Tuesday, May 1, 2018

অসম্ভব ভালোবাসেন তাকে, অনেক গভীর সেটা। তাকে ঘিরে একটা আলাদা পৃথিবী আপনার, যেখানে তাকে নিয়ে কষ্ট আর আনন্দ মাখা গল্পগুলো খুব যত্নে সাজিয়ে রাখেন পরম যত্ন আর ভালোবাসায়।

অসম্ভব ভালোবাসেন তাকে, অনেক গভীর সেটা। তাকে ঘিরে একটা আলাদা পৃথিবী আপনার, যেখানে তাকে নিয়ে কষ্ট আর আনন্দ মাখা গল্পগুলো খুব যত্নে সাজিয়ে রাখেন পরম যত্ন আর ভালোবাসায়। সে পৃথিবীতে অন্য কাউকে আপনি এক মূহুর্তের জন্যও কল্পনা করতে পারেন না। জায়গাটা যেন শুধুই তার জন্য। যতই রাগ-অভিমান হোক আপনি সেটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেন না..এক কথায় পাগলের মত ভালোবাসেন..!! অন্যদিকে একজন মুসলিম হিসেবে আল্লাহর আযাবকেও ভয় করেন আপনি...প্রচন্ড! এর আগে একবার না বারবার...বারবার বের হয়ে আসতে চেয়েছেন এই অ্যাফেয়ার থেকে...কারণ একটা হাদিস সবসময়ই আপনার অন্তর কাপিয়ে দেয় - রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে বলেছেন বিয়ের আগে বা পরে ইসলাম সম্মত নয় এমন কারো সাথে অ্যফেয়ার থাকলে সেখানে তৃতীয় একজনও এসে যোগ দেয়, সেই পাপাচারী শাইত্বন। যার জন্যই আল্লাহ্ সরাসরি এক কথায় এধরনের সম্পর্কগুলোকে হারাম বলে দিয়েছেন! কিন্তু শয়তান আপনাকে আরেক ধোঁকায় ফেললো! সে বোঝালো - 'তোমার নিয়্যত তো হালাল, বিয়েতো তাকে করবেই! ফোনে চ্যাটিংয়ে খারাপ কথা না বললেইতো হল..দেখা কম করলেই হয়.. কারো ফ্ল্যাটে না গেলেই হয়! তাহলে আর সমস্যা কোথায়? খারাপ কোন কিছু না করলে বা না বললেই তো হলো! চালিয়ে যাও.."ভালোবাসা দিবস" এ আর এমন কি! একটা দিনই তো! একসাথে ঘুরলেই না হয় রাইডে চড়ে, কীইবা এমন হবে? বিয়ের পর এগুলো সবই মাফ করে দেয়া হবে!!' ব্যস্ আবারো আপনি কন্টিনিউ করা শুরু করলেন..রাতের পর রাত জেগে কতকিছুই না প্ল্যান করলেন! সবে গুছিয়ে এনেছেন সবকিছু। আর ঠিক সে মূহুর্তেই আপনার রাব্ব আপনাকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, "ও আমার বান্দা, তুমি শয়তানের পথকে অনুসরণ করো না। যে শয়তানের পথ অনুসরণ করবে, শয়তান তাকে খারাপ ও নিকৃষ্ট কাজেরই আদেশ করবে।" - সূরা আন নূর, আয়াত:২১ যেই আপনি এবার পুরোপুরি ঠিক করলেন এই হারাম সম্পর্কটা বাদই দেবেন ঠিক তখনই শয়তান এবার আসলো নতুন ফন্দি নিয়ে! সে আপনাকে বোঝালো- " তুমি ওকে এখন থেকে ভালো উপদেশ দাও, সালাত পড়তে বলো- ফযরে ডেকে দাও ফোন করে, টেক্সট করে মনে করিয়ে দাও..পর্দা করতে বলো/বয়ফ্রেন্ডকে দাঁড়ি রাখতে বলো-টাখনুর উপর কাপড় পরতে বলো...সব ভালো উপদেশ দাও। তাহলে আর তোমার গুনাহ্ হবে না, বরং সাওয়াব হবে!" ইত্যাদি আরও কত কি..! এরকম আরো হাজারটা কথাই শয়তানের পাতানো ফাঁদ আপনার জন্য.. আর এ ফাঁদে পা দিয়ে যখন আর নিজেকে বাঁচাতে পারবেন না তখন সেই শয়তানই পিঠ ঘুরিয়ে সরে আসবে..