Tuesday, December 5, 2017

স্বভাবজাত সুন্নাতসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য কী? এবং সেগুলো কি কি?

স্বভাবজাত সুন্নাতসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য কী? এবং সেগুলো কি কি?


স্বভাবজাত সুন্নাত হলো এমন রীতি যা সম্পাদন করলে এর সম্পাদনকারী এমন ফিতরাতের সাথে বিশেষিত হবেন যে ফিতরাতের উপর আল্লাহ্‌ তার বান্দাদের সৃষ্টি করেছেন এবং এর উপর ভিত্তি করে তার হাশর-নাশর হবে। আল্লাহ্‌ তাদেরকে এর জন্য ভালবাসবেন। যেন তারা এর মাধ্যমে পূর্ণগুণের অধিকারী হতে পারে এবং আকৃতিগতভাবে মর্যাদা পায়। এ ব্যাপারে ইসলামী শরীয়াত একমত যে, এটা একটি প্রাচীন সুন্নাত যা সকল নাবী পছন্দ করেছেন। এটি স্বভাবজাত বিষয়, যা সকল নাবী পছন্দ করেছেন।[1]
স্বভাবজাত রীতি অনুসরণের মাধ্যমে দ্বীনই ও দুনিয়াবী অনেক কল্যাণ রয়েছে। যেমন: এর ফলে সমুদয় দৈহিক গঠন সুন্দর থাকে এবং শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নণ থাকে।[2]
অতঃপর কতিপয় স্বভাবজাত সুন্নাত নিম্নে আলোচিত হলো:

খাতনা করা

খাতনা করা


 الختانবা খাতনার পরিচয় ও তার হকুম:
الختان শব্দটি মাসদার। এর মূলবর্ণ ختن -আভিধানিক অর্থ কর্তন করা।
পরিভাষায়: পুরুষাংগের অগ্রভাগ আবৃতকারী চামড়া ও নারীর যৌনাংগের পর্দা (ভৌগলিক কারণে পর্দা বা হাইমেন মেমব্রেন অনেক মোটা হয়) কেটে দেয়াকে খাতনা বলে।[1]
খাতনা করার হকুম: বিদ্বানগণ এ ব্যাপারে তিনটি মতামত পেশ করেছেন।
(১) নারী পুরুষ সকলের খাতনা করা ওয়াজিব।
(২) উভয়ের জন্য খাতনা করা মুস্তাহাব।
(৩) পুরুষের জন্য ওয়াজিব ও নারীর জন্য মুস্তাহাব।
ইবনে কুদামা মুগনি গ্রন্থে (১/৮৫) বলেন:

মিসওয়াক করা, মিসওয়াকের পরিচয় এবং শরীয়াতে এর বিধান:

মিসওয়াক করা


السواك )মিসওয়াক করা(
السواك বা মিসওয়াকের পরিচয় এবং শরীয়াতে এর বিধান:
السواك শব্দটি ساك শব্দ থেকে গৃহীত। এর আভিধানিক অর্থ:دلك  বা ঘষা, মাজা, মর্দন করা ইত্যাদি।
পরিভাষায়ঃ দাঁত থেকে হলুদ বর্ণ বা এ জাতীয় ময়লা দূর করার জন্য কাঠ বা গাছের ডাল ব্যবহার করাকে মিসওয়াক বলে।[1]
সবসময় মেসওয়াক করা মুস্তাহাব। যেমন আয়িশা বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে:
عَن عَائِشَةَ، النَّبِيِّقَالَ: السِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল­াহ () থেকে বর্ননা করেন : তিনি বলেছেন যে, মিসওয়াক মুখের পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ ও আল্লাহ্‌র সমেত্মাষ লাভের উপায়।[2]
নিম্নোক্ত সময়গুলোতে মিসওয়াক করা উত্তম বলে তাকিদ দেয়া হয়েছে:
১। ওযূর সময়:

দাড়ি লম্বা করার হুকুম:

