Tuesday, November 21, 2017

পুরুষের সুগন্ধি ও আতর ব্যবহারের বিধান

সুগন্ধি ও আতর


মানুষ সভ্য জাতি। সৌন্দর্যের সাথে সৌরভ মানুষের মনে আনন্দ আনে। যেমন নিজে আনন্দ পাওয়া যায়, তেমনি অপরকেও আনন্দ দেওয়া যায়, আকৃষ্ট করা যায়। এ জন্যই ইসলামী শরীয়তে নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার বৈধ। আল্লাহর রসূল (সাঃ) আতর ব্যবহার করতেন এবং তিনি তা খুব পছন্দ করতেন।
তিনি বলেন, ‘‘তোমাদের দুনিয়ার মধ্যে আমার কাছে স্ত্রী ও খোশবুকে প্রিয় করা হয়েছে। আর নামাযকে করা হয়েছে আমার চক্ষুশীতলতা।’’[1]
অবশ্য এই ব্যবহারের রয়েছে কিছু বিধান।
স্ত্রীর মন আকর্ষণ করার জন্য আতর ব্যবহার বিধেয়। যেহেতু

দাঁত

দাঁত


মানুষের জন্য দাঁতও একটি অমূল্য সম্পদ। সুতরাং দাঁত থাকতে দাঁতের কদর করা উচিত প্রত্যেকের। ইসলামে সেই কদরের রয়েছে বিভিন্ন আদব; যা নিম্নরূপঃ
খাবার পর দাঁতে লেগে থাকা অবশিষ্ট খাদ্যাংশ খিলাল করে ছাড়িয়ে ফেলা কর্তব্য। যেহেতু তা না করলে দাঁতের রোগ হতে পারে এবং তা পচে গিয়ে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।
এই জন্য খিলালকারীদের প্রশংসা করে রসূল (সাঃ) বলেন,

পুরুষের মোচ বা গোঁফ ছাটার বিধান

মোচ বা গোঁফ


পুরুষের অধরে (নিচের ঠোঁটে) থাকবে দাড়ি এবং ওষ্ঠে (উপরের ঠোঁটে) থাকবে মোচ। আর এই মোচ হবে ছেঁটে ছোট করা।
আল্লাহর  রসূল (সাঃ) বলেন, ‘‘তোমরা দাড়ি ছেড়ে দাও, মোচ ছেঁটে ফেলো।’’[1]
তিনি আরো বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি তার মোচ ছাঁটে না, সে আমার দলভুক্ত নয়।’’[2]
তিনি সাহাবী মুগীরাহ বিন শো’বাকে (ঠোঁটের নিচে) দাঁতন রেখে মোচ ছাঁটার নির্দেশ দিয়েছেন অথবা তিনি নিজে মুগীরার মোচ ঐভাবে ছেঁটে দিয়েছেন।[3]
তিনি বলেন,

নাকের পরিচ্ছন্নতার খেয়াল রাখা

নাক


নাকের পরিচ্ছন্নতার খেয়াল রাখা মুসলিমের একটি কর্তব্য। বিশেষ করে ঘুম থেকে উঠে তিনবার নাক ঝেড়ে পরিষ্কার করা কর্তব্য। কারণ শয়তান মানুষের নাকের গভীর রন্ধ্রে রাত্রিবাস করে থাকে।[1]
নাকের লোম বড় হলে তা তুলে বা কেটে ফেলা বৈধ। আর এ কথা উল্লেখিত হয়েছে যে,

পুরুষের দাড়ি ছাঁটার বিধান কি?

দাড়ি ছাঁটা


দাড়ির সীমা; দুই গণ্ড ও তার পার্শ্বদ্বয় এবং চিবুকের লোমকে দাড়ি বলা হয়; যেমন আভিধানিকদের কথা এটাই প্রমাণ করে। আর রসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘‘তোমরা দাড়ি বৃদ্ধি কর।’’ কিন্তু দাড়িকে কোন শরয়ী সীমায় সীমাবদ্ধ করেননি। আর যখন দলীল বা উক্তি আসে অথচ তার কোন শরয়ী সীমা থাকে না তখন তাকে আভিধানিক সীমায় আরোপ করা হয়। তাছাড়া তিনি নিজে দাড়ি ছেঁটেছেন বা কাউকে ছাঁটতে আদেশ করেছেন বলে কোন সহীহ হাদীস নেই। আর এই জন্যই দাড়িকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দেওয়াই উত্তম।
অবশ্য

