Saturday, November 11, 2017

কবীরা গুনাহঃ ৬৬. জুমু‘আহ্ ও জামাতে নামায না পড়া

৬৬. জুমু‘আহ্ ও জামাতে নামায না পড়া


জুমু‘আহ্ ও জামাতে নামায না পড়া আরেকটি কবীরা গুনাহ্।
কেউ লাগাতার কয়েকটি জুমু‘আহ্ ছেড়ে দিলে আল্লাহ্ তা‘আলা তার
অন্তরে মোহর মেরে দেন। তখন সে গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর ও আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবীরা গুনাহঃ ৬৫. মৃত পশু, প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের গোস্ত খাওয়া

৬৫. মৃত পশু, প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের গোস্ত খাওয়া


মৃত পশু, প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের গোস্ত খাওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ্।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«قُلْ لَآ أَجِدُ فِيْ مَآ أُوْحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَى طَاعِمٍ يَّطْعَمُهُ إِلَّآ أَنْ يَّكُوْنَ مَيْتَتَةً أَوْ دَمًا مَّسْفُوْحًا أَوْ لَـحْمَ خِنْزِيْرٍ، فَإِنَّهُ رِجْسٌ»
‘‘(হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!) তুমি বলে দাও: আমার কাছে যে ওহী পাঠানো হয়েছে তাতে আমি আহারকারীর জন্য কোন কিছু হারাম পাইনি শুধু তিনটি বস্ত্ত ছাড়া। আর তা হচ্ছে, মৃত পশু, প্রবাহিত রক্ত এবং শুকরের গোস্ত। কেননা, তা নাপাক’’। (আন্‘আম : ১৪৫)
আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:

কবীরা গুনাহঃ ৬৪. আল্লাহ্ তা‘আলার রহমত থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হওয়া

৬৪. আল্লাহ্ তা‘আলার রহমত থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হওয়া


আল্লাহ্ তা‘আলার রহমত থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হওয়াও আরেকটি কবীরা গুনাহ্। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَمَنْ يَّقْنَطُ مِنْ رَّحْمَةِ رَبِّهِ إِلاَّ الضَّالُّوْنَ»
‘‘একমাত্র পথভ্রষ্টরাই নিজ প্রভুর করুণা থেকে নিরাশ হয়ে থাকে’’। (হিজ্র : ৫৬)
তিনি আরো বলেন:
«وَلَا تَيْأَسُوْا مِنْ رَّوْحِ اللهِ، إِنَّهُ لَا يَيْأَسُ مِنْ رَوْحِ اللهِ إِلاَّ الْقَوْمُ الْكَافِرُوْنَ»
‘‘তোমরা আল্লাহ্ তা‘আলার করুণা থেকে কখনোই নিরাশ হয়ো না। কারণ, একমাত্র কাফিররাই আল্লাহ্ তা‘আলার করুণা থেকে নিরাশ হয়ে থাকে’’। (ইউসুফ : ৮৭)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্ঊদ (রাঃ) বলেন:

কবীরা গুনাহঃ ৬৩. আল্লাহ্ তা‘আলার পাকড়াও থেকে নিজকে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ মনে করা

৬৩. আল্লাহ্ তা‘আলার পাকড়াও থেকে নিজকে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ মনে করা


আল্লাহ্ তা‘আলার পাকড়াও থেকে নিজকে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ মনে করাও আরেকটি কবীরা গুনাহ্। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«أَفَأَمِنُوْا مَكْرَ اللهِ فَلَا يَأْمَنُ مَكْرَ اللهِ إِلاَّ الْقَوْمُ الْـخَاسِرُوْنَ»
‘‘তারা কি নিজেদেরকে আল্লাহ্ তা‘আলার সূক্ষ্ম পাকড়াও থেকে নিরাপদ মনে করে? বস্ত্তত: একমাত্র ক্ষতিগ্রস্তরাই আল্লাহ্ তা‘আলার পাকড়াও থেকে নি:শঙ্ক হতে পারে’’। (আ’রাফ : ৯৯)
আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:

