Monday, November 27, 2017

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৩৪) মিথ্যা কথা বলার প্রচলন বৃদ্ধি পাবে

৩৪) মিথ্যা কথা বলার প্রচলন বৃদ্ধি পাবে


কিয়ামতের পূর্বে ব্যাপকভাবে মিথ্যা কথা বলার প্রচলন ঘটবে। এমনকি এক শ্রেণীর লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর নামে মিথ্যা হাদীছ রচনা করে মানুষের মাঝে প্রচার করবে। বাস্তবে তাই হয়েছে। ইসলাম প্রচার ও তাবলীগের নামে বানোয়াট কিচ্ছা-কাহিনী ও জাল হাদীছ তৈরী করে এক শ্রেণীর লোক মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৩৫) মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবে

৩৫) মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবে


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
إِنَّ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ شَهَادَةَ الزُّورِ وَكِتْمَانَ شَهَادَةِ الْحَقِِّ
‘‘কিয়ামতের পূর্বে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবে এবং সত্য সাক্ষ্য গোপন করা হবে’’।[1] বর্তমান সমাজে সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। অপর পক্ষে

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৩৬) মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে

৩৬) মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ َتَكْثُرَ النِّسَاءُ وَيَقِلَّ الرِّجَالُ حَتَّى يَكُونَ لِخَمْسِينَ امْرَأَةً الْقَيِّمُ الْوَاحِد
‘‘কিয়ামতের আলামত হচ্ছে, মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে। এমনকি পঞ্চাশ জন মহিলার দেখা-শুনার জন্য মাত্র একজন পুরুষ থাকবে’’।[1]
এই হাদীছের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে,

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৩৭) হঠাৎ মৃত্যুর বরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে

৩৭) হঠাৎ মৃত্যুর বরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে হঠাৎ করে মৃত্যুবরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে’’।[1]
বর্তমানে এরকম ঘটনা প্রায়ই শুনা যায়। দেখা যায় একজন মানুষ সম্পূর্ণ সুস্থ। হঠাৎ শুনা যায় সে মৃত্যু বরণ করেছে। সুতরাং মানুষের উচিৎ

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৩৮) আরব উপদ্বীপ নদ-নদী এবং গাছপালায় পূর্ণ হয়ে যাবে

৩৮) আরব উপদ্বীপ নদ-নদী এবং গাছপালায় পূর্ণ হয়ে যাবে


বর্তমানে আরব উপদ্বীপে কোন নদী-নালা নেই। গাছপালার সংখ্যা খুবই কম। চাষাবাদের উপযোগী ভূমির পরিমাণ অতি নগণ্য। কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে আরব উপদ্বীপের পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং তা গাছপালা ও নদী-নালায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৩৯) প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, ফসল হবেনা

৩৯) প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, ফসল হবেনা


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُمْطَرَ النَّاسُ مَطَرًا لَا تُكِنُّ مِنْهُ بُيُوتُ الْمَدَرِ وَلَا تُكِنُّ مِنْهُ إِلَّا بُيُوتُ الشَّعَرِ
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যতদিন না আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এতে মাটির তৈরী ঘরগুলো ভেঙ্গে পড়বে এবং পশমের ঘরগুলো রক্ষা পাবে’’।[1] তিনি আরো বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُمْطَرَ النَّاسُ مَطَرًا عَامًّا وَلَا تَنْبُتَ الْأَرْضُ شَيْئًا  
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যেপর্যন্ত না ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। কিন্তু

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৪০) ফুরাত নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় বের হবে

৪০) ফুরাত নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় বের হবে


কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে ফুরাত নদী থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় বের হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَحْسِرَ الْفُرَاتُ عَنْ جَبَلٍ مِنْ ذَهَبٍ يَقْتَتِلُ النَّاسُ عَلَيْهِ فَيُقْتَلُ مِنْ كُلِّ مِائَةٍ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ وَيَقُولُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْهُمْ لَعَلِّي أَكُونُ أَنَا الَّذِي أَنْجُو
‘‘তত দিন পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা যতদিন না ফুরাত নদী থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় বের হবে। মানুষেরা এটি দখল করার জন্যে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। এ যুদ্ধে শতকরা নিরানববই জনই নিহত হবে। তাদের প্রত্যেকেই বলবেঃ আমিই এযুদ্ধে রেহাই পাবো এবং স্বর্ণের পাহাড়টি দখল করে নিবো’’।[1] তিনি আরো বলেনঃ

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৪১) জড় পদার্থ এবং হিংস্র পশু মানুষের সাথে কথা বলবে

৪১) জড় পদার্থ এবং হিংস্র পশু মানুষের সাথে কথা বলবে


কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে হিংস্র প্রাণী এবং জড় পদার্থ মানুষের সাথে কথা বলবে। আল্লাহ রাববুল আলামীন মানুষকে কথা বলার শক্তি দিয়েছেন। তিনি অন্যান্য সৃষ্টিজীবকেও কথা বলার ক্ষমতা দিতে মোটেই অক্ষম নন। 
ইমাম আহমাদ (রঃ) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, ‘‘জনৈক রাখাল মাঠে ছাগল চরাচিছল। হঠাৎ একটি নেকড়ে বাঘ এসে একটি ছাগলের উপর আক্রমণ করলো। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি ছিনিয়ে আনল। বাঘটি একটি টিলার উপর বসে বলতে লাগলোঃ তুমি কি আল্লাহকে ভয় করোনা?

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৪২) ফিতনায় পতিত হয়ে মানুষ মৃত্যু কামনা করবে

৪২) ফিতনায় পতিত হয়ে মানুষ মৃত্যু কামনা করবে


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى يَمُرَّ الرَّجُلُ بِقَبْرِ الرَّجُلِ فَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي مَكَانَه
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যতদিন না লোকেরা কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করবে এবং বলবেঃ হায় আফসোস! আমি যদি এ কবরের অধিবাসী হতাম’’।[1] তিনি আরো বলেনঃ

কিয়ামতের ছোট আলামতঃ ৪৩) কাহতান গোত্র থেকে একজন সৎ লোক বের হবে

৪৩) কাহতান গোত্র থেকে একজন সৎ লোক বের হবে


আখেরী যামানায় কাহতান গোত্র থেকে একজন সৎ লোক আগমণ করবে। মানুষ তাঁর নেতৃত্বে ঐক্য বদ্ধ হয়ে তাঁর আনুগত্য করবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَخْرُجَ رَجُلٌ مِنْ قَحْطَانَ يَسُوقُ النَّاسَ بِعَصَاهُ
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যতদিন না কাহতান গোত্র থেকে একজন লোক বের হয়ে তার লাঠির মাধ্যমে লোকদেরকে পরিচালিত করবে’’।[1]
লাঠির মাধ্যমে জনগণকে পরিচালিত করার অর্থ হলো

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ১. ইমাম মাহদীর আগমণ

১. ইমাম মাহদীর আগমণ


সহীহ হাদীছের বিবরণ থেকে অবগত হওয়া যায় যে, আখেরী যামানায় ইমাম মাহদীর আত্মপ্রকাশ কিয়ামতের সর্বপ্রথম বড় আলামত। তিনি আগমণ করে এই উম্মাতের নের্তৃত্বের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। ইসলাম ধর্মকে সংস্কার করবেন এবং ইসলামী শরীয়তের মাধ্যমে বিচার-ফয়সালা করবেন। পৃথিবী হতে জুলুম-নির্যাতন দূর করে ন্যায়-ইনসাফ দ্বারা তা ভরে দিবেন। উম্মতে মুহাম্মাদী তাঁর আমলে বিরাট কল্যাণের ভিতর থাকবে। ইমাম ইবনে কাছীর (রঃ) বলেনঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ২. দাজ্জালের আগমণ

২. দাজ্জালের আগমণ


আখেরী যামানায় কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। দাজ্জালের আগমণ কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সবচেয়ে বড় আলামত। মানব জাতির জন্যে দাজ্জালের চেয়ে অধিক বড় বিপদ আর নেই। বিশেষ করে সে সময় যে সমস্ত মুমিন জীবিত থাকবে তাদের জন্য ঈমান নিয়ে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। সমস্ত নবীই আপন উম্মাতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও দাজ্জালের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছেন এবং তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার উপায়ও বলে দিয়েছেন। ইবনে উমার (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেনঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ৩. ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)এর আগমণ

৩. ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)এর আগমণ


আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের বিশ্বাস এই যে, ঈসা (আঃ)কে আল্লাহ তা’আলা জীবিত অবস্থায় আকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন। ইহুদীরা তাকে হত্যা করতে পারেনি। কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে তিনি আমাদের নবীর উম্মাত হয়ে আবার দুনিয়াতে আগমণ করবেন। দাজ্জালকে হত্যা করবেন, খৃষ্টান ধর্মের পতন ঘটাবেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন, আমাদের নবীর শরীয়ত দ্বারা বিচার-ফয়সালা করবেন এবং ইসলামের বিলুপ্ত হওয়া আদর্শগুলো পুনর্জীবিত করবেন। পৃথিবীতে নির্দিষ্ট সময় অবস্থান করার পর তিনি মৃত্যু বরণ করবেন। মুসলমানগণ তার জানাযা নামায পড়ে তাকে দাফন করবেন। তাঁর আগমণের পক্ষে কুরআন ও সহীহ হাদীছে অনেক দলীল রয়েছে। নিম্নে কতিপয় দলীল বর্ণনা করা হলোঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ৪. ইয়াজুয-মা’জুযের আগমণ

৪. ইয়াজুয-মা’জুযের আগমণ


ইয়াজুয-মা’জুযের পরিচয়ঃ
ইয়াজুয-মা’জুযের দল বের হওয়া কিয়ামতের একটি অন্যতম বড় আলামত। এরা বের হয়ে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও মহা ফিতনার সৃষ্টি করবে। এরা বর্তমানে যুল-কারনাইন বাদশা কতৃক নির্মিত প্রাচীরের ভিতরে অবস্থান করছে। কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে তারা দলে দলে মানব সমাজে চলে এসে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালাবে। তাদের মোকাবেলা করার মত তখন কারো কোন শক্তি থাকবেনা।
তাদের পরিচয় সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন আলেম বলেনঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ৫. তিনটি বড় ধরণের ভূমিধসঃ

৫. তিনটি বড় ধরণের ভূমিধসঃ


ভূমিধস অর্থ হচ্ছে যমিনের কোন অংশ নিচে চলে গিয়ে বিলীন হয়ে যাওয়া। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
)فَخَسَفْنَا بِهِ وَبِدَارِهِ الْأَرْضَ(
‘‘অতঃপর আমি কারূনকে ও তার প্রাসাদকে ভূগর্ভে প্রোথিত করলাম’’। (সূরা কাসাসঃ ৮১) কিয়ামতের পূর্বে তিনটি স্থানে বিশাল আকারের ভূমিধস হবে। এগুলো হবে কিয়ামতের বড় আলামতের অন্তর্ভূক্ত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ৬. বিশাল একটি ধোঁয়ার আগমণ

৬. বিশাল একটি ধোঁয়ার আগমণ


কিয়ামতের অন্যতম বড় আলামত হচ্ছে আখেরী যামানায় কিয়ামতের সন্নিকটবর্তী সময়ে বিশাল আকারের একটি ধোঁয়া বের হয়ে আকাশ এবং যমীনের মধ্যবর্তী খালি জায়গা পূর্ণ করে ফেলবে। এই ধোঁয়া মুমিন ব্যক্তিদেরকে সামান্য একটু সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত করে দিবে। কাফেরদের শরীরের ভিতরে প্রচন্ডভাবে প্রবেশ করবে। ফলে তাদের শরীর ফুলে যাবে এবং শরীরের প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে ধোঁয়া বের হবে। এটি তাদের জন্য একটি যন্ত্রনাদায়ক আযাবে পরিণত হবে। আললাহ তাআলা বলেনঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ৭. পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় হবে

৭. পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় হবে


বর্তমানে প্রতিদিন পূর্ব দিক থেকে সূর্য উদিত হচ্ছে। আখেরী যামানায় কিয়ামতের সন্নিকটবর্তী সময়ে এ অবস্থার পরিবর্তন হয়ে পশ্চিমাকাশে সূর্যোদয় ঘটবে। এটি হবে কিয়ামতের অত্যন্ত নিকটবর্তী সময়ে। পশ্চিমাকাশে সূর্য উঠার পর তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কুরআন ও সহীহ হাদীছের মাধ্যমে এ বিষয়টি প্রমাণিত। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ৮. দাববাতুল/দাব্বাতুল আরদ্

৮. দাববাতুল/দাব্বাতুল আরদ্


আখেরী যামানায় কিয়ামতের সন্নিকটবর্তী সময়ে যমীন থেকে দাববাতুল/দাব্বাতুল আরদ্ নামক এক অদ্ভুত জন্তু বের হবে। জন্তুটি মানুষের সাথে কথা বলবে। এটি হবে কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার অন্যতম সর্বশেষ ভয়াবহ আলামত। পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হওয়ার পর তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে গেলে এটি বের হবে। সহীহ হাদীছ থেকে জানা যায় যে, পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠার কিছুক্ষণ পরই যমীন থেকে এই অদ্ভুত জানোয়ারটি বের হবে। তাওবার দরজা যে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে-

কিয়ামতের বড় আলামতঃ ৯. কিয়ামতের সর্বশেষ আলামত

৯. কিয়ামতের সর্বশেষ আলামত


কিয়ামতের পূর্বে ইয়ামানের আদন নামক স্থানের গর্ত থেকে একটি ভয়াবহ আকারের আগুন বের হয়ে মানুষকে হাশরের দিকে একত্রিত করবে। এ ব্যাপারে কতিপয় সহীহ হাদীছ নিম্নে বর্ণিত হলোঃ
১) মুসলিম শরীফে হুযায়ফা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ

কিয়ামতের বড় আলামতঃ সকল আলামত প্রকাশের পর পৃথিবীর কিছু অবস্থা

সকল আলামত প্রকাশের পর পৃথিবীর কিছু অবস্থা


ইসলাম মিটে যাবে ও কুরআন উঠিয়ে নেয়া হবেঃ
পূর্বে আলোচনা হয়েছে, ইয়াজুয ও মা’জুযের দল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর এবং কিয়ামতের বড় বড় আলামতগুলো প্রকাশ হওয়ার পর পৃথিবীর সর্বত্র ইসলামের মহান বিজয় ও বিস্তার ঘটবে। অতঃপর আবার ইসলাম দুর্বল হয়ে যাবে, অশ্লীলতা ও পাপাচারিতা বিস্তার লাভ করবে, ইসলামের শিক্ষা উঠে যাবে, কুরআন মুছে যাবে এবং দ্বীনি ইলমের চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে। সকল ঈমানদার লোককে উঠিয়ে নেয়া হবে। শুধু নিকৃষ্ট লোকেরা অবশিষ্ট থাকবে। তাদের উপর কিয়ামত কায়েম হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ

১। তাবলীগী জামাআতের প্রতিষ্ঠাতার পরিচিতি

১। তাবলীগী জামাআতের প্রতিষ্ঠাতার পরিচিতি


হিন্দুস্থানের উত্তর পশ্চিম সীমান্তের একটি রাজ্যের এখনকার নাম হবিয়ানা পূর্বের নাম পাঞ্জাব। হিন্দুস্থানের রাজধানী দিল্লীর দক্ষিণে হরিয়ানায় একটি এলাকার নাম মেওয়াত। যার পরিধি দিল্লীর সীমান্ত থেকে রাজস্থান রাজ্যের জয়পুর জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই মেওয়াতে (১৩০৩) হিজরীতে এক হানাফী সূফি বুজুর্গের জন্ম হয়। তাঁর ঐতিহাসিক নাম ‘‘আখতার ইলিয়াস’’। কিন্তু

২। তাবলীগী নিসাব পরিচিতি

২। তাবলীগী নিসাব পরিচিতি


তাবলীগী জামাআতের মূল গ্রন্থ হলো ‘তাবলীগী নিসাব’ তাবলীগ অর্থ প্রচার এবং নিসাব অর্থ নির্দ্দিষ্ট পাঠ্যসূচী অর্থাৎ তাবলীগী নিসাবে যা কিছু আছে তা তাবলীগের অনুসারীদের জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচি এবং পালনীয়। জামাআতের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইলিয়াস এর নির্দেশে ভারতেরই এক রাজ্য উত্তর প্রদেশের সাহারামপুর জেলার কান্ধেলাহ নিবাসী ও মাযাহিরুল উলুম সাহারানপুরের সাবেক শাইখুল হাদীস যাকারিয়া হানফী নয় খানা বই লেখেন উর্দু ভাষায়। বইগুলির সমষ্টিগত পূর্ব নাম তাবলীগী নিসাব এবং বর্তমান ফাযায়েলে আমাল নামে পরিচিত, নয়টি বই এর আলাদা নাম নিম্মরূপ-

তাবলীগী নিসাব বা ফাযায়েলে আ‘মালের মধ্যে অনেক স্থানে আমানাতের খিয়ানত

তাবলীগী নিসাব বা ফাযায়েলে আ‘মালের মধ্যে অনেক স্থানে আমানাতের খিয়ানত


‘তাবলীগী নিসাব’ তথা ‘ফাযায়েলে আ‘মাল’ লেখক জনাব জাকারিয়া উল্লিাখিত গ্রস্থদ্বয়ে অনেক স্থানে আরবী উদ্ধৃতি দিয়েছেন এবং তার উর্দু অনুবাদ তিনি নিজেই করেছেন, অথচ উর্দু তরজমায় তিনি আমানাত দারীর পরিচয় দিতে, ব্যার্থ হয়েছেন। কারণ তিনি আরবী অনুবাদের উদ্ধৃতি সম্পূর্ণটা উর্দুতে করেননি। যেমন ‘ফাযায়েলে নামায’ বইয়ের ‘দুসরী ফাসল’ এর

তাবলীগী জামাআত কী?

