হিকায়াতে সহাবার একটি ভ্রামাত্নক বর্ণনা
‘‘হজরত
হানজালা (রাঃ) বলেন, একদা আমার হুজুরে আকরাম (ছঃ) এর খেদমতে উপস্থিত
ছিলাম। হুজুর (ছঃ) ওয়াজ করিলেন, যাহাতে আমাদের অন্তর বিগলিত হইয়া গেল এবং
চক্ষু হইতে ঝরঝর করিয়া অশ্রু বহিতে লাগিল। আমরা আমাদের সত্ত্বা বুঝিতে
পারিলাম। হুজুরে আকরাম (ছঃ)-এর খেদমত হইতে উঠিয়া যখন বাড়ীতে আসিলাম,
বিবি বাচ্চা কাছে আসিল, দুনিয়ার কথা বার্তা হইতে লাগিল। তাহাদের সহিত হাসি
ঠাট্টা শুরু হইয়া গেল,’’ (হিকায়াতে সাহাবা ৫৮০ পৃঃ)
সম্মানিত পাঠকবর্গ!
উপরোক্ত বর্ণনার মধ্যে
‘বিবি বাচ্চা কাছে আসল, দুনিয়ার কথাবার্তা হতে লাগল। তাদের সহিত হাসি
ঠাট্টা শুরু হয়ে গেল’ বাক্যটি সামনে রেখে এবার নীচের লাইনগুলোর প্রতি
লক্ষ্য করুন :
‘‘অহুদের যুদ্ধে হজরত হানজালা (রাঃ) প্রথম
দিকে শরীক ছিলেন না। বর্ণিত আছে যে, তিনি নতুন বিবাহ করিয়াছিলেন, স্ত্রী
সহবাসের পর তিনি সবে মাত্র গোছল করিতে বসিলেন ও মাথায় পানি ঢালিতে আরম্ভ
করিলেন। হঠাৎ মুছলমানদের পরাজয়ের আওয়াজ তাঁহার কানে আসিল। তিনি সহ্য করিতে
না পারিয়া সেই নাপাক অবস্থায় তরবারী হাতে ময়দানের দিকে ছুটিলেন এবং
কাফেরদের উপর তীব্র আক্রমন চালাইয়া সম্মুখে অগ্রসর হইতে থাকেন ও শেষ
পর্যন্ত শহীদ হইয়া যান।’’ (হিকায়াতে সাহাবা ৬৩২ পৃঃ)
প্রথম রিওয়ায়াতে যাকে বিবি বাচ্চাদের সাথে
হাসি-ঠাট্টা ও স্ত্রীদের সাথে উপহাস করতে দেখানো হল দ্বিতীয় রিওয়ায়াতে
তাকেই স্ত্রী সহবাসের প্রথম রজনীতে ফরয গোসল ব্যতীত শহীদ হয়েছেন বলে প্রমাণ
করা হল। মুসলিম ভ্রাতাগণ নিরপেক্ষভাবে বলনু, এরূপ স্ববিরোধী বর্ণনায়
ইতিহাসের চেহারা কি বিকৃত হয় না এবং এ ধরনের ভ্রমাত্মক ও সন্দেহজনক
রিওয়ায়াত দ্বারা সম্মানিত সহাবাদের মহত্ত্ব ও ব্যক্তিত্ব কি ধূসরিত
(ভূলুণ্ঠিত) হয় না? প্রশ্ন জাগে যিনি ফুলশয্যায় বা বাসররাতে শহীদ হলেন তার
আবার বাচ্চা এলো কোত্থেকে?
No comments:
Post a Comment