Saturday, March 31, 2018

আরবী ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা প্রদানের বিধান কি?

(৩২৪) আরবী ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা প্রদানের বিধান কি?


এই মাসআলায় বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে, উপস্থিত মুছল্লীগণ যে ভাষা বুঝে না সে ভাষায় জুমআর খুতবা প্রদান করা জায়েয নয়। যদি উপস্থিত মুছল্লীগণ আনারব হন্ত তারা আরবী না বুঝেন, তবে তাদের ভাষাতেই খুতবা প্রদান করবে। কেননা তাদেরকে বুঝানোর জন্য এ ভাষাই হচ্ছে বক্তৃতা করার মাধ্যম। আর জুমআর খুতবার লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে আল্লাহ্‌র বিধি-বিধান বর্ণনা করা, তাদেরকে ওয়াজ-নসীহত করা। তবে কুরআনের আয়াত সমূহ অবশ্যই আরবী ভাষায় পাঠ করতে হবে। অতঃপর মাতৃভাষায় তার তাফসীর করে দিবে। আর মাতৃভাষায় খুতবা প্রদানের দলীল হচ্ছে, আল্লাহ্‌ বলেনঃ

জুমআর দিবসে গোসল করার বিধান কি নারী ও পুরুষের সকলের জন্য? এ দিনের এক বা দু’দিন পূর্বে গোসল করার হুকুম কি?

(৩২৫) জুমআর দিবসে গোসল করার বিধান কি নারী ও পুরুষের সকলের জন্য? এ দিনের এক বা দু’দিন পূর্বে গোসল করার হুকুম কি?


জুমআর দিবসে গোসল ও সাজ-সজ্জার বিধান শুধুমাত্র পুরুষদের জন্যই। কেননা সেই জুমআর নামাযে উপস্থিত হবে। গোসল ও সৌন্দর্য গ্রহণ পুরুষকে উদ্দেশ্য করেই বলা হয়েছে। নারীদের জন্য এটা শরীয়ত সম্মত নয়। তবে যে কোন মানুষ নিজের শরীরে বা অঙ্গে ময়লা-আবর্জনা দেখতে পেলেই তা পরিস্কার করবে। কেননা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ইসলামে প্রশংসিত বিষয়, এতে উদাসীনতা কারো জন্য উচিৎ নয়।

খুতবার জন্য দ্বিতীয় আযানের সময় মসজিদে প্রবেশ করলে করণীয় কি?

(৩২৬) খুতবার জন্য দ্বিতীয় আযানের সময় মসজিদে প্রবেশ করলে করণীয় কি?


বিদ্বানগণ উল্লেখ করেছেন যে, কোন ব্যক্তি জুমআর দিবসে মসজিদে প্রবেশ করে যদি দেখে মুআয্‌যিন খুতবার জন্য দ্বিতীয় আযান প্রদান করছে। তখন সে তাহিয়্যাতুল মসজিদ শুরু করবে, মুআয্‌যিনের আযানের জবাব দিতে ব্যস্ত হবে না। যাতে করে খুতবা শোনার জন্য প্রস্ততি নিতে পারে। কেননা

জুমআর মসজিদে মানুষের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের কাতারে যাওয়ার বিধান কি?

(৩২৭) জুমআর মসজিদে মানুষের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের কাতারে যাওয়ার বিধান কি?


খুতবা চলা অবস্থায় যদি কেউ মানুষের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের কাতারে যেতে চায়, তবে কোন কথা না বলেই তাকে বসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। বসে যাওয়ার জন্য তাকে ইঙ্গিত করবে বা

ইমামের খুতবার সময় মসজিদে প্রবেশ কালে সালাম প্রদান এবং সালামের জবাব দেয়ার বিধান কি?

(৩২৮) ইমামের খুতবার সময় মসজিদে প্রবেশ কালে সালাম প্রদান এবং সালামের জবাব দেয়ার বিধান কি?


ইমামের খুতবা চলাবস্থায় কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে শুধুমাত্র দু’রাকাত নামায হালকা করে আদায় করবে। কাউকে সালাম দিবে না। কেননা এ অবস্থায় মানুষকে সালাম দেয়া হারাম। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ

ঈদের দিন কি বলে একে অপরকে অভিনন্দন জানাবে?

(৩২৯) ঈদের দিন কি বলে একে অপরকে অভিনন্দন জানাবে?


ঈদের জন্য অভিনন্দন জানানো জায়েয। তবে এর জন্য বিশেষ কোন বাক্য নেই। মানুষের সাধারণ সমাজে প্রচলিত যে কোন শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তা যেন কোন অশ্লীল শব্দ না

ঈদের নামাযের বিধান কি?

(৩৩০) ঈদের নামাযের বিধান কি?


আমি মনে করি ঈদের নামায ফরযে আঈন তথা প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ফরয। কোন পুরুষের জন্য এ নামায পরিত্যাগ করা জায়েয নয়। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নির্দেশ প্রদান করেছেন। বরং কুমারী পর্দানশীন নারীদেরকেও এ নামাযে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন; এমনকি ঋতুবতী নারীদেরকেও অনুরূপ নির্দেশ প্রদান করেছেন। তবে ঋতুবতী ছালাত আদায় করবেনা। এ দ্বারা এ নামাযের অতিরিক্ত গুরুত্ব বুঝা যায়। এটাই প্রাধান্যযোগ্য মত এবং শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়াও (রহঃ) অনুরূপ মত পোষণ করেছেন।

এক শহরে একাধিক ঈদের নামায অনুষ্ঠিত করার বিধান কি?

(৩৩১) এক শহরে একাধিক ঈদের নামায অনুষ্ঠিত করার বিধান কি?


যদি প্রয়োজন দেখা যায় তবে কোন অসুবিধা নেই। যেমন প্রয়োজন দেখা দিলে জুমআর নামায একাধিক স্থানে অনুষ্ঠিত করা যায়। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ “দ্বীনের মাঝে আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য কোন অসুবিধা রাখেন নি।” (সূরা হাজ্জঃ ৭৮) একাধিক স্থানে নামায অনুষ্ঠিত জায়েয না হলে নিশ্চিতভাবে অনেক মানুষ জুমআ ও ঈদের নামায থেকে বঞ্চিত হবে। ‘প্রয়োজন্তু বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেমন শহর অনেক বড়। শহরের সকল প্রান্ত থেকে লোকদের একস্থানে সমবেত হওয়া কষ্টকর, অথবা ঈদগাহে জায়গার সংকুলান না হওয়া ইত্যাদি। কিন্তু এধরণের কোন অসুবিধা না থাকলে একাধিক স্থানে জুমআ বা ঈদের নামায অনুষ্ঠিত করা যাবে না।

দু’ঈদের নামাযের পদ্ধতি কিরূপ?

(৩৩২) দু’ঈদের নামাযের পদ্ধতি কিরূপ?


দু’ঈদের নামাযের পদ্ধতি হচ্ছেঃ প্রথমে ইমাম উপস্থিত লোকদের নিয়ে দু’রাকাত নামায আদায় করবে। প্রথম রাকআতে তাকবীরে তাহরিমা দেয়ার পর অতিরিক্ত ছয়টি তাকবীর দিবে। তারপর সূরা ফাতিহা পাঠ করবে এবং সূরা ‘ক্বাফ’ পাঠ করবে। দ্বিতীয় রাকাতে তাকবীর দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়বে এবং সূরা পাঠ শুরু করার পূর্বে অতিরিক্ত পাঁচটি তাকবীর প্রদান করবে। তারপর সূরা ফাতিহা পাঠ করে সূরা ‘ক্বামার’ পাঠ করবে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ঈদের নামাযে এ দু’টি সূরা পাঠ করতেন। অথবা ইচ্ছা করলে প্রথম রাকাতে ‘সূরা আ‘লা’ এবং দ্বিতীয় রাকাতে ‘সূরা গাশিয়া’ পাঠ করবে।

ঈদের নামাযের পূর্বে দলবদ্ধভাবে মাইক্রোফোনে তাকবীর প্রদান করার বিধান কি?

(৩৩৩) ঈদের নামাযের পূর্বে দলবদ্ধভাবে মাইক্রোফোনে তাকবীর প্রদান করার বিধান কি?


