Tuesday, May 1, 2018

আল্লাহর ভালবাসা

আল্লাহর ভালবাসা আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী ﷺ বলেন, ‘‘এক ব্যক্তি অন্য কোন গ্রামে তার ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য বের হল। আল্লাহ তা‘আলা তার রাস্তায় এক ফিরিশ্তাকে বসিয়ে দিলেন, তিনি তার অপেক্ষা করতে থাকলেন। যখন সে তাঁর কাছে পৌঁছল, তখন তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি কোথায় যাচ্ছ?’ সে বলল, ‘এ লোকালয়ে আমার এক ভাই আছে, আমি তার কাছে যাচ্ছি।’ ফিরিশ্তা জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার প্রতি কি তার কোন অনুগ্রহ রয়েছে, যার বিনিময় দেওয়ার জন্য তুমি যাচ্ছ?’ সে বলল, ‘না, আমি তার নিকট কেবলমাত্র এই জন্য যাচ্ছি যে, আমি তাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসি।’ ফিরিশ্তা বললেন, ‘(তাহলে শোনো) আমি তোমার নিকট আল্লাহর দূত হিসাবে (এ কথা জানাবার জন্য) এসেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে ভালবাসেন; যেমন তুমি তাকে আল্লাহর জন্য ভালবাস।’’ রিয়াদুস স্বালেহীন ২/৩৬৫। মুসলিম ২৫৬৭ আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা‘আলা কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরীল (আ.)-কে ডেকে বলেন যে, আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসী, তুমিও তাকে ভালোবাসো। রাবী বলেন, অতঃপর জিবরীল (আ.)-ও তাকে ভালোবাসতে থাকেন এবং আকাশে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ তা‘আলা অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, তোমরাও তাকে ভালোবাসো। তখন আকাশমণ্ডলীর অধিবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। অতঃপর সে বান্দার জন্য জমিনেও স্বীকৃতি স্থাপন করা হয়। আর যখন আল্লাহ তা‘আলা কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন, তখন জিবরীল (আ.)-কে ডেকে বলেন যে, আমি অমুক বান্দাকে ঘৃণা করি, তুমিও তাকে ঘৃণা করো। রাবী বলেন, অতঃপর জিবরীল (আ.)-ও তাকে ঘৃণা করেন এবং আকাশে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ তা‘আলা অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন, তোমরাও তাকে ঘৃণা করো এবং আকাশবাসীরাও তার প্রতি ঘৃণা পোষণ করে। অতঃপর তার জন্য জমিনেও ঘৃণা স্থাপন করা হয়। (মুসলিম-১৫৭)
হাদিসে এসেছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন অন্ধকার রাতে শক্ত পাথর খন্ডের উপর হেঁটে যাওয়া একটা ক্ষুদ্র পিঁপড়ার ব্যাপারে আল্লাহ খবর রাখেন। চিন্তা করুন সামান্য একটি পিঁপড়া যেটি দেখতে অতি ক্ষুদ্র রাতের অন্ধকারে এটির চলাফেলার ব্যাপারে ও আল্লাহ ওয়াকিবহাল। আল্লাহ আযযা ওয়া যাল এ ক্ষুদ্র প্রানীর চলাফেরার শব্দ ও শুনতে পান! এটি কি করছে তাও দেখতে পান। আল্লাহু আকবর!আসলেই আল্লাহর ব্যাপারে আমাদের সজাগ হত হবে। আসলে কি আল্লাহকে যতটুকু ভয় করা দরকার ততটুকু ভয় করি আমরা? আল্লাহকে যতটুকু চেনার দরকার ততটুকু চিনি বা চিনতে চেষ্টা করি? নাফসের প্ররোচনায়,যৌবনের উন্মাদনায় আমাদের যুবকেরা সুযোগ পেলেই একাকী নির্জন কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিয়ে নিজেদের খায়েশাত পূরণ করে।