Thursday, January 25, 2018

জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫টি অসাধারণ হাদীস!!

জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫টি অসাধারণ হাদীস!!



*১-গীবত থেকে দূরে থাকা- আসমা বিনতে ইয়াযীদ হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যাক্তি তার (মুসলিম) ভায়ের অনুপস্থিতিতে (তার গীবত করা ও ইজ্জত লুটার সময় প্রতিবাদ করে) তার সম্ভ্রম রক্ষা করে সেই ব্যাক্তি আল্লাহ্‌র নিকট এই অধিকার পায় যে তিনি তাঁকে দোযখ থেকে মুক্ত করে দেন।”(আহমদ, ত্বাবারানী, সহীহুল জামে- ৬২৪০)
#কিন্তু এখন অবস্থা তোঁ পুরোই উল্টা, কোথাও কারো নিন্দা করা হলে আমরা প্রতিবাদ না করে বরং

গুনাহের দরজা সমূহ

গুনাহের দরজা সমূহ 

গুনাহের কিছু কারণ ও ভূমিকা রয়েছে যা গুনাহের প্রতি টেনে নিয়ে যায়।
এবং তার কিছু প্রবেশ পথ রয়েছে যা সেখানে প্রবিষ্ট করে দেয়। গুনাহ থেকে বিরত ও বেঁচে থাকার জন্য এই সব বিষয়ের জানা নিতান্ত অপরিহার্য।
আল্লাহর অবাধ্য আচরণের অনেক কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে সর্ববৃহৎ হল, অপ্রয়োজনীয় ও নিরর্থক কাজে মানুষের জড়িয়ে পড়া। তাকে দ্বীন বা দুনিয়ার কোন উপকার করবে না। উপরন্তু নিরর্থক কাজ বর্জন করা মানুষের ইসলামের পরিপূর্নতা ও তার ঈমান বৃদ্ধির পরিচায়ক। রাসূল বলেছেন,

ক্ষমাপ্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

 ক্ষমাপ্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۢبِكَ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۗ ١٩ ﴾ [محمد : ١٩]
অর্থাৎ তুমি ক্ষমা-প্রার্থনা কর তোমার এবং মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য। (সূরা মুহাম্মাদ ১৯ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন, ﴿ وَٱسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٠٦ ﴾ [النساء : ١٠٦]
অর্থাৎ আল্লাহর কাছে তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা ১০৬ আয়াত)
তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন, ﴿ فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّكَ وَٱسۡتَغۡفِرۡهُۚ إِنَّهُۥ كَانَ تَوَّابَۢا ٣ ﴾ [النصر: ٣]
অর্থাৎ সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা কর এবং তাঁর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় তিনি অধিক তাওবা গ্রহণকারী। (সূরা নাস্র ৩ আয়াত)