কবীরা গুনাহঃ ৬২. কাউকে ওজনে কম দেয়া

৬২. কাউকে ওজনে কম দেয়া


কাউকে ওজনে কম দেয়াও আরেকটি কবীরা গুনাহ্। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَيْلٌ لِّلْمُطَفِّفِيْنَ، الَّذِيْنَ إِذَا اكْتَالُوْا عَلَى النَّاسِ يَسْتَوْفُوْنَ، وَإِذَا كَالُوْهُمْ أَوْ وَّزَنُوْهُمْ يُخْسِرُوْنَ، أَلَا يَظُنُّ أُوْلَآئِكَ أَنَّهُمْ مَّبْعُوْثُوْنَ، لِيَوْمٍ عَظِيْمٍ، يَوْمَ يَقُوْمُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ»
‘‘জাহান্নামের ওয়াইল নামক উপত্যকা ওদের জন্য যারা মাপে কম দেয়। তবে অন্যদের থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণভাবেই নিয়ে নেয়। কিন্তু অন্যকে দেয়ার সময় মাপে বা ওজনে কম দেয়। তারা কি ভাবে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে সে মহান দিবসে যে দিন সকল মানুষ দাঁড়াবে (হিসাব দেয়ার জন্য) সর্ব জগতের প্রতিপালকের সম্মুখে’’। (মুত্বাফ্ফিফীন : ১-৬)

৬১. নিজ প্রয়োজনের বেশি পানি ও ঘাস অন্যকে দিতে অস্বীকার করা

৬১. নিজ প্রয়োজনের বেশি পানি ও ঘাস অন্যকে দিতে অস্বীকার করা


নিজ প্রয়োজনের বেশি পানি ও ঘাস অন্যকে দিতে অস্বীকার করাও কবীরা গুনাহ্।
‘আমর বিন্ শু‘আইব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি তাঁর পিতা থেকে এবং তাঁর পিতা তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ مَنَعَ فَضْلَ مَاءٍ أَوْ كَلَأٍ مَنَعَهُ اللهُ فَضْلَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
‘‘যে ব্যক্তি বাড়তি পানি ও ঘাস অন্যকে দিতে অস্বীকার করলো আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তাকে তাঁর অনুগ্রহ করতে অস্বীকার করবেন’’। (আহমাদ ৬৬৭৩, ৬৭২২, ৭০৫৭ স’হীহুল্ জামি’, হাদীস ৬৫৬০)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবীরা গুনাহঃ ৬০. কারোর সাথে কোন বিষয় নিয়ে অমূলক ঝগড়া-ফাসাদ করা