বলবে "তোর গুনাহ্ অনেক!! তোর আবার মাফ কিসের"!! তারপরও আল্লাহ্ অপেক্ষায় থাকেন আপনার ফিরে আসার..তিনি বলেন তুমি সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ..বিশাল পাহাড় পরিমাণ গুনাহ্ নিয়ে আসলেও যদি একমাত্র আমাকেই রব হিসেবে মেনে খাঁটি তাওবা কর আমি নিজে তোমার সব গুনাহ্গুলোকে মাফ করে দেব..সব! সুবহানাল্লাহ্... ভাইয়া/আপু, জানি খুব কষ্ট হবে, খু-উ-ব। কিন্তু আপনি এভাবে শয়তানের ধোকায় পড়ে থাকলে আল্লাহ্ আরো বেশি কষ্ট পান! কারো সাথে হারাম সম্পর্ক থাকলে এবং পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করে সেটা হালাল করার নিয়াত থাকলেও তা কন্টিনিউ করা কোনদিনও হালাল হবে না, বরং এটা ভুল ধারণা। হয় এই মূহুর্তে বিয়ে করতে হবে নাহয় হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে সরে যেতে হবে। পরে বিয়ের বাহানা দিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেয়া শয়তানের একটি বড় ধোঁকা । আপনি দেখা না করলেও প্রতিটা টেক্সট -ফোন কল কাল হাশরের ময়দানে কোটি কোটি মানুষের সামনে প্রদর্শন করা হবে। বিয়ে করে সম্পর্কটা হালাল হলেও তার আগের হারাম সম্পর্কের প্রতিটি মূহুর্তের হিসেব তো অবশ্যই দিতে হবে কাল হাশরের ময়দানে। তাই যাদের এই ধরণের সম্পর্ক আছে আল্লাহকে ভয় করে সরে আসুন, প্রয়োজনে ফেইসবুকে ব্লক বা মোবাইল নাম্বার চেইঞ্জ করে ফেলুন। কোন ধরণের কমিনিউকেশনের রাস্তা যেন না থাকে সেটার ব্যবস্থা করুন। যদি তাকে বিয়ের উপযুক্ত মনে করেন অভিভাবকদের জানান এবং যদি ফ্যামিলিও সমর্থন দেয় তবে বিয়ের সময় হলেই যোগাযোগ করে অগ্রসর হোন। প্রথম প্রথম অনেক কষ্ট হবে। কষ্টের তীব্রতায় হয়ত কাতরাতে থাকবেন! প্রিয়মানুষটার স্মৃতি-অনুভূতিগুলো ভেবে ভেবে হয়ত হাহাকার করবেন, ডুকঁরে কান্না আসবে বারবার! তখনই নিজেকে শান্ত করুন, অযু করুন, দরজাটা লাগিয়ে নামাজে দাড়িয়ে পড়ুন/ রাতে হলে তাহাজ্জুদে দাঁড়ান। সিজদায় গিয়ে এবার মনের যত দুঃখ-যন্ত্রনা-কষ্ট আছে আল্লাহকে বলতে শুরু করুন, মনের যত কথা, যত চাওয়া কেঁদে কেঁদে সব বলতে থাকুন এক এক করে আল্লাহ্‌র কাছে।দেখবেন অনেক হালকা লাগছে নিজেকে, মনে অদ্ভূত এক প্রশান্তি কাজ করবে। মনে রাখবেন যে কষ্ট আপনি পাচ্ছেন সেটা সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা পরিচিতদের কাছে শেয়ার করে বিন্দুমাত্র লাভ নেই, সমাধান কিংবা স্বস্তি কোনটাই পাবেন না বরং কষ্টটাই বাড়বে। তাই এই মনের নিয়ন্ত্রকের সাথে অটুট সম্পর্ক তৈরি করুন যার কাছেই আছে সব সমস্যার সমাধান। আসলে প্রতিটা কষ্টই আমাদের জন্য স্বস্তি। কারণ, কষ্টের ঐ মুহুর্তগুলিতে যদি ধৈর্য্য ধরতে পারি, তাহলে সেই কষ্টের বিনিময়ে আল্লাহ আমাদের গুনাহ মাফ করে দিবেন।