকে দশ বিশ টাকা বেশি বলে বেশি টাকাটা নিজের কাছে রাখে। আর মালিকের বলা দাম মালিক পেয়ে যায়। কারবারের ওই টাকা হালাল কি?

বেতনভোগী কর্মচারী বা কারবারের ওই বেশি টাকা নেওয়ার অধিকার নেই। যেহেতু সে মাল তার নয়, তার মালিকের। তার ডিউটির জন্য সে বেতন পায়। সে আমানতদার প্রতিনিধি। বেশি লাভ হলে তার মালিকের হবে, তার নয়। অবশ্য যদি মালিকের সে ব্যাপারে অনুমতি থাকে, তাহলে সে কথা ভিন্ন। (ইবনে জিবরিন) 

শুনেছি স্বামী স্ত্রীকে ছেড়ে ছয় মাসের বেশি বাইরে থাকলে স্ত্রী তালাক হয়ে যায়। তাহলে যারা স্ত্রী ছেড়ে দুই তিন বছর করে বিদেশে থাকছে, তাদের কি হবে?

শুনেছি স্বামী স্ত্রীকে ছেড়ে ছয় মাসের বেশি বাইরে থাকলে স্ত্রী তালাক হয়ে যায়। তাহলে যারা স্ত্রী ছেড়ে দুই তিন বছর করে বিদেশে থাকছে, তাদের কি হবে?


উক্ত শোনা কথা ঠিক নয়। স্ত্রী রাজি থাকলে উপার্জনের উদ্দেশ্যে দুই তিন বছর থাকা কোন দোষের নয়। যে যতদিন থাকে, সে তো বাধ্য হয়েই থাকে। বিশেষ কারণে দ্বিতীয় খলীফা উমার (রাঃ) স্বামী স্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য ছয় মাস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তার বেশি পৃথক থাকলে স্বামী স্ত্রীর বন্ধন আপনা আপনিই ছিন্ন হয়ে যাবে। (ইবনে জিবরিন)

কাজের জন্য মুসলিম লেবার লাগানো উচিত, নাকি অমুসলিম? বিশেষ করে অমুসলিম লেবার বেশি দক্ষ হলে কি করা যাবে? অমুসলিম মালিকের কাজ করে উপার্জিত অর্থ হালাল কি?

কাজের জন্য মুসলিম লেবার লাগানো উচিত, নাকি অমুসলিম? বিশেষ করে অমুসলিম লেবার বেশি দক্ষ হলে কি করা যাবে?


মুসলিম লেবার লাগানোই উত্তম, যদিও দক্ষতায় তারা কম। যেহেতু মুসলিম বলে তাদের আমানতদারী ও ইখলাসের ফলে কাজে বরকত হবে। আর মহান আল্লাহ বলেছেন, “ অংশীবাদী পুরুষ তোমাদেরকে চমৎকৃত করলেও (ইসলাম ধর্মে) বিশ্বাসী ক্রীতদাস তার থেকেও উত্তম।” (বাকারাহঃ ২২১)
অবশ্য মুসলিমরাই যদি নামসর্বস্ব হয়, তাহলে সে কথা ভিন্ন। (ইবনে জিবরিন)

অমুসলিম মালিকের কাজ করে উপার্জিত অর্থ হালাল কি?


কাজ যদি হালাল হয়, তাহলে তাঁর বিনিময়ে পাওয়া অর্থও হালাল। মালিক অমুসলিম হলে কোন ক্ষতি হবে না।

বহু মালিক আছে, যারা তাদের কর্মচারীদের (চাকর, ড্রাইভারদের) বেতন দিতে গড়িমসি ও দেরি করে। এতে কি তারা গোনাহগার হবে না ?

বহু মালিক আছে, যারা তাদের কর্মচারীদের (চাকর, ড্রাইভারদের) বেতন দিতে গড়িমসি ও দেরি করে। এতে কি তারা গোনাহগার হবে না ?


অবশ্যই তারা গোনাহগার ও জালেম। প্রথমতঃ সে মহানবী (সঃ) এর আদেশের খেলাপ করে। তিনি বলেছেন, “মজুরকে তাঁর ঘাম শুকাবার পূর্বে তোমরা তাঁর মজুরি দিয়ে দাও।” (সহিহুল জামে ১০৫৫ নং )
দ্বিতীয়তঃ সে  সেই ব্যক্তির খাদ্য আটকে রাখে, যার খাবারের দায়িত্ব তাঁর ঘাড়ে আছে এবং সেই বেতনে আরো অনেক মানুষকে খোরপোশ আছে। আর আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেছেন, “মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যার আহারের দায়িত্বশীল, তাকে তা ( না দিয়ে) আটক রাখে।” (মুসলিম ৯৯৬ নং)
তৃতীয়তঃ

আমার অনেক রিক্সা আছে, এক একটি চালককে দিয়ে প্রত্যহ ১০০ টাকা আদায় করি। এতে শরয়ী কোন সমস্যা আছে কি?

আমার অনেক রিক্সা আছে, এক একটি চালককে দিয়ে প্রত্যহ ১০০ টাকা আদায় করি। এতে শরয়ী কোন সমস্যা আছে কি?


এইভাবে টাকা ফিক্সড করে নেওয়া বৈধ নয়। যেহেতু এতে চালকের ক্ষতি আছে। কোন একদিন তাঁর ১০০ টাকা নাও হতে পারে। অথচ সে তা দিতে বাধ্য। অন্যদিন তাঁর বেশি উপার্জন হলে তা মালিককে না দিলেও ক্ষতির সময় চালকই একা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই জন্য বৈধ উপায় হল পারসেন্টেজ চুক্তি করা। অর্থাৎ, সারা দিনে যে উপার্জন হবে, তাঁর অর্ধেক বা এক তৃতীয়াংশ মালিকের, বাকি চালকের। তাতে চালক মিথ্যা বলে মেরে খেলে খেতে পারে। সে তাঁর হিসাব দেবে। মালিক  তো হারাম থেকে বেচে যাবে। (ইবনে জিবরীন )

আমার চাকরি করার যোগ্যতা আছে, কিন্তু সার্টিফিকেট নেই। নকল সার্টিফিকেট বানিয়ে চাকরি নিতে পারি কি?

আমার চাকরি করার যোগ্যতা আছে, কিন্তু সার্টিফিকেট নেই। নকল সার্টিফিকেট বানিয়ে চাকরি নিতে পারি কি?


