Monday, April 2, 2018

মুক্তাদী যদি ইমামকে সিজদা অবস্থায় পায়, তবে কি ইমামের সিজদা থেকে উঠার অপেক্ষা করবে? নাকি সিজদা অবস্থাতেই নামাযে শামিল হবে?

(৩০৩) মুক্তাদী যদি ইমামকে সিজদা অবস্থায় পায়, তবে কি ইমামের সিজদা থেকে উঠার অপেক্ষা করবে? নাকি সিজদা অবস্থাতেই নামাযে শামিল হবে?


উত্তম হচ্ছে ইমামকে যে অবস্থাতেই মুক্তাদী পাবে নামাযে শামিল হবে, কোনরূপ অপেক্ষা করবে না। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

যেসমস্ত নামাযে নীরবে কিরাআত পাঠ করা হয় সে সমস্ত নামাযে মুক্তাদীর ফাতিহার পর অন্য সূরা পাঠ করার বিধান কি?

(৩০৪) যেসমস্ত নামাযে নীরবে কিরাআত পাঠ করা হয় সে সমস্ত নামাযে মুক্তাদীর ফাতিহার পর অন্য সূরা পাঠ করার বিধান কি?


ইমামের রুকূ করার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত মুক্তাদী পড়তেই থাকবে। যদিও সে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পাঠ করে থাকে। চুপ থাকবে না। এমনকি প্রথম তাশাহুদের পর শেষের দু’রাকাতেও সূরা ফাতিহা পড়ার পর যদি দেখে ইমাম রুকূ করেননি, তবে অন্য সূরা পড়া শুরু করবে। কেননা

ইমামের আগে আগে কোন কাজ করার বিধান কি?

(৩০৫) ইমামের আগে আগে কোন কাজ করার বিধান কি?


ইমামের আগে বেড়ে কোন কাজ করা হারাম। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أَمَا يَخْشَى الَّذِي يَرْفَعُ رَأْسَهُ قَبْلَ الْإِمَامِ أَنْ يُحَوِّلَ اللَّهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ
“যে ব্যক্তি ইমামের পূর্বে মাথা উঠায় সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ্‌ তার মাথাটি গাধার মাথায় রূপান্তরিত করে দিবেন না? অথবা তার আকৃতিকে গাধার আকৃতিতে পরিবর্তন করে দিবেন না?”  আরো প্রমাণিত হয়েছে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ

গুনাহ্‌গার (ফাসেক) লোকের পিছনে নামায পড়া কি জায়েয?

(৩০৬) গুনাহ্‌গার (ফাসেক) লোকের পিছনে নামায পড়া কি জায়েয?


প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তি- যদিও সে কিছু কিছু গুনাহ্‌র কাজে লিপ্ত থাকে- তার পিছনে নামায আদায় করা জায়েয ও নামায বিশুদ্ধ। এটাই বিশুদ্ধ মত। কিন্তু নিঃসন্দেহে পরহেজগার ও বাহ্যিকভাবে পরিশুদ্ধ লোকের পিছনে নামায আদায় করা উত্তম। ঐ গুনাহ্‌গার ব্যক্তির পাপ সমূহ যদি এমন পর্যায়ের হয় যা ইসলাম ভঙ্গকারী, তাহলে তার পিছে নামায আদায় করা বৈধ হবে না। কেননা তার নিজের নামাযই তো বিশুদ্ধ নয়। কেননা

নফল আদায়কারীর পিছনে কি ফরয আদায় করা জায়েয হবে? অথবা ফরয আদায় কারীর পিছনে কি নফল আদায় করা চলবে?

(৩০৭) নফল আদায়কারীর পিছনে কি ফরয আদায় করা জায়েয হবে? অথবা ফরয আদায় কারীর পিছনে কি নফল আদায় করা চলবে?