তাবলীগী জামাআত কী?


তাবলীগ আরবী শব্দ যার অর্থ প্রচার করা। আর জামাআতও আরবী শব্দ যার অর্থ দল, সঙ্ঘ, সম্প্রদায় ইত্যাদি। অতএব তাবলীগ জামাআত অর্থ হলো প্রচারের দল। প্রচারকারী দল বিভিন্ন রকমের হতে পারে। ইসলাম প্রচারের দলকে ‘ইসলামী তাবলীগী জামাআত’ অথবা ‘দাওয়াতে ইসলামী’ নাম হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু

তাবলীগী জামাআত কী প্রচার করে?

তাবলীগী জামাআত কী প্রচার করে?


সার্বিকভাবে মূলতঃ তারা পূর্ণাঙ্গ ভাবে ইসলাম প্রচার করে না। তারা ইসলামের কথা মুখে বললেও মূলতঃ তারা মাযহাবের নামে ফিরকা ও তরীকার নামে তাসাউফের দিকে আহবান করে থাকে। ঈমানের দাওয়াতের নামে তারা মুলতঃ  ওহাদাতুল ওজুদ অর্থাৎ সর্ব ইশ্বর বাদের দিকে আহবান করে যা মুলতঃ কুফর, মুসলমানদের সালাতের দাওয়াত দেন, সৎ কাজের উপদেশ দেন, ও অসৎ কাজ হতে দূরে থাকার আনুরোধ করেন। কিন্তু সমাজ সংস্কারের জন্য কুরআন জানা ও তাঁর বিধি-বিধানকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোন চেষ্টা করা হয় না। কুরআনকে শুধু তুতার বুলিরমত তিলাওয়াত পর্যন্ত সিমাবদ্ধ রাখা হয়। তাঁকে

তাবলীগী জামাআতের কর্মসূচী


তাবলীগী জামাআতের কর্মসূচী


তাঁদের উসূল ছয়টি। যথা :
১। কলেমা ২। নামায ৩। ইলম ও যিকির ৪। ইকরামুল মুসলিমিন ৫। তাসিয়ে নিয়ত ৬। তাবলীগ।
অথচ ইসলামের মূল স্তম্ভ পাঁচটি : ১. ঈমান, ২. সালাত, ৩. যাকাত, ৪. সিয়াম ও ৫. হজ্জ। (মুত্তাফাকুন আলাই)
শুরু থেকেই তাবলীগী জামাআত ইসলামের মূল বুনিয়াদ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রা শুরু করেছে। তবে আল কুরআনের আদর্শ বাস্তবায়ন করার জন্য এ ধরণের কর্মসূচী নিয়ে কাজ করা ইসলাম বিরোধী নয়। কিন্তু যদি কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আদর্শকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র ঐ একই কর্মসূচী নিয়ে সারা জীবন মেহনত চলতে এবং

তাবলীগী নিসাবের লেখক পরিচিতি

তাবলীগী নিসাবের লেখক পরিচিতি


১। জাকারীয়া বিন ইয়াহিয়া ১৩১৫ হিজরী রমযানুল মুবারাক। প্রথম নাম মুহাম্মাদ মুসা প্রসিদ্ধ নাম জাকারীয়া, প্রাথমি শিক্ষা গাংগুহ থেকে বাকী শিক্ষা সাহারানপুর শেষ।
২। মুজাহেরুল উলুম সাহারানপুরে ১৩৩৫হিঃ ১৫ টাকা বেতনে কর্ম বা চাকুরী জীবন শুরু করেন।
৩। ৬ বার হজ্জ পালন করেছেন অতপর ১৯৭৩ সনে মদিনা মুনাওয়ারায় স্থায়ি কিয়াম করেন।
৪। প্রথম স্ত্রীরির ইন্তেকালের পর দ্বিতীয় বিবাহ করেন। ১টি ছেলে ৫টি মেয়ে জন্ম দেন তাদের নাম নিম্নরূপ :

সহীহ আক্বীদার মানদন্ডে তাবলীগী নিসাব

সহীহ আক্বীদার মানদন্ডে তাবলীগী নিসাব


এই হাকীকাত বা বাস্তবতাকে কিভাবে অস্বীকার করা যায় যে, ছোট একটি তাবলীগী জামা‘আত দ্বীনের দা‘ওয়াত নিয়ে হিন্দুস্থানের বতী জনপদ (দিল্লীর) নিজামউদ্দ্বীন থেকে সর্বপ্রথম কাজ শুরু করে এবং পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন প্রত্যেক গ্রামে-গঞ্জে, জনপদে গাস্তের প্রচলন এবং রাতের বেলায় মাসজিদে কিয়াম (অবস্থান) বা শবগুযারী প্রসিদ্ধ। এছাড়া

‘ইলমে গায়িব বা অদৃশ্যের জ্ঞান

‘ইল্মে গায়িব বা অদৃশ্যের জ্ঞান


‘‘শায়েখ আবু ইয়াকুব ছনুছী (রহঃ) বলেন, আমার একজন মুরীদ আমার নিকট আসিয়া বলিল আমি আগামী কাল জোহরের সময় মরিয়া যাইব। তাহার কথা মত অপর দিন জোহরের সময় সে হারাম শরীফে আসিল ও তওয়াফ করিল এবং কিছু দূরে গিয়া মরিয়া গেল। আমি তাহকে গোছল দিলাম ও দাফন করিলাম। যখন তাহাকে কবরে রাখিলাম তখন সে চোখ খুলিল। আমি বলিলাম মউতের পরেও কি জীবিত থাকা যায় না কি? সে বললি আমি জীবিত আছি এবং আল্লাহর প্রতিটি প্রেমিকই জীবিত থাকেন।’’   ([রওজ] ফাজায়েলে সাদাকাত বাংলা ২য় খন্ড-২৭০ পৃঃ)
‘‘জনৈক বুজুর্গ বলেন,

শ্রেষ্ঠ দাতা কে?

শ্রেষ্ঠ দাতা কে?


তাবলীগী-নিসাবের ফাযায়েলে সদাকাতের ২৪নং শিরোনামে জনাব যাকারীয়া লিখেছেন :
‘‘মিশরে একজন নেক বখত লোক ছিলেন। অভাব গ্রস্থ হইয়া লোক লোক তাহার নিকট আসিলে তিনি চাঁদা উসুল করিয়া তাহাকে দিয়া দিতেন। একদা জনৈক ফকীর আসিয়া বলিল আমার একটা ছেলে হইয়াছে। তাহার এছলাহের ব্যবস্থার জন্য আমার নিকট কিছুই নাই। এই ব্যক্তি উঠিল ও ফকীরকে অনেক লোকের নিকট লইয়া গিয়াও ব্যর্থ হইয়া ফিরিল। অবশেষে নৈরাশ হইয়া একজন দানবীর ব্যক্তির কবরের নিকট গিয়া সমস্ত কথা তাহাকে শুনাইল। অতঃপর

একটি যুবকের কাশ্ফের বয়ান ও সত্তর হাজার বার কালিমা পড়ার ফাযীলাত

একটি যুবকের কাশ্ফের বয়ান ও সত্তর হাজার বার কালিমা পড়ার ফাযীলাত


শায়েখ আবু করতবী (রহঃ) বলেন, আমি শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি সত্তর হাজার বার কালেমা পড়িবে সে দোজখ হইতে নাজাত পাইবে। ইহা শুনিয়া আমি নিজের জন্য সত্তর হাজার বার ও আমার স্ত্রীর জন্য সত্তর হাজার বার এবং এইরূপে এই কালেমা কয়েক নেছাব আদায় করিয়া পরকালের ধন সংগ্রহ করি। আমাদের নিকটেই একজন যুবক কাশফওয়ালা বলিয়া খ্যাতি লাভ করিয়াছিল। সে নাকি বেহেশেত ও দোজখ দেখিতে পাইত আমি উহাতে সন্দেহ করিতাম। এক সময়

হাদীস যাচাইয়ে স্বপ্ন বা কাশ্ফ গ্রহণযোগ্য নয়

হাদীস যাচাইয়ে স্বপ্ন বা কাশ্ফ গ্রহণযোগ্য নয়


শায়খের শেষোক্ত কথা দ্বারা জানা যায় হয় যে, কাশ্ফের মাধ্যমে উল্লেখিত হাদীসটি সহীহ প্রমাণিত হয়েছে। অথচ যা বিদ‘আতী ও ‘ইল্মহীন পীরদের দৌরাত্মের এ যুগে ভয় হয়, যেসব রিওয়ায়াতকে এ কিতাবে হাদীস বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতিতে জাল বা ভিত্তিহীন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বা হবে, সেগুলো সম্পর্কে কেউ এই টাল-বাহানা না করে যে, যদিও এগুলো হাদীস বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে মাওযূ‘ তথা জাল; কিন্তু আমি বা আমার পীর সাহেব খাব, কাশ্ফ বা ইলহামের মাধ্যমে এগুলো সঠিক বলে জানতে পেরেছি।
মনে রাখবেন

কাশ্ফ ও ইলহাম

কাশ্ফ ও ইলহাম


কাশ্ফ ও ইলহামকেও তথাকথিত কতিপয় তরীকাপন্থী বড় করে দেখে। কাশ্ফের মাধ্যমে কোন কথা জানতে পারাকে বুযুর্গীর সনদ মনে করে থাকে। আর কেউ কেউ তো কাশ্ফ ও ইলহামকে শারী‘আতের সনদই গণ্য করে থাকে এবং শুধু কাশফ ও ইলহাম অর্জন করার জন্য সুন্নাত নয়, এমন অনেক মুজাহাদায় লিপ্ত হয়। অথচ কুরআন-সহীহ হাদীসে কাশ্ফ ও

কাশ্ফের পরিচয়

কাশ্ফের পরিচয়


অদৃশ্য জগতের কোন কথা প্রকাশিত হওয়াকে কাশ্ফ বলা হয়। এ কাশ্ফ কখনও সঠিক হয় আবার কখনও মিথ্যা হয়, তাই এটি শারী‘আতের কোন দলীল তো নয়ই উপরন্তু একে শারী‘আতের কষ্টিপাথরে যাচাই করা যরূরী। এমনিভাবে কাশ্ফ কোন ইচ্ছাধীন কোন কিছু নয় যে, তা অর্জন করা শারী‘আতের কাম্য হবে অথবা সওয়াবের কাজ হবে। অনুরূপ

ফেরেশতারাও কি ভুল করে?

ফেরেশতারাও কি ভুল করে?


সলাতের ফাযীলাত বর্ণনা করতে গিয়ে জনাব শায়খুল হাদীস সাহেব লিখেছেন- ‘‘হযরত উম্মু কুলছুমের স্বামী আবদুর রহমান অসুস্থ ছিলেন। একবার তিনি এমন অচেতন অবস্থায় পতিত হলেন যে, সকলেই তাঁহাকে মৃত বলে সাব্যস্ত করিল। উম্মু কুলসুম তাড়াতাড়ি নামাযে দাঁড়াইলেন। নামায শেষ করিবা মাত্র আবদুর রহমান জ্ঞান লাভ করলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, আমার অবস্থা কি মৃত্যুর অনুরূপ হইয়াছিল?

দ্বীন ইসলামের দা‘ওয়াত

দ্বীন ইসলামের দা‘ওয়াত


মুসলিমদের এমন একটি জামা‘আত হবে যার মধ্যে ফিরকাবন্দী ও মাযহাব অবলম্বনকারী পাওয়া যায় না। অর্থাৎ যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলাম কবূল করে সে শুধু মুসলিম হয়, কোন মাসলাক, কোন মাযহাব, কোন মাকতাবা ফিকির, কোন ফিরকাবন্দী রায় ভিত্তিক ফিক্হ এর অনুসারী হয় না। এদেরতো শুধু একটিই দ্বীন এবং তা হল ইসলাম। তারা শুধু কুরআন মাজীদ এবং সহীহ হাদীসের  আহ্কামের পাবন্দ হয় এবং তাওহীদ ও সুন্নাতের পথযাত্রী হয়। সত্যিকার মুসলিম তাওহীদ ও ইত্তেবায়ে সুন্নাতের উপর দৃঢ়তার সাথে প্রতিষ্ঠিত থাকে। আর

তাবলীগ নিসাবের অনুবাদক কর্তৃক কুরআনের আয়াতের অর্থ বিকৃতি

তাবলীগ নিসাবের অনুবাদক কর্তৃক কুরআনের আয়াতের অর্থ বিকৃতি


فمن يكفر بالطاغوت ويومن بالله فقد استمسك...لانفصام لها
অর্থঃ যে মুর্তিকে অস্বীকার করিল এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনিল সে মজবুত রজ্জুকে আকড়াইয়া ধরিল যাহা কিছুতেই ছিন্ন হইবার নয়।     (ফাজায়েলে জিকির- ৩৩৪ পৃঃ)
উল্লেখিত আয়াতের অর্থ করতে গিয়ে তিনি যে ভুলটি করেছেন। তিনি طاغوت (তাগুত) শব্দের অর্থ লিখেছেন মূর্তি। অথচ

তাগুতের অর্থ এবং প্রধান প্রধান প্রকারসমূহ


তাগুতের অর্থ এবং প্রধান প্রধান প্রকারসমূহ


জেনে রাখুন! আল্লাহ আপনার প্রতি দয়া প্রদর্শন করুন আল্লাহ তা‘আলা আদম সন্তানের উপর প্রথম যে জিনিসটি ফারয্ করেছেন তা হচ্ছে তাগুতকে অস্বীকার করা এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখা। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী :
{وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولاً أَنِ اعْبُدُوا اللهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ}
‘‘আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে এ কথা বলে একজন করে রসূল পাঠিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর এবং তাগুত থেকে বিরত থাক।’’   (সূরা আন-নাহল ৩৬)
তাগুতকে অস্বীকার করার ব্যাখ্যা হচ্ছে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর

আরো একটি আয়াতের অর্থ বিকৃতি

আরো একটি আয়াতের অর্থ বিকৃতি


নিসাবের গ্রন্থকার কুরআনের আর একটি আয়াতের বিকৃত অনুবাদ করে চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছেন। তিনি সূরা কামারের ১৭ নং আয়াতখানি তুলে তার তরজমা করেছেন এভাবে :
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ
هم نـ كلام اك كو حفظ كرنـ كـ لئـ سهل كرركها هـ كوئ هـ خفظ كرنـ ولا؟
‘‘আমি কোরআনকে হেফজ করিবার জন্য সহজ করিয়া দিয়াছি, কোন ব্যক্তি কি হেফজ করিতে প্রস্ত্তত আছে?’’      (ফাজায়েলে কুরআন- ২২৬)
উক্ত আয়াতটির উপরে তিনি লিখেছেন, প্রকৃতপক্ষে

উম্মাতের মতবিরোধ রহমত

উম্মাতের মতবিরোধ রহমত


 اختلاف امتى رحمة ‘‘উম্মাতের মতবিরোধ রহমত’’ যঈফ ও জাল হাদীসঃ ১/১০৬ পৃঃ, হাঃ ৫৭।
শাইখ সাহেব তার ফাজায়েলে তাবলীগে এ বিষয়ে একটি অধ্যায় রচনা করেছেন। ‘আলিমদের মতবিরোধ রহমত স্বরূপ’ এছাড়া এ বিষয়ে তিনি একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থও রচনা করেছেন উল্লিখিত জাল হাদীসের উপর ভিত্তি করে। এবার লক্ষ্য করুন, হাদীসটি কতটুকু সত্য।
আল্লামা আলবানী (রহ.) বলেন, এর কোন ভিত্তি নেই এবং এই হাদীস নিজের অর্থের দিক থেকে সত্যপন্থী আলিমদের নিকট গ্রহণের অযোগ্য। ইবনু হাযাম এটাকে নিতান্তই বাজে কথা বলে ঘোষণা করেছেন। মানাবী সুবকীর উদ্ধৃতিতে বলেছেন,

হাদীস বর্ণনায় শাইখুল হাদীসের খিয়ানাত

হাদীস বর্ণনায় শাইখুল হাদীসের খিয়ানাত


পাঠক! একটু লক্ষ্য করলে আপনারাও বুঝতে সক্ষম হবেন, যিনি হাদীস বর্ণনা করতে আমাদের জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন, তিনি হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে কিভাবে খিয়ানাত করেছেন। তাবলীগী জামা‘আতের মধ্যে এ কথা প্রসিদ্ধ যে, ফাযায়েলের ক্ষেত্রে যঈফ হাদীস চলে। এটা আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। কারণ আমি নিজে তাবলীগী জামা‘আতের সঙ্গে বহু বৎসর কাজ করে পাকিস্তানের রায়বন্ড মারকায থেকে তিন চিল্লা ও সালের

কোন্ ‘আমালে আদাম (‘আ.)-এর তাওবাহ কবূল হল

কোন্ ‘আমালে আদাম (‘আ.)-এর তাওবাহ কবূল হল


‘‘হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুরে পাক (ছঃ) বলেন, যখন হজরত আদম (আঃ) হইতে কিছুটা পদস্খলন হইয়া গেল যাহার দরুণ তিনি বেহেশত হইতে দুনিয়াতে প্রেরিত হইলেন, তখন তিনি সব সময় কান্নাকাটি ও এস্তেগফার করিতে থাকেন। একদিন তিনি আছমানের দিকে মুখ উঠাইয়া আরজ করিলেন হে আল্লাহ! মোহাম্মাদ (ছঃ) এর উছিলায় আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি। অহী নাজেল হইল, মোহাম্মদ (ছঃ) কে?

নাবীর জন্য সব কিছু সৃষ্টি

নাবীর জন্য সব কিছু সৃষ্টি


‘‘আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি আসমানসমূহ (কোন কিছু) সৃষ্টি করতাম না’’- (ফাজায়েলে জিকির ৩য় ফসল, ১৪৩ পৃঃ; গৃহীত- ওয়াসিলার শির্ক ১৫ পৃঃ)। এটি লোক মুখে হাদীসে কুদসী হিসাবে যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। অথচ হাদীস বিশেষজ্ঞগণ এ ব্যাপারে একমত যে, এটি একটি ভিত্তিহীন রিওয়ায়াত, মিথ্যুকদের বানানো কথা। রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর হাদীসের সাথে এর সামান্যতম মিল নেই। ইমাম সাগানি, আল্লামা পাটনী, মোল্লা আলী কারী,

আদাম (‘আ.) ভারতবর্ষে অবস্থান এবং পদব্রজে হাজ্জ পালন

আদাম (‘আ.) ভারতবর্ষে অবস্থান এবং পদব্রজে হাজ্জ পালন


‘‘এক রেওয়ায়েতে আছে, হযরত আদম (আঃ) হিন্দুস্থান হইতে পায়দলে এক হাজার হজ্ব করিয়াছেন।’’  (ফাজায়েলে হজ্ব ৪৭ পৃঃ)
জনাব শায়খুল হাদীস সাহেব হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ঠিকই কিন্তু তার কোন সনদ উল্লেখ করেননি। এত বড় একজন মুহাদ্দিস যিনি শুধু ভারতবর্ষে নয় প্রায় মুসলিম দেশে যেখানে তাবলীগী জামা‘আতের যাতায়াত আছে সেখানেই তিনি শাইখুল হাদীস নামে খ্যাত। যদি

হিকায়াতে সহাবার একটি ভ্রামাত্নক বর্ণনা

হিকায়াতে সহাবার একটি ভ্রামাত্নক বর্ণনা


‘‘হজরত হানজালা (রাঃ) বলেন, একদা আমার হুজুরে আকরাম  (ছঃ) এর খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। হুজুর (ছঃ) ওয়াজ করিলেন, যাহাতে আমাদের অন্তর বিগলিত হইয়া গেল এবং চক্ষু হইতে ঝরঝর করিয়া অশ্রু বহিতে লাগিল। আমরা আমাদের সত্ত্বা বুঝিতে পারিলাম। হুজুরে আকরাম (ছঃ)-এর খেদমত হইতে উঠিয়া যখন বাড়ীতে আসিলাম, বিবি বাচ্চা কাছে আসিল, দুনিয়ার কথা বার্তা হইতে লাগিল। তাহাদের সহিত হাসি ঠাট্টা শুরু হইয়া গেল,’’ (হিকায়াতে সাহাবা ৫৮০ পৃঃ)
সম্মানিত পাঠকবর্গ!

সূফীবাদ বনাম ইসলাম

সূফীবাদ বনাম ইসলাম


সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা! এ প্রবন্ধে আমরা প্রচলিত সূফীবাদ তথা পীর-মুরীদী নিয়ে আলোচনা করব কারণ আমাদের আলোচ্য বইয়ের লেখক ও তাবলীগী জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতা উভয়েই পীর ও সূফী ছিলেন। যার কারণে আমরা দেখতে পাই তাবলীগী নিসাবে সূফীবাদের অনেক আলোচনা আছে। যা দেখলে মনে হয় তাবলীগওয়ালারা দ্বীন ইসলামের দা‘ওয়াতের নামে প্রকারান্তরে সূফীবাদের দিকেই আহবান করছে। তার জ্বলন্ত প্রমাণ হল জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইলিয়াস নিজে সূফী ছিলেন। তার পীর ছিলেন

সূফীদের মাযহাবসমূহ

সূফীদের মাযহাবসমূহ


সূফীদের তিনটি মাযহাবে ভাগ করা যায়।  যেমন :
(১) প্রাচ্য দর্শন ভিত্তিক মাযহাব الموهب الإشراقى যা দক্ষিণ এশীয় হিন্দু ও বৌদ্ধদের নিকট থেকে এসেছে। এই মাযহাবের অনুসারী সূফীরা মা’রেফাত হাসিল করার জন্য দেহকে চরমভাবে কষ্ট দিয়ে স্বীয় ক্বলবকে তাদের ধারণা মতে জ্যোতির্ময় করার চেষ্টা করে থাকে। প্রায় সকল সূফীই এরূপ প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে।

প্রচলিত তাবলীগের কাজ ‘ওয়াহী’ ভিত্তিক নয় বরং প্রতিষ্ঠাতার স্বপ্নের উপর প্রতিষ্ঠিত

প্রচলিত তাবলীগের কাজ ‘ওয়াহী’ ভিত্তিক নয় বরং প্রতিষ্ঠাতার স্বপ্নের উপর প্রতিষ্ঠিত


তাবলীগী জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইলিয়াস বলেন : ‘‘আজকাল খাবের মধ্যে আমার অন্তরে ছহী এলেম ঢালিয়া দেওয়া হয়, কাজেই আমার যেন ঘুম বেশী বেশী হয় সেই জন্য তোমাদের চেষ্টা করা উচিৎ। (হযরতজী বলেন, খুশ্কীর দরুণ আমি অনিদ্রায় ভুগিতেছিলাম, ডাক্তারদের পরামর্শানুসারে মাথায় তৈল ব্যবহার করাতে এখন কিছুটা নিদ্রা হইতেছে) তিনি আরও বলেন এই তাবলীগের তরীকা স্বপের মাধ্যমেই আমার উপর খোলা হইয়াছে। আল্লাহ পাক এরশাদ করিতেছেন :

কালিমায়ে তাইয়্যিবা

কালিমায়ে তাইয়্যিবা


তাবলীগ জামা‘আতের আর একটি গ্রন্থ যা এখনও বহুল পঠিত হয়নি। গ্রন্থটির নাম দা‘ওয়াত ও তাবলীগের ছয় সিফাত সম্পর্কিত ‘মুন্তাখাব হাদীস’ বাংলায় (নির্বাচিত হাদীস) যার মূল লেখক তাবলীগ জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার ছেলে জামা‘আতের আমীর মুহাম্মাদ ইউসুফ কান্ধালভী। উর্দু তরজমা ও তারতীব দিয়েছেন বর্তমান আমীর মুহাম্মাদ সা‘আদ সাহেব। বাংলায় অনুবাদ করেছেন কাকরাইল মাসজিদের ইমাম মুহাম্মাদ যুবায়ের সাহেব। উল্লেখিত গ্রন্থের প্রথম অধ্যায় হল ‘ঈমান’ তার ৩ নং হাদীস নিয়ে আলোচনা করছি। হাদীসটি নিম্নরূপ :

তাবলীগী নিসাব ও জিহাদ বিমুখতা

তাবলীগী নিসাব ও জিহাদ বিমুখতা


হজরত আতা (রহ.) বলেন, বায়তুল্লাহ্কে দেখাও ‘এবাদাত। যে বায়তুল্লাহ্কে দেখিল সে যেন সারা রাত্রি জাগ্রত রহিল, দিনভর রোজা রাখিল, আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করিল। (ফাজায়েলে হাজ্জ ৯৫ পৃঃ বাংলা)
ত্বাউস বলেন, বাইতুল্লাহ দর্শন করা উত্তম হল ঐ ব্যক্তির ‘ইবাদাতের চেয়ে যিনি সিয়াম পালনকারী, রাত্রি জাগরণকারী এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী- (প্রাগুক্ত ৭৭ পৃঃ, গৃহীতঃ প্রচলিত জাল হাদীস)। এতদ্ব্যতীত তাদের মধ্যে এই মওযূ (মনগড়া) হাদীসটি খুবই প্রসিদ্ধ রয়েছে।  رجعنا من الجهاد الاصغر إلى الجهاد الاكبر‘আমরা ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদের দিকে ফিরে এলাম। এর দ্বারা

জনৈক আনছারী (রাঃ) এর দালান ভাঙ্গিয়া ফেলা

জনৈক আনছারী (রাঃ) এর দালান ভাঙ্গিয়া ফেলা


‘‘এক দিন হুজুরে পাক (ছঃ) কোথাও যাইতেছিলেন। পথিমধ্যে গুম্বুজ বিশিষ্ট একটা উঁচু পাকা কুঠি দেখিতে পাইয়া হুজুর (ছঃ) সাথীদিগকে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিতে পারিলেন যে, উহা একজন আনছারী তৈয়ার করিয়াছেন। হুজুর (ছঃ) শুনিয়া চুপ করিয়া গেলেন। অন্য এক সময় সেই ছাহাবী হুজুরে পাক (ছঃ) এর খেদমতে আসিয়া ছালাম করা মাত্র হুজুর (ছ) মুখ ফিরাইয়া লইলেন। হুজুর (ছঃ) হয়ত খেয়াল করেন নাই মনে করিয়া ছাহাবী আবার ছালাম করিলেন। হুজুর (ছঃ) এইবারও উত্তর দিলেন না। লোকটি পেরেশান এবং

হযরত রাবেয়া বাছরীর ঘটনা

হযরত রাবেয়া বাছরীর ঘটনা


‘‘হজরত রাবেয়া বছরী (রহঃ) একজন বিখ্যাত অলী ছিলেন। তিনি সারা রাত্রি নামাজে কাটাইতেন। ছোবহে ছাদেকের সময় সামান্য একটু ঘুমাইতেন। ফর্শা হইয়া গেলে তাড়াতাড়ি উঠিয়া নিজেকে তিরস্কার করিয়া বলিতেন আর কতকাল শয়ন করিবে? শীঘ্রই করবে সিঙ্গার ফুঁক পর্যন্ত শয়ন করিবার সময় আসিতেছে।’’ (ফাজায়েলে জিকির ৩৬৪)
এ জাতীয় আরো অনেক ঘটনা তাবলীগী নিসাবে বর্ণিত আছে যা পাঠক মাত্রই ওয়াকিফহাল, যেমন- ‘‘এক সৈয়দ সাহেব সম্বন্ধে বর্ণিত আছে বারদিন পর্যন্ত একই অজুতে সমস্ত নামাজ আদায় করিয়াছেন এবং ক্রমাগত পনের বৎসর যাবত শুইবার সুযোগ হয় নাই।’’  (ফাজায়েলে নামায ১২৩ পৃঃ)
এসব ঘটনা পড়লে মনে হয়

কা‘বার ফাযীলাত

কা‘বার ফাযীলাত


عن ابن عباس رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان الله في كل يوم وليلة عشر ومائة رحمة تنزل هذا البيت ستون للطائفين اربعون للمصلين وعشرون للناظرين
‘‘এবনে আব্বাছ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, হুজুর (ছঃ) এরশাদ করেন, কা’বা শরীফের উপর দৈনিক আল্লাহ তায়ালার তরফ হইতে একশত বিশটা রহমত নাজেল হয়, তন্মধ্যে ষাট রহতম তাওয়াফকারীদের জন্য, চল্লিশ রহমত নামাজীদের জন্য এবং বিশ রহমত দর্শকদের জন্য।  (বায়হাকী- ফাজায়েলে হাজ্জ ৯৫ পৃঃ)
জনাব হাদীসটির কোন সনদ বর্ণনা না করে শুধু বাইহাকী লিখেছেন। এখন লক্ষ্য করুন হাদীসটির মান সম্পর্কে :

সূরা ইয়াসীনের ফাযীলাত

সূরা ইয়াসীনের ফাযীলাত


‘‘হাদীছে ছূরায়ে ইয়াছিনের বহু ফজীলত বর্ণিত আছে। একটি রেওয়ায়েতে আছে, প্রত্যেক জিনিসের একটি দিল আছে। কোরআনে দিল হইল ছূরা ইয়াছীন। যে ব্যক্তি ছুরা ইয়াছীন পড়িবে আল্লাহ পাক তাহাকে দশ খতম কোরআনের ছাওয়াব প্রদান করিবেন’’। (তাবলীগী নিসাব, ফাজায়েলে কুরআন ২২২)
এখানেও ঐ একই কান্ড, শায়খ সাহেব সূত্রবিহীন হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সহীহ কি যঈফ তা উল্লেখ করাতো দূরে থাক অন্তত উদ্ধৃতিটা দিলেও আমরা বুঝতে পারতাম হাদীসটি কোন্ পর্যায়ের। যাই হোক এবার লক্ষ্য করুন, হাদীসটি কোন্ পর্যায়ের। :

সূরায়ে ওয়াকি‘আর ফাযীলাত

সূরায়ে ওয়াকি‘আর ফাযীলাত


عن ابن مسعود قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من قرأ سورة الواقعهة في كل ليلة لم تصيبه فاقتة ابدا وكان ابن مسعود يامر بناتة يقرران بها كل ليلة
‘‘হযরত ইবনে মাছউদ (রাঃ) বলেন, হুজুরে পাক (সাঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাত্রে সূরায়ে ওয়াকেয়া পাঠ করিবে কখনও তাহাকে অভাব স্পর্শ করিবে না। এবনে মাছউদ (রাঃ) প্রতিরাত্রে তাহার কন্যাদিগকে ছুরা ওয়াকেয়া পড়িবার জন্য আদেশ দিতেন।’’ (তাবলীগী নিসাব, ফাজায়েলে কুরআন ২২৩)
এখানেও শায়খ একই কান্ড ঘটিয়েছেন। তবে একটি ইহসান করেছেন তাহলে বর্ণিত হাদীসটির গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন। তবে হাদীসটির মান বর্ণনা করেননি। আমরা শায়খের লিখিত হাদীসখানা হুবহু উল্লেখ করলাম। এবার লক্ষ্য করুন হাদীসখানা কোন্ পর্যায়ের।

তাবলীগি নিসাবের ভূমিকাতেই শির্ক

তাবলীগি নিসাবের ভূমিকাতেই শির্ক


তাবলীগী নিসাবের লেখক শায়খুল হাদীস জাকারিয়া বলেন : ‘‘ওলামায়ে কেরাম ও ছুফীকুল শিরোমণি, মোজাদ্দেদে দ্বীন, হজরত মাওলানা ইলিয়াছ (রহঃ) আমাকে আদেশ করেন যে, তাবলীগে দ্বীনের প্রয়োজন অনুসারে কোরআন ও হাদীছ অবলম্বনে যেন একটা সংক্ষিপ্ত বই লিখি। এতবড় বুজুর্গের সন্তুষ্টি বিধান আমার পরকালে নাজাতের উছিলা হইবে মনে করিয়া আমি উক্ত কাজে সচেষ্ট হই।’’ (তাবলীগী নিসাব, ফাজায়েলে তাবলীগের ভূমিকা, পৃষ্ঠা ৩)
 সম্মানিত মুসলিম ভ্রাতাগণ!