দাড়ি লম্বা করা


দাড়ি লম্বা করার হুকুম:
পুরুষের জন্য দাড়ি লম্বা করা ওয়াজিব। এর কারণ নিম্নরূপ:
১। মহানাবী () দাড়ি লম্বা করার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশটা ওয়াজিব অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। মানদূব (যা আমল করলে সাওয়াব পাওয়া যাবে আর পরিত্যাগ করলে শাস্তি হবে না) অর্থে ব্যবহৃত হওয়ার কোন ইঙ্গিত এখানে নেই।
এ ব্যাপারে মহানাবী ()এর বাণী হলো:
خالفوا المشركين : وفروا اللحى وأحفوا الشوارب
 (দাড়ি ও গোফের ব্যাপারে) তোমরা মুশরিকদের বিপরীত কর। দাড়ি লম্বা কর এবং গোঁফ ছোট কর।[1]
তিনি আরও বলেন:

পানির প্রকারভেদঃ পানি বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। তবে তা নিম্নোক্ত দু’প্রকারের বাইরে নয়। যথা:

পানির প্রকারভেদ


পানি বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। তবে তা নিম্নোক্ত দুপ্রকারের বাইরে নয়। যথা:
১। সাধারণ পানি (পবিত্র পানি):
এ প্রকার পানি তার সৃষ্টিগত মৌলিকতার উপর বজায় থাকে। এটা ঐ সমস্ত পানি যা ভূমি থেকে উদ্ভূত হয় অথবা আকাশ থেকে বর্ষিত হয়।  মহান আল্লাহ্‌ বলেন:
﴿وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُمْ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لِيُطَهِّرَكُمْ بِهِ
অর্থাৎ: তিনি আকাশ হতে তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করেন, আর যাতে এর মাধ্যমে তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করেন। (সূরা আনফাল-১১)
এ প্রকার পানির অন্তর্ভুক্ত হলো:

ওযূর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে ঝরে পড়া পানি দ্বারা ওযূ করার বিধান

ওযূর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে ঝরে পড়া পানি দ্বারা ওযূ করার বিধান


ওযূকারীর অঙ্গ থেকে  ঝরে পড়া পানি বা অনুরূপ পানিকে  الماء المستعمل বা ব্যবহৃত পানি বলে। এ প্রকার পানি প্রবিত্রতা দানকারী পানি থেকে ব্যতিক্রম, না ব্যতিক্রম নয়, এ ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন।
বিশুদ্ধ মতামত হলো: যতোক্ষণ পর্যন্ত তা সাধারণ পানি পদবাচ্য থাকে এবং এমন নাপাকী মিশ্রিত না হয় যাতে পানির বৈশিষ্ট্য সমূহে কোন প্রভাব পড়ে (অর্থাৎ: রং, গন্ধ ও স্বাদ অবিকৃত থাকে), ততক্ষণ তা পবিত্রকারী থাকবে। এটা আলী ইবনে আবি তালিব, ইবনে উমার,

মহিলাদের ব্যবহার করা অতিরিক্ত পানি দিয়ে পুরুষদের গোসল করা বৈধ কি না

মহিলাদের ব্যবহার করা অতিরিক্ত পানি দিয়ে পুরুষদের গোসল করা বৈধ কি না


মহিলাদের ওযূ বা গোসলের অতিরিক্ত পানি দ্বারা পুরুষের পবিত্রতা অর্জনের বিধানের ব্যাপারে আলিমগণের মাঝে দু’টি অভিমত লক্ষ্য করা যায়:
১ম মতামত: মহিলাদের ব্যবহৃত অতিরিক্ত পানি দ্বারা পুরুষের পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ নয়। এটা ইবনে উমার, আবদুল্লাহ ইবনে সারজাস, উম্মুল মুমিনীন জুয়ায়রিয়্যাহ বিনতে হারেস, হাসান, আহমাদ ইবনে হাম্বল, ইসহাক্ব, শাবী ও দাউদ জাহেরী এর মতামত।[1]
তাদের দলীল হলো:

ওযূর সংজ্ঞা ও এর শারঈ প্রমাণ

ওযূর সংজ্ঞা ও এর শারঈ প্রমাণ


ওযূ এর আভিধানিক অর্থ : وضوء শব্দটি الوضائة শব্দ থেকে গৃহীত। এর আভিধানিক অর্থ: পরিছন্নতা ও উজ্জ্বলতা    وضوء  শব্দের واو  বর্ণে পেশ পড়লে, তখন তা فعل (ত্রিয়া) এর অর্থ  দিবে। আর واو বর্ণে যবর পড়লে, এর অর্থ হবে: ওযূর পানি এবং সেটা  مصدر(ক্রিয়ামূল)ও হবে অথবা এ দু’টি আলাদা শব্দও হতে পারে।[1]         
পরিভাষায়: সালাত অথবা অনুরূপ ইবাদাত থেকে বাধা প্রদান করে, এমন অপবিত্রতা হতে পবিত্রতা অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তথা মুখ, দু’হাত, মাথা ও দু’পায়ে পানি ব্যবহার করার নাম ওযূ।
কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা ওযূ শারঈভাবে প্রমাণিত। যথা:
(ক) কুরআনে আল্লাহ্‌ তা‘আলা বলেন:

ওযূর ফযীলত সমুহ

ওযূর ফযীলত


১। এটাকে ঈমানের অর্ধেক হিসাবে গণ্য করা হয়:
عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: الطُّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ
আবূ মালিক আশআ'রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল () বলেছেন: পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।[1]
২। ওযূ ছোট-ছোট পাপগুলো মোচন করে:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِقَالَ: إِذَا تَوَضَّأَ الْعَبْدُ الْمُسْلِمُ - أَوِ الْمُؤْمِنُ - فَغَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ الْمَاءِ - أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ -، فَإِذَا غَسَلَ يَدَيْهِ خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ -، فَإِذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلَاهُ مَعَ الْمَاءِ - أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ - حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيًّا مِنَ الذُّنُوبِ
(ক) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল () বলেছেন:

সংক্ষিপ্তভাবে ওযূর পূর্ণাঙ্গ নিয়মাবলী

সংক্ষিপ্তভাবে ওযূর পূর্ণাঙ্গ নিয়মাবলী


أَنَّ حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ، فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى المِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ «مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»
হুমরান থেকে বর্ণিত, তিনি উসমান বিন আফ্ফান (রাঃ) কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিন বার পানি ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। এর পর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তার পর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তার মুখম-ল তিন বার ধুয়ে দুই হাত তিনবার কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নিলেন। এর পর মাথা মাসাহ করলেন। তার পর উভয় পা গিরা পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে বললেন, রাসূল () বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম ওযূ করবে তারপর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খিয়াল করবে না। তার পেছনের গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।[1] 
এ হাদীস এবং সামনে বিস্তারিত বর্ণনায় যে সকল হাদীস আসবে, সেগুলোর আলোকে ওযূর বর্ণনা নিম্নরূপ: 

ওযূ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত শর্ত[1]

ওযূ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত শর্ত[1]


ওযূ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়তকে শর্ত করা হয়েছে। আর তা হলো: ওযূ করার জন্য অন্তরে দৃঢ় সংকল্প করা, যেন আল্লাহ্‌ ও রাসূলের () নির্দেশ বাসত্মবায়িত হয়। যেমন: সমস্ত উদ্দেশ্য মূলক ইবাদাতকে লক্ষ করে আল্লাহ্‌ বলেন:
﴿وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ﴾
অর্থাৎ: আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল­াহর ‘ইবাদাত করে তাঁরই জন্য দ্বীনকে একনিষ্ঠ করে (সূরা বায়্যিনা-৫)।
রাসূল () বলেন:

ওযূর রুকন বা ফরয সমূহ

ওযূর রুকনসমূহ


ওযূর রুকন হলো: যার মাধ্যমে ওযূর মূল কাঠামো গঠিত হয়। যদি একটি রুকন উলট-পালট হয়ে যায় তাহলে, ওযূ বাতিল হয়ে যাবে এবং তা শরীয়াতসম্মত হবে না। সেগুলো হলো:
১। সম্পূর্ণ মুখমন্ডল ধৌত করা:
মুখমন্ডল দ্বারা সমস্ত চেহারা উদ্দেশ্য। তার সীমা হলো: দৈর্ঘের দিক থেকে মাথার অগ্রভাগের কপালের গোড়া তথা চুল গজানোর স্থান হতে চোয়াল ও থুৎনীর নীচ পর্যন্ত, আর প্রস্থে এক কানের লতি থেকে অপর কানের লতি পর্যন্ত।
মুখমন্ডল ধৌত করা ওযূর রুকন সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি রুকন। এটা ব্যতীত ওযূ বিশুদ্ধ হবে না। মহান আল্লাহ্‌ বলেন:

যে সকল কাজে ওযূ নষ্ট হয় না

যে সকল কাজে ওযূ নষ্ট হয় না


এ কাজগুলো করলে ওযূ ভঙ্গ হবে কিনা এ ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন। তবে বাস্তবে এ কাজগুলো করলে ওযূ নষ্ট হয় না। আর সে কাজগুলো হলো:
১। কোন পর্দা ছাড়া পুরুষ মহিলাকে স্পর্শ করলে এ মাসআলাটির ব্যাপারে তিনটি অভিমত পরিলক্ষিত হয়: 
১ম : অভিমত:
সাধারণ ভাবে পুরুষ মহিলাকে স্পর্শ করলে ওযূ নষ্ট হবে। এটা ইমাম শাফেঈ (রাহি.) এর অভিমত । ইবনে হাযম এমতটি সমর্থন করেছেন। ইবনে মাসউদ (রাঃ) ও ইবনে উমার (রাঃ) এ মতেরই প্রবক্তা।[1]
২য় অভিমত :

ওযূর সুন্নাতসমূহ

ওযূর সুন্নাতসমূহ


১। মিসওয়াক করা:
কোন কোন সময় মিসওয়াক করা মুস্তাহাব: সে বিষয়ে ‘‘سنن الفطرة’’ অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে।
২। ওযূর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা:
সকল কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা শরীয়াত সম্মত উত্তম কাজ। ওযূর সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলার ব্যাপারে কিছু যঈফ হাদীস বর্ণিত হয়েছে, যদিও কতিপয় আলিম এগুলোকে সহীহ বলেছেন।
তন্মধ্যে একটি হাদীস হলো:

ওযূ ভঙ্গের কারণসমূহ [প্রথম অংশ]

ওযূ ভঙ্গের কারণসমূহ [প্রথম অংশ]


ওযূ ভঙ্গের কারণ বলতে এমন বিষয় বুঝায়, যার মাধ্যমে ওযূ নষ্ট হয়ে যায়। ওযূ ভঙ্গের কারণগুলো হলো:
১। দু’রাস্তা দিয়ে পেশাব, পায়খানা অথবা বায়ু নির্গত হওয়া:
পেশাব ও পায়খানার ব্যাপারে মহান আল্লাহ্‌ বলেন:
﴿أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنَ الْغَائِطِ﴾
তোমাদের কেউ যদি পায়খানা থেকে আসে (সূরা মায়েদা -৬) ।
 অত্র আয়াতে ‘الْغَائِطِ’ শব্দ উল্লেখ  করে মল-মূত্র ত্যাগ তথা পেশাব পায়খানাকে বুঝানো হয়েছে। বিদ্বানগণ এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে,

ওযূ ভঙ্গের কারণসমূহ [শেষ অংশ]

ওযূ ভঙ্গের কারণসমূহ [শেষ অংশ]


প্রথম অংশের পর......

৫। নিতম্ব স্পর্শ করলে ওযূ নষ্ট হয় না:[1]
কেননা নিতম্বকে লিঙ্গ হিসেবে গণ্য করা হয় না। লিঙ্গ ও নিতম্ব স্পর্শ করার ক্ষেত্রে সমতার কোন প্রমাণ না থাকায়, নিতম্বকে লিঙ্গের উপর কিয়াস করা যাবে না। যদি বলা হয় যে, উভয়টি নাপাক নির্গত হওয়ার স্থান? তাহলে বলা হবে যে, তা স্পর্শ করার ফলে ওযূ ভঙ্গের কোন কারণ পাওয়া যায় না। উপরন্তত্ম, নাপাক স্পর্শ করলে ওযূ নষ্ট হয় না, সুতরাং নাপাক বের হওয়ার স্থান স্পর্শ করলে কিভাবে ওযূ নষ্ট হবে?!! এটা ইমাম মালিক সাওরী ও আসহাবে রা‘য়ের অভিমত। ইমাম শাফেঈ এর বিরোধিতা করেছেন।
৬। উটের গোশত খাওয়ার ফলে ওযূ নষ্ট হওয়ার বিধান:

সালাতের জন্যই শুধু ওযূ ওয়াজিব, অন্য কিছুর জন্য ওয়াজিব নয়

সালাতের জন্যই শুধু ওযূ ওয়াজিব, অন্য কিছুর জন্য ওয়াজিব নয়


সালাতের জন্যই শুধু ওযূ ওয়াজিব, অন্য কিছুর জন্য ওয়াজিব নয়:
যে ব্যক্তি অপবিত্র (ওযূ বিহীন) রয়েছে এবং সালাত আদায়ের ইচ্ছা করে তার জন্য ওযূ করা ওয়াজিব। চায় তা ফরয সালাত হোক বা নফল সালাত হোক কিংবা জানাযার সালাত হোক । মহান আল্লাহ্‌ বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا
হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমরা ধৌত কর। (সূরা মায়েদা-৬)
রাসূল () বলেন: 

নিম্নোক্ত কাজগুলোর ক্ষেত্রে ওযূ করা মুস্তাহাব

নিম্নোক্ত কাজগুলোর ক্ষেত্রে ওযূ করা মুস্তাহাব


তবে নিম্নোক্ত কাজগুলোর ক্ষেত্রে ওযূ করা মুস্তাহাব।
কা’বা শরীফ ত্বওয়াফ করার সময়:
ত্বওয়াফকারীর জন্য ওযূ করা আবশ্যক হওয়ার ক্ষেত্রে কোন সহীহ দলীল আছে বলে আমাদের জানা নেই। অথচ অসংখ্য মুসলমান, যাদের সংখ্যা আল্লাহ্‌ তায়ালা ব্যতীত কেউ নির্ণয় করতে পারবে না। তারা আল্লাহ্‌র রাসূল () এর যুগে তওয়াফ করতেন। কিন্তু তাদের কাউকেও তিনি তওয়াফের জন্য ওযূ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে আমাদের কাছে বর্ণিত হয় নি। অথচ তওয়াফ চলাকালীন সময় অনেকের ওযূ নষ্ট হত এবং

যে সমস্ত কাজে ওযূ করা মুস্তাহাব

যে সমস্ত কাজে ওযূ করা মুস্তাহাব


১। আল্লাহ্‌ তাআলার যিকির করার সময়:
এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে সাধারণ যিকির, কুরআন তিলাওয়াত, কাবা শরীফ তওয়াফ ইত্যাদি। এসব কারণে ওযূ করা মুস্তাহাব।
عَنِ الْمُهَاجِرِ بْنِ قُنْفُذٍ، أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّوَهُوَ يَبُولُ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ، فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ حَتَّى تَوَضَّأَ، ثُمَّ اعْتَذَرَ إِلَيْهِ فَقَالَ " إِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أَذْكُرَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا عَلَى طُهْرٍ أَوْ قَالَ: عَلَى طَهَارَةٍ "
অর্থাৎ: আল-মুহাজির বিন কুনফুয (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, একদা তিনি নাবী করীম () এর খেদমতে এমতাবস্থায় পৌঁছলেন যখন তিনি (স:) পেশাবরত ছিলেন। তিনি তাঁকে সালাম দেন। কিন্তু নাবী করীম () উযু না করা পর্যন্ত তার সালামের জবাব থেকে বিরত থাকেন। অতঃপর

আবরণীর উপর মাসাহ

আবরণীর উপর মাসাহ


প্রথমত: দুই মোজার উপর মাসাহ করা
خف এর সংজ্ঞা:
দুই টাখনুকে ঢেঁকে রাখে এমন চামড়ার জুতাকে خف বলা হয়।[1] পাঁয়ে বেড়ে থাকা দুই হাড্ডিকে কা’ব বলা হয়।
المسح এর আভিধানিক অর্থঃ
 مسح শব্দটি مسح মাসদার হতে গৃহীত। কোন বস্ত্তর উপর মৃদু হাত বুলানোকে মাসাহ বলা হয়।[2] আর মোজার উপর মাসাহ করা বলতে বুঝায়, ওযূতে দু’পা ধোয়ার বিকল্প হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে ও নির্দিষ্ট মোজার উপর ভিজা হাত বুলানো।[3]
মোজার উপর মাসাহ করার ব্যাপারে শরীয়াতের বিধান:

যদি মুকীম ব্যক্তি মোজায় মাসাহ করার পর সফর করে তাহলে তার বিধান

যদি মুকীম ব্যক্তি মোজায় মাসাহ করার পর সফর করে তাহলে তার বিধান


যে ব্যক্তি মুকীম অবস্থায় মোজার উপর মাসাহ করে একদিন ও এক রাত এর কম সময় অবস্থান করার পর সফরে বের হয়, তাহলে এ মাস‘আলাটির ক্ষেত্রে বিদ্বানদের দু’টি অভিমত পরিলক্ষিত হয়-
১ম: মুকীম অবস্থায় যে পরিমাণ সময় মাসাহ করেছে তা সহ বাকি তিন দিন তিন রাত পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত সে মোজায় মাসাহ করতে পারবেঃ

চামড়ার মোজার উপর মাসাহ করার শর্ত সমূহ


চামড়ার মোজার উপর মাসাহ করার শর্ত সমূহ


মোজার উপর মাসাহ বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো: পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করতে হবে। মুগীরা ইবনে শোবা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: 
كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّذَاتَ لَيْلَةٍ فِي مَسِيرٍ، فَقَالَ لِي:্রأَمَعَكَ مَاءٌগ্ধ قُلْتُ: نَعَم্ْরفَنَزَلَ عَنْ رَاحِلَتِهِ، فَمَشَى حَتَّى تَوَارَى فِي سَوَادِ اللَّيْلِ، ثُمَّ جَاءَ فَأَفْرَغْتُ عَلَيْهِ مِنَ الْإِدَاوَةِ، فَغَسَلَ وَجْهَهُ، وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِنْ صُوفٍ، فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُخْرِجَ ذِرَاعَيْهِ مِنْهَا حَتَّى أَخْرَجَهُمَا مِنْ أَسْفَلِ الْجُبَّةِ فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ وَمَسَحَ بِرَأْسِهِ ثُمَّ أَهْوَيْتُ لِأَنْزِعَ خُفَّيْهِগ্ধ فَقَالَ:্রدَعْهُمَا فَإِنِّي أَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ وَمَسَحَ عَلَيْهِمَاগ্ধ
কোনো এক সফরে (শেষে) রাতের বেলা আমি নাবী () এর সাথে ছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন: তোমার কাছে কি পানি আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ আছে। তখন তিনি সওয়ারী থেকে নেমে চলতে থাকলেন এবং

মাসাহ করার স্থান ও তার নিয়ম

মাসাহ করার স্থান ও তার নিয়ম


শরীয়াতে মোজার উপর মাসাহ করার নিয়ম হলো, একবার মোজাদ্বয়ের উপর অংশে মাসাহ করতে হবে। নিচের অংশে নয়।
عَنْ عَلِيٍّ ؓ، قَالَ: لَوْ كَانَ الدِّينُ بِالرَّأْيِ لَكَانَ أَسْفَلُ الْخُفِّ أَوْلَى بِالْمَسْحِ مِنْ أَعْلَاهُ، وَقَد্ْরرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِيَمْسَحُ عَلَى ظَاهِرِ خُفَّيْهِগ্ধ
আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ধর্মের মাপকাঠি যদি রায়ের (বিবেক-বিবেচনা) উপর নির্ভরশীল হত, তবে মোজার উপরের অংশে মাসাহ না করে নিম্নাংশে মাসাহ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হত। হযরত আলী (রাঃ) বলেন,