৬০. কারোর সাথে কোন বিষয় নিয়ে অমূলক ঝগড়া-ফাসাদ করা


কারোর সাথে কোন বিষয় নিয়ে অমূলক ঝগড়া-ফাসাদ করা আরেকটি কবীরা গুনাহ্। তা এভাবে যে, কোন সত্য প্রকাশ করার উদ্দেশ্য নেই বরং অন্যকে অপমান করা এবং নিজের কৃতিত্ব প্রকাশ করার উদ্দেশ্যেই কারোর কথায় দোষ-ত্রুটি বের করার চেষ্টা করা।
আল্লাহ্ তা‘আলা কুর‘আন মাজীদে এ জাতীয় লোকদের লুক্কায়িত উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«إِنَّ الَّذِيْنَ يُجَـادِلُوْنَ فِيْ آيَاتِ اللهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ، إِنْ فِيْ صُدُوْرِهِمْ إِلاَّ كِبْرٌ، مَا هُمْ بِبَالِغِيْهِ، فَاسْتَعِذْ بِاللهِ، إِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ»
‘‘নিশ্চয়ই যারা কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহ্ তা‘আলার নিদর্শনসমূহ নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয় তাদের অন্তরে রয়েছে শুধু অহঙ্কার যা সফল হবার নয়। অতএব তুমি আল্লাহ্ তা‘আলার শরণাপন্ন হও। তিনিই তো সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা’’। (গাফির/মু’মিন : ৫৬)
কারোর সাথে তর্ক করলে তা একমাত্র সত্য অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যেই এবং সুন্দর পন্থায় হতে হবে। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَلَا تُجَادِلُوْا أَهْلَ الْكِتَابِ إِلاَّ بِالَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ»
‘‘তোমরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদের সাথে একমাত্র উত্তম পন্থায়ই তর্কে লিপ্ত হবে’’। (‘আন্কাবূত : ৪৬)
কারোর সাথে অনর্থক ঝগড়া-ফাসাদকারী আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট একেবারেই ঘৃণিত এবং তারাই তাঁর কোপানলে পতিত।
‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
إِنَّ أَبْغَضَ الرِّجَالِ إِلَى اللهِ الْأَلَدُّ الْـخَصْمُ.
’’নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট ব্যক্তি হচ্ছে অহেতুক ঝগড়া-ফাসাদকারীই’’। (বুখারী ২৪৫৭, ৪৫২৩; মুসলিম ২৬৬৮)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ خَاصَمَ فِيْ بَاطِلٍ وَهُوَ يَعْلَمُهُ ؛ لَمْ يَزَلْ فِيْ سَخَطِ اللهِ حَتَّى يَنْزِعَ عَنْهُ.
‘‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে কারোর সাথে বাতিল কোন জিনিস নিয়ে ঝগড়া-ফাসাদ করলো আল্লাহ্ তা‘আলা সত্যিই তার উপর অসন্তুষ্ট হবেন যতক্ষণ না সে তা ছেড়ে দেয়’’। (আবূ দাউদ্, হাদীস ৩৫৯৭; আহমাদ ৫৩৮৫)
কুর‘আন নিয়ে অমূলক ঝগড়া-ফাসাদ করা কুফরি।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
الْـمِرَاءُ فِيْ الْقُرْآنِ كُفْرٌ.
‘‘কুর‘আন নিয়ে অমূলক ঝগড়া-ফাসাদ করা কুফরি’’।
(আবূ দাউদ্, হাদীস ৪৬০৩; আহমাদ ৭৮৪৮ ইব্নু হিববান/মাওয়ারিদ্, হাদীস ৫৯ ’হাকিম ২/২২৩)
কোন ব্যক্তি হিদায়াতের রাস্তা থেকে ফসকে গেলেই অহেতুক ঝগড়া-ফাসাদে লিপ্ত হয়।
আবূ উমামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَا ضَلَّ قَوْمٌ بَعْدَ هُدًى كَانُوْا عَلَيْهِ إِلاَّ أُوْتُوْا الْجَدَلَ، ثُمَّ تَلَا رَسُوْلُ اللهِ هَذِهِ الْآيَةَ: {مَا ضَرَبُوْهُ لَكَ إِلاَّ جَدَلًا، بَلْ هُمْ قَوْمٌ خَصِمُوْنَ}
‘‘কোন জাতি হিদায়াত পাওয়ার পর আবারো পথভ্রষ্ট হয়ে গেলে (আল্লাহ্ তা‘আলা) তাদেরকে অহেতুক ঝগড়া-ফাসাদে ব্যস্ত করে দেন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নোক্ত আয়াত তিলাওয়াত করেন: যার মর্মার্থ: তারা শুধু বাক-বিতন্ডার উদ্দেশ্যেই তোমাকে এমন কথা বললো। বস্ত্তত তারা বাক-বিতন্ডাকারী সম্প্রদায়’’। [যুখরুফ : ৫৮ (তিরমিযী ৩২৫৩; আহমাদ ৫/২৫২-২৫৬; ইব্নু মাজাহ্ ৪৮ ’হাকিম ২/৪৪৮]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ উম্মতের মধ্যে এ জাতীয় বাকপটু মুনাফিকের আশঙ্কাই করেছিলেন।
’ইমরান বিন্ ’হুস্বাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
 أَخْوَفُ مَا أَخَافُ عَلَى أُمَّتِيْ كُلُّ مُنَافِقٍ عَلِيْمِ اللِّسَانِ.
‘‘আমি আমার উম্মতের ব্যাপারে প্রত্যেক বাকপটু মুনাফিকেরই বেশি আশঙ্কা করছি’’। (ত্বাবারানী/কবীর খন্ড ১৮ হাদীস ৫৯৩; ইব্নু হিববান ৮০ বায্যার, হাদীস ১৭০)

কবীরা গুনাহঃ ৫৯. নিশ্চিতভাবে জানা সত্ত্বেও নিজ পিতাকে ছেড়ে অন্য কাউকে নিজ পিতা হিসেবে গ্রহণ করা বা পরিচয় দেয়া।