তিনি অন্যত্র বলেছেন,
﴿ لِلَّذِينَ ٱتَّقَوۡاْ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّٰتٞ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَا وَأَزۡوَٰجٞ مُّطَهَّرَةٞ وَرِضۡوَٰنٞ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ١٥ ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ إِنَّنَآ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ١٦ ٱلصَّٰبِرِينَ وَٱلصَّٰدِقِينَ وَٱلۡقَٰنِتِينَ وَٱلۡمُنفِقِينَ وَٱلۡمُسۡتَغۡفِرِينَ بِٱلۡأَسۡحَارِ ١٧ ﴾ [ال عمران: ١٥،  ١٧]
অর্থাৎ যারা সাবধান [পরহেজগার] হয়ে চলে তাদের জন্য রয়েছে উদ্যানসমূহ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, তাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিনী এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে। বস্তুতঃ আল্লাহ তার দাসদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত। যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয় আমরা বিশ্বাস করেছি; অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা কর এবং দোযখের শাস্তি থেকে আমাদেরকে রক্ষা কর।’ যারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, দানশীল এবং রাত্রির শেষাংশে ক্ষমা-প্রার্থী। (সূরা আলে ইমরান ১৫-১৭ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন,
﴿ وَمَن يَعۡمَلۡ سُوٓءًا أَوۡ يَظۡلِمۡ نَفۡسَهُۥ ثُمَّ يَسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَ يَجِدِ ٱللَّهَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١١٠ ﴾ [النساء : ١١٠]
অর্থাৎ আর যে কেউ মন্দ কার্য করে অথবা নিজের প্রতি জুলুম করে, কিন্তু পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, সে আল্লাহকে অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু-রূপে পাবে। (সূরা নিসা ১১০ আয়াত)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمۡ وَأَنتَ فِيهِمۡۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ مُعَذِّبَهُمۡ وَهُمۡ يَسۡتَغۡفِرُونَ ٣٣ ﴾ [الانفال: ٣٣]
অর্থাৎ আল্লাহ এরূপ নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকা অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং তিনি এরূপ নন যে, তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। (সূরা আনফাল ৩৩ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন,
﴿ وَٱلَّذِينَ إِذَا فَعَلُواْ فَٰحِشَةً أَوۡ ظَلَمُوٓاْ أَنفُسَهُمۡ ذَكَرُواْ ٱللَّهَ فَٱسۡتَغۡفَرُواْ لِذُنُوبِهِمۡ وَمَن يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ إِلَّا ٱللَّهُ وَلَمۡ يُصِرُّواْ عَلَىٰ مَا فَعَلُواْ وَهُمۡ يَعۡلَمُونَ ١٣٥ ﴾ [ال عمران: ١٣٥]
অর্থাৎ যারা কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি জুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে? এবং তারা যা [অপরাধ] করে ফেলে তাতে জেনে-শুনে অটল থাকে না। (সূরা আলে ইমরান ১৩৫ আয়াত)
এ প্রসঙ্গে আরও বিদিত বহু আয়াতসমূহ রয়েছে।
1/1878 وَعَنْ الأَغَرِّ المُزَنِيِّ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِنَّهُ لَيُغَانُ عَلَى قَلْبِي، وَإِنِّي لأَسْتَغفِرُ اللهَ فِي اليَوْمِ مِئَةَ مَرَّةٍ» . رواه مسلم
১/১৮৭৮। আগার্র মুযানী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আমার অন্তর আল্লাহর স্মরণ থেকে নিমেষভর বাধাপ্রাপ্ত হয়। সেহেতু আমি দিনে একশত বার আল্লাহর নিকট ক্ষমা ভিক্ষা চাই।’’ (মুসলিম) [1]
2/1879 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ : «وَاللهِ إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إِلَيْهِ فِي اليَومِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً». رواه البخاري
২/১৮৭৯। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, ‘‘আল্লাহর শপথ! আমি প্রত্যহ আল্লাহর কাছে সত্তর বারেরও বেশি ইস্তিগফার  [ক্ষমাপ্রার্থনা] ও তাওবাহ করে থাকি।’’ (বুখারী) [2]
3/1880 وَعَنْه رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ لَمْ تُذْنِبُوا، لَذَهَبَ اللهُ تَعَالَى بِكُمْ، وَلَجَاءَ بِقَومٍ يُذْنِبُونَ، فَيَسْتَغْفِرُونَ اللهَ تَعَالَى، فَيَغْفِرُ لَهُمْ». رواه مسلم
৩/১৮৮০। উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন আছে! যদি তোমরা পাপ না কর, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে [তোমাদের পরিবর্তে] এমন এক জাতি আনয়ন করবেন, যারা পাপ করবে এবং আল্লাহ তা’আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করবে। আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’’ (মুসলিম)[3]
* [এ হাদিস দ্বারা পাপ করার পর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার গুরুত্ব ব্যক্ত করা হয়েছে। পাপ করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়নি। কেননা, মানুষ মাত্রই ভুলে জড়িত। তাই ভুলে জড়িত হয়ে পড়লে আবশ্যিক-রূপে ক্ষমা চাওয়া কর্তব্য।]
4/1881 وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كُنَّا نَعُدُّ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي المَجْلِسِ الوَاحِدِ مِئَةَ مَرَّةٍ : «رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ» . رواه أبو داود والترمذي، وقال :[حديث حسن صحيح غريب ]
৪/১৮৮১। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একই মজলিসে বসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর [এই ইস্তিগফারটি] পাঠ করা অবস্থায় একশো বার পর্যন্ত গুনতাম,
‘রাবিবগ্ফির লী অতুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আন্তাত তাউওয়াবুর রাহীম।’
অর্থাৎ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর, আমার তওবা কবুল কর, নিশ্চয় তুমি অতিশয় তওবাহ কবূলকারী দয়াবান। [আবূ দাঊদ, তিরমিযী, হাসান সহীহ গারীব][4]
5/1882 وعنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضِي اللهُ عنْهُما قَال : قالَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم: «منْ لَزِم الاسْتِغْفَار، جعل اللَّه لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مخْرجاً، ومنْ كُلِّ هَمٍّ فَرجاً، وَرَزَقَهُ مِنْ حيْثُ لا يَحْتَسِبُ»  رواه أبو داود  .
৫/১৮৮২। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে লোক সবসময় গুনাহ মাফ চাইতে থাকে [আস্তাগফিরুল্লাহ পড়তে থাকে] আল্লাহ তাকে প্রতিটি সংকীর্ণতা অথবা কষ্টকর অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ করে দেন, প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে তাকে মুক্ত করেন এবং তিনি তাকে এমন সব উৎস থেকে রিযক দেন যা সে কল্পনাও করতে পারে না। [আবূ দাঊদ][5]
6/1883 وَعَنِ ابنِ مَسعُود رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «مَنْ قَالَ: أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لاَ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُومُ وَأتُوبُ إِلَيهِ، غُفِرَتْ ذُنُوبُهُ، وَإِنْ كانَ قَدْ فَرَّ مِنَ الزَّحْفِ» . رواه أبو داود والترمذي والحاكم، وقال :[ حديث صحيح على شرط البخاري ومسلم ]
৬/১৮৮৩। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি এ দো‘আ পড়বে,
‘আস্তাগ্ফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূমু অ আতূবু ইলাইহ্।’
অর্থাৎ আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর। এবং আমি তাঁর কাছে তওবা করছি।
সে ব্যক্তির পাপরাশি মার্জনা করা হবে; যদিও সে রণক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে [যাওয়ার পাপ করে] থাকে।’’ [আবূ দাঊদ, তিরমিযী, হাকেম; ইনি বলেন, হাদিসটি বুখারী-মুসলিমের শর্তাধীনে বিশুদ্ধ] [6]
7/1884 وَعَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوسٍ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «سَيِّدُ الاِسْتِغْفَارِ أَنْ يَقُولَ العَبْدُ :  اَللهم أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلٰهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأبُوءُ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ . مَنْ قَالَهَا مِنَ النَّهَارِ مُوقِناً بِهَا، فَمَاتَ مِنْ يَوْمِهِ قَبْلَ أَنْ يُمْسِي، فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ، وَمَنْ قَالَهَا مِنَ اللَّيْلِ، وَهُوَ مُوقِنٌ بِهَا، فَمَاتَ قَبْلَ أَنْ يُصْبِحَ، فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ» . رواه البخاري
৭/১৮৮৪। শাদ্দাদ ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহুকর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সায়্যিদুল ইস্তিগফার [শ্রেষ্ঠতম ক্ষমা প্রার্থনার দো‘আ] হল বান্দার এই বলা যে,
‘আল্লা-হুম্মা আন্তা রাববী লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা খালাক্বতানী, অ আনা আব্দুকা অ আনা আলা আহদিকা অ অ’দিকা মাসতাত্বা’তু, আঊযুবিকা মিন শার্রি মা স্বানা‘তু, আবূউ লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা অ আবূউ বিযামবী ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা ইয়্যাগফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্ত্।’
   অর্থ- হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ, আমি তোমার দাস। আমি তোমার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের উপর যথাসাধ্য প্রতিষ্ঠিত আছি। আমি যা করেছি তার মন্দ থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। আমার উপর তোমার যে সম্পদ রয়েছে তা আমি স্বীকার করছি এবং আমার অপরাধও আমি স্বীকার করছি। সুতরাং  তুমি আমাকে মার্জনা করে দাও, যেহেতু তুমি ছাড়া আর কেউ পাপ মার্জনা করতে পারে না।
যে ব্যক্তি দিনে [সকাল] বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ দুআটি পড়বে অতঃপর সে সেই দিনে সন্ধ্যা হওয়ার আগেই মারা যাবে, সে জান্নাতিদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে [সন্ধ্যায়] এ দুআটি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে পড়বে অতঃপর সে সেই রাতে ভোর হওয়ার পূর্বেই মারা যাবে, তাহলে সে জান্নাতিদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ (বুখারী) [7]
8/1885 وَعَنْ ثَوبَانَ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا انْصَرَفَ مِنْ صَلاَتِهِ، اسْتَغْفَرَ اللهَ ثَلاَثاً وَقَالَ: «اَللهم أَنْتَ السَّلاَمُ، وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَاذَا الجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ» قِيلَ لِلأَوْزَاعِيِّ ـ وَهُوَ أَحَدُ رُوَاتِهِ – : كَيفَ الاِسْتِغْفَارُ ؟ قَالَ: يَقُولُ : أَسْتَغْفِرُ اللهَ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ . رواه مسلم
৮/১৮৮৫। সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযান্তে সালাম ফিরে তিনবার ইস্তিগফার করে এই দো‘আ পড়তেন, ‘আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালা-মু অমিন্কাস সালা-ম, তাবা-রাকতা ইয়া যাল জালা-লি অল ইকরা-ম।’
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি শান্তি [সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র] এবং তোমার নিকট থেকেই শান্তি। তুমি বরকতময় হে মহিমময়, মহানুভব!
এ হাদিসের অন্যতম বর্ণনাকারী ইমাম আওযায়ীকে প্রশ্ন করা হল, ইস্তিগফার কিভাবে হবে? তিনি বললেন, ‘বলবে, আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ।’ [আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।] (মুসলিম)[8]
9/1886 وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ : كَانَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ أَنْ يَقُولَ قَبْلَ مَوْتِهِ :«سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، أَسْتَغفِرُ اللهَ، وَأَتُوبُ إِلَيْهِ». متفق عليه
৯/১৮৮৬। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর আগে এই দুআটি অধিকমাত্রায় পড়তেন,
‘সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহী, আস্তাগফিরুল্লাহা অআতূবু ইলাইহ্।’
অর্থাৎ আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর নিকট তওবাহ করছি। (মুসলিম)
10/1887 وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : «قَالَ اللهُ تَعَالَى: يَا ابْنَ آدَمَ، إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ مِنْكَ وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ، لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ، ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِي، غَفَرْتُ لَكَ وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ، إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا، ثُمَّ لَقِيتَنِي لاَ تُشْرِكُ بِي شَيْئاً، لأَتَيْتُكَ بِقُرابِهَا مَغْفِرَةً» . رواه الترمذي، وقال :[حديث حسن]
১০/১৮৮৭। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘হে আদম সন্তান! যখন তুমি আমাকে ডাকবে ও আমার ক্ষমার আশা রাখবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করব, তোমার অবস্থা যাই হোক না কেন; আমি কোন পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গোনাহ যদি আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও, তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করব; আমি কোন পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ পাপ নিয়ে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ কর; কিন্তু আমার সঙ্গে কাউকে শরীক না করে থাক, তাহলে পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে আমি তোমার নিকট উপস্থিত হব।’’ (তিরমিযী হাসান সূত্রে][9]
11/1888 وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ، وَأَكْثِرْنَ مِنَ الاِسْتِغْفَارِ ؛ فَإِنِّي رَأَيْتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ». قَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ : مَا لَنَا أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ ؟ قَالَ: «تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ، وَتَكْفُرْنَ العَشِيرَ، مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَغْلَبَ لِذِيْ لُبٍّ مِنْكُنَّ». قَالَتْ: مَا نُقْصَانُ العَقْلِ وَالدِّينِ ؟ قَالَ: «شَهَادَةُ امْرَأتَيْنِ بِشَهَادَةِ رَجُلٍ، وَتَمْكُثُ الأَيَّامَ لاَ تُصَلِّي». رواه مسلم
১১/১৮৮৮। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [মহিলাদেরকে সম্বোধন করে] বললেন, ‘‘হে মহিলা সকল! তোমরা সাদকাহ-খয়রাত করতে থাক ও অধিকমাত্রায় ইস্তিগফার কর। কারণ আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসীরূপে দেখলাম।’’ একজন মহিলা নিবেদন করল, ‘আমাদের অধিকাংশ জাহান্নামী হওয়ার কারণ কি? হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, ‘‘তোমরা অভিশাপ বেশি কর এবং নিজ স্বামীর অকৃতজ্ঞতা কর। বুদ্ধি ও ধর্মে অপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বিচক্ষণ ব্যক্তির উপর তোমাদের চাইতে আর কাউকে বেশি প্রভাব খাটাতে দেখিনি।’’ মহিলাটি আবার নিবেদন করল, ‘বুদ্ধি ও ধর্মের ক্ষেত্রে অপূর্ণতা কি?’ তিনি বললেন, ‘‘দু’জন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্য সমতুল্য। আর [প্রসবোত্তর খুন ও মাসিক আসার] দিনগুলিতে মহিলা নামায পড়া বন্ধ রাখে।’’ (মুসলিম) [10]


