Sunday, October 22, 2017

‘ইয়া রাসুলুল্লাহ’, ‘ইয়া আলী’, বা ‘ইয়া জীলানী’, বলা বৈধ কি?

‘ইয়া রাসুলুল্লাহ’, ‘ইয়া আলী’, বা ‘ইয়া জীলানী’, বলা বৈধ কি?
উদ্দেশ্য যদি আপদে-বিপদে আহবানে বা সাহায্য প্রার্থনা করা হয়, তাহলে তা শিরকে আকবর। এমন শিরক মুসলিমকে ইসলাম থেকে খারিজ ক’রে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন, “অথবা তিনি, যিনি আর্তের আহবানে সাড়া দেন, যখন সে তাঁকে ডাকে এবং বিপদ-আপদ দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীর প্রতিনিধি করেন। আল্লাহ্‌র সঙ্গে অন্য কোন উপাস্য আছে কি?

আল্লাহ আকাশ-পৃথিবীর জ্যোতি’ কথার অর্থ কি?

‘আল্লাহ আকাশ-পৃথিবীর জ্যোতি’ কথার অর্থ কি?
‘আল্লাহ আকাশ-পৃথিবীর জ্যোতি।’ (নুরঃ ৩৫) এর অর্থ হল, মহান আল্লাহ আকাশ-পৃথিবীকে জ্যোতির্ময় ও আলোকিত করেন। সুতরাং আকাশে যত আলো আছে, পৃথিবিতে যত রকমের আলো আছে এবং কিয়ামতে সে আলো হবে, সব কিছু তারই আলো, তারই জ্যোতি।
অবশ্য তাঁর জ্যোতি দুই প্রকারঃ সৃষ্ট জ্যোতি। আর তা হল

হেতুর উপর ভরসা করলে শিরক কখন হয়?

হেতুর উপর ভরসা করলে শিরক কখন হয়?
হেতুর উপর ভরসা তিন প্রকার হতে পারেঃ-
১। মানুষ এমন হেতুর উপর পরিপূর্ণ ভরসা করে, যা আসলেই কোন হেতু নয়। যেমন সন্তান লাভের হেতু স্বরূপ কুমীর-পীরের উপর ভরসা রাখে। এমন ভরসা শিরকে আকবর, যা করলে মানুষ ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।
২। এমন হেতুর উপর ভরসা করে, যা আসলেই শরয়ী ও শুদ্ধ হেতু। কিন্তু হেতুর সংঘটক ও সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে ভুলে বসে। এ কাজেও এক প্রকার শিরক, তবে তাতে মানুষ দ্বীন থেকে খারিজ হয়ে যায় না। যেমন

স্বামী বা ডাক্তার কি ইচ্ছামতো পুত্র বা কন্যা-সন্তান জন্মাতে পারে?

স্বামী বা ডাক্তার কি ইচ্ছামতো পুত্র বা কন্যা-সন্তান জন্মাতে পারে?
বিশেষ পদ্ধতিতে চেষ্টা করতে পারে মাত্র। বাকি সব কিছু আল্লাহ্‌র হাতে। তিনিই নিজ ইচ্ছামতো পুত্র-কন্যা , সুঠামাঙ্গ-বিকালাঙ্গ, সুন্দর-অসুন্দর সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, “তিনিই মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছা তোমাদেরকে আকৃতি গঠন করেন। তিনি ব্যতীত অন্য কোন (সত্যিকার) উপাস্য নেই। তিনি প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (আলে ইমরানঃ ৬)
“আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি

সৃষ্টিতত্ত্বের কোন সংবাদ প্রচারে কেউ কেউ বলে থাকেন, এত কোটি বছরে এই হয়েছিল। এত কোটি বছর আগে ঐ হয়েছিল। এত কোটি বছর পূর্বে পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হয়। ইত্যাদি। এ সবে বিশ্বাস করা কি বৈধ?


কোন তত্ত্ববিদ বা বিজ্ঞানী যখন অনুরূপ তথ্য পরিবেশন করেন, তখন কিছুর উপর ভিত্তি করে অনুমানপ্রসুত কথা বলেন। তাতে বিশ্বাস-অবিশ্বাস কিছুই জরুরী নয়। মানুষের ইতিহাস যে কত বছরের, তাও কেউ বলতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেছেন, তোমাদের কাছে কি সংবাদ আসেনি তোমাদের পূর্ববর্তীদের; নূহের সম্প্রদায়ের, আ’দের ও সামুদের এবং তাদের পরবর্তীদের? তাদের বিষয় আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানে না। (ইব্রাহিমঃ ৯)

শোনা যায়, আল্লাহ্‌র চোখ আছে। এ কথা কি ঠিক?

শোনা যায়, আল্লাহ্‌র চোখ আছে। এ কথা কি ঠিক?
মহান আল্লাহ্‌র চোখ আছে। যেহেতু তিনি নূহ (আঃ) কে বলেছিলেন “আর তুমি আমার চোখের সামনে ও আমার ওহী (প্রত্যাদেশ) অনুযায়ী নৌকা নির্মাণ কর, আর যালেমদের ব্যাপারে আমাকে কিছু বলো না। নিশ্চয় তাদেরকে ডুবানো হবে। (হুদঃ৩৭)
আর মহানবী (সাঃ) কে বলেছিলেন, তুমি ধৈর্যধারন কর তোমার প্রতিপালকের নির্দেশের অপেক্ষায়; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। আর তুমি তোমার প্রতিপালকের

যারা ‘নবী’কে ‘খোদা’ বলে বিশ্বাস রাখে, তাঁদের বিধান কি?

যারা ‘নবী’কে ‘খোদা’ বলে বিশ্বাস রাখে, তাঁদের বিধান কি?
তাঁরা খ্রিস্টানদের মতো কাফের। মহান আল্লাহ বলেছেন, তাঁরা নিঃসন্দেহে কাফের, যারা বলে, ‘আল্লাহ্‌ই মার‍য়্যাম-তনয় মাসীহ।’ অথচ মাসীহ বলেছেন, ‘হে বনী ইস্রাইল! তোমরা আমার প্রতিপালক ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপাসনা কর। অবশ্যই যে কেউ আল্লাহ্‌র অংশী করবে, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর জন্য বেহেশত নিষিদ্ধ করবেন ও দোযখ তাঁর বাসস্থান হবে এবং অত্যাচারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।’ (মায়িদাহঃ৭২)

যারা কবীরা গুনাহ করে, অর্থাৎ ব্যাভিচার করে, খুন করে, মদ্যপান করে, মিথ্যা কথা বলে ইত্যাদি, তাঁরা কি কাফের? তাঁরা কি চিরকাল দোযখে বাস করবে?


