Friday, April 27, 2018

আকীদা বিষয়ক ৫০টি প্রশ্নোত্তর

আকীদা বিষয়ক ৫০টি প্রশ্নোত্তর

بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
الحمد لله وحده والصلاة والسلام على من لانبي بعده
সুপ্রিয় দ্বীনী ভাই ও বোনেরা,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অত:পর ‘আকীদা বিষয়ক ৫০টি প্রশ্নোত্তর’ শীর্ষক ছোট্ট এই পুস্তিকাটিতে ইসলামের অত্যন্ত মৌলিক এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে ৫০টি প্রশ্নোত্তর প্রস্তুত করা হয়েছে-যেগুলো সম্পর্কে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জ্ঞান থাকা অপরিহার্য।
এখানে যে সব বিষয় আলোচিত হয়েছে সেগুলো হল:
• মহান আল্লাহর পরিচয়
• ইসলাম এবং তার রোকন সমূহ
• ঈমান ও তার রোকন সমূহ
• তাওহীদ ও তার প্রকারভেদ
• শিরক ও তার প্রকারভেদ।
• কুফরী ও তার প্রকারভেদ
• মুনাফেকি এবং তার প্রকারভেদ
• কালিমার অর্থ এবং শর্তাবলী
• ইবাদতের পরিচয় এবং তা কবুলের শর্তাবলী
• তাগুতের পরিচয় ও তার প্রকারভেদ
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে জ্ঞানের আলোকিত পথ ধরে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
-বিনীত, আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
❖ ১ম প্রশ্ন: আমার, আপনার এবং পৃথিবীর সব কিছুর স্রষ্টা ও পালনকর্তা কে?

Tuesday, April 24, 2018

শবে বরাতঃ সঠিক দৃষ্টিকোণ

শবে বরাতঃ সঠিক দৃষ্টিকোণ

শবে বরাতের মত একটি বিষয় নিয়ে কিছু লেখার কি প্রয়োজন ছিল? আমি এর কৈফিয়ত স্বরূপ কিছু কথা না বলে পারছিনা।
(এক) গত ৪/১২/১৯৯৮ ইংরেজী তারিখে আমি গাজীপুরের একটি মাসজিদে জুমু‘আর খুতবাহ ও আলোচনায় শবে বরাত সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলাম। আলোচনা শেষে উপসি’ত মুসল্লীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অনেকে বলেছেন ঃ “শবে বরাত সম্পর্কে এমন স্পষ্ট কথা আগে কোথাও শুনিনি।” আবার অনেকে “যতসব নুতন নুতন মাসালা” আখ্যায়িত করে আমার আলোচনাকে প্রত্যাখ্যান করলেন। সেখানে উপসি’ত ছিলেন প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন, লেখক ও গবেষক আবুল বাশার মুহাম্মাদ ইকবাল (রহঃ)। তিনি আমাকে বললেন ঃ

মাহে শাবান ও শবে বরাতঃ করণীয় ও বর্জনীয়

মাহে শাবান ও শবে বরাতঃ করণীয় ও বর্জনীয়

হিজরী সনের ৮ম মাস হচ্ছে শাবান মাস। তার পরই আসে বছরের শ্রেষ্ঠ রামাযান মাস। সে হিসেবে মুসলিমের জীবনে এ মাসের যথেষ্ঠ গুরুত্ব রয়েছে। দীর্ঘ টানা একমাস তাকে সিয়াম সাধনা করতে করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন মানসিক, শারিরিক ও আর্থিক প্রস্তুতি। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাযানে প্রস্তুতি স্বরূপ অন্য মাসের তুলনায় শাবান মাসে বেশী বেশী নফল রোযা রাখতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ
فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلاَّ رَمَضَانَ ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِى شَعْبَانَ
আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রামাযন ব্যতীত অন্য কোন পূর্ণ মাসে রোযা রাখতে দেখে নি। আর তাঁকে আমি শাবান মাসের চেয়ে অধিক রোযা অন্য কোন মাসে রাখতে দেখি নি। (বুখারী) সুতরাং শাবান মাসে আমরাও রাসূলের সুন্নাত অনুযায়ী বেশী বেশী করে রাখবো এবং আল্লাহর কাছে প্রাণ খুলে দুআ করবো, তিনি যেন আমাদেরকে রামাযান পর্যন্ত হায়াত দান করেন এবং রামাযানের ফজীলত ও বরকত হাসিল করার তাওফীক দেন।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে,

শাবানের পনেরতম রজনী উদযাপন, শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

শাবানের পনেরতম রজনী উদযাপন, শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

শবে বরাত সম্পর্কে বিশ্ব বরেণ্য আলেম শায়খ আবদুল আযীয আবদুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ এর প্রবন্ধ –
حكم الاحتفال بليلة النصف من شعبان للشيخ عبد العزيز بن عبد الله بن باز رحمه الله
‘মধ্য শাবানের রাত উদযাপনের বিধান’ এর সার-সংক্ষেপ তুলে ধরব। তার এ প্রবন্ধে অনেক উলামায়ে কিরামের মতামত তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেছেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ
اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الإسلام دينا. (المائدة : ৩)
অর্থঃ আজ আমি তোমাদের দীনকে তোমাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের জন্য আমার নেআমাত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসাবে মনোনীত করলাম। (সূরা আল – মায়িদা: ৩)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেনঃ

শবে বরাত উপলক্ষে প্রচলিত কতিপয় বিদ’আতের উদাহরণ

শবে বরাত উপলক্ষে প্রচলিত কতিপয় বিদ’আতের উদাহরণ


আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রিয় ভাই, আর ক’দিন পরই আমাদের সমাজে মহাসমারোহে পালিত হবে শবে বরাত। সে দিন সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হবে। হালুয়া-রুটি খাওয়ার ধুম পড়ে যাবে। অনুষ্ঠিত হবে মিলাদ মাহফিল ও জিকিরের মজলিস। সেই সাথে মুর্হুমূহু আতশবাজিতে কেঁপে কেঁপে উঠবে শবে বরাতের রাতের আকাশ। আরও দেখা যাবে মসজিদের আঙ্গিনাতে যাদের পদ যুগল পড়ত না সে রাতে তারাই আতর-সুগন্ধি মেখে টুপি-পাঞ্জাবী পরে মসজিদের প্রথম কাতারে মুসল্লী সেজে অবস্থান করছে আর বিশেষ কিছু এবাদত-বন্দেগী করে মনে করবে জীবনের সব গুনাহ মাফ হয়ে গেছে। তারপর দিন সকাল থেকে লিপ্ত হবে যাবতীয় অন্যায়-অপকর্ম, দুর্নীতি আর আল্লাহর নাফরমানীতে। হয়ত সে দিনকার ফজরের নামায পড়ারও সময় হবে না। আর অপেক্ষায় থাকবে আগামী বছর শবে বরাতের। এভাবে আরও কত কি? আমাদের সমাজের এ অবস্থায় আমরা জানার চেষ্টা করি একাজগুলো কতটুকু ইসলাম সমর্থিত?
যে সকল ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম সমর্থন দেয় নি সেটা ইসলামের নামে করাই তো বিদআত। বিদআতের পরিণাম অতি ভয়ানক। এ ব্যাপারে কুরআনও হাদীসে অসংখ্য সতর্কতা উচ্চারিত হয়েছে। তাই আসুন, আমরা নিজেরা বিদআত থেকে বাঁচি সেই সাথে বাঁচানোর চেষ্টা করি আমাদের সমাজকে। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।

