Monday, December 4, 2017

আমি তাওবা করতে চাই . . কিন্তু ! পেশ কালাম ও ভূমিকা


পেশ কালাম


সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য যিনি অতীব দয়ালু, বেশী বেশী তাওবা কবুলকারী, সঠিক পথের দিশাদাতা, গুনাহ মাফকারী এবং ওযর গ্রহণকারী, কঠিন শাস্তিদাতা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য ইলাহ নেই। তিনি একক এবং তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব এবং তিনিই রুজিদাতা। এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল। মহান আল্লাহ তাঁর প্রতি, তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি এবং তাঁর সমস্ত সাহাবার প্রতি অসংখ্য দরুদ ও সালাম বর্ষণ করুন। অতঃপর:

পাপকে তুচ্ছজ্ঞান করার ভয়াবহতা!

পাপকে তুচ্ছজ্ঞান করার ভয়াবহতা


আপনি জেনে রাখুন (আল্লাহ আপনার প্রতি ও আমার প্রতি দয়া করুন) পরাক্রমশালী আল্লাহ তার বান্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন নিষ্ঠার সাথে তাওবা করার জন্য। তিনি বলেন: ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট নিষ্ঠার সাথে তাওবা কর (প্রত্যাবর্তন কর)।’’ (আত্তাহরীম: ৮)
কেরামান কাতেবীন (ফেরেশতা) আমাদের কারো গুনাহ্ লিখার পূর্বে আল্লাহ আমাদেরকে তাওবার ব্যাপারে অনেক ঢিল দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

কিভাবে তওবা করতে হয় ? তাওবার শর্ত ও ইহার পরিপূরক বিষয় সমুহ। কিভাবে পাপ থেকে বেচে থাকা যায় ?

 

তাওবার শর্ত ও ইহার পরিপূরক বিষয়


তাওবা শব্দটি এক মহান শব্দ। এর অর্থ খুবই গভীর। এমন নয় যা অনেকেই মনে করে থাকেন, মুখে শব্দটি বললাম অতঃপর গুনাহে লিপ্ত থাকলাম। আপনি আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী অনুধাবন করে দেখুন। আল্লাহ্  কি বলছেন:‘‘তোমরা  তোমাদের প্রভূর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। অতঃপর তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন (তাওবা) কর।’’ (সূরা হুদ: ৩)
আয়াতের মধ্যে সকলকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে, অতঃপর তাওবা করতে বলা হয়েছে। সুতরাং তাওবা হচ্ছে ক্ষমা প্রার্থনার পর অতিরিক্ত আলাদা বিষয়।
কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের জন্য অবশ্যই কিছু শর্ত থাকে। আলেম-ওলামাগণ কুরআন ও হাদীস মন্থন করে তাওবার জন্য কতিপয় শর্ত উল্লেখ করেছেন, তা হলো:

মহান তাওবা !

মহান তাওবা


আমরা এখানে এই উম্মতের প্রথম যুগের রাসূলের সাহাবাদের তাওবার ঘটনা উদাহরণ স্বরূপ উল্লেখ করবো।
হযরত বুরায়দা রাযিআল্লাহু তা’আল আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মায়েয ইবনে মালেক আল আসলামী রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার আত্মার উপর জুলুম করেছি, আমি জিনা করেছি। আমি চাই আপনি আমাকে পবিত্র করুন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সম্প্রদায়ের নিকট লোক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন যে, তার মানসিক কোন সমস্যা আছে বলে

কেউ হয়তো বলতে পারেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু কে আমাকে নিশ্চয়তা দেবে যে, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন? আমি সঠিক পথে চলতে চাই কিন্তু আমার মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে, যদি আমি নিশ্চিতভাবে জানতে পারতাম যে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন তাহলে আমি তাওবা করতাম?

তাওবা করলে পূর্বের গুনাহ মাফ হয়ে যায়


কেউ হয়তো বলতে পারেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু কে আমাকে নিশ্চয়তা দেবে যে, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন? আমি সঠিক পথে চলতে চাই কিন্তু আমার মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে, যদি আমি নিশ্চিতভাবে জানতে পারতাম যে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন তাহলে আমি তাওবা করতাম?
আমি তাকে বলবো আপনার ভিতরে যে অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে সে অনুভূতি ইতিপূর্বে রাসূলের সাহাবাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে নিম্নোক্ত দুটি রেওয়ায়েত পড়েন তাহলে অপানার মনের প্রশ্ন আশা করি দূর হয়ে যাবে।
প্রথমত:

আপনি হয়তো আমাকে বলতে পারেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার গুনাহের পরিমাণ অনেক বেশী, যত রকমের গুনাহ আছে আমি তা সবই করেছি। পাপ কামাই করেছি। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, বিগত এত বছরের সব পাপ কি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন?

আল্লাহ কি আমাকে ক্ষমা করবেন?


আপনি হয়তো আমাকে বলতে পারেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার গুনাহের পরিমাণ অনেক বেশী, যত রকমের গুনাহ আছে আমি তা সবই করেছি। পাপ কামাই করেছি। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, বিগত এত বছরের সব পাপ কি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন?
হে সম্মানিত ভাই! আপনাকে আমি বলছি, এটি বিশেষ কোন সমস্যা নয় বরং এটা অনেকেরই সমস্যা যারা তাওবা করতে চায়। একজন যুবকের কথা উদাহরণ স্বরূপ উল্লেখ করতে চাই যে একবার প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল, খুব অল্প বয়স থেকেই সে পাপ কাজ করতে শুরু করে। এখন

একশটি লোক হত্যাকারীর তাওবা!

একশটি লোক হত্যাকারীর তাওবা


হযরত আবু সাঈদ সাদ বিন মালেক বিন সিনান আল খুদরী রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের পূর্বের জাতির একটি লোক নিরানববই জনকে হত্যা করে, এরপর সে সবচেয়ে বড় একজন জ্ঞানী লোকের (আলেমের) খোঁজ করে, তখন তাকে একজন আবেদের কথা বলা হয়। সে তাকে গিয়ে বলে, আমি নিরানববই জন মানুষকে খুন করেছি, আমার তাওবা হবে? সে বলল, না। অতঃপর

আপনি হয়তো বলতে পারেন, যখন আমার দ্বারা পাপ হয়ে যাবে তখন কিভাবে দ্রুত তাওবা করতে পারি? এমন কোন কাজ রয়েছে কি যা পাপ করার সাথে সাথেই করতে পারি?

পাপ করে ফেললে কি করবো?


আপনি হয়তো বলতে পারেন, যখন আমার দ্বারা পাপ হয়ে যাবে তখন কিভাবে দ্রুত তাওবা করতে পারি? এমন কোন কাজ রয়েছে কি যা পাপ করার সাথে সাথেই করতে পারি?
উত্তর: পাপ থেকে বিরত হয়েই দুটি কাজ করতে হবে:
এক: অন্তঃকরণের কাজ হলো অনুতপ্ত হওয়া এবং এই বলে দৃঢ় সংকল্প নেয়া যে, এ ধরণের কাজ আর করবো না। এটি হবে মূলত আল্লাহর ভয়ের ফলে।
দুই: অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কাজ বিভিন্ন প্রকারের নেকীর কাজ করার মাধ্যমে। এর মধ্যে অন্যতম হলো তাওবার নামায। এর দলীল হলো: হযরত আবু বকর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,

আপনি হয়তো বলবেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার সঙ্গী-সাথী খারাপ লোকেরা সর্বত্র আমাকে তাড়া করে চলেছে। তারা আমার মধ্যে সামান্য পরিবর্তনের কথা জেনেই প্রচন্ড চাপ ও আক্রমণ শুরু করেছে এবং আমি নিজেকে খুব অসহায় মনে করছি। এখন আমি কি করবো?

খারাপ লোকেরা আমাকে তাড়া করে চলেছে


আপনি হয়তো বলবেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার সঙ্গী-সাথী খারাপ লোকেরা সর্বত্র আমাকে তাড়া করে চলেছে। তারা আমার মধ্যে সামান্য পরিবর্তনের কথা জেনেই প্রচন্ড চাপ ও আক্রমণ শুরু করেছে এবং আমি নিজেকে খুব অসহায় মনে করছি। এখন আমি কি করবো?
আমি আপনাকে বলছি, আপনি সবর (ধৈর্যধারণ) করুন। এটিই হচ্ছে

আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার পুরাতন বন্ধুরা আমাকে হুমকি দিচ্ছে, তারা আমার কুকীর্তি মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিবে এবং আমার গোপনীয় কার্যক্রম প্রকাশ করে দিবে। তাদের নিকট প্রমাণপত্র ও ছবি রয়েছে। আমি আমার মর্যাদার ব্যাপারে ভীত, শংকিত। এখন কি করবো ?

তাওবা করা থেকে ফিরানোর হুমকি


আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার পুরাতন বন্ধুরা আমাকে হুমকি দিচ্ছে, তারা  আমার কুকীর্তি মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিবে এবং আমার গোপনীয় কার্যক্রম প্রকাশ করে দিবে। তাদের নিকট প্রমাণপত্র ও ছবি রয়েছে। আমি আমার মর্যাদার ব্যাপারে ভীত, শংকিত।
আমি বলছি, আপনি শয়তানদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করুন। নিশ্চয় শয়তানদের চক্রান্ত খুবই দুর্বল। যারা আজ আপনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ এসব শয়তান ও তার দোসরদের চাপ থেমে যাবে অতঃপর খুব শীঘ্রই তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং মুমিনের ধৈর্য ও দৃঢ়তার সামনে তারা পরাজিত হবেই।
আপনি নিশ্চিত থাকুন যে, আপনি যদি তাদের কথা মত চলেন, তাদের কাছে মাথা নত করেন তাহলে তারা আরো বেশী বেশী প্রমাণ আপনার বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চেষ্টা করবে। সুতরাং পূর্বে ও পরে সর্বাবস্থায় আপনিই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অতএব তাদের অনুসরণ না করে আল্লাহর সাহায্য চান এবং বলুন:
‘‘আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম অভিভাবক।’’ (সূরা আলে ইমরান: ১৭৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতির আশংকা করতেন তখন বলতেন:

পাপ আমার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে! কি করবো ?

পাপ আমার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে


আপনি হয়তো বলতে পারেন, আমি অনেক পাপ করেছি এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। কিন্তু আমার পাপ আমাকে তাড়া করে চলেছে। যখন এসব পাপের কথা মনে পড়ে তখন আমার দম বন্ধ হয়ে আসে, আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে, আরামদায়ক বিছানাও কষ্টদায়ক মনে হয়, চিন্তায় রাত কাটে না, কোন কিছুতেই শান্তি পাই না, আমার শান্তির পথ কোন দিকে?
হে মুসলিম ভাই! আপনাকে বলছি, এই অনুভূতিই সত্যিকার তাওবারই প্রমাণ বহন করে এবং এটিই হলো প্রকৃত পক্ষে অনুতপ্ত হওয়া। অনুতপ্ত হওয়াটাই হলো তাওবা। সুতরাং যা ঘটে গেছে, সে ব্যাপারে আশাবাদী হোন যে, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং আল্লাহর রহমতের ব্যাপারে নিরাশ হবেন না, তার করুণার ব্যাপারে হতাশ হবেন না। মহান আল্লাহ বলেন:

আমি কি পাপের স্বীকারোক্তি করবো?

আমি কি পাপের স্বীকারোক্তি করবো?


একজন চিন্তিত স্বরে প্রশ্ন করলো, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার উপর কি এটা ওয়াজিব যে, আমি গিয়ে স্বীকার করবো যা কিছু পাপ করেছি এবং আমার তাওবার কি এটা শর্ত যে, আমি বিচারকের সামনে গিয়ে কোর্টে দাঁড়িয়ে সব কিছু স্বীকার করবো, আমার উপর শাস্তি বিধান কার্যকর করতে বলবো?
আমি বলবো যে ইতিপূর্বে  মায়েয ও জনৈকা মহিলা এবং সেই ব্যক্তির ঘটনা যে এক মহিলাকে বাগানের ভিতর একাকী পেয়ে চুমু খেয়েছিল এর অর্থই বা কি?
হে মুসলিম ভাই!

তাওবার মর্যাদা

তাওবার মর্যাদা


আল্লাহ খুব খুশী হন যখন তাঁর কোন বান্দা তাওবা করে (তার দিকে প্রত্যাবর্তন করে)। আল্লাহ খুশী হলে আর কোন কল্যাণের ঘাটতি হবে না। ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ খুব খুশী হন যখন কোন বান্দা তাঁর দিকে তাওবা (প্রত্যাবর্তন) করে। সেই ব্যক্তির চেয়েও বেশী খুশী হন যে এক মরুভূমিতে সফর করছিল। সে এক স্থানে বিশ্রামের জন্য একটু নামে। ওর সওয়ারীর উপর তার খানাপিনা ছিল। সে গাছের একটু ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ে। যখন জেগে উঠে দেখে যে,

তাওবাকারীর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাত্ওয়া [প্রশ্ন নং ১] আমি পাপ করার পর তাওবা করি অতঃপর আমার কু-প্রবৃত্তি আমার উপর বিজয়ী হয়, যার ফলে আবার পাপের পথে ফিরে আসি, এর ফলে কি আমার পূর্বের তাওবা বাতিল হয়ে যাবে এবং আমার পূর্বের ও পরের গুনাহ বাকী রয়ে যাবে?

 তাওবাকারীর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাত্ওয়া


আপনি হয়তো বলতে পারেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমি তাওবার হুকুম আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞ। আমার মনে কতিপয় গুনাহের ব্যাপারে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক হয় এর সঠিক তাওবার ব্যাপারে, আল্লাহর যে সব হক নষ্ট করেছি তা পূরণ করার ব্যাপারে এবং বান্দাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে যা আমি ইতিপূর্বে অন্যায়ভাবে গ্রহণ করেছি। এসব প্রশ্নের উত্তর কি আছে?
আল্লাহর পানে প্রত্যাবর্তনকারী ব্যক্তি! আপনার জন্য এসব প্রশ্নের উত্তর উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ।

 

[প্রশ্ন নং ১] আমি পাপ করার পর তাওবা করি অতঃপর আমার কু-প্রবৃত্তি আমার উপর বিজয়ী হয়, যার ফলে আবার পাপের পথে ফিরে আসি, এর ফলে কি আমার পূর্বের তাওবা বাতিল হয়ে যাবে এবং আমার পূর্বের ও পরের গুনাহ বাকী রয়ে যাবে?


উত্তর: তাওবা সঠিক হওয়ার জন্য শর্ত হলো পাপ থেকে পূর্ণভাবে মুক্ত হওয়া এবং এজন্য অনুতপ্ত হওয়া, পুনরায় আর তা না করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হওয়া। এরপর যদি আবার কেউ পাপ করে ফেলে তাহলে সে যেন নতুনভাবে পাপ করল, এজন্য

[প্রশ্ন নং ২] একটি গুনাহের তাওবা সঠিক হবে কি অথচ আমি অন্য একটি গুনাহের উপর অটল আছি?

[প্রশ্ন নং ২] একটি গুনাহের তাওবা সঠিক হবে কি অথচ আমি অন্য একটি গুনাহের উপর অটল আছি?


উত্তর: কোন একটি গুনাহের জন্য তাওবা করা ঠিক হবে যদিও সে অন্য গুনাহে লিপ্ত থাকে, যদি একই ধরণের গুনাহ না হয়ে থাকে এবং তা প্রথম পাপের সাথে সম্পৃক্ত না হয়। উদাহরণ স্বরূপ যদি কেউ সুদ থেকে তাওবা করে কিন্তু মদ্যপান করা থেকে তাওবা না করে, তাহলে সুদ থেকে তার তাওবা করাটা সঠিক হবে এবং এর উল্টোটিও সঠিক হবে। কিন্তু

[প্রশ্ন নং ৩] অতীতে আমি আল্লাহর হক নষ্ট করেছি, নামায পড়িনি, রোজা রাখিনি, জাকাত দেইনি, এখন আমি কি করবো?

[প্রশ্ন নং ৩] অতীতে আমি আল্লাহর হক নষ্ট করেছি, নামায পড়িনি, রোজা রাখিনি, জাকাত দেইনি, এখন আমি কি করবো?


উত্তর: নামায পরিত্যাগ করার ব্যাপারে প্রসিদ্ধ মত হলো, এর কাজা আদায় করতে হবে না। কেননা এর সময় পার হয়ে গেছে এবং তা ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। এর ঘাটতি পূরণ করতে হবে বেশী বেশী তাওবা, এসতেগফার পাঠ করে, বেশী বেশী নফল নামায আদায় করে, আশা করা যায় যে মহান আল্লাহ তা ক্ষমা করে দিবেন।
কিন্তু রোজা ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে কথা হলো, রোজা ভঙ্গের সময় যদি সে মুসলমান থেকে থাকে তাহলে তার প্রতি প্রত্যেক রোজার জন্য একজন করে মিসকিনকে খাবার দেয়া ওয়াজিব হবে এবং

[প্রশ্ন নং ৪] যদি গুনাহ কোন ব্যক্তির হকের ব্যাপারে ঘটে থাকে তাহলে কিভাবে তাওবা হবে?

[প্রশ্ন নং ৪] যদি গুনাহ কোন ব্যক্তির হকের ব্যাপারে ঘটে থাকে তাহলে কিভাবে তাওবা হবে?


উত্তর: এ ব্যাপারে দলীল হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ বাণী:

"مَنْ كَانَتْ عِنْدَهُ مَظْلَمَةٌ لِأَخِيهِ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهَا؛ فَإِنَّهُ لَيْسَ ثَمَّ دِينَارٌ وَلَا دِرْهَمٌ، مِنْ قَبْلِ أَنْ يُؤْخَذَ لِأَخِيهِ مِنْ حَسَنَاتِهِ؛ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ أَخِيهِ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ" (رواه البخاري: ৬৫৩৪)

‘‘কারো উপর তার ভাইয়ের কোন প্রকার দাবি থাকলে সে যেন তাতে থেকে মুক্ত হয়ে যায়। কেননা সেখানে (কিয়ামত দিবসে বা পরকালে) কোন দ্বীনার-দিরহাম (টাকা-পয়সা) থাকবে না। তার অন্যায়ের সমপরিমাণ নেকী তার ভাইয়ের জন্য কেটে নেয়ার আগেই। তার যদি নেকী না থাকে তাহলে

[প্রশ্ন নং ৫] আমি এক ব্যক্তি বা একাধিক ব্যক্তির গীবত করেছি এবং অনেককে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছি অথচ তারা নির্দোষ। এখন তাদেরকে এ বিষয়গুলো অবহিত করে কি ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে? আর যদি তাদেরকে জানানো শর্ত না হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে তাওবা করবো?

[প্রশ্ন নং ৫] আমি এক ব্যক্তি বা একাধিক ব্যক্তির গীবত করেছি এবং অনেককে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছি অথচ তারা নির্দোষ। এখন তাদেরকে এ বিষয়গুলো অবহিত করে কি ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে? আর যদি তাদেরকে জানানো শর্ত না হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে তাওবা করবো?


উত্তর: বিষয়টি নির্ভর করছে এর ভাল ও মন্দ দিকটি নির্ণয় করার উপর। যদি তাদেরকে গীবত করার বিষয়টি জানালে ক্রোধান্বিত না হন বা আপনার প্রতি কোন আক্রোশের সৃষ্টি না হয় তাহলে আপনি সরাসরি বলে ক্ষমা চেয়ে নিবেন। কোন রকমের বিস্তারিত বিষয় উল্লেখ না করে। যেমন হয়তো বললেন, আমি আপনার ব্যাপারে অতীতে ভুল করেছি বা আপনাকে কথার দ্বারা কষ্ট দিয়েছি, এখন আমি আল্লাহর নিকট তাওবা করেছি সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। তাহলে কোন অসুবিধা নেই।
আর যদি

[প্রশ্ন নং ৬] ইচ্ছাকৃত ভাবে নর হত্যাকারী ব্যক্তি কিভাবে তাওবা করবে?