নকল সার্টিফিকেট শো করে চাকরি নেওয়া বৈধ নয়। কারণ তাতে রয়েছে মিথ্যা জালিয়াতি, ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা। যার সবটাই হারাম। (ইবনে বাজ)
আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আমাদেরকে ধোঁকা দেয়, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়। ধোঁকা ও চালবাজি জাহান্নামে যাবে।” (ত্বাবারানীর, কাবির ও সাগির, ইবনে হিব্বান ৫৫৩৩, সহিহুল জামে ৬৪০৮ নং)

একজনের তরফ থেকে চাকরির ইন্টারভিউ বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে তাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া কি বৈধ?


এমন কাজ বৈধ নয়। কারণ তাতে রয়েছে ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা। এর ফোলে অযোগ্য লোককে চাকরির উপযুক্ত বানিয়ে দেওয়া হয়। যার পরিণাম নিশ্চয় শুভ নয়। (ইবনে বাজ)

পরীক্ষায় চিট করে পাশ করা বৈধ কি?

পরীক্ষায় চিট করে পাশ করা বৈধ কি?


ধোঁকা দেওয়া হারাম। পরীক্ষা দ্বীনী বিষয়ে হক অথবা দুনিয়াবী বিষয়ে, সর্ব  বিষয়ে পরীক্ষায় ধোঁকা দেওয়া এবং চিট, চুরি বা টুকলি করে লেখা হারাম। আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি তোমাদেরকে ধোঁকা দেয়, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়।” (ত্বাবারানীর, কাবির ও সাগির, ইবনে হিব্বান ৫৫৩৩, সহিহুল জামে ৬৪০৮ নং) এতে সব রকমের ধোঁকা শামিল।

নিজ থেকে যেচে অথবা দরখাস্ত লিখে দ্বীনী পদ প্রার্থনা করা বৈধ কি?

নিজ থেকে যেচে অথবা দরখাস্ত লিখে দ্বীনী পদ প্রার্থনা করা বৈধ কি?


দ্বীনী পদসমুহ থেকে উপযুক্ত উলামাগন দুরে সরতে চাইলে সে স্থলে জাহেলগণ বহাল হয়ে যাবে। আর  তখন তারা নিজের ভ্রষ্ট হবে এবং অপরকেও ভ্রষ্ট করবে। সুতরাং নিজেকে সত্যই সে পদের যোগ্য অধিকারী মনে করলে নিজে থেকে সে পদ চেয়ে নেওয়া দূষণীয় নয়। যেমন ইউসুফ (আঃ) চেয়ে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন,
সে বলল,

চাকরি স্থলে অনেক সময় আমার এক সাথী আসতে পারে না। আমাকে অনুরোধ করলে আমি তার হয়ে হাজিরা খাতায় সই করে দেই। এটা মানবিক খিদমত মানা যাবে, নাকি এক প্রকার ধোঁকাবাজি ও খেয়ানত?

চাকরি স্থলে অনেক সময় আমার এক সাথী আসতে পারে না। আমাকে অনুরোধ করলে আমি তার হয়ে হাজিরা খাতায় সই করে দেই। এটা মানবিক খিদমত মানা যাবে, নাকি এক প্রকার ধোঁকাবাজি ও খেয়ানত?


এটি মানবিক খিদমত নয়। এটি শয়তানি খিদমত। এই কাজে আপনার তিন প্রকার অন্যায় হয়। একঃ মিথ্যা জালিয়াতি। দুইঃ কর্তৃপক্ষ এর খেয়ানত ও তার সাথে ধোঁকাবাজি। তিনঃ ওপরের বাতিল উপায়ে মাল ভক্ষণের সহযোগিতা করা। আর প্রত্যেকটি পাপই হল বিশাল। (ইবনে উসাইমিন)

যারা টিউশনি করে ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে কুরআন শিখিয়ে বেতন নেয় অথবা মক্তব মাদ্রাসায় কুরআন পড়িয়ে বেতন নেয়, তাদের অবস্থা কি হবে?

হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি কুরআন শিক্ষাদানের উপর একটি ধনুকও গ্রহণ করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার পরিবর্তে জাহান্নামের আগুনের ধনুক তার গলায় লটকাবেন।” (সহিহুল জামে ৫৯৮২ নং) তাহলে যারা টিউশনি করে ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে কুরআন শিখিয়ে বেতন নেয় অথবা মক্তব মাদ্রাসায় কুরআন পড়িয়ে বেতন নেয়, তাদের অবস্থা কি হবে?


মহানবী (সঃ) বলেছেন,

বিড়ি সিগারেট বাধার কাজ করে অথবা তার ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন হালাল কি?

বিড়ি সিগারেট বাধার কাজ করে অথবা তার ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন হালাল কি?


বিড়ি সিগারেট পান করা হারাম। আর  যে জিনিস পানাহার করা হারাম, তার মূল্য, উপার্জন ও ভাড়া খাওয়াও হারাম। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “মহান আল্লাহ যখন কোন জিনিশকে হারাম করেন, তখন তার মূল্যকেও হারাম করেন।” (আহমাদ, আবু দাউদ, দারকুত্বনী, বাইহাকি প্রমুখ)

ইসলামের দৃষ্টিতে ক্রেতা বা বিক্রেতা ভাঙ্গানো কি? ‘আমার কাছে ওর থেকে ভাল জিনিস আছে, আমার থেকে নাও’ অথবা ‘আমি ওর চাইতে বেশী দাম দেব, আমাকে বিক্রি কর’ বলে নিজের স্বার্থ রক্ষা করা বৈধ কি?

ইসলামের দৃষ্টিতে ক্রেতা বা বিক্রেতা ভাঙ্গানো কি? ‘আমার কাছে ওর থেকে ভাল জিনিস আছে, আমার থেকে নাও’ অথবা ‘আমি ওর চাইতে বেশী দাম দেব, আমাকে বিক্রি কর’ বলে নিজের স্বার্থ রক্ষা করা বৈধ কি?


এমন কাজ বৈধ নয়। যেহেতু মহানবী (সঃ) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন অপরের ক্রয় বিক্রয় এর উপর ক্রয় বিক্রয় না করে এবং তারা মুসলিম ভাইদের বিবাহ প্রস্তাবের উপর নিজের বিবাহ প্রস্তাব না দেয়। কিন্তু যদি সে তাকে সম্মতি জানায় (তবে তা বৈধ)।” (বুখারি অ মুসলিম)
তিনি আরও বলেছেন, “এক মুমিন অপর মুমিনের ভাই। আর মুমিনের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তার ভাইয়ের ক্রয় বিক্রয় এর উপর নিজের ক্রয়বিক্রয় এর কথা বলবে। আর এটাও বৈধ নয় যে, সে ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর নিজের বিবাহ প্রস্তাব দেবে, যতক্ষণ না সে বর্জন করে।” (মুসলিম)

আমি একজন টেকনিশিয়ান। ওয়ার্কশপে কাজ করি। বেতন নেই। কিন্তু অনেক কাজের জন্য অনেকের বাড়িতে যেতে হয়। আর তখন বাড়িওয়ালা আমাকে ২০ / ৫০ টাকা অতিরিক্ত বকশিশ দেয়। সেটা কি আমার জন্য হালাল?