উভয়টিই বিশুদ্ধ। অনুরূপভাবে আছর নামায আদায়কারীর পিছনে যোহর আদায় করা জায়েয হবে এবং যোহর আদায়কারী ইমামের পিছনে আছর আদায় করা যাবে। কেননা প্রত্যেকে নিয়ত অনুযায়ী আমল করবে। তার ফল পাবে। একারণে ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেছেন,

একটি বিষয় নিয়ে মুছল্লীদের মাঝে মতবিরোধ হয়েছে। বিষয়টি হচ্ছে, জনৈক লোক নামায কায়েম হওয়ার পর মসজিদে প্রবেশ করে দেখে কাতার পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। কাতারে কোন জায়গা নেই। সে কি আগের কাতার থেকে একজন লোক টেনে নিয়ে তাকে নিয়ে নতুন কাতার করবে? না একাকী কাতারে দাঁড়াবে? না অন্য কিছু করবে?

(৩০৮) একটি বিষয় নিয়ে মুছল্লীদের মাঝে মতবিরোধ হয়েছে। বিষয়টি হচ্ছে, জনৈক লোক নামায কায়েম হওয়ার পর মসজিদে প্রবেশ করে দেখে কাতার পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। কাতারে কোন জায়গা নেই। সে কি আগের কাতার থেকে একজন লোক টেনে নিয়ে তাকে নিয়ে নতুন কাতার করবে? না একাকী কাতারে দাঁড়াবে? না অন্য কিছু করবে?


নামাযে এসে যদি দেখে যে, কাতার পরিপূর্ণ হয়ে গেছে, তবে তার তিনটি অবস্থা রয়েছেঃ
১)      কাতারের পিছনে একাকী নামায আদায় করবে।
২)      অথবা সামনের কাতার থেকে একজন লোক টেনে নিবে এবং তাকে নিয়ে নতুন কাতার বানাবে।
৩)      অথবা কাতার সমূহের আগে চলে গিয়ে ইমামের ডান দিকে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করবে।
এ তিনটি অবস্থা হচ্ছে যদি সে নামাযে প্রবেশ করতে চায়। চতুর্থ অবস্থা হচ্ছে, এর কোনটিই করবে না। অর্থাৎ-
৪) এ জামাআতে শামিল হবে না, অপেক্ষা করবে।
এ চারটি অবস্থার মধ্যে কোনটি গ্রহণ করা বিশুদ্ধ?

মসজিদের উপর তলার লোকেরা নীচের তলার লোকদের দেখতে না পেলে নামায বিশুদ্ধ হবে কি?

(৩০৯) মসজিদের উপর তলার লোকেরা নীচের তলার লোকদের দেখতে না পেলে নামায বিশুদ্ধ হবে কি?


যখন মসজিদ একটিই, উপর তলার লোকেরা যদি ইমামের তাকবীর ধ্বনী শুনতে পায় তবে একে অপরকে দেখার কোন শর্ত নেই। তাদের সকলের নামায বিশুদ্ধ

রেডিও-টিভিতে প্রচারিত নামাযের অনুসরণ করা জায়েয আছে কি? অসুস্থ ব্যক্তি কিভাবে নামায আদায় করবে?

(৩১০) রেডিও-টিভিতে প্রচারিত নামাযের অনুসরণ করা জায়েয আছে কি?


টেলিভিশন ও রেডিওর মাধ্যমে প্রচারিত নামাযে ইমামের অনুসরণ করা কোন মুসলমানের জন্য জায়েয নয়। কেননা নামাযের জন্য জামাআতের অর্থ হচ্ছে একস্থানে সমবেত হওয়া। অতএব তাদেরকে একস্থানে একত্রিত হওয়া জরূরী। কাতার সমূহ মিলিত করা আবশ্যক। ঐ দু’টি কারণে মিডিয়ার মাধ্যমে নামায জায়েয হবে না। কেননা তা দ্বারা উক্ত উদ্দেশ্য হাসিল হয় না। যদি এটা জায়েয হয়, তবে আর মসজিদের কোন প্রয়োজন থাকে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ গৃহে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও জুমআর নামায আদায় করে নিবে। নিঃসন্দেহে এটা জামাআত ও জুমআ প্রতিষ্ঠিত করার শরীয়ত নির্দেশিত হিকমতের পরিপন্থী। অতএব নারী-পুরুষ কারো জন্য রেডিও বা টেলিভিশনের অনুসরণ করে নামায আদায় করা বৈধ নয়। (আল্লাহ্‌ সবাইকে তাওফীক দিন)

 
অসুস্থ ব্যক্তি কিভাবে নামায আদায় করবে?