[প্রশ্ন নং ৬] ইচ্ছাকৃত ভাবে নর হত্যাকারী ব্যক্তি কিভাবে তাওবা করবে?


উত্তর: ইচ্ছাকৃত নর হত্যাকারীর উপর তিনটি হক বর্তায়:
আল্লাহর, নিহত ব্যক্তির ও ওয়ারিসদের হক।
আল্লাহর হক একমাত্র তাওবার দ্বারা আদায় করতে হবে। ওয়ারিসদের হক হলো তাদের নিকট নিজেকে সমর্পণ করতে হবে যেন তারা তার থেকে বদলা নিতে সমর্থ হয় (যদি শরয়ী বিধান কোন দেশে জারি থাকে)। হয় কেসাস নিয়ে অথবা মুক্তিপণ নিয়ে বা ক্ষমা করে দিয়ে। এরপর বাকী থাকে নিহত ব্যক্তির অধিকার যা এ দুনিয়ায় পূরণ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে

[প্রশ্ন নং ৭] চোর কিভাবে তাওবা করবে?

[প্রশ্ন নং ৭] চোর কিভাবে তাওবা করবে?


উত্তর: যদি চুরি করা জিনিস তার কাছে থাকে তাহলে ফেরত দিবে। আর যদি নষ্ট হয়ে থাকে তাহলে তা ব্যবহার করার জন্য বা সময়ের কারণে মূল্যমান কমে গিয়ে থাকে তাহলে তার ক্ষতিপূরণ দেয়া ওয়াজিব, মালিক যদি না তাকে ক্ষমা করে দিয়ে থাকে। আর মালিক যদি ক্ষমা করে দেয় তাহলে কিছুই লাগবে না। সুতরাং

[প্রশ্ন নং ৮] আমি খুবই বিব্রতবোধ করি যখন মুখোমুখি হই যাদের কিছু চুরি করেছি, আমি তাদেরকে প্রকাশ্য ভাবে বলতেও পারি না এবং ক্ষমাও চাইতে পারি না, এখন আমি কি করবো?

[প্রশ্ন নং ৮] আমি খুবই বিব্রতবোধ করি যখন মুখোমুখি হই যাদের কিছু চুরি করেছি, আমি তাদেরকে প্রকাশ্য ভাবে বলতেও পারি না এবং ক্ষমাও চাইতে পারি না, এখন আমি কি করবো?


উত্তর: আপনার জন্য এমন কোন পন্থা অন্বেষণ করতে অসুবিধে নেই যার দ্বারা আপনি এই বিব্রতকর অবস্থা থেকে বাঁচতে পারেন, যেমন হয়তো অন্য কোন লোকের মাধ্যমে তাদের কাছে তাদের প্রাপ্য ফেরত পাঠালেন এবং নাম উল্লেখ করতে নিষেধ করলেন অথবা কৌশল অবলম্বন করলেন এবং বললেন, আপনার এসব হক এক ব্যক্তির নিকট ছিল কিন্তু

[প্রশ্ন নং ৯] আমি আমার আববার এবং নিকটাত্মীয়ের পকেট থেকে গোপনে টাকা পয়সা সরিয়ে নিতাম। আমি এখন তাওবা করতে চাই। আমি সঠিক ভাবে বলতে পারবো না যে, মোট কত টাকা নিয়েছি। আমি এদের সামনে যেতে খুবই বিব্রতবোধ করছি?

[প্রশ্ন নং ৯] আমি আমার আববার এবং নিকটাত্মীয়ের পকেট থেকে গোপনে টাকা পয়সা সরিয়ে নিতাম। আমি এখন তাওবা করতে চাই। আমি সঠিক ভাবে বলতে পারবো না যে, মোট কত টাকা নিয়েছি। আমি এদের সামনে যেতে খুবই বিব্রতবোধ করছি?


উত্তর: আপনি মোটামুটি একটা অনুমান করে নিবেন এবং ধারণা করবেন যে কত হতে পারে। আর আপনি যেমন গোপনে নিয়েছেন তেমনি গোপনে ফেরত দিলে কোন

[প্রশ্ন নং ১০] আমি বিভিন্ন লোকের টাকা পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। যাদের টাকা পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না? অন্য আরেকজন বলে, আমি এক বিদেশী কোম্পানীর কিছু টাকা পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে? তৃতীয় আরেকজন বলে, আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!

[প্রশ্ন নং ১০] আমি বিভিন্ন লোকের টাকা পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। যাদের টাকা পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না? অন্য আরেকজন বলে, আমি এক বিদেশী কোম্পানীর কিছু টাকা পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে? তৃতীয় আরেকজন বলে, আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!


উত্তর: আপনি যথা সম্ভব তাদের ঠিকানা তালাশ করুন। যদি পেয়ে যান তাহলে তাদের প্রাপ্য ফেরত দিবেন। (আলহামদু লিল্লাহ) যদি মালিক মারা গিয়ে থাকে তাহলে তার ওয়ারিসদেরকে ফেরত দিবেন। চেষ্টা করেও যদি তাদেরকে না পান, তাহলে এসব মাল আপনি তাদের নিয়তে দান করে দিবেন। তাদের জন্যই নিয়ত করবেন, যদিও কেউ কাফের হয়ে থাকে। কেননা

[প্রশ্ন নং ১০] আমি বিভিন্ন লোকের টাকা পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। যাদের টাকা পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না? অন্য আরেকজন বলে, আমি এক বিদেশী কোম্পানীর কিছু টাকা পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে? তৃতীয় আরেকজন বলে, আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!

[প্রশ্ন নং ১০] আমি বিভিন্ন লোকের টাকা পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। যাদের টাকা পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না? অন্য আরেকজন বলে, আমি এক বিদেশী কোম্পানীর কিছু টাকা পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে? তৃতীয় আরেকজন বলে, আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!


উত্তর: আপনি যথা সম্ভব তাদের ঠিকানা তালাশ করুন। যদি পেয়ে যান তাহলে তাদের প্রাপ্য ফেরত দিবেন। (আলহামদু লিল্লাহ) যদি মালিক মারা গিয়ে থাকে তাহলে তার ওয়ারিসদেরকে ফেরত দিবেন। চেষ্টা করেও যদি তাদেরকে না পান, তাহলে এসব মাল আপনি তাদের নিয়তে দান করে দিবেন। তাদের জন্যই নিয়ত করবেন, যদিও কেউ কাফের হয়ে থাকে। কেননা

[প্রশ্ন নং ১০] আমি বিভিন্ন লোকের টাকা পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। যাদের টাকা পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না? অন্য আরেকজন বলে, আমি এক বিদেশী কোম্পানীর কিছু টাকা পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে? তৃতীয় আরেকজন বলে, আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!

[প্রশ্ন নং ১০] আমি বিভিন্ন লোকের টাকা পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। যাদের টাকা পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না? অন্য আরেকজন বলে, আমি এক বিদেশী কোম্পানীর কিছু টাকা পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে? তৃতীয় আরেকজন বলে, আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!


উত্তর: আপনি যথা সম্ভব তাদের ঠিকানা তালাশ করুন। যদি পেয়ে যান তাহলে তাদের প্রাপ্য ফেরত দিবেন। (আলহামদু লিল্লাহ) যদি মালিক মারা গিয়ে থাকে তাহলে তার ওয়ারিসদেরকে ফেরত দিবেন। চেষ্টা করেও যদি তাদেরকে না পান, তাহলে এসব মাল আপনি তাদের নিয়তে দান করে দিবেন। তাদের জন্যই নিয়ত করবেন, যদিও কেউ কাফের হয়ে থাকে। কেননা

[প্রশ্ন নং ১১] আমি ইয়াতীমের মাল আত্মসাত করি এবং তা দ্বারা ব্যবসা করে অনেক লাভবান হই। এখন আমি আল্লাহকে ভয় করছি, এ কাজের জন্য অনুতপ্ত, এখন কিভাবে তাওবা করবো?

[প্রশ্ন নং ১১] আমি ইয়াতীমের মাল আত্মসাত করি এবং তা দ্বারা ব্যবসা করে অনেক লাভবান হই। এখন আমি আল্লাহকে ভয় করছি, এ কাজের জন্য অনুতপ্ত, এখন কিভাবে তাওবা করবো?


উত্তর: এ ব্যাপারে আলেম-ওলামারা বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন, এর মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য অভিমত হলো, আপনি মূল সম্পদ ইয়াতীমের নিকট ফেরত দিবেন এ ছাড়াও লাভের অর্ধেক দিয়ে দিবেন। তাহলে ইয়াতীমকে তার মূলধন ফেরত দেয়া হলো এবং

[প্রশ্ন নং ১২] এক ব্যক্তি বিমান বন্দরে চাকুরী করত। তার নিকট বিভিন্ন জনের মালপত্র আসতো। এসব থেকে সে নামধাম সহ কিছু জিনিসপত্র চুরি করে নেয়। এর বেশ কয়েক বছর পর সে তাওবা করে। এখন কি সেই জিনিস ফেরত দিবে, না তার মূল্য, না কি এ ধরণের কিছু ফেরত দিবে? এখানে উল্লেখ্য যে, চুরি করা মাল বর্তমান বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।

[প্রশ্ন নং ১২] এক ব্যক্তি বিমান বন্দরে চাকুরী করত। তার নিকট বিভিন্ন জনের মালপত্র আসতো। এসব থেকে সে নামধাম সহ কিছু জিনিসপত্র চুরি করে নেয়। এর বেশ কয়েক বছর পর সে তাওবা করে। এখন কি সেই জিনিস ফেরত দিবে, না তার মূল্য, না কি এ ধরণের কিছু ফেরত দিবে? এখানে উল্লেখ্য যে, চুরি করা মাল বর্তমান বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।


উত্তর: সেই জিনিসই ফেরত দিবে এর সাথে যোগ করবে মূল্যমান যা ব্যবহার করার জন্য বা সময়ের ব্যবধানে কমেছে। এটার একটা মোটামুটি মূল্য ধরে নিবে যেন নিজের খুব বেশী কষ্ট না হয়। যদি তাকে পাওয়া কষ্টকর হয়ে থাকে তাহলে

[প্রশ্ন নং ১৩] আমার কাছে কিছু সুদের মাল ছিল কিন্তু আমি তা সব খরচ করে ফেলেছি, বর্তমানে কিছুই অবশিষ্ট নেই, এখন তাওবা করছি, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?

[প্রশ্ন নং ১৩] আমার কাছে কিছু সুদের মাল ছিল কিন্তু আমি তা সব খরচ করে ফেলেছি, বর্তমানে কিছুই অবশিষ্ট নেই, এখন তাওবা করছি, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?


উত্তর: আপনাকে খালেস তাওবা করতে হবে। প্রকৃত পক্ষে সুদ হলো খুবই বিপজ্জনক জিনিস। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা’আলা একমাত্র সুদখোরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। আর যেহেতু সুদী মালামাল সব শেষ হয়ে গেছে তাই এ ব্যাপারে

[প্রশ্ন নং ১৪] আমি একটি গাড়ী কিনেছি এর মধ্যে কিছু আছে হালাল উপার্জন আর কিছু হারাম। গাড়ীটি বর্তমানে আমার কাছে রয়েছে।

[প্রশ্ন নং ১৪] আমি একটি গাড়ী কিনেছি এর মধ্যে কিছু আছে হালাল উপার্জন আর কিছু হারাম। গাড়ীটি বর্তমানে আমার কাছে রয়েছে।


উত্তর: যে ব্যক্তি এমন জিনিস কিনল যা বিভক্ত করা সম্ভব নয় যেমন ঘর অথবা গাড়ী, এমন টাকা দিয়ে যার কিছু হালাল এবং কিছু হারাম, তাহলে হারামের সমপরিমাণ মাল সাদকা করে দিবে ঐ মালকে পবিত্র করার জন্য। যদি এই অংশটি হারাম মালেরই হয়ে থাকে তাহলে তা অন্যের অংশই বটে যা তার

[প্রশ্ন নং ১৫] সেই মালের দ্বারা কি করবে যা ধুমপানের সামগ্রীর ব্যবসা থেকে লাভ হয়েছে, তেমনিভাবে যা তার অন্যান্য হালাল মালের সাথে সংমিশ্রণ ঘটে গেছে?

[প্রশ্ন নং ১৫] সেই মালের দ্বারা কি করবে যা ধুমপানের সামগ্রীর ব্যবসা থেকে লাভ হয়েছে, তেমনিভাবে যা তার অন্যান্য হালাল মালের সাথে সংমিশ্রণ ঘটে গেছে?


উত্তর: যে ব্যক্তি হারাম জিনিসের ব্যবসা করে যেমন বাদ্যযন্ত্র, হারাম ক্যাসেটের ব্যবসা, ধুমপানের সামগ্রী ইত্যাদি এবং এর হুকুমও জানে। অতঃপর তাওবা করে, তাহলে এই হারাম ব্যবসার লভ্যাংশ দান হিসেবে নয় বরং তা থেকে নিষ্কৃতি পাবার লক্ষ্যে বিলিয়ে দিবে। কেননা আল্লাহ তা’আলা পবিত্র, তিনি পূত-পবিত্র জিনিস ছাড়া গ্রহণ করেন না।
যদি এই হারাম মাল অন্যান্য হালাল মালের সাথে মিলে যায় যেমন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর যাতে বিভিন্ন হালাল সওদার সাথে কিছু নাজায়েয জিনিসও বিক্রি করা হয়ে থাকে তাহলে

[প্রশ্ন নং ১৬] এক ব্যক্তি ঘুষ নিত। অতঃপর আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করেন। সে এখন সঠিক পথে রয়েছে। সে যেসব ঘুষ নিয়েছে তার কি করবে?

[প্রশ্ন নং ১৬] এক ব্যক্তি ঘুষ নিত। অতঃপর আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করেন। সে এখন সঠিক পথে রয়েছে। সে যেসব ঘুষ নিয়েছে তার কি করবে?


উত্তর: এ ব্যক্তির অবস্থা এ দু’অবস্থার বাইরে নয়:
এক. হয়তো এমন এক ব্যক্তির নিকট থেকে ঘুষ নিয়েছে যিনি বাধ্য হয়ে নিজের হক রক্ষার স্বার্থে একে ঘুষ দিয়েছেন, এক্ষেত্রে ঘুষ গ্রহীতাকে অবশ্যই টাকা ফেরত দিতে হবে যার কাছ থেকে সে ঘুষ নিয়েছে। কেননা সে তাকে বাধ্য করে এ ঘুষ নিয়েছে, এর বিধান হলো জোর করে অর্থ আত্মসাতের হুকুম -এর মত,

[প্রশ্ন নং ১৭] আমি অবৈধ কাজ করে এর বিনিময়ে কিছু টাকা পয়সা গ্রহণ করি, বর্তমানে আমি তাওবা করেছি, এখন কি আমাকে এসব মাল ফেরত দিতে হবে?

[প্রশ্ন নং ১৭] আমি অবৈধ কাজ করে এর বিনিময়ে কিছু টাকা পয়সা গ্রহণ করি, বর্তমানে আমি তাওবা করেছি, এখন কি আমাকে এসব মাল ফেরত দিতে হবে?


উত্তর: যে ব্যক্তি হারাম কাজ করে বা হারাম খিদমত আঞ্জাম দেয় এবং এর বিনিময়ে পয়সা নেয়, যখন সে তাওবা করে আর তার কাছে যদি এসব টাকা পয়সা অবশিষ্ট থাকে তাহলে সে এসব থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। তবে তা যার কাছ থেকে নিয়েছে তাকে ফেরত দিতে হবে না। যেমন জেনাকারিনী জেনার জন্য টাকা পয়সা নিয়েছে সে তা জেনাকারীর নিকট ফেরত দিবে না। গায়ক হারাম গান গেয়ে টাকা নিয়েছে,

[প্রশ্ন নং ১৮] আমাকে একটি বিষয় খুবই উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করছে, তাহলো আমি এক মহিলার সাথে ব্যভিচার করি। এখন কিভাবে তাওবা করবো? অন্য একজন প্রশ্ন করে, আমি বিদেশে গিয়ে কুকর্মে লিপ্ত হই। আমার দ্বারা মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এখন কি সন্তানটি আমার হবে এবং তাকে কি আমি সন্তানের জন্য খরচা-পাতি পাঠাবো?

[প্রশ্ন নং ১৮] আমাকে একটি বিষয় খুবই উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করছে, তাহলো আমি এক মহিলার সাথে ব্যভিচার করি। এখন কিভাবে তাওবা করবো? অন্য একজন প্রশ্ন করে, আমি বিদেশে গিয়ে কুকর্মে লিপ্ত হই। আমার দ্বারা মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এখন কি সন্তানটি আমার হবে এবং তাকে কি আমি সন্তানের জন্য খরচা-পাতি পাঠাবো?


উত্তর: অশ্লীল কাজ সংক্রান্ত অনেক প্রশণমালা আসছে যার জন্য মুসলমানদের উপর জরুরী হয়ে পড়েছে বিষয়টির উপর গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করার এবং কুরআন হাদীস মোতাবেক নিজেদের সংশোধন করার এবং বিশেষ করে দৃষ্টি সংযত করার, নির্জন সাক্ষাৎ না করার এবং বেগানা মহিলাদের সাথে মুসাফাহা না করার আর পরিপূর্ণ শরয়ী পর্দা রক্ষা করে চলার। মেলামেশার বিপজ্জনকতা উপলব্ধি করা এবং কাফেরদের দেশে ভ্রমণে না যাওয়া। মুসলিম পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষা করে চলা, অল্প বয়সেই বিয়ে করা এবং এ ব্যাপারটি কঠোর না করে ফেলা।
যে ব্যক্তি কুকর্ম করেছে সেটি এ দু’অবস্থার বাইরে নয়:

[প্রশ্ন নং ১৯] আমার দ্বারা কুকর্ম সম্পাদিত হয়েছে। এজন্য আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি সে মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হয়েছি। এটা বেশ কয়েক বছর পূর্বের ঘটনা। আমরা উভয়ে খালেস তাওবা করেছি। এখন আমাদের কর্তব্য কি?

[প্রশ্ন নং ১৯] আমার দ্বারা কুকর্ম সম্পাদিত হয়েছে। এজন্য আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি সে মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হয়েছি। এটা বেশ কয়েক বছর পূর্বের ঘটনা। আমরা উভয়ে খালেস তাওবা করেছি। এখন আমাদের কর্তব্য কি?


উত্তর: যখন দু’জনের পক্ষ থেকেই তাওবা হয়েছে এজন্য আপনাদের উভয়কে বিবাহ বন্ধনটা নতুন করে নিতে হবে শরিয়তের শর্ত মোতাবেক ওলী, সাক্ষীর উপস্থিতিতে (যদি এর আগে শরীয়তের শর্ত মোতাবেক বিবাহ না হয়ে থাকে তবেই)। এজন্য জরুরী নয় যে,

[প্রশ্ন নং ২০] একজন মহিলা বলে, সে এক নেককার লোকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সে বিবাহের পূর্বে এমন কিছু কাজ করেছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। এখন তার মনে বিষয়টি সর্বদা পীড়া দিচ্ছে। এখন তার প্রশ্ন, সে কি তার স্বামীকে পূর্বে যা কিছু ঘটেছে তা জানাবে?

[প্রশ্ন নং ২০] একজন মহিলা বলে, সে এক নেককার লোকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সে বিবাহের পূর্বে এমন কিছু কাজ করেছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। এখন তার মনে বিষয়টি সর্বদা পীড়া দিচ্ছে। এখন তার প্রশ্ন, সে কি তার স্বামীকে পূর্বে যা কিছু ঘটেছে তা জানাবে?


উত্তর: স্বামী স্ত্রীর উভয়েরই কেউ অপরকে জানান ওয়াজিব নয় যে, অতীতে সে কি করেছে। কেউ যদি এসব পঙ্কিলতার দ্বারা পরীক্ষিত হয়ে থাকে তাহলে সে যেন তা আল্লাহর ওয়াস্তে গোপন করে। তার জন্য খালেস তাওবাই যথেষ্ট।
তবে কেউ যদি কুমারী মেয়েকে বিবাহ করে অতঃপর প্রকাশিত হয় যে,

[প্রশ্ন নং ২১ ] পুংমৈথুনকারী ব্যক্তি তাওবা করলে তার উপর কি ওয়াজিব হবে?

