Tuesday, May 1, 2018

এক ছাত্র তার উস্তাদকে প্রশ্ন করলো- হুজুর! কিয়ামতের হিসাবনিকাশ কেমনে হবে?

এক ছাত্র তার উস্তাদকে প্রশ্ন করলো- হুজুর! কিয়ামতের হিসাবনিকাশ কেমনে হবে? ছাত্রের প্রশ্ন শোনে উস্তাদ কিছুক্ষণ নিশ্চুপ বসে থাকলেন। তারপর, জুব্বার পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে ছাত্রদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। বণ্টনের প্রক্রিয়া ছিলো এমন- ১ম জনকে ১০০ টাকা। ২য় জনকে ৭৫ টাকা। ৩য় জনকে ৫০ টাকা। ৪র্থ জনকে ২৫ টাকা। ৫ম জনকে ১০ টাকা। ৬ষ্ট জনকে ৫ টাকা। এবং যে ছাত্র প্রশ্ন করেছিলো তাকে দিলেন ১টাকা। . প্রশ্নকারী ছাত্র উস্তাদের এমন বণ্টনে অত্যন্ত মনঃক্ষুণ্ণ হলো, ভিষণ কষ্ট পেলো। সে ভাবলো উস্তাদ তাকে সবার সামনে অপমানিত করলেন, সবার সামনে ছোট করলেন। টাকা বণ্টনের পর উস্তাদ মুচকি হেসে ছাত্রদের দিকে তাকিয়ে বললেন- আজ তোমাদের ছুটি। তোমরা এই টাকা পুরোপুরি খরচ করবে এবং আগামী সাপ্তাহিক বন্ধের দিন মাদরাসার রান্নাঘরে সকাল ১০ঘটিকায় তোমরা উপস্থিত হয়ে খরচের হিসাব দেবে। . সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ছাত্ররা মাদরাসার রান্নাঘরে উপস্থিত হতে লাগলো, উস্তাদ আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সবাই আসার পর উস্তাদ ছাত্রদেরকে চুলায় চড়ানো গরম 'তাওয়া' দেখিয়ে বললেন- তোমরা একজন একজন করে এই তাওয়ায় দাঁড়িয়ে আমার দেয়া টাকার খরচের হিসাব দেবে। . প্রথমে এগিয়ে এলো যে ছাত্রকে ১০০টাকা দিয়েছিলেন সে। সে তাওয়ায় দাঁড়ানোর পর উস্তাদ প্রশ্ন করলেন- আমার দেয়া টাকা তুমি কীভাবে খরচ করেছো হিসাব দাও? এমনিতে আগুনে উত্তপ্ত গরম তাওয়া, তার উপর খালি পা। ছাত্র এক পা নামায় তো এক পা তুলে, এভাবে অনেক কষ্টে তাওয়ায় দাঁড়িয়ে খরচের হিসাব দিতে লাগলো- ৫টাকা দিয়ে এটা কিনেছি, ১০টাকা দিয়ে ওটা খেয়েছি, ২০টাকা দিয়ে ঐ জিনিস কিনেছি। এইভাবে অনেক কষ্ট সহ্যকরে সে সম্পূর্ণ হিসাব দিলো। তারপর এলো যাকে ৭৫ টাকা দিয়েছিলেন সে। এভাবে ধারাবাহিকভাবে একেএকে সবাই নিজেদের টাকা খরচের হিসাব উত্তপ্ত তাওয়ায় দাঁড়িয়ে দিয়ে গেলো। সবার শেষে এলো যাকে ১টাকা দিয়েছিলে সে, অর্থাৎ যে ছাত্র 'কিয়ামতের হিসাবনিকাশ' নিয়ে প্রশ্ন করেছিলো। সে হাসিমুখে দৌড়ে এসে তাওয়ায় দাঁড়িয়ে তার ১টাকা খরচের হিসাব দিয়ে উস্তাদের সামনে দাঁড়ালো। বাকিরা যখন নিজেদের তাওয়ায় পুড়া পায়ে পানি ডালছে, তখন সে দাঁড়িয়ে হাসছে। . সবার হিসাব দেয়া শেষে উস্তাদ ছাত্রদের, বিশেষকরে প্রশ্নকারী ছাত্রকে উদ্দেশ্য করে বললেন- এই হলো কিয়ামতের হিসাবনিকাশের ছোট একটি নমুনা মাত্র। যার ক্ষমতা ও সম্পদ যতো কম, তার হিসাব ততো সহজ। প্রশ্নকারী ছাত্র ছলছল নয়নে উস্তাদের দিকে তাকিয়ে মনেমনে তার প্রতি উস্তাদের ভালোবাসার কথা ভাবতে লাগলো এবং উস্তাদের প্রতি নিজের আগের ধারণার জন্য অনুতপ্ত হতে লাগলো। . ★ আল্লাহ আমাদের দুনিয়ার জীবনকে পবিত্র রাখুন। কিয়ামতের হিসাবনিকাশ সহজ ও সুন্দরভাবে দেয়ার তাওফিক দিন। তাঁর মনোনীত দ্বীনের উপর অটল অবিচল থাকার তাওফিক দিন। আমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের উপর রহম করুন। (সংগৃহীত)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ হাঁচিকে ভালবাসেন এবং হাই ওঠাকে অপসন্দ করেন। যখন কারো হাঁচি ওঠবে তখন আল্লাহর প্রশংসা করবে। আর প্রত্যেক মুসলিমের উপর হক্ব হ’ল যখন তা শুনবে তখন তার উত্তর দিবে। আর হাই আসে শয়তানের নিকট থেকে। তখন তোমরা সাধ্যমত ওটাকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে। কেননা শয়তান সে সময়ে অট্টহাসি দেয় (বুখারী হা/৬২২৩; মিশকাত হা/৪৭৩২)।
আনাস বিন মালিক (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘ধীর-স্থিরতা আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং জলদিবাজি শয়তানের পক্ষ থেকে। আল্লাহর চেয়ে বেশি ওজর কবুল করার কেউ নেই। আর প্রশংসার চেয়ে অধিক প্রিয় আল্লাহর কাছে অন্য কিছু নয়।’’ (আবূ য়্যালা, সঃ তারগীব ১৫৭২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "বান্দার দু'আ কবুল হয়েই থাকে যতক্ষণ সে কোন পাপের অথবা আত্মীয়তা সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য দু'আ না করে এবং (দু'আর ফল লাভে) শীঘ্রতা না করে।" জ্ঞিজ্ঞাসা করা হল, 'হে আল্লাহর রাসূল! শীঘ্রতা কেমন?' বললেন, "এই বলা যে, 'দু'আ করলাম, আরো দু'আ করলাম। অথচ কবুল হতে দেখলাম না।' ফলে সে তখন আক্ষেপ করে এবং দু'আ করাই ত্যাগ করে বসে।" --[মুসলিম ২০৯৬]

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