উড়োজাহাজে নামায আদায় করার পদ্ধতি কি?

(৩১১) উড়োজাহাজে নামায আদায় করার পদ্ধতি কি?


সময় হলেই উড়োজাহাজের উপর নামায আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু নামাযের নির্দিষ্ট সময় বা দু’নামায একত্রিত করার সময় শেষ হওয়ার আগেই যদি বিমান অবতরণ করার সম্ভাবনা থাকে, আর যমীনে থাকাবস্থায় যেভাবে নামায আদায় করতে হয়, সেভাবে যদি বিমানের উপর সম্ভব না হয়, তবে সেখানে ফরয নামায আদায় করবে না। বরং অবতরণ করার পর যমীনে নামায আদায় করবে। যেমনঃ জেদ্দা এয়ারপোর্ট থেকে সূর্যাস্তের পূর্বে বিমান উড্ডয়ন করল। এখন আকাশে থাকাবস্থায় মাগরিব নামায আদায় করবে না। পরবর্তী এয়ারপোর্টে বিমান অবতরণ করার পর নামায পড়বে। কিন্তু যদি দেখে যে, মাগরিব নামাযের সময় অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে, তবে এশা নামাযের সাথে মাগরিবকে একত্রিত করার নিয়ত করে নিবে। অতঃপর অবতরণ করে মাগরিব নামাযকে পিছিয়ে দিয়ে এশার সাথে একত্রিত আদায় করবে। কিন্তু যদি বিমান চলতেই থাকে- অবতরণের সম্ভাবনা না থাকে এবং এশা নামাযেরও সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার আশংকা হয়, তখন বিমানের উপরেই সময় অতিক্রম হওয়ার আগেই মাগরিব ও এশা নামায একত্রিত আদায় করে নিবে।

কতটুকু দূরত্বে গেলে মুসাফির নামায কসর করতে পারে? কসর না করেই কি দু’নামাযকে একত্রিত করা যায়?

(৩১২) কতটুকু দূরত্বে গেলে মুসাফির নামায কসর করতে পারে? কসর না করেই কি দু’নামাযকে একত্রিত করা যায়?


কোন কোন বিদ্বানের মতে ৮৩ (তিরাশী) কিলোমিটার পরিমাণ দুরত্ব অতিক্রম করলে নামায কসর করবে। কোন কোন বিদ্বান বলেছেন, সমাজে প্রচলিত রীতিনীতিতে বা দেশীয় প্রথায় যাকে সফর বলা হয় তাতেই নামায কসর করবে। যদিও তা ৮০ কিলোমিটার না হয়। আর মানুষ যদি তাকে সফর না বলে, তবে তা সফর নয়; যদিও তা ১০০ কিঃ মিঃ হয়। এটাই শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ)এর মত। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা নির্দিষ্টভাবে সফরের কোন দুরত্ব নির্ধারণ করেননি। অনুরূপভাবে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকেও সফরের দুরত্ব নির্ধারণের ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা পাওয়া যায় না। আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন,

জনৈক ব্যক্তি লিখা-পড়ার জন্য জুমআর দিন সন্ধ্যায় রিয়াদ গমণ করে ও সোমবার দিন প্রত্যাবর্তন করে। সে কি মুসাফিরের মত নামায কসর করে আদায় করবে?

(৩১৩) জনৈক ব্যক্তি লিখা-পড়ার জন্য জুমআর দিন সন্ধ্যায় রিয়াদ গমণ করে ও সোমবার দিন প্রত্যাবর্তন করে। সে কি মুসাফিরের মত নামায কসর করে আদায় করবে?