আমাদের সমাজে শবে বরাত উপলক্ষে প্রচলিত কতিপয় বিদআতের উদাহরণ:

শাবান মাস: সুন্নত উপেক্ষিত বিদ’আত সমাদৃত

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রাণ প্রিয় ভাই, রামাযানুল মোবারকের প্রস্তুতির মাস শাবান আমাদের মাঝে উপস্থিত। এ মাসে আমাদের জন্য রয়েছে কিছু করণীয়। রয়েছে কিছু বর্জনীয়। এ বিষয়টি নিয়েই আজকের এই পোস্টের অবতারণা। এতে মোট ৭টি বিষয় আলোচিত হয়েছে। যথা:
১) শাবান মাসে নফল রোযা রাখা সম্পর্কে বর্ণিত সহীহ হাদীস সমূহ।
২) শাবান মাসের পনের তারিখের ব্যাপারে একটি হাদীস পর্যালোচনা ও তার শিক্ষা।
৩) শাবান মাস সম্পর্কে কতিপয় প্রচলিত জাল ও যঈফ হাদীস|
৪) কুরআন কোন রাতে অবর্তীণ হয়? শাবান মাসের শবে বরাতে নাকি রামাযান মাসের শবে কদরে?
৫) শবে বরাত উদ্‌যাপন করা বিদআত।
৬) শাবান মাসে প্রচলিত কতিপয় বিদআত।
৭) সারাংশ।

১) শাবান মাসে নফল রোযা রাখা সম্পর্কে বণির্ত সহীহ হাদীস সমূহ:

শবে বরাত নামে পরিচিত(লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানে) আমরা কি করতে পারি? 

শবে বরাত নামে পরিচিত(লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানে) আমরা কি করতে পারি? 
====================
প্রথম কথা হলো শবে বরাত ফারসি শব্দ, শবে বরাত নামে যে ভাগ্য রজনী মনে করা হয়, এই নামে কুরআন হাদিসে কোন কিছু নেই। লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান বা শাবানের মধ্যরাত্রির ব্যাপারে বেশ কিছু হাদিস বর্ণিত হয়েছে, বেশীরভাগ মুহাদ্দিস হাদিসগুলোকে বানোয়াট ও দুর্বল বলেছেন। সৌদিআরবের সন্মানিয় বিগত গ্র্যান্ড মুফতি শাইখ বিন বাজ (রঃ) বলেন, এ ব্যাপারে বর্ণিত কোন হাদিসই বিশুদ্ধ নয়। বিপরীতে কিছু মুহাদ্দিস নিম্নে বর্ণিত হাদিসটিকে কেউ হাসান আবার কেউ সহিহও বলেছেন-
আবু মূসা আল আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আল্লাহ তা‘আলা শাবানের মধ্যরাত্রিতে আগমণ করে, মুশরিক ও ঝগড়ায় লিপ্ত ব্যক্তিদের ব্যতীত, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিজগতকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ-হাদীস নং ১৩৯০, তাবরানী মু’জামুল কাবীর)

Friday, April 20, 2018

কুরআন সম্পর্কে কতিপয় ভুল বিশ্বাস ও আচরণ:




কুরআন সম্পর্কে কতিপয় ভুল বিশ্বাস ও আচরণ:

🔘 ১) অর্ধ শাবানের রাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে বলে বিশ্বাস করা। অথচ তা অবতীর্ণ হয়েছে রামাযান মাসের কদরের রাতে। (সূরা বাকারা: ১৮৫ ও সূরা কদর)
🔘 ২) কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কুরআন (সূরা ফাতিহা, নাস, ফালাক, ইখলাস ইত্যাদি সূরা) পাঠ করা। এটি দলীল বহির্ভূত কাজ হওয়ার কারণে বিদয়াত।
🔘 ৩) মৃত শয্যায় শায়িত ব্যক্তির পাশে কুরআন পাঠ করা। এটি বিদআত। অথচ সুন্নত হচ্ছে, মৃত্যু পথযাত্রীকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ র তালকীন দেয়া বা তাকে শুনিয়ে কালিমা পাঠ করা।
🔘 ৪) কুরআন খতম (শবিনা খতম) করে তার সওয়াব মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বখশীয়ে দেয়া। এটিও দলীল বহির্ভূত হওয়ার কারণে বিদআত।
🔘 ৫) অসর্তকতা বশত: হাত থেকে কুরআন পড়ে গেলে তার ওজন বরাবর চাল সদকা করা। এটি শরীয়তের কোন বিধান নয়। বরং এজন্য জন্য আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করা প্রয়োজন।

Tuesday, April 17, 2018

প্রশ্ন: তাসবীহদানা এবং কাউন্টার মেশিন দিয়ে তাসবিহ পাঠ করা সুন্নাত না বিদায়াত? আশা করি, দলিল ভিত্তিক উত্তর প্রদান করে সাহায্য করবেন৷

তাসবীহদানা এবং কাউন্টার মেশিন দিয়ে তাসবিহ পাঠ করার বিধান
•••••••••••••••••••••
প্রশ্ন: তাসবীহদানা এবং কাউন্টার মেশিন দিয়ে তাসবিহ পাঠ করা সুন্নাত না বিদায়াত? আশা করি, দলিল ভিত্তিক উত্তর প্রদান করে সাহায্য করবেন৷


উত্তর: 

হাতের আঙ্গুল দিয়ে তাসবীহ গণনা করা উত্তম। কেননা, এই আঙ্গুলগুলো কিয়ামতের দিন সাক্ষ্য দিবে। তবে কারও আঙ্গুলে সমস্যা থাকলে কিংবা অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে সংখ্যা মনে রাখতে না পারলে তখন তাসবীহ দানা বা ডিজিটাল কাউন্টার মেশিন ব্যবহার করতে দোষ নেই ইনশাআল্লাহ।

*শাইখ ইবনে উছাইমীন রহ.*

প্রশ্ন: আঙ্গুল দ্বারা তাসবীহ গণনা করা উত্তম না তাসবীহদানা দ্বারা?

Wednesday, April 11, 2018

সুতরার বিধান কি? এবং এর সীমা কতটুকু?

(২৬৭) সুতরার বিধান কি? এবং এর সীমা কতটুকু?


সুতরা গ্রহণ করা সুন্নাতে মুআক্কাদা। তবে জামাতের সাথে নামায পড়লে মুক্তাদীর জন্য সুতরার দরকার নেই। ইমামের সুতরা মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট। এর সীমা সম্পর্কে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ
 مِثْلَ مُؤْخِرَةِ الرَّحْلِ 
“উটের উপর হেলান দিয়ে বসার জন্য তার পিঠে যে কাঠ রাখা হয় তার উচ্চতার বরাবর।”

মসজিদে হারামে মুছল্লীর সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার বিধান কি? নামায ফরয হোক বা নফল। মুছল্লী মুক্তাদী হোক বা একাকী হোক।

(২৬৮) মসজিদে হারামে মুছল্লীর সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার বিধান কি? নামায ফরয হোক বা নফল। মুছল্লী মুক্তাদী হোক বা একাকী হোক।


মসজিদুল হারাম বা অন্য কোন স্থানে মুক্তাদী মুছল্লীর সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করতে কোন অসুবিধা নেই। কেননা ইবনু আব্বাস (রাঃ) মিনায় আগমণ করলেন। তখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের নিয়ে একটি দেয়াল সামনে রেখে নামায আদায় করছিলেন। ইবনু আব্বাস কাতারের সম্মুখ দিয়ে একটি গাধার পিঠে চড়ে অতিক্রম করলেন। কেউ তার প্রতিবাদ করেনি।
মুছল্লী যদি ইমাম বা একক হয়, তবে তার সম্মুখ দিয়ে যাওয়া জয়েয নেই। চাই তা

নামাযের সময় মুছল্লীদের সম্মুখে বৈদ্যুতিক হিটার (শীতকালে ঠান্ডা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হিটার) রাখার বিধান কি? এক্ষেত্রে কি কোন শরঈ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে?