তারা কেন দরজা বন্ধ করে? কারন পিতা-মাতা,ভাই-বোন বা কোন আত্মীয়স্বজনের কাছে ধরা পাওয়ার ভয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করে। যুবক-যুবতীরা রুমের দরজার বন্ধ করে এমন সব বেহায়াপনা দৃশ্য দেখার জন্য মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে যার জন্য আল্লাহর ক্রোধের শিকার হয়! এমন সব নিষিদ্ধ বস্তু সমূহ দেখে যা বেসিক্যালি বিয়ের পরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যের একান্তই পার্সোনাল হয়ার কথা ছিল! এবং প্রতি মূহুর্তে এরা আল্লাহর অবাধ্যতার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং আল্লাহর ক্রোধ এদের উপর বৃদ্ধি পেতে থাকে। পাপ করার সময় আমরা ভয় পাই মানুষ জন দেখে ফেলল কিনা অথচ আল্লাহ আমাকে আপনাকে প্রতি সেকেন্ড,ন্যানো সেকেন্ড পর্যবেক্ষণ করছেন। আমাদের রব আমাদের দেখছেন। দরজা বন্ধ করে আপনি আপনার পাপ দুনিয়ার লোকজন থেকে লুকাতে পারবেন কিন্তু আল্লাহর ব্যাপারে কি হলো আপনার? তিনি আপনাকে দেখছেন না? নাকি আপনি আল্লাহর চাইতে ও দুনিয়ায় মানুষের ব্যাপারে বেশি ভয় করেন? অথচ আল্লাহর পাকড়াও বড়ই কঠিন। চিন্তা করুন যখন নির্জনে, একাকী কক্ষে আপনার ল্যাপটপে অশ্লীল ভিডিও চলে, যখন আপনার মোবাইলের স্ক্রীন নীল হয় তখন যদি আল্লাহ অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দেন? একজন মানুষ অক্সিজেন ছাড়া বেঁচে থাকতে পারেনা। তখন যদি আপনি মৃত্যুবরণ করেন? যখন আপনি হারাম জিনিস দেখছেন আল্লাহ তখন ও অক্সিজেন দিয়ে যাচ্ছেন কেন জানেন? কারন তিনি চান না আপনি পর্ণ দেখা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন! তিনি চান আপনি সিজদায় মৃত্যুবরণ করেন!আল্লাহ চান আপনি কুরান তিলায়াত করতে, কুরান মুখাস্ত করতে করতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি চান আপনি হজ্ব করা অবস্থায়,সিয়াম রত থেকে মৃত্যুবরণ করেন। তাই আল্লাহর চরম নাফরমানি করা অবস্থায় ও নিঃশ্বাসটুকু বাঁচিয়ে রাখার জন্য তিনি আপনাকে নিয়ামত দিয়ে যাচ্ছেন। সুবহানআল্লাহ কত বড় দয়াময় আল্লাহ। কত করুণাময় তিনি। অথচ মানুষ গুলো কত অবুঝ, কত মূর্খ। মোবাইলে, ল্যাপটপ এ পাস ওয়ার্ড দিয়ে রাখে যাতে মানুষ না দেখতে পারে অথচ একবারের জন্যে ও ভাবেনা আল্লাহ আমাকে নির্জন একাকী কক্ষে ও দেখছে। দুনিয়ার লোকজনের ব্যাপার আমরা ভীত থাকি। তার মানে কি দাঁড়াল? আল্লাহ দেখল দেখুক বাট মানুষ জন যেনো না দেখে। দুনিয়ার লোকজন আপনার কাছে আল্লাহর চাইতে বড়? তাহলে শুনে রাখুন এদের সম্পর্কে আল্লাহ কুরানে কি বলেছেনঃ "তারা মানুষের কাছে লজ্জিত হয় এবং আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয় না। তিনি তাদের সাথে রয়েছেন, যখন তারা রাত্রে এমন বিষয়ে পরামর্শ করে, যাতে আল্লাহ সম্মত নন। তারা যাকিছু করে, সবই আল্লাহর আয়ত্তাধীণ।"- {কুরান-৪ঃ১০৮} তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে। -[কোরআন ৬ঃ৫৯]

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