কালিমায়ে তাইয়্যিবা
তাবলীগ
জামা‘আতের আর একটি গ্রন্থ যা এখনও বহুল পঠিত হয়নি। গ্রন্থটির নাম দা‘ওয়াত ও
তাবলীগের ছয় সিফাত সম্পর্কিত ‘মুন্তাখাব হাদীস’ বাংলায় (নির্বাচিত হাদীস)
যার মূল লেখক তাবলীগ জামা‘আতের প্রতিষ্ঠাতার ছেলে জামা‘আতের আমীর মুহাম্মাদ
ইউসুফ কান্ধালভী। উর্দু তরজমা ও তারতীব দিয়েছেন বর্তমান আমীর মুহাম্মাদ
সা‘আদ সাহেব। বাংলায় অনুবাদ করেছেন কাকরাইল মাসজিদের ইমাম মুহাম্মাদ
যুবায়ের সাহেব। উল্লেখিত গ্রন্থের প্রথম অধ্যায় হল ‘ঈমান’ তার ৩ নং হাদীস
নিয়ে আলোচনা করছি। হাদীসটি নিম্নরূপ :
عن أبى هريرة رضى الله
عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم جددوا أيمانكم قيل يا رسول الله
وكيف نجدد ايماننا قال اكثروا من قول لا إله الا الله- (رواه أحمد والطبراني، إسناد احمد حسن الترغيب ২/৪১৫)
‘‘হুজুরে আকরাম (ছঃ) বলেন, তোমরা তোমাদের
ঈমানকে তাজা করিতে থাক। ছাহাবারা বলিলেন, হুজুর! আমরা কিভাবে ঈমানকে তাজা
করিব? হুজুর (ছঃ) উত্তর করিলেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বেশী বেশী করিয়া পড়।’’
(তাবলীগী নিসাব মুন্তাখাব হাদীস ২০ পৃষ্ঠা - ফাজায়েলে জিকির ৩৪৩ পৃঃ ৭ নং হাঃ)
সম্মানিত পাঠক, এবার লক্ষ্য করুন হাদীসটির
মান সম্পর্কে যে, হাদীসটি কোন্ পর্যায়ের। হাদীসটি দুর্বল। এটি হাকিম
(৪/২৫৬) এবং আহমাদ (২/৩৫৯) সাদাকাহ ইবনু মূসা সুলামী সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু
ওয়াসে’ হ্তে তিনি শুকায়ের ইবনু নাহার হতে তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে
মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
হাকিম বলেন : সনদটি সহীহ। হাফিয যাহাবী
তার প্রতিবাদ করে বলেছেন : সাদাকাকে সকলে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। শায়খ
আলবানী বলেন : শুকায়ের মুনকার, যেমনটি ‘আল-মীযান’ গ্রন্থে এসেছে। মুনযেরী ও
হায়সামী যে তাবারানী ও আহমাদ বর্ণনা করেছেন বলে সনদটিকে হাসান বলেছেন, তা
সঠিক নয়। তারা ইবনু হিববান কর্তৃক শুকায়ের বা সুমায়েরকে নির্ভরযোগ্য বলার
কারণেই হাসান বলেছেন। তার এ নির্ভরযোগ্য বলার উপর ভরসা করা যায় না। কারণ
তিনি বহু মাজহূল বর্ণনাকারীকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন।
(দেখুন : سلسلة الاحاديث الضعيفة والموضوعة এবং বাংলা যঈফ ও জাল হাদীস সিরিজ, ২য় খন্ড, ৩৬৬ পৃ, ৮৯৬ হাঃ)
উল্লেখ্য যে, কালিমা তাইয়্যিবা বেশি বেশি
পড়ার বিপক্ষে আমরা নই। এই মর্মে বহু সহীহ হাদীস আছে। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু
এতটুকু যে, বর্ণিত হাদীসটি সহীহ সনদে নয়, বরং যঈফ অর্থাৎ দুর্বল সনদের।
No comments:
Post a Comment