নিঃসন্দেহে এ ব্যক্তি মুসাফির। কেননা লিখা-পড়ার শহর তার স্থায়ী আবাসস্থল নয়। সেখানে থেকে যাওয়ার বা বসবাস করারও কোন নিয়ত সে করেনি। বরং নির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্যে কয়েকদিন তথায় অবস্থান করছে। কিন্তু সে যদি এমন শহরে অবস্থান করে যেখানে জামাআতের সাথে নামায হয়, তবে নামাযের জামাআতে উপস্থিত হওয়া তার জন্য ওয়াজিব। সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, মুসাফিরের জন্য জুমআ বা জামাআতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয়- একথার কোন ভিত্তি নেই, কোন দলীল নেই। মুসাফির যদি যুদ্ধের ময়দানে লড়াইয়ে থাকে তবুও তার জন্য জামাআতে নামায আদায় করা ওয়াজিব। আল্লাহ্‌ বলেন,

জুমআর সাথে আছরের নামায একত্রিত করার বিধান কি? যারা শহরের বাইরে থাকে তাদের জন্য কি একত্রিত করা জায়েয?

(৩১৪) জুমআর সাথে আছরের নামায একত্রিত করার বিধান কি? যারা শহরের বাইরে থাকে তাদের জন্য কি একত্রিত করা জায়েয?


জুমআর সাথে আছর নামাযকে একত্রিত করা জায়েয নয়। কেননা এর পক্ষে হাদীছে কোন দলীল পাওয়া যায় না। একে যোহরের নামাযের সাথে ক্বিয়াস করা ঠিক নয়। কেননা জুমআ ও যোহরের মাঝে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। তাছাড়া আসল হচ্ছে প্রত্যেক নামাযকে নির্দিষ্ট সময়েই আদায় করা। তবে শুধুমাত্র দলীলের ভিত্তিতেই এক নামাযকে অন্য নামাযের সাথে একত্রিত করা যায়।

সফর অবস্থায় কি কি বিষয়ে রুখসত বা অবকাশ রয়েছে?

(৩১৫) সফর অবস্থায় কি কি বিষয়ে রুখসত বা অবকাশ রয়েছে?


সফর অবস্থায় চারটি ক্ষেত্রে রুখসত বা অবকাশ রয়েছেঃ
১)      চার রাকাআত বিশিষ্ট নামায দু’রাকাআত আদায় করা।
২)      রামাযানে রোযা ভঙ্গ করা। এবং পরবর্তীতে তার কাযা আদায় করা।
৩)      তিনদিন তিনরাত মোজার উপর মাসেহ করা। প্রথমবার মাসেহ করার পর থেকে উক্ত সময়সীমা হিসাব করতে হবে।

শুক্রবার দিবসের প্রথম ওয়াক্ত কখন থেকে শুরু হয়?

(৩১৬) শুক্রবার দিবসের প্রথম ওয়াক্ত কখন থেকে শুরু হয়?


জুমআর দিবসের প্রহর সমূহ হচ্ছে পাঁচটিঃ নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ غُسْلَ الْجَنَابَةِ ثُمَّ رَاحَ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَدَنَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّانِيَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَقَرَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّالِثَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ كَبْشًا أَقْرَنَ وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الرَّابِعَةِفَكَأَنَّمَا قَرَّبَ دَجَاجَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الْخَامِسَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَيْضَةً فَإِذَا خَرَجَ الْإِمَامُ حَضَرَتِ الْمَلَائِكَةُ يَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ
“যে ব্যক্তি জুমআর দিবসে নাপাকী থেকে গোসল করার মত গোসল করবে, অতঃপর প্রথম প্রহরে মসজিদে গমণ করবে, সে যেন একটি উট কুরবানী করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় প্রহরে গমণ করবে সে যেন একটি গরু কুরবানী করল। যে ব্যক্তি তৃতীয় প্রহরে গমণ করবে সে যেন একটি দুম্বা কুরবানী করল। যে ব্যক্তি চতুর্থ প্রহরে গমণ করবে সে যেন একটি মুরগী উৎসর্গ করল। যে ব্যক্তি পঞ্চম প্রহরে গমণ করবে সে যেন একটি ডিম উৎসর্গ করল (আল্লাহ্‌র পথে দান করল)। অতঃপর ইমাম বের হয়ে এলে ফেরেস্তাগণ উপস্থিত হয়ে যিকির (খুতবা) শুনতে বসে পড়েন।”
এ হাদীছে সূর্য উদয় থেকে খুতবার জন্য ইমামের মিম্বরে আরোহণ পর্যন্ত সময়কে পাঁচভাগে ভাগ করা হয়েছে। এই ভাগগুলোর প্রতিটিই বর্তমান সময়ের এক ঘন্টা বরাবর হতে পারে।