ওয়াসীলাহ ও তার বিধান

ওয়াসীলাহ ও তার বিধান


এ পর্যায়ে ওয়াসীলাহ এবং তার মর্ম বিধান সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক বলে মনে করছি। বিধায় এ বিষয়ে মোটামুটি ধারণা দেবার চেষ্টা করছি। আত্-তাওয়াস্সুল التوسل এর আভিধানিক অর্থ নৈকট্য লাভ করা। ওয়াসীলাহ হচ্ছে যার মাধ্যমে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছা যায়। অর্থাৎ ওয়াসীলাহ হচ্ছে সেই উপায় বা মাধ্যম যা লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। ইবনুল আসীর (রহ.) প্রণীত নিহাআত্ গ্রন্থে এসেছে

আল-কুরআনে ওয়াসীলার অর্থ

আল-কুরআনে ওয়াসীলার অর্থ


ইতোপূর্বে ওয়াসীলার যে আভিধানিক অর্থ বর্ণনা করেছি সালাফ সালেহীন (পূর্বসুরী বিদ্বান তথা সাহাবা ও তাবিঈগণ) কুরআনের উল্লেখিত ওয়াসীলাহ শব্দের অর্থ তাই করেছেন, যা সৎকর্মের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা অর্থের বহির্ভূত নয়। কুরআন কারীমে দু’টি সূরার দু’টি আয়াতে ওয়াসীলাহ শব্দটি এসেছে। সূরা দু’টি হচ্ছে মায়িদাহ ও ইসরা। আয়াত দু’টি নিম্নরূপ :

তাবলীগী নিসাব ও পরোক্ষ শিরকের প্রাদুর্ভাব

তাবলীগী নিসাব ও পরোক্ষ শিরকের প্রাদুর্ভাব


ফাজায়েলে দরূদ ৪৬নং কাহিনীতে শাইখ লিখেছেন-
‘‘হাফেজ আবু নাঈম হজরত ছুফিয়ান ছুরী (ছঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে আমি এক সময় কোথাও বাহিরে যাইতেছিলাম, তখন দেখিলাম যে একজন যুবক যখনই কোন কদম উঠাইতেছে অথবা রাখিতেছে তখনই পড়িতেছে- আল্লাহুম্মা ছাল্লে আলা মোহাম্মাদিন অআলা আ-লে মোহাম্মাদিন।’’ আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম তুমি কি এই আমল কোন কিতাবী প্রমাণের দ্বারা করিতেছ, না নিজের ইচ্ছামত করিতেছ যুবক বলিল আপনি কে?

ইসালে সাওয়াব

ইসালে সাওয়াব


‘‘আলী বিন মুছা হাদ্দাদ (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম আহমদ বিন হাম্বলের সাথে কোন এক জানাজায় শরীক ছিলাম। মোহাম্মদ বিন কোদামা জওহারীও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। সেই লাশ দাফন হওয়ার পর এক অন্ধ ব্যক্তি কবরের পার্শ্বে বসিয়া কোরআন পড়িতে লাগিল। ইমাম সাহেব বলেন এইরূপ তেলাওয়াত করা বেদআত। ফিরিয়া আসিয়া মোহাম্মদ বিন কোদামা ইমাম আহমদকে জিজ্ঞাসা করেন যে,

সমাজে এর ক্ষতিকর দিকসমূহ

সমাজে এর ক্ষতিকর দিকসমূহ


১। আজকাল মৃত ব্যক্তির নিকট বসে কুরআন তিলাওয়াত করা একটা রসম-রিওয়াজে পরিণত হয়েছে। এমনকি কোন বাড়ী থেকে কয়েকজনের তিলাওয়াত শুনলে মনে হয়, কেউ ওখানে মারা গেছে। যদি রেডিওতে সারাদিন কুরআন তিলাওয়াত শুনাযায় তবে বুঝতে হবে কোন নেতা মারা গেছেন। একবার কোন এক ব্যক্তি কোন এক অসুস্থ বাচ্চাকে দেখতে গিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করেন। শুনামাত্র তার মা চেঁচিয়ে উঠেন, আমার বাচ্চাতো এখনো মারা যায় নি, কিভাবে তুমি কুরআন পড়ছ?
২। যে মৃত ব্যক্তি জীবিত অবস্থায় সলাত ত্যাগ করেছে, তার জন্য মৃত্যুর পর কুরআন পড়লে কি লাভ হবে?
কারণ তাকে তো আযাবের খবর দেয়া হয়েছে :

তাবলীগী জামা‘আতের অভিনব গাশ্ত পদ্ধতি

তাবলীগী জামা‘আতের অভিনব গাশ্ত পদ্ধতি


তাবলীগী ভাইয়েরা তাঁদের তাবলীগের ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। বিশেষ করে যে, মাসজিদে অবস্থান করেন, সেখান থেকে আসর বাদ কিছু মুসল্লী একসঙ্গে বের হন দা‘ওয়াত দেয়ার জন্য। যাকে তারা উমুমি গাশ্ত বলেন। এই ঘোরাফেরাকে ফারসী ভাষায় ‘গাশ্ত’ বলা হয়। তাবলীগী গশ্তের ক্ষেত্রে তাবলীগী মরুববীগণ কতিপয় নিয়ম আবিষ্কার করেছেন। যথা :
১) আমীর,
২) রাহবার বা পথপ্রদর্শক,
৩) মুতাকাল্লিম (বক্তা) নির্বাচন।
এই তিন রকম ব্যক্তি অর্থাৎ

গাশতকালীন যঈফ হাদীসের ‘আমাল

গাশতকালীন যঈফ হাদীসের ‘আমাল


তাবলীগী ভাইদের দেখা যায় গাশ্তের সময মুতাকাল্লিম যাকে দা‘ওয়াত দেয়, তার সঙ্গে মুসাফাহা করে নিম্নোক্ত হাদীসের ফাযীলাত বর্ণনা করেন, যা আমি নিজেও তাবলীগ জামা‘আতে থাকাকালীন করেছি। ভুল বুছে অজ্ঞাতসারে যা করেছি, আল্লাহ যেন মাফ করেন। কারণ তিনি আমাদেরকে শিখিয়েছেন :

{رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا}

‘‘হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না।’’  (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৮৬)
হাদীসটি নিম্নরূপ :

প্রচলিত তাবলীগের তা‘লীম ‘ওয়াহীর’র নয় থানবী’র আর- তরীকা নাবী (সাঃ)’র নয় জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার

প্রচলিত তাবলীগের তা‘লীম ‘ওয়াহীর’র নয় থানবী’র আর- তরীকা নাবী (সাঃ)’র নয় জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার


‘‘একবার তিনি বলেন- হজরত থানবী (রহ.) বহুত বড় কাজ করিয়া গিয়াছেন, আমার অন্তর চায় তালীম হইবে তাঁহার আর তাবলীগের তরীকা হইবে আমার। এইভাবে তাঁহার তা’লীম যেন সাধারণ্যে ছড়াইয়া পড়ে।  (মালফুজাত-ইলিয়াস, মালফুজাত নং ৫৬ পৃঃ ৩৩, তাবলীগী কুতুবখানা, চকবাজার, ঢাকা।)
উল্লিখিত বাণী দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তাবলীগ জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার মনের বাসনা ছিল যে, তা’লীম হবে থানবীর অর্থাৎ থানবীর তা’লীমের তাবলীগ এবং

নামকরণে কুসংস্কার

নামকরণে কুসংস্কার


হিন্দু কিসসা-কাহিনীতে দেখা যায়, এক দেবতার উপাসক অন্য দেবতার নামে নামকরণ করে না এতে নাকি আরাধ্য দেবতা ক্রদ্ধ হয়। শাক্তদের মধ্যে পাওয়া যায় না, বৈষ্ণবদের নাম। আবার এক দেবতার পূজারী অন্য দেবতার কোপানলে পতিত হয়। এক দেবতা প্রসন্ন হয়, অন্য দেবতা রুষ্ট হয়। মনসা মঙ্গলের গল্প কাহিনীতে দেখা যায় :

তাবলীগী জামা‘আতে বহুল প্রচারিত জাল হাদীস

তাবলীগী জামা‘আতে বহুল প্রচারিত জাল হাদীস


তাবগীলী মুবাল্লিগদের একটি হাদীস বহুত বলতে শুনা যায়। হাদীস নিম্নরূপ :

فكرة ساعة خير من عبادة ستين سنة

‘‘এক ঘণ্টা কিছু সময় চিন্তা ফিকির করা ষাট বছরের ‘ইবাদাত হইতে উত্তম।’’ (তাবলীগ নিসাব ফাজায়েলে জিকির ৩০৪ পৃঃ)
হাদীসটি জাল। আবুশ শায়খ এটিকে ‘আল-আযমাহ’ গন্থে (১/২৯৭/৪২) উল্লেখ করেছেন এবং তার থেকে ইবনুল জাওযী ‘মাওযুআত’ (৩/১৪৪) গ্রন্থে উসমান ইবনু আবদুল্লাহ আল-কুরাশী সূত্রে ইসহাক ইবনু নাজীহ আল-মালতী হতে.....বর্ণনা করেছেন। অতঃপর বলেছেন,

তাবলীগী মরুববীগণ আপনাদের জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার এই অসি‘আতটি মানবেন কি?

তাবলীগী মরুববীগণ আপনাদের জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার এই অসি‘আতটি মানবেন কি?


তাবলীগী জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইলিয়াস (র.) বলেন : হজরত থানবী (রহ.) বহুত বড় কাজ করিয়া গিয়েছেন, আমার অন্তর চায় তালীম হইবে তাঁহার আর তাবলীগের তরীকা হইবে আমার। এইভাবে তাঁহার তা’লীম যেন সাধারন্যে ছড়াইয়া পড়ে। (মালফুজাত, মাওঃ ইলিয়াস, ৩৩ পৃঃ, মাঃ ৫৬)
সম্মানিত তাবলীগী মুরুববী ও মুবাল্লিগ ভাইয়েরা! উল্লিখিত মালফুজাত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জনাব থানবীর তা’লীমকে সাধারণ্যে ছাড়িয়ে দেয়া ইলিয়াস সাহেবের মনের বাসনা। আপনারা উক্ত বাসনা সম্ভবত যথাযথ পূরণ করেছেন না। তার বড় প্রমাণ হল

তাবলীগের চিল্লা পদ্ধতি নবোদ্ভাবিত বিদ‘আত

তাবলীগের চিল্লা পদ্ধতি নবোদ্ভাবিত বিদ‘আত


পাঠক! ‘চিল্লা’ ফারসী শব্দ। যার শাব্দিক অর্থ ‘চল্লিশ দিনের বিশেষ গুরুত্ব রহিয়াছে। যেমন হাদীস শরীফে মাতৃ উদরে মানব জন্মের ধারা বাহিকতা প্রসঙ্গে বলা হইয়াছে, মানুষ চল্লিশ দিন যাবত বীর্যরূপে অবস্থান করে। অতঃপর চল্লিশ দিনে গোশত পিন্ডরূপ ধারণ করে। তারপর প্রতি ৪০ দিনে এক এক অবস্থায় রূপান্তরিত হইতে থাকে, এই কারণে ছুফী দরবেশদের নিকট চিল্লার একটি বিশেষ তাৎপর্য রহিয়াছে।

এমনভাবে জিকির কর যেন লোকে পাগল বলে

এমনভাবে জিকির কর যেন লোকে পাগল বলে


عن أبى سعيدن الخدرى أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اكثروا ذكر الله حتى يقولوا مجنون رواه احمد

‘‘হুজুর পাক (ছঃ) এরশাদ করেন। এত বেশী পরিমাণ আল্লাহর জিকির করিতে থাক যেন লোকে তোমাকে পাগল বলিতে থাকে। (আহমাদ) অন্য হাদীছে বর্ণিত আছে, এত বেশী জিকির করিতে থাক যেন মোনাফেকগণ তোমাকে রিয়াকার বলিয়া আখ্যা দেয়।’’
ফায়েদাঃ এই হাদিছ দ্বারা বুঝা গেল যে, মোনাফেক এবং

আখিরী মুনাজাত ও অন্যান্য দু‘আ

আখিরী মুনাজাত ও অন্যান্য দু‘আ


আমাদের দেশে প্রতি বৎসর দু’টি স্থানে দু’টি বড় অনুষ্ঠান মহাসমারোহে পালিত হয়। একটি হল বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে আর একটি হল বিশ্ব ইজতেমায়। এক মঞ্জিলে বড় বড় বিত্তবান বা মালদার সওদাগর নিজেরা গরু, ছাগল, উট নিয়ে ওরস করতে যায়। অন্য মঞ্জিলে বড় ছোট সব ধরনের লোকেরা গাট্ঠি-বোচকা নিয়ে এজতেমা করতে যায়। এর একটায় করতে যায় জেকের আর একটায় করতে যায় ফেকের। একটায় করতে যায় আখিরী মুনাজাত আর একটায় করতে যান আখিরী মুলাকত। আমরা জানি

ফাযায়েলে আমল, না মাসায়েলে আমল?

ফাযায়েলে আমল, না মাসায়েলে আমল?