[1] মুসলিম ২৭০২, আবূ দাউদ ১৫১৫, আহমাদ ১৭৩৯১, ১৭৮২৭
[2] সহীহুল বুখারী ৬৩০৭, তিরমিযী ৩২৫৯, ইবনু মাজাহ ৩৮৬১, আহমাদ ৭৭৩৪, ৮২৮৮, ৯৫১৫
[3] মুসলিম ২৭৪৯, তিরমিযী ২৫২৬, আহমাদ ৭৯৮৩, ৮০২১
[4] আবূ দাউদ ১৫১৬, তিরমিযী ৩৪৩৪, ইবনু মাজাহ ৩৮১৪
[5] আমি [আলবানী) বলছিঃ কিন্তু হাদীসটির সনদে মাজহূল [অপরিচিত) বর্ণনাকারী রয়েছেন যেমনটি আমি ‘‘য‘ঈফা’’ গ্রন্থে [৭০৬) আলোচনা করেছি। তিনি হচ্ছেন বর্ণনাকারী হাকাম ইবনু মুস‘য়াব মাজহূল [অপরিচিত) বর্ণনাকারী। তাকে আবূ হাতিম মাজহূল আখ্যা দিয়েছেন। ইবনু হিববানও তাকে দুর্বলদের অন্তর্ভুক্ত উল্লেখ করেছেন। [বিস্তারিত জানতে দেখুন ‘‘সহীহ্ আবী দাঊদ-আলউম্মু’’ [২৬৮)]
[6] আবূ দাউদ ১৫১৭, তিরমিযী ৩৫৭৭
[7] সহীহুল বুখারী ৬৩০৬, ৬৩২৩, তিরমিযী ৩৩৯৩, নাসায়ী ৫৫২২, আহমাদ ১৬৬৬২, ১৬৬৮১
[8] মুসলিম ৫৯১, তিরমিযী ৩০০, আবূ দাউদ ১৫১২, ইবনু মাজাহ ৯২৮, আহমাদ ২১৯০২, দারেমী ১৩৪৮
[9] তিরমিযী ৩৫৪০
[10] সহীহুল বুখারী ৩০৪, ১৪৬২, মুসলিম ৭৯, ৮০, নাসায়ী ১৫৭৬, ১৫৭৯, আবূ দাউদ ৪৬৭৯, ইবনু মাজাহ ১২৮৮, ৪০০৩, আহমাদ ৫৩২১, ১০৯২২, ১০৯৮৮, ১১১১৫
_________________________________________________________________________________
সংকলন : ইমাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবন শরফ আন-নাওয়াবী রহ.
হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় : শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. 
অনুবাদক : বিশিষ্ট আলেমবর্গ 
অনুবাদ সম্পাদনা : আব্দুল হামীদ ফাইযী
সূত্র : ইসলামহাউজ

কুরআনে কারীম ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে গুনাহ্ মাফের আমল-১

কুরআনে কারীম ও সহীহ সুন্নাহর  আলোকে গুনাহ্ মাফের আমল-১  নবুয়্যাতের প্রদীপ থেকে  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:  ‏« ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻪُ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ: ﻣَﻦْ ﻋَﻠِﻢَ ﺃَﻧِّﻲ ﺫُﻭ ﻗُﺪْﺭَﺓٍ ﻋَﻠَﻰ  ﻣَﻐْﻔِﺮَﺓِ ﺍﻟﺬُّﻧُﻮﺏِ، ﻏَﻔَﺮْﺕُ ﻟَﻪُ ﻭَﻻ ﺃُﺑَﺎﻟِﻲ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﻳُﺸْﺮِﻙْ ﺑِﻲ  ﺷَﻴْﺌًﺎ ‏» . ‏(ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ ﻭ ﺯﻳﺎﺩﺗﻪ: 4206 ‏).  “আল্লাহ সুবহানাহু  ওয়া তা‘আলা বলেন:  যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, আমিই  গুনাহ মাফ করার ক্ষমতাবান,  তাকে আমি ক্ষমা করে দেই  এবং যতক্ষণ সে আমার  সাথে কোনো কিছুকে শরীক না করে,  ততক্ষণ (তাকে ক্ষমা করার ব্যাপারে)  আমি কোনো কিছুর  পরওয়া করি না।” [সহীহুল জামে‘ আস-  সাগীর ওয়া যিয়াদাতুহু: ৪২০৬]।  আল-কুরআনুল কারীম ও পবিত্র সহীহ  সুন্নাহ’র আলোকে  গুনাহ্ মাফের আমল  ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ  ভূমিকা  সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য;  আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট  সাহায্য প্রার্থনা করি এবং তাঁর  কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি; আর  আমাদের নফসের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল  খারাপি এবং

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফের আমল, পর্ব - ২.

