Monday, October 23, 2017

পাতলা কাপড়ে নামায পড়লে নামায শুদ্ধ কি? পাতলা শাড়ি বা ওড়না পড়ে মেয়েদের নামায কি শুদ্ধ হবে?

পাতলা কাপড়ে নামায পড়লে নামায শুদ্ধ কি?


যে কাপড় পড়া সত্ত্বেও পুরুষদের নাভির নিচে থেকে হাঁটু পর্যন্ত কোন অংশ খোলা থাকে অথবা আবছা দেখা যায়, সে কাপড়ে নামায শুদ্ধ হয় না। অনুরূপ যে শাড়ি বা ওড়নায় মহিলার মাথার চুল, ঘাড়, হাতের রলা, পেট বা পিঠের অংশ খোলা থাকে অথবা আবছা দেখা যায়, তাতে নামায হয় না। নামাযে সতর ঢাকা জরুরী। তা খোলা গেলে নামায ঘোলা হয়ে যাবে।

পাতলা শাড়ি বা ওড়না পড়ে মেয়েদের নামায কি শুদ্ধ হবে? 

যে লেবাস পরার পরেও ভিতরের চামড়া ও চুল নজরে আসে, সে লেবাস পরে নামায শুদ্ধ হবে না। ১৫৮

১৫৮ (ইবনে উষাইমীন)

অনেক নামাযী ঘরে নামায পড়ে, মসজিদে আসে না। তাদের ব্যাপারে বিধান কী?


অনেক নামাযী ঘরে নামায পড়ে, মসজিদে আসে না। তাদের ব্যাপারে বিধান কী?


তাদের জন্য বৈধ নয় ঘরে নামায পড়া। বরং তাদের জন্য ওয়াজেব হল, মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাআত সহকারে নামায আদায় করা। যেহেতু মহানবী (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আযান শোনা সত্ত্বেও মসজিদে জামাআতে এসে নামায আদায় করে না, কোন ওজর না থাকলে সে ব্যক্তির নামায কবুল হয় না।” ১৫৪

একটি অন্ধ লোক নবী (সঃ)এর নিকট এসে নিবেদন করল, “হে আল্লাহ্‌র রাসুল!

যে মসজিদে কবর আছে, সে মসজিদে নামায শুদ্ধ কি?

যে মসজিদে কবর আছে, সে মসজিদে নামায শুদ্ধ কি?


যে মসজিদে কবর আছে, সে মসজিদে নামায শুদ্ধ নয়, চাহে সে কবর নামাযীদের পিছনে বা সামনে, ডানে বা বামে হোক। যেহেতু নবী (সঃ) বলেছেন,  “ইয়াহুদী খ্রিস্টানদের উপর আল্লাহ্‌র অভিশাপ, কারণ তাঁরা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।” ১৫১
তিনি আরো বলেছেন,

প্লেনে কীভাবে নামায পড়া যাবে?

যেভাবে সম্ভব, সেভাবেই পড়ে নিতে হবে। কিবলা মুখে দাঁড়িয়ে, রুকু সিজদা যথা নিয়মে করা সম্ভব হলে, তা করতে হবে। নচেৎ বসে ইশারায় রুকু সিজদা করে নামায আদায় করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় করে চল।” (তাগাবুনঃ ১৬)
তিনি ইমারান বিন হুসাইন (রঃ) কে বলেছিলেন,

কোন ব্যক্তি মসজিদে এসে যদি দেখে যে, ইমাম শেষ তাশাহহুদে আছেন, তাহলে সে কি জামাআতে শামিল হবে, নাকি শামিল না হয়ে পরবর্তী জামাআতের অপেক্ষা করবে?

যদি সে নিশ্চিতভাবে জানে যে, পরবর্তী জামাআতের জন্য লোক আছে, তাহলে সে শেষ বৈঠকে শামিল না হয়ে অপেক্ষা করবে এবং জামাআতের সাথে নামায পড়বে। যেহেতু সঠিক মতে পূর্ণ এক রাকআত না পেলে জামাআত পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি কোন লোক আসার আশা না থাকে, তাহলে

জামাআত শেষে অনেক সময় মসজিদে সুন্নত পড়ি। এমন সময় কোন লোক আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমার ইক্তিদা করতে থাকে। এটা কি বৈধ? বৈধ হলে আমার কি করা উচিত?

জামায়াতের সওয়াব নেওয়ার উদ্দেশ্যে তা বৈধ। তখন আপনার উচিৎ ইমামতি নিয়ত করে তাকবীরাদি সশব্দে পড়া। আপনি সুন্নত পড়ছেন এবং সে নিশ্চয় ফরয পড়ছে। আপনাদের এই নিয়তের ভিন্নতা নামাযের কোন ক্ষতি করবে না। সাহাবী মুআয বিন জাবাল (রঃ) আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) এর সাথে নামায পড়তেন, তারপর

নামাযে শৈথিল্য বা ঢিলেমি করা অথবা নামাযকে ভারী মনে করা কাদের কাজ?