আমি একজন টেকনিশিয়ান। ওয়ার্কশপে কাজ করি। বেতন নেই। কিন্তু অনেক কাজের জন্য অনেকের বাড়িতে যেতে হয়। আর তখন বাড়িওয়ালা আমাকে ২০ / ৫০ টাকা অতিরিক্ত বকশিশ দেয়। সেটা কি আমার জন্য হালাল?


কাজের খাতিরে পাওনা যে কোন টাকা মালিকের হক। কর্মচারীর বেতন ছাড়া অন্য কিছু নেওয়ার অধিকার নেই। অবশ্য মালিকের অনুমতি থাকলে আলাদা কথা। অনুমতি না থাকলে তা না নেওয়াই পরহেজগারির কাজ। কারণ নবী (সঃ) বলেছেন, “আল্লাহ আমাকে যে সকল কর্মের অধিকারী করেছেন, তা মধ্য হতে কোনও কর্মের তোমাদের কাউকে কর্মচারী নিয়োগ করলে সে ফিরে এসে বলে কি না,  ‘এটি আপনাদের, আর এটি উপহারস্বরূপ আমাকে দেয়া হয়েছে!’ যদি সে সত্যবাদী হয়, তবে তার বাপ মা এর ঘরে বসে থেকে দেখে না কেন, তাকে কোন জিনিস উপহার দেয়া হচ্ছে কি না? ( বুখারি ও মুসলিম)

ব্যাংকিং সোর্স প্রয়োগ করা কি ঘুসের মতো? যাকাতের মাল কি কোন মিসকীনকে হজ্জ করার জন্য দেওয়া যায়?

ব্যাংকিং সোর্স প্রয়োগ করা কি ঘুসের মতো?


ব্যাংকিং সোর্স প্রয়োগ করার ফলে যদি অন্যের হক নষ্ট করে নিজের জন্য আদায় করা হয়, তাহলে কোন যোগ্যতর লোককে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, তাহলে তা হারাম। কিন্তু যদি তাতে কার হক নষ্ট না হয়, তাহলে তা বৈধ সুপারিশের পর্যায়ভুক্ত। (লাজনাহ দায়েমাহ)
আবু মুসা আশআরী (রাঃ) বলেন, যখন নবী (সঃ) এর নিকটে  কোন ব্যক্তি প্রয়োজনে আসতো, তখন তিনি তার সঙ্গীদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলতেন , “(এর জন্য)  তোমরা সুপারিশ কর, তোমাদেরকে প্রতিদান দেওয়া হবে। আর আল্লাহ তায়ালা তার নবীর জবানে যা পছন্দ করেন, তা ফয়সালা করে দেন।” (বুখারি, মুসলিম)

যাকাতের মাল কি কোন মিসকীনকে হজ্জ করার জন্য দেওয়া যায়?


যাকাতের মাল কোন মিসকীনকে হজ্জ করার জন্য দেওয়া যায়। যেহেতু হজ্জ ‘সাবীলিল্লাহ’র পর্যায়ভুক্ত। ২৩৯ (আলবানী)

ফিল্মি ভিডিও সিডির ব্যবসা করা বৈধ কি?

ফিল্মি ভিডিও সিডির ব্যবসা করা বৈধ কি?


ইসলামে যা হারাম তার ব্যবসা করাও হারাম। সুতরাং ফিল্মি অবৈধ হলে তার ভিডিও সিডি বিক্রয় করে অথবা ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন হালাল নয়। (ইবনে বাজ)  

এমন ব্যবসায়ীকে কি দোকান ভাড়া দেওয়া বৈধ, যেটাতে হারাম জিনিষ বিক্রি করবে? এমন লোককে কি গাড়ি ভাড়া দেওয়া বৈধ, যে গান বাজনার অনুষ্ঠানে যাবে বা মাজারে যাবে? এমন লোককে কি বাড়ি ভাড়া দেওয়া বৈধ, যে তাতে ভিডিও হল করবে অথবা মদ তৈরির কারখানা করবে অথবা সেলুন খুলে দাড়ি চাছবে? এমন লোককে কি বাড়ি ভাড়া দেওয়া বৈধ, যে তাতে সুদী ব্যাংক চালাবে? ওই সকল ভাড়ার অর্থ কি হালাল?

কোন প্রকার অবৈধ কাজের জন্য নিজের বাড়ি গাড়ি বা অন্য কিছু ভাড়া দেওয়া হারাম। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন, “সৎ কাজ ও আত্নসংযমে তোমরা পরস্পর সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে একে অন্যের সাহায্য করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে অতি কঠোর।” (মায়িদাহঃ ২)
আর হারাম কাজে ভাড়া দিয়ে যে অর্থ আসে তা হালাল নয়। যেহেতু মহানবী (সঃ) বলেছেন, “মহান আল্লাহ যখন কোন জিনিসকে হারাম করেন, তখন তার মূল্যকেও হারাম করেন। (আহমাদ, আবু দাউদ, দারাকুত্বনী, ত্বাবারানী, বাইহাকী প্রমুখ)

ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ লোকে বলে, ‘মিথ্যা না বললে ব্যবসা চলে না।’ এ কথা কি ঠিক? ব্যবসায় মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যে কসম খাওয়ায় পাপ কি?

ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ লোকে বলে, ‘মিথ্যা না বললে ব্যবসা চলে না।’ এ কথা কি ঠিক? ব্যবসায় মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যে কসম খাওয়ায় পাপ কি?


তাদের কথা ঠিক নয়। ব্যবসা চলা না চলা আল্লাহর হাতে। রুজি ও বরকতের চাবি তার হাতে। সুতরাং সদা সত্য কথা বলাই মুসলিমের গুন। আর মিথ্যা বলা মুনাফিকের গুন।
রাসুল (সঃ) বলেছেন, “নিশ্চয় সত্যবাদীরা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে ‘মহাসত্যবাদি’ রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচার এর দিকে নিয়ে যায়।  আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর

একই জিনিস নগদে ৫০ টাকায় এবং ধারে ৬০ টাকায় বিক্রি করা বৈধ কি?