[প্রশ্ন নং ২১ ] পুংমৈথুনকারী ব্যক্তি তাওবা করলে তার উপর কি ওয়াজিব হবে?


উত্তর: এ কাজ যে করেছে এবং যার সাথে করা হয়েছে উভয়কেই খুব বড় আকারের তাওবা করতে হবে। কেননা এটা জানা যায় যে, পরাক্রমশালী আল্লাহ লুত সম্প্রদায়ের উপর তাদের অপরাধের জঘন্যতার কারণে যত রকমের আযাব নাজিল করেছিলেন তা আর অন্য কোন জাতির উপর নাজিল করেননি।
১. তাদের দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নিয়েছিলেন যার ফলে তারা অন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং

[প্রশ্ন নং ২২] আমি আল্লাহর নিকট তাওবা করেছি। আমার নিকট হারাম জিনিসপত্র রয়েছে যেমন: বাদ্যযন্ত্র, ক্যাসেট, ফ্লিম ইত্যাদি। এসব জিনিস বিক্রি করা কি জায়েয হবে। বিশেষ করে এজন্য যে, এর মূল্য কিন্তু অনেক হবে?

[প্রশ্ন নং ২২] আমি আল্লাহর নিকট তাওবা করেছি। আমার নিকট হারাম জিনিসপত্র রয়েছে যেমন: বাদ্যযন্ত্র, ক্যাসেট, ফ্লিম ইত্যাদি। এসব জিনিস বিক্রি করা কি জায়েয হবে। বিশেষ করে এজন্য যে, এর মূল্য কিন্তু অনেক হবে?


উত্তর: হারাম জিনিস বিক্রি করা হারাম এবং এর মূল্যও হারাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ কোন কিছু হারাম করলে তার মূল্যও হারাম করেছেন।’’ (আবু দাউদ, হাদীসটি সহীহ)
আর আপনি জানেন যে,

[প্রশ্ন নং ২৩] আমি একজন পথভ্রষ্ট মানুষ ছিলাম। ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদ ছড়াতাম এবং বিভিন্ন গল্প লিখার মাধ্যমে ইসলামের বিরুদ্ধে বিষাক্ত বাণী প্রচার করতাম। কবিতার মাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়াতাম। মহান আল্লাহ আমাকে তার বিশেষ রহমতে রক্ষা করেছেন, অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন এবং হেদায়াত দান করেছেন, এখন কিভাবে তাওবা করবো?

[প্রশ্ন নং ২৩] আমি একজন পথভ্রষ্ট মানুষ ছিলাম। ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদ ছড়াতাম এবং বিভিন্ন গল্প লিখার মাধ্যমে ইসলামের বিরুদ্ধে বিষাক্ত বাণী প্রচার করতাম। কবিতার মাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়াতাম। মহান আল্লাহ আমাকে তার বিশেষ রহমতে রক্ষা করেছেন, অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন এবং হেদায়াত দান করেছেন, এখন কিভাবে তাওবা করবো?


উত্তর: এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার উপর বিরাট অনুগ্রহ ও নিয়ামত। এটিই প্রকৃতপক্ষে হেদায়েত। সুতরাং এজন্য আমি আল্লাহর প্রশংসা করছি এবং তার নিকট দু’আ করছি তিনি যেন আপনাকে মজবুত রাখেন এবং আরো বেশী অনুগ্রহ দান করেন। যে ব্যক্তি তার কথা ও কলমের দ্বারা ইসলামের বিরুদ্ধে ভ্রান্ত ধারণা বা বিদআত ও অশ্লীলতা ছড়ায় তাকে অবশ্যই একাজগুলো করতে হবে:

স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বিবিধ প্রশ্ন-উত্তর

স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বিবিধ প্রশ্ন-উত্তর
নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি এবং তাঁর নিকট তাওবা করি; আর আমাদের নফসের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল খারাপি এবং আমাদের সকল প্রকার মন্দ আমল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
                                             
অতঃপর

১ প্রশ্ন: কোনো কোনো স্বর্ণের দোকানদার যারা তাদের নিকট থেকে ক্রয় করতে আগ্রহী এমন গ্রাহকের নিকট থেকে ব্যবহৃত স্বর্ণের বিনিমেয়ে তাদের নিকট রক্ষিত নতুন স্বর্ণের বদ-বদল করে থাকেন এবং তার উপর তৈরি বাবদ বাড়তি পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন— এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

দ্বিতীয় প্রশ্ন: কোনো কোনো স্বর্ণের দোকানদার যারা তাদের নিকট থেকে ক্রয় করতে আগ্রহী এমন গ্রাহকের নিকট থেকে ব্যবহৃত স্বর্ণের বিনিমেয়ে তাদের নিকট রক্ষিত নতুন স্বর্ণের বদ-বদল করে থাকেন এবং তার উপর তৈরি বাবদ বাড়তি পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন— এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?


উত্তর:  আমার নিকট এ প্রশ্ন এবং তার পূর্বের প্রশ্নের মধ্যে আলাদা কোনো পার্থক্য আছে বলে মনে হয় না; সুতরাং

২ প্রশ্ন: অনেক স্বর্ণের দোকানদার ব্যবহৃত (ভাঙ্গাচূরা) স্বর্ণ ক্রয়ের কারবার করে, অতঃপর তা নিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নিকটে যায় এবং সমান সমান ওজনে তৈরি করা নতুন স্বর্ণের দ্বারা তা পরিবর্তন করে নেয়, আর সাথে তারা নতুন স্বর্ণের জন্য তৈরি বাবদ বাড়তি পারিশ্রমিক গ্রহণ করে— এমতাবস্থায় এর বিধান কী হবে?

প্রথম প্রশ্ন: অনেক স্বর্ণের দোকানদার ব্যবহৃত (ভাঙ্গাচূরা) স্বর্ণ ক্রয়ের কারবার করে, অতঃপর তা নিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নিকটে যায় এবং সমান সমান ওজনে তৈরি করা নতুন স্বর্ণের দ্বারা তা পরিবর্তন করে নেয়, আর সাথে তারা নতুন স্বর্ণের জন্য তৈরি বাবদ বাড়তি পারিশ্রমিক গ্রহণ করে— এমতাবস্থায় এর বিধান কী হবে?


উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم و الحمد لله رب العالمين  و الصلاة و السلام على نبينا محمد  و على آله و أصحابه أجمعين .

(রহমান, রহীম আল্লাহর নামে; আর সকল প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য; আর সালাত ও সালাম আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর প্রতি)।
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন:

৩ প্রশ্ন: কোনো কোনো স্বর্ণের দোকানদার বাকিতে স্বর্ণ ক্রয় করে এমন বিশ্বাসে যে, এটা বৈধ এবং তাদের যুক্তি হল— এটা ব্যবসার পণ্যসামগ্রীর অন্তর্ভুক্ত, অথচ এ ব্যাপারে তাদের বড় বড় ব্যবসায়ীদের সাথে যখন পেশ করা হলো যে, এ ধরনের কারবার বৈধ নয়; তখন তারা বলে যে, এ ধরনের লেনদেন বা কারবারের ব্যাপারে আলেমগণের জানা নেই।

তৃতীয় প্রশ্ন: কোনো কোনো স্বর্ণের দোকানদার বাকিতে স্বর্ণ ক্রয় করে এমন বিশ্বাসে যে, এটা বৈধ এবং তাদের যুক্তি হল— এটা ব্যবসার পণ্যসামগ্রীর অন্তর্ভুক্ত, অথচ এ ব্যাপারে তাদের বড় বড় ব্যবসায়ীদের সাথে যখন পেশ করা হলো যে, এ ধরনের কারবার বৈধ নয়; তখন তারা বলে যে, এ ধরনের লেনদেন বা কারবারের ব্যাপারে আলেমগণের জানা নেই।


উত্তর: নিশ্চয় এটি অর্থাৎ দিরহাম তথা মুদ্রার বিনিময়ে বাকিতে স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় করা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম; কারণ, তা ‘রিবায়ে নাসিয়া’ বা বিলম্বজনিত সুদ; আর ‘উবাদা ইবন সামিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: 

৪ প্রশ্ন: কোন কোন স্বর্ণের দোকানদার ব্যবহৃত স্বর্ণের বিক্রেতার উপর তার নিকট থেকে নতুন স্বর্ণ ক্রয় করার জন্য শর্তারোপ করে— এ ক্ষেত্রে হুকুম কী?

চতুর্থ প্রশ্ন: কোন কোন স্বর্ণের দোকানদার ব্যবহৃত স্বর্ণের বিক্রেতার উপর তার নিকট থেকে নতুন স্বর্ণ ক্রয় করার জন্য শর্তারোপ করে— এ ক্ষেত্রে হুকুম কী?


উত্তর: এই ধরনের শর্তারোপ করাও বৈধ নয়; কারণ, এটা কম-বেশি করে স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণের ক্রয়-বিক্রয় করার একটা হীন কৌশল; আর এ ধরনের অপকৌশল ইসলামী শরী‘য়তে নিষিদ্ধ; কেননা, তা এক ধরনের প্রতারণা এবং

৫ প্রশ্ন: কোনো স্বর্ণকার অপর কোনো স্বর্ণকারের কাছ থেকে বিক্রির জন্য স্বর্ণ নিয়ে আসলে সেখানে কি তাকে শব্দ উচ্চারণ করে ওকীল বানাতে হবে? নাকি তাদের মধ্যে প্রচলিত নিয়মে এটা থাকাই যথেষ্ট যে লোকটি তার কাছ থেকে যা গ্রহণ করেছে তা জানা দরেই বিক্রয় করবে?

পঞ্চম প্রশ্ন: কোনো স্বর্ণকার অপর কোনো স্বর্ণকারের কাছ থেকে বিক্রির জন্য স্বর্ণ নিয়ে আসলে সেখানে কি তাকে শব্দ উচ্চারণ করে ওকীল বানাতে হবে? নাকি তাদের মধ্যে প্রচলিত নিয়মে এটা থাকাই যথেষ্ট যে লোকটি তার কাছ থেকে যা গ্রহণ করেছে তা জানা দরেই বিক্রয় করবে?


উত্তর: ওকীল বা প্রতিনিধি বানানো এমন একটি চুক্তি যা বুঝা যায় এমন প্রত্যেক কথা ও কাজ দ্বারা সংঘটিত হয়। সুতরাং যখন দোকানদারগণের মাঝে স্বাভাবিকভাবে প্রচলন থাকে যে, যখন তাদের কারও নিকট ক্রেতা গিয়ে দাঁড়ায় এবং তার নিকট কাঙ্খিত পণ্যটি পাওয়া না যায়, তখন সে তার পাশের দোকানে যায় এবং

৬ প্রশ্ন: সেই ক্ষেত্রে কী বিধান হবে— যখন কোনো ক্রেতা এসে (কোনো দোকান থেকে) স্বর্ণের পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে, অতঃপর শর্ত করে যে, যদি তা ভালো না হয়, তাহলে সে পরিবর্তন করার জন্য অথবা তার মূল্য ফেরত নেওয়ার জন্য তা দোকানে ফিরিয়ে দিবে? আর এ ধরনের পরিস্থিতিতে শরী‘য়তসম্মত পদ্ধতি কী হবে— যেখানে কোনো কোনো ব্যক্তি শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থান করার কারণে তার পক্ষে ঐ দিনে অথবা দ্বিতীয় দিনে দোকানে পুনরায় ফিরে আসা অসম্ভব হয়ে উঠে?

ষষ্ঠ প্রশ্ন: সেই ক্ষেত্রে কী বিধান হবে— যখন কোনো ক্রেতা এসে (কোনো দোকান থেকে) স্বর্ণের পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে, অতঃপর শর্ত করে যে, যদি তা ভালো না হয়, তাহলে সে পরিবর্তন করার জন্য অথবা তার মূল্য ফেরত নেওয়ার জন্য তা দোকানে ফিরিয়ে দিবে? আর এ ধরনের পরিস্থিতিতে শরী‘য়তসম্মত পদ্ধতি কী হবে— যেখানে কোনো কোনো ব্যক্তি শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থান করার কারণে তার পক্ষে ঐ দিনে অথবা দ্বিতীয় দিনে দোকানে পুনরায় ফিরে আসা অসম্ভব হয়ে উঠে?


উত্তর: এইরূপ পরিস্থিতিতে তার জন্য সবচেয়ে উত্তম ও সুন্দর পদ্ধতি হল চুক্তি সম্পন্ন করার আগেই স্বর্ণের পণ্যদ্রব্য নিয়ে তার পরিবারের নিকট চলে যাওয়া; অতঃপর যদি তা পছন্দ হয়, তাহলে সে দোকানদারের নিকট ফিরে আসবে এবং তার সাথে নতুন করে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করবে, আর এটাই হল সবচেয়ে উত্তম।
তবে যখন সে দোকানদারের নিকট থেকে তা ক্রয় করে এবং চুক্তি সম্পন্ন করে, তারপর

৭ ভপ্রশ্ন: সেই ক্ষেত্রে কী বিধান হবে— কোনো কোনো স্বর্ণের দোকানদার ব্যবহার করা সোনা চকচকে থাকলে তা ক্রয় করার পর নতুন সোনার মূল্যে বিক্রি করার জন্য পেশ করে। এ জাতীয় বিক্রয় বৈধ হবে কি; নাকি ক্রেতাকে তা ব্যবহৃত বলে জানিয়ে দেওয়াটা জরুরি হবে; কিংবা তাকে অবহিত করার প্রয়োজন হবে না। কারণ ক্রেতাদের কেউ কেউ এ কথা জিজ্ঞাসা করে না যে, সেটা নতুন না পুরাতন?

সপ্তম প্রশ্ন: সেই ক্ষেত্রে কী বিধান হবে— কোনো কোনো স্বর্ণের দোকানদার ব্যবহার করা সোনা চকচকে থাকলে তা ক্রয় করার পর নতুন সোনার মূল্যে বিক্রি করার জন্য পেশ করে। এ জাতীয় বিক্রয় বৈধ হবে কি; নাকি ক্রেতাকে তা ব্যবহৃত বলে জানিয়ে দেওয়াটা জরুরি হবে; কিংবা তাকে অবহিত করার প্রয়োজন হবে না। কারণ ক্রেতাদের কেউ কেউ এ কথা জিজ্ঞাসা করে না যে, সেটা নতুন না পুরাতন?


উত্তর: এ অবস্থায় বিক্রেতার জন্য আবশ্যক হলো, কল্যাণকামী হওয়া এবং নিজের জন্য যা ভাল মনে করে তার ভাইয়ের জন্যও তাই ভাল মনে করা। আর এটা সর্বজন বিদিত যে, যদি কোনো ব্যক্তি তোমার নিকট এমন কোনো জিনিস বিক্রি করল, যা হালকাভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং তাতে ব্যবহারের কোন চিহ্ন পড়েনি, আর সে তোমার কাছে তা নতুন বলে বিক্রি করেছে, তাহলে তুমি

৮ প্রশ্ন: কোন ব্যক্তি স্বর্ণের কারখানায় গহনা তৈরির জন্য তার স্বর্ণ হস্তান্তর করে, তারপর কখনও কখনও কারখানায় স্বর্ণ গলানোর সময় তার স্বর্ণ অন্যের স্বর্ণের সাথে মিশে যায়, কিন্তু কারখানা থেকে মালিকপক্ষ তার নিকট তা (গহনা) হস্তান্তর করার সময় তার দেয়া স্বর্ণের সম ওজনেই হস্তান্তর করে— এমতাবস্থায় তার বিধান কী হবে?

অষ্টম প্রশ্ন: কোন ব্যক্তি স্বর্ণের কারখানায় গহনা তৈরির জন্য তার স্বর্ণ হস্তান্তর করে, তারপর কখনও কখনও কারখানায় স্বর্ণ গলানোর সময় তার স্বর্ণ অন্যের স্বর্ণের সাথে মিশে যায়, কিন্তু কারখানা থেকে মালিকপক্ষ তার নিকট তা (গহনা) হস্তান্তর করার সময় তার দেয়া স্বর্ণের সম ওজনেই হস্তান্তর করে— এমতাবস্থায় তার বিধান কী হবে?


উত্তর: কারখানার কারিগরের উপর আবশ্যকীয় কর্তব্য হল মানুষের সম্পদসমূহের ক্ষেত্রে একজনের সম্পদ অপরজনের সম্পদের সাথে মিশ্রিত না করা, যখন স্বর্ণের মান বিভিন্ন রকম হয়, তখন প্রত্যেকটিকে পৃথক পৃথক করে রাখা। আর যখন যখন স্বর্ণের মান বিভিন্ন রকম না হয়ে একই

প্রশ্ন: স্বর্ণ হস্তান্তর করার সময় গহনা তৈরির মজুরি দিয়ে দেওয়া কি জরুরি, নাকি আমরা চলমান প্রক্রিয়ায় পরেও তা আদায় করতে পারব?

প্রশ্ন: স্বর্ণ হস্তান্তর করার সময় গহনা তৈরির মজুরি দিয়ে দেওয়া কি জরুরি, নাকি আমরা চলমান প্রক্রিয়ায় পরেও তা আদায় করতে পারব?


উত্তর: মজুরি তখনই দিয়ে দেওয়া জরুরি নয়; কারণ, এ পারিশ্রমিক তো কাজের উপর নির্ভর করবে (স্বর্ণের সাথে নয়)। সুতরাং মজুরি যদি গহনা গ্রহণ করার সময় প্রদান করে, তাহলে তা ভালো, নতুবা

৯ প্রশ্ন: যখন কোন কোন স্বর্ণ ক্রয়কারী ব্যক্তি নতুন স্বর্ণের মূল্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, অতঃপর যখন তার মূল্য সম্পর্কে জানতে পারে, তখন দাঁড়িয়ে তার নিকটে থাকা ব্যবহৃত স্বর্ণ বের করে এবং তা বিক্রি করে দেয়; আর তাকে দিরহাম বা প্রচলিত মুদ্রায় তার মূল্য পরিশোধ করে দেয়ার সময় সে দাঁড়িয়ে যায় এবং নতুন সামগ্রী ক্রয় করে— এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?

নবম প্রশ্ন: যখন কোন কোন স্বর্ণ ক্রয়কারী ব্যক্তি নতুন স্বর্ণের মূল্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, অতঃপর যখন তার মূল্য সম্পর্কে জানতে পারে, তখন দাঁড়িয়ে তার নিকটে থাকা ব্যবহৃত স্বর্ণ বের করে এবং তা বিক্রি করে দেয়; আর তাকে দিরহাম বা প্রচলিত মুদ্রায় তার মূল্য পরিশোধ করে দেয়ার সময় সে দাঁড়িয়ে যায় এবং নতুন সামগ্রী ক্রয় করে— এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?


উত্তর: এটা দোষনীয় নয়, যখন সেখানে পূর্ব থেকেই কোন প্রকার সমঝোতা ও বুঝাপড়া না থাকে; তবে ইমাম আহমদ র. এর মতে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে সে চলে যাবে এবং অন্য জায়গায় অনুসন্ধান করবে, তারপর সেখান থেকে ক্রয় করবে; আর এটা যদি সহজ না হয়, তাহলে

১০ প্রশ্ন: কোনো ব্যক্তি দোকানদারের নিকট স্বর্ণ বিক্রি করল (কিন্তু অর্থ গ্রহণ করেনি), অতঃপর সে দোকানদারের নিকট থেকে অন্য স্বর্ণ ক্রয় করল প্রায় সেই পরিমাণ, যেই পরিমাণ সে তার কাছে বিক্রি করেছে। অতঃপর ক্রেতা ক্রয়কৃত স্বর্ণের মূল্য ঐ অর্থ থেকে পরিশোধ করল যা সে দোকানদারের নিকট বিক্রি করেছিল কিন্তু উক্ত মূল্য গ্রহণ না করে দোকানদারের কাছে রেখে দিয়েছিল। — এমতাবস্থায় তার বিধান কী হবে?