(২৬৯) নামাযের সময় মুছল্লীদের সম্মুখে বৈদ্যুতিক হিটার (শীতকালে ঠান্ডা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হিটার) রাখার বিধান কি? এক্ষেত্রে কি কোন শরঈ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে?


মুছল্লীদের সম্মুখভাগে ক্বিবলার দিকে হিটার রাখতে কোন অসুবিধা নেই। শরীয়তে এর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আমার কোন কিছু জানা

নামাযের ক্বিরাতে জান্নাত ও জাহান্নামের আলোচনা আসলে জান্নাতের প্রার্থনা এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় কামনা করা জায়েয কি?

(২৭০) নামাযের ক্বিরাতে জান্নাত ও জাহান্নামের আলোচনা আসলে জান্নাতের প্রার্থনা এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় কামনা করা জায়েয কি?


হ্যাঁ, এটা জায়েয। এক্ষেত্রে ইমাম, মুক্তাদী বা একক ব্যক্তির মাঝে কোন পার্থক্য নেই। তবে মুক্তাদীর যেন ইমামের ক্বিরআত নীরব থেকে শোনার ব্যাপারে কোন ব্যাঘাত না

সাহু সিজদা করার কারণ সমূহ কি কি?

(২৭১) সাহু সিজদা করার কারণ সমূহ কি কি?


সাহু সিজদা সংবিধিবদ্ধ করার পিছনে রহস্য হল এই যে, এটা নামাযের মধ্যে যে ত্রুটি হয় তার পূর্ণতা দান করে।
তিনটি কারণে নামাযে সাহু সিজদা দিতে হয়ঃ
১) নামায বৃদ্ধি হওয়া। যেমন, কোন রুকূ বা সিজদা বা বসা ইত্যাদি বৃদ্ধি হওয়া।
২) হরাস হওয়া। কোন রুকন বা ওয়াজিব কম হওয়া।
৩) সন্দেহ হওয়া। কত রাকাত পড়েছে তিন না চার এব্যাপারে সংশয় হওয়া।
প্রথমতঃ ছালাতে বৃদ্ধি হওয়া:

ইমাম ভুলক্রমে এক রাকাআত নামায বৃদ্ধি করেছেন। আমি মাসবূক হিসেবে ইমামের অতিরিক্ত নামায আমার নামাযের সাথে মিলিয়ে নিয়েছি। আমার নামায কি বিশুদ্ধ হয়েছে? আর যদি ঐ রাকাতের হিসাব না ধরি তবে তার বিধান কি?

(২৭২) ইমাম ভুলক্রমে এক রাকাআত নামায বৃদ্ধি করেছেন। আমি মাসবূক হিসেবে ইমামের অতিরিক্ত নামায আমার নামাযের সাথে মিলিয়ে নিয়েছি। আমার নামায কি বিশুদ্ধ হয়েছে? আর যদি ঐ রাকাতের হিসাব না ধরি তবে তার বিধান কি?


সঠিক মত হচ্ছে আপনার নামায বিশুদ্ধ হয়েছে। কেননা আপনি নামায পূর্ণভাবে আদায় করেছেন। ইমাম যে ভুল করেছেন সে তার উপর বর্তাবে। ভুল হওয়ার কারণে তিনি মা‘যুর (অপারগ ও অক্ষম)। কিন্তু আপনি যদি ঐ রাকাআতের হিসাব না ধরেন এবং অতিরিক্ত রাকাআত আদায় করেন,

তাহাজ্জুদ নামাযে ভুলক্রমে তৃতীয় রাকাআতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়লে করণীয় কি?

(২৭৩) তাহাজ্জুদ নামাযে ভুলক্রমে তৃতীয় রাকাআতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়লে করণীয় কি?


স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে বসে পড়বে। অন্যথায় তার নামায বাতিল হয়ে যাবে। কেননা ইচ্ছাকৃতভাবে তার নামায বৃদ্ধি হয়ে গেল। ইমাম আহমাদ বলেছেন, কোন লোক যদি রাতের নফল নামাযে তৃতীয় রাকাআতের জন্য দন্ডায়মান হয়, তবে সে যেন ফজর নামাযে তৃতীয় রাকাতের জন্য দন্ডায়মান হওয়া বৈধ করে নিল। এ অবস্থায় সে যদি না বসে যায় তবে তার ছালাত বাতিল হয়ে যাবে। তবে বিতর নামায এর বিপরীত। যদি নিয়ত করে (দু’সালামে) তিন রাকাত বিতর পড়বে। (অর্থাৎ- দু’রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে এক রাকাআত পড়বে) কিন্তু দু’রাকাত পড়ে না বসে ভুলক্রমে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়েছে।

প্রথম তাশাহুদ না পড়ে দাঁড়িয়ে পড়লে করণীয় কি? এক্ষেত্রে কখন সাহু সিজদা করতে হবে?

(২৭৪) প্রথম তাশাহুদ না পড়ে দাঁড়িয়ে পড়লে করণীয় কি? এক্ষেত্রে কখন সাহু সিজদা করতে হবে?


এ অবস্থায় ফিরে আসবেন না তথা বসে পড়বেন না; বরং নামায চালিয়েই যাবেন। কেননা আপনি তাশাহুদ থেকে পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন এবং পরবর্তী রুকনে চলে গিয়েছেন। এ অবস্থায় ফিরে আসা মাকরূহ, তবে যদি ফিরে এসে বসে পড়েন, তবে নামায বাতিল হবে না। কেননা আপনি হারাম কিছু করেননি। তবে এ অবস্থায় সাহু সিজদা করতে হবে। আর তা সালামের পূর্বে।

Tuesday, April 10, 2018

কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে জেনে নেই মিরাজের ঘটনা

মিরাজের ঘটনা কুরআন ও সহীহ হাদীছের
মাধ্যমে প্রমাণিত। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
) ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃَﺳْﺮَﻯ ﺑِﻌَﺒْﺪِﻩِ ﻟَﻴْﻠًﺎ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟْﺄَﻗْﺼَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﺎﺭَﻛْﻨَﺎ ﺣَﻮْﻟَﻪُ ﻟِﻨُﺮِﻳَﻪُ ﻣِﻦْ ﺁﻳَﺎﺗِﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻪ
ﻫُﻮَ ﺍﻟﺴَّﻤِﻴﻊُ ﺍﻟْﺒَﺼِﻴﺮُ (
“পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রজনীর
কিয়দাংশে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদুল হারাম হতে
মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশকে আমি
করেছিলাম বরকতময়। তাঁকে আমার নিদর্শন দেখাবার
জন্যে। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোত, সর্বদ্রষ্টা। (সূরা
বাণী ইস্রাঈলঃ ১)
মেরাজ কখন সংঘটিত হয়েছিল?
মেরাজ কখন হয়েছিল সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট
কোন দলীল পাওয়া যায় না। সুতরাং 
২৭ রজব মেরাজ
হওয়ার অনুমান ঠিক নয়। তবে বিশুদ্ধ কথা হল: তায়েফ
থেকে ফেরত আসার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামএর মিরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল।
(দেখুন: রাহীকুল মাখতুম)
মিরাজ হয়েছিল স্বশরীরেঃ

তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামায কখন ও কিভাবে পড়তে হয়? এবং এই নামাজের গুরুত্ব কি? মসজিদে প্রবেশ করে তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজ না পড়ে বসা কি সুন্নাহ সম্মত?

তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামায কখন ও কিভাবে পড়তে হয়? এবং এই নামাজের গুরুত্ব কি? মসজিদে প্রবেশ করে তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজ না পড়ে বসা কি সুন্নাহ সম্মত?
তাহিয়্যাতুল মাসজিদ বা মসজিদ সেলামীর নামায (২ রাক্‌আত) মসজিদ প্রবেশ করার পর বসার পূর্বেই পড়তে হয়। এর জন্য কোন সময়-অসময় নেই। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের মধ্যে যে কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন বসার পূর্বে ২ রাক্‌আত নামায পড়ে নেয়।” অন্য এক বর্ণনায় আছে, “সে যেন ২ রাক্‌আত নামায পড়ার পূর্বে না বসে।” (বুখারী, মুসলিম, সহীহ প্রমুখ ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৪৬৭নং)

এই দুই রাকআত নামায বড় গুরুত্বপূর্ণ। তাই তো জুমআর দিনে খুতবা চলাকালীন সময়েও মসজিদে এলে হাল্কা করে তা পড়ে নিতে হয়। (মুসলিম, মিশকাত ১৪১১নং)

আযান চলাকালে

Monday, April 9, 2018

বিতর নামাযের বিধান কি? উহা কি শুধু রামাযান মাসের জন্যই?

(২৭৫) বিতর নামাযের বিধান কি? উহা কি শুধু রামাযান মাসের জন্যই?


বিতর নামায রামাযান মাসে ও সকল মাসে সুন্নাতে মুআক্কাদা। ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য বিদ্বানগণ বলেছেনঃ ‘যে বিতর নামায পরিত্যাগ করে সে খারাপ লোক। তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা উচিৎ নয়।’ সুন্নাতে মুআক্কাদা এ ইবাদতটি রামাযান বা যে কোন সময় পরিত্যাগ করা কোন মুমিনের জন্য উচিৎ নয়। বিতর হচ্ছে সর্বনিম্ন এক রাকাতের মাধ্যমে রাতের নামাযের সমাপ্তি করা। অনেকে মনে করে বিতর মানেই কুনূত। কিন্তু তা ঠিক নয়। কুনূত এক বিষয় বিতর অন্য বিষয়। তবে বিতর নামাযে দু’আ কুনূত পাঠ করা যায়। কিন্তু

দু’আ কুনূতের জন্য কি বিশেষ কোন দু’আ আছে? এ সময় দু’আ কি দীর্ঘ করা যায়?

(২৭৬) দু’আ কুনূতের জন্য কি বিশেষ কোন দু’আ আছে? এ সময় দু’আ কি দীর্ঘ করা যায়?


এক্ষেত্রে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসান বিন আলী (রাঃ)কে যে দু’আটি শিক্ষা দিয়েছিলেন, তাকেই দু’আ কুনূত বলা হয়। দু’আটি নিম্নরূপঃ
]اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ فَإِنَّكَ تَقْضِي وَلَا يُقْضَى عَلَيْكَ وَإِنَّهُ لَا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ وَلاَ يَعِزُّ مَنْ عاَدَيْتَتَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ[
“হে আল্লাহ্‌! তুমি যাদেরকে হেদায়াত করেছো, আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো। তুমি যাদেরকে নিরাপদে রেখেছো আমাকে তাদের দলভুক্ত করো। তুমি যাদের অভিভাকত্ব গ্রহণ করেছো আমাকে তাদের দলভুক্ত করো। তুমি আমাকে যা দিয়েছো তাতে বরকত দাও, তুমি যে অমঙ্গল নির্দিষ্ট করেছো তা হতে আমাকে রক্ষা করো। কারণ তুমিই তো ভাগ্য নির্ধারণ করো, তোমার উপর তো কেহ ভাগ্য নির্ধারণ করার নেই। তুমি যার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছো সে কোনদিন অপমানিত হবে না। এবং তুমি যার সাথে শত্রুতা করেছো সে কোন দিন সম্মানিত হতে পারে না। হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি বরকতপূর্ণ ও সুমহান।”
ইমাম এই দু’আ পাঠ করলে তিনি একবচনের স্তলে বহুবচন শব্দ ব্যবহার করবেন। কেননা

দু’আ কুনূত পাঠ করার সময় হাত উত্তোলন করা কি সুন্নাত? দলীলসহ জবাব চাই।

(২৭৭) দু’আ কুনূত পাঠ করার সময় হাত উত্তোলন করা কি সুন্নাত? দলীলসহ জবাব চাই।


হ্যাঁ, সুন্নাত হচ্ছে দু’আ কুনূত পাঠ করার সময় হাত উত্তোলন করা। কেননা মুসলমানদের উপর কোন বিপদ এলে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরয নামাযে কুনূত পাঠ করার সময় এরূপ করেছিলেন। অনুরূপভাবে ছহীহ্‌ভাবে প্রমাণিত হয়েছে আমীরুল মু’মেনীন উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) বিতরের কুনূতে হাত উত্তোলন করেছেন। তিনি খোলাফা রাশেদার মধ্যে অন্যতম। যাদের অনুসরণ করার জন্য আমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে।
অতএব

ফরয নামাযে কুনূত পড়ার বিধান কি? যদি মুসলমানদের কোন বিপদ আসে তখন করণীয় কি?

(২৭৮) ফরয নামাযে কুনূত পড়ার বিধান কি? যদি মুসলমানদের কোন বিপদ আসে তখন করণীয় কি?


ফরয নামাযে কুনূত পড়া শরীয়ত সম্মত নয়। তা উচিৎও নয়। কিন্তু ইমাম যদি কুনূত পড়েন তার অনুসরণ করতে হবে। কেননা ইমামের বিরোধীতায় অকল্যাণ রয়েছে।

তারাবীহ্‌ নামাযের বিধান কি? এর রাকাত সংখ্যা কত?

(২৭৯) তারাবীহ্‌ নামাযের বিধান কি? এর রাকাত সংখ্যা কত?


তারাবীহ্‌ নামায রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত। বুখারী ও মুসলিমে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযানের এক রাতে (তারাবীহ) নামায আদায় করলেন। লোকেরাও তাঁর সাথে ছালাত আদায় করল। পরবর্তী রাতেও ছালাত আদায় করলেন। এরাতে মানুষের সংখ্যা অনেক বেশী হল। অতঃপর তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাতেও তারা সমবেত হলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর বের হলেন না। প্রভাত হলে তিনি বললেন,

তারাবীহ্‌ নামাযে কুরআন খতম করার দু’আ পাঠ করার বিধান কি?