একই জিনিস নগদে ৫০ টাকায় এবং ধারে ৬০ টাকায় বিক্রি করা বৈধ কি?


এক কিস্তিতেই হোক আর একাধিক নির্দিষ্ট কিস্তিতেই হোক  চুক্তি করে বেশী নেওয়া দোষাবহ নয়। যেমন যদি কোন দোকানদার এক কেজি সরিষার তেল নগদ দরে ৫০ টাকা এবং ধারে ৬০ টাকা হিসেবে বিক্রি করে, আর ক্রেতাও এই চুক্তিতে রাজি হয়ে ক্রয় করতে থাকে, তাহলে উভয়ের জন্য তা বৈধ। এরূপ লেনদেন ব্যবসা চুক্তি সুদের চুক্তিভুক্ত নয়।

এক ব্যাক্তির অর্থের প্রয়োজন হল। ঋণ কোথাও না পেয়ে এক গাড়ির ডিলারের কাছে গেল। ডিলারের নিকট থেকে ধারে একটি গাড়ি ক্রয় করল। অতঃপর সেই গাড়িকেই ঐ ডিলারের নিকট ৯০ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করল। পরবর্তীকালে কিস্তিতে সেই টাকা পরিশোধ করল। ফলে ১০ হাজার টাকা ডিলারের পকেটে অনায়াসে এসে গেল। এমন কারবার বৈধ কি?

কাউকে ধারে মাল বিক্রয় করে সেই মাল কম দামে তার নিকট থেকেই ক্রয় করা হারাম। এই ব্যবসাকে শরীয়তে ‘ইনাহ’ ব্যবসা বলা হয়। আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেন, “যখন তোমরা ইনাহ ব্যবসা করবে এবং গরুর লেজ ধরে কেবল চাষ বাস নিয়েই সন্তষ্ট থাকবে, আর জিহাদ ত্যাগ করে বসবে, তখন আল্লাহ তোমাদের উপর এমন হীনতা চাপিয়ে দেবেন, যা তোমাদের হৃদয় থেকে ততক্ষণ পর্যন্ত দুর করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের দ্বীনের প্রতি প্রত্যাবর্তন করেছ।”  (মুসনাদে আহমাদ ২/২৮, ৪২, ৮৪, আবু দাউদ ৩৪৬২, বাইহাকি ৫/৩১৬)

কোন কোন সরকারী চাকুরীজীবী সরকারী মাল (তেল, ঔষধ, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি) লুকিয়ে বিক্রি করে। সরকারী মাল এভাবে বিক্রি করা কি বিধ?সেই মাল কিনা ও কি বৈধ?

কোন কোন সরকারী চাকুরীজীবী সরকারী মাল (তেল, ঔষধ, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি) লুকিয়ে বিক্রি করে। সরকারী মাল এভাবে বিক্রি করা কি বিধ?সেই মাল কিনা ও কি বৈধ?


অবশ্য তাদের এমন আমানতে খেয়ানত বৈধ নয়। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“হে বিশ্বাসীগণ! জেনে শুনে আল্লাহ ও তার রাসুলের সাথে বিশ্বাস ভঙ্গ করো না এবং তোমাদের পরস্পরের আমানত (গচ্ছিত দ্রব) সম্পর্কেও নয়।” (আনফালঃ ২৭)
দ্বিতীয়ত এ কাজ

বিমা করা বৈধ কি? কোন শ্রেণীর বিমা অবৈধ? গাড়ি বা বাড়ির উপর বিমা বৈধ কি?

বিমা করা বৈধ কি? কোন শ্রেণীর বিমা অবৈধ?


বিমা সাধারণত তিন প্রকারের। যেমন -

(১) গ্রুপ ইনস্যুরেন্সঃ সরকার এমন এক পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন করে যাতে জনসাধারণের কোন একটি দল নিজেদের কোন ক্ষতিপূরণ অথবা কোন মুনাফালাভের ক্ষেত্রে সুবিধা ভোগ করতে পারে। যেমন, সরকারী চাকুরীজীবীদের বেতনের সামান্য একটি অংশ প্রত্যেক মাসে কেটে রেখে কোন বিশেষ এক ফান্ডে জমা করা হয়। অতঃপর কোন চাকুরীজীবীর মৃত্যু হলে অথবা

অনেক সময় অনেক ব্যবসায়ী তার পণ্য বেশী বেশী পরিমাণে কাটাবার জন্য প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কারের ব্যবস্থা করে থাকে এবং তাতে শর্ত থাকে যে, এত টাকার মাল কিনলে তবেই সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। ফলে সে দোকানে খদ্দের ও লাভ প্রচুর হয়। এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা ব্যবসায়ীর জন্য এবং তাতে অংশগ্রহণ করা ক্রেতার জন্য বৈধ কি?

দ্বীনী পত্রিকায় প্রতিযোগিতা ছাড়া হয়, যাতে পুরষ্কার থাকে। সেই পত্রিকার বিক্রয় বাড়ে। যে অতিরিক্ত লাভ হয়, তা থেকে পুরষ্কার দেয়া হয়। লটারির মাধ্যমে কেউ কেউ সেই পুরষ্কার পায়, আবার অনেকেই পায় না। অবশ্য তাতে দ্বীনী জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। পুরষ্কার পাওয়ার লোভে ওই পত্রিকা ক্রয় করে ওই প্রতিযোগিতায় শামিল হওয়া বৈধ কি?

কাগজের টাকার বিনিময়ে ধাতুর মুদ্রা (কয়েন) কম বেশী বেচা কেনা বৈধ কি? যেমন ১০ টাকার নোটর বিনিময়ে ৯ টাকার কয়েন নেওয়া বৈধ কি?

কাগজের টাকার বিনিময়ে ধাতুর মুদ্রা (কয়েন) কম বেশী বেচা কেনা বৈধ কি? যেমন ১০ টাকার নোটর বিনিময়ে ৯ টাকার কয়েন নেওয়া বৈধ কি?