ইমামের কন্ঠস্বর শুনতে পেলে কি নিজ গৃহে থেকে জুমআর নামায আদায় করা জায়েয হবে?

(৩১৭) ইমামের কন্ঠস্বর শুনতে পেলে কি নিজ গৃহে থেকে জুমআর নামায আদায় করা জায়েয হবে?


মসজিদে এসে মুসলমানদের জামাআতে শামিল না হলে জুমআর নামায আদায় করা জায়েয হবে না। কিন্তু মসজিদ পরিপূর্ণ হয়ে গেলে কাতার মিলিত হওয়ার শর্তে পার্শ্ববর্তী রাস্তায় নামায আদায় করাতে কোন দোষ নেই। কিন্তু বাড়ীতে বা দোকানে ছালাত আদায় করা কোন মানুষের জন্য জায়েয বা বৈধ হবে না। কেননা জুমআ এবং জামাআত অনুষ্ঠিত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের একস্থানে সমবেত হওয়া। তারা এক ঐক্যবদ্ধ জাতি একথা প্রমাণ করা। যাতে করে তাদের পরস্পরের মাঝে মমতা ও সমপ্রীতি সৃষ্টি হয়। অজ্ঞ ব্যক্তিরা আলেমদের নিকট থেকে দ্বীন শিক্ষা লাভ করতে পারে। প্রত্যেক ব্যক্তিকে যদি এই অনুমতি দেয়া হয় যে,

জুমআর দিন মহিলারা কত রাকাআত নামায আদায় করবে?

(৩১৮) জুমআর দিন মহিলারা কত রাকাআত নামায আদায় করবে?


উত্তরঃ নারী যদি মসজিদে গিয়ে ইমামের সাথে জুমআ আদায় করে, তবে ইমামের অনুসরণ করে দু’রাকাতই আদায় করবে। কিন্তু সে যদি নিজ গৃহে নামায আদায় করে, তবে

যে ব্যক্তি জুমআর ছালাত আদায় করবে সে কি যোহরও আদায় করবে?

(৩১৯) যে ব্যক্তি জুমআর ছালাত আদায় করবে সে কি যোহরও আদায় করবে?


যে ব্যক্তি জুমআর ছালাত আদায় করল সে যোহরের সময়ের ফরযই আদায় করল। তাই সে আর যোহর আদায় করবে না। কিন্তু কিছু লোক জুমআর নামায আদায় করার পর যোহর নামায আদায় করে থাকে। সাধারণ পরিভাষায় এটাকে আখেরী যোহর বলা হয়। এটি একটি বিদআত। কেননা আল্লাহ্‌র কুরআন ও নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাতে এর কোন প্রমাণ নেই। অতএব তা পরিত্যাগ করা ওয়াজিব। এমনকি যদিও কয়েক স্থানে জুমআ অনুষ্ঠিত হয়, তবুও জুমআর নামায আদায় করার পর কোন মানুষের জন্য যোহর নামায আদায় করা শরীয়ত সম্মত নয়; বরং তা নিকৃষ্ট বিদআত। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা একটি সময়ে একের অধিক ইবাদত ফরয করেননি। আর তা হচ্ছে জুমআর নামায। তা তো আদায় করা হয়েছে।

আমরা সমুদ্রের মধ্যে (জাহাজে) কাজ করি। জুমআর নামাযের সময় হয়ে গেছে। কিন্তু যোহরের আযানের সময় হওয়ার আধা ঘন্টা পর স্তলে এসে আযান দিয়ে জুমআর নামায আদায় করা কি আমাদের জন্য জায়েয হবে?