নামাযে শৈথিল্য বা ঢিলেমি করা অথবা নামাযকে ভারী মনে করা মুনাফিকদের কাজ। মহান আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় মুনাফিক (কপট) ব্যক্তিরা আল্লাহকে প্রতারিত করতে চায়। বস্তুতঃ তিনিও তাঁদেরকে প্রতারিত করে থাকেন এবং যখন তাঁরা নামাযে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে নিছক লোক দেখানোর জন্য দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে তাঁরা অল্পই স্মরণ করে থাকে।” (নিসাঃ ১৪২)
“আর তাদের দান খয়রাত গ্রহণযোগ্য না হওয়ার কারণ এ ছাড়া আর কিছুই নয় যে,

আমার রাত্রে শুতে দেরি হয়। ডিউটি শুরু হয় সকাল সাতটা থেকে। ফজর হয় চারটায়। ফজরের সময় উঠে জামায়াতে নামায পড়লে এবং তারপর শুলে আর ঘুম হয় না। সুতরাং আমি যদি ডিউটি শুরুর এক ঘণ্টা আগে এলার্ম লাগিয়ে শুই এবং ডিউটিতে যাবার আগে ফজরের নামাযটা পরে নেই, তাহলে কি যথেষ্ট হবে না?

না, সময় পার করে নামায পড়া যথেষ্ট নয়। ইচ্ছাকৃত সময় পার করে নামায পড়লে তা নষ্ট করারই শামিল। বহু উলামার মতে এমন ব্যক্তি ‘কাফের’ হয়ে যাবে। ১৪২
 যে নামাযীরা সময় পার করে নামায পড়ে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের ‘গাই’ উপত্যকা। মহান আল্লাহ বলেন,

কাজের চাপে সময় পার করে নামায পিছিয়ে দেয়া কি বৈধ?

কাজের চাপে সময় পার করে নামায পিছিয়ে দেয়া কি বৈধ?


নিজের কাজ বা সৃষ্টির কাজ আগে করা এবং স্রষ্টার কাজ পিছিয়ে দেয়া বৈধ হতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয় নামাযকে বিশ্বাসীদের জন্য নির্ধারিত সময়ে অবশ্য কর্তব্য করা হয়েছে। (নিসাঃ ১০৩)
যুদ্ধ চলাকালেও নামায পিছিয়ে না দিয়ে “সালাতুল খাওফ” পড়ার নির্দেশ আছে। সুতরাং

কোন কোন ভাল আমলের প্রশংসা শোনা গেলে তাঁর ফলে কি ঐ আমল বাতিল গণ্য হবে?

কোন কোন ভাল আমলের প্রশংসা শোনা গেলে তাঁর ফলে কি ঐ আমল বাতিল গণ্য হবে?


আমলকারীর নিয়তে প্রশংসা নেওয়ার নিয়ত না থাকলে প্রশংসনীয় আমল বাতিল হয় না। যেহেতু আবু যার্র (রঃ) হতে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেশা করা হল; বলুন, “ যে মানুষ সৎকাজ করে, আর লোকে তাঁর প্রশংসা করে থাকে (তাহলে এরূপ কাজ কি রিয়া বলে গণ্য হবে?)” তিনি বললেন, “এটা মুমিনের সত্বর সুসংবাদ।” ১৪০

অনেক সময় ভাল কাজ করি। অতঃপর এর ফলে লোকমাঝে চর্চা হয়, আমার সুনাম ও সুখ্যাতি হয়। অথচ আমি মনে মনে তা চাইনি। তাতে কি তা বাতিল হয়ে যাবে?

অনেক সময় ভাল কাজ করি। অতঃপর এর ফলে লোকমাঝে চর্চা হয়, আমার সুনাম ও সুখ্যাতি হয়। অথচ আমি মনে মনে তা চাইনি। তাতে কি তা বাতিল হয়ে যাবে?


মনে সুনামের কামনা না থাকা সত্ত্বেও যদি মানুষের মাঝে কারো সুনাম হয়, তাহলে জানতে হবে এটা তাঁর সত্বর সওয়াব। তবে তাতে তাঁর পরকালের সওয়াব বরবাদ হয়ে যাবে না। একদা রাসুলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হল; বলুন, “যে মানুষ সৎকাজ করে, আর লোকে তাঁর প্রশংসা করে থাকে, (তাহলে এরূপ কাজ কি রিয়া বলে গণ্য হবে?)” তিনি বললেন,

এক কর্মচারী বেনামাযী ছিল। মালিক বলল, “তুমি নামায পড়লে তোমার বেতন ১০০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তখন থেকে সে নামায পড়া শুরু করল।” প্রশ্ন হল, তাঁর নামায কি আল্লাহ্‌র নিকট গ্রহণযোগ্য?

আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোন উদেশ্যে, অর্থ, গদি, সুনাম, সুবিধা ইত্যাদি উপার্জনের উদেশ্যে কোন ইবাদত করলে তা মহান আল্লাহ্‌র কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
রাসুল (সঃ) বলেছেন, “যাবতীয় কা কার্য নিয়ত বা সংকল্পের উপর নির্ভরশীল। আর মানুষের জন্য তাঁর প্রাপ্য হবে, যার সে নিয়ত করবে। অতএব যে ব্যক্তির হিজরত (স্বদেশত্যাগ) আল্লাহ্‌র (সন্তোষ লাভের) উদ্দেশ্যে ও তাঁর রাসুলের জন্য হবে; তাঁর হিজরত তাঁর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের জন্যই হবে। আর যে ব্যক্তির হিজরত তাঁর পার্থিব সম্পদ অর্জন কিংবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদেশ্যেই হবে, তাঁর

মুখে নিয়ত পড়া কি শরীয়তসম্মত? ওযু, নামায ইত্যাদির নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা কি বিধেয়?

মুখে নিয়ত পড়া কি শরীয়তসম্মত?


মোটেই না। মুখে নিয়ত পড়া বিদআত। নিয়ত করা জরুরী, কিন্তু পড়া বিদআত। কত শত ইবাদতের মধ্যে আর কয়টা নিয়তই বা আরবীতে মুখস্থ করবেন? মনের সংকল্পই হল নিয়ত।

ওযু, নামায ইত্যাদির নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা কি বিধেয়?


ইবাদতের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বিদআত। যেহেতু তা মহানবী (সঃ) তাঁর কোন সাহাবী কর্তৃক প্রমাণিত নয়। সুতরাং তা বর্জন করা ওয়াজেব। নিয়ত মানে সংকল্প। আর তাঁর স্থান হল মনে। অতএব তা মুখে উচ্চারণ করার কোনই প্রয়োজন নেই। ১৪১

ফুটনোটঃ১৪১ (ইবন বায, ইবন ঊসায়মিন)

লেখক/সংকলকঃ আবদুল হামীদ ফাইযী

জান্নাতে স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপারে কী ঘটবে? শুনেছি একজন স্ত্রী ছাড়াও স্বামীর জন্য সত্তরটি হূর থাকবে তার খেদমতের জন্য, এটা আমার জন্য ইনসাফের বিষয় হতে পারে না, যদি স্বামীর সম্ভাগে এ পদ্ধতিতে অন্যকে শরীক করা হয়।




#প্রশ্ন: জান্নাতে স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপারে কী ঘটবে? শুনেছি একজন স্ত্রী ছাড়াও স্বামীর জন্য সত্তরটি হূর থাকবে তার খেদমতের জন্য, এটা আমার জন্য ইনসাফের বিষয় হতে পারে না, যদি স্বামীর সম্ভাগে এ পদ্ধতিতে অন্যকে শরীক করা হয়।
আলহামদুলিল্লাহ, প্রথমত:

একজন মুমিনের উপর কর্তব্য হচ্ছে, আল্লাহ তা‘আলার শরী‘আতগত বিধি-বিধান ও তাকদীরগত বিধি-বিধানসমূহকে নির্দ্বিধায় মেনে নেয়া। 
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ إِنَّمَا كَانَ قَوۡلَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذَا دُعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ لِيَحۡكُمَ بَيۡنَهُمۡ أَن يَقُولُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۚ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ٥١ ﴾ [النور: ٥١]
“মুমিনদের উক্তি তো এই---যখন তাদের মধ্যে বিচার-ফয়সালা করে দেয়ার জন্য আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের দিকে ডাকা হয়, তখন তারা বলে, ‘আমরা শুনলাম এবং আনুগত্য করলাম।’ আর তারাই সফলকাম।” [সূরা আন-নূর: ৫১]
.
আর যখন আল্লাহর বিধি-বিধান, হুকুম আহকাম সম্পর্কে কোনো মুমিনের কোনো প্রশ্ন থাকে, আর সে উক্ত বিধানের প্রকৃত অর্থ বা হেকমত তথা রহস্য না জানে, তখন তার উপর কর্তব্য হচ্ছে তা বলা, যা জ্ঞানে সুদৃঢ় ব্যক্তিগণ বলে থাকেন, তারা বলেন,

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