Monday, November 27, 2017

তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ.) অভিমত

শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ.) অভিমত


শাইখ নাসিরুদ্দ্বীন আলবানী (রহ.)’র নিকট প্রশ্ন করা হয় :
তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? এদের সাথে কোন তালিবে ‘ইলম বা অন্য কেউ আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে বের হতে পারে কি?
উত্তর : তাবলীগ জামা‘আত আল্লাহর কুরআন এবং রসূলের হাদীসের তরীকার উপর প্রতিষ্ঠিত নয় এবং আমাদের সালফে সালিহীনদের পন্থার উপর নয়। অবস্থা যখন এই, তখন তাদের সাথে বের হওয়া জায়িয হবে না। কেননা এটা আমাদের সালফে সালিহীনদের তাবলীগের পন্থার পরিপন্থী। দা‘ওয়াতের কাজে বের হবেন আলিম বা বিদ্বান ব্যক্তি। আর এরা যারা বের হচ্ছে
তাদের উপর অবশ্য করণীয় হল নিজের দেশে জ্ঞান শিক্ষা করা, মাসজিদে মাসজিদে জ্ঞানার্জনের ব্যবস্থা করা, যারা দা‘ওয়াতের কাজ করবে তারা যেন আলিম তৈরী হয়। এ অবস্থায় তালিবে ‘ইলমদের উচিৎ যেন এদেরকে তাদের দেশেই কুরআন-হাদীস শিক্ষার জন্য আহবান জানায়। মানুষকে আল্লাহর পথে দা‘ওয়াত তাবলীগীরা কুরআন ও সুন্নাহকে তাদরে মূলনীতি হিসাবে গণ্য করে না। বরং তারা এই দা‘ওয়াতকে বিভক্ত করে ফেলেছে। এরা যদিও মুখে বলে যে, তাদের দা‘ওয়াত কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক তা নিছক তাদের মুখের কথা, এদের কোন একক আক্বীদা বিশ্বাস নেই যা তাদেকে একত্রিত করতে পারে। এজন্যই দেখা যায়- এরা হল সূফী ও মাতুরিদী, আশায়িরীর আর এরা তো কোন মাযহাবেই নেই। আর এর কারণ হল তাদের আক্বীদাহ-বিশ্বাস জটপাকানো। এদের নিকট স্বচ্ছ জ্ঞানের অভাব। এদের জামা‘আত প্রতিষ্ঠার প্রায় অর্ধশত বছর পার হয়ে গেল কিন্তু এত লম্বা মসয়ের পরও তাদের মাঝে কোন আলিম তৈরী হলো না। আমরা এজন্যই বলি আগে জ্ঞানার্জন কর, এরপর একত্রিত হও, যেন একত্রিত হওয়া যায় নির্দিষ্ট ভিত্তির উপর, যাতে কোন মতভেদ থাকবে না।
তাবলীগ জামা‘আত বর্তমানে সূফী মতবাদের ধারক বাহক জামা‘আত। এরা চরিত্র সংশোধনের ডাক দেয় কিন্তু আক্বীদা-বিশ্বাসের সংস্কার ও সংশোধনের ডাক দেয় না। এ ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। কেননা তাদের ধারণা মতে এর দ্বারা বিভক্তি সৃষ্টি হবে। জনাব সা‘দ আল হুসাইন এবং ভারত-পাকিস্তানের তাবলীগের মুরববীদের সাথে বেশ কিছু পত্র যোগাযোগ হয়। এর দ্বারা এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তারা ওয়াসীলা, উদ্ধারকারী (ইস্তিগাসা) এবং এ ধরণের অনেক ধারণাই সমর্থন করে। প্রত্যেক তাবলীগীকে এই চার তরীকার ভিত্তিতে বাই‘আত গ্রহণ করতে হবে। কেউ হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন যে এদের প্রচেষ্টায় অনেক মানুষই আল্লাহর পথে ফিরে এসেছে। বরং এদের সাথে বের হবার জন্য কেউ কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদের কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করার জন্য কি এটা যথেষ্ট নয়? এ ব্যাপারে বলছি যে, এটা আমরা অনেক শুনেছি এবং জানি, সূফীদের কাছ থেকে অনেক ঘটনাই জানি। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যদি শাইখের আক্বীদাহ ফাসিদ হয়, হাদীস জানে না বরং লোকজনের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে এতদ্বসত্ত্বেও অনেক ফাসিক লোক তার হাতে তাওবাহ করে। যেদ দলই ভাল বা কল্যাণের দিকে ডাকবে অবশ্যই তার অনুসারী পাওয়া যাবে। কিন্তু আমরা দৃষ্টি দিবো যে, সে কিসের দিকে আহবান করছে? সেকি কুরআন হাদীস এবং সালফে সালিহীনের আক্বীদার দিকে ডাকছে এবং কোন মাযহারে ব্যাপারে কোন করম গোঁড়ামী করে না এবং যেখানেই পায় সুন্নাতের অনুসরণ করে। তাবলীগ জামা‘আতের কোন ‘ইলমী তরীকা বা পন্থা নেই। তাদের পন্থা হল স্থানের পরিপ্রেক্ষিতে যেখানে তার জন্ম হয়েছে। এরা সব রঙেই রঙ্গীণ হয়।  (ইমারাতী ফতওয়া, আলবানী পৃঃ ৩৮)
সম্মানিত পাঠক! যে ১২ জন আলিমের নাম আমরা উল্লেখ করেছি এদের সকলেই তাবলীগী জামা‘আতকে ভ্রান্ত তাদের নিসাবকে ভ্রান্ত নিসাব বলেছেন এবং এদের সাথে সংশ্লিষ্ট হতেও সর্তক করেছেন। সকলের মতামত তুলে ধরতে গেলে বইয়ের কলেবর বৃদ্ধি পাবে তাই শুধু এদের নাম উল্লেখ করা হল। যাতে এতটুকু বুঝা যাবে যে, মুসলিমদের প্রাণকেন্দ্র সৌদী আরবসহ আরব বিশ্বের সকল উলামা তাবলীগীদের ভ্রান্ত আখ্যায়িত করেছেন এবং তাদেরকে অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে- এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বিজ্ঞ পাঠকদের মূল কিতাব كشف الستار عما تحمله الدعوة من أخطاء (লেখক- মুহাম্মাদ বিন নাসের আল-উরাইনী) দেখে নেয়ার অনুরোধ রইল। আর বাংলায় দেখুন এরই অনুবাদ ‘‘বিশ্ববরেণ্য আলিমদের দৃষ্টিতে তাবলীগী জামা‘আত’ এই বইটি পড়লে আমাদের কথার সত্যতা জানা যাবে। ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সকলকে ভ্রান্তি থেকে বেঁচে থেকে সঠিক পদ্ধতিতে তাবলীগের ফরযিয়াত আদায় করার তাওফীক দান করুন-আমীন!

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