৫৯. নিশ্চিতভাবে জানা সত্ত্বেও নিজ পিতাকে ছেড়ে অন্য কাউকে নিজ পিতা হিসেবে গ্রহণ করা বা পরিচয় দেয়া


নিশ্চিতভাবে জানা সত্ত্বেও নিজ পিতাকে ছেড়ে অন্য কাউকে নিজ পিতা হিসেবে গ্রহণ করা বা পরিচয় দেয়া (যদিও তা শুধু কাগজপত্রে এবং যে কোন কারণেই হোক না কেন) হারাম ও কবীরা গুনাহ্।
সা‘আদ্ বিন্ আবী ওয়াক্কাস্ব এবং আবূ বাকরাহ্ (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيْهِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيْهِ فَالْـجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ.
‘‘যে ব্যক্তি নিজ পিতাকে ছেড়ে অন্য কাউকে নিজ পিতা হিসেবে পরিচয় দেয়; অথচ সে জানে যে, এ ব্যক্তি নিশ্চয়ই তার পিতা নয় তা হলে জান্নাত তার উপর হারাম হয়ে যাবে’’। (বুখারী ৪৩২৬, ৪৩২৭, ৬৭৬৬; মুসলিম ৬৩)
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবীরা গুনাহঃ ৫৭. কোন পুরুষের স্বর্ণ বা সিল্কের কাপড় পরিধান করা

৫৭. কোন পুরুষের স্বর্ণ বা সিল্কের কাপড় পরিধান করা


কোন পুরুষের জন্য স্বর্ণ বা সিল্কের কাপড় পরিধান করা হারাম ও কবীরা গুনাহ্।
আবূ মূসা আশ্‘আরী, ‘আলী ও আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
حُرِّمَ لِبَاسُ الْـحَرِيْرِ وَالذَّهَبِ عَلَى ذُكُوْرِ أُمَّتِيْ، وَأُحِلَّ لِإِنَاثِهِمْ.
‘‘সিল্ক ও স্বর্ণ আমার পুরুষ উম্মতের উপর হারাম করে দেয়া হয়েছে এবং তা হালাল করা হয়েছে মহিলাদের জন্য’’। (তিরমিযী ১৭২০ ইব্নু মাজাহ্, ৩৬৬২, ৩৬৬৪)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

কবীরা গুনাহঃ ৫৬. সোনা বা রুপার প্লেট কিংবা গ্লাসে খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করা

৫৬. সোনা বা রুপার প্লেট কিংবা গ্লাসে খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করা


সোনা বা রুপার প্লেট কিংবা গ্লাসে খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করা আরেকটি কবীরা গুনাহ্।
উম্মে সালামাহ্ (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
إِنَّ الَّذِيْ يَأْكُلُ أَوَ يَشْرَبُ فِيْ آنِيَةِ الْفِضَّةِ وَالذَّهَبِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِيْ بَطْنِهِ نَارَ جَهَنَّمَ.
‘‘যে ব্যক্তি সোনা বা রুপার আসবাবপত্রে খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করে সে যেন নিজের পেটে জাহান্নামের আগুন ঢুকায়’’। (বুখারী ৫৬৩৪; মুসলিম ২০৬৫)
সোনা, রুপার প্লেট-বাটি এবং হাল্কা বা ঘন সিল্ক দুনিয়াতে কাফির পুরুষরাই ব্যবহার করবে। মুসলিমরা নয়। কারণ, মুসলিমদের জন্য তা প্রস্ত্তত রয়েছে আখিরাতে।
’হুযাইফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবীরা গুনাহঃ ৫৫. লুঙ্গি, পাজামা অথবা যে কোন কাপড় টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে পরা

৫৫. লুঙ্গি, পাজামা অথবা যে কোন কাপড় টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে পরা


