আকীকা র ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাত
মুআত্তা ইমাম মালেক (রঃ)কে আকীকাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ আমি আকীকাহ শব্দটি পছন্দ করি না। কারণ আকীকাহ শব্দটি আরবী عق শব্দ হতে গৃহীত। আক্কা অর্থ নাফরমানী করা অবাধ্য হওয়া। পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়াকে আরবীতে عقوق الوالدين উকুকুল ওয়ালিদাইন বলা হয়। তাই ইমাম মালেক (রঃ) সন্তান জন্ম উপলক্ষে এবাদত হিসেবে যেই পশু যবেহ করা হয় তাকে আকীকাহ নামে নামকরণ করাকে অপছন্দ করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
عَنِ الْغُلاَمِ شَاتَانِ مُكَافِئَتَانِ وَعَنِ الْجَارِيَةِ شَاةٌ
“ছেলে সন্তান হলে দু‘টি সমবয়সের ছাগল এবং মেয়ে সন্তান হলে একটি ছাগল দিয়ে আকীকা দিতে হবে। তিনি আরও বলেনঃ
كُلُّ غُلاَمٍ رَهِينَةٌ بِعَقِيقَتِهِ تُذْبَحُ عَنْهُ يَوْمَ سَابِعِهِ وَيُحْلَقُ وَيُسَمَّى
“আকীকাহ না করা হলে সন্তান রিহান (رهان) বন্ধক থাকে”। সুতরাং সপ্তম দিনে সন্তানের আকীকাহ করা উচিত। সেই সাথে মাথা কামাবে এবং নাম রাখবে। ভাষাবিদগণ বলেনঃ রিহান অর্থ হচ্ছে আটকিয়ে রাখা। অর্থাৎ আকীকাহ না করলে সন্তান শয়তানের প্ররোচনার শিকার হওয়া থেকে মুক্ত হয় না বা পিতা-মাতা সন্তানের সদাচারণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। কেউ কেউ বলেছেনঃ সে পিতা-মাতার জন্য শাফাআত করা থেকে বঞ্চিত হবে। তবে প্রকাশ্য কথা হচ্ছে সন্তান থেকে যে কল্যাণের আশা করা হয় সে নিজেই সেই কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়। আখেরাতে সে শাস্তি পাবে- এটি উদ্দেশ্য নয়। কখনও সন্তান পিতা-মাতার ত্র“টির কারণে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়। যেমন স্ত্রী সহবাস করার সময় বিসমিল্লাহ্ না বলা (স্ত্রী সহবাসের সময় দুআ পাঠ না করা)।
অনুবাদকের সংযুক্তিঃ
এ ব্যাপারে ইমাম আহমাদ বিন হান্বালের কথাটি সবচেয়ে সুন্দর ও বিশুদ্ধ। তিনি বলেন, কথাটি শাফাআতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থাৎ যেই শিশুর আকীকা দেওয়া হয়নি, সে যদি মৃত্যু বরণ করে, কিয়ামতের দিন শিশুর শাফাআত থেকে তার পিতা-মাতা বঞ্চিত হবে। আর হাদীসে একথা প্রমাণিত আছে যে, মুসলমানদের যে সমস্ত শিশু বাচ্চা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পূর্বেই মৃত্যু বরণ করবে, তারা তাদের মুসলিম পিতা-মাতার জন্য আল্লাহর দরবারে শুপারিশ করবে। সংযুক্তি আখানেই শেষ।
ইমাম আবু দাউদ তাঁর মারাসিল গ্রন্থে জাফর বিন মুহাম্মাদ থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসান ও হুসাইন (রাঃ)-এর আকীকাহ করার সময় বলেছেনঃ দুধ মাতা-এর ঘরে এর একটি ঠ্যাং (রান) পাঠিয়ে দাও, তোমরা এ থেকে খাও এবং অন্যদেরকে খেতে দাও। তবে তোমরা এর কোন হাড্ডী ভেঙ্গো না।
মাইমুনী (রঃ) বলেনঃ আমরা পরস্পর আলোচনা করলাম যে, জন্মের কত দিন পর সন্তানের নাম রাখতে হবে? তখন আবু আব্দুল্লাহ্ আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করে বলেনঃ তৃতীয় দিনে নাম রাখতে হবে। আর সামুরা (রাঃ) বললেনঃ সপ্তম দিনে রাখতে হবে।
No comments:
Post a Comment