প্রশ্নঃ- (১৯) মানুষ এবং জিন সৃষ্টির উদেশ্য কি?
উত্তরঃ- উক্ত প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পূর্বে আল্লাহর
সৃষ্টির সাধারণ নিয়ম এবং আল্লাহর শরীয়ত সম্পর্কে
আলোচনা করতে চাই। আল্লাহর সৃষ্টির নিয়মটি বিধৃত
হয়েছে আল্লাহর এই বাণী থেকে, ﻭَﻫُﻮَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ
অর্থঃ “তিনি সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।” (সূরা তাহরীমঃ ২)
আল্লাহর বাণী, ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﺣَﻜِﻴﻤًﺎ অর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ
সর্বজ্ঞ এবং প্রজ্ঞাময়।” (সূরা নিসাঃ ২৪) এছাড়া আরো অসংখ্য
দলীল-প্রমাণ রয়েছে।
এগুলো প্রমাণ করে যে,
আল্লাহ যা সৃষ্টি করেন এবং যার
আদেশ প্রদান করেন তাতে তিনি মহা কৌশলী। তিনি যাই সৃষ্টি
করেন না কেন, তার পিছনে রয়েছে এক বিরাট উদ্দেশ্য।
তিনি আমাদের জন্য যে শরীয়ত দিয়েছেন, তার ভিতরেও
রয়েছে এক বিরাট হিকমত। চাই কোন বিষয় ওয়াজিব করার
ভিতরে হোক কিংবা হারাম করার ভিতরে হোক। অথবা বৈধ করার
মাঝেই হোক না কেন। এই হিকমত আমরা কখনো জানি
আবার কখনো জানি না।
আল্লাহ প্রদত্ব জ্ঞানের মাধ্যমে কখনো কিছু লোকে
জানে আবার অনেকে জানেই না। তাই আমরা বলব যে,
আল্লাহ তাআ’লা জিন এবং মানুষকে এক বিরাট উদ্দেশ্যে সৃষ্টি
করেছেন। তা হল একমাত্র আল্লাহর এবাদত করা। আল্লাহ
বলেন, ﻭَﻣَﺎ ﺧَﻠَﻘْﺖُ ﺍﻟْﺠِﻦَّ ﻭَﺍﻟْﺈِﻧﺲَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻴَﻌْﺒُﺪُﻭﻥِ অর্থঃ “আমি
জ্বীন এবং মানুষকে আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি
করেছি।” (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬) আল্লাহ আরো বলেন, ﺃَﻓَﺤَﺴِﺒْﺘُﻢْ
ﺃَﻧَّﻤَﺎ ﺧَﻠَﻘْﻨَﺎﻛُﻢْ ﻋَﺒَﺜًﺎ ﻭَﺃَﻧَّﻜُﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻨَﺎ ﻟَﺎ ﺗُﺮْﺟَﻌُﻮﻥَ অর্থঃ “তোমরা কি
ধারণা করেছ যে, আমি তোমাদেরকে এমনিই সৃষ্টি
করেছি? আর তোমরা আমার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে
না?” (সূরা মুমিনূনঃ ১১৫) আল্লাহ আরো বলেন, ﺃَﻳَﺤْﺴَﺐُ
ﺍﻟْﺈِﻧﺴَﺎﻥُ ﺃَﻥْ ﻳُﺘْﺮَﻙَ ﺳُﺪًﻯ অর্থঃ “মানুষ কি ধারণা করে যে,
তাদেরকে এমনিতেই ছেড়ে দেয়া হবে?” (সূরা কিয়ামাহঃ
৩৬)
এছাড়া আরো অনেক আয়াত প্রমাণ করে যে, জিন-
ইনসানের সৃষ্টিতে আল্লাহ তাআ’লার এক মহান উদ্দেশ্য
রয়েছে। তা হল আল্লাহর এবাদত করা। ভালবাসা ও সম্মানের
সাথে আল্লাহর আদেশ সমূহ বাস্তবায়ন করা এবং নিষেধ সমূহ
থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হওয়ার
নাম এবাদত। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, ﻭَﻣَﺎ ﺃُﻣِﺮُﻭﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻴَﻌْﺒُﺪُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ
ﻣُﺨْﻠِﺼِﻴﻦَ ﻟَﻪُ ﺍﻟﺪِّﻳﻦَ ﺣُﻨَﻔَﺎﺀَ অর্থঃ “তাদেরকে এছাড়া কোন
নির্দেশ দেয়া হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে আল্লাহর এবাদত
করবে।” (সূরা বাইয়িনাহঃ ৫) এই হল মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য।
সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর এবাদত করতে অহংকার করবে,
সে ব্যক্তি এই হিকমত প্রত্যাখ্যানকারী হিসাবে গণ্য হবে।
যার জন্য আল্লাহ তাআ’লা মানুষ সৃষ্টি করেছেন।
সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা না করলে কি হবে তাদের কর্মসমূহ
প্রমাণ বহন করে যে, আল্লাহ যেন তাদেরকে অযথা সৃষ্টি
করেছেন।
সংগৃহীতঃ ফতোওয়া আরকানুল ইসলাম, ঈমান অধ্যায়।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
সাম্প্রতিক পোষ্ট
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?
"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...
জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ
-
যৌন উত্তেজনার সময় পানির মতো আঠালো যে তরল পদার্থ বের হয়, তা কি নাপাক? একে “মাযী” বলে। আর তা নাপাক। তা বের হলে উযূ নষ্ট হয়ে যায়। শরমগাহ...
-
গুপ্ত অভ্যাস (হস্তমৈথুন) ব্যবহার করা বৈধ কি? গুপ্ত অভ্যাস (হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্ত মৈথুন) করা কিতাব, সুন...
-
মনোমালিন্য ‘‘সংসার সাগরে দুঃখ-তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা।’’ কিন্তু সেই ভেলা ডুবে গেলে আর কার কি সাধ্য? স্বামী যদি স্...
-
*সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরানের ফজিলত গুলি কি কি? এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের অর্থঃ ✔1-রাতে ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ...
-
আপন মামাত, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোন, চাচী, মামি, স্ত্রীর বোন বা ভাবীর সাথে মুসাফাহাহ বৈধ কি? যার সাথে পু...
-
কেউ কেউ মনে করেন, আমার মন খুবই পরিস্কার। তাকে আমি মা, খালা, অথবা বোনের মতোই মনে করি ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে তাঁর সাথে মেলা-মেশা করতে অসুবিধা ...
-
কথা বলার ব্যপারে "ইসলামে"র শিক্ষা কি? ====== ১। কথা বলার পূর্বে সালাম দেয়া। সূরা নূরঃ ৬১ ২। সতর্কতার সাথে কথা বলা। (কে...
-
জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫টি অসাধারন হাদিস- *১-গীবত থেকে দূরে থাকা- আসমা বিনতে ইয়াযীদ হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যাক্তি তার (মুসলি...
-
# দোয়া_কবুল_না_হওয়ার_কারণগুলো_কি_কি ? ---------------------------------------------------------------------- কিছু পাপ আছে যা বান্দার মা...
-
প্রশ্ন:নাটক, সিনেমা দেখা , গল্পের বই পড়া কি জায়েজ ? =============================== উত্তর : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালা...
No comments:
Post a Comment