Monday, November 27, 2017

কা‘বার ফাযীলাত

কা‘বার ফাযীলাত


عن ابن عباس رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان الله في كل يوم وليلة عشر ومائة رحمة تنزل هذا البيت ستون للطائفين اربعون للمصلين وعشرون للناظرين
‘‘এবনে আব্বাছ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, হুজুর (ছঃ) এরশাদ করেন, কা’বা শরীফের উপর দৈনিক আল্লাহ তায়ালার তরফ হইতে একশত বিশটা রহমত নাজেল হয়, তন্মধ্যে ষাট রহতম তাওয়াফকারীদের জন্য, চল্লিশ রহমত নামাজীদের জন্য এবং বিশ রহমত দর্শকদের জন্য।  (বায়হাকী- ফাজায়েলে হাজ্জ ৯৫ পৃঃ)
জনাব হাদীসটির কোন সনদ বর্ণনা না করে শুধু বাইহাকী লিখেছেন। এখন লক্ষ্য করুন হাদীসটির মান সম্পর্কে :

ان الله تعالى على اهل المسجد مكة في كل يومن وليلة عشرين ومائة رحمة ستين للطائفين واربعين للمصلين وعشرين للناظرين
নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা এই মাসজিদের (মাক্কার মাসজিদে) অধিবাসীদের জন্য প্রত্যেক দিনে এবং রাতে একশত বিশটি রহমত নাযিল করেন। ষাটটি তাওয়াফকারীদের জন্য, চল্লিশটি সলাত আদায়কারীদের জন্য এবং বিশটি দৃষ্টিদানকারীদের জন্য।  (সিলসিলাহ হাঃ ১৮৭, ২১১ পৃঃ)
হাদীসটি যঈফ। এ হাদীসটি সম্পর্কে তাবারানী বলেন : এটি আওযায়ী হতে ইবনুস সাফর ব্যতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেনি। আল্লামা নাসিরউদ্দিন আলবানী বলেন : তিনি একজন মিথ্যুক, তিনি হাদীস জাল করতেন।
ইবনু আসাকির আবদুর রহমান ইবনুস সাফারের জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে হাদীসটি উল্লেখ করেন এবং ইবনু মান্দার উদ্ধৃতিতে বলেছেন যে, তিনি (আবদুর রহমান) মাতরূক। যাহাবীও তার অনুসরণ করেছেন। ইবনুল জাওযী ‘ইলালুল মুতানাহিয়া’ গ্রন্থে (২/৮২-৮৩) বলেছেন : হাদীসটি সহীহ নয়। কারণ ইবনুস সাফার এককভাবে এটি বর্ণনা করেছেন। তিনি মাতরূক, যেভাবে দারাকুতনী এবং নাসাঈ বলেছেন। দারাকুতনী বলেন, তিনি মিথ্যা বলতেন। ইবনু হিববান বলেন, তার দ্বারা হাদীস গ্রহণ করা হালাল নয়। ইয়াহ্ইয়া বলেন, তিনি কিছুই না। হায়সামীও তাকে মাতরূক হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আলবানী বলেন, তাকে বলা হয় ইবনুল ফয়েয। ইবনু হিববান আয-যু‘আফা গ্রন্থে (৩/১৩৬-১৩৭) এবং আবূ নু‘আয়ম ‘আকাবু আহসান’ গ্রন্থে (১/১১৬-৩০৭) এরূপ বর্ণনা করেছেন। অতঃপর ইবনু হিববান বলেছেন : ইউসুফ ইবন ফায়েয আওযাঈ হতে বহু মুনকার হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি যেন তা ইচ্ছাকৃতই করেছেন। ইবনু আবী হাতিম আল ইলাল গ্রন্থে (১/২৮৭) আমি আমার পিতাকে তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম? তিনি বলেন : এ হাদীসটি মুনকার। ইউসুফ হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল, মাতরূকের ন্যায়। তার সম্পর্কে ইবনু আদী বলেন : তিনি বহু বাতিল হাদীস বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী বলেন,যারা হাদীস জাল করেছেন তাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাহাবী ‘আল-মীযান’ গ্রন্থে বলেন, তনি হচ্ছেন আবদুর রহমান ইবনু সাফার। ইবনু হাজার ‘আল-লিসান’ গ্রন্থে বলেন, কেউ কেউ তার নাম এমনই রেখেছেন। সঠিক নাম হচ্ছে ইউসুফ ইবনুস সাফার। তিনি মাতরূক। তাকে ইমাম বুখারী উল্লেখ করে বলেছেন, তিনি আবদুর রহমান ইবনুস সাফার, তিনি জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন। এছাড়া যেসব সনদে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর কোনটি সহীহ নয়।

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