এ বিনিময়ে সমস্যা নেই। যেহেতু এক দেশীয় মুদ্রা হলেও উভয়ের মুল উপাদান ভিন্ন। (ইবনে জিবরিন, ইবনে উসাইমিন) আর নবী (সঃ) বলেছেন,
“সোনার বিনিময়ে সোনা, রুপার বিনিময়ে রুপা, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর, লবণের বিনিময়ে লবণ ক্রয় বিক্রয় এর ক্ষেত্রে উভয় বস্তুকে যেমনকার তেমন, সমান সমান ও হাতে হাতে হতে হবে। অবশ্য যখন উভয় বস্তুর শ্রেণী বা জাত বিভিন্ন হবে তখন তোমরা তা যেভাবে (কম বেশী করে) ইচ্ছা বিক্রয় কর। তবে শর্ত হল, তা যেন হাতে হাতে নগদে হয়। (মুসলিম, মিশকাত ২৮০৮ নং)

মুদ্রা ব্যবসায় শরয়ী বাধা আছে কি? সস্তা দামে ডলার কিনে রাখা ও দাম বাড়লে তা বিক্রি করা বৈধ কি?

মুদ্রা ব্যবসায় শরয়ী বাধা আছে কি?


মুদ্রা ব্যবসা, ডলারের বিনিময়ে টাকা, টাকার বিনিময়ে রিয়াল ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ক্রয় বিক্রয়ে কোন  শরয়ী  বাধা নেই, যদি তা নগদ নগদ হাতে হাতে হয়। (ইবনে জিবরিন) তবে একই দেশীয় মুদ্রার বিনিময়ে কম বেশি দেওয়া নেওয়া চলবে না। যেহেতু তা সুদী কারবারে পরিণত হয়ে যাবে।

সস্তা দামে ডলার কিনে রাখা ও দাম বাড়লে তা বিক্রি করা বৈধ কি?


সস্তা দামে ডলার কিনে রাখা ও দাম বাড়লে তা বিক্রি করা বৈধ। তবে ডলার কেনার সময় টাকা নগদ নগদ দিতে হবে। ধারে কেনা বেচা চলবে না। (ইবনে বাজ)

নেট হাউস বা কফি হাউস খুলে নেট ভাড়া দিয়ে ব্যবসা বৈধ কি?

নেট হাউস বা কফি হাউস খুলে নেট ভাড়া দিয়ে ব্যবসা বৈধ কি?


নেট অস্ত্রের মত, ভাল মন্দ উভয় ভাবে ব্যবহার করা যায়। বাজারে হাউসে আসা অধিকাংশ যুবক তা নোংরা কাজে ব্যবহার করে। তা হলে তা তাদেরকে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা বৈধ নয়। যারা ভাল কাজে ব্যবহার করবে, তাদেরকে ভাড়া দেওয়া যায়। (ইবনে জিবরিন)
মোট কথা নোংরা ও মন্দ কাজে সহযোগিতা করে কোন ব্যবসাই ইসলামে বৈধ নয়। লজ ও হোটেলে বহু যুবক যুবতি এসে রুম ভাড়া নেয়। কিন্তু যদি বুঝা যায় যে, তারা প্রেমিক প্রেমিকা, তাহলে

সুদী ব্যাংকে চাকুরী করা এবং এর সাথে আদান প্রদান করা বৈধ কি?

সুদী ব্যাংকে চাকুরী করা এবং এর সাথে আদান প্রদান করা বৈধ কি?


এতে যে কোন চাকুরী করা হারাম। যেহেতু এতে চাকুরী করার অর্থই হল সূদের উপর সহায়তা করা। অতএব যদি সূদী কারবারের উপর সহায়তা হয়, তাহলে সে (চাকুরে) সহায়ক হিসেবে অভিশাপে শামিল হবে। নবী (সঃ) সুদখোর, সুদদাতা, তার সাক্ষিদাতা ও তার লেখককে অভিসাম্পত করেছেন এবং বলেছেন, “ওরা সবাই সমান।” (মুসলিম ১৫৯৮ নং)
পক্ষান্তরে এ কাজ যদি সুদী কারবারের উপর সহায়ক না হয়, তাহলেও উক্ত কারবারে তার সম্মতি ও মৌন সমর্থন প্রকাশ পায়। তাই সুদী ব্যাংকে কোন প্রকার চাকুরী নেওয়া বৈধ নয়।
অবশ্য প্রয়োজনে ওই ব্যাংকে টাকা জমা রাখায় ক্ষতি নেই--- যদি ওই সমস্ত ব্যাংক ছাড়া টাকা জমা রাখার জন্য আমরা অন্য ভিন্ন কোন নিরাপদ স্থান না পাই। তবে এই শর্তে যে, তা থেকে যেন কেউ সুদ গ্রহণ না করে। যেহেতু সুদ গ্রহণ অবশ্যই হারাম। (ইবনে উসাইমিন)

ব্যাংকের সুদ হারাম। কিন্তু তা কি ব্যাংকেই ছেড়ে দেব, নাকি তুলে নিয়ে কোন কাজে লাগাব? অন্যান্য হারাম মাল থেকে হালাল মালকে পবিত্র করার উপায় কি?

ব্যাংকের সুদ হারাম। কিন্তু তা কি ব্যাংকেই ছেড়ে দেব, নাকি তুলে নিয়ে কোন কাজে লাগাব? অন্যান্য হারাম মাল থেকে হালাল মালকে পবিত্র করার উপায় কি?


ব্যাংকের সুদ ব্যাংকে ছেড়ে দিলে তা অবৈধ পথে অথবা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যয় হতে পারে। সুতরাং তা তুলে নিয়ে নিঃস্ব মানুষদের মাঝে সওয়াবের নিয়ত না রেখে বিতরণ করে দেওয়া কোন জনকল্যাণমূলক কর্মে ব্যয় করা যায়। হারাম উপায়ে উপার্জিত মাল ও তওবার পরে উক্তরূপে ব্যয় করা যায়। ( ইবনে জিবরীন)


ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় বিক্রয় বৈধ কি?


কারবারের শেয়ার হলে বৈধ নয়। যেহেতু ইসলামে সুদ বৈধ নয়। (ইবনে জিবরীন)

সূদী ব্যাংকে টাকা রাখা বৈধ কি?


কোন সুদী ব্যাংকে টাকা রাখা বৈধ নয়। বরং সুদী ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কোন কারবারই বৈধ নয়। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেন,
“সৎ কাজ ও আত্নসংযমে তোমরা পরস্পর সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনের  কাজে একে অন্যের সাহায্য করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর।”  (মায়িদাহঃ ২)
কিন্তু ইসলামী ব্যাংক না থাকলে মানুষ টাকার হিফাজতের জন্য রাখতে বাধ্য হলে সে কথা ভিন্ন।

কোন কোন ভাউচারে লেখা থাকে, ‘বিক্রিত পণ্য পরিবর্তন যোগ্য ও ফেরত যোগ্য নয়।’ শরীয়তের বিধানে এটা কি ঠিক?