‘‘হযরত ছায়ীদ বিন্ মোছাইয়্যেব (রহঃ) একজন বিখ্যাত তাবেয়ী ও মোহাদ্দেছ ছিলেন। আব্দুল্লাহ বিন আবি বেদাআ তাঁহার খেদমতে বেশী বেশী আগমন করিতেন। এক সময় কয়েকদিন যাবত অনুপস্থিত থাকার পর হঠাৎ হাজির হওয়ায় হজরত ছায়ীদ (রহঃ) তাঁহাকে অনুপস্থিত থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। আব্দুল্লাহ বলিলেন, আমার বিবির এন্তেকাল হইয়া গিয়াছিল তাই বিভিন্ন ঝামেলায় ব্যস্ত ছিলাম। হজরত ছায়ীদ বলিলেন,

ইবনু জুবায়র (রাঃ)’র রক্ত পান


ইবনু জুবায়র (রাঃ)’র রক্ত পান


‘‘জুহুর পাক (ছঃ) একবার সিঙ্গা লাগাইয়া আব্দুল্লাহ এবনে জোবায়ের (রাঃ)-কে বলিলেন, এই রক্তগুলি কোথাও পুতিয়া রাখ। তিনি আসিয়া আরজ করিলেন, হুজুর! পুতিয়া দিয়াছি। হুজুর (ছঃ) বলিলেরন, কোথায় পুতিয়াছ! তিনি বলিলেন, আমি উহা পান করিয়া ফেলিয়াছি। হুজুর (ছঃ) ফরমাইলেন, যে শরীরে আমার রক্ত প্রবেশ করিয়াছে তাহার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম কিন্তু

নাবী প্রেমের বিভিন্ন কাহিনী

নাবী প্রেমের বিভিন্ন কাহিনী


১। জনৈক বেদুঈন হুজুর (ছঃ)-এর কবর শরীফের নিটক দন্ডায়মান হইয়া আরজ করিল, হে রব! তুমি গোলাম আজাদ করিবার হুকুম করিয়াছ। ইনি তোমার মাহবূব আমি তোমার গোলাম। আপন মাহবূবের কবরের উপর আমি গোলামকে আগুন হইতে আজাদ করিয়া দাও। গায়েব হইতে আওয়াজ আসিল, তুমি একা নিজের জন্য কেন আজাদী চাহিলে? সমস্ত মানুষের জন্য কেন আজাদী চাহিলে না। আমি তোমাকে আগুন হইতে আজাদ করিয়া দিলাম। (ফাজায়েলে হজ্ব- ১৫২-১৫৩ পৃঃ)
সম্মানিত মুসলিম ভ্রাতাগণ!

তাসবীহ দ্বারা যিকর করা বিদ‘আত

তাসবীহ দ্বারা যিকর করা বিদ‘আত


‘‘শাইখুল হাদীস সাহেব তাবলীগী নিসাবের ফাজায়েলে যিকরের ৪৫৪ পৃষ্ঠায় সহীহ মুসলিমে একটি হাদীসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘‘অন্য হাদীছে আসিয়াছে, হজরত ছায়াদ (রহঃ) হুজুরের সহিত জনৈক মেয়ে লোকের বাড়িতে গিয়া দেখন যে, তাহার সামনে অনেক গুলি মেয়ে খেজুরের বিচি অথবা পাথরের কঙ্কর পড়িয়া আছে যাহার দ্বারা সে তাছবীহ পাঠ করিয়া থাকে।........এ জন্য সুফীগণ বলেন,

তাবলীগী নিসাব কর্তৃক একটি পরিভাষা এবং শারী‘আতে তার স্থান

তাবলীগী নিসাব কর্তৃক একটি পরিভাষা এবং শারী‘আতে তার স্থান


রুহুল বয়ানে আবদুল্লাহ বিন ওমর (রঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুর (ছঃ) বলেন, আমার উম্মাতের মধ্যে সব সময় পাঁচ শত বিশিষ্ট অলী ও চল্লিশ জন আবদাল থাকেন। তন্মধ্যে কেউ মারা গেলে অন্য একজন তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। ছাহাবারা তাদের বিশিষ্টি আমালের কথা জিজ্ঞাসা করিলে হুজুর (ছঃ) বলেন, তাহারা অত্যাচারীকে ক্ষমা করিয়া দেয়, দুর্ব্যবহারকারীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করে ও

আল্লাহ ওয়ালাদের ছোহবত

আল্লাহ ওয়ালাদের ছোহবত


{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ}

‘‘হে বিশ্বাসী বান্দাগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্য বাদীদের সাথে থাক।’’ (তাওবাহ : ১১৯)
 মোফাচ্ছেরীনগণ সত্যবাদীদের অর্থ এখানে মাশায়েখ ও ছুফিয়ায়ে কেরাম দ্বারা করিয়াছেন। যখন কোন ব্যক্তি তাঁহাদের সাহচর্য লাভ করেন তখন তাঁহাদের তরবিয়াত ও আল্লাহ প্রদত্ত শক্তির বদৌলতে সে তারাক্বীর উচ্চ শিখরে আরোহন করিয়া যায়। হযরত শায়েখ আকবর (রঃ) লিখিয়াছেন,

প্রিয় মাহবুব (ছঃ) কর্তৃক হজরত জামী (রঃ) কে মদীনায় যাইতে নিধেষ করার কেচ্ছা

প্রিয় মাহবুব (ছঃ) কর্তৃক হজরত জামী (রঃ) কে মদীনায় যাইতে নিধেষ করার কেচ্ছা


হযরত জামী (রহঃ) এই কাছীদা লেখার পর একবার হজ্জে রওয়ানা হইয়া গিয়াছিলেন। তাঁহার ইচ্ছা ছিল মদ্বীনায়ে মোনাওয়ারা পৌঁছিয়া হুজুরে পাক (ছঃ)-এর দরবারে এই কাছিদা পাঠ করিবে। হজ্জ আদায় করার পর তিনি যখন মদ্বীনা শরীফ জিয়ারতের এরাদা করিলেন। তখন মক্কা শরীফের আমীর হুজুরে আকরাম (ছঃ) এর জিয়ারত লাভ করিলেন।........... ইহার পর

ঊনপঞ্চাশ কোটি ফযীলতের হাক্বীকাত

ঊনপঞ্চাশ কোটি ফযীলতের হাক্বীকাত


আমাদের প্রচলিত তাবলীগী ভাইদের ৬নং এর শেষ নাম্বার হ’ল ‘দাওয়াত ও তাবলীগ’ যার ফাযীলত বর্ণনা করতে গিয়ে তাবলীগী ভাইদের মুখ থেকে শোনা যায়, এ রাস্তায় বের হয়ে অর্থাৎ তাবলীগী জামা‘আতের সহিত বের হলে প্রতিটি আমলের বিনিময় নাকী ঊনপঞ্চাশ কোটি সওয়াব পাওয়া যায় যেমন তারা বলে যদি কেউ তাবলীগে বের হয়ে এক রাক‘আত সলাত আদায় করে তাহলে সে ঊনপঞ্চাশ কোটি সলাত আদায় করার সওয়াব পায়। একবার ‘সুবহান আল্লাহ’ বললেও

সলাতুল হাজাতের তাহক্বীক

সলাতুল হাজাতের তাহক্বীক


হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তির কোন প্রয়োজন দেখা দেয় বা সে কোন অভাবের সম্মুখীন হয় তা দ্বীন সংক্রান্ত হোক বা দুনিয়া সংক্রান্ত এবং উক্ত কাজের সম্পর্কে আল্লাহর সঙ্গে হোক বা বান্দার সঙ্গে হোক তার উচিৎ এই যে, সে যেন খুব ভাল করে অযু করে তারপর দু’ রাকআত নামায পড়ে অতঃপর আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসামূলক দু‘আ পাঠ করে ও হুজরের (ছঃ) উপর দরূদ পড়ে নিম্নোক্ত দু‘আ পাঠ করে। ইনশা-আল্লাহ তার হাজাত নিশ্চয়ই পূর্ণ হবে।
 দোয়া এই

মুখস্ত শক্তি বাড়ানোর দু‘আ সংক্রান্ত একটি জাল হাদীস

মুখস্ত শক্তি বাড়ানোর দু‘আ সংক্রান্ত একটি জাল হাদীস


তাবলীগী নিসাবের ফাযায়েলে আ‘মালের ফাযায়েলে কুরআনের ১০৫ পৃষ্ঠা থেকে ১০৯ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ‘‘কুরআন শরীফ হেফজ করিবার দু‘আ’’ অধ্যায়ে একটি দীর্ঘ হাদীস উলেখ করিয়াছে যাহা সম্পুর্ণ উল্লেখ করিলে কলেবর বৃদ্ধি পাইবে তাই হাদীসটির প্রথম ও শেষ অংশ থেকে কিয়াদংশ তুলে ধরা হল। (উল্লেখ্য পাঠকদের যাতে খুঁজতে অসুবিধা না হয় তার জন্য আরো একটু সহজ বিষয় হ’ল উল্লিখিত হাদীসটি ফাযায়েলে কুরআনের ‘উপসংহার’ এর পূর্বের হাদীটি। হাদীসটি নিম্ম রূপ।
‘‘একদিন হযরত আলী (রাঃ) আসিয়া আরজ করিলেন- ইয়া রাছুলুল্লাহ!

সলাত এবং ঢোলের শব্দ

সলাত এবং ঢোলের শব্দ


আমের বিন্ আব্দুল্লাহ বলেন, নামাজ পড়া কালে (ঘরের লোকদের) তো দূরের কথা ঢোলের শব্দও আমি শুনিতে পাই না। (তাবলীগী নিসাবের ফাযায়েলে আমলের ফাযালেলে নামাযের ১২১ পৃঃ তাবলীগী কুতুবখানা ৬০, চক বাজার ঢাকা- ১২১১, সংশোধির সংস্করণ ৫ই সেপ্টেম্বর ২০০১ ইং, মূল উর্দ্দু ফাযায়েলে নামাজ আকস ৮৪ পৃঃ, দারুল ইশাআত, উর্দ্দু বাজার করাচী- ১)
সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা এতো ছিল তাবলীগী নিসাবের সূফি বুজুরগের সলাতের অবস্থা, এখণ লক্ষ্য করুন, সকল মুসলিম নর নারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একমাত্র

সাহাবাগণের অনুসরণ সংক্রান্ত যঈফ হাদীস

সাহাবাগণের অনুসরণ সংক্রান্ত যঈফ হাদীস


‘‘অন্য হাদীছে আছে আমার ছাহাবারা নক্ষত্রের সমতুল্য। তোমরা যাহারই অনুসরণ করিবে হেদায়াত প্রাপ্ত হইবে।’’
মোহাদ্দেছীনগণ এই হাদীছে কিছুটা আপত্তি করিয়াছেন। এবং হাদীসের তালিকাভূক্ত করিতে কাজী আয়াজের উপর অভিযোগও করিয়াছেন। কিন্তু মোল্লা আলী কারী (রহ.) বলেন, বিভিন্ন সূত্রে রেওয়ায়েত হওয়ার দরুন হয়ত ইহা কাজী সাহেবের নিকট গ্রহণযোগ্য অথবা ফাজায়েলে আ‘মলের ব্যপারে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হাদীস ও সর্ব সম্মতভাবে গ্রহণযোগ্য তাই তিনি জিকির করিয়াছেন।’’ (তাবলীগী নিসাব হেকায়াতে সাহাবার নাবী প্রেমের বিভিন্ন কাহিনী অধ্যায়-২৭০ পৃষ্ঠা)
সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা!

হাফেজে কুরআনের ফজিলতে দুর্বল হাদীস

হাফেজে কুরআনের ফজিলতে দুর্বল হাদীস


‘‘হজরত আলী (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুরে পাক (ছঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করিয়াছে ও উহাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়াছে উহার হালালকে ও হারামকে হারাম জানিয়াছে আল্লাহ পাক তাহাকে বেহেশতে দাখিল করিবেন এবং তাহার পরিবারস্থ এমন বিশজন  লোকের জন্য সুপারিশ কবূল করিবেন যাহাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত ছিল।’’ (তিরমিজির উদ্ধতিতে ফাজায়েলে কুরআন ১৮১ পৃষ্ঠা)
হাদীসটি উল্লেখ করার পর তাবলীগী নিসাবের লেখক জনাব যাকারীয়া হাদীসটিকে যঈফ উল্লেখ করেছেন আরবীতে, যেমন হাদীসটির শেষে দুই ব্যারাকেটের মধ্যে আরবীতে তিনি লিখেছেন,

তাবলীগী নিসাবের সলাত সংক্রান্ত জাল হাদীস

তাবলীগী নিসাবের সলাত সংক্রান্ত জাল হাদীস


আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ হল দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সলাত। যা যথাসময়ে আদায় করা প্রত্যেক আকেল-বালেগ মু’মিনের প্রতি সর্বপ্রথম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সলাতই মু’মিন-মুসলিমের পরিচয় এবং ঈমান ও কুফরীর মধ্যে পাথর্ক্য। সলাত পরিত্যাগকারী ‘‘কাফির ও মুশরিকদের দলভুক্ত’’ বলে গণ্য হবে। কিয়ামাতের দিন সর্বপ্রথম সলাতেই হিসাব গ্রহণ করা হবে। এভাবে অগণিত দলীল প্রমাণ আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসে ফরয সলাতের গুরুত্ব ও সলাতে অবহেলার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আমরা জানতে পারি।
কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল

নামাজ না পড়া সম্পর্কে ৮০ হুকবার জাল হাদীস

৮০ হুকবার জাল হাদীস


‘‘হুজুরে পাক (ছঃ) ফরমাইয়াছেন : যে ব্যক্তি নামাজ এমনিভাবে ছাড়িয়া দেয় যে, উহার সময় চলিয়া যায়। অতঃপর কাজা পড়ায়ে লয়, জাহান্নামের অগ্নিতে সে এক হোকবা পরিমাণ দগ্ধ হইবে। আশি বৎসরে এক হোকবা। প্রতি বৎসর তিনশত ষাট দিনে ও প্রতিদিন দুনিয়ার একহাজার বৎসরের সমতুল্য হইবে সুতরাং এক হোকবার পরিমান দুই কোটি আষ্টাশি লক্ষ বৎসর।’’  (মাজালেছুর আবরারের উদ্ধৃতিতে ফাজায়েলে নামাজ ৮৯ পৃষ্ঠা)
সম্মানিত পাঠক! এখানেও পূর্বের ন্যায় ঐ একই কান্ড ঘঠিয়েছেন শাইখ যাকারিয়া কান্দাভী হাদীসটি যে জাল তা তিনি নিজের তাহক্বীকের ভিত্তিতে আরবীতে লিখলেও উর্দূ এবং বাংলায় তার অনুবাদ করা হয়নি। হাদীসটি উদ্ধৃত করে তিনি বলে :

তাবলীগী নিসাব সম্পর্কে বাহরাইন প্রবাসী এক মুসলিম ভাই’র তিক্ত অভিজ্ঞতা

তাবলীগী নিসাব সম্পর্কে বাহরাইন প্রবাসী এক মুসলিম ভাই’র তিক্ত অভিজ্ঞতা


‘‘সউদী আরবে পাথিব উপার্জনের লক্ষে এসে আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে সঠিক দ্বীনের সন্ধান পেয়েছি। পীরতন্ত্র আর তথাকথিত বুযুর্গ ও মুরববীদের পথই সঠিক পথ বলে যে ভ্রান্ত বিশ্বাসে বিশ্বাসী ছিলাম, ‘উনাইযা ইসলামিক সেন্টার’-এর মুহতারাম ওস্তাদ অধ্যাপক রশীদ আব্দুল ক্বাইয়ূম-এর দা‘ওয়াত ও একান্ত প্রচেষ্টায় ভ্রান্ত বিশ্বাসের সেই বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেয়েছি। আল-হামদুলিল্লাহ। মুহতারাম ওস্তাদের ছহীহ দলীলভিত্তিক আলোচনায় আমার মত শত শত যুবক পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের ছত্রছায়ায় এসে ধন্য হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশ প্রচলিত কয়েকটি বাতিল ফের্কা ও জামা‘আত সম্বন্ধে আলোচনার নিমিত্তই আজকের এ কলামের অবতারণা।
আদি পিতা আদম (আঃ)-এর একমাত্র শত্রু ছিল ইবলীস শয়তান। সেই থেকে