যারা কবীরা গুনাহ করে, অর্থাৎ ব্যাভিচার করে, খুন করে, মদ্যপান করে, মিথ্যা কথা বলে ইত্যাদি, তাঁরা কি কাফের? তাঁরা কি চিরকাল দোযখে বাস করবে?
কবিরা গোনাহর গোনাহগার যদি সেই গোনাহর কাজকে হালাল মনে না করে, তাহলে কাফের নয়। গোনাহর ফলে অবশ্যই ঈমানে দুর্বলতা আসবে। তাওহীদ থাকলে ও নিয়মিত নামাজ পড়লে এবং গোনাহ থেকে তওবা না করে মারা গেলে কিয়ামতে সে

মুসলিম হওয়ার জন্য কেবল কালেমা পড়াই কি যথেষ্ট?


মুসলিম হওয়ার জন্য কেবল কালেমা পড়াই কি যথেষ্ট?
অবশ্যই নয়। কালেমা হল ইসলাম-গৃহ প্রবেশ করার চাবি। প্রবেশ করার পরেও এমন কাজ আছে, যা না করলে সে মুসলিম থাকতে পারে না। ঈমানের ছয় রুকন ছাড়া আরো অনেক কিছুর প্রতি ঈমান জরুরী। প্রকৃত মুসলিম হতে অনেক কিছু করার আছে।
মহানবী (সঃ) মুআয (রঃ)-কে ইয়ামান পাঠাবার সময়ে (তাঁর উদেশ্যে) বললেন, “তাঁদের (ইয়ামানবাসীদেরকে সর্বপ্রথম) এই সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আহবান জানাবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, আর আমি আল্লাহ্‌র রাসুল। যদি তাঁরা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাঁদের উপর দিবারাত্রে পাঁচ অক্তের নামাজ ফরয করেছেন। অতঃপর যদি তাঁরা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাঁদের উপর যাকাত ফরয করেছেন; যা তাঁদের মধ্যে যারা (নিসাব পরিমাণ) মালের অধিকারী তাঁদের নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে এবং তাঁদের দরিদ্র ও অভাবী মানুষদের মাঝে তা বণ্ঠন ক’রে দেওয়া হবে।” ২০
ফুটনোটঃ২০ (বুখারী ও মুসলিম)

মায়ের পেটে কোন সন্তান আছে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। কিন্তু বর্তমানে তো যন্ত্র দ্বারা বলা সম্ভভ হয়েছে। তাহলে কি কুরআনের ব্যাখ্যা ভুল করা হয়েছে?


না, কুরআনের বক্তব্য ও ব্যাখ্যা ঠিকই আছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ অদৃষ্টের খবর জানে না। কোন যন্ত্রের দ্বারা অদৃশ্যের বস্তুকে দৃশ্য ক’রে দেখার নাম অদৃশ্যের খবর জানা নয়, বরং বিনা কোন মাধ্যম বা অসীলায় কোন অদৃশ্যের খবর বলে দেওয়াকে ‘গায়ব জানা’ বলা হয়। আপনার পেটের উপর জামা-গেঞ্জির ভিতরে কি বাঁধা আছে আমি জানি না, বিনা অসিলায় তা বলে দিতে পারলে আমি গায়েব-জান্তা। কিন্তু

মানুষের মতো জীনদেরও জান্নাত-জাহান্নাম আছে? কিন্তু আগুনের তৈরি জীন আগুনে শাস্তি পাবে কীভাবে?

মানুষের মতো জীনদেরও জান্নাত-জাহান্নাম আছে? কিন্তু আগুনের তৈরি জীন আগুনে শাস্তি পাবে কীভাবে?
মানুষের মতো জীনেরাও জাহান্নামে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, “আমাদের কতক আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) এবং কতক সীমালঙ্ঘনকারী; সুতরাং যারা আত্মসমর্পণ করে (মুসলমান হয়), তাঁরা নিঃসন্দেহে সত্য পথ বেছে নেয়। অপরপক্ষে সীমালঙ্ঘনকারীরা তো জাহান্নামেরই ইন্ধন।”(জীনঃ ১৪-১৫)
তারা আগুন থেকে সৃষ্টি হলেও পরকালে আগুন দ্বারা শাস্তি ও কষ্ট পাবে। কারণ

মাটিতে দাগ টেনে হাত চালিয়ে অদৃশ্যের কিছু বলা সম্ভভ কি? হাত চালিয়ে ঘরের মধ্যে সাপ কোথায় আছে, সাপে কামড়ালে বিষ হয়েছে কি না, চুরি হওয়া জিনিস কোথায় আছে বা কে নিয়েছে— এ সব বলা কি বৈধ?

মাটিতে দাগ টেনে হাত চালিয়ে অদৃশ্যের কিছু বলা সম্ভভ কি? হাত চালিয়ে ঘরের মধ্যে সাপ কোথায় আছে, সাপে কামড়ালে বিষ হয়েছে কি না, চুরি হওয়া জিনিস কোথায় আছে বা কে নিয়েছে— এ সব বলা কি বৈধ?
এ সব অদৃশ্যের খবর এবং ইলমে গায়বের দাবি। অনুমান অনেক সময় কাজে লাগলেও এমন দাবি বড় গোনহার কাজ। মুআবিয়াহ ইবনে হাকাম (রঃ) বলেন, একদা আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহ্‌র রাসুল!

মহানবী (সঃ) কি মাটির তৈরি ছিলেন, নাকি নূরের তৈরি ছিলেন?

মহানবী (সঃ) কি মাটির তৈরি ছিলেন, নাকি নূরের তৈরি ছিলেন?
নূরের তৈরি ফিরিশতামণ্ডলী। মহানবী (সঃ) আদমের অন্যতম সন্তান। সুতরাং তারাও আদিসৃষ্টি মাটি থেকেই।
তিনি আল্লাহ্‌র তরফ থেকে অন্ধকারে নিমজ্জিত পথভ্রষ্ট মানুষের জন্য প্রেরিত নূর (জ্যোতি বা আলো) ছিলেন। সেই নূর বা আলোতে জাহেলিয়াতে তমসাচ্ছন্ন যুগ ও সমাজ আলোকিত হল। অন্ধকারে দিশাহারা মানুষ সেই আলোকবর্তিকায় সরল পথের দিশা পেল। তাঁর দেহ নূরানি ছিল, কিন্তু

মহানবী (সঃ) কি আমাদের মতো মানুষ ছিলেন?


মহানবী (সঃ) কি আমাদের মতো মানুষ ছিলেন?
মহানবী (সঃ) আমাদের মত রক্ত, গোশত ও অস্তির গড়া মানুষ ছিলেন। আমাদের মত পিতার ঔরসে ও মাতার গর্ভে তাঁর জন্ম হয়েছিল। আমাদের মত তিনি খেতেন, পান করতেন। সুস্থ-অসুস্থ থাকতেন। বিস্মৃত হতেন, স্মরন করতেন। বিবাহ-শাদী করেছেন, তাঁর একাধিক স্ত্রী ছিল। তিনি সন্তানের জনক ছিলেন। ব্যবসা- বাণিজ্য করতেন। দুঃখণ্ডশোক, ব্যাথা ও যন্ত্রণা অনুভব করতেন। তাঁর প্রস্রাব- পায়খানা হত এবং তা অপবিত্র ছিল। তাঁর নাপাকীর উযু-গোসলের প্রয়োজন হতো। ১১ জীবিত ছিলেন, ইন্তিকাল করেছেন। মানুষের সকল প্রকৃতি ও প্রয়োজন তাঁর মাঝে ছিল।
মহান আল্লাহ তাঁর নবী (সঃ)-কে বলেছেন,

মহান আল্লাহ তো সবই জানেন, তাহলে কিরামান-কাতেবীন দ্বারা লিখাবার যুক্তি কি?