কোন কোন ভাউচারে লেখা থাকে, ‘বিক্রিত পণ্য পরিবর্তন যোগ্য ও ফেরত যোগ্য নয়।’ শরীয়তের বিধানে এটা কি ঠিক?


উক্ত শর্ত লাগিয়ে বিক্রেতার পণ্য বিক্রয়  করা অথবা বিক্রয়ের সময় ক্রেতার উপর উক্ত শর্ত আরোপ করা সঠিক নয়। যেহেতু এতে ক্রেতা ধোঁকা খেতে পারে। এর ফলে ত্রুটিপূর্ণ পণ্য গ্রহণ করতে সে বাধ্য হয়, ফলে সে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্রেতা পূর্ণ মূল্য দিয়ে একটি ত্রুটিমুক্ত পণ্য পেতে চায়। কিন্তু পরবর্তিতে দেখা যায় তা ত্রুটিপূর্ণ। সুতরাং তার অধিকার আছে, সে তার পরিবর্তে অন্য পণ্য গ্রহণ করবে অথবা মূল্য ফিরিয়ে নেবে। (লাজনাহ দায়েমাহ)

টেলিফোন-কেবিনের তরফ থেকে পুরষ্কার দেওয়া হয়। সে পুরষ্কার গ্রহণ করা বৈধ কি?

টেলিফোন-কেবিনের তরফ থেকে পুরষ্কার দেওয়া হয়। সে পুরষ্কার গ্রহণ করা বৈধ কি?


টেলিফোন-কেবিন বা এই শ্রেণীর কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে পুরষ্কার প্রদানের উদ্দেশ্য হল নিজের দিকে বেশি বেশি গ্রাহক আকর্ষণ করা। যাতে তার ব্যবসা  বেশি চলে এবং লাভও প্রচুর হয়। আসলে এটি জুয়ার পর্যায়ভুক্ত। এতে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হয়, লভ দেখিয়ে বাতিল উপায়ে মানুষের অর্থ ভক্ষণ করা হয় এবং অন্য ব্যবসায়ী তথা গ্রাহকদের মনে হিংসা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলা হয়। (ইবনে বাজ)
মহান আল্লাহ বলেছেন,
“হে বিশ্বাসীগণ !  মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা বেদী ও ভাগ্য নির্ণয়ক শর ঘৃণ্য বস্তু শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারে। শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ও নামাযের বাধা দিতে চায়! অতএব তোমরা কি নিবৃত্ত হবে না ?” (মায়িদাহঃ ৯০-৯১)
“হে বিশ্বাসীগণ!  তোমরা একে অন্যের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করে না। তবে তোমাদের পরস্পর সম্মতিক্রমে ব্যবসার মাধ্যমে (গ্রহণ করলে তা বৈধ)। (নিসাঃ ২৯)

এক ব্যাক্তি গাড়ি কিনবে। সে এক গাড়ির ডিলারের কাছে গেল। কিন্তু তার কাছে সেই গাড়ি নেই, যা সে কিনবে। যোগাযোগের মাধ্যমে অন্য ডিলারের কাছ থেকে তাকে গাড়ি নিয়ে দিল নগদ ১ লক্ষ টাকা দামে। তারপর সে তার নিকট থেকে কিস্তি চুক্তিতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিল। কিস্তি দিয়ে অতিরিক্ত ওই ২০ হাজার টাকা খাওয়া কি ওই ডিলারের জন্য হালাল?

এক ব্যাক্তি গাড়ি কিনবে। সে এক গাড়ির ডিলারের কাছে গেল। কিন্তু তার কাছে সেই গাড়ি নেই, যা সে কিনবে। যোগাযোগের মাধ্যমে অন্য ডিলারের কাছ থেকে তাকে গাড়ি নিয়ে দিল নগদ ১ লক্ষ টাকা দামে। তারপর সে তার নিকট থেকে কিস্তি চুক্তিতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিল। কিস্তি দিয়ে অতিরিক্ত ওই ২০ হাজার টাকা খাওয়া কি ওই ডিলারের জন্য হালাল?

ওই ২০ হাজার টাকা হালাল নয়। কারণ তা সুদ। যেহেতু তা এক লক্ষ ধার দিয়ে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেওয়ার মতোই। পক্ষান্তরে ওই ডিলার যদি ওই গাড়ি কিনে নিজের শো রুমে রেখে ওই ক্রেতাকে কিস্তিতে ওই দামেই বিক্রি করত, তাহলে সুদ হতো না। (ইবনে উসাইমিন)

কোন কাফেরকে ইসলামে নিষিদ্ধ খাবার খেতে দেয়া বৈধ কি?

কোন কাফেরকে ইসলামে নিষিদ্ধ খাবার খেতে দেয়া বৈধ কি?

সহকর্মী বা কার্যক্ষেত্রে কোন অমুসলিমকে এমন জিনিস উপহার বা পানাহার করতে দেয়া বৈধ নয়, যা তাদের ধর্মে বৈধ হলেও ইসলামে অবৈধ। যেমন কোন কাজ করার সময় লেবার কে মদ বা বিড়ি সিগারেট পেশ করাও অবৈধ। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ  ১/১১০

কোন কাফের দাওয়াত দিলে খাওয়া এবং তাদের প্রস্তুতকৃত খাদ্য খাওয়া বৈধও কি?

কোন কাফের দাওয়াত দিলে খাওয়া বৈধ কি?

কোন কাফেরের দাওয়াতে হালাল খাদ্য খাওয়া অবৈধ না। আল্লাহর ওয়াস্তে তার মনকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য খাওয়া যায়। আমাদের আদর্শ নবী কাফেরদের দাওয়াতে তাদের তৈরি হালাল খাদ্য খেয়েছেন। অবশ্য তাদের পূজা (তদনুরূপ মাজারিদের উরস) উপলক্ষে প্রস্তুতকৃত খাদ্য, মূর্তি বা মাজারে উৎসর্গকৃত খাদ্য, ঠাকুরের প্রসাদ, মাজারের তবরুক ইত্যাদি খাওয়া বৈধ নয়। যেহেতু তাতে শিরকে মৌন সম্মতি ও সমর্থন প্রকাশ পায়।

(মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্য্যাহ ২৬/১০৯,২৮/৮২, ৮৪)

কাফেরদের প্রস্তুতকৃত খাদ্য খাওয়া বৈধও কি?