প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে তাকবীর পাঠ করা বৈধ নয়। কেননা এধরণের পদ্ধতি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা ছাহাবায়ে কেরাম থেকে প্রমাণিত নয়। সুন্নাত হচ্ছে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজে নিজে আলাদাভাবে তাকবীর পাঠ করবে।

রাসূল (সা:) এর ছায়া ছিল কি? কুরআন ও হাদীসের আলোকে পর্যালোচনা

রাসূল (সা:) এর ছায়া ছিল কি? কুরআন ও হাদীসের আলোকে পর্যালোচনা
===================================
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোনো ছায়া ছিল না বলে যে কথাটি আপনি বা আপনারা শুনেছেন তা সত্য নয়। বরং এ সংক্রান্ত যেসব বর্ণনা পাওয়া যায় তার সবই জাল এবং পরিত্যাজ্য। শায়খ ইবনে উসাইমিন রহ. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোনো ছায়া ছিল না বলে যেসব কথা বলা হয় তার সবই মিথ্যা এবং বানোয়াট। আলকাউলুল মুফীদ ১/৬৮।
এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন, মারকাযুদ্দাওয়া আলইসলামিয়া এর শিক্ষাসচিব, হাদীস শাস্ত্রের প্রাণপুরুষ শায়খ আব্দুল মালেক দা.বা. এর নির্দেশনায় রচিত প্রচলিত জাল হাদীস (প্রথম প্রকাশনা) ১৮৮।
তাছাড়াও রাসূল (ছাঃ) এর ছায়া ছিল না মর্মে যে বক্তব্য দেয়া হয়, তা বিশুদ্ধ নয়। এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছও ছহীহ নয়। বরং জাল ও ভিত্তিহীন।
রাসূল (ছাঃ) আমাদের মতই রক্ত মাংসের মানুষ ছিলেন। তারও ছায়া ছিল। ছায়া ছিল না বলাটা রাসূল (ছাঃ) এর জীবনী ও সাহাবাদের বক্তব্য সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচায়ক।
রাসূল সাঃ এর ছায়া না থাকা সংক্রান্ত একটি জাল বর্ণনা
ﺍﺧﺮﺝ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻯ ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﻋﺒﺪ ﺑﻦ ﻗﻴﺲ ﺍﻟﺰﻋﻔﺮﺍﻧﻰ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺍﻟﻮﻟﻴﺪ ﻋﻦ ﺫﻛﺮﺍﻥ ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﺮﻯ ﻟﻪ ﻇﻞ ﻓﻰ ﺷﻤﺲ ﻭﻻ ﻗﻤﺮ، ﺫﻛﺮﻩ ﺍﻟﺴﻴﻮﻃﻰ ﻓﻰ “ ﺍﻟﺨﺼﺎﺋﻞ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ – 1/122 )
অনুবাদ-যাকওয়ান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-সূর্য ও চাঁদের আলোতে রাসূল সাঃ এর ছায়া দেখা যেতো না। {আল খাসায়েলুল কুবরা-১/১২২}
জবাব:
এ বর্ণনাটি জাল ও ভিত্তিহীন। কেননা, প্রথমত তার সূত্রে রয়েছে আব্দুর রহমান বিন কাইস যাফরানী, যার সম্পর্কে মুহাদ্দিসীনদের কঠোর মন্তব্য রয়েছে।
বিজ্ঞ রিজাল শাস্ত্রবীদ আব্দুর রহমান বিন মাহদী এবং ইমাম আবু যরআ রহঃ তাকে মিথ্যুক বলেছেন।
আবু আলী সালেহ ইবনে মুহাম্মদ রহঃ বলেন-
ﻛﻠﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﻗﻴﺲ ﺍﻟﺰﻋﻔﺮﺍﻧﻰ ﻳﻀﻊ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ
তথা আব্দুর রহমান বিন কাইস যাফরানী হাদীস জাল করতো।
এছাড়াও তার সম্পর্কে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ, ইমাম বুখারী রহঃ, ইমাম মুসলিম রহঃ, ইমাম নাসায়ী রহঃ প্রমূখ প্রখ্যাত ইমামদের কঠোর উক্তি রয়েছে। [দ্রষ্টব্য- তারীখে বাগদাদ-১০/২৫১-২৫২, মীযানুল ই’তিদাল-২/৫৮৩, তাহযীবুত তাহযীব-৬/২৫৮]
এছাড়া সত্যিই যদি রাসূল (ছাঃ) এর ছায়া না হতো, তাহলে এটি অতি আশ্চর্যজনক বিষয় হওয়ায় অনেক ছহীহ হাদীছ থাকার কথা। অথচ এমন কোন হাদীছ নেই।
তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) এর ছায়া আছে মর্মে একাধিক ছহীহ হাদীছ রয়েছে। তাই ছায়া নেই বলাটা অজ্ঞতাসূলভ মন্তব্য ছাড়া কিছু নয়।
রাসূর (ছাঃ) এর ছায়া ছিল মর্মে ছহীহ হাদীছ-
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রাসূল এক সফরে ছিলেন। সাথে ছিলেন সাফিয়্যাহ ও যায়নব। সাফিয়্যাহ নিজের উট হারিয়ে ফেলেন। যয়নব (রাঃ) এর কাছে ছিল অতিরিক্ত উট। তাই নবী (সাঃ) যয়নবকে বলেনঃ সাফিয়্যার উট নিখোঁজ হয়ে গেছে, যদি তুমি তাকে তোমার একটি উট দিয়ে সাহায্য করতে তো ভাল হত! উত্তরে যয়নব বলেনঃ হুঁ! আমি ঐ ইহুদির মেয়েকে উট দেব! (অর্থাৎ তিনি দিতে অস্বীকার করেন এবং সাফিয়্যাহ (রাঃ) কে ইহুদী সন্তান বলে কটূক্তি করেন। কারণ তিনি ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ইহুদী ছিলেন।) এ কটূক্তির কারণে নবী (সাঃ) যয়নবের সাথে মেলামেশা বন্দ করে দেন। জিলহজ্জ এবং মুর্হারম দুই কিংবা তিন মাস ধরে তার সাথে সাক্ষাৎ করা থেকে বিরত থাকেন। যয়নব (রাঃ) বলেন, আমি নিরাশ হয়ে পড়ি এমনকি শয়নের খাটও সরিয়ে নেই। এমনি এক সময় দিনের শেষার্ধে, নিজেকে রাসূল (সাঃ) এর ছায়ার মধ্যে পাই। তিনি আমার দিকে এগিয়ে আসছিলেন। [মুসনাদে আহমদ, ৬/১৬৪-১৮২, আত্ ত্বাবাকাত আল্ কুবরা, ৮/১০০)
হিজরতের লম্বা হাদীসে বর্ণিত, রাবী বলেন: .. .. .. নবী (সাঃ) বানু আমর বিন আউফ গোত্রে রবীউল আউয়াল মাসের সোমবারে অবতরণ করেন। আবু বকর লোকেদের অভ্যর্থনার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে থাকেন। আর নবী (সাঃ) চুপ-চাপ বসে থাকেন। ইতোপূর্বে আনসারদের মধ্যে যারা নবী (সাঃ) কে দেখেনি তারা আবু বকর কে সালাম করতে থাকে (ভুলবশতঃ নবী মনে করে) তারপর যখন আল্লাহর রাসূলের উপর রোদ পড়ে, তখন আবু বকর এসে নিজের চাদর দিয়ে তাঁকে ছায়া করে দেন। এ কারণে মানুষেরা নবী (সাঃ)-কে চিনতে পারে। [বুখারী, কিতাবু মানাকিবিল আনসার, বাবু হিজরাতিন্নাবী.. হাদীস নং ৩৯০৬]
জাবির বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমরা আল্লাহর রাসূলের সংগী হয়ে নাজদে লড়াই করি। রাস্তার মাঝে নবী (সাঃ) এর “কায়লূলার” (দুপুর বিশ্রামের) প্রয়োজন হয়। জায়গাটিতে ছিল বহু কাঁটাওয়ালা গাছ। তিনি (সাঃ) একটি গাছের নিচে যান এবং সেই গাছের ছায়ার নিচে বিশ্রাম করেন। আর তরবারিটি ডালে টেঙ্গে রাখেন। [বুখারী, কিতাবুল মাগাযী, বাবু গাযওয়াতি বানিল মুস্তালিক হাদীস নং ৪১৩৯]
এবার দেখা যাক তাঁর ছায়া মুবারক ছিল কিনা? বিশ্বনবী (সাঃ) নিজেই নিজের ছায়া দেখেছিলেন বলে প্রমাণিত। এ হাদিস তার দলিল–
.
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﺑﻴﻨﻤﺎ ﺻﻠﻌﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺫﺍﺕ ﻟﻴﻠﺔ ﺻﻠﻮﺓ ﺍﺫ ﻣﺪ ﻳﺪﻩ ﺛﻢ ﺍﺧﺮﻫﺎ ﻓﻘﻠﻨﺎ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺭﺃﻳﻨﺎﻙ ﺻﻨﻌﺖ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﺷﻴﺌﺎ ﻟﻢ ﺗﻜﻦ ﺗﺼﻨﻊ ﻓﻴﻤﺎ ﻗﺒﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﺟﻞ ﺍﻧﻪ ﻋﺮﺿﺖ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻓﺮﺃﻳﺖ ﻓﻴﻬﺎ ﺩﺍﻟﻴﺔ ﻗﻄﻮﻓﻬﺎ ﺩﺍﻧﺒﺔ ﻓﺎﺭﺩﺕ ﺍﻥ ﺍﺗﻨﺎﻭﻝ ﻣﻨﻬﺎ ﺷﻴﺌﺎ ﻧﺎﻭﺣﻲ ﺍﻟﻲ ﺍﻥ ﺍﺳﺘﺄﺧﺮ ﻓﺎﺳﺘﺄﺧﺮﺕ ﻋﺮﺿﺖ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺑﻴﻨﻲ ﻭ ﺑﻴﻨﻜﻢ ﺣﺘﻲ ﺭﺃﻳﺖ ﻇﻠﻲ ﻭ ﻇﻠﻜﻢ ﻓﻴﻬﺎ . ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﻓﻲ ﻣﺴﺘﺪﺭﻛﻪ ﻭ ﻗﺎﻝ ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻻﺳﻨﺎﺩ ﻭ ﻟﻢ ﻳﺨﺮﺟﺎﻩ
.
অর্থ, হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন কোনো এক রাতে রাসূল (সাঃ) নামায পড়াচ্ছিলেন। তিনি সহসা সামনের দিকে হাত বাড়ান এরপর তা আবার পেছনের দিকে টেনে নেন। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ), এ নামাযে আপনাকে এমন কাজ করতে দেখেছি যা ইতিপূর্ব কখনো করেননি।
.
তিনি ইরশাদ করেন, হ্যাঁ। আমার কাছে জান্নাত উপস্থিত করা হয়েছিল। তাতে বিশাল বৃক্ষরাজি দেখতে পেলাম যেগুলোর ছড়া ঝুঁকানো ছিল। তা থেকে কিছু নিতে চাইলে আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হল আপনি পেছনে সরে দাঁড়ান। আমি সরে দাঁড়ালাম। তারপর আমার নিকট জাহান্নাম উপস্থিত করা হল, যার আলোতে আমি আমার এবং তোমাদের (সাহাবিদের) ছায়া পর্যন্ত দেখেছি।” (দলিল : মুসতাদরিকে হাকেম-৫/৬৪৮, সহিহ ইবনে খোজাইমাহ-২/৫০)।