দশম প্রশ্ন: কোনো ব্যক্তি দোকানদারের নিকট স্বর্ণ বিক্রি করল (কিন্তু অর্থ গ্রহণ করেনি), অতঃপর সে দোকানদারের নিকট থেকে অন্য স্বর্ণ ক্রয় করল প্রায় সেই পরিমাণ, যেই পরিমাণ সে তার কাছে বিক্রি করেছে। অতঃপর ক্রেতা ক্রয়কৃত স্বর্ণের মূল্য ঐ অর্থ থেকে পরিশোধ করল যা সে দোকানদারের নিকট বিক্রি করেছিল কিন্তু উক্ত মূল্য গ্রহণ না করে দোকানদারের কাছে রেখে দিয়েছিল। — এমতাবস্থায় তার বিধান কী হবে?


উত্তর: এই ধরনের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয নয়; কেননা, যখন কেউ কোনো জিনিস এমন কোনো মূল্যে বিক্রি করে যে মূল্য ক্রেতা থেকে বিক্রেতা নিজের আয়ত্বে নিয়ে আসে নি, আর সে ঐ মূল্যের বিনিময়ে বিক্রেতার নিকট থেকে এমন কিছু ক্রয় করতে চাচ্ছে যা বাকিতে বিক্রয় করা বৈধ নয়, তখন ইসলামী আইনশাস্ত্রবিদগণের সুস্পষ্ট বক্তব্য হল

১১ প্রশ্ন: যে ব্যক্তি স্বর্ণ ক্রয় করল কিন্তু তার কিছু মূল্য বাকী রাখল এবং বলল: যখন সম্ভব হবে, তখন আমি তোমার মূল্য পরিশোধ করে দিব— এমতাবস্থায় তার বিধান কী হবে?

একাদশ প্রশ্ন: যে ব্যক্তি স্বর্ণ ক্রয় করল কিন্তু তার কিছু মূল্য বাকী রাখল এবং বলল: যখন সম্ভব হবে, তখন আমি তোমার মূল্য পরিশোধ করে দিব— এমতাবস্থায় তার বিধান কী হবে?


উত্তর: এই কাজ বৈধ নয়; আর যখন এ ধরনের কাজ করবে, তখন যেটুকুর বিনিময় গ্রহণ করা হয়েছে ততটুকুর ক্রয়-বিক্রয় শুদ্ধ হবে; আর যেটুকুর বিনিময় গ্রহণ করা হয়নি ততটুকুতে ক্রয়-বিক্রয় বাতিল বলে গণ্য হবে। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: 

১২ প্রশ্ন: সেই ক্ষেত্রে বিধান কী হবে— যে ব্যক্তি স্বর্ণ ক্রয় করল এবং তার উপরই ক্রয়-বিক্রয় শেষ করল, অতঃপর মূল্য পরিশোধ করল এবং মোট মূল্যের কিছু অংশ বাকি থাকল; ফলে সে কি বাকী মূল্য নিয়ে আসার জন্য যে কোনো জায়গায় (যেমন— গাড়ি কিংবা ব্যাংক থেকে নিয়ে আসার জন্য) যাওয়া জায়েয হবে? আর এ ক্ষেত্রে সে কি বাকি মূল্য নিয়ে আসার পরেই স্বর্ণ গ্রহণ করবে? এ ধরনের কাজ ঠিক হবে কিনা, নাকি বাকি মূল্য নিয়ে আসার পরে পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা আবশ্যক হবে?

দ্বাদশ প্রশ্ন: সেই ক্ষেত্রে বিধান কী হবে— যে ব্যক্তি স্বর্ণ ক্রয় করল এবং তার উপরই ক্রয়-বিক্রয় শেষ করল, অতঃপর মূল্য পরিশোধ করল এবং মোট মূল্যের কিছু অংশ বাকি থাকল; ফলে সে কি বাকী মূল্য নিয়ে আসার জন্য যে কোনো জায়গায় (যেমন— গাড়ি কিংবা ব্যাংক থেকে নিয়ে আসার জন্য) যাওয়া জায়েয হবে? আর এ ক্ষেত্রে সে কি বাকি মূল্য নিয়ে আসার পরেই স্বর্ণ গ্রহণ করবে? এ ধরনের কাজ ঠিক হবে কিনা, নাকি বাকি মূল্য নিয়ে আসার পরে পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা আবশ্যক হবে?


উত্তর: সবচেয়ে উত্তম হল বাকি মূল্য নিয়ে আসার পরে চুক্তি নবায়ন করা এবং এতে কোন ক্ষতি নেই, যা চুক্তি সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত শব্দগুলোর পুনরাবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই নয়; তবে দামের হেরফের হলে তারও খেয়াল রাখতে হবে। এমতাবস্থায় যদি

প্রশ্ন: কোন কোন স্বর্ণের দোকানদার স্বর্ণের ব্যবসায়ীর নিকট যায় এবং তার নিকট থেকে কিলোগ্রাম বা অনুরূপ ওজনে নতুন স্বর্ণ গ্রহণ করে, আর এ স্বর্ণের সাথে মূল্যবান পাথরের মিশ্রণ থাকে, চাই সেই পাথর হউক আলমাস নামক দামী পাথর, অথবা যারাকুন বা অন্য কোন পাথর; আর ক্রেতা তাকে (দোকানদারকে) এ কিলোগ্রামের বিনিময়ে সমপরিমাণ ওজনে খাঁটি সোনা প্রদান করে যাতে কোনো প্রকার পাথর নেই; অতঃপর বিক্রেতা গহনা তৈরির পারিশ্রমিকের নামে (ক্রেতার নিকট থেকে) আরও অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে। এভাবে বিক্রেতার নিকট দু’টি বাড়তি বস্তু হয়ে গেল; একটি হল পাথরের ওজনের বিপরীতে অতিরিক্ত স্বর্ণ; আর দ্বিতীয়টি হল গহনা তৈরির পারিশ্রমিক বাবত অতিরিক্ত অর্থ; কারণ, সে হল স্বর্ণ ব্যবসায়ী, স্বর্ণকার নয়। অতএব, এ ধরনের কাজের বিধান কী হবে (আল্লাহ আপনাকে তাওফীক দিন)

ত্রয়োদশ প্রশ্ন: কোন কোন স্বর্ণের দোকানদার স্বর্ণের ব্যবসায়ীর নিকট যায় এবং তার নিকট থেকে কিলোগ্রাম বা অনুরূপ ওজনে নতুন স্বর্ণ গ্রহণ করে, আর এ স্বর্ণের সাথে মূল্যবান পাথরের মিশ্রণ থাকে, চাই সেই পাথর হউক আলমাস নামক দামী পাথর, অথবা যারাকুন বা অন্য কোন পাথর; আর ক্রেতা তাকে (দোকানদারকে) এ কিলোগ্রামের বিনিময়ে সমপরিমাণ ওজনে খাঁটি সোনা প্রদান করে যাতে কোনো প্রকার পাথর নেই; অতঃপর বিক্রেতা গহনা তৈরির পারিশ্রমিকের নামে (ক্রেতার নিকট থেকে) আরও অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে। এভাবে বিক্রেতার নিকট দু’টি বাড়তি বস্তু হয়ে গেল; একটি হল পাথরের ওজনের বিপরীতে অতিরিক্ত স্বর্ণ; আর দ্বিতীয়টি হল গহনা তৈরির পারিশ্রমিক বাবত অতিরিক্ত অর্থ; কারণ, সে হল স্বর্ণ ব্যবসায়ী, স্বর্ণকার নয়। অতএব, এ ধরনের কাজের বিধান কী হবে (আল্লাহ আপনাকে তাওফীক দিন)


উত্তর: এ ধরনের কাজ হারাম; কেননা, তা সুদি কারবারের অন্তর্ভুক্ত; আর প্রশ্নকর্তার বক্তব্যের আলোকে তাতে দুই কারণে সুদ হয়। প্রথম কারণ: বাড়তি স্বর্ণ, যেহেতু এখানে মূল্যবান পাথর বা অনুরূপ কিছুর পরিবর্তে স্বর্ণের বিনিময় হয়েছে; আর তা ঐ হার বা নেকলেসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা ফুদালা ইবন ‘উবাইদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে আলোচনা করা হয়েছে, যেমন তিনি বলেন: 

১৪ প্রশ্ন: ঐসব স্বর্ণের দোকানের মালিকদের অধীনে কাজ করার বিধান কী, যারা শরী‘য়ত পরিপন্থী পদ্ধতিতে লেনদেন করে, চাই তা সুদের ভিত্তিতে হউক, অথবা অবৈধ আপকৌশলের মাধ্যমে হউক, অথবা হউক তা প্রতারণার মাধ্যম, অথবা এর বাইরে শরী‘য়ত পরিপন্থী অন্য যে কোন প্রকারের লেনদেন হউক না কেন?

চতুর্দশ প্রশ্ন: ঐসব স্বর্ণের দোকানের মালিকদের অধীনে কাজ করার বিধান কী, যারা শরী‘য়ত পরিপন্থী পদ্ধতিতে লেনদেন করে, চাই তা সুদের ভিত্তিতে হউক, অথবা অবৈধ আপকৌশলের মাধ্যমে হউক, অথবা হউক তা প্রতারণার মাধ্যম, অথবা এর বাইরে শরী‘য়ত পরিপন্থী অন্য যে কোন প্রকারের লেনদেন হউক না কেন?


উত্তর: ঐসব মালিকদের অধীনে কাজ করা হারাম, যারা সুদের ভিত্তিতে অথবা প্রতারণার মাধ্যম অথবা অনুরূপ যে কোনো প্রকার হারাম পন্থায় লেনদেন করে; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ ﴾ [المائ‍دة: ٢]

“আর তোমরা পাপকাজ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না।”[1] তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

১৫ প্রশ্ন: স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে চেকের মাধ্যমে লেনদেনের বিধান কী হবে, যখন চেকটি ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সঠিক ও যথাপোযুক্ত হবে; যেহেতু কোনো কোনো স্বর্ণের মালিক নিজের জীবনের ব্যাপারে আশংকার কারণে ও তার থেকে তার দিরহাম চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে চেকের মাধ্যমে লেনদেন করে?

পঞ্চদশ প্রশ্ন: স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে চেকের মাধ্যমে লেনদেনের বিধান কী হবে, যখন চেকটি ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সঠিক ও যথাপোযুক্ত হবে; যেহেতু কোনো কোনো স্বর্ণের মালিক নিজের জীবনের ব্যাপারে আশংকার কারণে ও তার থেকে তার দিরহাম চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে চেকের মাধ্যমে লেনদেন করে?


উত্তর: স্বর্ণ অথবা রৌপ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে চেকের মাধ্যমে লেনদেন করা বৈধ নয়; আর এটা এ জন্য যে, চেক গ্রহণের দ্বারা প্রকৃত অর্থে হস্তগত বা দখলকরণ হয় না, বরং তা শুধু একটি নির্ভরযোগ্য বিনিময়পত্র মাত্র; এর যুক্তি হল, যে ব্যক্তি চেক গ্রহণ করল তার নিকট থেকে যদি তা বিনষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সে তার দাবি নিয়ে আবার ঐ ব্যক্তির নিকট ফিরে আসবে, যে তাকে তা দিয়েছে; আর অপরদিকে যদি তা হস্তগত বা দখল বলে গণ্য হত, তাহলে

১৬ প্রশ্ন: যে স্বর্ণের মধ্যে কোন প্রতীক থাকে অথবা প্রজাপতি বা সাপের মাথা অথবা এ ধরনের কোন ছবি থাকে, সেই স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান কী?

ষোড়শ প্রশ্ন: যে স্বর্ণের মধ্যে কোন প্রতীক থাকে অথবা প্রজাপতি বা সাপের মাথা অথবা এ ধরনের কোন ছবি থাকে, সেই স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান কী?


উত্তর: প্রাণীর ছবিসহ তৈরি স্বর্ণ ও রৌপ্যের অলঙ্কার বিক্রয়, ক্রয় ও পরিধান করা হারাম এবং তা গ্রহণ করাও হারাম; আর এটা এ জন্য যে, মুসলিম ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হল ছবি নিশ্চিহ্ন ও অপসারণ করা; যেমনটি সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হাদিসের মধ্যে আছে, আবূল হাইয়্যাজ আল-আসাদী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: 

১৭ প্রশ্ন: স্বর্ণ আটক করা বা বুকিং (booking) দেয়ার বিধান কী?— আর এ বুকিং (booking) মানে হল, মূল্যের কিছু অংশ পরিশোধ করে পুরা মূল্য পরিশোধ করে দেয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীর নিকট তা আমানত হিসেবে রেখে দেওয়া।

সপ্তদশ প্রশ্ন: স্বর্ণ আটক করা বা বুকিং (booking) দেয়ার বিধান কী?— আর এ বুকিং (booking) মানে হল, মূল্যের কিছু অংশ পরিশোধ করে পুরা মূল্য পরিশোধ করে দেয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীর নিকট তা আমানত হিসেবে রেখে দেওয়া।


উত্তর: এটা বৈধ নয়; কারণ, যখন সে তা বিক্রয় করবে, তখন ক্রয়-বিক্রয়ের চাহিদা বা দাবি হল বিক্রেতার কাছ থেকে তার মালিকানা ক্রেতার নিকট স্থানান্তরিত হওয়া; সুতরাং এ ধরনের বুকিং (booking) পদ্ধতি হারাম ও অবৈধ, বরং জরুরি হল বিক্রেতা কর্তৃক পুরা মূল্য গ্রহণ করা; অতঃপর ক্রেতা ইচ্ছা করলে তা বিক্রেতার নিকট রেখে দিবে,

১৮ প্রশ্ন: মূল্য গ্রহণ করার পূর্বে স্বর্ণ বের কেরে দেয়ার বিধান কী হবে— যখন সে নিকটতম কেউ হওয়ার কারণে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায় এরূপ করে, অথচ তার পূর্ণ আস্থা আছে যে, সে অচিরেই তার মূল্য পরিশোধ করে দিবে, যদিও কিছু সময় বিলম্ব হবে?

অষ্টাদশ প্রশ্ন: মূল্য গ্রহণ করার পূর্বে স্বর্ণ বের কেরে দেয়ার বিধান কী হবে— যখন সে নিকটতম কেউ হওয়ার কারণে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায় এরূপ করে, অথচ তার পূর্ণ আস্থা আছে যে, সে অচিরেই তার মূল্য পরিশোধ করে দিবে, যদিও কিছু সময় বিলম্ব হবে?


উত্তর: তোমার সাধারণ নিয়ম জেনে রাখা আবশ্যক যে, পুরাপুরি মূল্য গ্রহণ করা ব্যতীত মুদ্রার বিনিময়ে স্বর্ণ বিক্রয় করা কখনও বৈধ হবে না, এ ক্ষেত্রে নিকটতম ও দূরতম সম্পর্কের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই; কেননা, আল্লাহর দ্বীন এ ব্যাপারে কারও পক্ষপাতিত্ব করে না। আর যখন আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য করার কারণে

১৯ প্রশ্ন: এর বিধান কী হবে— ক্রেতা কর্তৃক পরামর্শ করার উদ্দেশ্যে নেয়া স্বর্ণের বিপরীতে কোনো ব্যবসায়ী (ক্রেতা থেকে) স্বর্ণ গ্রহণ করল; আর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ক্রেতা যা গ্রহণ করেছে ক্রেতা কর্তৃক তা ফেরত দেয়া পর্যন্ত ব্যবসায় এ স্বর্ণটি বন্ধক হিসেবে গ্রহণ করেছে, অথচ এটা নিশ্চিত জানা কথা যে, ক্রেতা কর্তৃক গৃহীত স্বর্ণ ও ব্যবসায়ী কর্তৃক বন্ধক হিসেবে গৃহীত স্বর্ণের মাঝে ওজনের ক্ষেত্রে তারতম্য রয়েছে?

ঊনবিংশ প্রশ্ন: এর বিধান কী হবে— ক্রেতা কর্তৃক পরামর্শ করার উদ্দেশ্যে নেয়া স্বর্ণের বিপরীতে কোনো ব্যবসায়ী (ক্রেতা থেকে) স্বর্ণ গ্রহণ করল; আর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ক্রেতা যা গ্রহণ করেছে ক্রেতা কর্তৃক তা ফেরত দেয়া পর্যন্ত ব্যবসায় এ স্বর্ণটি বন্ধক হিসেবে গ্রহণ করেছে, অথচ এটা নিশ্চিত জানা কথা যে, ক্রেতা কর্তৃক গৃহীত স্বর্ণ ও ব্যবসায়ী কর্তৃক বন্ধক হিসেবে গৃহীত স্বর্ণের মাঝে ওজনের ক্ষেত্রে তারতম্য রয়েছে?


উত্তর: এতে কোনো সমস্যা নেই; কেননা সে তা তার নিকট বিক্রি করেনি; সে তো শুধু বলেছে: এ স্বর্ণটা আপনার কাছে বন্ধক হিসেবে রাখুন, আর আমি (আপনার দেওয়া স্বর্ণ নিয়ে) যাব এবং তার বিষয়ে পরামর্শ করব, অতঃপর আমি আপনার নিকট ফিরে আসব এবং আমরা নতুন করে ক্রয়-বিক্রয় করব; অতঃপর যখন আমরা উভয়ে বেচাকেনার কাজ শেষ করব, তখন ক্রেতা বিক্রেতাকে পুরাপুরি মূল্য পরিশোধ করে দিবে এবং ক্রেতা তা গ্রহণ করে নিবে, যা সে বিক্রেতার কাছে বন্ধক হিসেবে দিয়েছিল।

২০ প্রশ্ন: কোনো ব্যক্তি এক টুকরা স্বর্ণ দুইশত দিনার মূল্যে ক্রয় করল এবং স্বর্ণের দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি হওয়া পর্যন্ত সময় ধরে তা সংরক্ষণ করল, অতঃপর তা তিন হাজার দিনারের বিনিময়ে বিক্রি করল— সুতরাং এ ধরনের বৃদ্ধির বিধান কী হবে?

বিংশ প্রশ্ন: কোনো ব্যক্তি এক টুকরা স্বর্ণ দুইশত দিনার মূল্যে ক্রয় করল এবং স্বর্ণের দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি হওয়া পর্যন্ত সময় ধরে তা সংরক্ষণ করল, অতঃপর তা তিন হাজার দিনারের বিনিময়ে বিক্রি করল— সুতরাং এ ধরনের বৃদ্ধির বিধান কী হবে?


উত্তর: এই ধরনের বৃদ্ধিতে কোন প্রকার সমস্যা বা অসুবিধা নেই; আর মুসলিমগণ তো তাদের ক্রয় ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বদা এরূপ করেই থাকে, তারা পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে এবং মূল্য বৃদ্ধির জন্য অপেক্ষা করে; আবার কখনও কখনও তারা নিজেদের ব্যবহারের জন্য পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে, অতঃপর যখন তার দাম অধিক হারে বৃদ্ধি পায় এবং তা বিক্রয়ের সুযোগ পেয়ে যায়, তখন তারা তা বিক্রি করে দেয়, যদিও ইতিপূর্বে তা বিক্রি করার কোনো পরিকল্পনা তাদের ছিল না।
আর তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল,

২১ প্রশ্ন: পুরুষের পরিধানের জন্য তৈরি করা স্বর্ণের বিশেষ আংটি বিক্রয়ের বিধান কী হবে, যখন ব্যবসায়ী নিশ্চিত যে, ক্রেতা অচিরেই তা পরিধান করবে?

একবিংশ প্রশ্ন: পুরুষের পরিধানের জন্য তৈরি করা স্বর্ণের বিশেষ আংটি বিক্রয়ের বিধান কী হবে, যখন ব্যবসায়ী নিশ্চিত যে, ক্রেতা অচিরেই তা পরিধান করবে?