পুরুষের গাল, গালের লেবাস দাড়ি

গাল, গালের লেবাস দাড়ি


দাড়ি রাখা পুরুষের জন্য একটি প্রকৃতিগত ব্যাপার। আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, ‘‘প্রকৃতিগত সুন্নাত হল ১০টি; মোচ ছাঁটা, দাড়ি বাড়ানো, দাঁতন করা, নাকে পানি নেওয়া (নাক পরিষ্কার করা), নখ কাটা, আঙ্গুল ধোয়া, বোগলের লোম তুলে পরিষ্কার করা, নাভির নীচের লোম চেঁছে সাফ করা, পেশাব-পায়খানার পর পানি ব্যবহার করা এবং কুলি করা।’’[1]
দাড়ি চাঁছা, ছিঁড়া বা ছোট করে ছাঁটা হারাম ও কাবীরা গোনাহ। যেহেতুঃ

পুরুষের সুর্মা ব্যবহার

সুর্মা ব্যবহার


সুর্মা হল সুরমাদের প্রসাধন এবং নারী-পুরুষ সকলের জন্য কিছু চক্ষু-পীড়ার ওষুধ। বিশেষ করে ‘ইষমিদ’ নামক সুর্মা ব্যবহার করলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পাতার লোম গজায়।[1]
উল্লেখ্য যে, পুরুষের চোখে ব্যবহৃত কোন প্রসাধন নেই। সুর্মা কিন্তু কোন প্রসাধন নয়। বরং তা ওষুধ বলে ব্যবহার করা সুন্নাত।
সুর্মা দিনে লাগানো যায়। আল্লাহর রসূল (সাঃ)

পুরুষের চোখের দৃষ্টি কেমন হবে ?

চোখ


মুসলিম নিজ চক্ষু দ্বারা কেবল ভালো জিনিস দেখবে। যে দেখাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অথবা অনুমতি আছে কেবল তাই দর্শন করবে।
মুসলিমের চোখের চাহনি হবে অবনত। চোরা চাহনি বা বাঁকা দৃষ্টিতে কোন অবৈধ জিনিস মুসলিম দেখতে পারে না। কারণ এটি এক প্রকার খেয়ানত। আর এ খেয়ানতের খবর আল্লাহ রাখেন। চোখের বাঁকা ছুরি চালিয়ে কাউকে যবাই করতে পারে না। পারে না নজর-বাণ মেরে কাউকে ঘায়েল করতে। কেননা চোখও ব্যভিচার করে। আর চোখের ব্যভিচার হল কাম নজরে অবৈধ নারীর দিকে দৃষ্টিপাত করা। এই জন্য চোখ ঠারা, চোখ মারা বা চোখ দ্বারা কোন অবৈধ প্রণয়ের ইশারা করা কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয়।

পুরুষের কান, কপাল ও ভ্রূ কেমন হবে ?

কান


পুরুষের জন্য কান ফুঁড়ানো বৈধ নয়। বৈধ নয় কানের অলঙ্কার ব্যবহার। যেহেতু তাতে মহিলাদের অনুকরণ হয়।

কপাল


ছেলের কপালে টিপ বা ফোঁটা ব্যবহার বৈধ নয়। বৈধ নয় নযর লাগার ভয়ে পাশ কপালে ফোঁটা দেওয়া। বরং এটা হল শির্ক।

ভ্রূ


ভ্রূ চাঁছা বৈধ নয়। ভ্রূ চাঁছা নারী-পুরুষ অভিশপ্ত।

পুরুষের মাথার পোশাক হল পাগড়ী ও টুপী

মাথার লেবাস


পুরুষের মাথার পোশাক হল পাগড়ী ও টুপী। পরিপূর্ণ পরিচ্ছদ গ্রহণ করার সময় মাথায় পাগড়ী রাখা সুন্নাত। যেমন টুপী রেখেও মাথার সৌন্দর্য গ্রহণ করা কর্তব্য। ইসলামী ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করার জন্য আমাদের উচিত হল, অমুসলিম সমাজেও সে লেবাস পরে নিজস্ব স্বকীয়তা ও বৈশিষ্ট্য বজায় রাখা।
বিশেষ করে নামাযে পাগড়ী অথবা টুপী পরিধান করে সৌন্দর্যের সাথে মহান আল্লাহর দরবারে দণ্ডায়মান হওয়া। অবশ্য পাগড়ী অথবা টুপী না থাকলে মাথায় গা মোছা গামছা, ‘রু’ (চেহারা) মোছা রুমাল অথবা তালপাতা কিংবা প্লাস্টিকের তৈরী টুপী মাথায় দিলে সৌন্দর্য আসে না। বরং তা অনেক সময় খারাপ লাগে। আর সে সময় তা ব্যবহার না করে খালি মাথায় নামায পরা বৈধ হবে। তবে

পুরুষের চুল ও দাড়িতে কলপ ব্যবহারের বিধান

কলপ


চুল-দাড়ি সাদা হয়ে গেলে, তা সাদাই ছেড়ে রাখা ঠিক নয়। বরং তা রঙিয়ে ফেলতে হয়। খোদ আল্লাহর রসূল (সাঃ) কলপ ব্যবহার করেছেন এবং উম্মতকে তা ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধও করেছেন। অতএব তা করা সুন্নাত। আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, ‘‘ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা পাকা চুল-দাড়ি রঙায় না, তোমরা (তা রঙিয়ে) তাদের বিরোধিতা কর।’’[1]
কিন্তু কলপের রঙ কালো হওয়া চলবে না। কালো ছাড়া যে কোন রঙ দিয়ে কলপ করা যায়। অবশ্য কালচে লাল বা বাদামী রঙ সবচেয়ে উত্তম।
আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন,

পুরুষের চুলপাকলে করনীয় কি ?