ইমামুল আয়িম্মাহ আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক ইবনে খোজায়মাহ আস-সালামী আন-নিসাপুরী আশ-শাফেয়ী (রহ) [জন্ম-মৃত্যু ২২৩-৩১১ হিজরী] তিনি তদ্বীয় সহীহ ইবনে খোজায়মাহ কিতাবে হযরত আনাস বিন মালেক (রা) হতে সুস্পষ্ট অর্থবোধক একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। উক্ত হাদিস দ্বারাও প্রমাণিত হয়েছে যে, আল্লাহপাকের হাবীব রাসূলেপাক (সা) -এর ছায়া মুবারক ছিল। হাদিসের ভাষ্য : …. ( ﺣﺘﻰ ﺭﺃﻳﺖ ﻇﻠﻲ ﻭﻇﻠﻜﻢ ) “আমি আমার এবং তোমাদের (ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাহাবীদের) ছায়া দেখেছি।”
কে যেন পাল্টা প্রশ্ন করেছিল যে, জাহান্নামের প্রতিচ্ছবি যখন পেশ করা হয় তখন তো তার সামনে জাহান্নামের আগুনের আলোকরশ্মি ছড়িয়ে পড়েছিল। যেজন্য তখন নবী ও তাঁর সাহাবিদের ছায়া পেছন দিকেই সরে গিয়েছিল। আর তাই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, নবীজি (সাঃ) নামাযরত অবস্থায় সম্মুখ থেকে পেছনে ছায়া দেখেছিলেন কীভাবে ?
সহজ উত্তর :
রাসূল (সাঃ) নামাযরত অবস্থায় সম্মুখ থেকে পেছনে দেখারও ক্ষমতা রাখেন, ইহা তাঁর অন্যতম মুজিজা বা আলৌকিক বিষয় । এর পক্ষে সুস্পষ্ট দলিল-
১-
ﺍﻧﻲ ﺍﺭﻱ ﻣﺎ ﻻ ﺗﺮﻭﻥ ﻭ ﺍﺳﻤﻊ ﻣﺎ ﻻ ﺗﺴﻤﻌﻮﻥ . ﻣﺸﻜﻮﺓ
٤٥٧ .
.
অনুবাদ: নিশ্চয় আমি যা দেখি তোমরা তা দেখনা। আমি যা শুনতে পাই তোমরা তা শুনতে পাওনা । (সূত্র—মেশকাত-৪৫৭)।
২-
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻧﻲ ﻻﺭﻱ ﻣﻦ ﺧﻠﻔﻲ ﻛﻤﺎ ﺍﺭﻱ ﻣﻦ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻱ . ﻣﺸﻜﻮﺓ ٧٧ .
.
অনুবাদ: আল্লাহর শপথ নিশ্চয় আমি পেছনেও তেমন দেখতে পাই, যেমনি ভাবে আশে পাশে দেখতে পাই। (সূত্র—মেশকাত-৭৭)।
যাইহোক, এ হাদিসটি যদি সত্য হয় তাহলে রাসূলেপাকের (সাঃ) ছায়া মুবারক ছিল, একথাও সত্য। আর তাঁর ছায়া থাকা যদি মিথ্যা হয়, তাহলে রাসূল (সাঃ) কি জন্য এমন কথা বললেন; আগে তার জবাব দিন!
পরিশেষে বলা যায়, রাসূলের (সাঃ) ছায়া মুবারক থাকা সত্তেও তা মাঝে মধ্যে মাটিতে না পড়াই হল তাঁর জন্য অন্যতম মুজিজা বা আলৌকিক বিষয়। কিন্তু যদি বলা হয় যে, তাঁর ছায়াই ছিলনা, তাহলে এমতাবস্থায় তাঁর ছায়া মাটিতে না পড়াটাই স্বাভাবিক। যার ফলে তখন সেটি মাটিতে না পড়াকে কেউ অলৌকিক বিষয় মনে করবে না।
রাসূর (সাঃ) এর ছায়া ছিল মর্মে আরো সহীহ হাদীস:
ﻭﻳﺌﺴﺖ ﻣﻨﻪ ﻓﻠﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﺷﻬﺮ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻷﻭﻝ ﺩﺧﻞ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻓﺮﺃﺕ ﻇﻠﻪ ﻓﻘﺎﻟﺖ ﺇﻥ ﻫﺬﺍ ﻟﻈﻞ ﺭﺟﻞ ﻭﻣﺎ ﻳﺪﺧﻞ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻤﻦ ﻫﺬﺍ ﻓﺪﺧﻞ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
.
অনুবাদ : এমনকি হযরত যায়নব (রাঃ) রাসূল (সাঃ) এর আগমন থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন। রবীউল আওয়ালে তার নিকট যান। ঘরে প্রবেশের প্রক্কালে যয়নব (রাঃ) তাঁর ছায়া দেখতে পান এবং বলেন, এতো কোন পুরুষ মানুষের ছায়া বলে মনে হয়। তিনি তো আমার কাছে আসেন না। তাহলে এ ব্যক্তি কে? ইত্যবসরে রাসূল (সাঃ) প্রবেশ করেন। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৬৮৬৬}।
কতিপয় লোক এটা প্রচার করছে যে, রাসূল (সাঃ)-এর কোন ছায়া ছিল না। এর সমর্থনে দলিলও দিয়ে থাকে। জবাবে বলা হয় যে, রাসূল (সাঃ)-এর ছায়া ছিল না মর্মে যে দলিল দেয়া হয়, তা বিশুদ্ধ নয়। এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসও সহীহ নয়। বরং জাল ও ভিত্তিহীন।
রাসূল (সাঃ) একজন সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হওয়া সত্ত্বেও আমাদের মতই রক্ত মাংসের মানুষ ছিলেন। উনারও ঘাম হতো, ছায়াও ছিল। ছায়া ছিলনা বলাটা রাসূল (সাঃ)-এর জীবনী ও সাহাবাদের বক্তব্য সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচায়ক। রাসূল (সাঃ)-এর ছায়া না থাকার পক্ষে রেওয়ায়েতটি নিম্নরূপ :
.
ﺍﺧﺮﺝ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻯ ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﻋﺒﺪ ﺑﻦ ﻗﻴﺲ ﺍﻟﺰﻋﻔﺮﺍﻧﻰ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺍﻟﻮﻟﻴﺪ ﻋﻦ ﺫﻛﺮﺍﻥ ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﺮﻯ ﻟﻪ ﻇﻞ ﻓﻰ ﺷﻤﺲ ﻭﻻ ﻗﻤﺮ، ﺫﻛﺮﻩ ﺍﻟﺴﻴﻮﻃﻰ ﻓﻰ “ ﺍﻟﺨﺼﺎﺋﻞ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ - 1/122 )
.
অনুবাদ: তাবেয়ী যাকওয়ান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- সূর্য ও চাঁদের আলোতে রাসূল (সাঃ)-এর ছায়া দেখা যেতো না। {আল খাসায়েসুল কুবরা-১/১২২}
যাকওয়ান নামক রাবীর উক্ত মন্তব্যের দাঁতভাঙা জবাব :
উল্লিখিত রেওয়ায়েত খানা আমারও জানা আছে। সেটির গ্রহনযোগ্যতা যাচাইবাচাই করে যা পেলাম তার সারকথা হল-
১- রেওয়ায়েতটির বিশুদ্ধ কোনো সনদ নেই। বিদ্যমান সনদের রাবীগুলো (বর্ণনাকারী) সমালোচিত এবং এর সূত্র মুরসাল।
২- এখানে রেওয়ায়েতটি সুস্পষ্টভাবে ছায়াকে অস্বীকার করছে না, বরং “চন্দ্র আর সূর্যের আলোতে দেখা যেত না”— এতটুকুই বুঝাচ্ছে। আমাদের বক্তব্যও পরিস্কার যে, কখনো কখনো উনার ছায়া মুবারক দেখা না যাওয়াই উনার মুজিযা স্বরূপ ছিল। মূলত ছায়া দেখা না যাওয়ার অর্থ কিন্তু ছায়া না থাকা বুঝায় না। যেমন, জ্বীন আর ফেরেশতাদের দেখা যায়না, তাই বলে কি তারা নেই?
৩- আসল কথা হল, বর্ণনাটি জাল ও ভিত্তিহীন। কেননা, প্রথমত তার সূত্রে রয়েছে আব্দুর রহমান বিন কাইস যাফরানী, যার সম্পর্কে মুহাদ্দিসীনদের কঠোর মন্তব্য রয়েছে।
বিজ্ঞ রিজাল শাস্ত্রবীদ আব্দুর রহমান বিন মাহদী এবং ইমাম আবু জুরআ (রহঃ) তাকে মিথ্যুক বলেছেন।
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আবু আলী সালেহ ইবনে মুহাম্মদ (রহঃ) বলেন-
ﻛﺎﻥ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﻗﻴﺲ ﺍﻟﺰﻋﻔﺮﺍﻧﻰ ﻳﻀﻊ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ
.
তথা আব্দুর রহমান বিন কাইস যাফরানী হাদীস জাল করত।
এছাড়াও তার সম্পর্কে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ), ইমাম বুখারী (রহঃ), ইমাম মুসলিম (রহঃ), ইমাম নাসায়ী (রহঃ) প্রমূখ প্রখ্যাত ইমামদের কঠোর উক্তি রয়েছে। [দ্রষ্টব্য- তারীখে বাগদাদ-১০/ ২৫১-২৫২, মীযানুল ই’তিদাল-২/৫৮৩, তাহযীবুত তাহযীব-৬/২৫৮]
এছাড়া সত্যিই যদি রাসূল (সাঃ) এর ছায়া না হতো, তাহলে এটি অতি আশ্চর্যজনক বিষয় হওয়ায় অনেক সহীহ হাদীস থাকার কথা। অথচ এমন কোন হাদীস নেই। তাছাড়া রাসূল (সাঃ) এর ছায়া আছে মর্মে একাধিক সহীহ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। তাই ছায়া নেই বলাটা অজ্ঞতাসূলভ মন্তব্য ছাড়া কিছু নয়।
৪- যদি সহীহ ধরাও হয় তথাপি সেটি কয়েকটি কারণে বাতিল। কারণ রেওয়ায়েতটি মুরসাল এবং অস্পষ্ট। আর আমাদের প্রদত্ত হাদিসটি মর্মের দিক থেকে সুস্পষ্ট এবং মারফূ ও মুত্তাসিল। অথচ যাকওয়ান হতে বর্ণিত রেওয়ায়েতটি না নবীজির বক্তব্য, না বিশুদ্ধ সনদেপ্রাপ্ত কোনো সাহাবীর বক্তব্য ; কোনোটিই নয়। বরং সেটি একটি মুরসাল রেওয়ায়েত। যা কখনো মারফূ হাদিসের উপর প্রাধান্য পেতে পারেনা।
উপসংহার
অনলাইনের কল্যাণে বিদয়াতি রেজভিদের তাবৎ অসার আকিদা বিশ্বাস ধীরে ধীরে মানুষের সামনে প্রকাশ পাচ্ছে। এতকাল এসব সত্য কথাগুলো যাদের জানা ছিলনা, তারাও আজ অবলীলায় জানতে পেরে রেজভী আকিদা হতে ত্বওবাহ পড়ছেন? আল্লাহ তা’আলা আমাদের সঠিক পথের হিদায়ত দিন, আমীন।