উত্তর: পুরুষের জন্য তৈরি করা স্বর্ণের আংটি বিক্রয় করা হারাম, যখন বিক্রেতা জানতে পারবে যে, ক্রেতা অচিরেই তা পরিধান করবে অথবা তার প্রবল ধারণা মতে সে তা পরিধান করার সম্ভাবনা থাকবে; কারণ, এ উম্মতের পুরুষ ব্যক্তিদের উপর স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম; সুতরাং সে যখন তা এমন ব্যক্তির নিকট বিক্রয় করবে, যার ব্যাপারে সে জানে অথবা তার প্রবল ধারণা হয় যে, সে তা পরিধান করবে, তখন সে অন্যায় কাজে সহযোগিতা করল; অথচ আল্লাহ তা‘আলা অন্যায় ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন; আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

২২ প্রশ্ন: পুরুষদের জন্য স্বর্ণ পরিধান করা নিষিদ্ধকরণের কারণটি কী? কেননা, আমরা জানি যে, দীন ইসলাম মুসলিম ব্যক্তির উপর শুধু ঐসব বস্তুই হারাম করে, যাতে তার জন্য ক্ষতিকারক দিক রয়েছে— সুতরাং স্বর্ণের তৈরি অলংকার পরিধান করার মধ্যে পুরুষদের জন্য কী ক্ষতি রয়েছে?

দ্বাবিংশ প্রশ্ন: পুরুষদের জন্য স্বর্ণ পরিধান করা নিষিদ্ধকরণের কারণটি কী? কেননা, আমরা জানি যে, দীন ইসলাম মুসলিম ব্যক্তির উপর শুধু ঐসব বস্তুই হারাম করে, যাতে তার জন্য ক্ষতিকারক দিক রয়েছে— সুতরাং স্বর্ণের তৈরি অলংকার পরিধান করার মধ্যে পুরুষদের জন্য কী ক্ষতি রয়েছে?


উত্তর: হে প্রশ্নকর্তা! আপনি জেনে রাখুন এবং যারা এ প্রোগ্রাম[1] বা অনুষ্ঠান শুনছেন তারা সকলেই জেনে রাখবেন যে, প্রত্যেক মুমিনের জন্য শরী‘য়তের বিধিবিধানের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান কারণ হল আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রসূলের বাণী বা বক্তব্য; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

প্রশ্নঃ আল্লাহ্‌র প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান বাস্তবায়নের ফজিলত সম্পর্কে আমি প্রচুর পড়েছি, অনেক শুনেছি। আল্লাহর উপর ঈমান আনা বলতে কী বুঝায়; তা যদি একটু বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন যাতে আমি পূর্ণ ঈমান বাস্তবায়ন করতে পারি এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীবর্গের আদর্শ বিরোধী সবকিছু থেকে দূরে থাকতে পারি।

ঈমান বিল্লাহ বা আল্লাহর প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়


প্রশ্নঃ আল্লাহ্‌র প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান বাস্তবায়নের ফজিলত সম্পর্কে আমি প্রচুর পড়েছি, অনেক শুনেছি। আল্লাহর উপর ঈমান আনা বলতে কী বুঝায়; তা যদি একটু বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন যাতে আমি পূর্ণ ঈমান বাস্তবায়ন করতে পারি এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীবর্গের আদর্শ বিরোধী সবকিছু থেকে দূরে থাকতে পারি।
 
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীনের জন্য।
আল্লাহ্‌র উপর ঈমান আনার অর্থ হলো- “তাঁর অস্তিত্বের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। কোন সন্দেহ সংশয় ছাড়া বিশ্বাস স্থাপন করা যে- তিনি একমাত্র প্রতিপালক (রব্ব), তিনি একমাত্র উপাস্য (মাবুদ) এবং তাঁর অনেকগুলো নাম ও গুণ রয়েছে।” সুতরাং আল্লাহ্‌র উপর ঈমান চারটি বিষয়কে শামিল করে। যে ব্যক্তি এই চারটি বিষয়কে বাস্তবায়ন করবে, তিনি প্রকৃত মুমিন হিসেবে বিবেচিত হবেন।  
প্রথমত:

ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়?

ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 ফেরেশতারা অদৃশ্য জগৎ। আল্লাহ তাদেরকে নূর দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তারা আল্লাহর নির্দেশ পালনে রত আছেন। তারা আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।[সূরা তাহরীম, আয়াত:০৬]
 ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:
 ১. এই স্বীকৃতি প্রদান করা যে, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব রয়েছে, তারা আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি এবং তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন ও পরিচালনাধীন। তারা তাঁর আগ বাড়িয়ে কোন কথা বলে না,

আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়?

আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:
 এক.
সুদৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, সবগুলো আসমানী কিতাব আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে। বাস্তবে আল্লাহ তাআলা এই বাণীসমূহ দিয়ে কথা বলেছেন। এ বাণীসমূহের মধ্যে কোনটি ফেরেশতার মাধ্যম ছাড়া পর্দার আড়াল থেকে সরাসরি আল্লাহর নিকট হতে শ্রবণীয়। এর মধ্যে কোনটি ফেরেশতার মাধ্যমে রাসূলের নিকট পৌঁছেছে। এর মধ্যে কোনটি আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজ হাতে লিপিবদ্ধ করেছেন। আল্লাহ কোন মানুষের সাথে কথা বললে বলেন ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার আড়াল থেকে অথবা কোন দূত পাঠানোর মাধ্যমে;

রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনা বলতে কী বুঝায়?

রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনা বলতে কী বুঝায়?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 রাসূলগণের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। সেগুলো হচ্ছে-
 এক:
সুদৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক কওমের জন্য তাদের মধ্য হতে একজনকে রাসূল (বার্তাবাহক) করে পাঠিয়েছেন। যিনি তাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদত (উপাসনা) করার এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য সব কিছুর ইবাদতকে অস্বীকার করার দাওয়াত দেন। সকল রাসূল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারী, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। আল্লাহ তাঁদেরকে

ভালো মৃত্যুর কোন আলামত আছে কি?

ভালো মৃত্যুর কোন আলামত আছে কি?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এক:  
হুসনুল খাতিমা বা ভাল মৃত্যু...
 ভাল মৃত্যু মানে- মৃত্যুর পূর্বে আল্লাহর ক্রোধ উদ্রেককারী গুনাহ হতে বিরত থাকতে পারা, পাপ হতে তওবা করতে পারা, নেকীর কাজ ও ভাল কাজ বেশি বেশি করার তাওফিক পাওয়া এবং এ অবস্থায় মৃত্যু হওয়া। এই মর্মে আনাস বিন মালিক (রাঃ) হতে সহিহ হাদিসে এসেছে তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

কেয়ামতের ছোট ও বড় আলামতগুলো কী কী

কেয়ামতের ছোট ও বড় আলামতগুলো কী কী?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 কেয়ামতের পূর্বে কেয়ামতের নিকটবর্তিতার প্রমাণস্বরূপ যে আলামতগুলো প্রকাশ পাবে সেগুলোকে ছোট আলামত ও বড় আলামত এই পরিভাষাতে আখ্যায়িত করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছোট আলামতগুলো কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার অনেক আগেই প্রকাশিত হবে। এর মধ্যে কোন কোন আলামত ইতিমধ্যেই প্রকাশ পেয়ে নিঃশেষ হয়ে গেছে। কোন কোন আলামত নিঃশেষ হয়ে আবার পুনঃপ্রকাশ পাচ্ছে। কিছু আলামত প্রকাশিত হয়েছে এবং অব্যাহতভাবে প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। আর কিছু আলামত এখনো প্রকাশ পায়নি। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সংবাদ অনুযায়ী সেগুলো অচিরেই প্রকাশ পাবে।
 কেয়ামতের বড় বড় আলামত:

যদি আল্লাহ প্রত্যেক মানুষের জীবিকা লিপিবদ্ধ করে থাকেন তাহলে কিছু মানুষ না-খেয়ে মারা যায় কেন?

যদি আল্লাহ প্রত্যেক মানুষের জীবিকা লিপিবদ্ধ করে থাকেন তাহলে কিছু মানুষ না-খেয়ে মারা যায় কেন?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 আল্লাহ তাআলা হচ্ছেন- রায্‌যাক (জীবিকাদাতা) এবং তিনিই উত্তম জীবিকাদানকারী। পৃথিবীতে বিচরণকারী প্রত্যেকটি জীবের জীবিকা আল্লাহরই দায়িত্বে। কোন লোভাতুরের লোভ অথবা হিংসুকের হিংসা কাউকে তার জীবিকা হতে বঞ্চিত করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রজ্ঞা অনুযায়ী মানুষের জীবিকার মধ্যে তারতম্য করেন। যেমনিভাবে

আল্লাহ তাআলা হাদিসে কুদসিতে বলেছেন- "যখন আমি তাকে (বান্দাকে) ভালবাসি তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যে কান দিয়ে সে শুনে। আমি তার চোখ হয়ে যাই, যে চোখ দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যে হাত দিয়ে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই, যে পা দিয়ে সে হাঁটে।" এমতাবস্থায় আমরা স্রষ্টা ও সৃষ্টি একই সত্তা এই মতাদর্শ এবং আল্লাহর গুণাবলী সম্বলিত আয়াতসমূহের ব্যাপারে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অনুসৃত পদ্ধতির মাঝে কিভাবে সমন্বয় করব? আশা করি আপনারা বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবেন; আল্লাহ আপনাদের সম্মান বৃদ্ধি করুন। কারণ আল্লাহর গুণাবলীকে অস্বীকারকারী সম্প্রদায় আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে সলফে সালেহীনদের অনুসৃত পদ্ধতিকে এই বলে প্রশ্নবিদ্ধ করেন যে, আমরা যদি আল্লাহর গুণাবলী সম্বলিত আয়াত ও হাদিসকে মূল অর্থে গ্রহণ করি এতে করে স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক সত্তা- এ দৃষ্টিভঙ্গি অনিবার্য হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলা হাদিসে কুদসিতে বলেছেন- "যখন আমি তাকে (বান্দাকে) ভালবাসি তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যে কান দিয়ে সে শুনে। আমি তার চোখ হয়ে যাই, যে চোখ দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যে হাত দিয়ে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই, যে পা দিয়ে সে হাঁটে।" এমতাবস্থায় আমরা স্রষ্টা ও সৃষ্টি একই সত্তা এই মতাদর্শ এবং আল্লাহর গুণাবলী সম্বলিত আয়াতসমূহের ব্যাপারে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অনুসৃত পদ্ধতির মাঝে কিভাবে সমন্বয় করব? আশা করি আপনারা বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবেন; আল্লাহ আপনাদের সম্মান বৃদ্ধি করুন। কারণ আল্লাহর গুণাবলীকে অস্বীকারকারী সম্প্রদায় আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে সলফে সালেহীনদের অনুসৃত পদ্ধতিকে এই বলে প্রশ্নবিদ্ধ করেন যে, আমরা যদি আল্লাহর গুণাবলী সম্বলিত আয়াত ও হাদিসকে মূল অর্থে গ্রহণ করি এতে করে স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক সত্তা- এ দৃষ্টিভঙ্গি অনিবার্য হয়ে যায়।


আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য)। 
এক:
আল্লাহর গুণাবলীর ক্ষেত্রে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের দৃষ্টিভঙ্গি হলো-

ইসলামে উবুদিয়্যত তথা আল্লাহর দাসত্ব ও মানুষের দাসত্বের স্বরূপ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবেন আশা করছি।

ইসলামে উবুদিয়্যত তথা আল্লাহর দাসত্ব ও মানুষের দাসত্বের স্বরূপ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবেন আশা করছি।


সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্‌র জন্য।
মুসলমান একমাত্র আল্লাহ্‌র ইবাদত করবে, তাঁরই দাসত্ব করবে। এ ব্যাপারে তিনি তাঁর কিতাবে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন এবং তাঁর দাসত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্যই তিনি রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছেন। তিনি বলেন,
 وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولاً أَنِ اعْبُدُواْ اللَّهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّاغُوتَ
অবশ্য আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি এ নির্দেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহ্‌র উপাসনা (দাসত্ব) কর এবং তাগুতকে বর্জন কর।”[সূরা নাহল, ১৬:৩৬] عُبُودِيَّة (উবুদিয়্যাহ্‌) শব্দটি تَعْبِيْدٌ (তা’বীদ) শব্দ হতে উদ্ভূত। কোন একটি অমসৃণ রাস্তাকে পদদলিত করে চলার উপযুক্ত করা হলে তখন বলা হয়:  عَبَّدتُّ الطَّرِيْقَ। আল্লাহ্‌র জন্য বান্দার দাসত্বের দুটি অর্থ রয়েছে। একটি

আমরা ইসলামি শরিয়ার আলোকে সুস্পষ্টভাবে জানতে চাই মুসলমানেরা অমুসলমানের প্রতি কোন দৃষ্টিতে তাকাবে এবং অমুসলমানদের সাথে কী ধরনের আচরণ করবে।

আমরা ইসলামি শরিয়ার আলোকে সুস্পষ্টভাবে জানতে চাই মুসলমানেরা অমুসলমানের প্রতি কোন দৃষ্টিতে তাকাবে এবং অমুসলমানদের সাথে কী ধরনের আচরণ করবে।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। 
১. ইসলাম রহমত ও ন্যায়ের ধর্ম। ইসলাম মানুষের হেদায়েতের জন্য এবং মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে বের করে আনার জন্য চেষ্টা করে। 
২. হেকমত, সুন্দর উপদেশ ও উত্তম পন্থায় বিতর্কের মাধ্যমে অমুসলমানদেরকে দাওয়াত দেয়ার জন্য মুসলমানদেরকে আদেশ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন: আর তোমরা উত্তম পন্থা ছাড়া আহলে কিতাবদের সাথে বিতর্ক করো না। তবে তাদের মধ্যে ওরা ছাড়া, যারা জুলুমকরেছে[সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৬] 
৩. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন:

তাকদীরের প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়?

তাকদীরের প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 তাকদীর বা ভাগ্য: এ মহাবিশ্বে যা কিছু ঘটবে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক তাঁর পূর্বজ্ঞান ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী সেসব কিছু নির্ধারণ করে রাখাকে তাকদীর বলা হয়।
 তাকদীরের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে।
 এক:

মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য এমন কোন শাসককে নির্বাচিত করা কি জায়েয হবে যে আল্লাহর আইন অনুযায়ী শাসন করে না? উল্লেখ্য, তাকে যদি নির্বাচিত করা না হয় তাহলে সে নানাভাবে কোণঠাসা করে রাখবে; এমন কি গ্রেফতারও করতে পারে।

মুসলিম রাষ্ট্রের জন্য এমন কোন শাসককে নির্বাচিত করা কি জায়েয হবে যে আল্লাহর আইন অনুযায়ী শাসন করে না? উল্লেখ্য, তাকে যদি নির্বাচিত করা না হয় তাহলে সে নানাভাবে কোণঠাসা করে রাখবে; এমন কি গ্রেফতারও করতে পারে।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
ঈমানদারেরা সুদৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, আল্লাহর আইনের চেয়ে উত্তম কোন আইন নেই। আল্লাহর আইন বিরোধী সকল বিধান জাহেলী বিধান। আল্লাহ তাআলা বলেন:

কিছু কিছু মানুষ তাদের ধন-সম্পদ, সহায়-সম্পত্তি নেককার ব্যক্তিদের কবরের কাছে আমানত রাখে। তাদের বিশ্বাস হচ্ছে- এই নেককার ব্যক্তিগণ তাদের সম্পদগুলো পাহারা দিবে। ফলে তাদের ধন-সম্পদ চুরি হবে না, ছিনতাই হবে না এবং কেউ আত্মসাৎ করতে পারবে না।

কিছু কিছু মানুষ তাদের ধন-সম্পদ, সহায়-সম্পত্তি নেককার ব্যক্তিদের কবরের কাছে আমানত রাখে। তাদের বিশ্বাস হচ্ছে- এই নেককার ব্যক্তিগণ তাদের সম্পদগুলো পাহারা দিবে। ফলে তাদের ধন-সম্পদ চুরি হবে না, ছিনতাই হবে না এবং কেউ আত্মসাৎ করতে পারবে না।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 মৃতব্যক্তিদের কবরের উপরে যে সম্পদগুলো আমানত রাখা হয় তারা এই সম্পদগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করেন এ ধরনের বিশ্বাস সুস্পষ্ট কুফরি ও আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের মধ্যে শিরক (অংশীদার) স্থাপন। এই বিশ্বাস নিয়ে যে ব্যক্তি মারা যাবে তার পরিণতি চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
 এই বিশ্বাস

প্রশ্ন: যিনি বিদ্বেষন, বশীকরণ বা অন্য কোন যাদুটোনা দ্বারা আক্রান্ত তার চিকিৎসার উপায় কি? মুমিন ব্যক্তি যাদুটোনা থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারেন অথবা কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে যাদুটোনা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কুরআন ও হাদিসে এ সম্পর্কিত কোন দুআ-দরুদ বা যিকির-আযকার আছে কি?

যাদুটোনা থেকে নিরাময়ের উপায়


প্রশ্ন: যিনি বিদ্বেষন, বশীকরণ বা অন্য কোন যাদুটোনা দ্বারা আক্রান্ত তার চিকিৎসার উপায় কি? মুমিন ব্যক্তি যাদুটোনা থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারেন অথবা কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে যাদুটোনা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কুরআন ও হাদিসে এ সম্পর্কিত কোন দুআ-দরুদ বা যিকির-আযকার আছে কি?
উত্তর:   সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 যাদুটোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে:

আমার প্রতিবেশিনী একজন আমেরিকান খ্রিস্টান। খ্রিস্টমাস উপলক্ষে তিনি আমাকে কিছু হাদিয়া পাঠিয়েছেন। আমি তাকে এ হাদিয়াগুলো ফেরত দিতে পারছি না; যাতে তিনি রেগে না যান!! আমি কি এ হাদিয়াগুলো গ্রহণ করতে পারি যেভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফেরদের পাঠানো হাদিয়া গ্রহণ করেছেন।

আমার প্রতিবেশিনী একজন আমেরিকান খ্রিস্টান। খ্রিস্টমাস উপলক্ষে তিনি আমাকে কিছু হাদিয়া পাঠিয়েছেন। আমি তাকে এ হাদিয়াগুলো ফেরত দিতে পারছি না; যাতে তিনি রেগে না যান!! আমি কি এ হাদিয়াগুলো গ্রহণ করতে পারি যেভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফেরদের পাঠানো হাদিয়া গ্রহণ করেছেন।


আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।
 এক:
মূলতঃ কাফেরের দেয়া হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েয; এতে করে তার সাথে সখ্যতা তৈরি হয়, তাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করা যায়। ঠিক যেমনিভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুকাওকাস ও অন্যান্য কিছু কিছু কাফেরের হাদিয়া গ্রহণ করেছিলেন।
 ইমাম বুখারি তাঁর সহিহ গ্রন্থে একটি পরিচ্ছেদের শিরোনাম দেন এভাবে:

বিভিন্ন বার্ষিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করার শরয়ি বিধান কী? যেমন- বিশ্ব পরিবার দিবস, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস, আন্তর্জাতিক প্রবীণ বছর। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেমন- মেরাজ দিবস পালন, মিলাদুন্নবী বা নবীর জন্মবার্ষিকী কিংবা হিজরত বার্ষিকী পালন করার হুকুম কি। অর্থাৎ এ উপলক্ষে মানুষকে ওয়াজ-নসিহত করার উদ্দেশ্যে কিছু প্রচারপত্র প্রস্তুত করা, আলোচনাসভা বা ইসলামী সম্মেলনের আয়োজন করা ইত্যাদি।

বিভিন্ন বার্ষিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করার শরয়ি বিধান কী? যেমন- বিশ্ব পরিবার দিবস, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস, আন্তর্জাতিক প্রবীণ বছর। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেমন- মেরাজ দিবস পালন, মিলাদুন্নবী বা নবীর জন্মবার্ষিকী কিংবা হিজরত বার্ষিকী পালন করার হুকুম কি। অর্থাৎ এ উপলক্ষে মানুষকে ওয়াজ-নসিহত করার উদ্দেশ্যে কিছু প্রচারপত্র প্রস্তুত করা, আলোচনাসভা বা ইসলামী সম্মেলনের আয়োজন করা ইত্যাদি।


আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।
 আমার কাছে যা অগ্রগণ্য তা হচ্ছে- যে দিবসগুলো বা সমাবেশগুলো প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে আসে সেগুলো বিদআতী ঈদ বা নবপ্রচলিত উৎসব। এগুলো ইসলামি শরিয়তে নব-সংযোজন; যেগুলোর পক্ষে আল্লাহ তাআলা কোন দলিল-প্রমাণ নাযিল করেননি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

দেওবন্দিরা কি আহলুস সুন্নাহ? তারা কি ইসলামের গন্ডির মধ্যে রয়েছে ?