লুঙ্গি, পাজামা, প্যান্ট অথবা যে কোন কাপড় টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে পরা কবীরা গুনাহ্। চাই তা গর্ব করেই হোক অথবা এমনিতেই।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
 مَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الْإِزَارِ فَفِيْ النَّارِ.
‘‘লুঙ্গি, পাজামা বা প্যান্টের যে অংশটুকু পায়ের গিঁটের নিচে যাবে তা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে’’। (বুখারী ৫৭৮৭)
যে ব্যক্তি টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরিধান করে আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তার সাথে কোন কথা বলবেন না, তার দিকে তাকাবেনও না এমনকি তাকে গুনাহ্ থেকে পবিত্রও করবেন না উপরন্তু তার জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
আবূ যর গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবীরা গুনাহঃ ৫৪. কোন আল্লাহ্’র ওলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করা অথবা তাঁকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া

৫৪. কোন আল্লাহ্’র ওলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করা অথবা তাঁকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া


কোন আল্লাহ্’র ওলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করা অথবা তাঁকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়াও আরেকটি কবীরা গুনাহ্। কারণ, তাদেরকে কষ্ট দেয়া মানে স্বয়ং আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কষ্ট দেয়া। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কষ্ট দিবে আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে তাঁর রহমত থেকে বঞ্চিত করবেন এবং আখিরাতে রয়েছে তার জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

কবীরা গুনাহঃ ৫৩. নিজ প্রতিবেশীকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া

৫৩. নিজ প্রতিবেশীকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া


নিজ প্রতিবেশীকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়াও আরেকটি কবীরা গুনাহ্।
যে ব্যক্তি নিজ প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় সে সত্যিকারের মু’মিন নয়।
আবূ শুরাইহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، قِيْلَ: وَمَنْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ: الَّذِيْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ.
‘‘আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলো: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সে ব্যক্তি কে? তিনি বললেন: যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়’’। (বুখারী ৬০১৬)
প্রতিবেশীকে কষ্ট দিয়ে জান্নাতে যাওয়া যাবে না।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবীরা গুনাহঃ ৫২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদেরকে গালি দেয়া

৫২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদেরকে গালি দেয়া


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদেরকে গালি দেয়া আরেকটি মারাত্মক কবীরা গুনাহ্।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَا تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ، لَا تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ، فَوَ الَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ! لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلَا نَصِيْفَهُ.
‘‘তোমরা আমার সাহাবাদেরকে গালি দিও না। তোমরা আমার সাহাবাদেরকে গালি দিও না। সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমাদের কেউ আল্লাহ্ তা‘আলার রাস্তায় উহুদ্ পাহাড় সমপরিমাণ স্বর্ণ সাদাকা করলেও তাদের কারোর এক অঞ্জলি সমপরিমাণ অথবা তার অর্ধেকের সাওয়াব পাবে না’’। (মুসলিম ২৫৪০)
আবূ সাঈদ্ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা খালিদ বিন্ ওলীদ (রাঃ) ও আব্দুর রহমান বিন্ ‘আউফ (রাঃ) এর মাঝে কোন একটি ব্যাপার নিয়ে মনোমালিন্য হলে খালিদ বিন্ ওলীদ (রাঃ) আব্দুর রহমান বিন্ ‘আউফ (রাঃ) কে গালি দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনতে পেয়ে খালিদ বিন্ ওলীদ (রাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন:

কবিরা গুনাহঃ ৫১. কোন মুসলিমকে গালি বা যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া

৫১. কোন মুসলিমকে গালি বা যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া


কোন মুসলিমকে গালি বা যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া আরেকটি কবীরা গুনাহ্। যদিও সে লোকটি মৃত হোক না কেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ الْـمُؤْمِنِيْنَ وَالْـمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوْا فَقَدِ احْتَمَلُوْا بُهْتَانًا وَّإِثْمًا مُّبِيْنًا
‘‘যারা মু’মিন পুরুষ ও মহিলাদেরকে কোন অপরাধ ছাড়াই কষ্ট দেয় তারা অপবাদ ও সুপষ্ট গুনাহ্’র বোঝা বহন করে’’। (আহ্যাব : ৫৮)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্’ঊদ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবিরা গুনাহঃ ৫০. বিপদের সময় ধৈর্যহীন হয়ে বিলাপ ধরা, মাথা, গাল বা বুকে আঘাত করা, মাথার চুল বা পরনের জামাকাপড় ছেঁড়া, মাথা মুন্ডন করা এবং নিজের সমূহ ধ্বংস বা যে কোন অকল্যাণ কামনা করা