Tuesday, March 27, 2018

প্রশ্ন: ভাই কোন কোন স্থানে রাসূল (সা:) দুই হাত তুলে মোনাজাত (দুআ) করেছেন?

#প্রশ্ন: ভাই কোন কোন স্থানে রাসূল (সা:) দুই হাত তুলে মোনাজাত (দুআ) করেছেন?
#উত্তর: রাসূল (সা:) মোট চৌদ্দটি (14) টি স্থানে দুই হাত তুলে মোনাজাত (দুআ) করেছেন ৷ তার মধ্যে কেবল মাত্র একটি স্থানে সম্মিলিত ভাবে মোনাজাত করেছেন ৷ বাকি সব স্থানে একাকী মোনাজাত (দুআ) করেছেন ৷ কেবল মাত্র বৃষ্টির জন্য সম্মিলিত ভাবে দুআ করেছেন ৷ তাই বৃষ্টির জন্য ছাড়া সর্ব ক্ষেত্রে সম্মিলিত ভাবে দুই হাত তুলে দুআ করা নিষিদ্ধ ৷
#নিম্নে যে যে স্থানে রাসূল (সা:) দুই হাত তুলে মোনাজাত (দুআ) করেছেন তা বর্ননা করা হল:::::::::::::::::::::::::
-
[1] #বৃষ্টি প্রার্থনার জন্যঃ ----

Monday, March 26, 2018

ঈদের তাকবীর কখন থেকে পাঠ করতে হবে? তাকবীর পড়ার পদ্ধতি কি?

(৩৩৪) ঈদের তাকবীর কখন থেকে পাঠ করতে হবে? তাকবীর পড়ার পদ্ধতি কি?


ঈদের তাকবীর শুরু হবে রামাযানের শেষ দিন সূর্যাসে-র পর থেকে। শেষ হবে ঈদের নামাযে ইমাম উপস্থিত হলেই। তাকবীরের পদ্ধতিঃ
الله اكبر الله اكبر لا إله إلا الله والله اكبر الله اكبر ولله الحمد
উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ। অথবা পাঠ করবেঃ

সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামায আদায় করার বিধান কি?

(৩৩৫) সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামায আদায় করার বিধান কি?


অধিকাংশ বিদ্বানের মতে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামায সুন্নাতে মুআক্কাদা। ওয়াজিব নয়। নিঃসন্দেহে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ নামাযের নির্দেশ প্রদান করেছেন। অতি গুরুত্বসহকারে অন্যান্য নামায থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতিতে তিনি এ নামায আদায় করেছেন।
বিদ্বানদের মধ্যে কেউ কেউ এ নামাযকে ফরযে আঈন বা ফরযে কেফায়া হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাদের দলীল হচ্ছে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ নামাযের নির্দেশ প্রদান করেছেন। আর নির্দেশ মানেই ফরয বা ওয়াজিব। তাছাড়া অন্যান্য নিদর্শন থেকেও এনামাযের অতিরিক্ত গুরুত্ব পাওয়া যায়। এছাড়া বান্দার ত্রুটির কারণেই এই সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ হয়ে থাকে এবং আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে এটি একটি সতর্কতা। তাই বান্দাদের উপর ওয়াজিব হচ্ছে এই শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে কাকুতি-মিনতী করা এবং ছালাত আদায় করা।

সূর্য গ্রহণ বা চন্দ্র গ্রহণের নামায ছুটে গেলে কিভাবে তা কাযা আদায় করবে?

(৩৩৬) সূর্য গ্রহণ বা চন্দ্র গ্রহণের নামায ছুটে গেলে কিভাবে তা কাযা আদায় করবে?


সূর্য গ্রহণ বা চন্দ্র গ্রহণের নামায থেকে কারো যদি এক রাকাত ছুটে যায়, তবে সে সম্পর্কে হাদীছে এরশাদ হয়েছে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

ইস্তেস্কার নামাযে চাদর উল্টিয়ে নেয়ার কাজটি কখন করতে হবে? দু’আর সময় নাকি গৃহ থেকে বের হওয়ার সময়? আর এই চাদর উল্টানোর হিকমত কি?

(৩৩৭) ইস্তেস্কার নামাযে চাদর উল্টিয়ে নেয়ার কাজটি কখন করতে হবে? দু’আর সময় নাকি গৃহ থেকে বের হওয়ার সময়? আর এই চাদর উল্টানোর হিকমত কি?


