Monday, November 27, 2017

মাকামে মাহমুদের ব্যাখ্যা

মাকামে মাহমুদের ব্যাখ্যা


‘‘রুহুর বয়ানে বর্ণিত আছে আল্লাহ পাকের দরূদ পড়ার অর্থ হইল হুজুরে আকরাম (ছঃ) কে মোকামে মাহমুদ অর্থাৎ সুপারিশের মোকামে পৌঁছান।’’ (ফাজায়েলে দরূদ শরীফ- ১০)
মাকামে মাহমু
দের ব্যাখ্যায় শায়খ লিখেছেন :
 ‘‘কেহ বলেন, উহা হইল আল্লাহ পাক কর্তৃক তাহাকে রোজ কেয়ামাতে আরশের উপর বসান অথবা কুরছীর উপর বসান। আবার কেহ কেহ বলেন উহার অর্থ হইল শাফায়াত। কেননা সমস্ত মাখলুক সেখানে হুজুরের প্রশংসা করিবে। আল্লামা ছাখাবী ও তাহার ওস্তাদ হাফেজ এবনে হাজার বলেন
এই কয়েকটি রেওয়ায়েতের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই কেননা সম্ভবনা আছে আরশে এবং কুরছীতে বসাইয়া শাফায়াতের অনুমতি দিবেন ও তারপর হামদের পতাকা হুজুরের হাতে দিবেন।’’ (ফাজায়েল দরূদ শরীফ- ৫৬-৫৭ পৃষ্ঠা)
সম্মানিত পাঠক! যদিও শাইখ এ কথার স্বপক্ষে কোন উদ্ধৃতি দেন নি তথাপিও একথা যেই বলুক সে অত্যন্ত ঔদ্ধত্ব সহকারে নিকৃষ্টতম মিথ্যা আল্লাহর প্রতি আরোপ করেছেন। নাবী (সাঃ)-কে এত উঁচুতে তোলা হয়েছে যে, তাঁকে আরশ কূরসীতে বসানো হবে বলা খুবই গুস্থাখিপূর্ণ কথা এবং এতে তাওহীদী বিশ্বাস আহত হয়। আশ্চর্যের ব্যাপার যে, মুসলিমদের ইসলাহ করার জন্য যে গ্রন্থ লেখা হয় তাতে এরকম ভিত্তিহীন বেপরওয়া কথা উদ্ধৃত করা হয়! যখন আক্বীদাই সংশোধন হল না, তখন আর কিবা সংশোধন হতে পারে? এই সব কথা তো বাতিল করার জন্য উল্লেখ করা যেতে পারে। তাবলীগ বা প্রচার করার জন্য নয়। ইমাম রাযী তাঁর তাফসীরে উক্ত কথাকে দলীল সহকারে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং শেষে লিখেছেন, ‘সুতরাং প্রামাণিত হল যে, এ কথা অত্যন্ত নিকৃষ্ট ও বাতিল। এর দিক ঐ ব্যক্তিই আকৃষ্ট হতে পারে যার না বিবেক বুদ্ধি আছে আর না দ্বীনের জ্ঞান আছে। আল্লাহ ভাল জানেন। (তাফসীরে কাবীর ২১ খন্ড ৩২ পৃষ্ঠা)
মূলতঃ এ কথাটিকে মুজাহিদের প্রতি আরোপ করা হয়েছে, যিনি একজন বিশিষ্ট তাবেয়ী ও মুফাসসির। এরকম অর্থহীন কথা তিনি কিভাবে বলতে পারেন! কিন্তু দায়িত্বহীন রাবীরা মিথ্যা তৈরী করে তাঁর নামে প্রচার করেছে। সুতরাং তাফসীরে তাবারীতে এই রিওয়ায়েতে উবাদ বিন ইয়াকুব আসদী থেকে বর্ণিত হয়েছে।     (তাফসীরে তাবারী, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৯)
উবাদ বিন ইয়াকুব আসদীর সম্পর্কে জানা যায় যে, সে শী‘আ ও প্রচন্ড ধরনের বিদ‘আতী ছিল। আসমাউর রিজাল গ্রন্থ ‘‘তাহযীবুত তাহযীব’’ এ হাফিজ ইবনে হাজার, ইবনে আদীর উক্তি উদ্ধৃত করেছেন যে, উবাদের মধ্যে শী‘আ মনোভাবের প্রধান্য ছিল। আর সে ফাযীলাতের ব্যাপারে মুনকার রিওয়ায়েত বর্ণনা করতো এভাবে হিববানের কথা নকল করেছেন যে, তিনি রাফিযী ছিলেন এবং প্রখ্যাত রাবীর হওলা দিয়ে মুনকার রেওয়ায়েত বর্ণনা করতেন। তাই তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।ঃ (তাহযীবুত তাহযীব, ৫ম খন্ড, ১০৯ পৃষ্ঠা, গৃহীত মওযু ও যঈফ হাদীসের প্রচলন, ১৯ পৃঃ)
উপসংহারে বলতে চাই শাইখ কি উল্লিখিত শী‘আ মনোভাব নিয়ে রাফেজী মতবাদ প্রচার করতে চেয়েছেন? শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করার ভঙ্গি কি এই যে, কেউ কেউ বলেছেন তার কোন নাম ঠিকানা নেই। তার পরও আমরা বিষয়টি উদ্ধার করে উদ্ধৃতিসহ মুসলিম ভাইদের নিকট পেশ করলাম। আল্লাহ তা‘আলা যেন আমাদের এই শ্রমটুকু তার শাহী দরবারে প্রহণ করেন। আমীন!
উল্লেখ্য যে, একথা মুশরিকগণও স্বীকার কতর যে মহাআরশ অধিপতি শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা। (সূরা মু’মিনুন- ৮৬-৮৭)

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোষ্ট

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার"?

"যারা facebook চালায় তারা কখনই ভাল মুসলিম হতে পারে না" "FB তো ইহুদীর আবিষ্কার" . "আপনি এত ইসলাম মানেন তাহলে f...

জনপ্রিয় পোষ্ট সমুহ