(২৮০) তারাবীহ্‌ নামাযে কুরআন খতম করার দু’আ পাঠ করার বিধান কি?


রামাযান মাসে তারাবীহ্‌ নামাযে কুরআন খতম করার দু’আ পাঠ করার ব্যাপারে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত বা ছাহাবায়ে কেরাম থেকে কোন হাদীছ আমি জানিনা। খুব বেশী যা পাওয়া যায় তা হচ্ছে, আনাস বিন মালেক (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ। ‘তিনি (আনাস) কুরআন খতম করলে পরিবারের লোকদের একত্রিত করে দু’আ করতেন।’ তবে এটা নামাযের বাইরের কথা।
কুরআন খতমের দু’আ সুন্নাত থেকে তো প্রমাণিত নয়ই তারপরও এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু মসজিদে অতিরিক্ত ভীড় লক্ষ্য করা যায়। অতঃপর

প্রতি বছর কি লাইলাতুল কদর নির্দিষ্ট এক রাতেরই হয়ে থাকে? না কি তা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাতে হয়ে থাকে?

(২৮১) প্রতি বছর কি লাইলাতুল কদর নির্দিষ্ট এক রাতেরই হয়ে থাকে? না কি তা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাতে হয়ে থাকে?


নিঃসন্দেহে লাইলাতুল কদর রামাযান মাসে হয়ে থাকে। আল্লাহ্‌ বলেনঃ
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
“নিশ্চয় আমি উহা অবতীর্ণ করেছি কদরের রাত্রিতে।” (সূরা কদরঃ ১) অন্য আয়াতে পবিত্র কুরআন রামাযান মাসে নাযিল হয় একথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ্‌ বলেনঃ

তারাবীহ্‌ নামাযে কুরআন হাতে নিয়ে ইমামের পড়ার অনুসরণ করার বিধান কি?

(২৮২) তারাবীহ্‌ নামাযে কুরআন হাতে নিয়ে ইমামের পড়ার অনুসরণ করার বিধান কি?


ইমামের পড়ার অনুসরণ করবে এই উদ্দেশ্যে হাতে কুরআন নিয়ে তারাবীহ্‌ নামায আদায় করা কয়েকটি কারণে সুন্নাতের পরিপন্থীঃ
১)      একাজ করলে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখার সুন্নাতের উপর আমল করা যায় না।
২)      এতে বিনা প্রয়োজনে অধিক নড়াচড়ার দরকার পড়ে। যেমন, কুরআন খোলা, বন্ধ করা, বগলের নীচে বা পকেটে রাখা প্রভৃতি।

কোন কোন ইমাম তারাবীহ্‌ নামাযে কন্ঠস্বর পরিবর্তন করে মানুষের অন্তর নরম ও তাদের মধ্যে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করে। কোন কোন মানুষ এটাকে অপছন্দ করে। আল্লাহ্‌ আপনাকে হেফাযত করুন্ত এক্ষেত্রে আপনার মত কি?

(২৮৩) কোন কোন ইমাম তারাবীহ্‌ নামাযে কন্ঠস্বর পরিবর্তন করে মানুষের অন্তর নরম ও তাদের মধ্যে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করে। কোন কোন মানুষ এটাকে অপছন্দ করে। আল্লাহ্‌ আপনাকে হেফাযত করুন্ত এক্ষেত্রে আপনার মত কি?


আমি মনে করি, একাজ যদি কোন প্রকার বাড়াবাড়ি ছাড়াই শরীয়তের গন্ডির মধ্যে হয়, তবে কোন অসুবিধা নেই। এ জন্যই আবু মূসা আল আশআরী (রাঃ) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলেছিলেন, “যদি জানতাম আপনি আমার ক্বেরাত শুনছেন তবে আমি আপনার জন্য কন্ঠস্বর অতি সুন্দর করার চেষ্টা করতাম।” অর্থাৎ- সুন্দর, সুললিত ও উৎকৃষ্ট করার চেষ্টা করতাম। অতএব

কোন কোন বিদ্বান বলেন, ফরয নামাযের সাথে সংশ্লিষ্ট সুন্নাত সমূহের সময় হচ্ছে ফরয নামাযের সময় হওয়ার পর। ফরযের সময় শেষ হলে সুন্নাতের সময়ও শেষ। আবার কেউ বলেন, পূর্বের সুন্নাতগুলো ফরয শেষ হলেই শেষ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সঠিক কথা কি?

(২৮৪) কোন কোন বিদ্বান বলেন, ফরয নামাযের সাথে সংশ্লিষ্ট সুন্নাত সমূহের সময় হচ্ছে ফরয নামাযের সময় হওয়ার পর। ফরযের সময় শেষ হলে সুন্নাতের সময়ও শেষ। আবার কেউ বলেন, পূর্বের সুন্নাতগুলো ফরয শেষ হলেই শেষ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সঠিক কথা কি?


সঠিক কথা হচ্ছে, ফরযের পূর্বের সুন্নাত নামাযের সময় হল ফরয নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার পর থেকে নিয়ে ঐ নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত। যেমন, যোহরের ফরযের পূর্বের সুন্নাতের সময় শুরু হবে সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলার পর যোহরের আযান হলে। আর শেষ হবে যোহর নামায শেষ হলে। আর ফরযের পরের সুন্নাতের সময় হচ্ছে, ফরয নামায শেষ হওয়ার পর থেকে নামাযের নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত।
কিন্তু

ফজরের পূর্বের সুন্নাত ফরযের পর আদায় করা যাবে কি?

(২৮৫) ফজরের পূর্বের সুন্নাত ফরযের পর আদায় করা যাবে কি?


বিশুদ্ধমতে ফজর নামায শেষ করে সুন্নাত নামাযের কাযা আদায় করাতে কোন অসুবিধা নেই। এটা ফজরের পর নামায আদায় করার নিষিদ্ধতার অন্তর্ভুক্ত হবে না। কেননা কারণ বিহীন কোন নামায উক্ত সময়ে আদায় করা নিষেধ।
কিন্তু

আযানের পূর্বে যদি মসজিদে প্রবেশ করে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায আদায় করে। তবে আযানের পর কি পুনরায় কোন নফল নামায আদায় করতে পারবে?

(২৮৬) আযানের পূর্বে যদি মসজিদে প্রবেশ করে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায আদায় করে। তবে আযানের পর কি পুনরায় কোন নফল নামায আদায় করতে পারবে?


আযান যদি ফজর বা যোহর নামাযের হয়। তবে আযানের পর ফজরের দু’রাকাত ও যোহরের চার রাকাত সুন্নাত নামায আদায় করবে। আর যদি অন্য নামাযের আযান হয় তবুও নফল আদায় করা শরীয়ত সম্মত। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

সুন্নাত নামাযের সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে তা কি কাযা আদায় করা যায়?

(২৮৭) সুন্নাত নামাযের সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে তা কি কাযা আদায় করা যায়?


হ্যাঁ। নিদ্রা বা ভুলে যাওয়ার কারণে যদি সুন্নাত নামাযের সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, তবে তার কাযা আদায় করা যায়। কেননা তা রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আ’ম বা ব্যাপক হাদীছের অন্তর্ভুক্ত। তিনি বলেন,

ফরজ নামায আদায় শেষে সুন্নাত আদায় করার জন্য স্থান পরিবর্তন করার কোন দলীল আছে কি?