বৃষ্টি প্রার্থনার নামাযে চাদর উল্টিয়ে নেয়ার কাজটি নামায শেষ করে ইমামের খুতবার সময় করতে হবে। যেমনটি বিদ্বানগণ উল্লেখ করেছেন। একাজের হিকমত তিনটি উপকারিতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়ঃ
প্রথমতঃ নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুসরণ।

কেউ কেউ বলে থাকে, “তোমরা ইস্তেস্কা তথা বৃষ্টি প্রার্থনার দু’আ না করলেও বৃষ্টি হবে।” একথা সম্পর্কে আপনার মত কি?

(৩৩৮) কেউ কেউ বলে থাকে, “তোমরা ইস্তেস্কা তথা বৃষ্টি প্রার্থনার দু’আ না করলেও বৃষ্টি হবে।” একথা সম্পর্কে আপনার মত কি?


আমি মনে করি এব্যক্তি ভয়ানক বিপজ্জনক ও অপরাধের কথা বলেছে। কেননা আল্লাহ্‌ বলেন, وَقَالَ رَبُّكُمْ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ “তোমাদের পালনকর্তা বলেন তোমরা আমাকে ডাক (দু’আ কর) আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব।” (সূরা গাফেরঃ ৬০) আল্লাহ্‌ তা’আলা মহাজ্ঞানী। নিজ অনুগ্রহ প্রদান করতে কখনো তিনি দেরী করেন, যাতে করে মানুষ বুঝতে পারে তারা তাঁর কাছে কত অভাবী, কত মুখাপেক্ষী, তিনি ছাড়া তাদের আর কোন রক্ষাকারী আশ্রয়দাতা নেই। তিনি অনেক সময় মানুষের দু’আর কারণে বৃষ্টি নাযিল করেন। কিন্তু অনেক সময় বৃষ্টি হয়ও না। নিঃসন্দেহে এতে আল্লাহ্‌র কোন হিকমত আছে এবং মানুষের কোন কল্যাণ আছে যা আমাদের জ্ঞানের বাইরে। কেননা আল্লাহ্‌ সর্বাধিক জ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। মানুষ নিজের উপর যতটুকু দয়াশীল আল্লাহ্‌ তাদের উপর তার চেয়ে অধিক দয়াশীল ও করুণাময়। অনেক সময় মানুষ দু’আ করে কিন্তু কবূল হয় না। কখনো দু’আ করে কাজ হয়, কখনো দু’আ করে কাজ হয় না। এ সম্পর্কে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

কোন ব্যক্তি নিজের দাফনের ব্যাপারে স্থান নির্ধারণ করে ওসীয়ত করলে তার বিধান কি?

(৩৩৯) কোন ব্যক্তি নিজের দাফনের ব্যাপারে স্থান নির্ধারণ করে ওসীয়ত করলে তার বিধান কি?


প্রথমতঃ তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে কেন সে এ স্থান নিজের জন্য চয়ন করল? যদি এরকম হয় যে, উক্ত স্থানে কোন ভন্ড মিথ্যুক ওলীর মাজার আছে। অথবা এমন মাজার আছে যেখানে অহরহ শির্কের চর্চা হয়। অথবা এরকম কোন কারণ আছে যা শরীয়ত বহির্ভূত। তবে এক্ষেত্রে তার ওসীয়ত বাস্তবায়ন করা যাবে না। বরং সে মুসলিম হলে তাকে মুসলমানদের গোরস্থানে দাফন করতে হবে।

মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কখন ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার তালক্বীন দিতে হবে?

(৩৪০) মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কখন ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার তালক্বীন দিতে হবে?


মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে মুমূর্ষু অবস্থায় তালক্বীন দিতে হবে। যে ব্যক্তির রূহ বের হওয়ার উপক্রম হয়েছে তার কাছে বসে তাকে পাঠ করতে বলবে, ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’। যেমনটি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাচা আবু তালেবের মৃত্যুর সময় করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “চাচা! আপনি ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলুন। এই কালেমা দ্বারা আমি আল্লাহ্‌র কাছে আপনার মুক্তির জন্য সুপারিশ করব।” কিন্তু চাচা আবু তালেব উহা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং শির্কের উপর মৃত্যু বরণ করেছে। (নাঊযুবিল্লাহ্‌)

দূর-দুরান্ত থেকে নিকটাত্মীয়দের উপস্থিত হওয়ার অপেক্ষায় মৃত ব্যক্তিকে দাফন করতে বিলম্ব করার বিধান কি?

দূর-দুরান্ত থেকে নিকটাত্মীয়দের উপস্থিত হওয়ার অপেক্ষায় মৃত ব্যক্তিকে দাফন করতে বিলম্ব করার বিধান কি?


মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশ হচ্ছে দ্রুত দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]أَسْرِعُوا بِالْجِنَازَةِ فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ تُقَدِّمُونَهَا وَإِنْ يَكُ سِوَى ذَلِكَ فَشَرٌّ تَضَعُونَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ[
“তোমরা জানাযা বহণ করার সময় দ্রুত গতিতে চল। কেননা সে যদি নেক হয় তবে তাকে কল্যাণের দিকে এগিয়ে দিলে। আর যদি অন্য কিছু হয়, তবে খারাপ লোককে তোমাদের কাঁধ থেকে নামিয়ে দিলে।”

জানাযার নামাযে উপস্থিত হওয়ার জন্য নিকটাত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবকে সংবাদ দেয়া কি নিষিদ্ধ ‘নাঈ’ তথা ঘটা করে মৃত্যু সংবাদ প্রচারের অন্তর্ভুক্ত হবে? নাকি তা বৈধ?

(৩৪২) জানাযার নামাযে উপস্থিত হওয়ার জন্য নিকটাত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবকে সংবাদ দেয়া কি নিষিদ্ধ ‘নাঈ’ তথা ঘটা করে মৃত্যু সংবাদ প্রচারের অন্তর্ভুক্ত হবে? নাকি তা বৈধ?


এধরণের সংবাদ প্রদান বৈধ। এজন্য নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাজাশীর মৃত্যু দিনে তার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন। তাছাড়া মসজিদে নববীর  ঝাড়-র কাজে নিয়োজিত মহিলাটি মৃত্যু বরণ করলে ছাহাবীগণ তাঁকে না জানিয়েই দাফন করে দেয়। তখন তিনি ছাহাবীদেরকে বলেন, “কেন তোমরা আমাকে জানালে না?”

মৃত ব্যক্তির গোসলের বিশুদ্ধ পদ্ধতি কি?

(৩৪৩) মৃত ব্যক্তির গোসলের বিশুদ্ধ পদ্ধতি কি?


মৃত ব্যক্তির গোসলের বিশুদ্ধ পদ্ধতি হচ্ছেঃ গোসল দেয়ার সুন্নাত হল, প্রথমে তার লজ্জাস্থান ঢেঁকে দেবে, তারপর তার সমস্ত কাপড় খুলে নিবে। অতঃপর তার মাথাটা বসার মত করে উপরের দিকে উঠাবে এবং আসে- করে পেটে চাপ দিবে, যাতে করে পেটের ময়লা বেরিয়ে যায়। এরপর বেশী করে পানি ঢেলে তা পরিস্কার করে নিবে। তারপর হাতে কাপড় জড়িয়ে বা হাত মুজা পরে তা দিয়ে উভয় লজ্জা স্থানকে (নযর না দিয়ে) ধৌত করবে। তারপর ‘বিসমিল্লাহ্‌’ বলবে এবং ছালাতের ন্যায় ওযু করাবে। তবে মুখে ও নাকে পানি প্রবেশ করাবে না। বরং

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ৮টি গুরুত্বপূর্ণ আমল সহীহ হাদিসের আলোকে পড়ুন ও আমল ক্রুন।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ৮টি গুরুত্বপূর্ণ আমল সহীহ হাদিসের আলোকে পড়ুন ও আমল ক্রুন।
১- দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে তাতে ফুঁ দিবে : তারপর দুই হাতের তালু দ্বারা দেহের যতোটা অংশ সম্ভব মাসেহ করবে। মাসেহ আরম্ভ করবে তার মাথা, মুখমণ্ডল ও দেহের সামনের দিক থেকে। (এভাবে ৩ বার করবে।) (বুখারি-৫০১৭)
*২- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসী পড়বে শয়তান সারা রাত তার নিকটে যাবে না।(বুখারি-২৩১১)
*৩- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াত (আ-মানার রাসূলু--) তেলাওয়াত করবে এটা তার জন্য যথেষ্ট হবে ”। (বুখারি- ৪০০৮