মহান আল্লাহ তো সবই জানেন, তাহলে কিরামান-কাতেবীন দ্বারা লিখাবার যুক্তি কি?
মহান আল্লাহ বান্দার সকল আমল লিখে রাখছেন, কিয়ামতে তা বান্দার সামনে পেশ করবেন, তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষী মানা হবে, তাঁর আমল ওজন করা হবে, তাঁকে প্রশ্ন করা হবে ইত্যাদি, অথচ তিনি সব জানেন। যেহেতু বান্দাকে তিনি বুঝাতে চান যে, তিনি তাঁর প্রতি কোন অন্যায় করছেন না। বান্দা মিথ্যা বলে পার পেতে চাইলেও যাতে লেখা ও সাক্ষ্য অনুযায়ী সে বুঝতে পারে যে, তাঁর প্রতি অবিচার করা হচ্ছে না।

মহান আল্লাহর সর্বপ্রথম সৃষ্টি কি?

মহান আল্লাহর সর্বপ্রথম সৃষ্টি কি?
মহান আল্লাহ্‌র প্রথম সৃষ্টি কলম। মহানবী (সঃ) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ প্রথম যে জিনিস সৃষ্টি করেন, তা হল কলম। তিনি তাঁকে বললেন, ‘লিখো’। সে বলল, ‘প্রভু! কি লিখব?’ তিনি বললেন, ‘কিয়ামত পর্যন্ত প্র্যত্যেক জিনিসের ভাগ্য লিখো।’
ফুটনোটঃ৩৮ (আবূ দাউদ ৪৭০২, তিরমিযী ২১৫৫ নং)

যদি কেউ ইমাম মাহদীর আগমন ও ঈসা (আঃ) এর অবতরণকে অস্বীকার করে, তাহলে তাঁর বিধান কি?
যদি কেউ ইমাম মাহদীর ও ঈসা (আঃ) এর অবতরণকে অস্বীকার করে, তাহলে সে ভ্রষ্ট। ৪৩
ফুটনোটঃ৪৩ (আলবানী)

গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খুন দেখা গেলে, তা হায়েয, নাকি ইস্তিহাযা?

গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খুন দেখা গেলে, তা হায়েয, নাকি ইস্তিহাযা?


সঠিক মতে তা হায়েয বা মাসিকের খুন। যদি মহিলার পূর্বেকার অভ্যাস অনুযায়ী তা এসে থাকে। যেহেতু কিতাব ও সুন্নাহতে এমন দলীল নেই, যাতে বুঝা যায় যে, গর্ভকালের খুন মাসিক নয়। ১৩৪ (ইবনে উষাইমীন)

যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক?

যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক?


একে “মাযী” বলে। আর তা নাপাক। তা বের হলে উযূ নষ্ট হয়ে যায়। শরমগাহ ধুতে হয় এবং কাপড়ে লাগলে পরিষ্কার করতে হবে। অবশ্য খুলে না ধুলেও চলে। কেবল এক লোটা পানি নিয়ে তাঁর উপর ছিটিয়ে দিলেই হয়। ১৩৩ (আবূ দাঊদ ২১০, তিরমিযী ১১৫, ইবনে মাজাহ ৫০৬নং)যেহেতু তা এমন তা এমন এক অপবিত্র পদার্থ, যা থেকে বাঁচা অনেক দুষ্কর। তাই তাঁর ব্যাপারে পবিত্রতার এই হালকা বিধান।

আবূ হুরাইরা (রঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি যে, “নিশ্চয় আমরা উম্মতকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় ডাকা হবে, যে সময় তাঁদের উযূর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তাঁর চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে।” (অর্থাৎ সে যেন তাঁর উযূর সীমার অতিরিক্ত অংশও ধুয়ে ফেলে।) ১৩১(বুখারী, মুসলিম) উলামাগণ বলেছেন, “সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তাঁর চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে।”---এই বাক্যটি নবী (সঃ) এর নয়, বরং তা আবূ হুরাইরার। আর আবূ হুরাইরা নিজেও উযূতে হাত ধোয়ার সময় বগল পর্যন্ত ধুতেন। অতঃএব আমাদের কি তা করা বৈধ?


অনেকের মতে তা বৈধ। যেহেতু হাদীসের বক্তব্য থেকে আবূ হুরাইরা তাই বুঝেছিলেন এবং সাহাবাদের বুঝে আমাদের হাদীস বুঝা দরকার। কিন্তু সঠিক এই যে, তা কেবল আবূ হুরাইরা বুঝ। যেহেতু “গুরাহ” বলে চেহারার ঔজ্জ্বল্যকে। আর তা বৃদ্ধি করার উপায় নেই। সুতরাং কুরআনে নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত (অর্থাৎ, কনুই ও গাঁট) পর্যন্ত ধোয়াই বিধেয়। ১৩২ (আলবানী)

শৌচকর্মের সময় ঢিলা ও পানি উভয়ই ব্যবহার করা বিধেয়? দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা কি বৈধ?

শৌচকর্মের সময় ঢিলা ও পানি উভয়ই ব্যবহার করা বিধেয়?


এ ব্যপারে কোন সহীহ দলীল নেই। সুতরাং পানির পূর্বে ঢিল ব্যবহার করাটা অতিরঞ্জনের পর্যায়ভুক্ত। যেহেতু মহানবী (সঃ) এর কর্ম হল, দুটির মধ্যে একটি ব্যবহার করা। আর তাঁর আদর্শই হল, সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ। ১২৯ (আলবানী)

দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা কি বৈধ?


প্রস্রাবের ছিটা লাগার ভয় না থাকলে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা বৈধ। এর বৈধতা ও অবৈধতার বিষয়ে উভয় প্রকার দলীল রয়েছে। ১৩০ (আলবানী)

বাথরুমের ভিতরে ক্বিবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করা বৈধ?

বাথরুমের ভিতরে ক্বিবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করা বৈধ?


সঠিক মতে বৈধ নয়। রুমের ভিতরে যদি ক্বিবলার দিকে থুথু ফেলা নিষিদ্ধ হয়, তাহলে ক্বিবলার দিকে মুখ বা পিঠ করে করে প্রস্রাব-পায়খানা অধিকরূপে নিষিদ্ধ হওয়ার কথা। ১২৮ (আলবানী)

বাথরুমে প্রবেশ করার পূর্বে “বিসমিল্লাহ” কি সশব্দে পড়তে হবে?