আর আমাদের জীবনের সবচেয়ে ভালো পরিবর্তনগুলো, সবচেয়ে বড় পরিবর্তনগুলো, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাগুলোই কিন্তু আমরা শিখি কষ্টকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। তাই কষ্টগুলো সাথে নিয়েই আগাতে হবে। আল্লাহ্, তার রাসূলকে(সা.) মন উজাড় করে ভালোবাসুন। প্রতিদিন যত কাজই থাকুক পাঁচ ওয়াক্ত নামায সঠিক সময়ে পড়ার চেষ্টা করুন, ইস্তিগফার করুন সবসময়, নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করুন /শুনুন, রাসূলের(সা.) প্রতিটা সুন্নাহকে নিজের লাইফস্টাইল হিসেবে সেট করার চেষ্টা করুন, ইসলামিক নাশিদ/ বিজ্ঞ স্কলারদের লেকচারগুলো কালেক্ট করে শুনুন, দ্বীনি ভাই/বোনদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করুন। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত মা-বাবার সেবা করুন, ভুলেও তাদের সাথে উচু গলায় কোন কথা বলবেন না, তাদের যে কোন সিদ্ধান্তকে ইবাদাত মনে করে সেটা মেনে নিন, তাদের সময় দিন, তাদের জন্য কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে দুআ করুন, তাদের মাগফিরাতের দুআ করুন। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র ওপর পুরো আস্থা রেখে চলুন। দেখবেন একটা সময় নিজেকে এমন জায়গায় আবিষ্কার করবেন সেটা হোক দুনিয়ায় কিংবা আখিরাতে যেটা ক
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মুগাফফাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত।তিনি বলেছেন: এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, “ইয়া রাসুলুল্লাহ্! আল্লাহ্-র কসম! আমি নিশ্চয়ই আপনাকে ভালোবাসি।” রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তুমি কী বলছো তা চিন্তা-ভাবনা করে দেখ।” সে বলল, “আল্লাহ্-র কসম!নিশ্চয়ই আমার ভালোবাসা আপনার জন্য। এরূপ সে তিনবার বলল। এরপর তিনি বললেন, “তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবেসেই থাকো তাহলে দারিদ্রের জন্যে মোটা পোশাক তৈরী করে নাও।কারণ বন্যার পানি যে গতিতে তার শেষ গন্তব্যের দিকে পৌঁছে যায়,আমাকে যে ভালোবাসে দারিদ্র ও নিঃস্বতা তারচেয়েও দ্রুত গতিতে তার দিকে ধাবিত হয়।” [তিরমিযী] রিয়াদুস সলিহীন[৪৮৫]
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমাদের কেউ যেন কষ্টে পতিত হওয়ার কারণে মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা না করে।যদি সে একান্ত বাধ্য-ই হয় তাহলে যেন এভাবে বলে, “হে আল্লাহ! আমাকে ওই সময় পর্যন্ত জীবিত রাখুন,যতক্ষণ পর্যন্ত জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয়।আর আমাকে মৃত্যু দান করুন,যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়” (বুখারী ও মুসলিম) #রিয়াদুস সলিহীন:৫৮৭

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