যে কারণে মোজার উপর মাসাহ করার বিধান বাতিল হবে

যে কারণে মোজার উপর মাসাহ করার বিধান বাতিল হবে


সফওয়ান বিন আসসাল (রাঃ) এর হাদীসে পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে-
كَانَ يَأْمُرُنَا إِذَا كُنَّا سَفَرًا أَوْ مُسَافِرِينَ أَنْ لَا نَنْزِعَ خِفَافَنَا ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيهِنَّ، إِلَّا مِنْ جَنَابَةٍ، وَلَكِنْ مِنْ غَائِطٍ وَبَوْلٍ وَنَوْمٍগ্ধ
অর্থাৎ: ‘‘আমরা যখন সফরে থাকতাম, তখন রাসূল () আমাদেরকে জানাবাতের অপবিত্রতা ছাড়া তিন দিন ও তিন রাত আমাদের মোজা না খুলতে নির্দেশ দিতেন। তবে পেশাব-পায়খানা ও ঘুমের কারণে কোন সমস্যা হত না’’। সুতরাং, বুঝা গেল, নিমেণর কারণগুলো সংঘটিত হলে মোজার উপর মাসাহ করা বৈধ হবে না-
। জানাবাত ও এ জাতীয় বিষয় যা গোসল ওয়াজিব করে। যেমন হায়েয ও নিফাস থেকে পবিত্রতা অর্জন।
২। মাসাহ এর সময়সীমা শেষ হলে।
৩। মোজা খুলে ফেললে এবং মোজা পরিধানের পূর্বেই পবিত্রতা নষ্ট হলে:

জাওরাব ও জুতার উপর মাসাহ প্রসঙ্গে

জাওরাব ও জুতার উপর মাসাহ প্রসঙ্গে


জাওরাব ও জুতার উপর মাসাহ প্রসঙ্গে
(ক) জাওরাবের উপর মাসাহ:
 جورب(জওরাব): পশমী সুতা, শণের  তৈরি এক ধরনের মোজা বিশেষ যা মানুষেরা তাদের দু‘পায়ে পরিধান করে। এ সংজ্ঞটিকে মদ্য পানীয়র সাথে তুলনা করা যেতে পারে। {শারাব বা পানীয় যেমন বিভিন্ন বস্ত্ত থেকে তৈরি করা হয়, জাওরাবও তেমনি বিভিন্ন উপাদান হতে তৈরি হতে পারে (অনুবাদক)}।
জাওরাবের উপর মাসাহ এর হুকুম নিয়ে উলামাদের মাঝে তিন ধরনের বক্তব্য রয়েছে।

মাথার আবরণীর উপর মাসাহ

মাথার আবরণীর উপর মাসাহ


 মাথার আবরণীর উপর মাসাহ
১। ওযূর সময় পাগড়ীর উপর মাসাহ:
সাধারণ ভাবে ওযূতে মাথার পরিবর্তে পাগড়ীর উপর মাসাহ বৈধ। এটা আহমাদ, ইসহাক্ব, আবূ সাওর, আওযায়ী, ইবনু হাযম, ইবনে তাইমিয়াহ এবং সাহাবীদের মধ্য হতে আবূ বকর, উমার, আনাস প্রমুখ এর অভিমত।[1] এটা রাসূল () থেকে সাব্যাস্ত।
যেমন আমর ইবনে উমাইয়া আয-যামেরী বলেন,

প্রশ্ন (২২/৬২) : কবরস্থানে ছালাত আদায় করা যায় না। কিন্তু হজ্জ করতে গিয়ে দেখলাম মসজিদে নববীতে রাসূল (ছাঃ)-এর কবর রয়েছে এবং তা পাকা করা আছে। এর ব্যাখ্যা কী?

প্রশ্ন (২২/৬২) : কবরস্থানে ছালাত আদায় করা যায় না। কিন্তু হজ্জ করতে গিয়ে দেখলাম মসজিদে নববীতে রাসূল (ছাঃ)-এর কবর রয়েছে এবং তা পাকা করা আছে। এর ব্যাখ্যা কী?
-------------------------------------------------------------------------- 
উত্তর : প্রথমতঃ কবরের উপর মসজিদ বানানো হয়নি। দ্বিতীয়তঃ রাসূল (ছাঃ)-কে মসজিদে কবর দেয়া হয়নি। তাঁকে আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরে দাফন করা হয়েছিল (ছহীহ তিরমিযী হা/১০১৮)। তৃতীয়তঃ মসজিদে নববীতে কবরস্থান নেই। রাসূল (ছাঃ)-এর কবর পাকা করাও নেই। বুঝতে এবং দেখতে ভুল হয়েছে। যেখানে পাকা করা আছে সেটা ঘরের দেয়াল। মূলতঃ আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরকে মসজিদের মধ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে এটা চার খলীফার যুগে করা হয়নি; বরং

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