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফের আমল, পর্ব - ২. চরিত্রের অধ্যায়  ২. ১. বিশুদ্ধ তাওবা[24] :  হে মুক্তির পথের পথিক বান্দা!  জেনে রাখুন, তাওবা হলো ইসলামের  মূলনীতিসমূহের অন্যতম একটি; আর  তা হলো মহাশক্তিধর মালিকের নিকট  নিশ্চিত অবস্থানের  দিকে ভ্রমণকারীদের প্রথম মানযিল  এবং পরকালের  দিকে অভিযাত্রীদের দীর্ঘ পথের  সূচনা।  তা সত্ত্বেও এটা যেমনিভাবে সূচনা,  ঠিক অনুরূপভাবে এটা মাঝামাঝি ও  শেষও বটে;  সুতরাং তা থেকে কোনো নৈতিকতা  সম্পন্ন বান্দা বিচ্ছিন্ন  হতে পারে না এবং মৃত্যু পর্যন্ত  সে তা অব্যাহত রাখবে। আর তাওবার  সূচনা হল এমনভাবে লজ্জিত  বা অনুশোচনা করা, যা এ দৃঢ়তা, সঠিক  ইচ্ছাশক্তি ও প্রকৃত জ্ঞানবোধ জন্ম  দিবে যে,

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফ এর আমল, পর্ব- ৩

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফ এর আমল, পর্ব -3: ৩. পবিত্রতার অধ্যায়  ৩. ১. অযু:  ‘উসমান ইবন ‘আফ্ফান রাদিয়াল্লাহু  ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:  ‏« ﻣَﻦْ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻓَﺄَﺣْﺴَﻦَ ﺍﻟْﻮُﺿُﻮﺀَ ، ﺧَﺮَﺟَﺖْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎﻩُ ﻣِﻦْ  ﺟَﺴَﺪِﻩِ ، ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺨْﺮُﺝَ ﻣِﻦْ ﺗَﺤْﺖِ ﺃَﻇْﻔَﺎﺭِﻩِ ‏» . ‏( ﺭﻭﺍﻩ  ﻣﺴﻠﻢ ‏) .  “যে ব্যক্তি অযু করে এবং খুব সুন্দর  করে অযু করে, সেই ব্যক্তির শরীর  থেকে তার গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়,  এমনকি তার নখের নীচ থেকেও গুনাহ  বের হয়ে যায়।” [40]  আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: 

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফ এর আমল, পর্ব ৪

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফ এর আমল, পর্ব  ৪. সালাতের অধ্যায়  ৪. ১. আযান:  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:  ‏« ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﻤُﺆَﺫِّﻥَ ﻳُﻐْﻔَﺮُ ﻟَﻪُ ﻣَﺪَﻯ ﺻَﻮْﺗِﻪِ، ﻭَﻳُﺼَﺪِّﻗُﻪُ ﻛُﻞُّ ﺭَﻃْﺐٍ  ﻭَﻳَﺎﺑِﺲٍ ﺳَﻤِﻊَ ﺻَﻮْﺗﻪ، ﻭَﺍﻟﺸَّﺎﻫِﺪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻟَﻪُ ﺧَﻤْﺲَ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ  ﺩَﺭَﺟَﺔً ‏» .  “মুয়াযযিনকে তার কণ্ঠস্বর পৌঁছার  প্রান্তদেশ পর্যন্ত  ক্ষমা করে দেওয়া হবে এবং তার  পক্ষে সাক্ষ্য ও সমর্থন দিবে তার  আওয়াজ শুনা প্রত্যেকটি সজীব ও  নির্জীব বস্তু; যারা তার  ডাকে সাড়া দিয়ে সালাতে আসবে  তার জন্য থাকবে তাদের  উপরে পঁচিশটি মর্যাদা।”[46]  ৪. ২. সালাত:  আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু  ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে  শুনেছেন: 

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফ এর আমল, পর্ব -৫

কুরআন ও হাদিসের আলোকে গুনাহ মাফ এর আমল, পর্ব -৫.: ৫. জিহাদের অধ্যায়  আল্লাহর পথে জিহাদ করা প্রত্যেক  মুসলিমের উপর ফরযে আইন, হয় অন্তর  দিয়ে নতুবা বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে,  অথবা সম্পদ দিয়ে অথবা শক্তি প্রয়োগ  করে; সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের উপর  তার শক্তি, ক্ষমতা ও অবস্থান  অনুযায়ী উল্লেখিত  যে কোনো প্রকার  পদ্ধতি অবলম্বনে জিহাদ করা আবশ্যক।  আল্লাহ তা‘আলা বলেন:  ﴿ ﺑَﻞِ ﭐﻟۡﺈِﻧﺴَٰﻦُ ﻋَﻠَﻰٰ ﻧَﻔۡﺴِﻪِۦ ﺑَﺼِﻴﺮَﺓٞ ١٤ ﻭَﻟَﻮۡ ﺃَﻟۡﻘَﻰٰ ﻣَﻌَﺎﺫِﻳﺮَﻩُۥ ١٥  ﴾ ‏[ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ : ١٤، ١٥ ‏]  “বরং মানুষ নিজের সম্পর্কে সম্যক অবগত,  যদিও সে নানা অজুহাতের  অবতারণা করে।”[60]  আল্লাহ সুবহানাহু  ওয়া তা‘আলা জানিয়ে দিয়েছেন  যে,

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল


কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল
 
তাওবা হলো অতীতের গুনাহের অনুশোচনা, দুনিয়ার কোন উপকারিতা অর্জন অথবা ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য নয় একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই সার্বক্ষণিকভাবে সে গুনাহ ছেড়ে দেওয়ার উপর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। জবরদস্তির মাধ্যমে নয় বরং শরী‘আতের বিধি-নিষেধ তার উপর বহাল থাকবে ততক্ষণ স্বেচ্ছায় এ প্রতিজ্ঞা করবে। ইবাদতসমূহের মধ্যে তাওবা অতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাওবার আবশ্যকীয়তা, ব্যাপকতা ও তাতে নিয়মানুবর্তিতার পরিমণ্ডল থেকে পাপী-তাপী যেমন বহির্ভূত নয়, তেমনি আল্লাহর ওলীগণ ও নবীগণও তার পরিসীমা থেকে বাইরে নন। এটি সর্বাবস্থায় সর্বত্র সকলের জন্য প্রযোজ্য। তাওবা মানুষের জীবনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
তাওবার পরিচয়
তাওবা (توبة) শব্দের তা (تا) বর্ণে যবর ওয়া (واو) বর্ণে সুকুন যোগে গঠিত হয়। আভিধানিক অর্থ পাপ থেকে ফিরে আসা, প্রত্যাবর্তন করা, প্রত্যাগমন করা ইত্যাদি। বিশেষ পদে অর্থ অনুতাপ, অনুশোচনা। ড. মুহাম্মদ ড. হামিদ সাদিক বলেন:

কিয়ামতের দিন শাফায়াত লাভের জন্য কতিপয় আমল

কিয়ামতের দিন শাফায়াত লাভের জন্য কতিপয় আমল: আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন:« ﺃَﺳْﻌَﺪُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺑِﺸَﻔَﺎﻋَﺘِﻰ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻝَ ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ، ﺧَﺎﻟِﺼًﺎﻣِﻦْ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﺃَﻭْ ﻧَﻔْﺴِﻪِ »“কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভে সেই ব্যক্তি সৌভাগ্য মণ্ডিতহবে, যে আন্তরিকভাবে বলবে: `লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তথাআল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই।” (সহীহ বুখারী,অনুচ্ছেদ,হাদীসের প্রতি আগ্রহ, হাদীস নং ৯৯,শামেলা)২) কুরআন পাঠ করা: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেন:ﺍﻗْﺮَﺀُﻭﺍ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺄْﺗِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺷَﻔِﻴﻌًﺎ ﻟِﺄَﺻْﺤَﺎﺑِﻪِ“তোমরা কুরআন পাঠ কর। কেননা,কুরআন কিয়ামতের দিন তারপাঠকদের জন্য সুপারিশ কারী হবে।”(সহীহ মুসলিম)।৩) রোযা রাখা: আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত। রাসূলসাল্লাল্লাহু আলাই হওয়া সাল্লাম বলেছেন:« ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻭَﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻳَﺸْﻔَﻌَﺎﻥِ ﻟِﻠْﻌَﺒْﺪِ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﺃَﻯْ ﺭَﺏِّﻣَﻨَﻌْﺘُﻪُ ﺍﻟﻄَّﻌَﺎﻡَ ﻭَﺍﻟﺸَّﻬَﻮَﺍﺕِ ﺑِﺎﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ﻓَﺸَﻔِّﻌْﻨِﻰ ﻓِﻴﻪِ. ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻣَﻨَﻌْﺘُﻪُﺍﻟﻨَّﻮْﻡَ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻓَﺸَﻔِّﻌْﻨِﻰ ﻓِﻴﻪِ. ﻗَﺎﻝَ ﻓَﻴُﺸَﻔَّﻌَﺎﻥِ“রোযা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।রোযা বলবে, হে প্রভু, আমি তাকে দিনের বেলায় খাদ্য ওপ্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে বাধা দিয়েছিলাম। অত:এব আপনি তারব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। আর কুরআন বলবে, আমিতাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বাধা দিয়েছিলাম। অতএব,তারব্যাপারে আমার শাফায়ত কবুল করুন। অত:পর তাদের শাফায়াতকবুল করা হবে।” (মুসনাদ আহমদ, মুসনাদ আব্দুল্লাহ ইবনেআমর হাদীস নং ৬৭৮৫, শামেলা, সনদ সহীহ)৪) আযানের দুয়া পাঠ করা: আলী ইবনু আইয়াশ (রহঃ) জাবির ইবনুআবদুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আজান শোনার পর এদোয়া পড়বে:

কিভাবে ইসলাম প্রচার করবেন?

কিভাবে ইসলাম প্রচার করবেন? অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ﻟَﺄَﻥْ ﻳَﻬْﺪِﻱَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻚَ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻭَﺍﺣِﺪًﺍ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﻟَﻚَ ﺣُﻤْﺮُ ﺍﻟﻨَّﻌَﻢِ “তোমার মাধ্যমে যদি আল্লাহ একজন লোককেও হেদায়েত দেন তবে তা তোমার জন্য একটি লাল উট পাওয়া থেকেও উত্তম।” (বুখারী ১২/৩৭) তিনি আরে বলেন: ﻣَﻦْ ﺩَﻋَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﻫُﺪًﻯ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺄَﺟْﺮِ ﻣِﺜْﻞُ ﺃُﺟُﻮﺭِ ﻣَﻦْ ﺗَﺒِﻌَﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﻨْﻘُﺺُ ﺫَﻟِﻚَ ﻣِﻦْ ﺃُﺟُﻮﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ “যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথে আহবান করে সে ঐ পরিমাণ সওয়াবের অধিকারী হয় যে ব্যক্তি তদনুযায়ী আমল করে। কিন্তু এতে আহবানকারীর সওয়াব কমানো হয় না।” এ জন্য আপনার কর্তব্য হল, আপনার পরিচিত অমুসলিমদেরকে ইসলামের প্রতি আহবান জানান এবং দাওয়াতি কাজ শুরু করুন আপনার পিতা-মাতা, সন্তানাদি, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি পরিবার এবং নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন:

(৩৯২) ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি?

(৩৯২) ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি?


পবিত্র কুরআনের নিম্ন লিখিত আয়াত পাঠ করলেই আমরা জানতে পারি ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি? আর তা হচ্ছে তাক্বওয়া বা আল্লাহ্‌ ভীতি অর্জন করা ও আল্লাহ্‌র ইবাদত করা। আল্লাহ্‌ বলেন,
]يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمْ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ[
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর ছিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে করে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৩) তাক্বওয়া হচ্ছে হারাম কাজ পরিত্যাগ করা। ব্যাপক অর্থে তাক্বওয়া হচ্ছে, আল্লাহ্‌র নির্দেশিত বিষয় বাস্তবায়ন করা, তাঁর নিষেধ থেকে দূরে থাকা। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

(৩৯৩) মুসলিম জাতির একতার লক্ষ্যে কেউ কেউ চাঁদ দেখার বিষয়টিকে মক্কার সাথে সংশ্লিষ্ট করতে চায়। তারা বলে মক্কায় যখন রামাযান মাস শুরু হবে তখন বিশ্বের সবাই রোযা রাখবে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?

(৩৯৩) মুসলিম জাতির একতার লক্ষ্যে কেউ কেউ চাঁদ দেখার বিষয়টিকে মক্কার সাথে সংশ্লিষ্ট করতে চায়। তারা বলে মক্কায় যখন রামাযান মাস শুরু হবে তখন বিশ্বের সবাই রোযা রাখবে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?