বিশ্ব বরেণ্য আলিমগণের দৃষ্টিতে তাবলীগ জামা‘আত ও তার নিসাব

বিশ্ব বরেণ্য আলিমগণের দৃষ্টিতে তাবলীগ জামা‘আত ও তার নিসাব


সম্মানিত মুসলিম ভ্রাতাগণ! এ অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব বিশ্বের সকল মুসলিমদের নিকট সমাদৃত আলিম উলামাদের মতামত, বিশেষ করে আরব বিশ্বের আলিমগণের অভিমত। কারণ আমি এ গ্রন্থের শুরুতে বলেছি যে, আরব বিশ্বের উলামায়ে কেরাম তাবলীগী জামা‘আত ও তার নিসাবকে বাতিল বলে প্রত্যাখান করেছেন। তারই প্রমাণ স্বরূপ এখানে বর্তমান শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ কিছু আলিমের মতামত সংক্ষেপে তুলে ধরছি। যাঁদের মতামত তুলে ধরছি তাঁরা হলেন :

তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ.) অভিমত

শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ.) অভিমত


শাইখ নাসিরুদ্দ্বীন আলবানী (রহ.)’র নিকট প্রশ্ন করা হয় :
তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? এদের সাথে কোন তালিবে ‘ইলম বা অন্য কেউ আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে বের হতে পারে কি?
উত্তর : তাবলীগ জামা‘আত আল্লাহর কুরআন এবং রসূলের হাদীসের তরীকার উপর প্রতিষ্ঠিত নয় এবং আমাদের সালফে সালিহীনদের পন্থার উপর নয়। অবস্থা যখন এই, তখন তাদের সাথে বের হওয়া জায়িয হবে না। কেননা এটা আমাদের সালফে সালিহীনদের তাবলীগের পন্থার পরিপন্থী। দা‘ওয়াতের কাজে বের হবেন আলিম বা বিদ্বান ব্যক্তি। আর এরা যারা বের হচ্ছে

তথ্য পঞ্জি

তথ্য পঞ্জি


১। আল-কুরআনুল কারীম- ই,ফা,বা
২। তাফসীরে ইবনে কাসীর- হাফেজ আল্লামাহ ইমাদুদ্দিন ইবনু কাসীর (রহ.) (৭৭৪ হি:) অনুবাদ ডঃ মুজীবুর রহমান প্রকাশ কালঃ জুলাই ১৯৯৮ ইং রবিউল আউয়াল ১৪১৯ হি: শ্রাবণ-১৪০৫ বাং)
৩। তাফসীরে মা‘আরেফুল কুরআন- মুফতী মুহাম্মদ শাকী (রহ.) অনুবাদ ; মহিউদ্দিন খান বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর। খাদেমুল হারামাইন শরীফাইন বাদশা ফাহদ কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প,  পো : বক্স নং-৩৫৬১ মদ্বীনা মোনাওয়ারা।
৪। রুহুল মাআনী- মাহমূদ আলূসী (১২৭০ হিঃ) এমদাদিয়া, মুলতান, পাকিস্তান।
৫। তাফসীরে কাবীর- ফখর উদ্দ্বীন রাযী
৬। তাফসীরে তাবারী- আল্লামাহ তাবারী
৭। তাফসীরে কুরআনে আযীযী- মাসউদ আহমাদ, করাচী
হাদীস, শর্হ ও উসূমে হাদীস

রমাযানের ফাযীলাত (প্রথম পরিচ্ছেদ)

রমাযানের ফাযীলাত (প্রথম পরিচ্ছেদ)


শায়খ সাহেব ফাজায়েলে রমজানের প্রথম পরিচ্ছেদের প্রথমেই একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং তার শেষে আরবীতে মন্তব্য লিখেছেন। কিন্তু উর্দূতে তার অনুবাদ করেন নি এবং বাংলায় যিনি অনুবাদ করেছেন তিনি হলেন মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ (এম, এ রিসার্চ স্কলার) তিনিও আরবী মন্তব্যটির অনুবাদ করেন নি। আমরা তার লিখিত অনুবাদটি হুবহু তুলে ধরছি এবং হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের মতামত পাঠকের সামনে তুলে ধরছি-
‘‘হযরত ছালমান (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন,

সাহারী ও ইফতার নিয়ে বাড়াবাড়ী

সাহারী ও ইফতার নিয়ে বাড়াবাড়ী


‘‘হজরত ছহল বিন আবদুল্লাহ তছ্তরী (রহ:) পনের দিনে একবার খানা খাইতেন, তবে ছুন্নত হিসাবে রমজানের ভিতর প্রতিদিন এক লোকমা খাইতেন ও শুধু পানি দ্বারা ইফতার করিতেন। হযরত জুনায়েদ বাগদাদী (রহ.) হামেশা রোজা রাখিতেন কিন্তু কোন আল্লাহর অলি মেহমান হইলে রোজা ভাঙ্গিতেন এবং বলিতেন এই রকম বন্ধুর সহিত খাওয়া রোজার চেয়ে কম মর্যাদা রাখে না।’’ (ফাজায়েলে রমজান- ৪৯৫ পৃঃ)
‘‘এবনে দাক্বীকুল ঈদ বলেন,

ইফতারের সময় পঠিতব্য দু‘আ

ইফতারের সময় পঠিতব্য দু‘আ


দারুল উলূম দেওবন্দের পরেই সাহারানপুর মাদরাসার স্থান। সেই মাদরাসার সনামধন্য শাইখুর হাদীস ‘ফাযায়িলে ‘আমাল’-এর লেখক জনাব যাকারিয়া সম্ভবত সজ্ঞানে হাদীসের শব্দে বাড়াবাড়ি করেছেন। যেমন তিনি তাবলীগী নিসাবে লিখেছেন :
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَبِكَ امَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَعَلىرِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
আয় আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রোজা রাখিয়াছি এবং তোমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছি এবং তোমার উপর ভরসা করিয়াছি ও তোমারই প্রদত্ত নেয়ামত দ্বারা ইফতার করিতেছি।
অতঃপর তিনি লিখেছেন,
‘‘হাদীছে আরও সংক্ষিপ্ত দোয়া বর্ণিত আছে।’’ (ফাজায়েলে রমজান- ৪৯১ পৃঃ)
শাইখ সাহেব নিজেই স্বীকার করেছে যে,

ই‘তিকাফ প্রসঙ্গ

ই‘তিকাফ প্রসঙ্গ


عن ابن عباس رضى الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال في المعتكف هو يعتكف الذنوب ويجرى له من الحسنات كعامل الحسنات كلها (مشكوة عن ابن ماجة)
অর্থঃ হুজুর (ছঃ) এরশাদ করেন, এ’তেকাফকারী সকল পাপ হইতে মুক্ত থাকে এবং তাহার জন্য এত বেশী নেকী লিখিত হয় যেন স্বয়ং সে সর্বপ্রকার সৎকাজ করিয়াছে।  ([মেশকাত] তাবলীগী নিসাব- ফাজায়েলে রমাযান- ৫২০)
হাদীসটি যঈফ, যঈফ ইবনে মাজাহ-

ই‘তিকাফ সংক্রান্ত আর একটি যঈফ হাদীস

ই‘তিকাফ সংক্রান্ত আর একটি যঈফ হাদীস


من اعتكف عشرا في رمضان كان كحجتين وعمرتين
রসূললুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমাযানের দশ দিন ই‘তিকাফ করলো সে যেন দুই হাজ্জ ও দুই উমরাহ করলো।
হাদীসটি জাল : বায়হাকী ‘আস-শু‘আব’ গ্রন্থে হুসাইন বিন আলী (রাঃ) হতে হাদীসটি মারফূ‘ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। হাদীসের সনদ দুর্বল। সনদে বর্ণনাকারীদের একজন মুহাম্মাদ বিন যাযান পরিত্যাক্ত রাবী। তার সম্পর্কে ইমাম বুখারী (রহ.) বলেছেন, তার থেকে কেউ হাদীস লিখবে না। সনদে আরো রয়েছে, আন্বাসা ইবনু আব্দুর রহমান। তার সম্পর্কে ইমাম বুখারী (রহ.) বলেছেন, মহাদ্দিসগণ তাকে পরিত্যাগ করেছেন। ইমাম যাহাবী ‘‘আয-যেয়াফা’’ গন্থে বলেছেন: তিনি মাতরূক তাকে জাল করার দোষে দোষী করা হয়েছে।স ‘‘ফায়যুল কাদীর’’ গ্রন্থে এরূপই এসেছে। (যইফ ও জাল হাদীস সিরিজ ২য় খন্ড হা ৫১৮ পৃ: ৭৭-৭৮)
পাঠক মহোদয়!

যে সমস্ত জাল যঈফ হাদীস তাবললীগ জামা‘আতে বহুল প্রচারিত

যে সমস্ত জাল যঈফ হাদীস তাবললীগ জামা‘আতে বহুল প্রচারিত


সম্মানিত পাঠক! এ প্রবেন্ধ আমরা ঐ সমস্ত জাল ও যঈফ হাদীস তুলে ধরছি যা তাবলীগ জামা‘আতের মুরুবিব এবং তাদের মুবাল্লিগরা অহরহ বর্ণনা করে। আমার কথায় বিশ্বাস না হলে তাবলীগী মারকায অথবা তাবলীগী ভাইদের বয়ান ও তাদের সাথে অনন্ত তিন দিন সময় দিয়েছেন অথবা যারা এক চিল্লা তিন চিল্লা সময় জামা‘আতে লাগিয়েছেন তারা যদি আল্লাহকে ভয় করেন তাহলে মনে হয় আমার কথা সত্য প্রামণিত হবে এবং তা তারা অবশ্যই স্বীকার করবেন। এ সমস্ত হাদীস নামের মিথ্যা বর্ণনা অনেকবার আমি আমার নিজ কানে তাবলীগে সময় দিয়ে শুনেছি। সম্মানিত পাঠক! আমি নিজে তাবলীগ জামা‘আতের সাথে পাকিস্তানের রায়বন্ড থেকে (......সালের অর্থাৎ এক সৎসর) জামা‘আতের সাথে সময় লাগাই ও নিজামউদ্দিনে এ অধম কিছু সময় অতিবাহিত করে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতার ফল আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

রওজা পাক যিয়ারাত করার আদব

রওজা পাক যিয়ারাত করার আদব


শাইখ সাহেব তার ফাযায়েলে হজ্বের মধ্যে রওজা পাক যিয়ারাতের ৬১টি আদব লিখেছেন যার অধিকাংশই ভিত্তিহীন ও মনগড়া তন্মধ্যে ১৪ নং এ লিখেছেন :
‘‘যখন বহু আকাঙ্ক্ষিত সেই ‘কোবায়ে খাজরা’ অর্থাৎ সবুজ গম্বজ নজরে পড়িবে, তখন হুজুরের আজমত এবং উঁচু শান ইত্যাদি মনের মধ্যে হাজির করিয়া এই কথা চিন্তা করিবে যে, সারা মাখলুকের সেরা মানব, আম্বিয়ায়ে কেরামের সর্দার ফেরেশতাদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ জাত এই কবরে শায়িত আছেন। আরও মনে করিবে, যেই জায়গা হুজুরে পাক (ছঃ)-এর শরীর মোবারকের সহিত মিলিত আছে, উহা আল্লাহ পাকের আরশ হইতেও শ্রেষ্ঠ, কা’বা হইতেও শ্রেষ্ঠ, কুরছী হইতেও শ্রেষ্ঠ, এমনকি আছমান জমিনের মধ্যে অবস্থিত যে কোন স্থান হইতেও শ্রেষ্ঠ।  (তাবলীগী নিসাব ফাজায়েলে হজ্ব- ১৩৩ পৃঃ)
পাঠক!

ফাযায়েলে দরূদ-এর ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ী

ফাযায়েলে দরূদ-এর ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ী


‘‘হুজুর (ছঃ) এরশাদ, ‘‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আমার উপর আশী বার দরূদ শরীফ পাঠ করিবে তার আশী বৎসরের গোনাহ মাফ হইয়া যাইবে।’’ (তাবলীগী নিসাব, ফাজায়েলে দরূদ শরীফ- ৪৮ পৃঃ)
শাইখ উল্লিখিত হাদীসটি কোন উদ্ধৃতি ছাড়াই উল্লেখ করেছেন। মুসলিম ভ্রাতাগণ এবার লক্ষ করুন! হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দীসিনগণ কি মন্তব্য করেছেন। এই হাদীটি শুধু যঈফই নয়; বরং আল্লামা আলবানী যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, সেই অনুসারে জালও বটে। (দেখুন : সিলসিলাতুল আহদীসুয যাঈফা- ১/১২৫ বিস্তারিত দেখুন বাংলা যঈফ ও ও জাল হাদীস সিরিজ ১ম খন্ড হা,২১৫, পৃষ্ঠা ২৩৪)
তাছাড়া এই হাদীসটা জাল হওয়ার প্রমাণ এর বিষয় বস্ত্তর মধ্যেই রয়েছে। কেননা এতে জুমার দিন আশিবার দরূদ পড়ার পুরষ্কার এই বলা হয়েছে যে, আশি বৎসরের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। অথচ আল-কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন :

মাকামে মাহমুদের ব্যাখ্যা

মাকামে মাহমুদের ব্যাখ্যা


‘‘রুহুর বয়ানে বর্ণিত আছে আল্লাহ পাকের দরূদ পড়ার অর্থ হইল হুজুরে আকরাম (ছঃ) কে মোকামে মাহমুদ অর্থাৎ সুপারিশের মোকামে পৌঁছান।’’ (ফাজায়েলে দরূদ শরীফ- ১০)
মাকামে মাহমু
দের ব্যাখ্যায় শায়খ লিখেছেন :
 ‘‘কেহ বলেন, উহা হইল আল্লাহ পাক কর্তৃক তাহাকে রোজ কেয়ামাতে আরশের উপর বসান অথবা কুরছীর উপর বসান। আবার কেহ কেহ বলেন উহার অর্থ হইল শাফায়াত। কেননা সমস্ত মাখলুক সেখানে হুজুরের প্রশংসা করিবে। আল্লামা ছাখাবী ও তাহার ওস্তাদ হাফেজ এবনে হাজার বলেন

সুফীবাদের পরিভাষায় সুফী কাকে বলে?

সুফীবাদের পরিভাষায় সুফী কাকে বলে?