দেওবন্দিরা কি আহলুস সুন্নাহ? তারা কি ইসলামের গন্ডির মধ্যে রয়েছে ?


২২৪৭৩ নং ফতোয়া
 
জবাবঃ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানা ওয়া তা’লার, দেওবন্দিরা মুসলিমদের অনেক গুলো দলের একটি। এই দলটি দারুল উলুম দেওবন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারত) সাথে সম্পৃক্ত এবং সেই নামেই পরিচিত হয়। এটি একটি ফিকহি স্কুল যার শিকড় অনেক গভীরে। যারা এখান থেকে স্নাতক হয়ে বের হয় তারা এর প্রাতিষ্ঠানিক বৈশিষ্ট দ্বারা প্রভাবিত হয় বলে তাদের ‘দেওবন্দি’ বলে ডাকা হয়।
দেওবন্দ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয় এক দল ভারতীয় আলেমদের দ্বারা যখন

পরীক্ষার প্রশ্নে ছাত্রকে যখন কোন একটি আয়াতে কারীমা দিয়ে দলিল পেশ করতে বলা হয় তখন যে ছাত্র আয়াতে কারীমাটির কোন একটি হরফ বা শব্দ ভুলে গেছে সে ঐ হরফ বা শব্দটির স্থানে নিজের মনমত একটি শব্দ লিখে আসে। কারণ সে পরীক্ষায় পাস করতে চায়; ফেল করার ভয়ে সে এটা করে। কিন্তু সে স্বীকার করে- সে যা করেছে সেটা বিকৃতি। এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য- কার্যতঃ কুরআন বিকৃতি নয়। কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করার ভয়ে সে ভুলে-যাওয়া শব্দটির স্থানে অন্য একটি শব্দ লিখেছে। এটা কি কুরআন বিকৃতির মধ্যে পড়বে; যে কারণে এই ছাত্র ইসলামের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যাবে।

পরীক্ষার প্রশ্নে ছাত্রকে যখন কোন একটি আয়াতে কারীমা দিয়ে দলিল পেশ করতে বলা হয় তখন যে ছাত্র আয়াতে কারীমাটির কোন একটি হরফ বা শব্দ ভুলে গেছে সে ঐ হরফ বা শব্দটির স্থানে নিজের মনমত একটি শব্দ লিখে আসে। কারণ সে পরীক্ষায় পাস করতে চায়; ফেল করার ভয়ে সে এটা করে। কিন্তু সে স্বীকার করে- সে যা করেছে সেটা বিকৃতি। এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য- কার্যতঃ কুরআন বিকৃতি নয়। কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করার ভয়ে সে ভুলে-যাওয়া শব্দটির স্থানে অন্য একটি শব্দ লিখেছে। এটা কি কুরআন বিকৃতির মধ্যে পড়বে; যে কারণে এই ছাত্র ইসলামের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যাবে।


(158204) নং প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে- যে ব্যক্তি নামাযের মধ্যে কোন সূরা পড়তে গিয়ে ভুল করেছে অথবা কোন একটা অংশ ভুলে গেছে সে ব্যক্তি ভুলে-যাওয়া অংশটি মনে করার এবং শুধরে নেয়ার চেষ্টা করবে। যদি তার পক্ষে কোনভাবে সেটা সম্ভবপর না হয় তাহলে সে পরের আয়াত পড়বে অথবা সে সূরা বাদ দিয়ে অন্য কোন সূরা পড়বে।
 কিন্তু

আল্লাহ তাআলা ইরাশাদ করেন: ‍"মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় না।"[সূরা নুর, আয়াত: ৬২] আমরা এ আয়াতটি কিভাবে অনুসরণ করব এবং নিজেদের জীবনে কিভাবে বাস্তবায়ন করব?

আল্লাহ তাআলা ইরাশাদ করেন: ‍"মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় না।"[সূরা নুর, আয়াত: ৬২] আমরা এ আয়াতটি কিভাবে অনুসরণ করব এবং নিজেদের জীবনে কিভাবে বাস্তবায়ন করব?


আলহামদু লিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য)।  
এক:
এ আয়াতে কারীমা নাযিল করে নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে সাহাবায়ে কেরামের আচার-ব্যবহার কীরূপ হবে এ সংক্রান্ত কিছু শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং মুনাফিকদের সাদৃশ্য অবলম্বন হতে সাবধান করা হয়েছে; যারা কোন প্রকার সচ্চরিত্র বা শিষ্টাচারের পরোয়া করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন:

আসসালামু আলাইকুম। আমি কিছু পরিভাষার ব্যাপারে জানতে চাই। আশা করব আপনারা সে পরিভাষাগুলো স্পষ্ট করবেন। যেমন কিছু আলোচনাতে শুনি: হাদিসে মারফু, হাদিসে মাকতু?

আসসালামু আলাইকুম। আমি কিছু পরিভাষার ব্যাপারে জানতে চাই। আশা করব আপনারা সে পরিভাষাগুলো স্পষ্ট করবেন। যেমন কিছু আলোচনাতে শুনি: হাদিসে মারফু, হাদিসে মাকতু?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 হাদিস বিশারদগণ হাদিসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে থাকেন। কয়েকটি দিক বিবেচনায় এ বিভাজনটি করা হয়ে থাকে। তেমনি একটি দিক হচ্ছে- বক্তা অনুসারে উক্তি (হাদিস) কে বিভাজন করা। হাদিসবিদগণ বলেন: বক্তা বা উক্তিকারীর দিক বিবেচনা করে হাদিসকে চার ভাগে ভাগ করা যায়।
 এক: হাদিসে কুদসি:

প্রশ্ন: আমি জানতে চাই- রজব মাসের প্রথম রাত্রিতে বলতে হয় এমন কোন নির্দিষ্ট দু’আ আছে কি? দু’আটি হচ্ছে- “আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজব ও শাবান ওয়া বাল্লিগ না রমজান।” আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাদেরকে সহিহ হাদিসের উপর অটল রাখেন।

প্রশ্ন: আমি জানতে চাই- রজব মাসের প্রথম রাত্রিতে বলতে হয় এমন কোন নির্দিষ্ট দু’আ আছে কি? দু’আটি হচ্ছে- “আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজব ও শাবান ওয়া বাল্লিগ না রমজান।” আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাদেরকে সহিহ হাদিসের উপর অটল রাখেন।


উত্তর :সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
এক:
রজব মাসের ফজিলতের ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে কোন বর্ণনা সহিহ সাব্যস্ত হয়নি। দেখুন 75394171509 নং প্রশ্নোত্তর।
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
“রজব মাসের ফজিলতের ব্যাপারে কোন সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়নি। ‘রজব’ মাসের আগের মাস ‘জুমাদাল আখেরা’

প্রশ্ন: আমি একজন আলোচককে “রোজাদারের ঘুম ইবাদত” এই শীর্ষক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি হাদিস বলতে শুনেছি। এই হাদিসটি কি সহীহ?

প্রশ্ন: আমি একজন আলোচককে “রোজাদারের ঘুম ইবাদত” এই শীর্ষক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি হাদিস বলতে শুনেছি। এই হাদিসটি কি সহীহ?


উত্তর : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এই হাদিসটি সহীহ নয়। এটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে সাব্যস্ত হয়নি। ইমাম বাইহাকী তাঁর ‘শুআবুল ঈমান’ (৩/১৪৩৭) গ্রন্থে ‘আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আওফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

একজন নারীর জন্য একই সময়ে তিন বা চারজন পুরুষকে বিয়ে করা নাজায়েয কেন? অথচ একজন পুরুষ তিন বা চারজন নারীকে বিয়ে করতে পারে।


একজন নারীর জন্য একই সময়ে তিন বা চারজন পুরুষকে বিয়ে করা নাজায়েয কেন? অথচ একজন পুরুষ তিন বা চারজন নারীকে বিয়ে করতে পারে।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 প্রথমতঃ এ বিষয়টি আল্লাহর প্রতি ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত। পৃথিবীর সকল ধর্মমতে- কোন নারীর জন্য স্বামী ছাড়া অন্য কারো সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া জায়েয নেই। এই ধর্মগুলোর মধ্যে কোন কোনটি আসমানী ধর্ম; যেমন- ইসলাম ধর্ম, অবিকৃত ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্ম। আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাবী হচ্ছে- তাঁর বিধিবিধান ও শরিয়তকে মেনে নেওয়া। কারণ

বিয়ের রুকন ও শর্ত কি কি? এবং ও ওলি বা অভিভাবক এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শর্তসমূহ

সংক্ষেপে বিয়ের রুকন, শর্ত ও ওলি বা অভিভাবক এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শর্তসমূহ


বিয়ের রুকন ও শর্ত কি কি?

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য। 
ইসলামে বিয়ের রুকন বা খুঁটি তিনটি: 
এক:
বিয়ে সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে সমূহ প্রতিবন্ধকতা হতে বর-কনে উভয়ে মুক্ত হওয়া। যেমন- বর-কনে পরস্পর মোহরেম হওয়া; ঔরশগত কারণে হোক অথবা দুগ্ধপানের কারণে হোক। বর কাফের কিন্তু কনে মুসলিম হওয়া, ইত্যাদি। 
দুই:

প্রশ্ন: আমি আল্লাহর নামে শপথ করেছি যে, আমি আর ফিল্ম দেখব না। কিন্তু আমি নির্দিষ্ট করি নাই যে, কী ধরনের ফিল্ম আমি দেখব না। এক বছর পরে আমি একটি ফিল্ম দেখেছি, যেটি তেমন কিছু নয় বা অশ্লীল নয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আমি কিভাবে এই গুনাহ হতে নাজাত পাব। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।

ফিল্ম দেখা ছেড়ে দিয়েছিল; কিন্তু ভুলে গিয়ে একটি ফিল্ম দেখে ফেলেছে। এখন জানতে চাচ্ছে কিভাবে ফিল্ম দেখা একেবারে ছেড়ে দিতে পারবে


প্রশ্ন: আমি আল্লাহর নামে শপথ করেছি যে, আমি আর ফিল্ম দেখব না। কিন্তু আমি নির্দিষ্ট করি নাই যে, কী ধরনের ফিল্ম আমি দেখব না। এক বছর পরে আমি একটি ফিল্ম দেখেছি, যেটি তেমন কিছু নয় বা অশ্লীল নয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আমি কিভাবে এই গুনাহ হতে নাজাত পাব। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। 
আলেমগণ ফিল্ম দেখা ছেড়ে দেয়ার কয়েকটি উপায় উল্লেখ করেছেন, যেমন- 
১. এই ফিল্ম দেখার শরয়ি হুকুম জানা। এ বিষয়ে ইতিপূর্বে অনেক উত্তর দেয়া হয়েছে। 
২. সার্বক্ষণিক আল্লাহকে স্মরণ করা। কারণ আল্লাহ মানুষের প্রকাশ্য-গোপন সবকিছু জানেন। জনৈক সলফে সালেহীনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল-

যুহুদ বা দুনিয়া-বিমুখতা বলতে কী বুঝায়? তালি-দেয়া কাপড় পরা, প্রতিদিন রোজা রাখা, সমাজ থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি কী যুহুদ?

যুহুদ বা দুনিয়া-বিমুখতা বলতে কী বুঝায়? তালি-দেয়া কাপড় পরা, প্রতিদিন রোজা রাখা, সমাজ থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি কী যুহুদ?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 যুহুদ মানে এই নয় যে- তালি দেয়া কাপড় পরা, মানুষকে এড়িয়ে চলা, সমাজ থেকে দূরে থাকা, প্রতিদিন রোজা রাখা। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন- যুহুদ অবলম্বনকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। কিন্তু তিনি নতুন কাপড় পরতেন। কোন প্রতিনিধি দল আসলে সেজন্য পরিপাটি হতেন। জুমার দিন ও ঈদের দিনে নিজেকে পরিপাটি করতেন। মানুষের সাথে মিশতেন। মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করতেন,

এক নারী আমাকে চুম্বন করেছে। তাতে সাড়া দিয়ে আমিও তাকে চুম্বন করেছি এবং আমরা একে অপরকে স্পর্শ ও চুম্বন করতে থাকলাম। অনতিবিলম্বে সে আমাকে চূড়ান্ত যৌন কর্মের আবেদন জানাল। কিন্তু আমি আল্লাহর কাছে ব্যভিচারের শাস্তির ভয়ে তা হতে বিরত থেকেছি। আমি যা করেছি সে কর্মের কারণে আমি কি যিনাকারী (ব্যভিচারী) গণ্য হব? আমি শুধু আঙ্গুল প্রবেশ করিয়েছিলাম।

এক নারী আমাকে চুম্বন করেছে। তাতে সাড়া দিয়ে আমিও তাকে চুম্বন করেছি এবং আমরা একে অপরকে স্পর্শ ও চুম্বন করতে থাকলাম। অনতিবিলম্বে সে আমাকে চূড়ান্ত যৌন কর্মের আবেদন জানাল। কিন্তু আমি আল্লাহর কাছে ব্যভিচারের শাস্তির ভয়ে তা হতে বিরত থেকেছি। আমি যা করেছি সে কর্মের কারণে আমি কি যিনাকারী (ব্যভিচারী) গণ্য হব? আমি শুধু আঙ্গুল প্রবেশ করিয়েছিলাম।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এক:
এই নারীকে চুম্বন ও স্পর্শ করার মাধ্যমে আপনি নিকৃষ্টতম গুনাহর কাজে লিপ্ত হয়েছেন। আপনার অনুতপ্ত হয়ে এ গুনাহ থেকে তওবা করা এবং এর থেকে ফিরে আসার অটল সিদ্ধান্ত নেয়া অনিবার্য। এছাড়া এই ধরনের ফিতনাতে লিপ্ত হওয়ার যাবতীয় উপায় উপকরণ হতে দূরে থাকাও আপনার কর্তব্য। যেমন, বেগানা নারীর সাথে মেলামেশা, নির্জনবাস, হারাম দৃষ্টি ইত্যাদি। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আপনাকে ব্যভিচারের কবিরা গুনাহ হতে বাঁচিয়েছেন;

যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে “কুত্তা” বলে অথবা “শুয়োর” বলে অথবা এ ধরনের অন্য কোন অশ্লীল শব্দ বলে গালি দিয়েছে তার উপর কী অনিবার্য হবে? সে কি গুনাহগার হবে?

যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে “কুত্তা” বলে অথবা “শুয়োর” বলে অথবা এ ধরনের অন্য কোন অশ্লীল শব্দ বলে গালি দিয়েছে তার উপর কী অনিবার্য হবে? সে কি গুনাহগার হবে?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 সে ব্যক্তি গুনাহগার হবে। তার উপর শিক্ষামূলক শাস্তি কার্যকর করা হবে এবং তাকে তওবা করতে হবে।
 আল্লাহই ভাল জানেন।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তরে আমাদের মুসলমান ভাইয়েরা যে নির্যাতন নিষ্পেষণের শিকার হচ্ছে তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্য কী?

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তরে আমাদের মুসলমান ভাইয়েরা যে নির্যাতন নিষ্পেষণের শিকার হচ্ছে তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্য কী?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই”। আল্লাহ তাদের ব্যাপারে আরো বলেছেন: “তারা কাফেরদের ব্যাপারে বজ্রকঠোর, পরস্পরের মাঝে অতিশয় দয়ালু”। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “এক মুমিন আরেক মুমিনের নিকট মাথা যেমন দেহের নিকট। ঈমানদারের দুঃখণ্ডকষ্টে মুমিন দুঃখণ্ডকষ্ট অনুভব করে যেভাবে মাথায় ব্যথার কারণে গোটা দেহ ব্যথাতুর হয়ে পড়ে।” [মুসনাদে আহমাদ] এক মুমিনের প্রতি অপর মুমিনের সমবেদনার প্রকারগুলো ইবনুল কাইয়্যেম খুব সুন্দরভাবে সংক্ষেপে উল্লেখ করেছেন, তিনি বলেন:

আমার প্রশ্নটির বিভিন্নরকম উত্তর পাওয়া যায়। সহবাসকালে কোন কিছু পড়া কি আবশ্যকীয়? প্রথমবার সহবাস করার পূর্বে নামায পড়া কি মুসলিম স্বামী-স্ত্রীর উপর আবশ্যকীয়?

আমার প্রশ্নটির বিভিন্নরকম উত্তর পাওয়া যায়। সহবাসকালে কোন কিছু পড়া কি আবশ্যকীয়? প্রথমবার সহবাস করার পূর্বে নামায পড়া কি মুসলিম স্বামী-স্ত্রীর উপর আবশ্যকীয়?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 ইসলামী আদব হচ্ছে কোন মুসলিম তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পূর্বে নিম্নোক্ত বাক্যটি পড়বে, বিসমিল্লাহ্‌। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা (আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তান হতে বাঁচান এবং

জনৈক ব্যক্তির জিন্দেগী রাশি রাশি পাপে ভরপুর। বর্তমানে সে এক জটিল রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসা নেয়ার বহু চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। ডাক্তার বলেছেন, এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। এ পর্যায়ে এসে তিনি অত্যন্ত অনুতপ্ত এবং গুনাহ থেকে তওবা করতে ইচ্ছুক। যে রোগ থেকে মুক্তির আশা নেই এমন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত এই ব্যক্তির তওবা কী শুদ্ধ হবে?