চুলপাকা


বয়স হলে চুল পাকা একটি প্রকৃতিগত ব্যাপার। কথিত আছে যে, এ জগতে সর্বপ্রথম চুল সাদা হয় হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর।
আল্লাহর ইচ্ছায় মানুষের চুল পাকে এবং তাতে মানুষের কাছে তার সম্মান বাড়ে। লোকেরা তাকে দেখে বড় ও মুরুব্বী বলে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে থাকে। আর ইসলামেও চুল পাকার বড় মাহাত্ম্য রয়েছে।
আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন,

পুরুষের মাথানেড়া

মাথানেড়া


মাথা নেড়া করার বিভিন্ন অবস্থা ও মান রয়েছে। সুতরাং হজ্জ ও উমরাহতে চুল ছোট না করলে নেড়া করা ওয়াজেব। হজ্জ বা উমরাহ ছাড়া অন্য সময় করতে হয় বা করলে সওয়াব হয় মনে করে মাথা নেড়া করা হারাম বা বিদআত। অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে ঘন চুল নেড়া করা মুস্তাহাব। যেমন শিশুর বয়স সাত দিন হলে তার চুল নেড়া করে ফেলা মুস্তাহাব। আর মাথায় উকুন দূর করার জন্য অথবা ঘা চিকিৎসার জন্য অথবা মাথা হাল্কা করার জন্য চুল নেড়া করা বৈধ।
মাথা নেড়া করার সময় মাথার কিছু অংশ নেড়া করা এবং

পুরুষের মাথা ও চুল রাখার বিধান কেমন হবে?

মাথা ও চুল


মুসলিমের মাথা কখনো থাকে লম্বা চুলে ঢাকা; আবার কখনো থাকে নেড়া। বিশেষ করে উমরা বা হজ্জ করার পর মাথা নেড়া করতে হয়। অতঃপর সেই চুল ধীরে ধীরে বড় হয়, মাঝারি হয় এবং লম্বা হয়। সেই হিসাবে আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর মাথার চুলও প্রকৃতিগতভাবে সব ধরনের ছিল। কখনো ছিল কানের অর্ধেক বরাবর লম্বা।[1] কখনো ছিল তার থেকে বেশী লম্বা; কানের লতি বরাবর। আর আরবীতে একে ‘অফরাহ’ বলা হয়।
কখনো ছিল তার থেকেও বেশী লম্বা; কানের নিচ বরাবর; কান ও কাঁধের মাঝ বরাবর। একে আরবীতে ‘লিম্মাহ’ বলা হয়।[2]
আবার কখনো ছিল তার থেকেও বেশী লম্বা কাঁধ বরাবর। আরবীতে যাকে

পুরুষের সাজ-সজ্জা বিষয়ে

পুরুষের সাজ-সজ্জা বিষয়ে


মানুষের দেহ, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর দেওয়া এক একটি নেয়ামত। অঙ্গ-বিকৃতি বৈধ নয়, কারণ তাতে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন হয়। আর আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটানোতে আল্লাহর অনুমতি নেই। অবশ্য মানুষ হিসাবে তা ৫ প্রকার হতে পারে। বৈধ, মুস্তাহাব, ওয়াজেব, হারাম ও মকরূহ। যেমন

দেহাঙ্গের সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা-

দেহাঙ্গের সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা-


মুসলিম মানে একজন সুসভ্য মানুষ। লেবাসে-পোশাকে, দেহের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরিক সৌন্দর্যে সে হবে সুদর্শন। তার নিকট থেকে সুগন্ধ পাওয়া যাবে। তা না পাওয়া গেলেও অন্ততপক্ষে কোন প্রকার দুর্গন্ধ পাওয়া যাবে না তার নিকট থেকে।
কিন্তু মুসলিমের আকৃতি ও প্রকৃতি হবে কার মত? তার আকারে-প্রকারে নমুনা কে? নিঃসন্দেহে এ পৃথিবীর সব চাইতে বড় সভ্য মানুষ তিনিই, যিনি তাঁর সব-আচরণে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে সবার চেয়ে প্রিয় ছিলেন। আর তিনিই হবেন প্রত্যেক মুসলিমের সকল বিষয়ের নমুনা ও আদর্শ। মহান আল্লাহ বলেন,

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