বিষয়টি মহাকাশ গবেষণার দিক থেকে অসম্ভব। ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, চন্দ্র উদয়ের স্থান বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ বিদ্বানগণ ঐকমত্য। আর এই বিভিন্নতার দাবী হচ্ছে প্রত্যেক এলাকায় ভিন্ন রকম বিধান হবে। একথার স্বপক্ষে দলীল কুরআন হাদীছ ও সাধারণ যুক্তি।
আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمْ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ “অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসে উপস্থিত হবে, সে যেন ছিয়াম পালন করে।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৫) যদি পৃথিবীর শেষ সীমান্তে লোকেরা এ মাসে উপস্থিত না হয় অর্থাৎ চাঁদ না দেখে আর মক্কার লোকেরা চাঁদ দেখে, তবে কিভাবে এই আয়াত তাদের ক্ষেত্রে প্রজোয্য হবে যারা কিনা চাঁদই দেখেনি। আর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

(৩৯৪) রোযাদার যদি এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর হয়, কিন্তু আগের দেশে ঈদের চাঁদ দেখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেকি এখন রোযা ভঙ্গ করবে? উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় দেশে ঈদের চাঁদ এখনও দেখা যায়নি।

(৩৯৪) রোযাদার যদি এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর হয়, কিন্তু আগের দেশে ঈদের চাঁদ দেখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেকি এখন রোযা ভঙ্গ করবে? উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় দেশে ঈদের চাঁদ এখনও দেখা যায়নি।


কোন মানুষ যদি এক ইসলামী রাষ্ট্র থেকে অপর ইসলামী রাষ্ট্রে গমণ করে আর উক্ত রাষ্ট্রে ছিয়াম ভঙ্গের সময় না হয়ে থাকে, তবে সে তাদের সাথে ছিয়াম চালিয়ে যাবে, যে পর্যন্ত না তারা ছিয়াম ভঙ্গ করে। কেননা মানুষ যখন রোযা রাখে তখন রোযা রাখতে হবে, মানুষ যখন রোযা ভঙ্গ করে তখন রোযা ভঙ্গ করতে হবে। মানুষ যেদিন কুরবানীর ঈদ করে সেদিন কুরবানীর ঈদ করবে। যদিও তার একদিন বা দু’দিন বেশী হয়ে যায় তার জন্য এ বিধান প্রযোজ্য হবে। যেমন

(৩৯৫) যে ব্যক্তি কষ্টকর কঠিন কাজ করার কারণে রোযা রাখতে অসুবিধা অনুভব করে তার কি রোযা ভঙ্গ করা জায়েয?

(৩৯৫) যে ব্যক্তি কষ্টকর কঠিন কাজ করার কারণে রোযা রাখতে অসুবিধা অনুভব করে তার কি রোযা ভঙ্গ করা জায়েয?


আমি যেটা মনে করি, কাজ করার কারণে রোযা ভঙ্গ করা জায়েয নয়, হারাম। রোযা রেখে কাজ করা যদি সম্ভব না হয়, তবে রামাযান মাসে ছুটি নিবে, অথবা কাজ কমিয়ে দিবে, যাতে করে রামাযানের ছিয়াম পালন করা সম্ভব হয়। কেননা রামাযানের ছিয়াম ইসলামের অন্যতম একটি রুকন। যার মধ্যে

(৩৯৬) জনৈক বালিকা ছোট বয়সে ঋতুবতী হয়ে গেছে। সে অজ্ঞতা বশতঃ ঋতুর দিনগুলোতে রোযা পালন করেছে। এখন তার করণীয় কি?

(৩৯৬) জনৈক বালিকা ছোট বয়সে ঋতুবতী হয়ে গেছে। সে অজ্ঞতা বশতঃ ঋতুর দিনগুলোতে রোযা পালন করেছে। এখন তার করণীয় কি?


তার উপর আবশ্যক হচ্ছে, ঋতু অবস্থায় যে কয়দিনের ছিয়াম আদায় করেছে সেগুলোর কাযা আদায় করা। কেননা ঋতু অবস্থায় ছিয়াম পালন করলে বিশুদ্ধ হবে না এবং গ্রহণীয় হবে না। যদিও তা অজ্ঞতা বশতঃ হয়ে থাকে। তাছাড়া পরবর্তীতে যে কোন সময় তা কাযা করা সম্ভব। কাযা আদায় করার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় নেই।
এর বিপরীত আরেকটি মাসআলা হচ্ছে, অল্প বয়সে জনৈক বালিকা ঋতুবতী হয়ে গেছে। কিন্তু

(৩৯৭) জীবিকা নির্বাহের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে ছিয়াম ভঙ্গ করার বিধান কি?

(৩৯৭) জীবিকা নির্বাহের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে ছিয়াম ভঙ্গ করার বিধান কি?


যে ব্যক্তি রামাযানের ছিয়াম পরিত্যাগ করে এই যুক্তিতে যে, সে নিজের এবং পরিবারের জীবিকা উপার্জনে ব্যস্ত। সে যদি এই তা’বীল বা ব্যাখ্যা করে যে, অসুস্থ ব্যক্তি যেমন রোযা ভঙ্গ না করলে বেঁচে থাকতে অক্ষম তেমনি আমিও তো দরিদ্র অভাবী, জীবিকা উপার্জন করতে হলে আমাকে রোযা ভঙ্গ করতে হবে, তবে এই যুক্তি খোঁড়া এবং নিঃসন্দেহে এ ব্যক্তি মূর্খ। অতএব অজ্ঞতার কারণে এবং অপব্যাখ্যার কারণে সে উক্ত সময়ের কাযা আদায় করবে যদি সে জীবিত থাকে। জীবিত না থাকলে তার পরিবার তার পক্ষ থেকে কাযা আদায় করে দিবে। কেউ কাযা আদায় না করলে তার পক্ষ থেকে প্রতিদিনের বিনিময়ে একজন করে মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াবে।
কিন্তু

(৩৯৮) রোযা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কারণ কি কি?

(৩৯৮) রোযা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কারণ কি কি?


রোযা ভঙ্গের কারণ সমূহ হচ্ছেঃ
১) অসুস্থতা,

২) সফর। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ্‌ বলেন, وَمَنْ كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ “আর যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে (সে রোযা ভঙ্গ করে) অন্য দিনে তা কাযা আদায় করে নিবে।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৫)
৩) গর্ভবতী নারীর নিজের বা শিশুর জীবনের আশংকা করলে রোযা ভঙ্গ করবে।
৪) সন্তানকে দুগ্ধদানকারীনী নারী যদি রোযা রাখলে নিজের বা সন্তানের জীবনের আশংকা করে তবে রোযা ভঙ্গ করবে।
৫) কোন বিপদগ্রস্ত মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে রোযা ভঙ্গ করা: যেমন পানিতে ডুবন্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার, আগুন থেকে বাঁচাতে গিয়ে দরকার হলে রোযা ভঙ্গ করা।
৬) আল্লাহ্‌র পথে জিহাদে থাকার সময় শরীরে শক্তি বজায় রাখার জন্য রোযা ভঙ্গ করা। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের সময় ছাহাবীদেরকে বলেছিলেন,

(৩৯৯) রামাযান মাস শুরু হয়েছে কিনা এসংবাদ না পেয়েই জনৈক ব্যক্তি রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। রাতে সে ছিয়ামের নিয়ত করেনি ফজর হয়ে গেছে। ফজরের সময় সে জানতে পারল আজ রামাযানের প্রথম দিন। এ অবস্থায় তার করণীয় কি? উক্ত দিনের ছিয়াম কি কাযা আদায় করতে হবে?