৫০. বিপদের সময় ধৈর্যহীন হয়ে বিলাপ ধরা, মাথা, গাল বা বুকে আঘাত করা, মাথার চুল বা পরনের জামাকাপড় ছেঁড়া, মাথা মুন্ডন করা এবং নিজের সমূহ ধ্বংস বা যে কোন অকল্যাণ কামনা করা।


কারোর উপর আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে কোন বিপদ আসলে তাতে অধৈর্য হয়ে বিলাপ করা, মাথা, গাল বা বুকে আঘাত করা, মাথার চুল বা পরনের জামাকাপড় ছেঁড়া, মাথা মুন্ডন করা বা নিজের সমূহ ধ্বংস কিংবা যে কোন অকল্যাণ কামনা করা হারাম ও কবীরা গুনাহ্।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
اثْنَتَانِ فِيْ النَّاسِ هُمَا بِهِمْ كُفْرٌ، الطَّعْنُ فِيْ النَّسَبِ وَالنِّيَاحَةُ عَلَى الْـمَيِّتِ.
‘‘মানুষের মধ্যে দু’টি চরিত্র কুফরি পর্যায়ের। তার মধ্যে একটি হচ্ছে কারোর বংশ মর্যাদায় আঘাত হানা আর অপরটি হচ্ছে কোন মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে বিলাপ করা’’। (মুসলিম ৬৭)
আবূ মালিক আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবিরা গুনাহঃ ৪৯. যে কোন প্রাণীর চিত্রাঙ্কন

৪৯. যে কোন প্রাণীর চিত্রাঙ্কন


যে কোন প্রাণীর চিত্রাঙ্কন করাও কবীরা গুনাহ্’র অন্যতম। কিয়ামতের দিন এ জাতীয় চিত্রাঙ্কনকারীরা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন:
إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْـمُصَوِّرُوْنَ.
‘‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সর্ব কঠিন
শাস্তির অধিকারী হবে ওরা যারা (বিনা প্রয়োজনে) ছবি তোলে বা তৈরি করে’’। (বুখারী ৫৯৫০; মুসলিম ২১০৯)
‘আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফিরে এসে দেখলেন, আমি আমার বৈঠকখানা তথা খেলনাপাতি রাখার জায়গাকে এমন একটি পর্দা দিয়ে ঢেকে দিয়েছি যার উপর কিছু ছবি অঙ্কিত ছিলো। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন:

কবিরা গুনাহঃ ৪৮. কোন মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়া

৪৮. কোন মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়া


কোন মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়াও কবীরা গুনাহ্’র অন্যতম। তাই তো আল্লাহ্ তা‘আলা এ জাতীয় মহিলাদের জন্য পর্যায়ক্রমে কয়েকটি শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَاللَّاتِيْ تَخَافُوْنَ نُشُوْزَهُنَّ فَعِظُوْهُنَّ وَاهْجُرُوْهُنَّ فِيْ الْـمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوْهُنَّ، فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوْا عَلَيْهِنَّ سَبِيْلًا، إِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيْرًا»
‘‘আর যে নারীদের তোমরা অবাধ্যতার আশঙ্কা করো তাদেরকে সদুপদেশ দাও তথা আল্লাহ্ তা‘আলার আযাবের ভয়-ভীতি দেখাও, তাদেরকে শয্যায় পরিত্যাগ করো এবং প্রয়োজনে তাদেরকে প্রহার করো। এতে করে তারা তোমাদের অনুগত হয়ে গেলে তাদের ব্যাপারে আর অন্য কোন পন্থা অবলম্বন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা সমুন্নত মহীয়ান’’। (নিসা’ : ৩৪)
কোন মহিলা তার স্বামীর প্রয়োজনের ডাকে সাড়া না দিলে যদি সে তার উপর রাগান্বিত হয়ে রাত্রি যাপন করে তা হলে ফিরিশ্তারা তার উপর লা’নত করতে থাকেন যতক্ষণ না সে সকালে উপনীত হয়।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

কবিরা গুনাহঃ ৪৭. কারোর সাথে কোন ব্যাপারে চুক্তি বা ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করা