(২৮৮) ফরজ নামায আদায় শেষে সুন্নাত আদায় করার জন্য স্থান পরিবর্তন করার কোন দলীল আছে কি?


হ্যাঁ। মুআবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَنَا بِذَلِكَ أَنْ لَا تُوصَلَ صَلَاةٌ بِصَلَاةٍ حَتَّى نَتَكَلَّمَ أَوْ نَخْرُجَ
“নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা যেন এক নামাযের সাথে অন্য নামাযকে মিলিয়ে না দেই যতক্ষণ পর্যন্ত কথা না বলি বা বের না হয়ে যাই।”

চাশতের নামায ছুটে গেলে তার কি কাযা আদায় করা যায়?

(২৮৯) চাশতের নামায ছুটে গেলে তার কি কাযা আদায় করা যায়?


চাশতের সময় পার হয়ে গেলে তা আদায় করার স্থান ও সময় ছুটে গেল। তাই তা কাযা আদায় করার দরকার নেই। কেননা উহা নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করার সাথে শর্তযুক্ত। কিন্তু সুন্নাত নামায সমূহ ফরয নামায সমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ার কারণে তা কাযা আদায় করা যাবে। অনুরূপভাবে বিতর নামাযও কাযা আদায় করা যাবে। ছহীহ্‌ সুন্নাতে প্রমাণিত হয়েছেঃ

তিলাওয়াতের সিজদা দেয়ার জন্য তাহারাত বা পবিত্রতা কি আবশ্যক? এই সিজদায় কি দু‘আ পাঠ করতে হবে?

(২৯০) তিলাওয়াতের সিজদা দেয়ার জন্য তাহারাত বা পবিত্রতা কি আবশ্যক? এই সিজদায় কি দু‘আ পাঠ করতে হবে?


কুরআনুল কারীমে নির্দিষ্টভাবে যে সমস্ত সিজদার আয়াত রয়েছে তা পাঠ করার সময় সিজদা প্রদান করা শরীয়ত সম্মত। সিজদার সময় হলে, তাকবীর দিয়ে আল্লাহু আকবার বলে সিজদা প্রদান করবে। পাঠ করবেঃ

কখন আল্লাহ্‌র জন্য সিজদা শুক্‌র দিতে হয়? এর পদ্ধতি কি? এর জন্য ওযু করা কি আবশ্যক?

(২৯১) কখন আল্লাহ্‌র জন্য সিজদা শুক্‌র দিতে হয়? এর পদ্ধতি কি? এর জন্য ওযু করা কি আবশ্যক?


সিজদায়ে শুক্‌র দিতে হয়- মানুষ যখন কোন বিপদ থেকে উদ্ধার লাভ করে বা কোন নেয়ামত প্রাপ্ত হয় বা আনন্দময় কোন কিছু লাভ করে। এ সিজদার নিয়ম নামাযের বাইরে তেলাওয়াতের সিজদার মত। বিদ্বানদের কেউ কেউ এ সিজদার জন্য ওযু এবং তাকবীর আবশ্যক মনে করেন। কেউ শুধু প্রথম তাকবীর দেয়ার কথা বলেন। অর্থাৎ- তাকবীর দিয়ে সিজদাবনত হবে,

ছালাতে ইস্তেখারার বিধান কি? তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা সুন্নাত নামায পড়ে কি ইস্তেখারার দু’আ পড়া যায়?

(২৯২) ছালাতে ইস্তেখারার বিধান কি? তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা সুন্নাত নামায পড়ে কি ইস্তেখারার দু’আ পড়া যায়?


মানুষ যখন কোন কাজ বাস্তবায়ন করার ইচ্ছা করে; কিন্তু স্থির করতে পারে না কাজটি বাস্তবায়ন করবে না ছেড়ে দিবে? তখন ইস্তেখারার নামায আদায় করা সুন্নাত। তবে করা বা না করার কোন একটি দিক যদি তার কাছে প্রাধান্য পায় এবং স্থির হয়ে যায় তবে সে সময় ইস্তেখারা করা সুন্নাত নয়। এ কারণে রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক কাজই করতেন। কিন্তু দৃঢ় ইচ্ছা পোষণ করার পরেই তা করে ফেলতেন। তিনি এসব প্রত্যেকটা কাজের জন্য ইস্তেখারা করেছেন এরকম বর্ণনা পাওয়া যায় না।

ছালাতু তাছবীহ্‌ নামায কি?

(২৯৩) ছালাতু তাছবীহ্‌ নামায কি?


ছালাতুত্‌ তাছবীহ্‌ নামায নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রহঃ) বলেন, এসম্পর্কিত হাদীছ ছহীহ্‌ নয়। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ) বলেন, ‘এসম্পর্কিত হাদীছ মিথ্যা। ইমাম আহমাদ এবং তাঁর অনুসারী ইমামগণ এ নামাযকে মাকরূহ মনে করতেন। কোন ইমামই এ নামাযকে মুস্তাহাব বলেন নি। আর অন্যান্য ইমামগণ আবু হানীফা, মালেক ও শাফেঈ এ সম্পর্কে কোন কিছু শোনেন নি তাই কোন মন্তব্যও করেন নি।” শায়খুল ইসলামের এ কথা খুবই সত্য। কেননা এ নামায বিশুদ্ধ হলে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উম্মতের কাছে সন্দেহাতীতভাবে ছহীহ্‌ সনদে বর্ণনা করা হত। কেননা

বিবাহের সময় দু’রাকাআত নামায পড়ার বিধান কি? বিশেষ করে বাসর রাতে এ দু’রাকাআতের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়?

(২৯৪) বিবাহের সময় দু’রাকাআত নামায পড়ার বিধান কি? বিশেষ করে বাসর রাতে এ দু’রাকাআতের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়?


বিবাহের সময় দু’রাকাআত নামায পড়া সম্পর্কে কোন হাদীছ নেই। তবে কোন কোন ছাহাবী বাসর রাতে দু’রাকাআত নামায আদায় করেছেন, এরকম বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কোন ছহীহ্‌ হাদীছ জানা যায় না। অবশ্য বাসর রাতে শরীয়ত সম্মত কাজ হচ্ছে, নববধুর কপাল ধরে এই দু’আ পাঠ করবেঃ

নামাযের নিষিদ্ধ সময় সমূহ কি কি? মাগরিবের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায আযানের পূর্বে না আযানের পর আদায় করবে?

(২৯৫) নামাযের নিষিদ্ধ সময় সমূহ কি কি? মাগরিবের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায আযানের পূর্বে না আযানের পর আদায় করবে?


নিষিদ্ধ সময় সমূহ হচ্ছেঃ
১) ফজর ছালাতের পর থেকে তীর বরাবর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার পর ১৫/২০ মিনিটি পর্যন্ত।
২) ঠিক দুপুরের সময়। অর্থাৎ যোহরের সময় হওয়ার ১০ মিঃ আগে থেকে যোহরের সময় হওয়া পর্যন্ত।
৩) আছর ছালাতের পর থেকে পরিপূর্ণরূপে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত।

Saturday, April 7, 2018

প্রশ্ন (১/২৪১) : রিজাল শাস্ত্র কি? প্রত্যেক আলেমের জন্য রিজাল শাস্ত্র সম্পর্কে জানা আবশ্যক কি?

প্রশ্ন (১/২৪১) : রিজাল শাস্ত্র কি? প্রত্যেক আলেমের জন্য রিজাল শাস্ত্র সম্পর্কে জানা আবশ্যক কি?