(৩৯৯) রামাযান মাস শুরু হয়েছে কিনা এসংবাদ না পেয়েই জনৈক ব্যক্তি রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। রাতে সে ছিয়ামের নিয়ত করেনি ফজর হয়ে গেছে। ফজরের সময় সে জানতে পারল আজ রামাযানের প্রথম দিন। এ অবস্থায় তার করণীয় কি? উক্ত দিনের ছিয়াম কি কাযা আদায় করতে হবে?


যখন সে জানতে পারবে তখনই রোযার নিয়ত করে ফেলবে এবং ছিয়াম পালন করবে। অধিকাংশ বিদ্বানের মতে এ দিনটির ছিয়াম পরে সে কাযা আদায় করবে। তবে ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) এতে বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, জানার সাথে নিয়তের সম্পর্ক। এ লোক তো জানতেই পারেনি। অতএব তার ওযর গ্রহণযোগ্য। সে জানতে পারলে রাতে কখনই ছিয়ামের নিয়ত করা ছাড়তো না। কিন্তু

(৪০০) কারণ বশতঃ কোন ব্যক্তি যদি রোযা ভঙ্গ করে আর দিন শেষ হওয়ার আগেই উক্ত ওযর দূর হয়ে যায়। সে কি দিনের বাকী অংশ রোযা অবস্থায় কাটাবে?

(৪০০) কারণ বশতঃ কোন ব্যক্তি যদি রোযা ভঙ্গ করে আর দিন শেষ হওয়ার আগেই উক্ত ওযর দূর হয়ে যায়। সে কি দিনের বাকী অংশ রোযা অবস্থায় কাটাবে?


না, দিনের বাকী অংশ ছিয়াম অবস্থায় থাকা আবশ্যক নয়। তবে রামাযান শেষে উক্ত দিবসের কাযা তাকে আদায় করতে হবে। কেননা শরীয়ত অনুমদিত কারণেই সে ছিয়াম ভঙ্গ করেছে। উদাহরণ স্বরূপ অসুস্থ ব্যক্তির অপারগতার কারণে শরীয়ত তাকে ঔষুধ সেবনের অনুমতি দিয়েছে। ঔষুধ সেবন করা মানেই রোযা ভঙ্গ। অতএব পূর্ণ এই দিনটির ছিয়াম তার উপর আবশ্যক নয়। দিনের বাকী অংশ রোযা অবস্থায় থাকার অবশ্যকতায় শরীয়ত সম্মত কোন ফায়েদা নেই। যেখানে কোন উপকার নেই তা আবশ্যক করাও চলে না।
উদাহরণ স্বরূপঃ

(৪০১) জনৈক মহিলা কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে ডাক্তারগণ তাকে রোযা রাখতে নিষেধ করেছে। এর বিধান কি?

(৪০১) জনৈক মহিলা কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে ডাক্তারগণ তাকে রোযা রাখতে নিষেধ করেছে। এর বিধান কি?


আল্লাহ্‌ বলেন,
]شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنْ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمْ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَنْ كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمْ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمْالْعُسْرَ[
“রামাযান হচ্ছে সেই মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়াত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ। আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ অথবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করে নিবে। আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য কঠিন কামনা করেন না।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৫)
মানুষ যদি এমন রোগে আক্রান্ত হয় যা থেকে সুস্থ হওয়ার কোন আশা নেই। তবে

(৪০২) কখন এবং কিভাবে মুসাফির নামায ও রোযা আদায় করবে?

(৪০২) কখন এবং কিভাবে মুসাফির নামায ও রোযা আদায় করবে?


 মুসাফির নিজ শহর থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিয়ে প্রত্যাবর্তন করা পর্যন্ত দু’দু রাকাত নামায আদায় করবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন,
أَوَّلَ مَا فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ وَأُتِمَّتْ صَلَاةُ الْحَضَرِ
“সর্বপ্রথম যে নামায ফরয করা হয়েছিল তা হচ্ছে দু’রাকাত। সফরের নামাযকে ঐভাবেই রাখা হয়েছে এবং গৃহে অবস্থানের সময় নামাযকে পূর্ণ (চার রাকাত) করা হয়েছে।” অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে, “গৃহে অবস্থানের সময় নামায বৃদ্ধি করা হয়েছে।” আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন, আমরা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে মদ্বীনা থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। তিনি মদ্বীনা ফিরে আসা পর্যন্ত দু’দু রাকাত করে নামায আদায় করলেন।
কিন্তু

(৪০৩) সফর অবস্থায় কষ্ট হলে রোযা রাখার বিধান কি?

(৪০৩) সফর অবস্থায় কষ্ট হলে রোযা রাখার বিধান কি?


সফর অবস্থায় যদি এমন কষ্ট হয় যা সহ্য করা সম্ভব, তবে সে সময় রোযা রাখা মাকরূহ। কেননা একদা সফরে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেখলেন জনৈক ব্যক্তির পাশে লোকজন ভীড় করছে এবং তাকে ছাঁয়া করছে। তিনি বললেন, এর কি হয়েছে? তারা বলল, লোকটি রোযাদার। তখন তিনি বললেন, لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَرِ “সফর অবস্থায় ছিয়াম পালন করা কোন পূণ্যের কাজ নয়।”
কিন্তু

(৪০৪) আধুনিক যুগের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত ও আরাম দায়ক হওয়ার কারণে সফর অবস্থায় রোযা রাখা মুসাফিরের জন্য কষ্টকর নয়। এ অবস্থায় রোযা রাখার বিধান কি?

(৪০৪) আধুনিক যুগের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত ও আরাম দায়ক হওয়ার কারণে সফর অবস্থায় রোযা রাখা মুসাফিরের জন্য কষ্টকর নয়। এ অবস্থায় রোযা রাখার বিধান কি?


মুসাফির রোযা রাখা ও ভঙ্গ করার ব্যাপারে ইচ্ছাধীন। আল্লাহ্‌ বলেন,
]وَمَنْ كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمْ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمْ الْعُسْرَ[
“আর যে লোক অসুস্থ অথবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করে নিবে।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৫) ছাহাবায়ে কেরাম নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে সফরে থাকলে কেউ রোযা রাখতেন কেউ রোযা ভঙ্গ করতেন। কোন রোযা ভঙ্গকারী অপর রোযাদারকে দোষারোপ করতেন না, রোযাদারও রোযা ভঙ্গকারীকে দোষারোপ করতেন না। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সফর অবস্থায় রোযা রেখেছেন। আবু দারদা (রাঃ) বলেন, “একদা রামাযান মাসে কঠিন গরমের সময় আমরা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে সফরে ছিলাম। তখন আমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবদুল্লাহ্‌ বিন রাওয়াহা ছাড়া আর কেউ রোযা রাখে নি।”
মুসাফিরের জন্য মূলনীতি হচ্ছে,

(৪০৫) রোযা অবস্থায় মুসাফির যদি মক্কায় পৌঁছে। তবে ওমরা আদায় করতে শক্তি পাওয়ার জন্য রোযা ভঙ্গ করা জায়েয হবে কি?

