সূরায়ে ওয়াকি‘আর ফাযীলাত
عن
ابن مسعود قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من قرأ سورة الواقعهة في
كل ليلة لم تصيبه فاقتة ابدا وكان ابن مسعود يامر بناتة يقرران بها كل ليلة
‘‘হযরত ইবনে মাছউদ (রাঃ) বলেন, হুজুরে পাক
(সাঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাত্রে সূরায়ে ওয়াকেয়া পাঠ করিবে কখনও
তাহাকে অভাব স্পর্শ করিবে না। এবনে মাছউদ (রাঃ) প্রতিরাত্রে তাহার
কন্যাদিগকে ছুরা ওয়াকেয়া পড়িবার জন্য আদেশ দিতেন।’’ (তাবলীগী নিসাব,
ফাজায়েলে কুরআন ২২৩)
এখানেও শায়খ একই কান্ড ঘটিয়েছেন। তবে একটি
ইহসান করেছেন তাহলে বর্ণিত হাদীসটির গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন। তবে
হাদীসটির মান বর্ণনা করেননি। আমরা শায়খের লিখিত হাদীসখানা হুবহু উল্লেখ
করলাম। এবার লক্ষ্য করুন হাদীসখানা কোন্ পর্যায়ের।
مَنْ قَرَأَ سُوْرَةَ الْوَاقِعَةِ فِيْ كُلِّ لَيْلَةٍ لَمْ تُصِبْهُ فَاقَةَ اَبَدًا
‘‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা আল ওয়াকি‘আহ
পাঠ করবে, তাকে কখনও অভাব গ্রাস করবে না’’। হাদীসটি দুর্বল। এটি হারিস
ইবনু আবী উসামা তার ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে (১৭৮), ইবনুস সুন্নী ‘আমালুল ইয়াউম
ওয়াল লায়ল’ গ্রন্থে (৬৭৪), ইবনু লাল তার ‘হাদীস’ গ্রন্থে (১/১১৬), ইবনু
বিশরান ‘আল-আমালী’ গ্রন্থে (২০/৩৮/১) এবং বায়হাকী ‘আশ্-শু‘আব’ গ্রন্থে
বর্ণনা করেছেন। তারা সকলেই আবূ শুযা সূত্রে তায়বা হতে বর্ণনা করেছেন। এর
সনদ দুর্বল। যাহাবী বলেন, আবূ শু‘যাকে চেনা যায় না এবং আবূ তায়বাহ মাজহুল।
এছাড়া হাদীসটির তিন দিক থেকে ইযতিরাব সংঘটিত হয়েছে। হাফিয ইবনু হাজার
‘লিসানুল মীযান’ গ্রন্থে এই আবূ শু‘যার জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে তার বিবরণ
দিয়েছেন। যাইলাঈ উল্লেখ করেছেন হাদীসটি কয়েকটি দিক থেকে দোষণীয় :
১। এটির সনদে রয়েছে বিচ্ছিন্নতা, যেমনভাবে দারাকুতনী সহ অন্যরা তার বিবরণ দিয়েছেন।
২। হাদীসটির মতনে (ভাষায়) রয়েছে দুর্বোধ্যতা, যেমনভাবে ইমাম আহমাদ উল্লেখ করেছেন।
৩। হাদীসটির বর্ণনাকারীগণ দুর্বল, যেরূপ ইবনুল জাওযী বলেছেন।
৪। এছাড়া এতে ইযতিরাব রয়েছে।
এটি দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে ইমাম আহমাদ,
আবূ হাতিম, ইবনুল আবী হাতিম, দারাকুতনী, বায়হাকী এবং অন্যরাও একমত হয়েছেন।
মানাবী আত-তায়সীর গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি মুনকার। (যঈফ ও জাল হাদীস সিরিজ ১ম
খন্ড, হাঃ ২৮৯, পৃ: ২৮১)
পাঠক মহোদয়! আমরা হাদীস জাল করা ও তার
কারণ সম্পর্কে যা জানতে পেরেছি তার মধ্যে এটাও একটা কারণ যে, জনগণের মধ্যে
ইসলাম প্রচার, ওয়াজ নাসীহাত দ্বারা জনগণকে অধিক ধর্মপ্রাণ বানানো, ‘ইবাদাত
বন্দেগীতে অধিকতর উৎসাহী বানানো এবং পরকালের ভয়ে অধিক ভীত করে তোলার
উদ্দেশ্যে হাদীস জাল করা। (হাদীস সংকলনের ইতিহাস ৫৬৯)
উপরোল্লিখিত এসব হাদীস বর্ণনায় শায়খ সাহেব এ নীতি অবলম্বন করেননি তো?
No comments:
Post a Comment