-মামূন, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : রিজাল শাস্ত্র হ’ল হাদীছের সনদ সম্পর্কে জ্ঞান। অর্থাৎ সনদে যে সকল বর্ণনাকারী রয়েছেন তারা নির্ভরযোগ্য কি-না, সে সম্পর্কিত বিশেষায়িত জ্ঞান। ইসলামী শরী‘আতের বিধি-বিধান সম্পর্কে অভিজ্ঞ আলেমদের জন্য রিজালশাস্ত্র জানা আবশ্যক। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার তারতম্য থাকতে পারে, তবে এ বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান অবশ্যই থাকতে হবে। ওলামায়ে সালাফ কেবল হাদীছের জ্ঞান থাকলেই তাকে আলেম হিসাবে গণ্য করতেন না,

প্রশ্ন (২/২৪২) : দুই তলাবিশিষ্ট মসজিদের ২য় তলায় ছালাতের স্থান এবং নীচতলা ছাত্রাবাসে পরিণত করা জায়েয হবে কি?

প্রশ্ন (২/২৪২) : দুই তলাবিশিষ্ট মসজিদের ২য় তলায় ছালাতের স্থান এবং নীচতলা ছাত্রাবাসে পরিণত করা জায়েয হবে কি?

-মসজিদ কমিটির সদস্যবৃন্দ
রাজারবাগান, সাতক্ষীরা।
উত্তর : মসজিদের নীচতলায় ছাত্রাবাস করায় কোন বাধা নেই। ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘মসজিদের নীচে দোকান-পাট ও পানির হাউয তৈরী করা যায়। তাতে কোন বাধা নেই’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩১/২১৮-২১৯)। যেখানে দোকানপাট করা যাবে সেখানে ছাত্রাবাসও করা যাবে। তবে

প্রশ্ন (৩/২৪৩) : আমার মায়ের সব সম্পদ পিতার নিয়ন্ত্রণে। তিনি এর যাকাত দেন না আবার সম্পদও দেন না। এক্ষণে এজন্য আমার মা গোনাহগার হবেন কি?

প্রশ্ন (৩/২৪৩) : আমার মায়ের সব সম্পদ পিতার নিয়ন্ত্রণে। তিনি এর যাকাত দেন না আবার সম্পদও দেন না। এক্ষণে এজন্য আমার মা গোনাহগার হবেন কি?

-আলতাফ হোসেন, গুরুদাসপুর, নাটোর।
উত্তর : মা সম্পদের মালিকানা গ্রহণে নিরুপায় হ’লে তিনি গুনাহগার হবেন না ইনশাআল্লাহ। কারণ যাকাত দেওয়ার জন্য শর্ত হ’ল সম্পদ ব্যক্তির মালিকানায় থাকা। অতএব যেদিন তিনি পূর্ণ মালিকানা লাভ করবেন, সেদিন থেকে নিয়ম অনুযায়ী যাকাত আদায় করবেন

প্রশ্ন (৪/২৪৪) : পোষাকে বমি লেগে গেলে উক্ত পোষাকে ছালাত হবে কি?

প্রশ্ন (৪/২৪৪) : পোষাকে বমি লেগে গেলে উক্ত পোষাকে ছালাত হবে কি?

-মাহবূবুল আলম, গাযীপুর।
উত্তর : উক্ত পোষাকে ছালাত হবে। অতএব মুছাল্লীর রুচি হ’লে তাতে ছালাত আদায় করবে নতুবা তা পরিবর্তন করবে। কারণ বমি নাপাক হওয়ার পক্ষে কোন ছহীহ হাদীছ নেই। শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ, আলবানী, শাওকানী, শায়খ বিন বায, উছায়মীন প্রমুখ বিদ্বান বমিকে ওযূ ভঙ্গের কারণ হিসাবে গণ্য না করে একে সাধারণভাবে পবিত্র বলেছেন (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৫/২২২ ; ইরওয়া ১/১৪৮; তামামুল মিন্নাহ ১/৫৪; আস-সায়লুল জার্রার ১/৩০; মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২২/৩৫২)। অধিক পরিমাণে বমি হ’লে ছালাত ছেড়ে দিবে এবং

প্রশ্ন (৫/২৪৫) : বিতর ছালাত নিয়মিতভাবে এক রাক‘আত পড়া যাবে কি? এক রাক‘আত উত্তম হলে রামাযানে নিয়মিত ৩ রাক‘আত পড়ার কারণ কি?

প্রশ্ন (৫/২৪৫) : বিতর ছালাত নিয়মিতভাবে এক রাক‘আত পড়া যাবে কি? এক রাক‘আত উত্তম হলে রামাযানে নিয়মিত ৩ রাক‘আত পড়ার কারণ কি?

-মামূন, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : নিয়মিত এক ও তিন রাক‘আত বিতর পড়া যাবে। আর রামাযানে তিন রাক‘আত বিতর পড়ার কারণ হ’ল হাদীছে বর্ণিত এগার রাক‘আত পূর্ণ করা। কারণ তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের ব্যাপারে হাদীছে ১১ রাক‘আতের কথাই বলা হয়েছে। তন্মধ্যে চার চার আট রাক‘আত তারাবীহ ও তিন রাক‘আত বিতর (বুখারী হা/১১৪৭; মুসলিম হা/৭৩৮)। রাসূল (ছাঃ) রাতের ছালাত দু’দু’রাক‘আত পড়তেন। অতঃপর এক রাক‘আত বিতর পড়তেন’ (বুখারী হা/৯৯৫; মুসলিম হা/৭৫২; মিশকাত হা/১২৫৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে পাঁচ রাক‘আত বিতর পড়তে পসন্দ করে সে তা করতে পারে। আর যে তিন রাক‘আত বিতর পড়তে পসন্দ করে সে তা করতে পারে। যে

প্রশ্ন (৬/২৪৬) : জনৈক আলেম বলেন, পানি থাকা অবস্থায় ঢিলা কুলুখ ব্যবহার করা যাবে না। এটা সঠিক কি? আর পানি থাকা অবস্থায় টিস্যু ব্যবহার করা যাবে কি?

প্রশ্ন (৬/২৪৬) : জনৈক আলেম বলেন, পানি থাকা অবস্থায় ঢিলা কুলুখ ব্যবহার করা যাবে না। এটা সঠিক কি? আর পানি থাকা অবস্থায় টিস্যু ব্যবহার করা যাবে কি?

-নাহিদ হাসান, বগুড়া।
উত্তর : পানি থাকলে পানি ব্যবহার করবে। কারণ আল্লাহ পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন (আবুদাউদ হা/৪৪; মিশকাত হা/৩৬৯; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৭৬০)। ইমাম তিরিমিযী বলেন, বিদ্বানগণ (পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে) পানিকেই যথেষ্ট মনে করেন। পানি না পেলে কুলুখ নিবে (তিরমিযী হা/১৯ আলোচনা দ্রঃ)। তবে কেউ যদি পানি থাকা সত্ত্বেও মাটি বা অনুরূপ কিছু দ্বারা ইস্তিঞ্জা করে তাহ’লে পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে 

প্রশ্ন (৭/২৪৭) : ছোট শিশুদের বাঁশিযুক্ত জুতা পরানো যাবে কি?