Saturday, March 24, 2018

শরীয়তের মানদণ্ডে রজব মাসের ফজিলত

শরীয়তের মানদণ্ডে রজব মাসের ফজিলত
সীমাহীন প্রজ্ঞার দাবি অনুযায়ী আল্লাহ তা আলা কিছু মাস ও দিবসকে অন্যান্য মাস ও দিবসের উপর মর্যাদাপূর্ণ করেছেন। উদ্দেশ্য সৎ কর্ম সম্পাদনে মানুষের প্রেরণা উৎসাহে নতুন মাত্রা সংযোগ করা। অধিক মাত্রায় আমলে সালেহ করে উৎকর্ষ সাধনের পথ সুগম করা। তবে মানব ও জিন জাতির দুষ্টচক্র আল্লাহর বান্দাদেরকে সরল পথ থেকে বিচ্যুত করতে সদা সক্রিয়। তাইতো অবস্থান নিয়েছে সম্ভাব্য সকল পথে যা কিছু উত্তম তা থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নিতে। আল্লাহর রহমত ও করুণা প্রাপ্তির মৌসুম অসার কর্ম, আয়েশ আস্বাদন, প্রবৃত্তিচর্চা ও অযাচিত সুখ উপভোগের উপযুক্ত সময় হিসেবে উপস্থাপন করে।
পরিচ্ছন্ন হৃদয় তবে ধর্ম বিষয়ে জাহিল, অথবা স্বার্থলুব্ধ ব্যক্তি , ধর্মীয় বা সামাজিক নেতৃত্ব ধরে রাখার লিপ্সা যাকে তাড়িয়ে বেড়ায় প্রতিনিয়ত এরূপ ব্যক্তিদের শয়তান উৎসাহ প্রদানের পাত্র বানায়। সৎকর্ম চর্চা ও সুন্নত অনুসরণে অধিক মাত্রায় সচেতন হতে হবে এমন মূহুর্তগুলো বিদআতপূর্ণ কর্মকাণ্ডে ভরে দিতে এদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুমাত্রায়।

রজব মাসে করণীয়-বর্জনীয় আমল ও বিদআত সমুহ

রজব মাসে করণীয়-বর্জনীয় আমল ও বিদআত সমুহ


রজব মাস সম্পর্কে জ্ঞাতব্য
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَرَبُّكَ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ وَيَخْتَارُ (القصص:68)
আপনার পালনকর্তা যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন এবং পছন্দ করেন। (সূরা কাসাস : ৬৮)
অর্থাৎ স্বীয় সৃষ্ট বস্তু হতে কিছু মনোনীত করেন, শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার ঘোষণা দেন। যেমন তিনি মনোনীত করেছেন কয়েকটি দিন, কয়েকটি মাস ; সম্মান, শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা প্রদান করেছেন, অন্য সব দিন ও মাসের উপর। এরশাদ হচ্ছে –
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ . (التوبة:36)
আসমান-জমিনের সৃষ্টি ও সূচনা লগ্ন হতেই আল্লাহর বিধান মতে মাসের নিশ্চিত সংখ্যা বারটি। তার মাঝে চারটি সম্মানিত। এ অমোঘ ও শাশ্বত বিধান ; সুতরাং এর মাঝে তোমরা (অত্যাচার-পাপাচারে লিপ্ত হয়ে) নিজেদের ক্ষতি সাধন করো না। (তওবা-৩৬)
হাদিস শরীফে মাস চারটির নাম উদ্ধৃত হয়েছে –

রজব মাস: এ সব বিদ’আত দূর হওয়া আবশ্যক

রজব মাস: এ সব বিদ’আত দূর হওয়া আবশ্যক


রজব মাস: এ সব বিদ’আত দূর হওয়া আবশ্যক


আলোচ্য সূচী:
১) ভূমিকা
২) রজব মাসকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন ইবাদত করার কথা কি হাদীসে বর্ণিত হয়েছ?
৩) রজব মাস সম্পর্কে কয়েকটি দুর্বল হাদীস।
৪) রজব মাস সম্পর্কে কয়েকটি জাল হাদীস।
৫) রজব মাসকে কেন্দ্র করে নামায, রোযা, ইতিকাফ ইত্যাদি ইবাদত করা।
৬) সালাতুর রাগায়েব এর বিদআত।
৭) শবে মেরাজ পালন করার বিদআত।
তাহলে আসুন, আমরা ধারাবাহিকভাবে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনায় প্রবৃত্ত হই।
——————————————————————-
১) ভূমিকা

রজব মাসের বিদআত : শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

রজব মাসের বিদআত : শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি



রজব মাস পালন, তার ফজিলত, তাতে রোজা রাখা-ইত্যাদি বিষয়ে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই, এই সময়ের একটি বহুল উচ্চারিত প্রশ্ন। বিষয়টি খুবই তাৎক্ষণিক, তাই আমি এ মাসের সাথে সম্পর্কিত কিছু আহকাম বিষয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করার প্রয়াস পাব, আল্লাহ আমাকে সাহায্য করুন।
রজব : হারাম মাসের একটি
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে এরশাদ করেন-6)
আসমান-জমিনের সৃষ্টি ও সূচনা লগ্ন হতেই আল্লাহর বিধান মতে মাসের নিশ্চিত সংখ্যা বারটি। তার মাঝে চারটি সম্মানিত। এ অমোঘ ও শাশ্বত বিধান ; সুতরাং

পহেলা এপ্রিল : মুসলিম উম্মাহর শোকের দিন

পহেলা এপ্রিল : মুসলিম উম্মাহর শোকের দিন

আর নয় এপ্রিল ফুল; সময় এসেছে সচেতন হওয়ার

ইউরোপে মুসলমানরা প্রবেশ করেছিলেন স্পেনের দরজা দিয়ে। ঐতিহাসিক রবার্ট ব্রিফল্ট দি ম্যাকিং অব হিউম্যানিটি গ্রন্থে মুসলমানদের এ প্রবেশকে অন্ধকার কক্ষের দরজা দিয়ে সূর্যের আলোর প্রবেশ বলে অভিহিত করেছেন। কেন এই তুলনা? রবার্ট ব্রিফল্টের জবাব হলো—‘যেহেতু স্পেনে মুসলমানদের আগমনের ফলে শুধু স্পেন নয়, বরং গোটা ইউরোপ মুক্তির পথ পেয়েছিল এজ অব ডার্কনেস তথা হাজার বছরের অন্ধকার থেকে। এজ অব ডার্কনেস সম্পর্কে রবার্ট ব্রিফল্টের মন্তব্য হলো—‘সেই সময় জীবন্ত অবস্থায় মানুষ অমানুষিকতার অধীন ছিল, মৃত্যুর পর অনন্ত নরকবাসের জন্য নির্ধারিত ছিল।’

পহেলা এপ্রিল

পহেলা এপ্রিল

নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লী আলা রাসূলিহীল কারীম। আম্মা বাদ,
এপ্রিল মাসে আমাদের দেশে দুটি দিবস পালন করা হয়ে থাকে। পহেলা এপ্রিল এবং পহেলা বৈশাখ বা ১৪ই এপ্রিল। পহেলা এপ্রিল বাংলায় ‘‘এপ্রিল ফুল’’ নামে পরিচিত। এখানে ফুল অর্থ ইংরেজী ফুল অর্থাৎ বোকা, হাবা বা নির্বোধ। ইংরেজিতে বলা হয়: April Fools’ Day or All Fools’ Day. এদিনে ‘‘প্র্যাকটিক্যাল জোক’’ বা বাস্তব বা ব্যবহারিক তামাশার নামে একে অপরকে মিথ্যা বলে ঠকানো হয়ে থাকে। এ উপলক্ষ্যে পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে নানা রকম উৎসবের ব্যবস্থা করা হয়।

এপ্রিল ফুলের রহস্য বুঝতে আমাদের মানব ইতিহাসের কয়েকটি তথ্য জানতে হবে।
আদম আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে মানব জাতির পথ চলা শুরু। তাঁর সন্তানেরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পরবর্তী প্রথম রাসূল ছিলেন নূহ আলাইহিস সালাম। নূহ আলাইহিস সালাম-এর প্লাবনের পর তাঁর সন্তানেরা ক্রমান্বয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তাঁর তিন ছেলের নাম ‘‘হাম’’, ‘‘সাম’’ ও ‘‘ইয়াফিস’’। হামের বংশধরগণ ক্রমান্বয়ে আফ্রিকায় চলে যান। সামের বংশধরগণ মূলত মধ্যপ্রাচ্যে বসবাস করেন এবং কেউ কেউ পার্শবতী দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়েন। ভারতের দ্রাবিড়গণও তাদেরই বংশধর বলে বুঝা যায়। ইয়াফেসের বংশধরগণ অনেকে ইরানে বসবাস করেন। আরেক দল ‘আর্য’’ নামে ভারতে আসেন এবং আরেক দল ইউরোপে চলে যান। এজন্য ইউরোপ, ভারতের আর্য ও প্রাচীন ইরানের ভাষা, কৃষ্টি ও ধর্মের মধ্যে অনেক অনেক মিল পাওয়া যায়। তার একটি দিক হলো পহেলা এপ্রিল।

Friday, March 23, 2018

বান্দার হক নষ্ট করার পর সঠিকভাবে মনে না থাকলে করণীয় , কুরআন-হাদিস নিয়ে তামাশা করার বিধান কি, মেয়েদের চুল কাটা ও ছাটার বিধান কি?