(৩২০) আমরা সমুদ্রের মধ্যে (জাহাজে) কাজ করি। জুমআর নামাযের সময় হয়ে গেছে। কিন্তু যোহরের আযানের সময় হওয়ার আধা ঘন্টা পর স্তলে এসে আযান দিয়ে জুমআর নামায আদায় করা কি আমাদের জন্য জায়েয হবে?


শহর বা গ্রামের মসজিদ ছাড়া কোথাও জুমআর নামায অনুষ্ঠিত করা জায়েয হবে না। জলে বা স্তলে যারা দলবদ্ধ হয়ে কাজ করে তাদের জুমআর নামায বিশুদ্ধ হবে না। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হেদায়াত এরূপ ছিল না যে, তিনি শহর বা গ্রাম ছাড়া কোথাও জুমআর নামায অনুষ্ঠিত করেছেন। তিনি কখনো কয়েকদিন ব্যাপি সফর করতেন, কিন্তু সফরে জুমআ অনুষ্ঠিত করতেন না।
অতএব

জুমআর নামাযের শেষ তাশাহুদে ইমামের সাথে নামাযে শামিল হলে কি করবে?

(৩২১) জুমআর নামাযের শেষ তাশাহুদে ইমামের সাথে নামাযে শামিল হলে কি করবে?


কোন মানুষ যদি জুমআর দিন শেষ তাশাহুদে ইমামের সাথে নামাযে শামিল হয় তবে তার জুমআ ছুটে গেল। সে ইমামের সাথে নামাযে শামিল হবে ঠিকই কিন্তু চার রাকাআত যোহর আদায় করবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

জুমআর খুতবার শেষ প্রান্তে ইমাম যখন দু’আ করেন, তখন ‘আমীন’ বলা কি বিদআত?

(৩২২) জুমআর খুতবার শেষ প্রান্তে ইমাম যখন দু’আ করেন, তখন ‘আমীন’ বলা কি বিদআত?


না ইহা বিদআত নয়। ইমাম যদি খুতবায় মুসলমানদের জন্য দু’আ করেন, তবে তার দু’আয় আমীন বলা মুস্তাহাব। কিন্তু তা উঁচু আওয়াযে ও সমবেত কন্ঠে যেন না হয়। প্রত্যেকে আলাদাভাবে নীরবে নীচু কন্ঠে ‘আমীন’ বলবে। যাতে করে সেখানে অন্যের অসুবিধা এবং চেঁচামেচী না হয়।

জুমআর খুতবায় দু’আর সময় হাত উত্তোলন করার বিধান কি?

(৩২৩) জুমআর খুতবায় দু’আর সময় হাত উত্তোলন করার বিধান কি?


জুমআর খুতবায় ইমামের দু’আ করার সময় হাত উত্তোলন করা শরীয়ত সম্মত নয়। জুমআর খুতবায় দু’আ করার সময় খলীফা বিশ্‌র বিন মারওয়ান দু’হাত উত্তোলন করলে ছাহাবায়ে কেরাম তার প্রতিবাদ করেন। কিন্তু এর ব্যতিক্রম হচ্ছে ইস্তেস্কার দু’আ। এদু’আ পাঠ করার সময় হাত উত্তোলন করবে। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত হয়েছে, তিনি জুমআর খুতবায় বৃষ্টি প্রার্থনার দু’আয় হাত উত্তোলন করেছেন। লোকেরাও তাঁর সাথে হাত উঠিয়েছেন। এছাড়া

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