কাফেরদের প্রস্তুতকৃত খাদ্য ও পানীয় খাওয়া আবৈধ নয়। যেমন তাদের প্রস্তুত, সেলাই ও ধৌত করা কাপড় ব্যবহার করা বৈধ। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ  ১/২০০)

খাওয়ার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ এর উপর ‘রাহমানির রাহীম’ যোগ করা বিধয়ে কি?

খাওয়ার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ এর উপর ‘রাহমানির রাহীম’ যোগ করা বিধয়ে কি?

অনেকে বলছেন, যোগ করে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলা উত্তম। কিন্তু মহানবী (সঃ) এর সুন্নতই সবচেয়ে উত্তম। তিনি কেবল ‘বিসমিল্লাহ’ বলারই নির্দেশ নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন আহার করবে, সে যেন শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে। যদি শুরুতে তা ভুলে যায়, তাহলে সে যেন ‘বিসমিল্লাহি  আওয়াল্লাহু অ আখেরাহ।” (তিরমিজি ১৮৫৭ নং) (আলবানী)

মাছ মারা গিয়ে পানির উপর ভেসে থাকলে তা খাওয়া বৈধ কি না?

মাছ মারা গিয়ে পানির উপর ভেসে থাকলে তা খাওয়া বৈধ কি না?

মহানবী (সঃ) বলেছেন, “সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং তার মৃত হালাল।” (আহমাদ, সুনান আরবাআহ প্রমুখ, সিলসিলাহ সহিহাহ ৪৮০ নং) এই হাদিস থেকে এই কথা বুঝা যায় যে, মাছ মারা গিয়ে পানির উপর ভেসে উঠলেও তা হালাল। পক্ষান্তরে মাছ মরে গিয়ে পানির উপর ভেসে উঠলে তা খাওয়া নিষেধ হওয়ার ব্যাপারে হাদিস সহিহ নয়। (সিলসিলাহ সহিহাহ ১/৮৬৪) বরং পাঁইটে ভাসা আম্বর মাছ সাহাবাদের খাওয়ার ব্যাপারে ঘটনা হাদিসে প্রসিদ্ধ। আর তারা নিরুপায় ছিলেন বলেই নয়, যেহেতু মহানবী (সঃ) ও সেই মাছের কিছু অংশ খেয়েছিলেন।

চামচ দিয়ে খাওয়া কি সুন্নত বিরোধী? ঘোড়ার গোশত খাওয়া বৈধ কি?

চামচ দিয়ে খাওয়া কি সুন্নত বিরোধী?

মহানবী (সঃ) তিনটি আঙ্গুল যোগে খেতেন। কিন্তু চামচ লাগিয়ে খাওয়া অবৈধ নয়। যেহেতু তা শরই ব্যাপার নয়, বরং তা পার্থিব ব্যবহারিক ব্যাপার। যেমন আধুনিক মাধ্যম বাস-ট্রেন, সাইকেল-গাড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করা আবৈধ নয়। (আলবানী )

ঘোড়ার গোশত খাওয়া বৈধ কি?

সহিহ হাদিসের মতে ঘোড়ার গোশত হালাল। হানাফি মাজহাবের বড় ইমামগণও হালাল বলছেন। আবু জাফর ত্বাহাবি হালাল হওয়ার কথাই প্রাধান্য দিয়েছেন। যেহেতু হারাম হওয়ার দলিলে হাদিস সহিহ নয়। (আলবানী)

দাঁড়িয়ে পানাহার করা কি হারাম?

দাঁড়িয়ে পানাহার করা কি হারাম?

দাঁড়িয়ে পানাহার করা হারাম। যেহেতু আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ যেন দাঁড়িয়ে পান না করে। কেউ ভুলে গিয়ে পান করে থাকলে সে যেন তা বমি করে ফেলে।” (মুসলিম ২০২৬  )

আনাস (রাঃ) বলেন, ‘নবী (সাঃ) নিষেধ করেছেন যে, কোন লোক যেন দাঁড়িয়ে পান না করে।’ আনাস (রাঃ) কে দাঁড়িয়ে খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেসা করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা তো আরও খারাপ ও আরও নোংরা।’ (মুসলিম ২০২৪ নং)

হাদিসে দাঁড়িয়ে পান করার ব্যাপারে নবী (সাঃ) ধমক দিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন, “(তুমি দাঁড়িয়ে পান করলে) তোমার সাথে শয়তান পান করেছে।”

অবশ্য দাঁড়িয়ে পান বৈধ হওয়ার ব্যাপারেও হাদিস বর্ণিত হয়েছে। (বুখারি ১৬৩৭, ৫৬১৫, মুসলিম ২০২৭, ইবনে মাজাহ ৩৩০১ নং প্রমুখ) সুতরাং বসার জায়গা না থাকলে অথবা অন্য কোন অসুবিধায় বা প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে পানাহার করা হারাম নয়। (আলবানি, সিঃ সহিহাহ ১৭৫ নং)

পরিবেশন করার সময় বুজুর্গকে আগে দিতে হবে, নাকি ডান দিক থেকে শুরু করতে হবে?

ডান দিক থেকেই শুরু করতে হবে। অবশ্য বুজুর্গ বা যে চেয়ে খেতে চাইবে তাকে আগে দিতে হবে। (আলবানী, সিসিঃ ১৭৭১ নং)

কোন গোশতের ব্যাপারে ‘ঠিকমত জবেহ করা হয়েছে কি না’ - এই সন্দেহ হলে বাড়িওয়ালা অথবা হোটেল মালিককে জিজ্ঞাসা করা কি জরুরী? নাকি জিজ্ঞাসা না করেও খাওয়া যায়?

কোন গোশতের ব্যাপারে ‘ঠিকমত জবেহ করা হয়েছে কি না’ - এই সন্দেহ হলে বাড়িওয়ালা অথবা হোটেল মালিককে জিজ্ঞাসা করা কি জরুরী? নাকি জিজ্ঞাসা না করেও খাওয়া যায়?

যদি প্রবল ধারনায় জানা যায় যে, জবেহকারী ঠিকমত জবেহ করেছে, তাহলে জিজ্ঞাসা করা বিধেয় নয়। যেহেতু মহানবী (সঃ) ইয়াহুদিদের জবেহ করা ছাগলের গোশত খেয়েছেন এবং জিজ্ঞাসাও করেননি যে, তা ঠিকভাবে জবেহ করা হয়েছে কি না? (বুখারি ২৬১৭, ২০৬৯, ২৫০৮, মুসলিম ২১৯০ নং)

একদা একদল লোক নবী (সঃ) কে জিজ্ঞেসা করল, ‘এক নও মুসলিম সম্প্রদায় আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানি না যে, তার জবেহকালে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে কি না।’ তিনি বললেন, “তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তা ভক্ষণ কর।” (বুখারি ২০৫৭, ৫৫০৭ নং)

উক্ত হাদিসে নবী (সঃ) তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে সন্দেহ দূরীভূত করতে নির্দেশ দেননি। এমন নির্দেশ হলে নিশ্চয় মানুষ বড় সমস্যায় পতিত হতো।  (ইবনে উসাইমিন)

অমুসলিমদের জবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ কি?