 বান্দার হক নষ্ট করার পর সঠিকভাবে মনে না থাকলে-
প্রশ্ন : এক লোক আগে অনেক মানুষের কাছে টাকা ধার করত কিন্তু ঠিক মত পরিশোধ করত না। অনেক বছর পর তার ঈমানী চোখ খুলল, সে তওবা করল এবং এটাও বুঝতে শিখল যে, আল্লাহ বান্দার হক ক্ষমা করেন না। তাই এখন সে টাকা পরিশোধ করতে রাজি। ।কিন্তু তার সঠিক মনে নেই যে, কে কত পাবে? এমন অবস্থায় তার কী করা উচিত?
উত্তর:
বান্দার হক নষ্ট করা হলে তওবার জন্য শর্ত হল, তা তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দিতে হবে, তাকে না পেলে তার ওয়ারিশ (উত্তরাধীকারী)দেরকে ফেরত দিতে হবে। তাদের কাউকে না পেলে তা আল্লাহর পথে বা জনকল্যাণ মূলক কাজে ব্যয় করে আল্লাহর নিকট দুআ করতে হবে যেন, তিনি এর যাবতীয় সওয়াব এর মালিককে প্রদান করেন।
যদি পরিমাণ স্বরণ করতে না পারে যে, তাহলে আনুমানিক ধারণা করবে যে, এই পরিমাণ হতে পারে। তারপর তা নিজের সম্পদ থেকে আলাদা করে দান করে দিবে। এমনভাবে করবে যেন মনে হয় যে, সে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পেরেছে। আল্লাহু আলাম।
~~~~~

Thursday, March 22, 2018

#ছবি_ও_মূর্তি_ঘরে_রাখার_বিধান_কি?

#ছবি_ও_মূর্তি_ঘরে_রাখার_বিধান_কি?
▂▂▂▂▂▂▂▂﷽▂▂▂▂▂▂▂▂
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অসীম সত্তার অধিকারী। আর মানুষ হ’ল তাঁর সর্বাধিক প্রিয় সৃষ্টি। তিনি মানুষকে শয়তান হ’তে সাবধান থাকার পুনঃ পুনঃ নির্দেশ প্রদান করেছেন। কুরআন আল্লাহর গ্রন্থ। এ গ্রন্থে আল্লাহ ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক-সাবধান করেছেন।
পবিত্র কুরআনের বাণী সমূহের প্রতি আস্থাশীল ও অকৃত্রিম বিশ্বাসী থাকারআহ্বান জানান হয়েছে। এতদসত্ত্বেও কেউ কল্পনাপ্রসূতভাবে নিত্যনতুন কর্মকান্ডে প্রবৃত্ত হ’লে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। এখানে এই ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্কবাণীর অবতারণা করা হ’ল। মহান আল্লাহ রাসূল ﴾ﷺ﴿-কে সতর্ককারীরূপে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। তাঁর মাধ্যমেই মানুষকে হুঁশিয়ার করেছেন। আল্লাহ বলেন,
‘আপনি তো কেবল একজন সতর্ককারী। আমি আপনাকে সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি।’
📖 (ফাতির ২৩-২৪)।

Monday, March 19, 2018

প্রশ্ন:-' প্রথমে কন্যা সন্তান হওয়া বরকতের কারণ' ;কথাটি কি সঠিক??

প্রশ্ন:-' প্রথমে কন্যা সন্তান হওয়া বরকতের কারণ' ;কথাটি কি সঠিক??
==================================
উত্তর : কন্যা সন্তান অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ কিন্তু প্রথমে কন্যা সন্তান হওয়া বরকতের কারণ কথাটি ঠিক নয়।
প্রথমে কন্যা সন্তান হওয়া বরকতের কারণ - এ মর্মে কিছু হাদীস পাওয়া যায় কিন্তু সেগুলো একটিও বিশুদ্ধ নয়। বিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ সেগুলোর কোন কোনটিকে যঈফ আর কোন কোনটিকে মউজু বা বানোয়াট হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।
ইমাম সাখাবী তার মাকাসেদে হাসানাহ গ্রন্থে, সুয়ুতী কাশফুল খাফা গ্রন্থে এবং আলবানী সিলসিলা যঈফা গ্রন্থে এ সব জাল-যঈফ হাদীসগুলো সম্পর্কে ব্স্তিারিত আলোচনা করেছেন। সুতরাং আমাদের কতর্ব্য, হাদীস জাচায়-বাছায় করা ছাড়া সেগুলো প্রচার না করা। সাবধান!
কন্যা সন্তানের ফযীলত সম্পর্কে পড়ুন নিচের লেখাটি:

সরাসরি কিংবা টেলিভিশনে খেলা দেখা : ইসলামী দৃষ্টিকোণ

সরাসরি কিংবা টেলিভিশনে খেলা দেখা : ইসলামী দৃষ্টিকোণ
----------------------------------------------------
খেলাধুলা ইসলামে বৈধ বিষয়সমূহের একটি । রাসূলুল্লাহ (স:) নিজেও তার স্ত্রী আয়িশা (রা:)এর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ্রহণ করেছেন।রাসূল( স:) প্রিয় স্ত্রী আয়িশা (রা:) কে নিজের পেছনে দাঁড় করিয়ে ঈদের দিনে কৃষ্ণকায় সৈনিকদের রণকৌশল প্রদর্শনী দেখিয়েছিলেন । রাসূলের কাঁধে মাথা রেখে মা আয়িশা (রাঃ) সৈনিকদের প্রদর্শনী উপভোগ করেছেন ।
ইসলাম প্রতিটি কাজ নির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্যকে পূজি করে আঞ্জাম দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছে। সেই উদ্দ্যেশ্যের ভিত্তিতেই কর্মের ফলাফল নির্ধারণ হবে। প্রিয় সাহাবী মুয়ায ইবনু জাবাল বলতেন,

বিবাহের মোহর নির্ধারণের শরী‘আতের নির্দেশনা কি? সমাজে ‘মোহরে ফাতেমী’ নামে একটি পরিভাষা চালু আছে। এটা কি সুন্নাত?

প্রশ্ন (১৮/৪৫৮) : বিবাহের মোহর নির্ধারণের শরী‘আতের নির্দেশনা কি? সমাজে ‘মোহরে ফাতেমী’ নামে একটি পরিভাষা চালু আছে। এটা কি সুন্নাত?
-সুলতান আহমাদ, মুরাদপুর, চট্টগ্রাম।
উত্তর : বিবাহ মানবজাতির জন্য আল্লাহ প্রদত্ত অন্যতম প্রধান নে‘মত। আল্লাহ বলেন, তাঁর নে‘মতসমূহের অন্যতম হ’ল তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি লাভ করতে পার’ (রূম ২১)। সেকারণ বিবাহ সহজে সম্পন্ন হওয়া যরূরী। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সর্বোত্তম বিবাহ হ’ল যা সহজভাবে সম্পন্ন হয় (ইবনু হিববান, ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩০০)। আর বিবাহের প্রধান শর্ত হ‘ল মোহর আদায় করা (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। এর পরিমাণ শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত নয়। তবে পরিমাণে তা যত কম হয়, ততই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, শ্রেষ্ঠ মোহর যা সহজে পরিশোধযোগ্য (বায়হাক্বী, ছহীহুল জামে‘ হা/৩২৭৯)। ওমর (রাঃ) বলেন, ‘মেয়েদের মোহর সীমাহীন করো না। কেননা সীমাহীন মোহর নির্ধারণ যদি দুনিয়ায় সম্মান অথবা আখেরাতে তাক্বওয়া অর্জনের কারণ হ’ত, তবে এরূপ মোহর প্রদানে আল্লাহর নবী আগ্রহী হ’তেন। কিন্তু তিনি তার কোন স্ত্রী বা কন্যার মোহর বারো উক্বিয়া বা ৪৮০ দিরহামের অধিক নির্ধারণ করেননি’ (আহমাদ, তিরমিযী, নাসাঈ প্রভৃতি মিশকাত ‘মোহর’ অধ্যায় হা/৩২০৪)। রাসূল (ছাঃ) কুরআন শিক্ষা প্রদান, লোহার আংটি (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২০২), এমনকি ইসলাম গ্রহণের শর্তেও বিবাহ প্রদান করেছেন (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২০৯)।
তবে

Friday, March 16, 2018

বাংলাদেশে সহি আকিদার মাদরাসা ৭২টি দেখুন

বাংলাদেশে সহি আকিদার মাদরাসা ৭২টি দেখুন 
🌷 🌷 🌷 🌷 🌷 🌷 🌷 🌷 🌷 🌷 🌷

সাতক্ষীরা :: ১::দারুল হাদিস আহমাদিয়া সালাফিয়্যাহ দাখিল মাদ্রাসা, বাঁকাল (পুরুষ)
২::দারুল হাদিস আহমাদিয়া সালাফিয়্যাহ মাদ্রাসা, বাঁকাল ( মহিলা)

☞ময়মনসিংহ জেলাঃ 
১. মাদ্রাসাতুত তাওহীদ আস-সালাফিয়্যাহ্ ময়মনসিংহ।যোগাযোগ ০১৭৩৪৬৭০৬৬১

☞সিলেট জেলাঃ
১. কিউসেট ইন্সটিটিউট, মিরের ময়দান, সিলেট।

Thursday, March 15, 2018

বেনামাজি কাফের না মুসলিম ? একটু ভিন্ন চিন্তা...

বেনামাজি কাফের না মুসলিম ? একটু ভিন্ন চিন্তা...
..........................................................
