গাশতকালীন যঈফ হাদীসের ‘আমাল

গাশতকালীন যঈফ হাদীসের ‘আমাল

---

তাবলীগী ভাইদের দেখা যায় গাশ্তের সময মুতাকাল্লিম যাকে দা‘ওয়াত দেয়, তার সঙ্গে মুসাফাহা করে নিম্নোক্ত হাদীসের ফাযীলাত বর্ণনা করেন, যা আমি নিজেও তাবলীগ জামা‘আতে থাকাকালীন করেছি। ভুল বুছে অজ্ঞাতসারে যা করেছি, আল্লাহ যেন মাফ করেন। কারণ তিনি আমাদেরকে শিখিয়েছেন :

{رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا}

‘‘হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না।’’  (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৮৬)

হাদীসটি নিম্নরূপ :

ما من عبدين متحابين في الله يستقبل احدهما صاحبه فيصافحه ويصليان على النيى صلى الله عليه وسلم الا لم يتفرقا حتى يغفر الله لهما ذنوبهما ما تقدم منهما وما تاخر

‘‘যে কোন দুই বান্দা আল্লাহর রাহে পরস্পরকে ভালবেসে একে অপরকে অভিনন্দন জানিয়ে মুসাফাহা করলে এবং নাবী (সাঃ)-এর উপর দরূদ পাঠ করলে, তারা দু’জন পৃথক হওয়ার পূর্বেই আল্লাহর তা‘আলা উভয়ের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিবেন।’’

এ বাক্যে হাদীসটি নিতান্তই মুনকার। এটি ইবনুস সু্নাী (হাঃ নং ১৯০), ইবনু হিববান ‘আয-যু‘আফা (১/২৮৯) গ্রন্থে এবং আল-বাতেরকানী ‘জুযউম মিন হাদীসিহি’ ( ১/১৬৫) গ্রন্থে দারাসাত ইবনু হামযাহ হতে নিতি মাতার ওররাক হতে তিনি ক্বাতাদ্বাহ হতে..........বর্ণনা করেছেন।

হাদীসটি সম্পর্কে শাইখ আলবানী (রহ.) বলেন : এ সনদটি দুর্বল। দারাসাত ইবনু হামযাহ সম্পর্কে ইবনু হিববান বলেন, তিনি নিতান্তই মুনকারূল হাদীস ছিলেন। তিনি মাতার ও অন্যদের থেকে এমন কিছু বর্ণনা করেছেন যে, শ্রবণকারীর নিকট তা জালই মনে হবে। তাকে দারাকুতনী দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।

ক্বাতাদার মধ্যে তাদলীস ছিল। তিনি আন্ আন্ করে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটির অর্থবোধক বহু হাদীস সাহাবাদের থেকে বর্ণিত হয়েছে। যার কোনটিতেই নাবী (সাঃ)-এর উপর দরূদ পাঠ করার কথা এবং পরবর্তী গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাবার কথা উল্লেখ করা হয় নি। এটিই প্রমাণ করছে যে, বর্ধিত অংশগুলোর কারণে হাদীসটি মুনকার।  (দেখুন যঈফ ও জাল হাদীস, সিরিজ-২, ১৭৫ পৃঃ)

উল্লেখ্য যে, হাদীসের বর্ধিত অংশটুকু বাদ দেয়ার পরে সহীহ সূত্রে যদি হাদীসটি বর্ণিত থাকে, তাহলে তারউপর ‘আমাল করাতে কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কে যেহেতু আমি এখনও অবগত হতে পারিনি তাই আহলে ‘ইলমদের নিকট তাহক্বীকের অনুরোধ রইল।