বাথরুমে প্রবেশ করার পূর্বে “বিসমিল্লাহ” কি সশব্দে পড়তে হবে?


হাদীসে এসেছে, প্রস্রাবাগার বা পায়খানা ঘরে বা স্থানে প্রবেশ হওয়ার পূর্বে “বিসমিল্লাহ” পড়লে আল্লাহ্‌র হুকুমে জ্বিনদের চোখে পর্দা পড়ে যায়। ১২৬(তিরমিযী ৬০৬, ইবনে মাজাহ ২৯৭ নং)কিন্তু সশব্দে বলার নির্দেশ নেই। সুতরাং নিঃশব্দেই বলা বিধেয়। ১২৭(আলবানী)

অমুসলিম এমন অনেক খাদ্য ভক্ষন করে, যা ইসলামে হারাম। সুতরাং তাঁদের পাত্র ব্যবহার করা কি বৈধ?

অমুসলিম এমন অনেক খাদ্য ভক্ষন করে, যা ইসলামে হারাম। সুতরাং তাঁদের পাত্র ব্যবহার করা কি বৈধ?


অমুসলিমদের পাত্রে তাঁদের (দোকানে এ হোটেলে) খাওয়া বৈধ নয়। তবে তাঁদের পাত্র (দোকানে বা হোটেলে) ছাড়া যদি মুসলিমদের কোন পাত্র (দোকান বা হোটেলে) না পাওয়া যায়, তাহলে নিরুপায় অবস্থায় তাঁদের সেই পাত্র (ধোয়ার পর তাঁদের দোকান বা হোটেলে)খাওয়ার অনুমতি আছে। ১২৪ (বুখারী, মুসলিম ১৯৩০ নং প্রমুখ)
একদা এক সাহাবী রাসুলুল্লাহ(সঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন,

অপবিত্রতা এক দিরাহাম পরিমাণ হলে তা মার্জনীয়। এ কথা কি ঠিক?

অপবিত্রতা এক দিরাহাম পরিমাণ হলে তা মার্জনীয়। এ কথা কি ঠিক?


এ কথা ঠিক নয়। এ ব্যপারে বর্ণিত হাদিসটি জাল। সুতরাং অপবিত্রতা এক দিরহাম থেকে কম হলেও তা দূর করতে হবে। নচেৎ তাতে নামায শুদ্ধ হবে না। ১২২ (আলবানী)

যে সেন্টে স্পিরিট আছে, তা ব্যবহার করা বৈধ কি? পানি ছাড়া অন্য কোন তরল পদার্থ দ্বারা অপবিত্র জিনিসকে পবিত্র করা যায় কি?

যে সেন্টে স্পিরিট আছে, তা ব্যবহার করা বৈধ কি?


যে সেন্টে স্পিরিট বা এ্যালকোহল আছে, তা ব্যবহার করার ব্যাপারে উলামাগণের মতভেদ আছে। পূর্বসতর্কতামুলকভাবে তা ব্যবহার না করাই উত্তম, বিশেষ করে নামাযের আগে। ১২০ (ইবনে বায)

পানি ছাড়া অন্য কোন তরল পদার্থ দ্বারা অপবিত্র জিনিসকে পবিত্র করা যায় কি?


কোন অপবিত্র জিনিসকে পবিত্র করতে হলে পবিত্র পানি জরুরী। অন্য কোন তরল পদার্থ দ্বারা পবিত্রতা লাভ হয় না।২২১ (আলবানী)

ঋতুরোধক ঔষধ ব্যবহার করে মাসিক ঋতু বন্ধ রেখে যথাসময়ে রোযা বা হজ্জ করা কি মহিলাদের জন্য বৈধ?

ঋতুরোধক ঔষধ ব্যবহার করে মাসিক ঋতু বন্ধ রেখে যথাসময়ে রোযা বা হজ্জ করা কি মহিলাদের জন্য বৈধ?


বৈধ, যদি তাতে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যগত ক্ষতি না থাকে তবে। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। ১১৯ (লাজনাহে দায়েমাহ)

উযূ করার পর স্বামীর চুম্বনের ফলে কি কারো উযূ ভেঙ্গে যায়?

উযূ করার পর স্বামীর চুম্বনের ফলে কি কারো উযূ ভেঙ্গে যায়?


না, কেবল স্ত্রীদের চুম্বন ও স্পর্শ করার ফলে স্বামীর উযূ ভাঙ্গে না, স্ত্রীরও না। মহানবী (সঃ) স্ত্রী চুম্বন করে নামায এবং (তাঁর আগে) উযূ করতেন না। ১১৮ (আহমাদ, আবূ দাঊদ, নাসাঈ, সঃ জামে’ ৪৯৯৭ নং)
অবশ্য সেই চুম্বন বা স্পর্শের ফলে প্রস্রাব-দ্বার হতে “মাযী” (পাতলা আঠালো পদার্থ) বের হলে উযূ ভেঙ্গে যাবে।

অপবিত্র বা মাসিক অবস্থায় কুরআনের ক্যাসেট স্পর্শ করা কি বৈধ? অপবিত্র অবস্থায় জুযদানে রাখা কুরআন স্পর্শ করা বৈধ?

অপবিত্র বা মাসিক অবস্থায় কুরআনের ক্যাসেট স্পর্শ করা কি বৈধ?


অপবিত্র বা মাসিক অবস্থায় কুরআনের ক্যাসেট স্পর্শ করা বৈধ, টেপ লাগানো ইত্যাদি বৈধ। যেহেতু তা মুসফাক নয়। ১১৭ (লাজনাহ দায়েমাহ)


অপবিত্র অবস্থায় জুযদানে রাখা কুরআন স্পর্শ করা বৈধ?


হ্যাঁ, কুরআন জুযদান, বক্স, ব্যাগ বা অন্য কোন মোড়কের ভিতরে থাকলে অপবিত্র অবস্থায় তা স্পর্শ করা বৈধ। (সাফা)


অপবিত্র অবস্থায় কি কুরআন পড়া জায়েয?

অপবিত্র অবস্থায় কি কুরআন পড়া জায়েয?


অপবিত্রতা দুই শ্রেণীরঃ ছোট অপবিত্রতা, যাতে উযূ জরুরী হয় এবং বড় অপবিত্রতা, যাতে গোসল জরুরী হয়। ছোট অপবিত্র অবস্থায় থাকলে কুরআন স্পর্শ না করে মুখস্থ পড়া জায়েয। আর বড় অপবিত্র অবস্থায় কুরআন পড়া জায়েয নয়। অবশ্য এ অবস্থায় কুরআনী আয়াতের যিকর যেমন, “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, ইন্না লিল্লাহি অইন্না ইলাইহি রাজিঊন” ইত্যাদি পড়া যায়। ১১৫ (ইবনে ঊষাইমীন)
হযরত আলী (রঃ) বলেন, “বড় নাপাকির অবস্থা ছাড়া অন্যান্য অবস্থায় আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) আমাদেরকে কুরআন পড়াতেন।” ১১৬ (আহমাদ ৬২৭, তিরমিযী ১৩১ নং, আলবাণীর নিকট হাদীসটি যয়ীফ) 

অপবিত্র অবস্থায় জুযদানে রাখা কুরআন স্পর্শ করা বৈধ?