প্রশ্ন (৭/২৪৭) : ছোট শিশুদের বাঁশিযুক্ত জুতা পরানো যাবে কি?

-আতীকুর রহমান, চৌদ্দগ্রাম, চট্টগ্রাম।


উত্তর : বাদ্য-বাজনা ইসলামে হারাম। তাই বাঁশি ও বাজনাযুক্ত জুতা পরানো যাবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, দু’টি বস্ত্ত দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত। আনন্দের সময় বাঁশি বাজানো এবং মুছীবতের সময় বিলাপ করা (বাযযার, ছহীহুত তারগীব হা/৩৫২৭; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/৪০১৭)। তিনি আরো বলেন, আমি দু’টি নির্বোধসূলভ ও পাপাচারমূলক চিৎকার নিষেধ করেছি। আনন্দের সময় খেল-তামাশা, শয়তানের বাঁশি বাজানো ও বিপদের সময় চিৎকার করা, মুখমন্ডলে আঘাত করা এবং জামার সম্মুখভাগ ছিঁড়ে ফেলা আর শয়তানের মত (চিৎকার করে) কান্নাকাটি করা (হাকেম হা/৬৮২৫; তিরমিযী হা/১০০৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৫১৯৪)। অতএব কোমলমতি শিশুদের এসব শব্দ শুনানো থেকে বিরত রাখতে হবে।

প্রশ্ন (৮/২৪৮) : আউয়াল ওয়াক্তে ছালাত আদায়ের লক্ষ্যে আমাদের এখানে যোহরের ছালাত ১২.৫০ মিনিটে আদায় করা হয়। এক্ষণে আউয়াল ওয়াক্তের মধ্যে জুম‘আর খুৎবা ও ছালাত কখন শুরু বা শেষ করা সমীচীন হবে?

প্রশ্ন (৮/২৪৮) : আউয়াল ওয়াক্তে ছালাত আদায়ের লক্ষ্যে আমাদের এখানে যোহরের ছালাত ১২.৫০ মিনিটে আদায় করা হয়। এক্ষণে আউয়াল ওয়াক্তের মধ্যে জুম‘আর খুৎবা ও ছালাত কখন শুরু বা শেষ করা সমীচীন হবে?

-হাফেয আব্দুর রব, রসূলপুর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : যোহরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর খুৎবা শুরু করে শীত-গ্রীষ্মকালভেদে ১-টা থেকে ১.৩০ মিনিটের মধ্যে জুম‘আর ছালাত সমাপ্ত করা সমীচীন হবে। কারণ এরপরে আদায় করলে আউয়াল ওয়াক্ত থাকে না। আউয়াল ওয়াক্ত বলতে ওয়াক্তের প্রথমভাগকে বুঝানো হয়, ওয়াক্তের শুরুকে নয়। জিবরীল (আঃ) রাসূল (ছাঃ)-কে আউয়াল ও আখের ওয়াক্তে দু’দিন ছালাত আদায় করিয়ে বলেন,

প্রশ্ন (৯/২৪৯) : মসজিদের বারান্দার নীচে টয়লেটের হাউজ থাকলে উক্ত বারান্দায় ছালাত আদায় করা জায়েয হবে কি?

প্রশ্ন (৯/২৪৯) : মসজিদের বারান্দার নীচে টয়লেটের হাউজ থাকলে উক্ত বারান্দায় ছালাত আদায় করা জায়েয হবে কি?

-মুহাম্মাদ মুহসিন, সাতক্ষীরা।
উত্তর : উপরিভাগ পবিত্র থাকলে তার উপর ছালাত আদায় করা যাবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সমস্ত যমীন আমার জন্য পবিন্ত এবং তা ছালাত আদায়ের উপযোগী করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কোন ব্যক্তি ওয়াক্ত হ’লেই ছালাত আদায় করতে পারবে’ 

প্রশ্ন (১০/২৫০) : কাউকে স্বামী বা স্ত্রী হিসাবে কামনা করে আল্লাহর নিকটে দো‘আ করা যাবে কি?

প্রশ্ন (১০/২৫০) : কাউকে স্বামী বা স্ত্রী হিসাবে কামনা করে আল্লাহর নিকটে দো‘আ করা যাবে কি?

-রায়হান, যশোর।
উত্তর : যেকোন কল্যাণকর কাজে দো‘আ করা যাবে। কারো দ্বীনদারী ও উত্তম আচরণ দেখে তার সাথে বিবাহের জন্যও দো‘আ করা যেতে পারে (নববী, আল-মাজমূ‘ ৩/৪৭১; উছায়মীন, আশ-শারহুল মুমতে‘ ৩/২০৫-৬)। তবে এক্ষেত্রে হাদীছে বর্ণিত সারগর্ভ দো‘আ করাই উত্তম। যেমন রাববানা আ-তিনা ফিদ্ দুনইয়া হাসানাতাওঁ ওয়া ফিল আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়া ক্বিনা ‘আযা-বান্না-র। অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দাও ও আখেরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও’ (বাক্বারাহ ২/২০১)
আর দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য কে কল্যাণকর হবে,

প্রশ্ন (১১/২৫১) : রাসূল (ছাঃ) নিজে কখনো দরূদে ইবরাহীমী পাঠ করেছেন কি?

প্রশ্ন (১১/২৫১) : রাসূল (ছাঃ) নিজে কখনো দরূদে ইবরাহীমী পাঠ করেছেন কি?

-আব্দুল আলীম, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) প্রতি ছালাতে দরূদে ইবরাহীমী পাঠ করতেন। কারণ শরী‘আতের বিধান রাসূল (ছাঃ) নিজে আগে পালন করতেন। তারপর ছাহাবীগণকে শিক্ষা দিতেন (মিরক্বাত ২/৭৩৩-৭৩৪)। আলবানী বলেন, রাসূল (ছাঃ) তাশাহহুদে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নিজের প্রতি নিজে দরূদ পাঠ করতেন। আর তা উম্মতের জন্য সুন্নাত সাব্যস্ত করেছেন

প্রশ্ন (১২/২৫২) : ক্বিয়ামতের দিন আলেম-ওলামা ও হাফেযদের বিচার কুরআনের সম্মানে পৃথকভাবে করা হবে কি? এছাড়া তাদের ছোট-খাট ভুল ক্ষমা করে দেওয়া হবে কি?

প্রশ্ন (১২/২৫২) : ক্বিয়ামতের দিন আলেম-ওলামা ও হাফেযদের বিচার কুরআনের সম্মানে পৃথকভাবে করা হবে কি? এছাড়া তাদের ছোট-খাট ভুল ক্ষমা করে দেওয়া হবে কি?

-যহূরুল ইসলাম, বিরামপুর, দিনাজপুর।
উত্তর : কুরআনের সম্মানে তাদের পৃথক বিচার করা হবে না। তবে শহীদ, আলেম ও ক্বারী এবং দাতাদের প্রথমে বিচার করা হবে মর্মে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেখানে লোক দেখানো আমলকারীরা পাকড়াও হবে (মুসলিম হা/১৯০৫; মিশকাত হা/২০৫)। আর ক্বিয়ামতের দিন মানুষকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা হবে। ১. আরশের ডানে অবস্থানকারী। এরা সকলে জান্নাতবাসী। ২. আরশের বামে অবস্থানকারী যারা সকলে জাহান্নামী। ৩. অগ্রগামী দল যারা আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য লাভকারী। যাদের মধ্যে রয়েছে

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