১. সুফী শব্দটি  صوف(পশম) থেকে উদগত হয়েছে। কারণ, সুফীরা সহজ সাধারণ জীবন যাপনের অংশ হিসাবে পশমী কাপড় পরিধান করতেন।
২. মোল্লা জামী বলেন, শব্দটি صفاء (পবিত্রতা ও স্বচ্ছতা) থেকে নির্গত হয়েছে। কেননা তারা পূতপবিত্র ও স্বচ্ছ জীবন যাপন করতেন। সুফীর সংজ্ঞায় বর্ণিত এই কথাটি ঠিক নয়। কারণ সুফীরা নিজেদেরকে صوفي বলে উল্লেখ করেন। صفاء শব্দ থেকে সুফীর উৎপত্তি হয়ে থাকলে তারা নিজেদেরকে صفائي সাফায়ী বলতেন। অথচ এই মতবাদে বিশ্বাসী কোন লোক নিজেকে সাফায়ী বলেন না। বরং

সুফীবাদের বিভিন্ন তরীকার বিবরণ

সুফীবাদের বিভিন্ন তরীকার বিবরণ


সুফীদের রয়েছে বিভিন্ন তরীকা। স্থান ও কাল অনুযায়ী অসংখ্য সুফী তরীকা আত্ম প্রকাশ করার কারণে এর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন। আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে অসংখ্য সুফী তরীকা আত্মপ্রকাশ করেছে। তার মধ্যে নিম্নের কয়েকটি তরীকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রায়ই সুফী তরীকার পীর ও মুরীদদের মুখে এ সমস্ত তরীকার নাম উচ্চারণ করতে শুনা যায়। এ সমস্ত তরীকা হচ্ছেঃ

সুফীবাদের স্তর পরিক্রমাঃ

সুফীবাদের স্তর পরিক্রমাঃ


ক) শরীয়তঃ ইসলামী জীবন ব্যবস্থার যাবতীয় বিধানকে শরীয়ত বলা হয়। সর্বপ্রথম শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী হতে হয়। শরীয়তের যাবতীয় বিধানের মধ্য দিয়ে সুফী তার প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রিত করে প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আল্লাহর অনুগত করেন। শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণ ব্যতীত কেউ সুফী হতে পারবে না। সুফীরা এ কথাটি জোর দিয়ে বললেও তাদের আচার-আচরণ এর সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ

প্রচলিত সুফীবাদের কতিপয় বিভ্রান্তিঃ

প্রচলিত সুফীবাদের কতিপয় বিভ্রান্তিঃ


সুফীবাদের যেহেতু বিভিন্ন তরীকা রয়েছে তাই তরীকা ও মাশায়েখ অনুযায়ী তাদের রয়েছে বিভিন্ন আকীদা ও কার্যক্রম। নিম্নে আমরা অতি সংক্ষেপে তাদের কতিপয় আকীদা ও বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করবো। তবে এখানে মনে রাখতে হবে যে, সুফীবাদের সকল সমর্থকের ভিতরেই যে নিম্নের ভুল-ভ্রান্তিগুলো রয়েছে তা বলা কঠিন।
১) الحلول হুলুল এবং وحدة الوجود ওয়াহদাতুল উজুদঃ
সুফীদের যে সমস্ত ইসলাম বিরোধী আকীদাহ রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট আকীদাহ (বিশ্বাস) হচ্ছে, عقيدة الحلول والاتحاد আকীদাতুল হুলুল ওয়াল ইত্তেহাদ। 
সুফীদের কতিপয় লোক হুলুল তথা সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহর অবতরণে বিশ্বাস করে। হুলুল-এর সংজ্ঞায় আলেমগণ বলেনঃ

উপরোক্ত ভ্রান্ত বিশ্বাসের খন্ডনঃ

উপরোক্ত ভ্রান্ত বিশ্বাসের খন্ডনঃ


ইসলামের প্রধান দু’টি মূলনীতি এবং ইসলামী শরীয়তের দু’টি মূল উৎস কুরআন ও সহীহ হাদীছে সুস্পষ্ট ভাষায় আল্লাহর পরিচয়, গুণাগুণ এবং তাঁর অবস্থান উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে মহান রাববুল আলামীন নিজেই নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন এবং তাঁর রাসূলও অনেক সহীহ হাদীছে তাঁর পরিচয় বর্ণনা করেছেন। এ থেকে জানা যায় যে আল্লাহ তাআলা আকাশে এবং আরশে আযীমের উপর সমুন্নত। বেশ কিছু আয়াত ও হাদীছে সরাসরি আরশের উপর সমুন্নত হওয়ার কথা উল্লেখ আছে। আবার অনেক আয়াত ও হাদীছের মাধ্যমে আকাশের উপরে হওয়ার কথা জানা যায়। মূলতঃ উভয়ের মাঝে কোন দ্বন্ধ নেই। কেননা আল্লাহর আরশ হচ্ছে সাত আকাশের উপর। 
আল্লাহ তাআলা আকাশের উপরে সমুন্নত হওয়ার দলীলসমূহঃ
আললাহ তাআলা যে আকাশের উপরে , কুরআনে এর অনেক দলীল রয়েছে।
১) আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

আল্লাহ্ তাআলা আসমানে সমুন্নত হওয়ার ব্যাপারে বর্ণিত সহীহ হাদীছসমূহঃ

আল্লাহ্ তাআলা আসমানে সমুন্নত হওয়ার ব্যাপারে বর্ণিত সহীহ হাদীছসমূহঃ


আল্লাহ্ তাআলা উপরে আছেন-হাদীছ শরীফে এ ব্যাপারে অগণিত দলীল রয়েছে।
১) আওআলের হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(والعرش فوق ذلك والله فوق العرش وَهُوَ يَعْلَمُ مَا أَنتُمْ عَليْهِ)

‘‘তার উপর আল্লাহর আরশ। আর আল্লাহ্ আরশের উপরে। তিনি তোমাদের অবস্থা (আমল) সম্পর্কে অবগত আছেন’’।[1]
   আওআলের হাদীছের বিস্তারিত বিবরণ এই যে, আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব (রাঃ) বলেনঃ আমরা একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে খোলা ময়দানে বসা ছিলাম। তখন আমাদের মাথার উপর দিয়ে একটি মেঘখন্ড অতিক্রম করার সময় তিনি বললেনঃ তোমরা কি জান এটি কী? আমরা বললামঃ এটি একটি মেঘের খন্ড। অতঃপর তিনি বললেনঃ

অলী-আওলীয়াদের আহবানঃ


অলী-আওলীয়াদের আহবানঃ


সুফীদের বিরাট একটি অংশ নবী-রাসূল এবং জীবিত ও মৃত অলী-আওলীয়াদের কাছে দুআ করে থাকে। তারা বলে থাকেঃ ইয়া জিলানী, ইয়া রিফাঈ, ইয়া রাসূলুল্লাহ ইত্যাদি। অথচ আল্লাহ তাআলা তাঁকে ছাড়া অন্যেকে আহবান করতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে দুআ করবে, সে মুশরিক হিসেবে গণ্য হবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

গাউছ, কুতুব, আবদাল ও নুজাবায় বিশ্বাসঃ

গাউছ, কুতুব, আবদাল ও নুজাবায় বিশ্বাসঃ


সুফীরা বিশ্বাস করে যে, পৃথিবীতে কতিপয় আবদাল, কুতুব এবং আওলীয়া আছেন, যাদের হাতে আল্লাহ তাআলা পৃথিবী পরিচালনার কিছু কিছু দায়িত্ব সোপর্দ করে দিয়েছেন। সুতরাং তারা তাদের ইচ্ছামত পৃথিবীর কাজকর্ম পরিচালনা করে থাকেন।
তাবলীগি নেসাব ফাযায়েলে আমাল বইয়ে এই ধরণের একটি ঘটনা উল্লেখ আছে। ঘটনার বিবরণ এই যে, হজরত শাইখুল বলেছেনঃ আমি আমার আব্বাজানের নিকট প্রায়ই একটা ঘটনা শুনতাম। উহা এই যে, জনৈক ব্যক্তি বিশেষ কোন প্রয়োজনে পানি পথে যাইতেছিল। পথিমধ্যে

সুফী তরীকার মাশায়েখগণ বিপদ হতে উদ্ধার করতে পারেনঃ

সুফী তরীকার মাশায়েখগণ বিপদ হতে উদ্ধার করতে পারেনঃ


সুফীরা বিশ্বাস করেন যে, তাদের মাশায়েখ ও অলীগণ বিপদ হতে উদ্ধার করতে সক্ষম। তাই বিপদে তারা তাদের অলীদেরকে আহবান করে থাকে। তারা বলে থাকে মদদ ইয়া আব্দুল কাদের জিলানী, হে উমুক, হে উমুক ইত্যাদি। এভাবে বিপদাপদে পড়ে আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আহবান করা প্রকাশ্য শির্কের অন্তর্ভূক্ত আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

এবাদতের সময় সুফীদের অন্তরের অবস্থাঃ

এবাদতের সময় সুফীদের অন্তরের অবস্থাঃ


সুফীরা দ্বীনের সর্বোচ্চ স্তর তথা ইহসানের ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ মাশায়েখদের দিকে মনোনিবেশ করে থাকে। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
الإحسان أن تعبد الله كأنك تراه فإن لم تكن تراه فإنه يراك
‘‘ইহসান হল,

নবী-রাসূলদের সম্পর্কে সুফীদের ধারণাঃ

নবী-রাসূলদের সম্পর্কে সুফীদের ধারণাঃ


নবী-রাসূলদের ব্যাপারে সুফীদের বিভিন্ন ধারণা রয়েছে। তাদের কতিপয়ের কথা হচ্ছে,
 خضنا بحراً وقف الأنبياء بساحله
 অর্থাৎ আমরা এমন সাগরে সাতার কাটি, নবীগণ যার তীরে দাঁড়িয়ে থাকেন। অর্থাৎ সুফীগণ এমন মর্যাদায় পৌঁছতে পারেন,

অলী-আওলীয়াদের ব্যাপারে তাদের বিশ্বাসঃ


অলী-আওলীয়াদের ব্যাপারে তাদের বিশ্বাসঃ


অলী-আওলীয়াদের ক্ষেত্রে সুফীদের আকীদা হচ্ছে, তাদের কেউ নবীদের চেয়ে অলীগণকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে, অলীগণ এবং আল্লাহর মাঝে কোন পার্থক্য নেই। আল্লাহর সকল গুণই অলীদের মধ্যে বর্তমান। যেমন সৃষ্টি করা,

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাপারে বাড়াবাড়িঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাপারে বাড়াবাড়িঃ


সুফীরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নূরের তৈরী মনে করে। তারা নিম্নের বানোয়াট হাদীছটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।

أول ما خلق الله تعالى  نوري

অর্থাৎ আল্লাহ্ তাআলা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন। বিভিন্ন শব্দে একই অর্থে সুফীদের কিতাবে সনদবিহীন ভাবে এই বানোয়াট হাদীছটি উল্লেখিত হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো আমাদের দেশের অধিকাংশ সুন্নী মুসলমানও এই আকীদাই পোষণ করে থাকে। অথচ কুরআন ও সহীহ হাদীছের ভাষ্য থেকে জানা যায় যে, আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরী ছিলেন না এবং তিনি সর্বপ্রথম সৃষ্টিও ছিলেন না। সহীহ হাদীছ থেকে জানা যায় যে, আল্লাহ তা'আলা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

ফেরাউন ও ইবলীসের ক্ষেত্রে সুফীদের বিশ্বাসঃ

ফেরাউন ও ইবলীসের ক্ষেত্রে সুফীদের বিশ্বাসঃ


সুফীদের কতিপয় লোক ইবলীস ও ফেরাউনকে পরিপূর্ণ ঈমানদার ও আল্লাহর শ্রেষ্ট বান্দা মনে করে। সুফী দর্শনের মতে ইবলীস সর্বোত্তম সৃষ্টির অন্তর্ভূক্ত এবং সে পরিপূর্ণ ঈমানদার।
আর মিশরের ফেরাউন সম্পর্কে সুফীদের কতিপয়ের কথা হচ্ছে, ঈমানের পরিপূর্ণ হাকীকত অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছিল বলেই সে একজন সৎ লোক ছিল। ফিরআউনের কথাঃأنا ربكم الأعلى   ‘‘আমি তোমাদের মহান প্রভু’’ এর তাৎপর্য বর্ণনা করতে গিয়ে সুফীরা বলেঃ ফিরআউন নিজের ভিতরে উলুহীয়াতের অস্থিত্ব খুঁজে পেয়েছিল বলেই এ রকম কথা বলেছে। কেননা তাদের মতে পৃথিবীর প্রতিটি বস্ত্তই আল্লাহ। সুতরাং

কবর ও মাজার সম্পর্কে সুফীদের আকীদাঃ

কবর ও মাজার সম্পর্কে সুফীদের আকীদাঃ


সুফীও সুফিবাদের প্রভাবিত ব্যক্তিগণ অলী-আওলীয়া ও তরীকার মাশায়েখদের কবর পাকা করা, কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ, তাতে বাতি জ্বালানো, কবর ও মাযার যিয়ারত করার উপর বিশেষ গুরত্ব প্রদান করে থাকে। এমন কি সুফীরা বেশ কিছু মাজারের চার পাশে তাওয়াফও করে থাকে মিশরে সায়্যেদ বদভীর কবরের চতুর্দিকে সুফীরা কাবা ঘরের তাওয়াফের ন্যায় তাওয়াফ করে থাকে। ভারতের আজমীরে তথাকথিত খাজা মইনুদ্দ্বীন চিশতীর কবরেও এহেন তাওয়াফ করে থাকে চিশতীয়া তরীকার অনুসারীরা। অথচ সকল মুসলিমের কাছে অতি সুস্পষ্ট যে তাওয়াফ এমন একটি এবাদত, যা কাবা ঘরের চতুর পার্শ্বে এবং একমাত্র আল্লাহর জন্যই করতে হবে। সুতরাং কোন কবরকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করা বড় শির্ক, যা ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

মৃত আওলীয়ার নামে মান্নত পেশ করাঃ

মৃত আওলীয়ার নামে মান্নত পেশ করাঃ


সুফীবাদে বিশ্বাসীগণ মৃত অলী-আওলীয়াদের কবর ও মাজারের জন্য গরু, ছাগল, হাস-মুরগী-কবুতর, টাকা-পয়সা ইত্যাদি মানত করাকে ছাওয়াবের কাজ মনে করে থাকে। অথচ কুরআন ও সহীহ হাদীছের মাধ্যমে জানা যায় যে মানত হচ্ছে বিরাট একটি এবাদত, যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও উদ্দেশ্যে করা সম্পূর্ণ শির্ক।
সুতরাং মান্নত যেহেতু আল্লাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ এবাদত, তাই আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য তা পেশ করা শির্ক। যেমন কেউ বললঃ উমুক ব্যক্তির জন্য নযর মেনেছি। অথবা এই কবরের জন্য আমি মান্নত করেছি, অথবা জিবরীল (আঃ) এর জন্য আমার মানত রয়েছে। উদ্দেশ্য হল এগুলোর মাধ্যমে তাদের নৈকট্য অর্জন করা। নিঃসন্দেহে ইহা শির্কে আকবরের অন্তর্গত। এ থেকে তাওবা করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

অলী-আওলীয়ার উসীলাঃ

অলী-আওলীয়ার উসীলাঃ


সকল প্রকার সুফী তরীকার লোকদের আকীদার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এই যে, তারা মৃত অলীদের উসীলা দিয়ে দুআ করে থাকেন, গুনাহ্ থেকে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। উসীলা অর্থ হচ্ছে, যার মাধ্যমে কারও নৈকট্য অর্জন করা যায়, তাকে উসীলা বলা হয়। আর কুরআন ও হাদীছের পরিভাষায় যে সমস্ত বিষয় দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করা যায়, তাকে উসীলা বলা হয়। কুরআন মাযীদে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

ইসলামের রুকনগুলো পালনের ক্ষেত্রে সুফীদের দৃষ্টিভঙ্গিঃ

ইসলামের রুকনগুলো পালনের ক্ষেত্রে সুফীদের দৃষ্টিভঙ্গিঃ


সুফীবাদে বিশ্বাসীগণ মনে করেন যে, তাদের কল্পিত অলীদের উপর নামায, রোজা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি কোন কিছুই ফরজ নয়। কেননা তারা এমন মর্যাদায় পৌঁছে যান, যেখানে পৌঁছতে পারলে এবাদতের প্রয়োজন হয় না। তাদের কথা হচ্ছেঃ
إذا حصلت المعرفة سقطت العبادة
মারেফত হাসিল হয়ে গেলে এবাদতের কোন প্রয়োজন নেই। তারা তাদের মতের পক্ষে কুরআনের একটি আয়াতকে দলীল হিসেবে পেশ করে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

সুফীদের যিকির ও অযীফাঃ

সুফীদের যিকির ও অযীফাঃ


নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন মুসলিম ঘুম থেকে উঠে, ঘুমানোর সময়, ঘরে প্রবেশ কিংবা ঘর হতে বের হওয়ার সময় থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে সকল যিকির-আযকার পাঠ করতে হবে, তার সবকিছুই শিক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু সমস্ত সুফী তরীকার লোকেরা এ সমস্ত যিকির বাদ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের বানোয়াট যিকির তৈরী করে নিয়েছে। নকশবন্দী তরীকার লোকেরা যিকরে মুফরাদ তথা শুধু الله (আল্লাহ) الله (আল্লাহ) বলে যিকির করে। শাযেলী তরীকার لا إله إلا الله এবং অন্যান্য তরীকার লোকে শুধু هوهو হু হু বলে যিকির করে থাকে। আল্লামা ইবনে তাইমিয়া বলেনঃ

চুলে ও দাড়িতে জট বাঁধাঃ

চুলে ও দাড়িতে জট বাঁধাঃ


সুফীবাদের নামে কতিপয় লোকের মাথায় ও দাড়িতে ঝট বাঁধতে দেখা যায়, কারও শরীরে লোহার
শিকল, কাউকে উলঙ্গ বা অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। এটি সাহাবী, তাবেয়ী বা তাদের পরবর্তী যুগের কোন আলেম বা সাধারণ সৎ লোকের নিদর্শন ছিল না। এমন কি আব্দুল কাদের জিলানী, শাইখ আহমাদ রেফায়ী এবং