জনৈক ব্যক্তির জিন্দেগী রাশি রাশি পাপে ভরপুর। বর্তমানে সে এক জটিল রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসা নেয়ার বহু চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। ডাক্তার বলেছেন, এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। এ পর্যায়ে এসে তিনি অত্যন্ত অনুতপ্ত এবং গুনাহ থেকে তওবা করতে ইচ্ছুক। যে রোগ থেকে মুক্তির আশা নেই এমন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত এই ব্যক্তির তওবা কী শুদ্ধ হবে?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 যে ব্যক্তি জীবনের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে গেছে তার তওবা শুদ্ধ হবে। তার এ নিরাশার কারণ কোন রোগ হোক যেমন- ক্যান্সার। অথবা হত্যার শাস্তি তথা শিরোচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া এবং জল্লাদ তলোয়ার নিয়ে তার মাথার উপরে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে হোক। অথবা

আমি প্রকৃত ইসলামের অনুসারী নারী হতে চাই। আমি কিভাবে শুরু করতে পারি। আমি এখনও সে রকম খারাপ নই। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সবগুলো পড়া হয় না। এখনো পুরোপুরি ইসলামি পোশাক পরিধান করি না। আমি এখন কিভাবে শুরু করব।

আমি প্রকৃত ইসলামের অনুসারী নারী হতে চাই। আমি কিভাবে শুরু করতে পারি। আমি এখনও সে রকম খারাপ নই। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সবগুলো পড়া হয় না। এখনো পুরোপুরি ইসলামি পোশাক পরিধান করি না। আমি এখন কিভাবে শুরু করব।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। 
প্রকৃত ইসলাম মানে ইসলামের সকল হুকুম-আহকাম মেনে চলা। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- নামায। যেহেতু নামায হচ্ছে- ইসলাম ধর্মের ভিত্তিমূল। কেয়ামতের দিন বান্দাকে সর্বপ্রথম নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নামায হচ্ছে-

বর্তমানে আমি মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়েছি। মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করতে পারছি না। আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে অথবা মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে ভাবতে পারছি না। তবে, তা সত্ত্বেও আমি এই মুহূর্তে মরতে চাই না। আল্লাহর কাছে আশা করছি, আমি যে পাপ করেছি তিনি তা ক্ষমা করে দেবেন। আমার সমস্যাটা হল, বিগত কয়েক মাস ধরে আমি এক নারীর সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছি। তার সাথে কোন হারাম সম্পর্ক করার আমার কোনোরূপ ইচ্ছা ছিল না। তবে যে কারণে আমি তার কাছাকাছি এসেছি সেটা হল আমি তাকে বুঝাতে চেয়েছি যাতে সে আত্মহত্যার ইচ্ছা থেকে সরে আসে। সে আত্মহত্যা করবে বলে মনস্থির করেছিল। সে উচ্চমাত্রার ট্যাবলেট গ্রহণ করত। আমি তাকে আত্মহত্যার পাপ থেকে বাঁচানোর জন্য নানা উপদেশ ও চেষ্টা করতাম। আমার ইচ্ছা ছিল তাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানো। তবে যা ঘটল তা হলো- ক্রমান্বয়ে আমাদের মাঝে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলো। তবে আমরা কখনো যৌনকর্মে লিপ্ত হই নি। এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো ইচ্ছাও আমার ছিল না। মহিলাটি বিবাহিত। সমস্যা হলো- সে দাবি করছে, আমি একবার তার সাথে শারীরিকভাবে মিলিত হয়েছি। আমি তার কথা বিশ্বাস করি না। কেননা আমি কখনো আমার কাপড় খুলিনি। তবে সে ছিল অর্ধনগ্ন। আমার ভয় হচ্ছে, আমি গুনাহ করে ফেলেছি; যদিও আমি তার সাথে শারীরিকভাবে মিলিত হই নি। তবে যদি সত্যি তার দাবি অনুযায়ী এরূপ কর্ম করে থাকি, তবে তো আমার রক্ষা নেই। আমি তাকে বিশ্বাস করি না; কারণ আমি বুঝতে পেরেছি, সে আমার ভালো চায় না। আর তার আত্মহত্যার অভিনয়টি ছিল আমার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য নিছক একটি ছলনা। বর্তমানে আমি খুবই উৎকণ্ঠিত। আমি ঘুমাতে পারি না, কোনো কিছু করতে পারি না। যা হয়েছে তার জন্য আমি লজ্জিত। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি তো শুধু তাকে দোযখের আগুন থেকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম; আর কিছু চাইনি। তবে এখন আমার ভয় হচ্ছে- আমি নিজেকে নিজে ধ্বংস করার কারণ হয়েছি।

বর্তমানে আমি মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়েছি। মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করতে পারছি না। আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে অথবা মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে ভাবতে পারছি না। তবে, তা সত্ত্বেও আমি এই মুহূর্তে মরতে চাই না। আল্লাহর কাছে আশা করছি, আমি যে পাপ করেছি তিনি তা ক্ষমা করে দেবেন। আমার সমস্যাটা হল, বিগত কয়েক মাস ধরে আমি এক নারীর সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছি। তার সাথে কোন হারাম সম্পর্ক করার আমার কোনোরূপ ইচ্ছা ছিল না। তবে যে কারণে আমি তার কাছাকাছি এসেছি সেটা হল আমি তাকে বুঝাতে চেয়েছি যাতে সে আত্মহত্যার ইচ্ছা থেকে সরে আসে। সে আত্মহত্যা করবে বলে মনস্থির করেছিল। সে উচ্চমাত্রার ট্যাবলেট গ্রহণ করত। আমি তাকে আত্মহত্যার পাপ থেকে বাঁচানোর জন্য নানা উপদেশ ও চেষ্টা করতাম। আমার ইচ্ছা ছিল তাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানো। তবে যা ঘটল তা হলো- ক্রমান্বয়ে আমাদের মাঝে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলো। তবে আমরা কখনো যৌনকর্মে লিপ্ত হই নি। এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো ইচ্ছাও আমার ছিল না। মহিলাটি বিবাহিত। সমস্যা হলো- সে দাবি করছে, আমি একবার তার সাথে শারীরিকভাবে মিলিত হয়েছি। আমি তার কথা বিশ্বাস করি না। কেননা আমি কখনো আমার কাপড় খুলিনি। তবে সে ছিল অর্ধনগ্ন। আমার ভয় হচ্ছে, আমি গুনাহ করে ফেলেছি; যদিও আমি তার সাথে শারীরিকভাবে মিলিত হই নি। তবে যদি সত্যি তার দাবি অনুযায়ী এরূপ কর্ম করে থাকি, তবে তো আমার রক্ষা নেই। আমি তাকে বিশ্বাস করি না; কারণ আমি বুঝতে পেরেছি, সে আমার ভালো চায় না। আর তার আত্মহত্যার অভিনয়টি ছিল আমার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য নিছক একটি ছলনা। বর্তমানে আমি খুবই উৎকণ্ঠিত। আমি ঘুমাতে পারি না, কোনো কিছু করতে পারি না। যা হয়েছে তার জন্য আমি লজ্জিত। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি তো শুধু তাকে দোযখের আগুন থেকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম; আর কিছু চাইনি। তবে এখন আমার ভয় হচ্ছে- আমি নিজেকে নিজে ধ্বংস করার কারণ হয়েছি।


আলহামদুলিল্লাহ
এক:
আপনাকে ঐ নারীর সাথে বন্ধুত্ব করা থেকে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে। আপনি যে গুনাহর মধ্যে লিপ্ত হয়েছেন এর কারণ হচ্ছে-

প্রশ্ন: রমজান মাসে কুরআন মুখস্থ করা উত্তম; নাকি কুরআন তেলাওয়াত করা

প্রশ্ন: রমজান মাসে কুরআন মুখস্থ করা উত্তম; নাকি কুরআন তেলাওয়াত করা?


উত্তর : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াত করা সবচেয়ে উত্তম ও ভাল আমল। রমজান হচ্ছে- কুরআনের মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন: “রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫]
রমজান মাসে জিব্রাইল (আঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে পরস্পর কুরআন পাঠ করতেন।[সহিহ বুখারি (৫) ও সহিহ মুসলিম (৪২৬৮)]
ইমাম বুখারি (৪৬১৪) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে,

যে রোগ থেকে স্বভাবতঃ সুস্থতা আশা করা যায় না এমন হৃদরোগের কারণে ডাক্তারেরা জনৈক মহিলাকে রোযা পালন করতে নিষেধ করেছিলেন। তাই তিনি রমজানে রোযা না রেখে প্রতিদিনের রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াতেন। এরপর আল্লাহর ইচ্ছায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরো অগ্রগতি হয়। ফলে তাঁর হার্টে ভাল্বের সার্জারি করা সম্ভব হয় এবং আলহামদুলিল্লাহ্, উক্ত সার্জারি সফল হয়। তবে তিনি বেশ কিছুদিন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় এবং আল্লাহ্ তাকে গত রমজানে সিয়াম পালনের তাওফিক দেন। এখন তিনি জানতে চাচ্ছেন, যে দিনগুলোতে তিনি রোযা ভঙ্গ করেছিলেন সে ব্যাপারে কি করবেন? তিনি কি সেই দিনগুলোর রোযা কাজা করবেন। তাতে তাঁকে ১৮০ দিন রোযা রাখতে হবে। যা ছয় বছরের রোযার সমান। নাকি তিনি সে সময় রোযার পরিবর্তে যে ফিদিয়া (খাদ্য দান) আদায় করেছিলেন সেটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট হবে?

যে রোগ থেকে স্বভাবতঃ সুস্থতা আশা করা যায় না এমন হৃদরোগের কারণে ডাক্তারেরা জনৈক মহিলাকে রোযা পালন করতে নিষেধ করেছিলেন। তাই তিনি রমজানে রোযা না রেখে প্রতিদিনের রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াতেন। এরপর আল্লাহর ইচ্ছায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরো অগ্রগতি হয়। ফলে তাঁর হার্টে ভাল্বের সার্জারি করা সম্ভব হয় এবং আলহামদুলিল্লাহ্, উক্ত সার্জারি সফল হয়। তবে তিনি বেশ কিছুদিন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় এবং আল্লাহ্ তাকে গত রমজানে সিয়াম পালনের তাওফিক দেন। এখন তিনি জানতে চাচ্ছেন, যে দিনগুলোতে তিনি রোযা ভঙ্গ করেছিলেন সে ব্যাপারে কি করবেন? তিনি কি সেই দিনগুলোর রোযা কাজা করবেন। তাতে তাঁকে ১৮০ দিন রোযা রাখতে হবে। যা ছয় বছরের রোযার সমান। নাকি তিনি সে সময় রোযার পরিবর্তে যে ফিদিয়া (খাদ্য দান) আদায় করেছিলেন সেটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট হবে?


সমস্ত  প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
“তিনি রোযা না-রেখে প্রতিদিনের পরিবর্তে যে ফিদিয়া আদায় করেছিলেন সেটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট। সেই মাসগুলোর  রোযা কাজা করা তাঁর উপর ওয়াজিব নয়। কারণ

আমি শুনেছি আশুরার রোজা নাকি বিগত বছরের গুনাহ মোচন করে দেয়- এটা কি সঠিক? সব গুনাহ কি মোচন করে; কবিরা গুনাহও? এ দিনের এত বড় মর্যাদার কারণ কি?

আমি শুনেছি আশুরার রোজা নাকি বিগত বছরের গুনাহ মোচন করে দেয়- এটা কি সঠিক? সব গুনাহ কি মোচন করে; কবিরা গুনাহও? এ দিনের এত বড় মর্যাদার কারণ কি?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এক:
আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহ মোচন করে। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী: “আমি আল্লাহর নিকট প্রতিদান প্রত্যাশা করছি আরাফার রোজা বিগত বছর ও আগত বছরের গুনাহ মার্জনা করবে। আরও প্রত্যাশা করছি আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহ মার্জনা করবে।”[সহিহ মুসলিম (১১৬২)] এটি আমাদের উপর আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ একদিনের রোজার মাধ্যমে বিগত বছরের সব গুনাহ মার্জনা হয়ে যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ মহান অনুগ্রহকারী।
 আশুরার রোজার মহান মর্যাদার কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি এ রোজার ব্যাপারে খুব আগ্রহী থাকতেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

আমাদের স্থানীয় ইমাম মানুষকে কতিপয় বিদআতের দিকে আহ্বান করেন। কিছু দ্বীনদার ভাই দলিল-প্রমাণসহ এ ব্যাপারে তাঁকে সাবধান করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি এ বিদআতগুলোর পক্ষে অটল অবস্থানে রয়েছেন। যদি জানা যায় যে, আজকের খোতবায় খতীবসাহেব বিদআতের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করবেন যেমন- মিলাদ, শবে বরাত, ইত্যাদি সেক্ষেত্রে আপনারা কি এ পরামর্শ দিবেন যে, সে ব্যক্তি জুমার খোতবা শুনতে যাবে না। কেউ যদি মসজিদে গিয়ে শুনতে পায় যে, খতীবসাহেব বিদআতের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করছেন তখন সে ব্যক্তির করণীয় কী? সে কী খোতবার মাঝখানে উঠে বাড়ীতে এসে যোহরের নামায আদায় করবে? অন্যথায় সে কী করবে? এ ধরণের খোতবা শুনায় হাজির থাকলে ব্যক্তি কি গুনাহগার হবে? কারণ কিছু ভাই নসিহত করার পরও খতীবসাহেব তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির উপর অটল অবস্থানে রয়েছেন। কেউ যদি খোতবার মধ্যে দুর্বল ও বানোয়াট হাদিস উল্লেখ করে তার ক্ষেত্রেও কি একই হুকুম প্রযোজ্য? আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।

আমাদের স্থানীয় ইমাম মানুষকে কতিপয় বিদআতের দিকে আহ্বান করেন। কিছু দ্বীনদার ভাই দলিল-প্রমাণসহ এ ব্যাপারে তাঁকে সাবধান করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি এ বিদআতগুলোর পক্ষে অটল অবস্থানে রয়েছেন। যদি জানা যায় যে, আজকের খোতবায় খতীবসাহেব বিদআতের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করবেন যেমন- মিলাদ, শবে বরাত, ইত্যাদি সেক্ষেত্রে আপনারা কি এ পরামর্শ দিবেন যে, সে ব্যক্তি জুমার খোতবা শুনতে যাবে না। কেউ যদি মসজিদে গিয়ে শুনতে পায় যে, খতীবসাহেব বিদআতের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করছেন তখন সে ব্যক্তির করণীয় কী? সে কী খোতবার মাঝখানে উঠে বাড়ীতে এসে যোহরের নামায আদায় করবে? অন্যথায় সে কী করবে? এ ধরণের খোতবা শুনায় হাজির থাকলে ব্যক্তি কি গুনাহগার হবে? কারণ কিছু ভাই নসিহত করার পরও খতীবসাহেব তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির উপর অটল অবস্থানে রয়েছেন। কেউ যদি খোতবার মধ্যে দুর্বল ও বানোয়াট হাদিস উল্লেখ করে তার ক্ষেত্রেও কি একই হুকুম প্রযোজ্য? আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।


আলহামদুলিল্লাহ।
 এক:
যে ব্যক্তির এলাকার মসজিদে কোন বিদআতপন্থী ইমাম ইমামতি করেন: তার বিদআত হয়তো কুফরি বিদআত হবে অথবা সাধারণ কোন বিদআত হবে। যদি কুফরি বিদআত হয় তাহলে ঐ ইমামের পিছনে সাধারণ নামায কিংবা জুমার নামায কোনটা পড়া জায়েয হবে না। আর যদি ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয় এমন কোন বিদআত না হয় তাহলে অগ্রগণ্য মতানুযায়ী- তার পিছনে জুমা পড়া ও জামাতে নামায পড়া জায়েয। এ হুকুমটি এত বেশি প্রচার পেয়েছে যে, এটা

একজন তরুণের জন্য কখন ইজতিহাদ করা ও ফতোয়া দেয়া জায়েয? কারণ কিছু কিছু তরুণ দ্বীনদার হওয়ার পর প্রায়শ শরিয়তের দলিল-প্রমাণ নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণে জড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন সাম্প্রতিক ইস্যু ও মাসয়ালার বিধান নির্ণয় করার চেষ্টা করে- যা হালাল বা হারাম ঘোষণা করার শামিল। তারা নিজেদের বিচার-বিশ্লেষণ অনুযায়ী কিছু কিছু সাম্প্রতিক ইস্যুর ফিকহী বিধান বলারও চেষ্টা করে।

একজন তরুণের জন্য কখন ইজতিহাদ করা ও ফতোয়া দেয়া জায়েয? কারণ কিছু কিছু তরুণ দ্বীনদার হওয়ার পর প্রায়শ শরিয়তের দলিল-প্রমাণ নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণে জড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন সাম্প্রতিক ইস্যু ও মাসয়ালার বিধান নির্ণয় করার চেষ্টা করে- যা হালাল বা হারাম ঘোষণা করার শামিল। তারা নিজেদের বিচার-বিশ্লেষণ অনুযায়ী কিছু কিছু সাম্প্রতিক ইস্যুর ফিকহী বিধান বলারও চেষ্টা করে।


 কোন বিষয়ে ইজতিহাদ করার কিছু শর্ত রয়েছে। যে কোন ব্যক্তির যে কোন বিষয়ে ফতোয়া দেয়া ও কথা বলার অধিকার নেই। কোন বিষয়ে ফতোয়া দিতে ও কথা বলতে হলে যথাযথ ইলম ও যোগ্যতা থাকতে হবে। দলিল জানার ক্ষমতা থাকতে হবে। দলিলের মধ্যে কোনটি নস (প্রত্যক্ষ), কোনটি যাহের (প্রকাশ্য), কোনটি সহিহ (বিশুদ্ধ), কোনটি জয়িফ (দুর্বল), কোনটি নাসেখ (রহিতকারী), কোনটি মানসুখ (রহিত), কোনটি মানতুক (শব্দ-ভিত্তিক), কোনটি মাফহুম (ভাব-ভিত্তিক), কোনটি খাস (বিশেষ), কোনটি আম (সাধারণ), কোনটি মুতলাক (শর্তহীন), কোনটি মুকাইয়্যাদ (শর্তযুক্ত), কোনটি মুজমাল (অ-বিস্তারিত), কোনটি মুবাইয়্যান (বিস্তারিত) তা জানতে হবে। সাথে সাথে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়া ফিকাহর প্রকারভেদ,

মিলাদুন্নবীর দিন, অথবা এর আগের দিন, অথবা এর পরের দিন মিলাদুন্নবীর মিষ্টান্ন খাওয়া কি হারাম? এই মিষ্টান্ন ক্রয়ের বিধান কি? বিশেষতঃ এই মিষ্টান্ন এই দিনগুলো ছাড়া অন্য কোন সময় পাওয়া যায় না। আশা করি জবাব দিয়ে বাধিত করবেন।

মিলাদুন্নবীর দিন, অথবা এর আগের দিন, অথবা এর পরের দিন মিলাদুন্নবীর মিষ্টান্ন খাওয়া কি হারাম? এই মিষ্টান্ন ক্রয়ের বিধান কি? বিশেষতঃ এই মিষ্টান্ন এই দিনগুলো ছাড়া অন্য কোন সময় পাওয়া যায় না। আশা করি জবাব দিয়ে বাধিত করবেন।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এক:
মিলাদুন্নবী বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিবস পালন একটি বিদআত। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা তাঁর সাহাবীগণ অথবা তাবেয়ীগণ হতে এই দিবস পালনের অনুমোদনমূলক কোন উদ্ধৃতি পাওয়া যায় না। বরং এর উদ্ভব করেছে- উবাইদি শাসকগণ (এরা ফাতেমী নামে পরিচিত)। যারা আরো অনেক ভ্রান্ত আমল ও বিদআত চালু করেছিল। এই দিন পালন করা যে, বিদআত সে ব্যাপারে  (10070) ও (70317) নং প্রশ্নের জবাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
 দুই:

নখে রঙ লাগিয়ে নামায পড়া কী ইসলাম অনুমোদন করে?

নখে রঙ লাগিয়ে নামায পড়া কী ইসলাম অনুমোদন করে?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 যদি কোন ক্ষতির আশংকা না থাকে তবে নারীর সাজ-সজ্জা হিসেবে নখে পলিশ করা বৈধ এবং এ পলিশ নিয়ে নামায পড়তেও দোষের কিছু নেই। তবে হ্যাঁ, পলিশের মধ্যে যদি এমন কোন ধাতু থাকে যার ফলে পলিশের নীচে পানি না পৌঁছে তাহলে পলিশ তুলে ফেলা ছাড়া ওজু ও

স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছেন। সহবাসের পরপরই স্ত্রীর মাসিক শুরু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় স্ত্রীকে সহবাসের কারণে তখনি ফরজ গোসল করতে হবে; নাকি মাসিক শেষ হওয়ার পর গোসল করলে চলবে?

স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছেন। সহবাসের পরপরই স্ত্রীর মাসিক শুরু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় স্ত্রীকে সহবাসের কারণে তখনি ফরজ গোসল করতে হবে; নাকি মাসিক শেষ হওয়ার পর গোসল করলে চলবে?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পর ফরজ গোসল করার আগেই যদি মাসিক শুরু হয়ে যায় তাহলে মাসিক থেকে পবিত্র হওয়ার পূর্বে গোসল করা তার জন্য ফরজ (আবশ্যকীয়) নয়। কিন্তু

আমার প্রশ্ন হচ্ছে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে থাকার পরে কখন তার উপর গোসল ফরজ হবে? গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- তারা সহবাসে লিপ্ত হয়নি। যা ঘটেছে সেটা হচ্ছে তারা হাত দিয়ে একে অপরকে উপভোগ করেছে। পরবর্তী দিনের রোজা শুরু করার আগে কি গোসল করা তাদের উপর ফরজ?


আমার প্রশ্ন হচ্ছে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে থাকার পরে কখন তার উপর গোসল ফরজ হবে? গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- তারা সহবাসে লিপ্ত হয়নি। যা ঘটেছে সেটা হচ্ছে তারা হাত দিয়ে একে অপরকে উপভোগ করেছে। পরবর্তী দিনের রোজা শুরু করার আগে কি গোসল করা তাদের উপর ফরজ?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত দুইটি বিষয়ের কোন একটি পাওয়া গেলে গোসল ফরজ হবে।
 ১. খতনার স্থানদ্বয় তথা যৌনাঙ্গদ্বয় একত্রিত হওয়া। অর্থাৎ প্রবেশ-করানো সংঘটিত হওয়া। এটাই সঙ্গম বা সহবাস। বীর্যপাত হওয়া শর্ত নয়। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

ভালো মৃত্যুর কোন আলামত আছে কি?