৪৭. কারোর সাথে কোন ব্যাপারে চুক্তি বা ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করা


কারোর সাথে কোন ব্যাপারে চুক্তি বা ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করা আরেকটি কবীরা গুনাহ্। তাই তো এ জাতীয় ব্যক্তিকে মুনাফিক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيْهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا، وَمَنْ كَانَتْ فِيْهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيْهِ خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا : إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ، وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ.
‘‘চারটি চরিত্র কারোর মধ্যে পাওয়া গেলে সে খাঁটি মুনাফিক হিসেবেই বিবেচিত হবে। আর যার মধ্যে সেগুলোর একটি পাওয়া গেলো তার মধ্যে তো শুধু মুনাফিকীর একটি চরিত্রই পাওয়া গেলো যতক্ষণ না সে তা ছেড়ে দেয়। উক্ত চরিত্রগুলো হলো: যখন তার কাছে কোন কিছু আমানত রাখা হয় তখন সে তা খেয়ানত করে, যখন সে কোন কথা বলে তখন সে মিথ্যা বলে, যখন সে কারোর সাথে কোন চুক্তিতে আবদ্ধ হয় তখন সে তা ভঙ্গ করে এবং যখন সে কারোর সাথে ঝগড়া দেয় তখন সে অশ্লীল কথা বলে’’। (বুখারী ৩৪)
কিয়ামতের দিন প্রত্যেক চুক্তি ভঙ্গকারী বা ওয়াদা খেলাফীর পাছার নিকট একটি করে ঝান্ডা প্রোথিত থাকবে এবং যা দিয়ে সে কিয়ামতের দিন বিশ্ব জন সমাবেশে পরিচিতি লাভ করবে।
আনাস্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُعْرَفُ بِهِ.
‘‘কিয়ামতের দিন প্রত্যেক চুক্তি ভঙ্গকারীর একটি করে ঝান্ডা হবে যা দিয়ে সে পরিচিতি লাভ করবে’’। (মুসলিম ১৭৩৭)
আবূ সাঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ عِنْدَ اسْتِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
‘‘কিয়ামতের দিন প্রত্যেক চুক্তি ভঙ্গকারীর একটি করে ঝান্ডা হবে যা তার পাছার নিকট প্রোথিত থাকবে’’। (মুসলিম ১৭৩৮)
আবূ সাঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرْفَعُ لَهُ بِقَدْرِ غَدْرِهِ، أَلَا وَلَا غَادِرَ أَعْظَمُ غَدْرًا مِنْ أَمِيْرِ عَامَّةٍ.
‘‘কিয়ামতের দিন প্রত্যেক চুক্তি ভঙ্গকারীর একটি করে ঝান্ডা হবে যা তার চুক্তি ভঙ্গের পরিমাণ অনুযায়ী উত্তোলন করা হবে। জেনে রাখো, সে ব্যক্তি অপেক্ষা বড় চুক্তি ভঙ্গকারী আর কেউ হতে পারে না যে সাধারণ জনগণের দায়িত্বভার হাতে নিয়ে তাদের সঙ্গেই চুক্তি ভঙ্গ করে’’। (মুসলিম ১৭৩৮)

কবিরা গুনাহঃ ৪৬. কাউকে লা’নত বা অভিসম্পাত করা

৪৬. কাউকে লা’নত বা অভিসম্পাত করা


কোন বস্ত্ত বা ব্যক্তিকে লা’নত বা অভিসম্পাত করা আরেকটি কবীরা গুনাহ্। তাই তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে লা’নত করা তাকে হত্যা করার সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সাবিত বিন্ যাহ্হাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
 وَمَنْ لَعَنَ مُؤْمِنًا فَهُوَ كَقَتْلِهِ.
‘‘কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে লা’নত করা তাকে হত্যা করার সমতুল্য’’।  (বুখারী ৬০৪৭)
লা’নত করা তো কোনভাবেই মু’মিনের চরিত্র হতে পারে না।
কাউকে লা’নত করা কোন সিদ্দীক তথা বিনা দ্বিধায় নবী আদর্শের সত্যিকার অনুসারী এমনকি সাধারণ কোন মু’মিনেরও বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