হ্যাঁ, কুরআন জুযদান, বক্স, ব্যাগ বা অন্য কোন মোড়কের ভিতরে থাকলে অপবিত্র অবস্থায় তা স্পর্শ করা বৈধ। (সাফা)

উযূতে তরতীব ওয়াজেব কি?

উযূতে তরতীব ওয়াজেব কি?


অনেকের মতে উযূতে তরতীব ওয়াজেব। যেহেতু মহান আল্লাহ উযূর আয়াতে তরতীব বজায় রেখে মাথা মাসাহর পরে পা ধোয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। অথচ ধোয়ার কথা মাসাহর পূর্বে আছে এবং তারই ইরাবে “আরজুলাকুম”-এ জবর হয়েছে। কিন্তু হাদীসে এসেছে,
“আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) এর কাছে উযূর পানি আনা হল। তিনি উযূ করতে নিজের হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর নিজ মুখ তিনবার ধুলেন। অতঃপর

কলোম্বোর এক মসজিদের ডান দিকে নবী (সঃ) এর কবরের ছবি টাঙ্গানো আছে। তাঁর সামনে মুসল্লীরা দাঁড়িয়ে নাবী (সঃ) এর উপর দরুদ পাঠ করে। এ কাজ কি শরীয়তসম্মত?

মসজিদের ভিতরে নবী (সঃ)এর কবরের (বা সবুজ গুম্ভজের) ছবি রাখা একটি আপত্তিকর বিদআত। পরন্ত তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে দরুদ পাঠ করা অন্য একটি আপত্তিকর বিদআত। এটি অতিরঞ্জনবশতঃ কৃত আচরণ। আর নবী (সঃ) বলেছেন, “তোমরা দ্বীনের ব্যপারে অতিরঞ্জন করা থেকে দূরে থেকো। কেননা অতিরঞ্জনই পূর্ববর্তী বহু উম্মতকে ধ্বংস করেছে।”১১০ (আহমাদ ১/২১৫, ৩৪৭, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ ৩০২৯ নং)   
তিনি আরও বলেছেন,
“তোমরা আমাকে নিয়ে (আমার তা’যীমে) বাড়াবাড়ি করে না, যেমন খ্রিস্টানরা (ঈসা) ইবনে মারয়্যামকে নিয়ে করেছে। আমি তো আল্লাহ দাস মাত্র। অতএব তোমরা আমাকে আল্লাহ্‌র দাস ও তাঁর রাসূলই বলো” ১১১ (বুখারী  ৩৪৪৫, মুসলিম, মিশকাত ৪৮৯ নং)
দরূদ যে কোন (পবিত্র) জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে-বসে পড়া যায়। মহানবী (সঃ) এর কবরের ছবি সামনে রেখে দাঁড়িয়ে দরূদ পড়া বিদআত। এক সাথে জামাআতী দরূদ পড়া বিদআত।
তাছাড়া মসজিদের দেওয়ালে নবী-আলীর ছবি অঙ্কন করা অথবা টাঙ্গানো মসজিদে তাঁদেরকে দাফন করার বিধানের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু তা মানুষকে শিরকের দিকে টেনে নিয়ে যায়। ঐ ছবির সামনে দরূদ পড়তে পড়তে নবী (সঃ) এর কাছে প্রার্থনাও শুরু হয়ে যায়। সুতরাং এমন কাজ তওবার সাথে বর্জনীয়। ১১২ (লাজনাহ দায়েমাহ)

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে সোমবার দিন রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, “ ওটি এমন একটি দিন, যেদিন আমার জন্ম হয়েছে।”(মুসলিম)এ হাদিস থেকে কি প্রমাণ হয় না যে, মহানবী (সঃ) নিজের জন্মদিন পালন করতেন?

এ হাদিস থেকে জন্মদিন পালন করার কথা প্রমাণিত হয় না। যদি হয়েও থাকে, তাহলে প্রত্যেক সোমবারকে তাঁর জন্মদিন হিসেবে পালন করতে হবে এবং কেবল রোযা রাখার মাধ্যমে। নচেৎ তা কামার-পুকুরের দলীল দেখিয়ে কুমোর-পুকুর দখল করার মত ব্যপার হবে।

মাতৃ-দিবস পালন করা কি বৈধ?

মাতৃ-দিবস পালন করা কি বৈধ?


এটি আসলে অমুসলিমদের আবিষ্কৃত একটি ঈদ। সুতরাং মুসলমানদের তা পালন করা বিদআত এবং সেই সাথে কাফেরদের সাদৃশ্য অবলম্বন ও অন্ধঅনুকরণও। মুসলিমদের বাৎসরিক ঈদ দুটি এবং সাপ্তাহিক ঈদ একটি। এ ছাড়া র কোন ঈদ বা পালনীয় “দিবস” নেই। বলা বাহুল্য কাফেরদের অনুকরণে অনুরূপ সকল ঈদ বর্জনীয়। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কথা উদ্ভাবন করল---যা তাঁর মধ্যে নেই, তা প্রতাখ্যানযোগ্য।” ১০৪ (বুখারী ও মুসলিম)
মায়ের যে হোক আছে, তা

কুরআন তিলাওয়াত শেষে “স্বাদাক্বাল্লাহুল আযীম” বলা কি শরীয়তসম্মত? তিলাওয়াত শেষে কুরআন চুম্বন করা কি বৈধ?

কুরআন তিলাওয়াত শেষে “স্বাদাক্বাল্লাহুল আযীম” বলা কি বিধেয়?


কুরআন তিলওয়াত শেষে “স্বাদাক্বাল্লাহুল আযীম” বলা বিধেয় নয়, বরং বিদআত। যেহেতু এ কাজ মহানবী (সঃ) তাঁর কোন সাহাবী অথবা তাঁদের পরবর্তী কোন ইমাম করে যাননি। অথচ তিনি ছিলেন অধিক অধিক কুরআন তিলাওয়াতকারী। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রঃ) বলেন, “একদা রাসুলুল্লাহ (সঃ) আমাকে বললেন,

মুর্দার নামে কুরআনখানি, ফাতেহাখানি, কুলখানি শরীয়তসম্মত কি?

মুর্দার নামে কুরআনখানি, ফাতেহাখানি, কুলখানি শরীয়তসম্মত কি?