ভালো মৃত্যুর কোন আলামত আছে কি?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এক:  
হুসনুল খাতিমা বা ভাল মৃত্যু...
 ভাল মৃত্যু মানে- মৃত্যুর পূর্বে আল্লাহর ক্রোধ উদ্রেককারী গুনাহ হতে বিরত থাকতে পারা, পাপ হতে তওবা করতে পারা, নেকীর কাজ ও ভাল কাজ বেশি বেশি করার তাওফিক পাওয়া এবং এ অবস্থায় মৃত্যু হওয়া। এই মর্মে আনাস বিন মালিক (রাঃ) হতে সহিহ হাদিসে এসেছে তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

কোন কাফের মারা গেলে তার পরিবারকে সমবেদনা জানানোর হুকুম কী? চাই তার পরিবার-পরিজন মুসলিম হোক অথবা কাফের হোক।

কোন কাফের মারা গেলে তার পরিবারকে সমবেদনা জানানোর হুকুম কী? চাই তার পরিবার-পরিজন মুসলিম হোক অথবা কাফের হোক।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। 
যদি তারা মুসলমান হয় তাহলে তো সমবেদনা জানাতে কোন অসুবিধা নেই। কারণ তারা বিপদগ্রস্ত মুসলমান এবং তাদের এটা অধিকার। 
“আর তারা যদি কাফের হয় তাহলে কল্যাণের দিক কোনটি সেটা দেখতে হবে। যদি এই সমবেদনা জানানোর মাধ্যমে এই কাফেরকে মুসলমানদের প্রতি আকৃষ্ট করা যায়,

আমি রাগের মাথায় মান্নত (প্রতিজ্ঞা) করেছিলাম- আমার ছেলেকে মেরে রক্তাক্ত করব। কিন্তু আমি সেটা করিনি। এখন আমার কী করণীয়; এ ব্যাপারে আমাকে জানাবেন। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।

আমি রাগের মাথায় মান্নত (প্রতিজ্ঞা) করেছিলাম- আমার ছেলেকে মেরে রক্তাক্ত করব। কিন্তু আমি সেটা করিনি। এখন আমার কী করণীয়; এ ব্যাপারে আমাকে জানাবেন। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 আপনাকে শপথ ভঙ্গের কাফফারা প্রদান করতে হবে। যেহেতু এ ধরনের মান্নত আল্লাহর আনুগত্য বহির্ভূত কাজ। এটি ব্যক্তির চিন্তা-ভাবনা ও মতামত নির্ভর সিদ্ধান্ত। আপনি যেহেতু কাজটি করেননি তাই আপনাকে শপথ ভঙ্গের কাফফারা আদায় করতে হবে। ছেলেকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা জায়েয নেই। তাই এ ধরনের মান্নত করা- হারাম। এই শ্রেণীর মান্নত পূর্ণ করাও জায়েয নেই। মান্নত ভঙ্গের কাফফারা শপথ ভঙ্গের কাফফারার মতোই। তা হচ্ছে-

প্রায় দেড় বছর ধরে আমার দাদী/নানী অসুস্থ। তাঁর হুঁশ নেই, তিনি কথা বলতে পারেন না এবং খাবারদাবারও চান না। যদি আমরা তাঁকে কোন খাবার দেই তবে তিনি খান। তাঁর সাথে কেউ কথা বললে তিনি কদাচিৎ তাকে চিনতে পারেন। তাঁর যা প্রয়োজন সেটাও তিনি আমাদেরকে বলেন না।[যেমন ধরুন তিনি বলেন না যে, আমি টয়লেটে যাব। আল্লাহ আপনাদেরকে সম্মানিত করুন**] তাঁর অবস্থা হলো- তিনি কোন নড়াচড়া ছাড়া বিছানার উপর ঘুমিয়ে থাকেন। তাঁর ছেলেরা তাঁকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করে। আমি তাঁর সিয়াম ও সালাতের ব্যাপারে জানতে চাই। আমরা কি তাঁর পক্ষ থেকে ফিদিয়া আদায় করব এবং ইতিপূর্বে গত অবস্থার জন্য আমাদের কোন করণীয় আছে কী? [** আরবী ভাষাভাষীরা অপবিত্র জিনিস যেমন জুতো, টয়লেট ইত্যাদির কথা উল্লেখের পর সাধারণত “আল্লাহ আপনাদের সম্মানিত করুন” এই দু‘আটি উল্লেখ করে থাকে।]

প্রায় দেড় বছর ধরে আমার দাদী/নানী অসুস্থ। তাঁর হুঁশ নেই, তিনি কথা বলতে পারেন না এবং খাবারদাবারও চান না। যদি আমরা তাঁকে কোন খাবার দেই তবে তিনি খান। তাঁর সাথে কেউ কথা বললে তিনি কদাচিৎ তাকে চিনতে পারেন। তাঁর যা প্রয়োজন সেটাও তিনি আমাদেরকে বলেন না।[যেমন ধরুন তিনি বলেন না যে, আমি টয়লেটে যাব। আল্লাহ আপনাদেরকে সম্মানিত করুন**] তাঁর অবস্থা হলো- তিনি কোন নড়াচড়া ছাড়া বিছানার উপর ঘুমিয়ে থাকেন। তাঁর ছেলেরা তাঁকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করে। আমি তাঁর সিয়াম ও সালাতের ব্যাপারে জানতে চাই। আমরা কি তাঁর পক্ষ থেকে ফিদিয়া আদায় করব এবং ইতিপূর্বে গত অবস্থার জন্য আমাদের কোন করণীয় আছে কী? [** আরবী ভাষাভাষীরা অপবিত্র জিনিস যেমন জুতো, টয়লেট ইত্যাদির কথা উল্লেখের পর সাধারণত “আল্লাহ আপনাদের সম্মানিত করুন” এই দু‘আটি উল্লেখ করে থাকে।]


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
যিনি বয়সের ভারে দেহ ও মনের চরম অবনতির পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন, তাঁর বিবেক-বুদ্ধি লোপ পেয়ে গেছে, হুঁশ থাকে না এমন ব্যক্তি নামায-রোযার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেয়ে যান। তাঁর উপর কোন কাফ্‌ফারা আদায় করাও আবশ্যক নয়। কারণ মুকাল্লাফ (শরয়ি দায়িত্বপ্রাপ্ত) হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে বিবেকবুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া।
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন

আমি হল্যাণ্ডে থাকি। এখানে লোকেরা প্রথম রমজানের দিন মতভেদে জড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ মিশরের সাথে রোজা রাখে। আবার কেউ কেউ সৌদি আরবের ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় থাকে। এ ক্ষেত্রে কোন অবস্থানটি সঠিক?

আমি হল্যাণ্ডে থাকি। এখানে লোকেরা প্রথম রমজানের দিন মতভেদে জড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ মিশরের সাথে রোজা রাখে। আবার কেউ কেউ সৌদি আরবের ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় থাকে। এ ক্ষেত্রে কোন অবস্থানটি সঠিক?


নতুন চাঁদ দেখার মাধ্যমে আইনত নতুন মাস শুরু হওয়া সাব্যস্ত হয়। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাঙ্গ।”[সহিহ বুখারি (১৯০৯) ও সহিহ মুসলিম (১০৮১)] জোর্তিবিদদের হিসাবের ভিত্তিতে মাসের শুরু সাব্যস্ত করা যাবে না। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে, চন্দ্রের উদয়স্থল এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভিন্ন ভিন্ন। বিশেষতঃ

নারীদের নাকে ফুল পরা কি জায়েয?

নারীদের নাকে ফুল পরা কি জায়েয?


আলহামদু লিল্লাহ।
 নারীদের জন্য নাকে ফুল পরা জায়েয। নারীর নাক ফোঁড়া হয় সৌন্দর্যের জন্য; নারীকে কষ্ট দেওয়া অথবা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করার জন্য নয়।
 আল্লাহই উত্তম তাওফিকদাতা এবং আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। অনুরূপভাবে বর্ষিত হোক তার পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরামের প্রতি।[সমাপ্ত]
 ফতোয়া ও গবেষণা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
শাইখ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায,

আমি একজন অমুসলিম হওয়া সত্ত্বেও আপনাদের বিশ্বাসের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছি। কিন্তু এ বিষয়টি বুঝা কঠিন যে, এক ব্যক্তি একটা কথা বলল, আর সে কথাটার কারণে তার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হবে- আমি সালমান রুশদির কথা বুঝাতে চাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা যেহেতু মানুষ তাই এ ধরনের কোন রায় প্রকাশ করার অধিকার আমাদের নেই। এ ধরনের বিষয়ের ফয়সালা আল্লাহই করবেন।

আমি একজন অমুসলিম হওয়া সত্ত্বেও আপনাদের বিশ্বাসের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছি। কিন্তু এ বিষয়টি বুঝা কঠিন যে, এক ব্যক্তি একটা কথা বলল, আর সে কথাটার কারণে তার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হবে- আমি সালমান রুশদির কথা বুঝাতে চাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা যেহেতু মানুষ তাই এ ধরনের কোন রায় প্রকাশ করার অধিকার আমাদের নেই। এ ধরনের বিষয়ের ফয়সালা আল্লাহই করবেন।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 শুরুতেই আমরা আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি- আমাদের প্রতি আস্থা রেখে এ প্রশ্নটি আমাদের নিকট পাঠানোর জন্য, আমাদের বিশ্বাসের প্রতি আপনার অনুরক্ততার জন্য এবং প্রশ্নটির উত্তর জানার ব্যাপারে আপনার আগ্রহের জন্য। এ ওয়েব সাইটের একজন অতিথি হিসেবে, পাঠক হিসেবে ও জ্ঞানপিপাসু হিসেবে আপনাকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম।
 সুপ্রিয় পাঠক, আমরা আপনার চিঠিতে লক্ষ্য করেছি-

প্রথমে আমি মাহে রমজান মাস উপলক্ষে আপনাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করছি- আল্লাহ যেন আমাদের ও আপনাদের সিয়াম ও ক্বিয়াম কবুল করে নেন। আশা করছি- আমি রমজানের এই সুযোগকে সাধ্যানুযায়ী ইবাদতের মধ্যে ও সওয়াব হাছিলে কাজে লাগাব। তাই আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করব, আপনারা আমার ও আমার পরিবারের জন্য উপযোগী একটি প্রোগ্রাম উপস্থাপন করুন, যাতে আমরা এই মাসটি ভালো আমল ও আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারি।

প্রথমে আমি মাহে রমজান মাস উপলক্ষে আপনাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করছি- আল্লাহ যেন আমাদের ও আপনাদের সিয়াম ও ক্বিয়াম কবুল করে নেন। আশা করছি- আমি রমজানের এই সুযোগকে সাধ্যানুযায়ী ইবাদতের মধ্যে ও সওয়াব হাছিলে কাজে লাগাব। তাই আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করব, আপনারা আমার ও আমার পরিবারের জন্য উপযোগী একটি প্রোগ্রাম উপস্থাপন করুন, যাতে আমরা এই মাসটি ভালো আমল ও আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারি।


সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
আল্লাহ তাআলা সকলের সৎ কথা ও কাজ কবুল করুন এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে আমাদেরকে ইখলাস (একনিষ্ঠতা) দান করুন।
এটি এই মুবারক মাসে একজন মুসলিমের জন্য প্রস্তাবিত রুটিন :
 রমজান মাসে একজন মুসলিমের সারাদিন :
একজন মুসলিম তাঁর দিন শুরু করবে ফজরের সালাতের আগে সেহেরী গ্রহণের মাধ্যমে। উত্তম হচ্ছে যদি রাতের শেষ সময় পর্যন্ত বিলম্ব করে সেহেরী গ্রহণ করা যায়। আযানের আগে তিনি ফজরের সালাতের জন্য প্রস্তুতি নিবেন। বাসা হতে

মরক্কোর অধিবাসীদের মধ্যে শিশুর খতনা উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার প্রথা চালু আছে। এই অনুষ্ঠান করা কি সুন্নত; না বিদআত?


মরক্কোর অধিবাসীদের মধ্যে শিশুর খতনা উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার প্রথা চালু আছে। এই অনুষ্ঠান করা কি সুন্নত; না বিদআত?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ ও আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নবজাতকের খতনা উপলক্ষে ওলিমা বা ভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে দোষের কিছু নেই।
 ইবনে কুদামা (রহঃ) মুগনি গ্রন্থে (৭/২৮৬) বলেন:
খতনা উপলক্ষে দাওয়াত করা এবং বিয়ে ছাড়াও যে কোন উপলক্ষে খাওয়ার দাওয়াত করা মুস্তাহাব। যেহেতু এর মাধ্যমে খাদ্য খাওয়ানোর নেক আমল অর্জিত হয়। এ ধরনের দাওয়াত গ্রহণ করাও মুস্তাহাব; তবে ওয়াজিব নয়। এটি ইমাম মালেক, শাফেয়ি, আবু হানিফা ও তাঁর ছাত্রদের অভিমত।
 যে কোন দাওয়াতকারীর দাওয়াত গ্রহণ করা মুস্তাহাব। যেহেতু

জনৈক ব্যক্তি সরকারের অর্থ বিভাগে চাকুরী করেন। তাঁর দায়িত্ব হচ্ছে- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য আর্থিক প্রক্রিয়াগুলো সম্পাদন করা। এর মধ্যে রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে স্ব স্ব বেতন সম্পর্কে একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা। তাদের কেউ কেউ এই প্রত্যয়নপত্রটি সুদী ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে ব্যবহার করে থাকেন। এমতাবস্থায়, প্রত্যয়নপত্র ইস্যুকারী ব্যক্তি গুনাহগার হবেন কি না? উল্লেখ্য, এটা তার অফিসিয়াল দায়িত্ব।

জনৈক ব্যক্তি সরকারের অর্থ বিভাগে চাকুরী করেন। তাঁর দায়িত্ব হচ্ছে- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য আর্থিক প্রক্রিয়াগুলো সম্পাদন করা। এর মধ্যে রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে স্ব স্ব বেতন সম্পর্কে একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা। তাদের কেউ কেউ এই প্রত্যয়নপত্রটি সুদী ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে ব্যবহার করে থাকেন। এমতাবস্থায়, প্রত্যয়নপত্র ইস্যুকারী ব্যক্তি গুনাহগার হবেন কি না? উল্লেখ্য, এটা তার অফিসিয়াল দায়িত্ব।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেতন-প্রত্যয়নপত্র  ইস্যু করতে দোষের কিছু নেই। তবে সে প্রত্যয়নপত্রটি যদি ঋণ পাওয়ার জন্য কোন সুদী ব্যাংককে সম্বোধন করে লেখা হয় তাহলে এ ধরনের প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা জায়েয নেই। যেহেতু এটি আল্লাহর অবাধ্যতার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা; বরং একটি কবিরা গুনাহর কাজে সহযোগিতা করা। 
 ফতোয়া বিষয়ক

আমি জানি না আমার ঠিক কি করা উচিত? আমি বড় একটা গুনাহ করে ফেলেছি। আমি জানি, আমাদের সুন্দর ধর্মে “ধর্মগুরুর কাছে স্বীকারোক্তি” এ রকম কিছু নেই। কিন্তু আমি যেনা করে ফেলেছি। আমি আল্লাহর কাছে তওবা করতে চাই এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাই। আমি সূরা নূরের মধ্যে পেয়েছি যে, আমার মত ব্যক্তি কোন পুতপবিত্রা নারীকে বিয়ে করতে পারবে না। এখন আমার কী করা উচিত? আমি আশা করব আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাআলা আমার জন্য জাহান্নামের শাস্তি লাঘব করেন।

আমি জানি না আমার ঠিক কি করা উচিত? আমি বড় একটা গুনাহ করে ফেলেছি। আমি জানি, আমাদের সুন্দর ধর্মে “ধর্মগুরুর কাছে স্বীকারোক্তি” এ রকম কিছু নেই। কিন্তু আমি যেনা করে ফেলেছি। আমি আল্লাহর কাছে তওবা করতে চাই এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে চাই। আমি সূরা নূরের মধ্যে পেয়েছি যে, আমার মত ব্যক্তি কোন পুতপবিত্রা নারীকে বিয়ে করতে পারবে না। এখন আমার কী করা উচিত? আমি আশা করব আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাআলা আমার জন্য জাহান্নামের শাস্তি লাঘব করেন।


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 এক:
আপনি আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হবেন না। আল্লাহ তাআলার এই বাণীটি অধ্যয়ন করুন “বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”।[সূরা যুমার, আয়াত: ৫৩]
 দুই:
আপনি নিষ্কলুষভাবে আল্লাহর কাছে তওবা করুন। হারামের সকল পথ বন্ধ করে দিন। এই পাপে পুনরায় পতিত হওয়ার সকল উপায় উপকরণ কর্তন করুন। এছাড়া বেশি বেশি নেক কাজ করুন। কারণ নেককাজ বদকাজকে দূরীভূত করে দেয়।
 তিন:

কোন মুসলিমের জন্য কি বিভিন্ন জীবজন্তু যেমন ইঁদুর কাটা জায়েয আছে? যদি সেটা লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে হয়। অনুরূপভাবে শুকর কাটা ও মানুষের হাড্ডি স্পর্শ করা কি জায়েয আছে?

কোন মুসলিমের জন্য কি বিভিন্ন জীবজন্তু যেমন ইঁদুর কাটা জায়েয আছে? যদি সেটা লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে হয়। অনুরূপভাবে শুকর কাটা ও মানুষের হাড্ডি স্পর্শ করা কি জায়েয আছে?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 পড়াশুনার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গ বা অন্যকিছুর পোস্টমর্টেম করতে কোন আপত্তি নেই। যেহেতু এর মধ্যে কল্যাণের দিকটি প্রবল। অনুরূপভাবে পড়াশুনার উদ্দেশ্যে মানবদেহের পোস্টমর্টেম করতেও কোন বাধা নেই। তবে কোন মুসলমানের পোস্টমর্টেম করা যাবে না। যেহেতু

যয়তুন তেলে ঝাড়ফুঁক করার ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী? একই বোতলে কি একাধিক ব্যক্তি ঝাড়ফুঁক করতে পারেন?

যয়তুন তেলে ঝাড়ফুঁক করার ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী? একই বোতলে কি একাধিক ব্যক্তি ঝাড়ফুঁক করতে পারেন?


সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 আয়াতে কারীমা বা দোয়া দরুদ পড়ে যে কোন পানিতে ঝাড়ফুঁক করতে কোন বাধা নেই। সেটা যমযমের পানি হতে পারে, জয়তুনের তেল হতে পারে। এরপর সে পড়া তেল রোগীকে ব্যবহার করতে হবে এবং

রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বর্তমানে চেচনিয়াবাসী যে পরিস্থিতির মধ্যে আছে এ অবস্থায় চেচনিয়ার মুসলমানদেরকে যাকাত দেয়া কি জায়েয হবে?

রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বর্তমানে চেচনিয়াবাসী যে পরিস্থিতির মধ্যে আছে এ অবস্থায় চেচনিয়ার মুসলমানদেরকে যাকাত দেয়া কি জায়েয হবে?


 সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
 হ্যাঁ, চেচনিয়ার মুসলমানদেরকে যাকাত দেয়া জায়েয হবে। শরণার্থী তাবুতে অথবা অন্য যে কোন স্থানে বসবাসকারী বেসামরিক লোক হলে তারা ফকির ও মিসকীনের মধ্যে পড়বে। বরঞ্চ তাদের অনেকে কাফের রুশদের বিরুদ্ধে জিহাদে রত আছে বিধায় যাকাতের অষ্টখাতের একটি আল্লাহর রাস্তায় এর অধীনে পড়বে। আয়াতে কারীমাতে যাকাতের এ খাতকে এবং আল্লাহর রাস্তায় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
 আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন মুসলমানদেরকে বিজয়ী করেন এবং

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