অমুসলিমদের জবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ কি?

অমুসলিমদের জবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ নয়। তবে তাদের মধ্যে আহলে কিতাব (ইয়াহুদি-খ্রিস্টান) দের জবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া হালাল, যদি জানা যায় যে, তারা আল্লাহর নাম নিয়ে ছুরি দ্বারা যথানিয়মে জবেহ করে। পক্ষান্তরে যদি জানা যায় যে, তারা জবেহর সময় আল্লাহর নাম নেয় না, অথবা কারেন্টের শক দিয়ে হত্যা করে, অথবা গুলি মেরে হত্যা করে, অথবা গরম পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে, যাতে গোশতের ভিতরে রক্ত জমা থেকে তার ওজন বেশি হয় এবং দেখতেও লোভনীয় ভাল গোশত হয়, তাহলে ওই গোশত খাওয়া হালাল নয়। (ইবনে জিবরীন )

প্রকাশ থাকে যে, ‘মুসলিম’ নামধারী কোন নাস্তিক, কাফের বা মুশরিকের জবেহ করা পশু হালাল নয়। মাজার, কবূরী এবং মতান্তরে কোন বেনামাজির হাতে জবেহ করা পশুর গোশত হালাল নয়। বৈধ নয় কোন ছোট শিশু, নেশাগ্রস্ত বা পাগলা ব্যক্তির জবেহ।

বিড়ি সিগারেট হারাম হওয়ার স্পষ্ট দলীল শরীয়তে আছে কি? না থাকলে তা হারাম হয় কিভাবে?

বিড়ি সিগারেট হারাম হওয়ার স্পষ্ট দলীল শরীয়তে আছে কি? না থাকলে তা হারাম হয় কিভাবে?

শরীয়তের বিধানের সকল কিছুর স্পষ্ট দলীল নেই। আর না থাকলে কোন জিনিস যে হালাল, তা নয়। শরীয়তের স্পষ্ট উক্তিসমুহ থেকে ফকীহগন এমন কিছু নীতি নির্ণয় করেন, যার দ্বারা বলা যায় কোনটা হালাল, আর কোনটা হারাম। যে সকল নীতির মাধ্যমে বিড়ি-সিগারেটকে হারাম করা হয়, তার কিছু নিম্নরুপঃ-

(ক) এতে রয়েছে অনর্থক অর্থ অপচয়। আর ইসলামে অপচয় হারাম।
(খ) এতে রয়েছে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি। আর যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, ইসলামে তা হারাম।
(গ) বেশি পরিমাণ পান করলে, তাতে  জ্ঞানশূন্যতা আসতে পারে। আর যাতে নেশা, মাদকতা ও জ্ঞানশূন্যতা আসে, ইসলামে তা হারাম।

(ঘ) এতে দুর্গন্ধ আছে। এর দুর্গন্ধে অধূমপায়ীরা কষ্ট পায়। সুতরাং তা পবিত্র জিনিস নয়। আর ইসলাম পবিত্র জিনিস খাওয়াকে হালাল এবং অপবিত্র জিনিস খাওয়াকে হারাম ঘোষণা করেছে।

আমি কসম করে তা ভেঙ্গে ফেলেছি। এখন তার কাফফারায় তিনটি রোজা রাখলে যথেষ্ট হবে কি?

আমি কসম করে তা ভেঙ্গে ফেলেছি। এখন তার কাফফারায় তিনটি রোজা রাখলে যথেষ্ট হবে কি?

দশজন মিসকিনকে বস্ত্র দান অথবা খাদ্য দান করার সামর্থ্য থাকলে রোজা করা যথেষ্ট নয়। মহান আল্লাহ বলেছেন,

“আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃত ভাবে কর, সেই সকলের জন্য তিনি তোমাদের দায়ী করেবেন। অতঃপর তার কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হল, দশজন দরিদ্রকে মধ্যম ধরনের খাদ্য দান করা, যা তোমরা তোমাদের পরিজনদের খেতে দাও, অথবা তাদেরকে বস্ত্র দান কর, কিংবা একটি দাস মুক্ত করা। কিন্তু যার (এ সবে) সামর্থ্য নেই, তার জন্য তিনদিন রোজা পালন করা। তোমরা শপথ করলে এটিই হল তোমাদের শপথের প্রায়শ্চিত্ত। তোমরা তোমাদের শপথ রক্ষা কর। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তার নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। (মায়িদাহঃ ৮৯)

খাদ্য দানে দশজনকে এক বেলা পেট ভরে খাইয়ে দিলেই যথেষ্ট। নচেৎ প্রত্যেককে সওয়া এক কিলো করে চাল দিলেও চলবে। সাড়ে বার কিলো চাল দশজন থেকে কম মিসকিনকে দিলেও চলবে।

সউদি আসার আগে আমি মানত করেছি, দেশে ফিরে গিয়ে অমুক মাজারে একটি খাসি দেব। এখন জানতে পারছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে মানত করা শিরক। এখন আমি কি করতে পারি?

সউদি আসার আগে আমি মানত করেছি, দেশে ফিরে গিয়ে অমুক মাজারে একটি খাসি দেব। এখন জানতে পারছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে মানত করা শিরক। এখন আমি কি করতে পারি?

কোন অবৈধ মানত পূর্ণ করা বৈধ নয়। তার বদলে কসমের কাফফারা দেওয়া জরুরী। অর্থাৎ একটি দাস মুক্তি করা অথবা দশ মিসকিন কে খাদ্য বা বস্ত্র দান করা। যদি এ সবের শক্তি না থাকে, তাহলে তিনটি রোজা রাখা। রাসুল (সঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগত্য করার নযর মানে, সে যেন (তা পূরণ করে) তার অনুগত্য করে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্যতা করার নযর মানে, সে যেন (তা পূরণ না করে এবং ) তার অবাধ্যতা না করে।” (বুখারি, সহিহুল জামে ৬৪৪১) তিনি বলেছেন, “নযরের কাফফারা কসমের কাফফারার মতো।”(মুসলিম)

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