না। বরং তা বিদআত। এ কাজে মহানবী (সঃ) এবং তা পরে তাঁর সাহাবাগণ, তাবেঈন ও সফলগণ করে যাননি। আর আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীন বিষয়ে অভিনব কিছু রচনা করবে, যা এর অন্তর্ভুক্ত নয় তা প্রত্যাখ্যাত।” -(বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ১৭১৮ নং)

মুসলিম শরীফের এক বর্ণনায় তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি এমন কোন কর্ম করে, যাতে আমাদের কোন নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত।” - (মুসলিম ১৭১৮ নং)

তসবীহ গুনতে “তসবীহ-দানা” বা মালা ব্যবহার করা কি বিদআত?

তসবীহ গুনতে তাসবীহ-মালা ব্যবহার করা কি বিদআত?


অনেকে বিদআত বলেছেন। তা না হলেও তা ব্যবহার না করাই উত্তম। কারণঃ
১। মহানবী (সঃ) আঙ্গুল দ্বারা তাসবীহ করেছেন এবং বলেছেন, “আঙ্গুলগুলোকে (তাঁর দ্বারা কৃত কর্মের ব্যপারে) জিজ্ঞাসা করা হবে, কথা বলানো হবে।৯৬ (আহমাদ ৬/৩৭১, আবূ দাঊদ ১৫০১, তিরমিযী ৩৫৮৩ নং)
সুতরাং কিয়ামতে আঙ্গুলগুলো তাসবীহ পড়ার সাক্ষ্য দেবে, মালা সাক্ষ্য দেবে না।
২। মালা ব্যবহার করে তাসবীহ পড়লে সাধারনতঃ

কেক কেটে, মোমবাতি নিভিয়ে বার্থ-ডে বা জন্মদিন পালন করা কি ঠিক?

কেক কেটে, মোমবাতি নিভিয়ে বার্থ-ডে বা জন্মদিন পালন করা কি ঠিক?


বার্থ-ডে বা জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী পালন করা সুন্নত। তবে সেই সুন্নত [অর্থাৎ ইহুদি নাসারাদের সুন্নত মুসলিমদের নয়], যার জন্য মহানবী (সঃ) বলেছেন, “অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির সুন্নত [ইহুদি নাসারাদের] (তারিকা) অনুসরণ করবে বিঘত বিঘত এবং হাত হাত পরিমাণ (সম্পূর্ণরূপে)। এমনকি

‘ঈদে মীলাদুন নাবী’ (নবী দিবস) পালন করা বৈধ নয় কেন?

‘ঈদে মীলাদুন নাবী’ (নবী দিবস) পালন করা বৈধ নয় কেন?


মহান আল্লাহ আমাদের দ্বীন ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ করে দিয়েছেন তাঁর নবীর জীবদ্দশাতেই। মহান আল্লাহ বলেন, “আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ (নেয়ামত) সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের ধর্মরূপে মনোনীত করলাম।(সূরা মায়েদাহ ৩ আয়াত)
আর মহানবী (সঃ) বলেন,

ঈদে মীলাদুন নাবী বিদআত কেন?

ঈদে মীলাদুন নাবী বিদআত কেন?


যেহেতু শরীয়তে তাঁর কোন দলীল নেই। খোদ নবী (সঃ) বা তাঁর কোন সাহাবী, কোন তাবেঈ বা ইমাম তা পালন করে যাননি, করার নির্দেশও দেননি।
সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদ (নাবীদিবস) আবিষ্কার করেন ইরাকের ইরবিল শহরের আমীর (গভর্নর) মুযাফফারুদ্দ্বীন কূকুবুরী ঠিক হিজরী সপ্তম শতাব্দীর গোড়ার দিকে ৬০৪ (মতান্তরে ৬২৫) হিজরীতে। মিসরে সর্বপ্রথম চালু করে ফাতেমীরা; যাঁদের প্রসঙ্গে ইবনে কাসীর বলেন,

‘বিদআতে হাসনাহ’ নামক কোন বিদআত আছে কি, যা করলে সওয়াব হয়? যেহেতু হাদিসে আছে, “যে ব্যক্তি ইসলামে ভাল রীতি চালু করবে, সে তাঁর নিজের এবং সমস্ত লোকের সওয়াব পাবে, যারা তাঁর (মৃত্যুর) পর তাঁর উপর আমল করবে। তাঁদের সওয়াবের কিছু পরিমাণও কম করা হবে না। ৮৪ (মুসলিম)


‘বিদআতে হাসানাহ’ (ভাল বিদআত) বলে কোন বিদআত নেই। বরং প্রত্যেক বিদআতই ‘সাইয়্যিআহ’ (মন্দ)। মহানদি (সঃ) বলেছেন,
“প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা।” ৮৫ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী)
আর হাদীসে যে ভাল রীতি চালু করার কথা বলা হয়েছে, তা নতুন কোন রীতি নয়। বরং যে রীতি শরীয়ত সম্মত কিন্তু কোন জায়গায় তা চালু ছিল না। কোন ব্যক্তি তা চালু করলে তাঁর ঐ সওয়াব হয়। পূর্ণ হাদিসটি পড়লে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, কোন শ্রেণীর রীতির কথা বলা হয়েছে।

জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রঃ) বলেন,

‘বিদআত’ কাকে বলে? ‘বিদআতে হাসনাহ’ বলে কি কোন বিদআত আছে?

বিদআত বলা হয় দ্বীন বিষয়ক কোন নতুন কর্মকে, যার কোন দলীল শরীয়তে নেই। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “ অবশ্যই তোমাদের মধ্যে যারা আমার বিদায়ের পর জীবিত থাকবে তাঁরা অনেক রকমের মতভেদ দেখতে পাবে। অতএব তোমরা আমার ও আমার সুপথপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদ্বীনের  সুন্নাহ অবলম্বন করো, তা দাঁত দ্বারা দৃঢ়তার সাথে ধারণ করো। (তাতে যা পাও মান্য কর এবং অন্য কোনও মতের দিকে আকৃষ্ট হয়ো না।) আর (দ্বীনে) নবরচিত কর্মসমূহ হতে সাবধান! কারণ, নিশ্চয় প্রত্যেক বিদআত (নতুন আমল) হল ভ্রষ্টতা।”(আবু দাঊদ ৪৪৪৩, তিরমিযী ২৮১৫, ইবনে নাজাহ ৪২ নং)
আর নাসাঈর এক বর্ণনায় আছে, “ আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতা জাহান্নামে(নিয়ে যায়)।” উক্ত হাদিস থেকে এ কথাও প্রমাণ হয় যে, বিদআতে হাসানাহ (ভাল বিদআত) বলে কোন বিদআত নেই। কারণ মহানবী (সঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা।”

প্রশ্ন: ইসলামে ‘অপয়া’ বলতে কিছু আছে কি? কুলক্ষণে বিশ্বাস করা শিরক!


প্রশ্ন: ইসলামে ‘অপয়া’ বলতে কিছু আছে কি? উত্তর: অপয়া শব্দের অর্থ: কুলক্ষণযুক্ত, অলক্ষণা, অলক্ষুণে। 
ইসলামে কুলক্ষণে বিশ্বাস করা একটি কুসংস্কার-যা সম্পূর্ণ হারাম। তাহলে এবার কুলক্ষণ সম্পর্কে ইসলামে দৃষ্টিভঙ্গি জানা যাক নিম্নের লেখাটি থেকে:
*কুলক্ষণে বিশ্বাস করা হারাম* কুলক্ষণ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

আপনি দ্বীন কায়েম করতে চান?