অলী-আওলীদের নামে শপথঃ

অলী-আওলীদের নামে শপথঃ


অলী-আওলীয়ার নামে শপথ করা সুফী তরীকার লোকদের একটি সাধারণ ব্যাপার। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম বলেনঃ

مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ أَشْرَكَ

যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করল সে শির্ক

হালাল-হারামঃ

হালাল-হারামঃ


যে সমস্ত সুফী ওয়াদাতুল উজুদে বিশ্বাসী তারা কোন কিছুকেই হারাম মনে করে না। মদ, জিনা-ব্যভিচারসহ সকল প্রকার কবীরা গুনাহতে লিপ্ত হওয়াই তাদের জন্য

জিন-ইনসান সৃষ্টির উদ্দেশ্যঃ


জিন-ইনসান সৃষ্টির উদ্দেশ্যঃ


সুফীদের কথা হচ্ছে, জিন-ইনসানসহ সমস্ত সৃষ্টি জগত নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। আফসোসের বিষয় এই যে, আমাদের দেশের অনেক বক্তাকেই অত্যন্ত মধুর কণ্ঠে ওয়াজ করার সময় এবং মিলাদ শরীফ পাঠের সময় বলতে শুনা যায় যে, নবী না আসিলে ধরায় কোন কিছুই সৃষ্টি হত না। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

সুফীরা জান্নাতের আশা ও জাহান্নামের ভয় করে নাঃ

সুফীরা জান্নাতের আশা ও জাহান্নামের ভয় করে নাঃ


সুফীরা মনে করেন জাহান্নামের ভয়ে এবং জান্নাতের আশায় আমল করা ঠিক নয়। তাদের কথা হচ্ছে আল্লাহর মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়াই সুফী সাধকের প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًا وَكَانُوا لَنَا خَاشِعِينَ
তারা সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ত, তারা আশা ও ভীতি (জান্নাতের আশা ও জাহান্নামের ভীতি) সহকারে আমাকে ডাকত এবং

গান-বাজনাঃ

গান-বাজনাঃ


সুফীবাদের দাবীদার কিছু লোক গান, বাজনা ও নৃত্যের মাধ্যমে যিকির করে থাকে। অথচ ইসলাম এগুলোকে সুস্পষ্টভাবে হারাম বলে ঘোষণা করেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আখেরী যামানায় কোন কোন জাতিকে মাটির নিচে দাবিয়ে দেয়া হবে, কোন জাতিকে উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে ধ্বংস করা হবে। আবার

সুফীদের যাহেরী ও বাতেনীঃ

সুফীদের যাহেরী ও বাতেনীঃ


সুফীরা দ্বীনকে যাহেরী ও বাতেনী এই দু’টি স্তরে ভাগ করে থাকে। শরীয়তকে তারা যাহেরী স্তর হিসেবে বিশ্বাস করে, যা সকলের জন্য মান্য করা জরুরী। বাতেনী স্তর পর্যন্ত শুধু নির্বাচিত ব্যক্তিরাই পৌঁছতে পারে। ইসলামী শরীয়তে যাহেরী ও বাতেনী বলতে কিছু নেই। কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যে যা আছে, তাই ইসলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ 

শায়েখ বা পীরের আনুগত্যঃ

শায়েখ বা পীরের আনুগত্যঃ


সুফীবাদের কথা হচ্ছে, চোখ বন্ধ করে এবং বিনা শর্তে সুফী তরীকার পীর বা শায়েখের আনুগত্য করতে হবে এবং মুরীদদেরকে তাদের সামনে পাপ করে থাকলে তা স্বীকার করতে হবে। ভক্তরা পীরের হাতে সেরকম আটকা থাকবে যেমন

পীরের আত্মার সাথে মুরীদের আত্মার সম্পর্ক তৈরী করাঃ

পীরের আত্মার সাথে মুরীদের আত্মার সম্পর্ক তৈরী করাঃ


সুফীদের কথা হচ্ছে শত শত বই-পুস্তক পাঠ করে কোন মুমিন সঠিক পথে চলতে পারবে না। পীর বা শায়েখের অন্তরের সাথে মুরীদের অন্তর যুক্ত না হওয়া পর্যন্ত দ্বীনি ইলম ও আমলে

ইলমে লাদুন্নী নামে কল্পিত এক বিশ্বাসঃ

ইলমে লাদুন্নী নামে কল্পিত এক বিশ্বাসঃ


সুফীরা বেশী বেশী ইলমে লাদুন্নীর কথা বলে থাকে। ইলমে লাদুন্নী বলতে তারা বুঝাতে চায় যে, এটি এমন একটি ইলম যা আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষভাবে সুফীরা পেয়ে থাকে। সাধনা ও চেষ্টার মাধ্যমে এটি অর্জন করা যায় না। তাদের কল্পিত কথা হচ্ছে অলী-আওলীয়ারা আল্লাহর পক্ষ হতে ইলমে লাদুন্নী অর্জন করে থাকে।
তাদের বানোয়াট কথার মধ্যে এটিও একটি বানোয়াট ও কল্পিত কথা এবং

কারামাতে আওলীয়ার ক্ষেত্রে সুফীদের বাড়াবাড়িঃ

কারামাতে আওলীয়ার ক্ষেত্রে সুফীদের বাড়াবাড়িঃ


কারামতে আওলীয়ার ব্যাপারে আহ্লুস্ সুন্নাতের বিশ্বাস হচ্ছে আউলীয়াদের কারামত এবং আল্লাহ তা’আলা তাদের হাতে অলৌকিক ও সাধারণ অভ্যাসের বিপরীত যে সমস্ত ঘটনা প্রকাশ করে থাকেন আমরা তাতে বিশ্বাস করি। তবে অলী হওয়ার জন্য কারামত প্রকাশিত হওয়া জরুরী নয়। আওলীয়াদের কারামত সত্য। আল্লাহ তাআলা তাদের হাতে অলৌকিক ও সাধারণ নিয়মের বিপরীত এমন ঘটনা প্রকাশ করে থাকেন যাতে তাদের কোন হাত নেই। তবে কারামত চ্যালেঞ্জ আকারে প্রকাশিত হয় না; বরং

সূফীদের বা সুফিদের বাড়াবাড়ীর উদাহরন

সূফীদের বাড়াবাড়ীর উদাহরন


ক) মৃতকে জীবিত করাঃ
সুফীরা বিশ্বাস করে তাদের অলীরা মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম।
চরমোনাই পীরের লেখা ভেদে মারেফত বা ইয়াদে খোদা বইয়ের ১৫ পৃষ্ঠায় মৃতকে জীবিত করার যে গল্পটা আছে তা নিম্নরুপঃ
শামসুদ্দ্বীন তাব্রীজী নামের এক লোক ছিলেন। লোকেরা তাকে পীর সাহেব কেবলা বলত। এবার আসি মূল গল্পে।
একদা হযরত পীর সাহেব কিবলা রোম শহরের দিকে রওয়ানা হইলেন। পথিমধ্যে ঝুপড়ির ভেতর এক অন্ধ বৃদ্ধকে লাশ সামনে নিয়া কাদঁতে দেখিলেন। হুজুর বৃদ্ধকে প্রশ্ন করিলে বৃদ্ধ উত্তর করিলেন, ‘‘হুজুর এই পৃথিবীতে আমার খোঁজ-খবর করিবার আর কেউ নাই, একটি পুত্র ছিল সে

শরীয়ত ও অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে সুফীবাদের মূলনীতিঃ

শরীয়ত ও অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে সুফীবাদের মূলনীতিঃ


সকল মাজহাবের লোকগণ ইসলামের মূলনীতি হিসেবে কুরআন ও সুন্নাহকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়ে থাকেন। কিন্তু সুফীবাদের মূলনীতি সম্পর্কে যতদূর জানা যায়, তাদের মূলনীতির ব্যাপারে যথেষ্ট গড়মিল রয়েছে। কতিপয় সুফীবাদে কুরআন ও হাদীছকে বাদ দিয়ে নিম্নে মূলনীতিগুলোর উপর তারা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে থাকেন। আবার কতিপয় সুফী তরীকার লোকেরা কুরআন ও হাদীছের সাথে আরও অনেকগুলো কাল্পনিক মূলনীতি থেকে তথাকথিত আত্মশুদ্ধির জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা গ্রহণ করে থাকে। আসুন আমরা তাদের এ মূলনীতিটি একটু বিস্তারিত আলোচনা করি।
১) কাশ্ফঃ
বিভিন্ন দিক নির্দেশনা ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য সুফীগণের সবচেয়ে অধিক নির্ভরযোগ্য মূলনীতি হচ্ছে কাশফ। সুফীদের বিশ্বাস হচ্ছে আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে একজন সুফী সাধকের হৃদয়ের পর্দা উঠে যায় এবং তাদের সামনে সৃষ্টি জগতের সকল রহস্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। তাদের পরিভাষায় একেই বলা হয় কাশফ।

হালাল উপার্জনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

গুরুত্ব ও তাৎপর্য


ইসলাম পরিপূর্ণ এক জীবন ব্যবস্থার নাম। এতে মানবজীবনের ব্যক্তিগত পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের যাবতীয় বিষয়ের সমাধানে হিকমতপূর্ণ বিধানের বর্ণনা রয়েছে। এটি মানুষের জন্য যা কল্যাণকর ও হিতকর সে বিষয় বৈধ করত: সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে এবং যাবতীয় অকল্যাণ ও ক্ষতিকর বিষয় হতে মানবজাতিকে সর্তক করেছে। অতএব, ইসলাম মানবজাতির জন্য কল্যাণের আঁধার হিসেবে শান্তির বার্তা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে। মানবদেহের জীবনীশক্তি হিসেবে রক্তের যে

উপার্জনের গুরুত্ব

উপার্জনের গুরুত্ব


খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, মানুষের মৌলিক অধিকার। এগুলোর যোগান দিতে মানুষকে বেছে নিতে হয় সম্পদ উপার্জনের নানাবিধ পন্থা। জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষ যেসব পেশা অবলম্বন করে তা হলো: কৃষি, ব্যবসা-বানিজ্য, চাকুরী, শিল্প প্রভৃতি। উপার্জনের মাধ্যম ব্যতীত কোন ব্যক্তির পক্ষেই উপর্যুক্ত মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। মানুষকে মহান আল্লাহ সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব হিসেবে সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হননি; বরং তাদের যাবতিয় মৌলিক অধিকারও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সে লক্ষে তিনি মহাশুণ্যের সব সৃষ্টিকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:

ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল উপার্জন

ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল উপার্জন


হালাল বলতে আমরা সাধারণত: যাবতীয় বৈধ পন্থাকেই বুঝি। যা কল্যানকর ও হিতকর এবং যাবতীয় অবৈধ ও অকল্যাণকর হতে মুক্ত। ইসলামে হালাল উপার্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। মহান আল্লাহ মানব জাতিকে উপার্জনের জন্যে উৎসাহ দিয়েই ক্ষান্ত হননি; বরং যাবতীয় বৈধ ও অবৈধ পন্থাও বাতলে দিয়েছেন। অতএব হালাল উপার্জন বলতে বুঝায় উপার্জনের ক্ষেত্রে বৈধ ও শরী‘আত সম্মত পন্থা অবলম্বন।
হালাল উপায়ে জীবিকা উপার্জনের ফলে সমাজ ব্যবস্থায় ধনী দরিদ্রের মাঝে সুষম ভারসাম্য ফিরে আসে; কৃষক দিন মজুর, ক্রেতা-বিক্রেতা, শ্রমিক-মালিক এবং

উপার্জন বৈধ হওয়ার ইসলামী মূলনীতি

উপার্জন বৈধ হওয়ার ইসলামী মূলনীতি


ইসলামে উপার্জনের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় দু’টি মূলনীতি রয়েছে।
এক. মূলগত: যা উপার্জন করা হবে তা মূলগতভাবে হালাল হতে হবে।
দুই. পদ্ধতিগত: যা উপার্জন করব তা বৈধ পন্থায় হতে হবে।

এক. মূলগত:
একজন ব্যক্তি যা উপার্জন করবে সে উপার্জেয় বস্ত্তটি অবশ্যই উত্তম ও হালাল হতে হবে। আর ইসলাম যাবতীয় কল্যাণকর ও হিতকর বস্ত্তকে মানবজাতির জন্য হালাল করেছে।
সেলক্ষ্যেই পবিত্র কুরআনে طيباتحلال শব্দের অবতারনা হয়েছে। মহান আল্লাহ মানব জাতিকে সম্বোধন করে হালাল ও তাইয়্যিব যা রয়েছে তা থেকে আহার করতে বলেছেন। তিনি বলেন:

খুলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কিরাম ছিলেন হালাল উপার্জনের অন্বেষক

খুলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কিরাম ছিলেন হালাল উপার্জনের অন্বেষক 


তাঁরা যাবতীয় লেন দেন হালাল পন্থা অবলম্বন করতেন। হারামের ভয়াবহতা সম্পর্কে তারা খুবই সচেতন ছিলেন। আবু বকর রা. এর একটি ঘটনা থেকে তাঁর হারাম বর্জন প্রবণতা ও হালালের বিষয়ে কঠোরতা সহজেই অনুমেয়। বর্ণিত আছে যে, আবু বকর রা. এর এক গোলাম ছিল সে তাঁর সঙ্গে কিছু অর্থের বিনিময়ে মুক্তির চুক্তি পত্র করে। অতঃপর সে যখন প্রতিদিন মুক্তিতপনের কিছু অর্থ নিয়ে আসতো, তখন আবু বকর রা. তাকে জিজ্ঞাসা করতেন, এ অর্থ কিভাবে সংগ্রহ করেছো? যদি সে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারতো, তবেই তিনি তা গ্রহণ ও ব্যবহার করতেন। অন্যথায়

হালাল উপার্জনের গুরুত্ব সম্পর্কে উলামায়ে কিরামের বক্তব্য

হালাল উপার্জনের গুরুত্ব সম্পর্কে উলামায়ে কিরামের বক্তব্য


বৈধ পন্থায় উপার্জনের গুরুত্ব উপলব্দি করতঃ তার তাৎপর্য ও পরিণাম বর্ণনা করতে গিয়ে বিদগ্ধ উলামায়ে কিরাম ও মুফাসসিরগণ পান্ডিত্যপূণ উক্তির অবতারনা করেছেন। যেমন: সুফিয়ান সাওরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ
كنا ندع تسعة أعشارالحلال مخافة الوقوع في الحرام
‘‘না জানি তা হারামের অন্তর্ভক্ত হয়ে যায় এ আশংকায় আমরা হালাল সম্পদের দশভাগের নয়ভাগ পরিহার করতাম।’’
দুই. ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ

উপসংহার

উপসংহার


ইসলাম কল্যাণকর এক মহতি জীবন ব্যবস্থা এতে যাবতিয় পবিত্র ও উত্তম বিষয় ও বস্ত্তকে বৈধ করা হয়েছে। কেননা বস্তু মাত্রের মাঝেই কিছু কল্যাণ ও কিছু অকল্যাণের সমাহার রয়েছে। গুনাগুণের বিচারে যে বস্ত্ততে মানুষের জন্য কল্যানকর উপাদানের পরিমাণ বেশী, অকল্যানের পরিমাণ কম, সেই গুলোকেই মহান আল্লাহ মানুষের জন্য হালাল করে দিয়েছেন। আর যে সকল বস্ত্ততে কল্যান কম অথচ

প্রশ্নঃ দাইউস কাকে বলে ?

প্রশ্নঃ দাইউস কাকে বলে ?
উত্তরঃ দাইউস হলো সে ব্যক্তি যে কিনা তার পরিবার পরিজনকে সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করেন না এবং পরিবার পরিজন সঠিক ভাবে না চললেও ভালো মনে করেন বা প্রতিবাদ করেন না।
যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেপর্দা বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকেও দাইউস বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, “আল্লাহ তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়” (মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন :

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