একজন ছাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে | কোন সময় স্কুলের বারান্দায় তাকে দেখা যায়নি | পড়াশুনা তো দূরে থাক বই পুস্তকও সে কিনেনি | টিচারদের কেউই এই ছাত্রকে চিনেইনা যে সে তাদেরই ছাত্র | বৎসর শেষে এই ছাত্র এসেছে পরীক্ষায় অংশগ্ৰহণ করতে | শিক্ষকগণ দুই দলে বিভক্ত হয়ে গেলেন তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে | কেউ বললেন, যেহেতু সে রেজিস্টার্ড ছাত্র তাই পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হোক | অপর পক্ষ বললেন , তাকে আমরা কোনদিন প্রতিষ্টানে দেখিনি, চিনিওনা | আমাদের অন্যান্য নিয়মিত ছত্রদের মতই তাকে পরীক্ষার সুযোগ দেয়া উচিত হবে না |
তবে স্বাভাবিকতায় তারা দুই পক্ষই এই ব্যাপারে একমত যে, পরীক্ষায় অংশগ্ৰহণ করলেও সেই ছাত্র পাশ করতে পারবে না | অকৃতকার্য হবে |
অনুরুপভাবে,
একজন মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তি যিনি কোনদিন মসজিদে সলাত আদায়ের জন্য যাননি | ইচ্ছাকৃতভাবে সলাতবিহীন জীবন বেঁচে নিয়েছেন | তার ব্যাপারেও বিজ্ঞ ওলামাগণ দুই রকমের মত পেশ করেছেন | কেউ বলেছেন, সে আর ইসলামের গন্ডিতে নাই বরং কাফের হয়ে গেছে | তাকে তাওবা করে ফিরে আসতে হবে | অন্যপক্ষের ওলামাগণ বলেছেন , না সে কাফের হয়ে যায়নি এখনো মুসলিম |
তবে দুই পক্ষের ওলামাগণ এই ব্যাপারে একমত যে , স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ব্যক্তি আখিরাতে হিসেবের সময়ে অকৃতকার্য হবে | জান্নাতীদের সাথে তার হাশর হবে না | তার হাশর হবে ফিরাউন, নমরুদ আর উবাই ইবনু খালাফের মত কাফেরদের সাথে |
এখন বলুনতো , সেই ছাত্রের ছাত্রত্বের পরিচয় ধারণে কী সম্মান আছে যেখানে সে শতভাগ অকৃতকার্য ? আর সেই মুসলিমের মুসলমানিত্বে কী সম্মান থাকতে পারে যে হবে জাহান্নামী ?
Salahuddin Ahmad
Makkah, KSA

প্রশ্ন: বিবাহ পূর্ববর্তী কোন রিলেশনের কথা স্বামী /স্ত্রী কে জানানোর ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?

প্রশ্ন: বিবাহ পূর্ববর্তী কোন রিলেশনের কথা স্বামী /স্ত্রী কে জানানোর ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?
উত্তর: বিজ্ঞ আলেমগণ বলেছেন: স্বামী বা স্ত্রীর জন্য তার সঙ্গীর অতীত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করা নাজায়েয। অনুরূপভাবে অতীত জীবনের যে পাপাচার থেকে তওবা করে নিয়েছে সেটা স্বামী/স্ত্রীর নিকট প্রকাশ করাও বৈধ নয়।
কারণ এতে দাম্পত্য জীবনে ফাটল সৃষ্টি হতে পারে। অথচ সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষয় ক্ষতি ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে অপরিসীম তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বরং উভয়ের দেখা উচিৎ তার সঙ্গীর বর্তমান অবস্থা। যদি বর্তমান অবস্থা সন্তোষজনক হয় তাহলে পারস্পারিক ভালবাসা ও সদাচরণের সাথে ঘর-সংসার করবে; অন্যথায় তালাকের মাধ্যমে পৃথক হয়ে যাবে।

Tuesday, March 13, 2018

প্রশ্ন: সূরা মুলকের ফযীলত কি? এটি পাঠ করলে কবরের আযাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এ মর্মে বর্ণিত হাদীসটি কি সহীহ?


প্রশ্ন: সূরা মুলকের ফযীলত কি? এটি পাঠ করলে কবরের আযাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এ মর্মে বর্ণিত হাদীসটি কি সহীহ?
💫💫💫💫💫💫

উত্তর: এটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সূরা। তাই আসুন, এ ব্যাপারে হাদীসে কী বলা হয়েছে তা জেনে নেই -
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

إِنَّ سُورَةً مِنْ الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً شَفَعَتْ لِرَجُلٍ حَتَّى غُفِرَ لَهُ وَهِيَ سُورَةُ تَبَارَكَ 
الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ -وحسنه الألباني في صحيح الترمذي 

‘কুরআনের তিরিশ আয়াত বিশিষ্ট এমন একটি সূরা আছে , যা তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং শেষাবধি তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। সেটা হচ্ছে ‘তাবা-রাকাল্লাযী বিয়্যাদিহিল মূলক’ (অর্থাৎ সূরা মূলক)।” 
(তিরমিযী, শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী রাহ. উক্ত হাদীসটিকে তার সহীহ তিরমিযীতে ’হাসান’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহ. মাজমু ফতোয়াতে এটিকে সহীহ বলেছেন।)

Monday, March 12, 2018

সুরা ফাতিহার (১-৪) নং আয়াতের সংক্ষিপ্ত তাফসীরঃ

সুরা ফাতিহার (১-৪) নং আয়াতের সংক্ষিপ্ত তাফসীরঃ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
(১) অনন্ত করুণাময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে (আরম্ভ করছি)।
‘বিসমিল্লাহ’র পূর্বে ‘আক্বরাউ’ ‘আবদাউ’ অথবা ‘আতলু’ ফে’ল (ক্রিয়া) উহ্য আছে। অর্থাৎ, আল্লাহর নাম নিয়ে পড়ছি অথবা শুরু করছি কিংবা তেলাঅত আরম্ভ করছি। প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আরম্ভ করার পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ার প্রতি তাকীদ করা হয়েছে। সুতরাং নির্দেশ করা হয়েছে যে, খাওয়া, যবেহ করা, ওযু করা এবং সহবাস করার পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়। অবশ্য ক্বুরআনে করীম তেলাঅত করার সময় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়ার পূর্বে ‘আউযু বিল্লাহি মিনাশ্শায়ত্বানির রাজীম’ পড়াও অত্যাবশ্যক। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘‘অতএব যখন তুমি ক্বুরআন পাঠ করবে, তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর।’’ (সূরা নাহল ৯৮ আয়াত)।

Sunday, March 11, 2018

রাসুল (সাঃ) ঘুমানোর পূর্বে যে আমলগুলো করতেন-

রাসুল (সাঃ) ঘুমানোর পূর্বে যে আমলগুলো করতেন-
====================================
১- ঘুমানোর পূর্বে ওযু করে নেওয়া- আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি ওযু অবস্থায় রাত্রি যাপন করে তার অন্তর্বাসে এক ফিরিশ্তাও রাত্রিযাপন করেন। সুতরাং যখনই সে জাগ্রত হয় তখনই ঐ ফিরিশ্তা বলেন, ‘হে আল্লাহ! তোমার বান্দা অমুককে ক্ষমা করে দাও, কারণ সে ওযু অবস্থায় রাত্রি যাপন করেছে।’’(ইবনে হিববান, সহীহ তারগীব ৫৯৪)
তিনি আরো বলেন, যে কোনও মুসলিম যখনই ওযু অবস্থায় রাত্রিযাপন করে, অতঃপর রাত্রিতে (সবাক্) জেগে উঠে ইহকাল ও পরকাল বিষয়ক কোন মঙ্গল প্রার্থনা করে, তখনই আল্লাহ তাকে তা প্রদান করে থাকেন।’’(আবু দাঊদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, সহীহ তারগীব ৫৯৫)
২- শয়ন অবস্থায় দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে তাতে ফুঁ দিবে : তারপর দুই হাতের তালু দ্বারা দেহের যতোটা অংশ সম্ভব মাসেহ করবে। মাসেহ আরম্ভ করবে তার মাথা, মুখমণ্ডল ও দেহের সামনের দিক থেকে। (এভাবে ৩ বার করবে অর্থাৎ সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস পড়ে মাসাহ করবে তাহলে ১ বার হল তারপর আবার সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস পড়ে মাসাহ করবে তাহলে ২ বার হল এরপর আরও ১ বার করবে সর্বমোট ৩বার) (বুখারি-৫০১৭)
৩- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন :

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