আপনি দ্বীন কায়েম করতে চান?
=========================
আপনি দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ইসলামকে বিজয়ী দেখতে চান?
তাহলে কোরআনের এই আয়াতটি অনুধাবনের চেষ্টা করুন।
-আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে ও সৎ কাজ করবে তাদেরকে তিনি পৃথিবীতে ঠিক তেমনিভাবে খিলাফত দান করবেন যেমন তাদের পূর্বে অতিক্রান্ত লোকদেরকে দান করেছিলেন, তাদের জন্য তাদের দীনকে মজবুত ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন, যাকে আল্লাহ তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের (বর্তমান) ভয়-ভীতির অবস্থাকে নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন৷ তারা শুধু

বিবাহের প্রয়োজনীয়তা কি? পুরুষদের জন্য কারা মাহরাম আর কারা মাহরাম নয়?


বিবাহের প্রয়োজনীয়তা কি? পুরুষদের জন্য কারা মাহরাম আর কারা মাহরাম নয়?

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বংশ পরম্পরায় মানব প্রজন্মকে দুনিয়ায় টিকিয়ে রেখে দুনিয়াকে আবাদ রাখার জন্য বিবাহ বন্ধনকে বৈধ করেছেন। এটাকে আল্লাহ তায়ালার একটা গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও সিস্টেম। এ ছাড়া বিবাহের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবন গঠন করা নবীদেরও সুন্নাত।
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
'নিশ্চয় আপনার পুর্বে অনেক রাসুলকে প্রেরণ করেছি। আমি তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করেছি।'(সুরা রা’দ ৩৮)
মানবতার মুক্তির দিশারী রাসুল (সাঃ) বলেছেন 

বিদআত’ কাকে বলে? কখন কোন কাজকে ‘বিদআত’ বলে আখ্যায়ন করা হবে?

বিদআত’ কাকে বলে? কখন কোন কাজকে ‘বিদআত’ বলে আখ্যায়ন করা হবে?

বিদআত বলা হয় দ্বীন ও ইবাদতে নব আবিষ্কৃত কাজকে। অর্থাৎ দ্বীন বা ইবাদত মনে করে করা এমন কাজকে বিদআত বলা হবে, যে কাজের কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন দলীল নেই। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেন,
“তোমরা (দ্বীন) নব উদ্ভাবিত কর্মসমূহ (বিদআত) থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা।” ৮১ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী)
“যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কিছু উদ্ভাবন করল--- যা তাঁর মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।” ৮২ (বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, “যে ব্যাক্তি এমন কাজ করল, যে ব্যপারে আমাদের নির্দেশ নেই, তা বর্জনীয়।”
বলা বাহুল্য, নব আবিষ্কৃত পার্থিব কোন বিষয়কে বিদআত বলা যাবে না। যেমন শরীয়াতে নিষিদ্ধ কোন কাজকে বিদআত বলা হয় না। বরং তাকে অবৈধ, হারাম বা মাকরূহ বলা হয়।

যে ব্যক্তি মনে করে, নারী-পুরুষের সমান অধিকার না দিয়ে ইসলাম নারীর প্রতি যুলুম করেছে, সে ব্যক্তির বিধান কি?

ইসলাম নারীকে পুরুষের সমান অধিকার না দিলেও, তাকে তাঁর যথাযথ অধিকার দান করেছে। ইসলাম তাঁর প্রতি কোন অন্যায় করেনি। ইসলামের এ অধিকার বণ্টনকে যদি কেও অস্বীকার করে এবং অন্যায় ও অবিচার মনে করে, তাহলে সে কাফের। ৮০ (ইবনে বায)

যে ব্যক্তি শরীয়তের কোন বিধানকে ‘অচল’ বা ‘বস্তাপচা’ মনে করে, সে ব্যক্তির বিধান কি?

যে ব্যক্তি শরীয়তের কোন বিধানকে ‘অচল’ বা ‘বস্তাপচা’ মনে করে, সে ব্যক্তির বিধান কি?

সে ব্যক্তি কাফের। যেহেতু শরীয়তের কোন বিধান অচল ও বস্তাপচা নয়। শরীয়তের বিধান বুঝার জন্য অথবা তা বহাল করার জন্য মানুষের বিবেক বুদ্ধি অচল হতে পারে। কিন্তু সে বিধান শাশ্বত, চিরন্তন ও কালজয়ী। ৭৯ (ইবনে বায)

মহান আল্লাহ যে জিনিসকে হালাল করেছেন, তা হারাম এবং যে জিনিসকে হারাম করেছেন, তা হালাল করার ব্যপারে কোন ইমাম, আলেম বা সরকারের অনুগত্য করা কী?

এই শ্রেণীর অনুগত্য তিন ভাবে হতে পারেঃ-
(ক) আল্লাহ্‌র বিধানে অসন্তোষ প্রকাশ করে অথবা তা অপছন্দ করে গায়রুল্লাহর বিধানকে পছন্দ করে তাঁর অনুগত্য করা। এর ফলে মুসলিম ‘কাফের’ হয়ে যায়। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন,
“এটা এ জন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তাঁরা তা অপছন্দ করে। সুতরাং আল্লাহ তাঁদের কর্মসমূহ নিষ্ফল করে দেবেন। (মুহাম্মাদঃ ৯) আর এ কথা বিদিত যে, একমাত্র কাফেরদেরই যাবতীয় আমল নিষ্ফল করা হয়।
(খ) গায়রুল্লাহর বিধানের অনুগত্য করা। তবে এ কথা মনে প্রানে বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহ্‌র বিধানই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং মানুষের জন্য অধিক কল্যাণকর। কিন্তু কোন কুপ্রবৃত্তিবশে, কোন লোভ বা লাভের খাতিরে গায়রুল্লাহর বিধানের অনুগত্য করা। এ অনুগত্যে মুসলিম কাফের হবে না। যেহেতু শে আল্লাহ্‌র বিধানকে অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে না। বরং স্বার্থবশে তা পালন করে না। সুতরাং তাকে ফাসেক বলা যাবে।
(গ) না জেনে গায়রুল্লাহর বিধানের অনুগত্য করা। অথবা সে মনে করে যে, সেটাই আল্লাহ্‌র বিধান। এ ক্ষেত্রে দুই অবস্থা হতে পারেঃ-
একঃ তাঁর পক্ষে আল্লাহ্‌র বিধান জানা সম্ভব। কিন্তু সে জানার চেষ্টা করে না। অথচ মহান আল্লাহ অজানা বিধান উলামার নিকট জিজ্ঞাসা করে জেনে নিতে আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
“তোমরা যদি না জান, তাহলে জ্ঞানীদের জ্ঞিজ্ঞাসা কর;” (নাহলঃ ৪৩, আম্বিয়ামঃ ৭) এ অবস্থায় সে গোনাহগার হবে।
দুইঃ তাঁর পক্ষে আল্লাহ্‌র বিধান জানা সম্ভব নয়। সুতরাং সে কোন আলেম, নেতা বা সরকারের অন্ধানুকরন করে। এমতবস্থায় তাঁর কোন অপরাধ হবে না। যেহেতু মহানবী (সঃ) বলেছেন,
“যে ব্যক্তিকে বিনা ইলমে (ভুল) ফতোয়া দেওয়া হয়, তাঁর পাপ বর্তে মুফতীর উপর।” ৭৭ ( আবু দাঊদ ৩৬৫৭, ইবনে মাজাহ ৫৭, দারেমী ১৫৯ নং)
এ অবস্থায় যদি অন্ধঅনুকরণকারীর অপরাধ গণ্য করা হয়, তাহলে তাতে বড় সমস্যা দেখা দেবে এবং ভুলের আশংকায় কেউ কেউ আলেমের কথায় ভরসাই রাখবে না। ৭৮ (ইবনে ঊষাইমীন)