(৪০৫) রোযা অবস্থায় মুসাফির যদি মক্কায় পৌঁছে। তবে ওমরা আদায় করতে শক্তি পাওয়ার জন্য রোযা ভঙ্গ করা জায়েয হবে কি?


নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের সময় রামাযান মাসের বিশ তারিখে মক্কায় প্রবেশ করেন। সে সময় তিনি রোযা ভঙ্গ অবস্থায় ছিলেন। সেখানে দু’দু রাকআত করে নামায কসর আদায় করেছেন। আর মক্কাবাসীদের বলেছেন, “হে মক্কাবাসীগণ! তোমরা নামায পূর্ণ করে নাও। কেননা আমরা মুসাফির।” ছহীহ্‌ বুখারীতে একথাও প্রমাণিত হয়েছে, তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসের অবশিষ্ট দিনগুলো রোযা ভঙ্গ অবস্থাতেই অতিবাহিত করেছেন। কেননা তিনি ছিলেন মুসাফির।
তাই

(৪০৬) সন্তানকে দুগ্ধদানকারীনী কি রোযা ভঙ্গ করতে পারবে? ভঙ্গ করলে কিভাবে কাযা আদায় করবে? নাকি রোযার বিনিময়ে খাদ্য দান করবে?

(৪০৬) সন্তানকে দুগ্ধদানকারীনী কি রোযা ভঙ্গ করতে পারবে? ভঙ্গ করলে কিভাবে কাযা আদায় করবে? নাকি রোযার বিনিময়ে খাদ্য দান করবে?


দুগ্ধদানকারীনী রোযা রাখার কারণে যদি সন্তানের জীবনের আশংকা করে অর্থাৎ রোযা রাখলে স্তনে দুধ কমে যাবে ফলে শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তবে মায়ের রোযা ভঙ্গ করা জায়েয। কিন্তু পরবর্তীতে তার কাযা আদায় করে নিবে। কেননা এ অবস্থায় সে অসুস্থ ব্যক্তির অনুরূপ। যার সম্পর্কে আল্লাহ্‌ বলেন,

(৪০৭) ক্ষুধা-পিপাসা ও অতিরিক্ত ক্লান্তির সাথে রোযা পালন করলে রোযার বিশুদ্ধতায় কি কোন প্রভাব পড়বে?

(৪০৭) ক্ষুধা-পিপাসা ও অতিরিক্ত ক্লান্তির সাথে রোযা পালন করলে রোযার বিশুদ্ধতায় কি কোন প্রভাব পড়বে?


 ক্ষুধা-পিপাসা ও অতিরিক্ত ক্লান্তির সাথে রোযা পালন করলে রোযার বিশুদ্ধতায় এর কোন প্রভাব পড়বে না। বরং এতে অতিরিক্ত ছওয়াব পাওয়া যাবে। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয়েশা (রাঃ)কে বলেছিলেন, “তোমার ক্লান্তি ও কষ্ট অনুযায়ী তুমি ছওয়াব পাবে।” অতএব আল্লাহ্‌র আনুগত্যের ক্ষেত্রে মানুষের ক্লান্তি যত বেশী হবে ততই তার প্রতিদান বেশী হবে। তবে

(৪০৮) রামাযানের প্রত্যেক দিনের জন্য আলাদা আলাদাভাবে কি নিয়ত করা আবশ্যক? নাকি পূর্ণ মাসের নিয়ত একবার করে নিলেই হবে?

(৪০৮) রামাযানের প্রত্যেক দিনের জন্য আলাদা আলাদাভাবে কি নিয়ত করা আবশ্যক? নাকি পূর্ণ মাসের নিয়ত একবার করে নিলেই হবে?


রামাযানের প্রথমে পূর্ণ মাসের জন্য একবার নিয়ত করলেই যথেষ্ট হবে। কেননা রোযাদার যদি প্রতিদিনের জন্য রাতে নিয়ত না করে, তবে তা রামাযানের প্রথমের নিয়তের শামিল হয়ে তার ছিয়াম বিশুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু সফর, অসুস্থতা প্রভৃতি দ্বারা যদি মাসের মধ্যখানে বিচ্ছিন্নতা আসে, তবে নতুন করে আবার নিয়ত আবশ্যক। কেননা

(৪০৯) রোযা ভঙ্গের জন্য অন্তরে দৃঢ় নিয়ত করলেই কি রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে?

(৪০৯) রোযা ভঙ্গের জন্য অন্তরে দৃঢ় নিয়ত করলেই কি রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে?


একথা সর্বজন বিদিত যে, ছিয়াম হচ্ছে নিয়ত এবং পরিত্যাগের সমষ্টির নাম। অর্থাৎ রোযা বিনষ্টকারী যাবতীয় বস্ত পরিত্যাগ করে রোযাদার রোযার দ্বারা আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি ও নৈকট্য লাভের নিয়ত করবে। কিন্তু সত্যিই যদি এটাকে সে ভঙ্গ করার দৃঢ় সংকল্প করে ফেলে তবে তার ছিয়াম বাতিল হয়ে যাবে। আর এটা রামাযান মাসে হলে দিনের অবশিষ্ট অংশ তাকে পানাহার ছাড়াই কাটাতে হবে। কেননা বিনা ওযরে যে ব্যক্তি রামাযানে ছিয়াম ভঙ্গ করবে তাকে যেমন দিনের বাকী অংশ ছিয়াম অবস্থাতেই কাটাতে হবে, অনুরূপভাবে তার কাযাও আদায় করতে হবে।
কিন্তু

(৪১০) রোজাদার ভুলক্রমে পানাহার করলে তার ছিয়ামের বিধান কি? কেউ এটা দেখলে তার করণীয় কি?

(৪১০) রোজাদার ভুলক্রমে পানাহার করলে তার ছিয়ামের বিধান কি? কেউ এটা দেখলে তার করণীয় কি?


রামাযানের রোযা রেখে কেউ যদি ভুলক্রমে খানা-পিনা করে তবে তার ছিয়াম বিশুদ্ধ। তবে স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে বিরত হওয়া ওয়াজিব। এমনকি খাদ্য বা পানীয় যদি মুখের মধ্যে থাকে এবং স্মরণ হয়, তবে তা ফেলে দেয়া ওয়াজিব। ছিয়াম বিশুদ্ধ হওয়ার দলীল হচ্ছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, 

(৪১১) রোযা রেখে সুরমা ব্যবহার করার বিধান কি?

(৪১১) রোযা রেখে সুরমা ব্যবহার করার বিধান কি?


রোযাদারের জন্য সুরমা ব্যবহার করায় কোন অসুবিধা নেই। অনুরূপভাবে চোখে বা কানে ঔষুধ (ড্রপ) ব্যবহার করতেও কোন অসুবিধা নেই, যদিও এতে গলায় ড্রপের স্বাদ অনুভব করে। এতে রোযা ভঙ্গ হবে না। কেননা ইহা খাদ্য বা পানীয় নয় বা খানা-পিনার বিকল্প হিসেবেও ব্যবহৃত নয়। একথার দলীল হচ্ছে, ছিয়ামের ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা তা হচ্ছে খানা-পিনা করা। সুতরাং যা খানা-পিনার অন্তর্ভুক্ত নয় তা এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে গণ্য হবে না। ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ)

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