দ্বীনে মধ্যমপন্থা কী?

দ্বীনে মধ্যমপন্থা কী?

দ্বীন মানতে কিছু লোক চরমপন্থি আছে, কিছু আছে নরম ও ঢিলেপন্থী এবং কিছু আছে মধ্যমপন্থী। কেও দ্বীন ও ইবাদত এর ক্ষত্রে বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন করে, সহজটাকে কঠিন করে এবং কেও একেবারে ঢিলেমি করে, অবজ্ঞা ও অবহেলা করে এবং কঠিনটাকে সহজ মনে করে। অথচ প্রত্যেক জিনিসের মাঝামাঝিটাই ঠিক।
আমাদের দ্বীনই হল মধ্যমপন্থী। তাতে অতিরঞ্জন নেই। মহানবী (সঃ) ও তাঁর সাহাবাবর্গের পথই হল মধ্যমপন্থা। মহানবী (সঃ)-এর তরীকাই হল মাঝামাঝি আচরণ।
আনাস (রঃ) বলেন যে, তিন ব্যাক্তি নবী (সঃ)-এর স্ত্রীদের বাসায় এলেন। তাঁরা নবী (সঃ)-এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। অতঃপর যখন তাঁদেরকে এর সংবাদ দেওয়া হল তখন তাঁরা যেন তা অল্প মনে করলেন এবং বললেন, “তোমাদের সঙ্গে নবী (সঃ)-এর তুলনা কোথায়? তাঁর তো আগের ও পরের সমস্ত গোনাহ মোচন করে দেওয়া হয়েছে। (সেহেতু তোমাদের তাঁর চেয়ে বেশি ইবাদত করা প্রয়োজন)”। সুতরাং তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, “ আমি সারা জীবন রাতভর নামায পড়ব।” দ্বিতীয়জন বললেন, “আমি সারা জীবন রোযা রাখব, কখনো রোযা ছাড়ব না।” তৃতীয়জন বললেন, “আমি নারী থেকে দূরে থাকব, জীবনভর বিয়েই করব না।” অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সঃ) তাঁদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরা এই এই কথা বলেছ? শোনো! আল্লাহ্‌র কসম! আমি তোমাদের চেয়ে বেশি আল্লাহকে ভয় করি, তাঁর ভয় অন্তরে তোমাদের চেয়ে বেশি রাখি। কিন্তু আমি (নফল) রোযা রাখি এবং রোযা ছেড়েও দিই, নামায পড়ি এবং নিদ্রাও যাই। আর নারীদের বিয়েও করি। সুতরাং যে আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে, সে আমার দলভুক্ত নয়।” ৭০ (বুখারী-মুসলিম)

সুতরাং তাঁর তরীকাতেই আছে মধ্যমপন্থী আচরণ। তিনি বলেছেন, “নিশ্চয় দ্বীন সহজ। যে ব্যাক্তি অহেতুক দ্বীনকে কঠিন বানাবে, তাঁর উপর দ্বীন জয়ী হয়ে যাবে। (অর্থাৎ মানুষ পরাজিত হয়ে আমল ছেড়ে দেবে।) সুতরাং তোমরা সোজা পথে থাক এবং (ইবাদতে) মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর। তোমরা সুসংবাদ নাও। আর সকাল-সন্ধ্যা ও রাতের কিছু অংশে ইবাদত করার মাধ্যমে সাহায্য নাও।” ৭৫ (বুখারী)
বুখারির অন্য এক বর্ণনায় আছে, “তোমরা সরল পথে থাকো, মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর, সকাল-সন্ধায় চল (ইবাদত কর) এবং রাতের কিছু অংশে। আর তোমরা মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর, মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর, তাহলেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাবে।”

যারা ঢিলাপন্থী, তাঁরা সুন্নতের উপর আমল করে না, নফল আদায় করতে সচেষ্ট হয় না, বরং অনেক সময় ফরয আদায়েও শৈথিল্য করে।

উদাহারন স্বরূপঃ-
(ক) একটি লোক ফাসেক (পাপাচার), সে কবীরা গোনাহ করে, কিন্তু নামায পড়ে এবং শিরক করে না। চরমপন্থি বলে, “আমি তাঁকে সালাম করব না, তাঁর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব। তাঁর সাথে কথা বলব না।”
নরমপন্থী বলে, “পাপকে ঘৃণা কর, পাপীকে নয়। আমি তাঁকে সালাম করব, তাঁর সাথে সুসম্পর্ক রাখব, তাঁর সাথে হেসে-খেলে উঠাবসা করব।”
আর মধ্যমপন্থী বলে, “আমি তাঁর পাপের জন্য তাঁকে ঘৃণা করব এবং ঈমানের জন্য ভালোবাসব। তাঁকে বর্জন করায় যদি কোন উপকার থাকে, তাহলে তাঁকে বর্জন করব।”
(খ) চরমপন্থী লোক স্ত্রীকে চরণের দাসী মনে করে। নরমপন্থী তাঁকে নিজের প্রভু মনে করে, বানরের মত তাঁর কোথায় উঠ-বস করে। আর মধ্যমপন্থী তাঁকে বন্ধু মনে করে। সে জানে, “ নারীদের তেমন ন্যায়-সঙ্গত অধিকার আছে যেমন আছে তাঁদের উপর পুরুষদের। কিন্তু নারীদের উপর পুরুষদের কিছুটা মর্যাদা আছে। আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (বাকারাহঃ ২২৮)
রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “কোন ইমানদার পুরুষ যেন কোন ইমানদার নারী (স্ত্রীকে) ঘৃনা না করে। যদি সে তাঁর একটি আচরণে অসন্তষ্ট হয়, তবে অন্য আচরণে সন্তষ্ট হবে।” ৭৬ (মুসলিম)

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